দুর্ভোগ
শীতে দরিদ্রদের দুর্ভোগ কমাতে বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান বিজিএমইএ সভাপতির
শীতে দরিদ্রদের দুর্ভোগ কমাতে এবং অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়াতে বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) ঠাকুরগাঁওয়ের দেবীপুরে সফিউদ্দিন আহমেদ ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তিদের গরম কাপড় বিতরণকালে ফারুক হাসান এ আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: দেশ-অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার অনুরোধ বিজিএমইএ সভাপতির
তিনি বলেন, যদিও আমরা অনেকেই সৌভাগ্যবান যে আমরা শীতের দিনগুলোতে গরম পোশাক পরিধান করে শীতকালের সৌন্দর্য উপভোগ করি, এমন অনেকেই আছেন, যারা প্রচণ্ড ঠান্ডায় পর্যাপ্ত পোশাকের অভাবে তীব্র কষ্টে রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এসব হতদরিদ্র শীতার্ত মানুষেরা যাতে করে এই তীব্র ঠান্ডায় কষ্ট না পান, তা নিশ্চিত করা আমাদের সবার দায়িত্ব।
আরও পড়ুন: তৈরি পোশাক শিল্পে মূল্য সংযোজনের ওপর জোর দিতে হবে: বিজিএমইএ সভাপতি
তিনি সমাজের সামর্থ্যবান, বিত্তশালী, ব্যবসায়ীসহ জনসাধারণকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, তারা তাদের স্বল্প ব্যবহৃত বা নতুন গরম কাপড় সুবিধাবঞ্চিত, দরিদ্রদের দান করে আর্তমানবতার সেবায় অবদান রাখতে পারেন।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালে ‘প্রত্যাশিত’ চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তৈরি পোশাক পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা বাড়তে পারে: বিজিএমইএ পরিচালক
কুড়িগ্রামে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রিতে নামায় দুর্ভোগে খেটে খাওয়া মানুষ
কুড়িগ্রামে জেঁকে বসেছে শীত। তাপমাত্রা নেমেছে ১১ ডিগ্রিতে। শীতের দাপটে কাবু হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের মানুষজন। ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে গোটা জনপদ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের দেখা মিললেও উত্তাপ কম।
এ অবস্থায় সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ। শীত ও ঠাণ্ডার কারণে কাজে বের হতে পারছেন না তারা। উত্তরীয় হিমেল হাওয়া ও কনকনে ঠাণ্ডায় গরম কাপড়ের অভাবে শীতকষ্টে পড়েছেন নদ-নদী তীরবর্তী চরের বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিস জানায়, আজ জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২ সপ্তাহ ধরে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বেড়েছে শীতের তীব্রতা
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের দিনমজুর মনসুর আলী বলেন, ‘কয়েকদিন থেকে খুব শীত। মাঠে কাজ করতে সমস্যা হয়। এখনো কেউ কম্বল দেয় নাই। কম্বলের খুব দরকার।’
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল গফুর বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা নদী ও চরাঞ্চল। সবচেয়ে শীত অনুভূত হয় এখানে। সরকারিভাবে এখনো কোনো শীতবস্ত্র পাইনি। শীত বস্ত্র পেলে এখানে বিতরণ করা হবে।’
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা আগামীতে আরো কমেএই জেলার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: শীত-কুয়াশায় বিপর্যস্ত কুড়িগ্রামের জনজীবন
ভ্রমণকালে দুর্ভোগ কমাতে এলো শেয়ারট্রিপের ফিচার
ভ্রমণ প্রেমীদের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তুলতে জনপ্রিয় ট্র্যাভেল-টেক প্রতিষ্ঠান শেয়ারট্রিপ তাদের প্ল্যাটফর্মে সম্প্রতি যুক্ত করেছে অভিনব সব ফিচার।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর) প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ট্র্যাভেল ই-সিম, স্মার্ট ডিলে, ফ্লাইট অ্যালার্টস আর ফ্লাইট কম্পেনসেশনের মতো নতুন ফিচারগুলো ভ্রমণকালে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ভোগ এড়াতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি শেয়ারট্রিপ ব্যবহারকারীদের ঘোরাঘুরির অভিজ্ঞতাকে আরও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তুলবে।
আরও পড়ুন: দারুণ সব অফারসহ শেয়ারট্রিপ এর ৫ লাখ ডাউনলোড উদযাপন!
