মরিশাস
মরিশাসে বঙ্গবন্ধুর স্মরণে বৃক্ষরোপণ
মুজিববর্ষের অংশ হিসেবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাতিসংঘের বাংলায় ভাষণ দেয়া ৪৭তম বার্ষিকী উপলক্ষে মরিশাসের পোর্ট লুইসের প্লেন-ভিয়ার পার্কে ৪৭টি বৃক্ষের চারা রোপণ করা হয়েছে।
দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ হাইকমিশন মরিশাস ও সিটি কাউন্সিলের যৌথ উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানে মরিশাস সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সরকার ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হসনু ও পরিবেশমন্ত্রী কাভিদাশ রামানো উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট সেবা
স্বাগত বক্তব্যে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদ বলেন, অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রীও একই সময়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষণ দিয়েছেন। ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের বর্তমান সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ পরিবেশ রক্ষায় সদস্য দেশগুলোর সাথে জলবায়ু পরিবর্তের বিরূপ প্রতিক্রিয়া নিরসনে ও মানিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, এ সব বৃক্ষ পরিবেশ সংরক্ষণে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন: সৌদির ওয়াদি আদ দাওয়াসির শহরে বাংলাদেশিদের দূতাবাসের কনস্যুলার সেবা
মরিশাস সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সরকার ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী জানান, বঙ্গবন্ধুর স্মরণে আজকের এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে পার্কের পরিবেশ আরও সুশীতল ও স্নিগ্ধ হবে এবং বঙ্গবন্ধুর মতো মহান ব্যক্তির স্মরণে এ ধরনের মহৎ কর্ম অত্যন্ত প্রশংসার দাবি রাখে। সেই সাথে পৃথিবীর পরিবেশ ও জলবায়ু রক্ষায় এ ধরনের কর্মসূচী বিশেষ অবদান রাখবে।
আরও পড়ুন: আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাসে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত
পরিবেশ মন্ত্রী কাভিদাশ রামানো বলেন, মরিশাস কপ-২৬ এ যোগদানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং এ সম্মেলনের ফলাফলের জন্য গভীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।
সেই সাথে এই চারাগাছগুলো একদিন বৃক্ষে পরিণত হওয়ার মাধ্যমে পার্কের পরিবেশ আর মনোরম করে তুলবে বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন তিনি।
মরিশাসে কাজে গিয়ে ধর্ষণের শিকার, ন্যায়বিচার চান নারী
পূর্ব আফ্রিকার দেশ মরিশাসে কাজের জন্য গিয়ে মালিকের ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক বাংলাদেশি নারী। এই ঘটনায় শনিবার বিকালে তিনি রামপুরা থানায় মানবপাচার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের পৃথক ধারায় একটা মামলা করেছেন।
এর আগে তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে সাহায্য চেয়েছে। মন্ত্রণালয় তাকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। তবে ওই নারীর অভিযোগ, আসামিরা তাকে নানাভাবে চাপ দিচ্ছে। তিনি ন্যায়বিচার চান।
মামলা সূত্রে এবং ওই নারীর অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মরিশাস পৌঁছানোর পর কোম্পানির গাড়িতে করে বিমানবন্দর থেকে তাকে ফায়ার মাউন্ট কোম্পানিতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ফায়ার মাউন্ট টেক্সটাইল কোম্পানিতে হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। তবে ঠিকমত বেতন দেয়া হতো না।
আরও পড়ুন: পান দিতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার প্রতিবন্ধী তরুণী
মরিশাসে অবস্থানরত ওই ফায়ার মাউন্ট টেক্সটাইলের কর্মীদের ক্যান্টিন পরিচালনা করেন বাংলাদেশি মোহাম্মদ শাহ আলম (৪৩) যার বাড়ি ফেনী। এই শাহ আলম এবং তার সহযোগী ফুরকান, সিদ্দিক ও আসলাম একদিন তাকে বলেন, কোম্পানির মালিক তোমাকে পছন্দ করে। তুমি যদি তার সাথে থাকতে পারো তাহলে তোমার অনেক ভালো হবে। আসলামের এমন প্রস্তাবে তিনি রাজি হন নি। এরপর শাহ আলম বিভিন্ন সময় তাকে আবার ভয়ভীতিও দেখায়। একদিন শাহ আলম বলেন, কোম্পানির মালিক তোমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে তাই তোমাকে মালিকের কাছে যেতে হবে। এই বলে তাকে ফায়ার মাউন্ট টেক্সটাইলের মালিক অনিল কলির বাসায় নিয়ে যায়। এরপর মালিকের রুমে তাকে রেখে বাইরে চলে যান। আর সেইদিনই ফায়ার মাউন্ট টেক্সটাইলের মালিক অনিল কলি তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন।
ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, এরপর ভিডিও ধারণ করা আছে এবং তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিখিয়ে শাহ আলম ও কোম্পানির মালিক অনিল কলি প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করতেন তাকে। একদিন শাহ আলম প্রস্তাব দেন মালিকের বন্ধুর সাথে রাত কাটাতে। এই প্রস্তাবে রাজি না হলে আবার নির্যাতন করেন।
তার অভিযোগ, এক পর্যায়ে তিনি অন্তঃসত্বা হয়ে পড়লে মরিশাসের একটি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে বাচ্চা নষ্ট করে ফেলেন। এরপর তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর শর্ত দিয়ে বলেন, মেয়েটির বাবাকে মরিশাসে আনা হবে।
আরও পড়ুন: ডাকাতির সময় নারীকে ধর্ষণ, শিশু হত্যার অভিযোগ
এই নারী জানান, এর আগে তার বাবাই বিদেশে কাজের জন্য রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স গোলাম রাব্বি ইন্টারন্যাশনালে (আর.এল-১০৭৮) গেলে ওই রিক্রুটিং এজেন্সির লোকজন বলে বয়স বেশির কারণে আপনি বিদেশ যেতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে আপনার মেয়েকে মরিশাস পাঠান। এরপর বেতন ২৮ হাজার টাকার কথা বলে আরেকটি রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স এম আক্তার এন্ড সন্স এর মাধ্যমে তাকে মরিশাসে আনা হয়। এখন তিনি কোন অভিযোগ করবেন না এমন শর্তে ফের গতবছরের নভেম্বরে তার বাবাকে ওই কোম্পানিতে আনা হয় এবং তাকে দেশে পাঠানোর কথা বলা হয়। তার বাবা সেখানে পৌঁছানোর পর বাবাকে তাদের হেফাজতে নিয়ে মোহাম্মদ শাহ আলম তাকে বিমানবন্দরে নিয়ে গিয়ে গত ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ সালে অসুস্থ অবস্থায় দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেন। এখন দেশে অভিযোগ করার পর তার বাবাকেও নজরদারি করাসহ ও মানসিকভাবে নানান নির্যাতন করা হচ্ছে।
ওই নারী জানান, দেশে ফেরার ঠিক তিন দিনের মাথার রাতের আধারে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার বোন দেখে সেটি ঠেকান। এরপর বড় বোনকে সব বিস্তারিত জানান। এরপর তারা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ব্র্যাকের পক্ষ থেকে তাকে চিকিৎসাসহ কাউসেলিং সহায়তা করা হয়।
ওই নারীর দাবি, ওই কোম্পানিতে ৬০০ এরও বেশি বাংলাদেশি নারী কাজ করেন। এদের মধ্যে পছন্দের নারীদের টার্গেট করে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করেন মোহাম্মদ শাহ আলম, ফুরকান, সিদ্দিক ও আসলাম। ফায়ার মাউন্ট টেক্সটাইলের মালিক অনিল কোহলি প্রায়ই নারীদের নিপীড়ন করেন।
বাংলাদেশের বেসরকারি একটি টেলিভিশনে এই খবর প্রকাশের পর মরিশাসের কয়কেটি গণমাধ্যমও সংবাদটি প্রকাশ করে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি উঠে। এরপর অভিযুক্তরা নানাভাবে সমঝোতার প্রস্তাব দিচ্ছে ভুক্তভগী নারীকে।
আরও পড়ুন: ৯৯৯ এ কল : শিশুকন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা আটক
ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, ভুক্তভোগী এই নারী যে বর্ণনা দিয়েছেন সেটি ভয়াবহ। বিদেশে কাজের কথা বলে কাউকে যৌন নিপীড়ন করা বা পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করোনো মানবপাচারের মধ্যে পড়ে। মরিশাস এবং বাংলাদেশ সরকারের উচিত যৌথভাবে এই ঘটনার তদন্ত করা। আরও কোন বাংলদেশি নারী এমন নিপীড়নের শিকার কি না সেটিও খুঁজে বের করে বিচার করা উচিত। আশা করছি মন্ত্রণালয় ও দূতাবাস এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবে। আর বাংলাদেশেও যেহেতু মানবপাচার আইনে মামলা হয়েছে সেটিরও যথাযথ তদন্ত ও বিচার হবে বলে আশা করি।
মরিশাসের সাথে সম্পর্ক দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বলেছেন, মরিশাসের সাথে বর্তমান সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মরিশাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ বাংলাদেশি নিহত
ভারত মহসাগরে অবস্থিত দ্বীপ রাষ্ট্র মরিশাসে সড়ক দুর্ঘটনায় চার বাংলাদেশি শ্রমিক নিহত এবং বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন।