ফরিদপুর
ফরিদপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত ৩০, বাড়িঘর ভাঙচুর-লুটপাট
ফরিদপুরের সালথায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ২০টি গ্রামের হাজারো মানুষ অংশগ্রহণে এই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) সকাল ৬টার দিকে শুরু হয়ে বেলা পৌনে ১২টা পর্যন্ত উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বালিয়া বাজার এলাকার তিনটি স্থানে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে অন্তত ২০টি বসতবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে; লুটপাট করা হয়েছে গবাদি পশুসহ অন্যান্য মালামাল।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে গট্টি ইউনিয়নের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জাহিদ মাতুব্বর ও নুরু মাতুব্বরের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। সম্প্রতি এই বিরোধের জেরে উভয় নেতার সমর্থকদের কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।
স্থানীয়দের দাবি, জাহিদ ও নুরু মাতুব্বর বিগত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী সরকারের পতনের পর তারা বিএনপিতে যোগ দিয়ে গট্টি ইউনিয়নের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন।
৫ দিন আগে
ফরিদপুরে বিএনপির দুপক্ষের সমাবেশকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় বিএনপির দুই পক্ষের সমাবেশকে কেন্দ্র করে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল ইকবাল ১৪৪ ধারার আদেশ জারি করেন। তার সই করা লিখিত আদেশের একটি কপি ‘ইউএনও আলফাডাঙ্গা’ নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউএনও রাসেল ইকবাল জানান, জারি করা পত্র অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ও জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তায় প্রশাসন থেকে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন ও আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে আলফাডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর বিএনপির আয়োজনে আজ (শনিবার) বিকেলে পৌর সদরের আসাদুজ্জামান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি ও ফরিদপুর-১ আসনের দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশী খন্দকার নাসিরুল ইসলামের।
অপরদিকে, বিকেল ৩টায় আলফাডাঙ্গা পৌর সদরের আরিফুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে, গত ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসে বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির দুই পক্ষের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় এবং উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মিনহাজুর রহমান লিপনের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে আরেকটি বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী ও বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর।
দুই পক্ষের সমাবেশকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যাতে না ঘটে, সেই বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়েই ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
আলফাডাঙ্গা পৌরসভার স্কুল, মাঠ ও বাজার এলাকায় শনিবার (২৯ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। এই সময়ের মধ্যে সব ধরনের সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ-মিছিল, গণজমায়েত, বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ও সব ধরনের দেশীয় অস্ত্র বহনসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির একত্রে অবস্থান কিংবা চলাফেরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে খন্দকার নাসিরুল ইসলামের অনুসারী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান খসরু বলেন, এক সপ্তাহ আগে আমাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়ন ও দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। হঠাৎ করে দেখলাম, ঝুনু সমর্থকরা প্রতিবাদ সমাবেশের জন্য মাইকিং করছে। দুই পক্ষের সমাবেশের জন্য প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। এক্ষেত্রে সমাবেশ করব কি করব না, বিষয়টি জেলা কমিটির সঙ্গে কথা বলে পরে সিদ্ধান্ত নেব।
শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু-সমর্থিত আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খোসবুর রহমান খোকন বলেন, উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে এবং গত ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসে বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির দুই পক্ষের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মিনহাজুর রহমান লিপনের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। তবে যেহেতু প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে, সেহেতু আমরা কর্মসূচি সফল করার জন্য মাঠে থাকব।
জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় সভা-সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলাম এবং অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির বর্তমান সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু (ভিপি ঝুনু)।
গত ২১ অক্টোবর ১০ বছর পর ফরিদপুর-১ আসন (মধুখালী, বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলা) এবং পৌর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে জেলা বিএনপি। তিনটি উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটিতে প্রাধান্য পান কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থকরা। এ নিয়ে নাসির মিয়া ও ভিপি ঝুনু মিয়ার মধ্যে দলীয় কোন্দল তীব্র আকার ধারণ করে।
কমিটি ঘোষণার পর থেকে বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলায় কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল অব্যাহত রাখেন ভিপি ঝুনু মিয়া। গত ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসে বোয়ালমারীতে আলাদা আলাদা সমাবেশ ডাকে খন্দকার নাসিরুল ইসলাম গ্রুপ ও ঝুনু গ্রুপ। একপর্যায়ে সমাবেশ রক্তক্ষয়ী সহিংসতায় রূপ নেয়। সহিংসতায় উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মিনহাজুর রহমান লিপনসহ দুই পক্ষের ১৫–২০ জন আহত হন। এ ঘটনায় দুই পক্ষের প্রধান দুই নেতাকে আসামি করে স্থানীয় থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে।
৬ দিন আগে
ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা মানছেন না ফরিদপুর ও রাজবাড়ীর জেলেরা
মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ফরিদপুর ও রাজবাড়ীর অনেক জেলে পদ্মায় মাছ শিকার করছেন নিয়মিত। সময়মতো সরকারি সহায়তা না পাওয়া ও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে নদীতে নামতে হচ্ছে বলে দাবি তাদের। তবে মৎস্য বিভাগ বলছে, ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞার সময়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
পদ্মা পাড়ে গিয়ে দেখে বোঝার উপায় নেই যে মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা চলছে। বরং তার উল্টোটাই মনে হবে। এই সময়েও দুই জেলার পদ্মায় অর্ধশতাধিক পয়েন্টে অসংখ্য জেলে ইলিশ শিকার করছেন।
জেলেদের দাবি, সরকারি প্রণোদনা না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই জেল-জরিমানা উপেক্ষা করে নদীতে নামছেন তারা। তাদের অনেকের মৎস্য কার্ড থাকার পরও সরকারের সহায়তা পাননি।
আরও পড়ুন: যশোরে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে শীতকালীন সবজি চারা, পোঁছে যাচ্ছে সারা দেশে
নাম প্রকাশে একাধিক জেলে জানান, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে সরকারের দেওয়া ২৫ কেজি চাল দিয়ে পরিবার নিয়ে চলাটা কষ্টকর হয়ে যায়। নৌকা ও জাল মেরামতের জন্য বিভিন্ন আড়ৎ ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন অনেকেই। এ সময় আয়-রোজগার কমে যাওয়ায় জেলেরা ঋণের চাপে পড়েছেন, তাই বাধ্য হয়ে নদীতে যাচ্ছেন তারা।
৪৭ দিন আগে
ফরিদপুরে বাস উল্টে শিশুসহ নিহত দুই, আহত ১৫
ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা উপজেলায় একটি যাত্রীবাহী বাস উল্টে শিশুসহ দুইজন নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৫ জন।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার পূর্বসদরদী নামক স্থানে অপর একটি যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনায় নিহত শামসুন্নাহার (৪০) নামে এক নারী বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার নজরুল ইসলামের স্ত্রী। তবে তাৎক্ষণিকভাবে নিহত শিশুটির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: মেহেরপুরে ট্রাকের ধাক্কায় জাবি ছাত্রী নিহত
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোকিবুজ্জামান জানান, ঢাকা থেকে বরিশালগামী ইউরো লাইন নামের একটি পরিবহন বাস ও শ্যামলী পরিবহন একে অপরকে ওভারটেক করার সময় শ্যামলী পরিবহনের ধাক্কায় ইউরো লাইন বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পানি ভর্তি খাদে উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই শামসুন্নাহার নিহত হন।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় জনতা, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও হাইওয়ে পুলিশ উদ্ধার অভিযান চালিয়ে নিহতদের লাশ এবং আহতদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি উদ্ধার করা হয়েছে। একই সঙ্গে শ্যামলী পরিবহনের বাসটিকেও আটক করা হয়েছে।
৫০ দিন আগে
উত্তাল ভাঙ্গা: থানাসহ চারটি সরকারি দপ্তরে হামলা-ভাঙচুর, আহত অনেকে
সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা। বিক্ষোভ রুপ নিয়েছে সহিংসতায়। থানা, উপজেলা পরিষদ, হাইওয়ে থানা, পৌরসভায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা। আগুন দেওয়া হয়েছে মোটরসাইকেলে। এসব ঘটনার ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে সাংবাদিকদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
সোমবার ( ১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১টা থেকে ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। পরে কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙ্গা গোলচত্বরে অবস্থান নেন।
এর আগে, বেলা সাড়ে ১১টা থেকে গোলচত্বরের ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নেন তারা। এ সময় সেখানে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে পুলিশকে বিক্ষুব্ধদের কাউকে বাধা দিতে দেখা যায়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোকারীদের সঙ্গে দুপুর ১ টার দিকে বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার জনতা লাঠিশোটা, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মিছিল নিয়ে যোগ দেন। পরক্ষণেই দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালানো হয়।
এ সময় ১০ থেকে ১২ জন আর্মড পুলিশের সদস্য দৌড়ে পার্শ্ববর্তী ভাঙ্গা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মসজিদে আশ্রয় নেন। উত্তেজিত জনতার ইটপাটকেলে রক্তাক্ত অবস্থায় দৌড়াতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের। পরে কিছু সময় ঘিরে রাখেন উত্তেজিত জনতা। একপর্যায়ে মাদ্রাসা ও মসজিদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে পুলিশ সদস্যদের রক্ষা করেন।
আরও পড়ুন: আসন পুনর্বিন্যাস: ফরিদপুরে টানা পঞ্চম দিনের মতো অবরোধ, সমন্বয়ক আটক
এরপর সেখান থেকে বিক্ষুব্ধরা থানার দিকে চলে যান। থানায় থাকা গাড়ি ও থানা ভাংচুর করেন। ভেতরে আটকা পড়েন পুলিশ সদস্যরা। পরে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন সেখানে থাকা মোটরসাইকেলে। পরে হাইওয়ে অফিস ও পৌরসভা কার্যালয়ে ভাংচুর চালানো হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন মাইটিভির ভাঙ্গা উপজেলা প্রতিনিধি সরোয়ার হোসেন।
এদিন সকাল থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা মাঠে অবস্থান নিলে সকাল সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। পরে বেলা সাড়ে ১১ টায় হঠাৎ করেই সেখানে জড়ো হোন বিভিন্ন এলাকার মানুষ।
জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্যা বলেন, ‘আমরা বিক্ষুব্ধদের শান্ত করার চেষ্টা করছি এবং নির্বাচন কমিশনে জানানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে আমাদের বলা হয়েছে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে। আমরা দ্রুত প্রতিবেদন দিলে আশা করি দুয়েকদিনের মধ্যে সমাধান হবে।’
ফরিদপুর-৪ আসনের অন্তর্ভুক্ত ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদি ইউনিয়নকে পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা) আসনের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে নির্বাচন কমিশন ৪ সেপ্টেম্বর গেজেট প্রকাশ করার পর থেকেই এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয়।
এর প্রতিবাদে গত শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুটি মহাসড়কসহ (ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল) এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ শুরু করেন স্থানীয়রা। ওইদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নিয়ে তিনদিনের আল্টিমেটাম দেন বিক্ষুব্ধরা।
কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনদিন সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ করা হয়। এতে তীব্র ভোগান্তিতে পড়েন দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার মানুষ। এরপর শনিবার তিন দিনের সকাল সন্ধ্যা অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়।
পরে ঘোষণাকারী সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক ও আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ম.ম. সিদ্দিক মিয়াকে আটক করে ডিবি পুলিশ। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপরাধে গতকাল রোববার রাতে ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করে পুলিশ।
৮০ দিন আগে
আসন পুনর্বিন্যাস: ফরিদপুরে টানা পঞ্চম দিনের মতো অবরোধ, সমন্বয়ক আটক
সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে ও দুটি ইউনিয়ন পুনর্বহালের দাবিতে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় তৃতীয় দফায় টানা পঞ্চম দিনের মতো অবরোধ কর্মসূচি চলছে। এর মধ্যে রেলপথ অবরোধের সময় ট্রেন আটকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া, চলমান এ আন্দোলনের এক সমন্বয়ককে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকেই পূর্বঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী দুটি মহাসড়ক ও রেলপথের অন্তত ১০টি এলাকায় অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছেন বিক্ষুব্ধরা।
পরে সকাল ১০ টার দিকে পুখুরিয়াসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে সরেজমিনে দেখা যায়, স্থানীয়রা সড়কে গাছের গুড়ি, টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন।
এদিন সকাল ৯ টার দিকে রাজবাড়ী-ফরিদপুর-ঢাকা রেলপথের ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদি রেল ক্রসিংয়ে নকশীকাঁথা ট্রেন আটকে দেন বিক্ষুব্ধরা। এ সময় জোর করে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন একাধিক যাত্রী।
ঢাকায় মেয়ের বাসায় পেঁয়াজ নিয়ে ট্রেনে যাচ্ছিলেন ফরিদপুরের সালথা উপজেলার রসুলপুর গ্রামের বাচ্চু মাতুব্বর (৫২) নামে ব্যক্তি। মাথায় পেঁয়াজের বস্তা নিয়ে তাকে পুখুরিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় হাঁটতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: সংসদীয় আসন বিন্যাসের প্রতিবাদে ফরিদপুরে দুই মহাসড়ক অবরোধ
তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাস না পাইয়্যা ট্রেনে করে ঢাকায় মাইয়্যাটার বাসায় যাবার গেছিলাম। ওই জায়গ্যা (হামিরদি রেলক্রসিং) যাওয়ার পর রাস্তার ওপর দেহি আগুন জ্বলতেছে, অনেক মানুষ ট্রেনের সামনে দাড়ায় পড়ছে। তহন ট্রেন দাড়ায় পড়ে, আমাদের নামায় দিছে।’
এ বিষয়ে ভাঙ্গা রেলস্টেশন কর্মকর্তা সাকিবুর রহমান বলেন, রাজবাড়ী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল নকশিকাঁথা। ট্রেনটি আটকে দেওয়ায় ভাঙ্গা জংশনে ঢাকা থেকে আসা রাজবাড়ীগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস বন্ধ হয়ে আছে। তবে খুলনার ট্রেনটি (জাহানাবাদ এক্সপ্রেস) অবরোধ করার আগেই ঢাকায় পৌঁছে গিয়েছে।
এদিকে, রংপুরের বাসিন্দা মনির হোসেন নামে আরও এক ব্যক্তিকে পায়ে হেঁটে আসতে দেখা যায়। মাদারীপুরে আত্মীয়ের বাসায় গিয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি রংপুরে যাব, ৬ কিলোমিটার পথ হেঁটে আসলাম, কোনো গাড়ি পেলাম না। মানুষরে কষ্ট দিয়ে উনাদের কিসের আন্দোলন, আমি জানি না।’
এর আগে, শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার আলগী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় চত্বরে ‘আলগী ও হামিরদি ইউনিয়ন এবং ভাঙ্গা উপজেলার সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদ’ —এর ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনদিনের সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের ডাক দেন আলগী ইউপি চেয়ারম্যান ম. ম. সিদ্দিক মিয়া।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা বৃহস্পতিবার প্রকাশ করবে ইসি
ঘোষণার পরপরই ওই রাতে তাকে নিজ বাসা থেকে আটক করেছে ডিবি। তিনি এই আন্দোলনের সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ হোসেন জানান, রাতে ডিবি পুলিশ সিদ্দিক মিয়াকে আটক করে ফরিদপুরে নিয়ে গেছে। থানায় এখনো হস্তান্তর করা হয়নি।
ফরিদপুর-৪ আসনের অন্তর্ভুক্ত ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদি ইউনিয়নকে পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা) আসনের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে নির্বাচন কমিশন ৪ সেপ্টেম্বর গেজেট প্রকাশ করার পর থেকেই এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয়।
এর প্রতিবাদে গত শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুটি মহাসড়কসহ (ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল) এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ শুরু করেন স্থানীয়রা। ওইদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নিয়ে তিনদিনের আল্টিমেটাম দেন বিক্ষুব্ধরা।
কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনদিন সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ করা হয়। এতে তীব্র ভোগান্তিতে পড়েন দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার মানুষ। এরপর গতকাল তৃতীয় দফায় আবার তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, মানুষের যাতে ভোগান্তি না হয় এবং যান চলাচলে স্বাভাবিককরণে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। এর পাশাপাশি আমরা বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছি।
৮১ দিন আগে
ফরিদপুরে লাখ টাকার নিষিদ্ধঘোষিত চায়না দুয়ারি জাল পুড়িয়ে ধ্বংস
জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ফরিদপুরের নগরকান্দ উপজেলায় তিনটি বিলে অভিযান চালিয়ে চারশ চায়না দুয়ারি জাল জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে সেগুলোকে পুড়িয়ে নষ্ট করা হয়।
বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে নগরকান্দার শশা, শাকরাইল ও জুঙ্গনদী বিলে এই অভিযান পরিচালিত হয়। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও নগরকান্দা থানা পুলিশও অভিযানে সহায়তা করেছেন।
নিষিদ্ধঘোষিত চায়না দুয়ারি জাল ব্যবহারে দেশীয় মাছের প্রজনন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়, এমনকি জাতীয় সব প্রাণীকেও হত্যা করা হয় এই ফাঁদ দিয়ে।
নগরকান্দা উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ হিল আরবার বলেন, এ উপজেলায় একাধিক বিল ও বাওড় রয়েছে, অবৈধ ফাঁদ দিয়ে কিছু দুষ্টু চক্র ও মৎস্য শিকারীরা প্রতিনিয়ত মাছের প্রজন্মকে ধ্বংস করছে। আমাদের এই অভিযানে প্রায় ২০ লাখ টাকার চায়না দুয়ারি ধ্বংস করা হয়েছে।
অভিযান প্রসঙ্গে নগরকান্দা উপজেলান নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. দবিরউদ্দিন জানান, বিলগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধঘোষিত চায়না জাল জব্দ করা হয়েছে। পরে সেগুলো জনসম্মুখে বিনষ্ট করা হয়। কিন্তু এই নিষিদ্ধ জাল ব্যবহারে কারও স্বীকারোক্তি না পাওয়ায় কাউকে সাজার আওতায় আনা যায়নি।