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে যোগাযোগ সুবিধা উপভোগের ক্ষেত্রে ভ্রমণকারীদের কার্যকরী সমাধান হতে পারে শেয়ারট্রিপের ট্র্যাভেল ই-সিম।
যাত্রা শুরুর আগে যেকোনো সময় ব্যবহারকারীরা ই-সিম ইনস্টল করে নিতে পারবেন। তাদের পছন্দের গন্তব্য এবং ভ্রমণকাল অনুযায়ী সার্ভিসটি ব্যবহার করতে পারবেন।
ভ্রমণের সময় ফ্লাইট দুই ঘণ্টার দেরি হলে স্মার্টডিলে সুবিধার আওতায় শেয়ারট্রিপ ব্যবহারকারীরা বিনামূল্যে এয়ারপোর্টে লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।
যাত্রাকাল থেকে অন্তত ছয় ঘণ্টা আগে নিবন্ধন সাপেক্ষে ব্যবহারকারীরা এই সুবিধা পাবেন। শেয়ারট্রিপ থেকে তাদের একটি লাউঞ্জকি ভাউচার দেওয়া হবে। এটি ব্যবহার করে বিশ্বের ১৩ হাজারেরও বেশি এয়ারপোর্টে লাউঞ্জ সুবিধা পাওয়া যাবে।
ভ্রমণকারীরা যেন ফ্লাইটের সময়সূচি অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে পারেন, তা নিশ্চিত করবে শেয়ারট্রিপের নতুন সুবিধা ফ্লাইট অ্যালার্ট।
এর মাধ্যমে যাত্রা শুরুর ২৪ ঘণ্টা আগে থেকে ব্যবহারকারীদের জন্য ট্র্যাকিং নোটিফিকেশন চালু হয়ে যাবে।
ই-মেইল ও এসএমএসের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ফ্লাইটের সময়সূচি সংক্রান্ত হালনাগাদ করা তথ্য জেনে নিতে পারবেন। ফলে মানসিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করাও সহজতর হয়ে উঠবে।
কোনো কারণবশত ফ্লাইট দেরি, বাতিল বা ওভারবুক হয়ে গেলে শেয়ারট্রিপের নতুন ফিচার ফ্লাইট কম্পেনসেশন ব্যবহার করে ব্যবহারকারীরা ৬০০ ইউরো পর্যন্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবেন।
এছাড়াও মালামালের ক্ষতি (ভেঙে গেলে, হারিয়ে গেলে, নষ্ট হলে বা পেতে দেরি হলে) এর জন্য ১ হাজার ২৫০ ইউরো পর্যন্ত এবং ফ্লাইটে যেকোনো সমস্যা বা বাধার সম্মুখীন হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ৫ হাজার ৪০০ ইউরো পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে।
গ্রাহকদের নতুন এই সার্ভিসগুলো প্রদানের ক্ষেত্রে শেয়ারট্রিপকে সহযোগিতা করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ট্র্যাভেল সাপোর্ট সিস্টেম ট্রিপঅ্যাড।
এ প্রসঙ্গে শেয়ারট্রিপের ক্যাম্পেইন, প্রোডাক্ট, পার্টনারশিপ অ্যান্ড লয়্যালটির সিনিয়র ম্যানেজার নাফিজ চৌধুরি বলেন, ‘ভ্রমণকারীরা টুকটাক সাধারণ সমস্যার সম্মুখীন হন। কিন্তু শেয়ারট্রিপের মাধ্যমে আমরা ছোটখাট সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি উদ্ভাবনী আর সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের জন্য সবসময়ই বিশেষভাবে মনে রাখার মতো কিছু করতে চাই। ট্রিপঅ্যাডের সঙ্গে ফলপ্রসূ অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমরা এবারে কিছু নতুন ফিচার যুক্ত করেছি। যা ব্যবহারকারীদের মনে রাখার মতই সার্ভিস দেবে। এর মাধ্যমে দেশে ভ্রমণ অভিজ্ঞতার উন্নয়নে এক নতুন মাত্রা অর্জন করল শেয়ারট্রিপ।’
দেশের অন্যতম শীর্ষ ট্র্যাভেল-টেক প্ল্যাটফর্ম শেয়ারট্রিপ অ্যাপ এ পর্যন্ত ৮ লাখ ২০ হাজার বারেরও বেশি ডাউনলোড হয়েছে।
প্ল্যাটফর্মটির নানা ধরনের সার্ভিসের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন ৩০ লাখেরও বেশি গ্রাহক।
আরও পড়ুন: শেয়ারট্রিপের ৪র্থ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এসটি পে চালু
ই-সিএমএ বাংলাদেশ ২০২৩-এ ‘বেস্ট ট্রাভেল টেক প্ল্যাটফর্ম’ স্বীকৃতি পেল শেয়ারট্রিপ
মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার দেশগুলো অভিবাসী শ্রমিকদের দুর্ভোগ নিয়ে প্রায়ই নীরব থাকে: শাহরিয়ার
