ফরিদপুর
বৈরী আবহাওয়ায় ফরিদপুরে পাট উৎপাদনে বেড়েছে ব্যয়, শঙ্কায় চাষিরা
বেড়েই চলেছে দেশের সোনালী আশ পাটের উৎপাদন ব্যয়। চাষাবাদের খরচের তুলনায় কাঙ্ক্ষিত বাজার দরও পাওয়া যাচ্ছে না। পাট চাষাবাদের ব্যয়ের সঙ্গে বিক্রিমূল্যের ব্যবধান বাড়ায় ক্রমেই শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন চাষিরা।
প্রতিমণ পাট গত বছরের চাষি পর্যায়ে বিক্রি হয়েছে প্রকারভেদে আড়াই হাজার থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকায়। যেখানে এর উৎপাদন ব্যয় আর বিক্রয়মূল্য হয়েছিল সমান সমান। ফলে বিনালাভের পাট চাষিদের মুখে ফোটেনি হাসি।
দেশের পাট উৎপাদনে শীর্ষ অবস্থানে থাকা জেলা ফরিদপুর। কিন্তু চলতি মৌসুমে পাটের আবাদে সবক্ষেত্রে ব্যয় বাড়ছে বলে জানিয়েছেন এই জেলার চাষিরা। তারা মনে করছেন, এবার পাটের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ। তাই পাট উৎপাদন খরচের ঊর্ধ্বগতির লাগাম ট্রেনে ধরতে কৃষি বিভাগের সহযোগিতা চায় তারা।
কৃষিপ্রধান জেলা ফরিদপুরের সালথা, নগরকান্দা, বোয়ালামারী, ভাঙ্গা উপজেলার মাঠ থেকে চলতি মৌসুমে পেঁয়াজসহ অন্যান্য ফসল তুলে নেওয়ার পরই কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন পাটের বীজ বপনে।
এ মৌসুমে জেলাজুড়ে ৮৬ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কিন্তু শুকনো মৌসুমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে পানির দুষ্প্রাপ্যতাসহ পাট চাষাবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রায় সকল ধরনের উপকরণ ও শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদিত পাটের ন্যায্যমূল্য পাওয়া না পাওয়ার দ্বিধায় পড়েছেন কৃষকরা।
জেলার পাট উৎপাদনের শীর্ষে থাকা সালথা, নগরকান্দা, বোয়ালমারী, ভাঙ্গা উপজেলা বিভিন্ন ফসলি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, পাটচাষিদের কেউ পাটখেতে সেচ দিয়ে ভিজাচ্ছে, কেউ বীজ বপন করছেন, কেউ বা খেত থেকে আগাছা পরিস্কারের কাজ করছেন। তবে তাদের সকলের চোখে মুখেই হতাশার ছাপ দৃশ্যমান ছিল।
এসকল মাঠের পাটচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আবহাওয়ার পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে গত কয়েক বছর ধরে ক্রমশ ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামছে। সংকট এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, অনেক মেশিনে পানিই উঠছে না। এসব কারণে জমিতে সেচ খরচ বেড়েছে প্রায় তিন গুণ। একই সঙ্গে সার ও ওষুধসহ বিভিন্ন উপকরণের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি দৈনন্দিন শ্রমিকের অতিরিক্ত মূল্য ভাবিয়ে তুলছেন কৃষকদের।
বোয়লামারীর দাদুড়ে বিলের পাটচাষিরা জানান, ব্যয়ের সঙ্গে আয় মেলাতে না পেরে হাঁপিয়ে উঠতে হচ্ছে তাদের।
আরও পড়ুন: সুপেয় পানির সংকটে হুমকিতে ফেনীর জনস্বাস্থ্য
২ দিন আগে
ফরিদপুরে বাস উল্টে নিহত ৭, আহত ৩৩
ফরিদপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস উল্টে বাবা-ছেলেসহ সাতজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত ৩৩ জন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসাদুজ্জামান।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বেলা ১১ টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের জেলা সদরের বাখুন্ডা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ওসি আসাদুজ্জামান জানান, এ দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত সাতজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন— নগরকান্দা উপজেলার শেয়ারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা জোয়ার সর্দার (৬৫) ও তার ছেলে ইমান (২৮) এবং একই উপজেলার ভারতী রানী সরকার (৪০)।
এ দুর্ঘটনায় আরও প্রাণ হারান হাজীগঞ্জের চরভদ্রাসন এলাকার আলম (৪০), মোল্লাবাড়ি সদরের ফজিরুন নেছা (৬০), দীপা খান(৩৪) ও আজিবুর(৪৩)।
আরও পড়ুন: মেহেরপুর সড়ক দুর্ঘটনায় মাছ ব্যবসায়ী নিহত
