মিসর
গাজা থেকে মিসর-জর্ডানে শরণার্থী বাড়াতে ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হামাসের
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে মিসর ও জর্ডানের আরও বেশি শরণার্থী নেওয়া উচিত বলে যে মন্তব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড করেছেন, তা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে তাদের পক্ষে ট্রাম্পের এই নির্দেশনা গ্রহণ করা সম্ভব না।
গাজা উপত্যকার জন্য এটি কী অস্থায়ী কিংবা দীর্ঘমেয়াদি সমাধান, প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, ‘দুটোই হতে পারে।’
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর হামলায় গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: মার্কিন অভিবাসী ফ্লাইট অবতরণের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান, নিষেধাজ্ঞার মুখে কলোম্বিয়া
ট্রাম্পের এই মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরাইলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ। তিনি বলেন, এটি একটি চমৎকার আইডিয়া। এটি বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করে দেব।
কিন্তু বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখছে হামাস। বাড়িঘর থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে উচ্ছেদের যে শঙ্কা রয়েছে, ট্রাম্পের বক্তব্যে সেটিই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে মনে করছে তারা।
হামাসের রাজনৈতিক শাখার সদস্য বাসেম নাইম বলেন, বিষয়টি ভালো উদ্দেশ্য হিসেবে দেখা দিলেও এমন কোনো সমাধান কিংবা প্রস্তাব গ্রহণ করবে না ফিলিস্তিনিরা।
আর পূর্বসূরি জো বাইডেনের মতো ট্রাম্পকেও কোনো ‘ব্যর্থ ধারণার’ পুনরাবৃত্তি না করার আহ্বান জানিয়েছেন আরেক হামাস নেতা সামি আবু জুহরি। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিরা মরতে রাজি, কিন্তু তারা নিজেদের মাতৃভূমি ছাড়তে চায় না। কোনো অজুহাতে তারা এই ভূখণ্ড ছেড়ে যাবে না।’
ট্রাম্পের এই নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করেছে জর্ডানও। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি সাংবাদিকদের বলেন, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উৎখাতের বিরুদ্ধে জর্ডানের অবস্থান আগের মতোই অবিচল ও কঠোর।
এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত মিসরের কাছ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূখণ্ড থেকে উৎখাতের বিরোধিতা করে আসছেন তারা।
ফিলিস্তিনি বিশ্লেষক গাসসান আল-খতিব বলন, অধিকৃত পশ্চিমতীর, গাজা উপত্যকাসহ জর্ডান ও মিসরে বাস করা ফিলিস্তিনিরাও ট্রাম্পের এই ধারণাকে গ্রহণ করবেন না। আমি মনে করি না, এমন কিছু ভাবার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
নিজেদের মাটি থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদে সমর্থন করে না বলে গতবছর জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া গাজার পরিস্থিতি নিয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বছরজুড়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।
কিন্তু সমালোচনার মুখে পড়লেও ইসরাইলকে সমর্থন দেওয়া অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। হিজবুল্লাহ, হুতি ও হামাসের মতো মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের প্রতিরক্ষায় সহায়তার কথা বলছে ওয়াশিংটন।
আরও পড়ুন: ইসরাইলি অবরোধ, বাড়িঘরে ফিরতে পারছেন না ফিলিস্তিনিরা
শনিবার জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে ফোনকলের পর ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তাকে বলেছি, তারা যাতে আরও বেশি শরণার্থী গ্রহণ করেন। কারণ জায়গাটি (গাজা) এখন একেবারে বিশৃঙ্খলায় অবস্থায় আছে। মিসরকেও একই কথা বলবো।
এ বিষয়ে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
২৬ দিন আগে
গাজায় ১৫ মাসের বিয়োগান্তক উপাখ্যান শেষে যুদ্ধবিরতির বার্তা
টানা ১৫ মাস ধরে গাজাবাসী অপেক্ষায় ছিলেন যুদ্ধ বন্ধের। শত-সহস্র প্রাণ ঝড়ে যাওয়ার পর অবশেষে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।যুক্তরাষ্ট্র, মিসর আর কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ বিরতিতে রাজি হয়েছে হামাস আর ইসরাইল। রোববার থেকে গাজার আকাশে দেখা যাবে না আর কোনো ইসরাইলি বোমারু বিমান।আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো বলছে, ২০২৪ সালের মধ্যভাগ থেকে চলছিল যুদ্ধবিরতির আলোচনা। একদিকে গোলটেবিল বৈঠক আর অন্যদিকে গাজার ওপর মুহুর্মুহু বোমাবর্ষণ। ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় নিহত এক হাজার ২০০ ইসরাইলির লাশের কাফফারা দিতে হয়েছে ৪৭ হাজার ফিলিস্তিনির জীবনের বিনিময়ে।মা হারিয়েছেন তার সন্তান, সন্তান হারিয়েছেন বাবা-মাকে, মৃত সন্তানের কফিন কাঁধে তুলে নিতে হয়েছে পিতাকে, বাস্তুচ্যুত হয়ে থাকতে হয়েছে ক্যাম্পে ক্যাম্পে। অনাহারে অর্ধাহারে বেঁচে থাকা। সকালে যার সঙ্গে নাস্তা করেছেন, দুপুরে হয়তো সেই প্রিয়জনের লাশ কাঁধে নিয়ে যেতে হয়েছে গোরস্থানে। এইতো ছিল ১৫ মাস ধরে গাজাবাসীর জীবন।সারা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে গাজার আর্তনাদ। প্রতিটি মানবাধিকার সংস্থা বলেছে, এটা আর কিছু না, নিরাপত্তার ধোয়া তুলে রীতিমতো প্রতিহিংসার খেলায় মেতে উঠেছে ইসরাইল। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, স্রেফ গণহত্যা চালানো হয়েছে গাজায়। যুদ্ধাপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে।অবশেষে সেই খুশির খবর। প্রায় অর্ধলক্ষ নিরীহ ফিলিস্তিনির লাশের ওপর দাঁড়িয়ে বোধোদয় হলো বিশ্ব মোড়লদের, ঘোষিত হলো যুদ্ধবিরতি।রোববার থেকে গাজার রাতের আকাশে হয়তো আর যুদ্ধবিমান না, দেখা মিলবে জ্বলজ্বলে নক্ষত্রের। হয়তো স্বজনহারা গাজাবাসী আবারও নতুন উদ্যোমে বাঁচতে শুরু করবে। সব ভুলে হয়তো ফিলিস্তিনের ধ্বংসস্তূপের ওপর ফুটবে নতুন দিনের লাল গোলাপ।পাঁচ দিন আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের শেষ মুহূর্তে মুখ রক্ষা করলেন জো বাইডেন। জানালেন, রোববার থেকেই ইসরাইলের সৈন্যরা ছাড়তে শুরু করবে গাজার মাটি। যারা বাড়িছাড়া হয়ে এতদিন উদ্বাস্তুর মতো বেঁচে ছিলেন, তারা ফিরে যাবেন নিজ গৃহে। আবারও আন্তর্জাতিক সাহায্য আসবে গাজার মাটিতে, শিশুর শূন্য থালায় জায়গা করে নিবে শুকনো রুটি।জাতিসংঘেরও জোর সেদিকেই। যুদ্ধ তো শেষ হলো, এবার এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সামলানোর আহ্বান সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতারেসের।হামাসের হাতে এখনো বন্দি ৯৪ জন ইসরাইলের নাগরিক, চুক্তি মোতাবেক যাদের মুক্তি দিতে হবে শিগগিরই। যদিও ইসরাইল সরকারের ধারণা এদের মধ্যে ৩৪ জন হয়তো আর বেঁচেই নেই। তবে হামাস জানিয়েছে, যারা বেঁচে আছেন, তাদের সবাইকেই ফেরত পাঠানো হবে ইসরাইলে।বুধবার গাজার রাত ছিল ভিন্নরকমের। যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিমান হামলায় নিহত ৩ ফিলিস্তিনি। শেষবেলায়ও শোধ তুলে নিতে ভুল করেনি আগ্রাসী ইসরাইল। তবুও রাতের আঁধার আর বোমার আঘাতকে তুচ্ছ করে তাবু ছেড়ে রাস্তায় বেড়িয়ে পড়ে গাজাবাসী। সবচেয়ে অবাককাণ্ড এত ক্ষয়, এত মৃত্যু, এত রক্ত; এরপরও ফিলিস্তিনিদের সৃষ্টিকর্তঅর প্রতি বিশ্বাসে ভাটা পড়েনি এতটুকু। রীতিমতো আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে আনন্দ উদযাপন করেছেন তারা।