বর্তমান বিশ্বে অভিবাসন সমস্যা ক্রমেই জটিল হচ্ছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, আন্তর্জাতিকভাবে মানবাধিকার ইস্যুতে সোচ্চার বলে দাবি করা দেশগুলো প্রায়ই তাদের নিজেদের ভূখণ্ডে অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের বিষয়ে 'নীরব থাকে বা অস্বীকার' করে যা, অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি বলেন, 'বিশ্বজুড়ে আমরা সীমান্তে দেয়াল, জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন, সমুদ্রতীর এলাকায় বন্দিশালা, সমুদ্রে ইচ্ছাকৃতভাবে পরিত্যাগ, নির্বিচারে অভিবাসন চর্চা, আন্তঃদেশীয় অপরাধমূলক নেটওয়ার্ক ইত্যাদির অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য বাস্তবতা দেখেছি।’
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (জিএফএমডি) জন্য জাতীয় প্রস্তুতিমূলক পরামর্শের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, আইওএম বাংলাদেশের চিফ অব মিশন আবদুস সাত্তার এসোয়েভ, বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব আহমেদ মুনিরুস সালেহীন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (জিএফএমডি) ২০২২-২০২৩ সালের সভাপতি হিসেবে কাজ করা ফ্রান্স ২০২৪ সালের ২৩ থেকে ২৫ জানুয়ারি জেনেভায় জিএফএমডির ১৪তম শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের কাছে রাষ্ট্রদূত ইমরানের পরিচয়পত্র পেশ, পোশাক ও ওষুধ শিল্পে সহযোগিতায় দেশটির আগ্রহ প্রকাশ
ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা
ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে পরিবহন মালিক সমিতির নেতা ও শ্রমিকেরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। সকালে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহগামী কয়েকটি বাস এলেও পরে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ৭টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সব প্রকার যাত্রীবাহী বাস বন্ধ রয়েছে। তবে সকালে মাসকান্দা বাস টার্মিনালটিতে ময়মনসিংহগামী যাত্রীদের ভিড় হয়েছে।
আরও পড়ুন: নওগাঁ থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
এদিকে পরিবহন মালিকরা বলছেন, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে পরিবহন ভাঙচুরের ভয়ে তারা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে। তবে বিছিন্নভাবে কিছু বাস চলাচল করছে। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহগামী বাসও চলাচল করছে অনেক কম। তবে জেলার অন্য রুটেও বাস চলাচলও সীমিত রয়েছে।
ঢাকাগামী যাত্রী প্লাবণ বলেন, জরুরি প্রয়োজনে আমার ঢাকা যাওয়া জরুরি ছিল কিন্তু বাসসহ সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ থাকায় আমি যেতে পারছি না।
নেত্রকোনার থেকে আসা আরেক যাত্রী বলেন, আমি ঢাকায় যাওয়ার জন্য আসছি। এসে দেখি বাস চলাচল বন্ধ এখন উপায় না দেখে ফিরে যাচ্ছি। আমার মতো শত শত যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
নগরীর মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ডের ম্যানেজার খোরশেদ আলম বলেন, বাস মালিকদের নির্দেশে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তারা বলছেন- রাস্তায় যদি ভাঙচুর হয় তাহলে এর দায় কে নেবে। শনিবার (২৮ অক্টোবর) বাস চলাচল বন্ধ থাকতে পারে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে বাস মালিক ও শ্রমিকরা নিজ থেকে পরিবহন বন্ধ রেখেছে। তবে বিছিন্নভাবে কিছু বাস চলাচল করছে।
আরও পড়ুন: পরিবহন শ্রমিকদের বিরোধের জেরে নাটোর-রাজশাহী রুটে উভয় জেলার বাস চলাচল বন্ধ
রুট পারমিটের দোহাই দিয়ে ঢাকা-পটুয়াখালীর ৪ উপজেলায় বাস চলাচল বন্ধ, ভোগান্তিতে ঈদযাত্রীরা
চবির শাটল ট্রেন বন্ধ, দুর্ভোগে হাজারো শিক্ষার্থী
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চলন্ত শাটল ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখেছে রেলওয়ে রানিং স্টাফরা।
নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে ট্রেন না চালানোর কথা জানিয়েছেন তারা।
এর ফলে রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে নগরীর বটতলী রেলস্টেশন থেকে কোনো ট্রেন চবি ক্যাম্পাসের উদ্দেশে ছেড়ে যায়নি। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন।
রেলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী আহত হওয়ার পর আমাদের ২ লোকমাস্টারকে (এলএম) লাঞ্ছিত করা হয়েছে। যেহেতু তাদের নিরাপত্তার বিষয় রয়েছে তাই আপাতত ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: চবিতে ভাঙচুরের ঘটনায় ২ মামলা
তিনি বলেন, রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি বৈঠক রয়েছে। তারা যদি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে তাহলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে।
এদিকে শাটল টেন বন্ধ থাকার কারণে চবি প্রশাসন শিক্ষার্থীদের জন্য বটতলী রেলস্টেশন থেকে ৩টি এবং ষোলশহর রেলস্টেশন থেকে ৫টি বাসের ব্যবস্থা করেছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের উদ্যোগে ভিন্ন যানবাহনে ক্যাম্পাসের উদ্দেশে রওনা দেন।
চবি শিক্ষার্থী আশফাকুর রহমান বলেন, হঠাৎ করে ট্রেন বন্ধ হবে আমরা কেউ জানি না। সকালে বটতলী রেলস্টেশন এসে দেখি ট্রেন চলাচল বন্ধ। কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়াই রেলওয়ে শ্রমিকরা নাকি ধর্মঘট ডেকেছে।
এ বিষয়ে চবি প্রক্টর ড. নুরুল আজিম সিকদার বলেন, শাটল ট্রেন চালু করতে আমরা রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছি। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বৈঠক চলমান রয়েছে। আশা করি বিষয়টির সমাধান এবং দ্রুত ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এ সময়ে আমরা শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য উপাচার্যের নির্দেশে কয়েকটি বাস দিয়েছি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেনের ছাদে বসে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে চৌধুরীহাট এলাকায় ভেঙে পড়া গাছের সঙ্গে ধাক্কায় ১৬ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। এ ঘটনার জেরে ওইদিন শাটল ট্রেন বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে পৌঁছালে লোকমাস্টারদের লাঞ্ছিত করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বাসভবনসহ বিভিন্ন এলাকার স্থাপনায় ভাঙচুর চালানো হয়। ভাঙচুর করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন পুলের বেশ কয়েকটি ছোট-বড় গাড়ি।
আরও পড়ুন: চবির শাটল ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে আহত ২০, রাতভর উত্তাল ক্যাম্পাস
দেশজুড়ে তীব্র লোডশেডিংয়ে চরম দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ
প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও সারাদেশে চলছে তীব্র লোডশেডিং। দেশে প্রায় ১৬ হাজার মেগাওয়াটের চাহিদার বিপরীতে ১২-১৩ হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। যার ফলে, তাপমাত্রার পারদ ৩৮-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে থাকা অসহ্য গরমের মধ্যেও রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার মানুষ তীব্র লোডশেডিংয়ে শিকার হচ্ছেন।
দিনের বেলায় লোডশেডিং ইতোমধ্যেই ২৬০০ মেগাওয়াট অতিক্রম করেছে এবং সন্ধ্যায় তা সর্বোচ্চ ৩৫০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুত সরবরাহের অবস্থা আরও খারাপ বলে অভিযোগ রয়েছে। গ্রামাঞ্চলে দিনে ৩-৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যায়, বাকি সময় বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হয়।