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের বিবরণে জানা যায়, মুকসুদপুর থেকে ফরিদপুরের উদ্দেশে ছেড়ে আসছিল ফারাবি পরিবহন নামে একটি লোকাল বাস। বাখুন্ডা এলাকায় পৌঁছালে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে থাকা একটি বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে খাদে পড়ে যায়।
এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও দুজন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. দিলরুবা জবা জানান, আহত রোগীদের তারা সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন।
ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের টিম লিডার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে মৃত অবস্থায় এবং ৩১ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করি।’
৯ দিন আগে
ফরিদপুরে হতদরিদ্রের বাড়ি পোড়ানোর অভিযোগ আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে
ফরিদপুরে দিনমজুর মোসাম্মাৎ সামেলা বেগমের (৪৫) বসতবাড়ি পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য সুভাষ সাহার বিরুদ্ধে। ক্ষতিগ্রস্ত সামেলা বেগম বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের শেলাহাটি গ্রামের বাসিন্দা।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সামেলা বাদী হয়ে রবিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে সুভাষ সাহা (৬৮) ও তার ম্যানেজার গোবিন্দর (৫৫) নাম উল্লেখ করে এবং ১০ থেকে ১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে সুভাষ সাহা এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। সুভাষ সাহার বাড়ি সাতৈর ইউনিয়নের বড়নগর গ্রামে।
সরেজমিন ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সামেলা বেগম স্বামী সন্তান নিয়ে দীর্ঘ ২৫ বছর শেলাহাটি গ্রামে রেলের জমিতে বসবাস করে আসছে। পাশেই সুভাষ সাহার জমি রয়েছে। ওই রেলের জমিটুকু পাওয়ার জন্য সুভাষ সাহা মরিয়া হয়ে উঠে। বেশ কিছুদিন ধরে সুভাষ সাহা ও তার লোকজন বিভিন্ন সময় বসতবাড়ি ভেঙে দেওয়ার হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। শনিবার (৫ এপ্রিল) সামেলার অনুপস্থিতিতে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়িতে আগুন দিয়ে বসত ঘর পুড়িয়ে দেয়।
সামেলা বেগম বলেন, সুভাষ সাহা বিভিন্ন সময় বাড়ি ভেঙে দেওয়ার হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। শনিবার রাতে তার লোকজন দিয়ে আগুন ধরিয়ে বসতবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। এ সময় ঘরে থাকা যাবতীয় জিনিসপত্র পুড়ে গেছে। ঈদের সময় মানুষের কাছ থেকে আনা যাকাতের টাকা, মানুষের কাছ থেকে চেয়ে আনা চাল বিক্রির মোট ৫০ হাজার টাকা তারা নিয়ে যায়। এখন আমি সর্বহারা হয়ে গেলাম।
একই গ্রামের হাবিল বিশ্বাস বলেন, ‘সুভাষ সাহা নিজে ও তার লোকজন বিভিন্ন সময় ঘর বাড়ি ভেঙে নেওয়ার হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিল। গত শনিবার রাতে তার লোকজন দিয়ে আগুন ধরিয়ে বাড়িটি পুড়িয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেশী সেলিনা বেগম বলেন, ‘সুভাষ সাহা বিভিন্ন সময় এখানে এসে বসত বাড়ি ভেঙে নেওয়ার হুমকি দিয়া আসছে।’
জানতে চাইলে সুভাষ সাহা বলেন, ‘আমি সামেলা বেগমের বাড়ি পুরাইনি। তার অন্য জায়গা বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার চেষ্টা করছি। সামেলা বেগম আমার জমিতে বসবাস করে।’
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, বাড়ি পোড়ানোর একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করার জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
১০ দিন আগে
ফরিদপুরে দুই ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম
ফরিদপুর পৌরসভার মুন্সিবাজার এলাকার রড সিমেন্টের ব্যবসায়ী দুই ভাই রঞ্জিত বিশ্বাস ও লিটন বিশ্বাসকে কুপিয়ে যখন করেছে দুর্বৃত্তরা।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১১টার দিকে গেরদা ইউনিয়নের কাজীবাড়ি মসজিদ মোড় এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহতদের বরাত দিয়ে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, শুক্রবার দিবাগত রাতে গেরদা ইউনিয়নের সাহেব বাড়ী থেকে সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ১১টার দিকে নিজ বাড়িতে ফেরার সময় কাজীবাড়ি মসজিদ মোড় এলাকায় পৌঁছালে দুটি মোটরসাইকেলে থাকা চার ব্যক্তি পেছন থেকে রঞ্জিত বিশ্বাস নামের এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। এ সময় রঞ্জিত বিশ্বাসের সঙ্গে থাকা তার সহোদর লিটন বিশ্বাস আহত হন। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রঞ্জিত বিশ্বাসকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে ট্যাংক লরি-সিএনজির সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৪
তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক টিম ঘটনা অনুসন্ধানে কাজ শুরু করেছে। হামলার কারণ জানার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আহত রঞ্জিত বিশ্বাসের ভাই লিটন বিশ্বাস বলেন, গেরদা সাহেব বাড়ির পাশে আমার বড় ভাই রাতে দাওয়াত খেতে গিয়েছিল। রাত বেশি হওয়াতে কোন গাড়ি পাচ্ছিল না বাড়ি আসার জন্য। পরে আমাকে ফোন দিলে আমি মোটরসাইকেল নিয়ে ওই বাড়ির থেকে রঞ্জিতকে নিয়ে আমাদের বাড়ির দিকে আসছিলাম। পথেই তিন চার ব্যক্তি দুইটি মোটরসাইকেল থেকে গুলি করে। পরে আমরা রাস্তায় পড়ে গেলে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়।
১২ দিন আগে
ফরিদপুরে নিখোঁজ কিশোরের লাশ মিলল ঘাসখেতে
ফরিদপুরের নগরকান্দায় ঘাসখেত থেকে মো. মাহবুবুর রহমান (১৭) নামে এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মাহবুবুর দহিসারা গ্রামের বাসিন্দা এবং সাইফুল্লাহ মোল্যার ছেলে।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে উপজেলার চরযোশরদী ইউনিয়নের দহিসারা গ্রামের মাঠ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে গত বুধবার রাত ১০টার দিকে সে নিখোঁজ হয়।
নিহতের বাবা সাইফুল্লাহ মোল্যা বলেন, ‘মাহবুবুর মাদকাসক্ত ছিল। তাকে নেশা থেকে বিরত রাখতে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরিতে দেওয়া হয়। গত তিন বছর সে গার্মেন্টসে চাকরি করলেও নেশা করা থেকে বিরত হতে পারেনি। বুধবার রাত ১০টার দিকে মাহবুবুর আমার কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর আর ফেরেনি। আমরা তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খবর পাই মাহবুবুরের লাশ ঘাসখেতে পড়ে আছে।’
আরও পড়ুন: খুলনায় ইউপি চেয়ারম্যানকে লক্ষ্য করে হাতবোমা নিক্ষেপ
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফর আলী বলেন, ‘ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করে আনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সে নেশা খেয়ে মারা গেছে। তারপরও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসার পর মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।’
১৩ দিন আগে
ফরিদপুরে সেপটিক ট্যাংক বসাতে গিয়ে মাটি চাপায় শ্রমিক নিহত
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে গর্ত খুঁড়ে শৌচাগারের সেপটিক ট্যাংক বসাতে গিয়ে মাটি চাপায় শফিকুল শেখ (২৭) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বিকালে বোয়ালমারী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আধাঁরকোঠা স্টেডিয়াম পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শফিকুল শেখ উপজেলার ময়না ইউনিয়নের ময়না গ্রামের মৃত মোমিন শেখের ছেলে ও দুই সন্তানের জনক। সজিব শেখ (৬) ও মরিয়ম (৪) নামে তার দুই সন্তান রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, মাহবুবুর রহমানের পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় সেপটিক ট্যাংক নির্মাণের জন্য শফিকুলসহ দুই শ্রমিক খনন করছিলেন। ২০ ফুট গভীর দুটি গর্ত খনন শেষে রিং স্লাব বসানোর সময় আকষ্মিক পাড় ধসে গর্তের পাশে খননকৃত স্তুপ করে রাখা মাটির নিচে চাপা পড়েন শফিকুল। খবর পেয়ে বোয়ালমারী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি টিম স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রায় আধঘণ্টা উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে শফিকুলকে উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: মাছ ধরতে গিয়ে ভারতীয়দের মারধরের শিকার বাংলাদেশি, হাসপাতালে ভর্তি
বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ইমরান হুসাইন বলেন, ‘হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। ধারণা করা হচ্ছে— ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়েছে।’
১৫ দিন আগে
ফরিদপুরে ট্রাক-মোটরসাইকেল-অটোরিকশার ত্রিমুখী সংঘর্ষ, নিহত ২
ফরিদপুরে তরমুজবাহী ট্রাক, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার ত্রিমুখী সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও একজন।
রবিবার (১৬ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে ঢাকা-ফরিদপুর মহাসড়কে ফরিদপুর সদরের শিবরামপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন আখ সেন্টারের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- মোটরসাইকেলচালক ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের নয়ন শেখ (২৪) ও একই ইউনিয়নের মদনদিয়া গ্রামের শাজাহান শেখ (৫২)।
এলাকা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরের দিক থেকে রাজবাড়ীগামী একটি তরমুজবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি মোটরসাইকেল ও রিকশার সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় মোটরসাইকেলের আরোহী নয়ন শেখ নামে এক যুবক ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে ঘরে লাগা আগুনে নারীর মৃত্যু
মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা নিহত নয়নের মা মারাত্মকভাবে আহত হন। এছাড়া আহত রিকশাচালক ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী জানান, রাজবাড়ীগামী তরমুজবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেল ও রিকশার সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল আরোহী নয়ন শেখ নিহত হন। আহতাবস্থায় মোটরসাইকেলের পিছনে থাকা নয়ন শেখের মা ও রিকশা চালককে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রিকশা চালক শাজাহান শেখ মারা যান। তবে ট্রাক চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।
৩২ দিন আগে
ফরিদপুরে পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলন, ৫০০ কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা
দীর্ঘ সময় ধরে পেঁয়াজ চাষাবাদের সুনাম রয়েছে ফরিদপুর জেলার। পেঁয়াজ উৎপাদন করে থাকে এ জেলার চাষিরা। পাটের পরে ধান ও পেঁয়াজ আবাদে চাষিদের আগ্রহ রয়েছে। কারণ এ জেলার মাটি পাট পেঁয়াজ ও ধান উৎপাদনে উৎকৃষ্ট। পেঁয়াজ উৎপাদনে দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলার স্থানটি দখলে রেখেছে ফরিদপুর।
গত এক যুগ ধরে পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলন হচ্ছে ফরিদপুরে। দেশের সরকারি পেয়াঁজ বীজের চাহিদার মোট ৫০ শতাংশ বেশি বীজ সরবরাহ করে ফরিদপুরের চাষীরা। আর এই কৃষি পণ্যটি উৎপাদন করে অর্থনৈতিকভাবে জীবন মানের উন্নয়ন ঘটিয়েছে তারা ( জেলার পেঁয়াজ বীজ চাষিরা)।
এজন্যই এই বীজকে 'কালো সোনা' বলে এ অঞ্চলের মানুষ। সেই বীজ (কালো সোনা) উৎপাদনে ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে এখন চাষিরা। চলতি মৌসুমে অন্তত ৫০০ কোটি টাকা বাণিজ্যের আশা কৃষি বিভাগের।
জেলার সদর, বোয়ালমারী, ভাঙ্গা, মধুখালী ও সদরপুর উপজেলার মাঠগুলোতে যেদিকে চোখ যায়, সেদিকেই শুধু, সাদা কদম ফুলের সমারোহ।
সরজমিনে ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠজুড়ে পেঁয়াজের সাদা ফুল দেখা মেলে। এই খেতগুলোতে এখন কৃষক কৃষানিরা পরিবারেরর সদস্য ও শ্রমিক নিয়ে সাদা কদমে হাত দিয়ে পরাগায়নের কাজ করছেন। কোথাও আবার আগাছা পরিষ্কার ও কদম পচা রোথে ঔষধ স্প্রে করছে।
এ মৌসুমে পেঁয়াজের ভালো উৎপাদনের পর ফরিদপুরে বাম্পার ফলন হয়েছে পেঁয়াজ বীজ আবাদেও।
অম্বিকাপুরের কৃষানী শাহেদা বেগম ও লাভলী পারভিন জানান কিভাবে কালো সোনা খ্যাত পেয়াঁজ বীজ উৎপাদন হয়, ছোট শিশুর মতো যত্ন করতে হয় এই বীজ উৎপাদনে। নভেম্বর-ডিসেম্বরে আবাদ শুরু হয়ে ফলন উঠবে এপ্রিল-মে’তে। এরপর এক বছর বীজ সংরক্ষণ করে পরবর্তী বছরে করা হয় আবাদ ও বিক্রি। তবে চলতি মৌসুমে মৌমাছি না থাকায় হাত দিয়েই পরাগায়ন করতে হচ্ছে।
পেঁয়াজের এই মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পেঁয়াজ বীজের ক্ষেতে কাজ করতে আসে শ্রমিকরা। তারা জানায় বীজের খেতে কাজ করেই চলে তাদের সংসার ও সন্তানদের পড়ালেখা।
পাবনা থেকে ফরিদপুরে পেয়াঁজ বীজ খেতে কাজ করতে আসা আনোয়ার, কুষ্টিয়া থেকে আসা আব্দুর রহমান প্রামানিক, রহিম মোল্লা, শইব্রাহিম শেখ'র মতো বেশ কয়েজন শ্রমিক জানান, এ মৌসুমে বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকরা পেঁয়াজ চাষাবাদের কাজে যুক্ত হতে ফরিদপুর অঞ্চলে গত এক যুগের বেশি সময় ধরে আসছে।
তারা জানান, আমরা দিনরাত পরিশ্রম করি পেঁয়াজের বীজ ঘরে তোলা পর্যন্ত। ভালো দানা উৎপাদন করতে পারলে মালিকের যেমন লাভ হয়, তেমনি আমাদেরও আর্থিক পরিবর্তন আসে জীবনমানের।
আরও পড়ুন: পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল করতে দেশে উৎপাদন বাড়াতে হবে: ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক
এদিকে মাঠের পর মাঠ বীজের সাদা ফুলের সৌর্ন্দয্য দেখতে প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা আসছে মাঠগুলোতে। নানা অঙ্গ ভঙ্গিতে তুলছেন সেলফি। আবার দলবেধে এসে করছেন সুটিং।
কৃষি বিভাগ জানায়, দেশের চাহিদার অর্ধেক বীজ উৎপাদন হয়ে থাকে এ জেলায়। এবছর পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৮৫৪ হেক্টর জমিতে, যা থেকে উৎপাদিত বীজের বাজার মূল্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আনোয়ার হোসেন বলেন, গুণগত মান ভালো হওয়ায় ফরিদপুরের বীজেরে চাহিদা সর্বত্র রয়েছে। প্রকার ভেদে এর বাজার মূল্য দুই লাখ থেকে পাঁচ লাখ পর্যন্ত ওঠে। এই কৃষি পণ্যটির বাজারমূল্য অধিক হওয়ায় ‘কালো সোনা’ বলে অভিহিত করে।
সম্প্রতি কয়েক বছর হলো পেঁয়াজ বীজ খেতে মৌমাছির উপস্থিতি কমে গেছে। এ কারণে পরাগায়নের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা চাষিদের ফুলের উপর হাত দিয়ে পরাগায়ন কিভাবে করতে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, এবছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বীজের আবাদ হয়েছে। দিন দিন পেয়াঁজ বীজ আবাদের চাষির সংখ্যা বাড়ছে।
তিনি জানান, এবারের আবহাওয়া ভালো থাকায় ১ হাজার ৮৫৪ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৬৪ টন। যার বাজার মূল্য আনুমানিক প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে পেঁয়াজের চাষ বেড়ে দ্বিগুণ
৪০ দিন আগে
ফরিদপুরে ঘরে লাগা আগুনে নারীর মৃত্যু
ফরিদপুরের মধুখালীতে অগ্নিকাণ্ডে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাত সাড়ে ৭টার দিকে রায়পুর ইউনিয়নের মাঝকান্দী পূর্বপাড়া রফিক মিয়ার বাড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে।
আগুনে পুড়ে নিহত ছমিরন বেগম এসময় নামাজরত অবস্থায় ছিলেন।
পরে ৯৯৯ ফোন পেয়ে মধুখালী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এলাকাবাসীর চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয়রা ফরিদ মিয়া বলেন, ‘আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে ছমিরন বেগম নামাজরত ছিলেন। তিনি ছাড়া আর কেউ বাড়িতে ছিলেন না। এ সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ঘরে আটকা পড়ে ছমিরন বেগম নামের ওই বৃদ্ধা আগুনে পুড়ে মারা যান।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে নারীসহ নিহত ২
মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডে ঘরে থাকা অবস্থায় ছমিরন বেগম নামে এক বৃদ্ধা নারী মারা গেছেন। আমরা তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।’
৪২ দিন আগে
ফরিদপুরে আগুনে পুড়ল ১০ দোকান, ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় অগ্নিকাণ্ডে ১০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত মধ্য রাতে বানা বাজারে হঠাৎ আগুন লাগে। স্থানীয়দের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
পরে খবর পেয়ে আলফাডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে আগুনে পুড়ল ৯ দোকান
৪২ দিন আগে