এই আনন্দ ঘরে ফেরার, নিজের টেবিলে বসে আহার করার, নিজের বিছানায় ঘুমানোর। হয়তো যে সন্তানকে কোলে নিয়ে মা ঘুমাতো সেই বুকের ধন বেঁচে নেই। হয়তো যে বাবার আঙুল ধরে স্কুলে যাতায়াত বোমার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে তার শরীর। যে ঘরে হয়তো প্রতিদিন বসতো চাঁদের হাট সেখানে ফিরতে হবে একা। তারপরও বেঁচে থাকাই যেন অনেক কিছু গাজাবাসীর জন্য। আর এই বেঁচে থাকার উদ্যোম নিয়েই এত আঘাতের পরেও মেরুদণ্ড সোজা করে মানচিত্র আঁকড়ে ধরে টিকে আছে ফিলিস্তিন, স্বপ্ন তাদের স্বাধীনতার।
৩৭ দিন আগে
ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে রাতে মিসর যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
কায়রোতে ১১তম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তিন দিনের সফরে মিসর যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত ১টায় ঢাকা ছাড়ছেন তিনি।
এদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে সমসাময়িক ইস্যুতে করা এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাড়া আরও কয়েকটি দেশের সরকারপ্রধান এতে যোগ দেবেন। এর মধ্যে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক ও পাকিস্তান। মালয়েশিয়ার শিক্ষামন্ত্রী ও নাইজেরিয়ার একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও এতে প্রতিনিধিত্ব করবেন।
কায়রোতে অনুষ্ঠিতব্য ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য ‘ইনভেস্টিং ইন ইয়ুথ অ্যান্ড সাপোর্টিং স্মল মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ, শেপিং টুমরোস ইকোনমি’।
আরও পড়ুন: ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন: প্রেস সচিব
আজাদ মজুমদার বলেন, ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলন ভবিষ্যতের অর্থনীতির জন্য যুব ও এমএসএমই ইস্যুতে সংস্থাটির গুরুত্বকে তুলে ধরে। এ কারণে সম্মেলনটি বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের তরুণদের নিয়ে বৈশ্বিক সম্মেলনে কাজ করতে তিনি সেখানে যাচ্ছেন। এমএসএমই ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় সেই বিষয়গুলো এখানে আলোচনা হবে।
এছাড়া প্রধান উপদেষ্টা কায়রোর আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেবেন বলেও জানান উপ-প্রেস সচিব।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও জেষ্ঠ্য সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।
আগামী ১৯ ডিসেম্বর ১১তম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ড. ইউনূসের কয়েকটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে এবং সেই প্রস্তুতিও চলছে। এই সপ্তাহে কায়রোতে অনুষ্ঠিত ডি-৮ কমিশনের ৪৮তম বৈঠকের মাধ্যমে ডি-৮ এর জন্য একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’ চিহ্নিত হয়েছে।
ডি-৮ অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন, যা ডেভেলপিং-৮ নামেও পরিচিত। বাংলাদেশ, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্কের মধ্যে পারস্পরিক উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য প্রতিষ্ঠিত একটি সংস্থা।
আরও পড়ুন: পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিলের চিন্তা
৬৭ দিন আগে
মিসর থেকে পেঁয়াজের প্রথম চালান পৌঁছাবে মঙ্গলবার
মিসর থেকে কার্গো বিমানযোগে আমদানি করা পেঁয়াজের প্রথম চালান ঢাকায় পৌঁছাবে মঙ্গলবার।
১৯২৫ দিন আগে