মজার বিষয় হলো, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) অফিসিয়াল তথ্যানুযায়ী জানা যায়, মধ্যরাতে লোডশেডিংয়ের মাত্রা সর্বোচ্চ, যখন মানুষ গভীর ঘুমে থাকে।
আরও জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় দেশে ২৬১০ মেগাওয়াট লোশেডিং হয়েছে, যেখানে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট এবং উৎপাদন ছিল ১২ হাজার ১৬৬ মেগাওয়াট।
সন্ধ্যায় সর্বোচ্চ বিদ্যুত উৎপাদনের পূর্বাভাসে ১৫ হাজার ৮০০ মেগাওয়াটের সম্ভাব্য চাহিদার বিপরীতে ১৪ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট উৎপাদনের অনুমান করা হয়েছিল, যেখানে মাত্র ৯০০ মেগাওয়াট লোডশেডিংয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াত আমলের মতো দিনে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন হলে এখন কি হতো: নসরুল
রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন’। সন্ধ্যার পিক আওয়ারে লোডশেডিংয়ের মাত্রা ২৭০০ মেগাওয়াট থেকে ৩৫০০ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে।
তিনি বলেছেন, সরকারি প্রতিবেদনে সবসময় প্রকৃত চিত্র ফুটে ওঠেনা।
তবে, সারাদেশে বিদ্যুত সঞ্চালনের দায়িত্বে থাকা পিজিসিবি-র অফিসিয়াল তথ্যে দেখা যায় যে সোমবার বিকাল ৪টায় লোডশেডিং ছিল ২৮১৫ মেগাওয়াট; সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় ২৭৩৫ মেগাওয়াট এবং মঙ্গলবার সকাল ১টায় ৩২৬৬ মেগাওয়াট।
এছাড়া, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টায় (মধ্যরাত) ৩২১৫ মেগাওয়াট এবং দিবাগত রাত ২টায় (মধ্যরাত) ৩১৪৩ মেগাওয়াট লোডশেডিং ছিল।
এর মানে মধ্যরাতে সর্বোচ্চ লোডশেডিংয়ের পরিমাণ দেশে একটি নতুন ঘটনা, কারণ মধ্যরাতে দেশের চাহিদা কমে গেলেও বিদ্যুতের উৎপাদনও ১১ হাজার মেগাওয়াটের পর্যায়ে নেমে আসে।
আগের বছরগুলোতে সাধারণত মধ্যরাতে কোনো লোডশেডিং দেখা যায়নি। এ বছর নিয়মিত মধ্যরাতে লোডশেডিং হচ্ছে।
তবে বিপিডিবির কোনো কর্মকর্তা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সংকট নিরসনের চেষ্টা চলছে: নসরুল হামিদ
তাপপ্রবাহের মধ্যে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বেড়েছে মানুষের দুর্ভোগ
তাপপ্রবাহের মধ্যে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বেড়েছে মানুষের দুর্ভোগ
প্রচণ্ড গরমে তাপমাত্রার পারদ বাড়তে থাকায় গ্যাস ও কয়লা সংকটের কারণে সারাদেশের বিভিন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুর ১২টায় দেশে আড়াই হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং হয়েছে। যদিও এটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় গ্রাহকদের কাছ থেকে তুলনামূলকভাবে কম চাহিদা রয়েছে।
এছাড়া বিপিডিবি’র প্রকাশিত অফিসিয়াল পরিসংখ্যান দেখা যায়, দিনে ১৪ হাজার মেগাওয়াট চাহিদা পূরণের জন্য দেশে ২ হাজার ৩৫৩ মেগাওয়াট ঘাটতি ছিল কারণ বিপিডিবি সারা দেশে সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৬৪৭ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছিল।
বিপিডিবি’র একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেছেন, ‘সন্ধ্যায় সর্বোচ্চ ঘাটতি বাড়তে পারে যখন চাহিদা আরও ১৫ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটে উঠবে এবং এই গরমে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট অতিক্রম করতে পারে।’
তিনি এই সংকটের জন্য গ্যাস ও কয়লা সরবরাহের ঘাটতি এবং জেনারেশন ইউনিটে পানির স্তর কমে যাওয়াকে দায়ী করে বলেন, এসব কারণে প্রায় ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া রক্ষণাবেক্ষণ ও অন্যান্য কারণে আরও ২ হাজার ২৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন জেনারেশন ইউনিট চালুর বাইরে রয়েছে।
ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই অথরিটির (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাউসার আমীর আলী বলেন, তার এলাকায় ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটের চাহিদা পূরণের জন্য দিনের সর্বোচ্চ সময়ে ২০০ থেকে ৩০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়।
আরও পড়ুন: নতুন রেকর্ড গড়ে বিদ্যুত উৎপাদন ১৫,৩০৪ মেগাওয়াটে
ডেসকো এলাকার ভোক্তাদের অভিযোগ, দিনভর তারা অতিরিক্ত বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।
রামপুরা এলাকায় বসবাসকারী এক ডেসকো গ্রাহক বলেন, ‘আমাদের ভোর থেকে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের সম্মুখীন হতে হয়েছে।
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান জানান, তার এলাকায় দিনে প্রায় ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত ঘাটতি রয়েছে।
তিনি ইউএনবিকে বলেছেন, ‘ডিপিডিসি এলাকায় ১ হাজার ৭০০ মেগাওয়াটের চাহিদা পূরণের জন্য আমাদের ৪০০ মেগাওয়াটের লোডশেডিং অবলম্বন করতে হয়েছিল।’
রাজধানীর বাইরের ভোক্তাদের অভিযোগ, তাদের চরম লোডশেডিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে।
মাসুদুল হক, যিনি সম্প্রতি ময়মনসিংহে তার গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন, গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী লোকেরা দিনে ৩ থেকে ৫ ঘন্টা বিদ্যুত পেতে পারে।
অন্যান্য গ্রামীণ এলাকা থেকেও একই ধরনের অভিযোগ আসছে।
আরও পড়ুন: সরকার আন্তর্জাতিক বাজার অনুযায়ী বিদ্যুত ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ করবে: নসরুল
তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশের বিভিন্ন স্থান, দুর্ভোগে মানুষ
রাজধানীতে রবিবার তাপমাত্রার পারদ ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে যাওয়ায় তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশের বিভিন্ন স্থান। এতে দুর্ভোগে পড়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানের মানুষ।
অন্যদিকে, চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
এছাড়া দিনমজুর, রিকশাচালক, কৃষক এবং অন্যান্য যারা সাধারণত বাইরে কাজ করে তাদের জন্য সূর্যের তীব্র উত্তাপে কাজ চালিয়ে যাওয়া ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠছে।
এমনকি পশু-পাখিরাও প্রচণ্ড গরমে অস্থির হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু তাপপ্রবাহ অব্যাহত
আবহাওয়া অফিসের বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
এতে আরও বলা হয়েছে, সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
ইউএনবি খুলনা প্রতিনিধি জানান, খুলনা অঞ্চলে বর্তমানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। যা মানুষ ও প্রাণীদের জন্য বিপর্যয় সৃষ্টি করছে।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। এছাড়া প্রচণ্ড গরমে মানুষের চলাফেরা করা অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
এদিকে খুলনার উপকূলীয় এলাকায় পানির সংকটও জনগণের দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে। তীব্র গরমের মধ্যে রমজানে নিম্নআয়ের শ্রমিকদের সংগ্রাম আরও বেড়েছে।
মো. আনিসুল নামে একজন দিনমজুর বলেন, আমি প্রতিদিন ৫০০ টাকায় কাজ করি এবং প্রচণ্ড গরমে মাটির কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