আরও পড়ুন: নড়াইলে ১৪৪৩ পিস ইয়াবা জব্দ, গ্রেপ্তার ১
তিনি বলেন, এসব জালে শুধু ছোট বড় মাছ নয় শামুক, কাকড়া, কুচো, ব্যাঙসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণীও আটকে পড়ছে এবং মারা যাচ্ছে। এর ফলে এই এলাকার প্রাণীবৈচিত্র ধ্বংস হচ্ছে, ক্ষতি হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশেরও। যারা এই নিষিদ্ধ জাল দিয়ে প্রকৃতি ধ্বংস করছে তাদের শুধু শাস্তি দিয়ে বিরত রাখা যাবে না সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন এই কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, যারা এই জাল ব্যবহার করে প্রকৃতি ধ্বংস করবে, প্রশাসন নিয়ে তারাও সেসব লোকদের জাল ধ্বংস করবেন। তাছাড়া, প্রাণ ও প্রকৃতি রক্ষায় এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও আশ্বাস দেন ইউএনও দবিরউদ্দিন।
৯৯ দিন আগে
ফরিদপুরে বেড়েছে তিনটি নদীর পানি
উজান থেকে নেমে আসা পানি ও ধারাবাহিক বৃষ্টিপাতে ফরিদপুর জেলায় নদ-নদীর পানি প্রতিদিনই বাড়ছে। এতে পদ্মা,মধুমতি ও আড়িয়াল খাঁ তীরবর্তী বাসিন্দারা পড়েছেন ভোগান্তিতে।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন র্বোড সূত্র বলছে, পদ্মার পানি বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, এ ছাড়া আড়িয়াল খাঁ নদের পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১০৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেড়েছে মধুমতি নদীর পানিও। পানি বৃদ্ধিতে জেলার চার উপজেলার নদী বেষ্টিত ১৩টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে মানুষের যাতায়াতসহ নানা ভোগান্তি বেড়েছে। দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন জানান, ধারাবাহিক পানি বৃদ্ধিতে নদীতে স্রোতের পরিমান বেড়েছে, এতেই নদ-নদীর আশেপাশের এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙন । আমরা অতি জরুরি স্থানে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে চেষ্টা করে যাচ্ছি।
পড়ুন: চাঁপাইয়ে পদ্মার পানি কমছে, তবুও নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা
ফরিদপুর সরদ উপজেলায় ডিক্রীরচর ইউনিয়ন ও নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায় সেখান মানুষ যাতায়াতের জন্য নৌকা ব্যবহার করছে। সড়ক ও চলার পথ গুলোতে পানি উঠেছে । অধিকাংশ পরিবার শিশু ও কিশোরদের নিয়ে রয়েছে বিপদে। তাদের স্কুলে যাতায়াত ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে।
নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোস্তাকুজ্জামান বলেন, এভাবে পানি আরো কয়েক দিন বাড়তে থাকলে চরে গো-খাদ্যের সংকটন সৃষ্টি হবে।
১১১ দিন আগে
ফরিদপুরে ‘চোর সন্দেহে’ যুবককে ঝুলিয়ে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় চোর সন্দেহে এক যুবককে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে অমানবিকভাবে পিটিয়েছে এলাকাবাসী।
উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের ডোবরা আকিজ জুটমিল এলাকায় মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাতে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার বিকেলে এই ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশিত হলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ডোবরা গ্রামের সালাম সিকদারের ছেলে আহাদ সিকদার (৩০) এলাকার চিহ্নিত চোর ও মাদক সেবনকারী। গত শনিবার মিল গেটের মাহাবুবের মুদি দোকানে চুরি হয়। এ ছাড়া একজনের পাট চুরি হয় এবং একইসঙ্গে মিলের তারও চুরি যায়। এসব চুরির অভিযোগে ডোবরা গ্রামের কালাম শেখ ও রবিউল শেখের সঙ্গে আরও লোকজন মিলে মঙ্গলবার রাতে আহাদকে ধরে একটি দোকান ঘরে নিয়ে আড়ার সঙ্গে পা ঝুলিয়ে অমানবিকভাব পেটাতে শুরু করেন।
মারধরের একপর্যায়ে চুরির ব্যাপারে নিজের দোষ স্বীকার করলে আহাদকে বোয়ালমারী থানায় সোপর্দ করেন রবিউল শেখ। পরে আহাদের অভিভাবকদের অনুরোধে ভালো হওয়ার শর্তে মুচলেকা নিয়ে থানা থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ছাড়া পেয়ে আহাদ বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসা নেন।
এ বিষয়ে উপজেলা যুবদলের সদস্য কালাম শেখ বলেন, ‘আহাদ একজন চিহ্নিত চোর এবং মাদক সেবনকারী। বিভিন্ন এলাকায় সে চুরি করে। চিতারবাজারে একবার মোবাইলের দোকানে চুরি করে ধরা পড়ে। চিতারবাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাকিল মোল্যা তাকে বেদম মার দেয়, তারপরও সে চুরি ছাড়ে নাই।’
আরও পড়ুন: সিংড়ায় কবুতর চুরির অভিযোগে যুবককে পিটিয়ে হত্যা
তিনি বলেন, ‘এক সপ্তায় (সপ্তাহে) এলাকার তিন জায়গায় চুরি করেছে সে। তাই এলাকার লোকজন ধরে তাকে পিটিয়েছে। পরে আমরা তাকে উদ্ধার করে পুলিশে দেই।’
উপজেলা যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘মিলের পক্ষ থেকে করা তিনটি মামলার আসামি আহাদ। চুরি করার কারণেই তাকে এলাকার লোকজন ধরে এনে তাকে মারধর করে। খবর পেয়ে আমি তাকে উদ্ধার করে মোটরসাইকেলে করে থানায় দিয়ে আসি। আমি উদ্ধার না করলে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। পরে আহাদের অভিভাবকদের অনুরোধে ভালো হওয়ার শর্তে থানা থেকে সে ছাড়া পায়।’
তবে এই প্রতিবেদকের কাছে চুরির বিষয়টি অস্বীকার করেন আহাদ সিকদার। তিনি বলেন, ‘আমি একজন ইজিবাইক-চালক। কালাম আর রবিউলের লোকজন আমাকে ধরে নিয়ে আড়ার সঙ্গে দুই পা বেঁধে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পিটিয়ে চুরির স্বীকারোক্তী আদায় করেছে। লোহার রড, কাঠ ও হাতুড়ি দিয়ে আমাকে পিটিয়েছে ওরা।’
তার অভিযোগ, ‘কালামদের সঙ্গে দল না করায় তারা আমাকে ধরে নিয়ে অমানবিকভাবে পিটিয়েছে। পরে আমাকে থানায় নিয়ে যায়। আমার অভিভাবক এবং এলাকার বড় ভাই সুমন খন্দকারের চেষ্টায় থানা থেকে ছাড়া পেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি আসি।’
এমনকি, তার দুটি মোবাইল এবং মানিব্যাগও যারা পিটুনি দিয়েছে, তাদের কাছে রয়ে গেছে বলে দাবি করেন তিনি।
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘এলাকাবাসী কোনো মামলা না করায় আহাদকে আদালতে চালান করা হয়েছিল। আদালত থেকে সে জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়। তাকে মারপিট করার বিষয়টি আমাদের কেউ বলেনি।’
১১২ দিন আগে
গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যার বিচার দাবিতে ফরিদপুরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
গাজীপুরের সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যার প্রতিবাদে ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন ফরিদপুরের কর্মরত সাংবাদিকরা।
শনিবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন তারা।
প্রেস ক্লাবের সামনে মুজিব সড়কে আধা ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচি থেকে সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতন ও হামলা মামলার প্রতিবাদ এবং নিরাপত্তার দাবি জানানো হয়।
ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়াল, শফিকুল ইসলাম মনি, আসাদুজ্জামান দুলাল, সঞ্জীব দাস, শেখ মনির হোসেন, শেখ সাইফুল ইসলাম অহিদ, মাসুদুর রহমান তরুণ, প্রমুখ।
এ সময় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, সত্য ঘটনা প্রকাশ করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমকর্মীদের উপর হামলা নির্যাতন ও মামলা দেওয়া হয়। গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন প্রকাশ্য দিবালোকে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। আমরা এ হত্যার তীব্র নিন্দা জানাই। এবং এই ঘটনার নেপথ্যের সবাইকে যত দ্রুত সম্ভব গ্রেপ্তা করার আহ্বান জানাই সরকারের কাছে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, আটক ৫
বক্তারা বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে এটা দুঃখজনক। বিগত দিনে ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে। আজও দেশের কোথাও না কোথাও সাংবাদিকদের নির্যাতন শিকার হতে হচ্ছে।
তারা বলেন, সাংবাদিকদের কন্ঠ রোধ করার জন্য বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। অবিলম্বে এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ করাসহ সারা দেশের সাংবাদিকের নিরাপত্তার জন্য অন্তবর্তী সরকারের নিকট জোর দাবি জানান বক্তারা।
১১৭ দিন আগে