রিকশাচালক মজনু জানান, তিনিও একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
আরও পড়ুন: দেশে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে
তিনি আরও জানান, তার রিকশায় ব্যাটারি নেই, তাই পায়ের প্যাডেল দিয়ে রিকশা চালাতে হয়, প্রচণ্ড গরমে যা করা খুবই কঠিন।
তা সত্ত্বেও, তাকে জীবিকা নির্বাহ করতে এবং তার পরিবারের খাবার জোগাতে এখনও তার রিকশা নিয়ে বের হতে হয়।এদিকে পথচারীরাও গরমে অস্বস্তি বোধ করছে। রোজায় তাদের গলা শুকিয়ে যাচ্ছে এবং প্রচণ্ড গরমে তাদের ঠান্ডাও লাগছে।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ জানান, আগামী তিন খেকে চার দিন তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে।
অন্যদিকে, প্রচণ্ড গরমে এমন অস্বস্তি তৈরি হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পেতে নগরীর ইলেক্ট্রনিক ও হ্যান্ড ফ্যানের দোকানে ভিড় করছেন অনেকে।
আরও পড়ুন: দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে
সিলেটে পানি কমছে ধীরগতিতে, বাড়ছে দুর্ভোগ
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। জেলার নদ-নদীর পানি সকল পয়েন্টে ধীরগতিতে কমছে। তবে পানি কমলেও দুর্ভোগ বাড়ছে। বন্যায় সব হারিয়ে নিঃস্ব হওয়া পরিবারগুলোতে চলছে হাহাকার। রাস্তাঘাটের বিপুল ক্ষয়ক্ষতিতে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। বিভিন্ন সড়কে এখন বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার পাশাপাশি নগরীতেও পানি কমা অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে নগরীর বন্যাকবলিত প্রধান সড়কগুলো থেকে বন্যার পানি সরেছে। তবে এখনো কিছু পাড়া মহল্লায় পানি রয়ে গেছে। পানিতে বিকট দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।
রবিবার বিকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিলেট এই সব তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা: এবার ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু
সিলেট বিভাগীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম শহিদুল ইসলাম বলেন, সিলেটের সবকটি পয়েন্টে নদ-নদীর পানি ধীরগতিতে কমছে। এর মধ্যে কিছু নদীর পানি কয়েকটি পয়েন্টে এখনো বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আশা করছি, অন্য নদীগুলোতেও বিপদসীমার নিচে নেমে আসবে।
জানা গেছে, নগরীর উপশহর, তেররতন, সোবহানীঘাট, যতরপুর, মিরাবাজার, জামতলা, তালতলা, শেখঘাট, বেতের বাজার, ঘাসিটুলা, কুয়ারপাড়, লালাদিঘীর পাড়, মির্জাজাঙ্গাল এলাকার পানি মূল সড়ক থেকে নেমে গেছে। তবে কিছু পাড়া-মহল্লার অভ্যন্তরের সড়ক ও বাসাবাড়ির সামনে পানি এখনো জমে রয়েছে। এসব পানিতে ময়লা–আবর্জনা ভাসতে দেখা গেছে। পানিগুলোও পচে কালো রং ধারণ করে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
নগরীর বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) রুহুল আলম বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো থেকে লোকজন বাসাবাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত মহানগর এলাকায় সহস্রাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান করেছিল। রবিবারও কিছু মানুষ আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে গেছে।
আরও পড়ুন: আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস, তবে রবিবার ১১টি জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
এদিকে ভারী বৃষ্টিপাতের আভাসে ঘরে ফেরা মানুষের মধ্যে শঙ্কা সৃষ্টি করেছে। রবিবার বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেটরি টিম (বিডব্লিউআইটি) জানিয়েছে, জুনের শেষে বা জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে।