ইসরায়েল
বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল
আগের মতোই বাংলাদেশের পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল করা হয়েছে। রবিবার (৭ এপ্রিল) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) চিঠিটি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে পূর্বের ন্যায় বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহালের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল।
আরও পড়ুন: পাসপোর্ট সূচকে একধাপ উন্নতি বাংলাদেশের
আগে বাংলাদেশের পাসপোর্টে লেখা থাকত, ‘এই পাসপোর্ট বিশ্বের সব দেশের জন্য বৈধ, ইসরায়েল ব্যতীত’। তবে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ২০২০ সালে দেশে নতুন ই-পাসপোর্ট চালু করলে সেই পাসপোর্টগুলো থেকে এই লেখা বাদ দেয়। এমনকি এ বিষয়ে কোনো ঘোষণাও দেওয়া হয়নি।
৪ দিন আগে
সিরিয়াকে অস্থিতিশীল করে তুলছে ইসরায়েল: এরদোগান
সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতনের পর ইসরায়েল দেশটিকে আবারও অস্থিতিশীল করে তুলছে বলে অভিযোগ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। স্থানীয় সময় রবিবার (১২ এপ্রিল) তুরস্কে চলমান আন্টালিয়া কূটনীতি ফোরামে (এডিএফ) অংশগ্রহণ করে এই মন্তব্য করেন তিনি।
ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনার মাত্র দুদিন পরেই এমন বক্তব্য বিস্মিত করেছে অনেক কূটনৈতিক বিশ্লেষককে। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এমন খবর দিয়েছে।
মূলত, এই দুটি দেশেরই সামরিক বাহিনী সিরিয়াতে সক্রিয় রয়েছে। ফলে সেখানে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে গত বুধবার (৯ এপ্রিল) আজারবাইজানে বৈঠক করেন তুরস্ক ও ইসরায়েলের কর্মকর্তারা।
তবে বৈঠকের পরও সিরিয়ায় শান্তি নষ্ট করায় ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রমের সমালোচনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: তুরস্কে ধরপাকড় উপেক্ষা করে এরদোগানবিরোধী বিক্ষোভ চলছে
আন্টালিয়া সম্মেলনে বিশ্ব নেতা ও কূটনীতিকদের উদ্দেশ্যে এরদোগান জানান, ‘সিরিয়ায় নতুন করে কোনো সংঘাত তারা চান না। যে বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাসার-আল-আসাদ সরকারের পতন হয়েছে, তা ইসরায়েলের কারণে ব্যর্থ হচ্ছে।’
আসাদের পতনের পর সিরিয়ার গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক এরদোগান।
সিরিয়ার ভৌগলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। সিরিয়ার ওপর চলমান বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আঙ্কারার চেষ্টার কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান আহমেদ আল সারা। সিরিয়ায় নতুন করে কাউকে সংঘাত সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না বলে সারাকে আশ্বস্ত করেন এরদোগান। সম্মেলনের ফাঁকে একটি বৈঠকও করেন তারা।
গত ৮ ডিসেম্বর আল সারার নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আলশামস (এইচটিএস) দামেস্ক দখল মাধ্যমে আসাদ সরকারের পতন ঘটায়। এরপর সিরিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলেই দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে তুরস্ক।
আরও পড়ুন: বিক্ষোভের তৃতীয় দিনে তুরস্কে গ্রেপ্তার ৩৪৩ জন
দামেস্কের সঙ্গে প্রতিরক্ষা বিষয়ে একটি চুক্তিও করতে চাইছে আঙ্কারা, এর মাধ্যমে সিরিয়াতে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনসহ দেশটির আকাশসীমা ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে তুরস্কের।
অন্যদিকে আাসদের পতনের পরই সিরিয়ায় সামরিক তৎপরতা জোরদার করেছে ইসরায়েল। এ কারণে তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। এ মাসের শুরুর দিকে সিরিয়ায় তিনটি সামরিক ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
আবার হামা প্রদেশের প্রধান বিমানবন্দর ও হোমসের টি-৪ ও পালমিরা বন্দর পরিদর্শন করেছেন তুরস্কের সেনা কর্মকর্তারা। যেখানে তারা দামেস্কের সঙ্গে একটি যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তির অংশ হিসেবে নিজেদের সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে পারে। এ নিয়ে তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যকারে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
নিউইয়র্ক ভিত্তিক থিংকট্যাঙ্ক সেঞ্চুরি ইন্টারন্যাশনালের আরন লুন্ড বলেছেন, ‘সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের দ্বিতীয়ার্ধে আসাদের অন্যতম রক্ষাকর্তা ছিল রাশিয়া। এখন আসাদের পতনের পর যদি সিরিয়ার আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারে তুরস্ক, তাহলে এই অঞ্চলটিতে ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রম অনেকটাই সীমিত হয়ে পড়বে।‘
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের সামরিক অভিযানই শুধু আঙ্কারার জন্য সমস্যা নয়, সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে তেল আবিবের নানা বাধা নিয়েও চিন্তিত তারা। যেমন, দেশটির দক্ষিণে আল সারার সরকার কোনো সেনা মোতায়ন করতে পারবে না বলে জানিয়েছে তেল আবিব।’
আরও পড়ুন: তুরস্কের ইস্তানবুলের মেয়র গ্রেপ্তার
এরইমধ্যে সিরিয়ার দক্ষিণের দারাহ শহরে অনুপ্রবেশ শুরু করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। চলমান উত্তেজনার মধ্যে দেশ দুটির মধ্যকার বৈঠককে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন আরন।
তিনি বলেন, সিরিয়ায় এই দুটি দেশই নিজেদের সামরিক তৎপরতা বহাল রাখবে। তবে তাদের মধ্যে যদি একটি যোগাযোগ চ্যানেল স্থাপিত হয় সেটি সব পক্ষের জন্য ভালো হবে বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক।
বুধবারের বৈঠকের পর তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, ইসরাইলের সাথে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা হয়েছে। দুই আঞ্চলিক শক্তির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি রোধ করার জন্য এবং সংঘাত বন্ধ করতে আলোচনা অত্যন্ত প্রয়োজন।
এদিকে বৈঠকের পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য সংলাপ চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে তুরস্ক ও ইসরায়েল।
৪ দিন আগে
ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্বসহ নানা দাবি জানিয়ে শেষ হলো ‘মার্চ ফর গাজা’
গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদ এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতির এক অনন্য নজির স্থাপন করল বাংলাদেশ। প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশের আয়োজনে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে সারা দেশ থেকে ছুটে আসে লাখো মানুষ। তাদের পদধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে ঢাকার রাজপথ; সোহরাওয়ার্দী উদ্যান উপচে তার আশপাশেও জমে জনতার জট।
শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকাল ৩টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কেন্দ্রীয় সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই মানুষ ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন। ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত ও বাইরের জেলাগুলো থেকে বাস, ট্রাক, মোটরসাইকেলসহ নানা যানবাহনে করে এসে তারা জড়ো হতে থাকেন রাজধানীতে। পরে পায়ে হেঁটে রওনা দেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উদ্দেশে।
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার সঙ্গে ফিলিস্তিনের পতাকা, ইসারয়েলবিরোধী প্ল্যাকার্ড ও ফিলিস্তিনের পক্ষে বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে দলে দলে সমাবেশে যোগ দেন হাজারো মানুষ। কেউ কেউ মাথায় বাঁধেন কালেমা খচিত ফিতা। ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’সহ নানা স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে যান তারা।
৫ দিন আগে
গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদ: সেনাদের বরখাস্তের ঘোষণা ইসরায়েলের
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের সমালোচনা করে প্রকাশিত একটি খোলাচিঠিতে সই করা দেশটির বিমানবাহিনীর রিজার্ভ (অনিয়মিত বা খণ্ডকালীন সেনা) সেনাদের মধ্যে কর্তব্যরত সবাইকে বরখাস্ত করার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।
স্থানীয় সময় শুক্রবার ( ১১ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এক কর্মকর্তা।-খবর এসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি)।
এপিতে পাঠানো এক বিবৃতিতে আইডিএফের এক সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘রিজার্ভ সদস্যদের মধ্যে সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব থাকা সেনাসহ অন্য কারোরই অধিকার নেই সামরিক মর্যাদাকে কাজে লাগিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া।’
যুদ্ধে সক্রিয় থাকা অবস্থায় খোলা চিঠিতে সই করে সেনারা তাদের বাহিনীর কমান্ডার ও অধীনদের মধ্যকার শৃঙ্খলা ও আস্থা ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ করেন ওই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় গাজায় আরও ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বর্তমানে যুদ্ধে কর্তব্যরত রয়েছেন এমন যেসব সদস্য ওই খোলাচিঠিতে সই করেছেন, তাদের বরখাস্ত করা হবে। তবে ঠিক কতজন সদস্যকে বরখাস্ত করা হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে গাজায় হামলা শুরু করায় ইসরায়েল প্রশাসনের সমালোচনা করে দেশটির গণমাধ্যমে একটি খোলাচিঠি প্রকাশিত হয়। সেখানে অবসরপ্রাপ্ত সেনাসহ বিমানবাহিনীর রিজার্ভ সেনাদের মধ্যে প্রায় ১ হাজার সদস্যরা সই করেন।
ইসরায়েলে প্রশাসন রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে বলে তারা খোলাচিঠিতে অভিযোগ করেন। তাছাড়া হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্ত করতে প্রশাসনের ব্যর্থতারও সমালোচনা করা হয়। প্রয়োজনে যুদ্ধ বন্ধ করে হলেও জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার প্রতি জোর দেন তারা।
এমন এক সময়ে এই খোলাচিঠি প্রকাশিত হয়েছে, যখন হামাসের হাতে থাকা বাকি জিম্মিদের ফেরানোর অজুহাতে পুনরায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। উপত্যকাটিতে খাদ্য, জ্বালানিসহ জরুরি মানবিক সেবার প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে ইসরায়েল প্রশাসন।
আরও পড়ুন: চোখে সামনে যা পড়েছে, তা-ই হত্যা করেছি: ইসরায়েলি সেনাদের বিবরণ
হামাসের হাতে থাকা ৫৯ জিম্মির মধ্যে প্রায় অর্ধেকই মৃত বলে জানা গেছে। হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলাতেই তারা প্রাণ হারিয়েছেন। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে গাজায় পুনরায় ইসরায়েল হামলা শুরু করলে বাকি জীবিত জিম্মিদের প্রাণও ঝুঁকিতে পড়ার কথা জানায় হামাস।
তবে এতে ভ্রূক্ষেপ না করেই ভয়াবহ হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। খোলাচিঠিতে সই করা সেনারা নিজেদের দায়িত্ব পালনে অপারগতার কথা না জানালেও গাজায় যা হচ্ছে তা নৈতিকতা বিরুদ্ধ বলে মন্তব্য করেন।
এই চিঠির নেতৃত্বে থাকা বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত পাইলট গাই পোরান বলেন, ‘ইসরায়েলি প্রশাসনের গাজায় এই হামলা শুরু করার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি অযৌক্তিক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন। এতে তারা জিম্মি ও ইসরায়েলের বহুসেনাসহ নিরাপরাধ ফিলিস্তিনিদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলেছে। অথচ এই হামলার সুস্পষ্ট বিকল্প কিন্তু প্রশাসনের হাতে ছিল।’
তবে চিঠিতে সই করা সেনাদের মধ্যে কাউকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে তার জানা নেই উল্লেখ করে গাই বলেন, ‘কেউ বরখাস্ত হয়েছে বলে শুনিনি আমি, তবে চিঠি প্রকাশের পর আরও অনেক সেনা এতে সই করছেন।’
এই চিঠি প্রকাশের ঘটনাকে তাচ্ছিল্য করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘বিদেশি কিছু এনজিওর অর্থায়নে এক ঝাঁক আগাছা এই কাজ করেছে। ডানপন্থি জোট সরকারের পতনের উদ্দেশ্যেই তারা এসব করছে।’
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনিদের ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করত ইসরায়েলি বাহিনী
সাধারণত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ইসরায়েলের সেনাদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ, তাই প্রশাসনের যেকোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে খুব কমই তাদের প্রতিবাদ করতে শোনা যায়। তবে বর্তমানে চিত্র বদলাচ্ছে।
২০২৩ সালে ৭ অক্টোবরের হামলার পর গাজায় যুদ্ধ চালানোর বিষয়ে সবাই একমত হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভিন্নমত বাড়ছে। গাজায় অব্যাহত হামলার সমালোচনা বেড়েই চলেছে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে। বিশেষত যুদ্ধে সেনাদের নিহতের সংখ্যা বাড়ার কারণে ও জিম্মিদের মুক্তিতে ব্যর্থতায় নেতানিয়াহু প্রশাসন সমালোচনার মুখে পড়েছে।
৫ দিন আগে
ইসরায়েলে রকেট হামলা চালালো হামাস, আহত ৩
ইসরায়েলে রকেট হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। দক্ষিণ ইসরায়েলের আশদোদ শহরে চালানো এ হামলায় আহত হয়েছেন তিনজন।স্থানীয় সময় রবিবার (৬ এপ্রিল) এই রকেট হামলা চালানো হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেড। ফিলিস্তিনের বেসামরিক জনগণের উপর ইসরায়েলের চালানো গণহত্যার জবাবেই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচয় আদ্রে জানায়, গাজা থেকে ইসরায়েলের শহর লক্ষ্য করে ছোড়া ১০টি রকেট শনাক্ত করেছে তারা। এর বেশিরভাগই ইসরায়েলি সেনারা প্রতিহত করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।
ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, আশকেলন শহরে একটি রকেট পড়ায় সেখানে তিনজন আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার সময় আশদোদ, আশকেলন ও ইয়াভনি শহরে সর্তকতামূলক সাইরেন বেজে ওঠে।
এ হামলার কড়া জবাব দিতে মধ্য গাজায় চলমান অভিযান আরও জোরদার করতে ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সকে (আইডিএফ) নির্দেশ দিয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও দুই সাংবাদিক নিহত
এরপর রবিবার রাত থেকেই মধ্য গাজার দেইর আল বালাহ শহরে বিমান হামলা শুরু করে আইডিএফ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতভর লাগাতার বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানগুলো উড়তে দেখা গেছে গাজার আকাশে।এতে আজ (সোমবার) গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৪৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর আগে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় বড় আকারের বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল।
নতুন করে চালানো এসব হামলায় অন্তত ১ হাজার ৩৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৩ হাজার ২৯৭ জন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে হামাস শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে, ২০২৩ সালের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ হাজার ৬৯৫ জন ফিলিস্তিনি, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। আর পোলিও টিকার অভাবে গাজার ৬ লাখ ২ হাজার শিশু স্থায়ীভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।
১০ দিন আগে
ইসরায়েলে ঢুকতে দেওয়া হলো না দুই ব্রিটিশ এমপিকে
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘ঘৃণা ছড়ানোর’ অভিযোগে যুক্তরাজ্যের দুই এমপিকে দেশটিতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমন এক সময় এই ঘটনা ঘটেছে, যখন ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নৃশংস গণহত্যায় মেতে উঠেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রতিনিধি হিসেবে অধিকৃত পশ্চিমতীর ভ্রমণ করার কথা ছিল তাদের। স্থানীয় সময় শনিবার (৫ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি।
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টির ওই এমপিরা হলেন ইউয়ান ইয়াং ও আবতিসাম মোহামেদ। এ ঘটনায় তারা স্তম্ভিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। বার্কশায়ারের এয়ারলি ও উডলির প্রতিনিধিত্ব করছেন ইউয়ান, আর শেফিল্ড সেন্ট্রালের এমপি আবতিসাম।
আরও পড়ুন: গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ১৭
ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, শনিবার সহযোগীদের নিয়ে লন্ডনের লুটন বিমানবন্দর থেকে রওনা দেন তারা। তবে ইসরায়েলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি তাদের। বিমানবন্দরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ইসরায়েলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোর্সে আরবেলের আদেশে তাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় তেল আবিব প্রশাসন।
ইসরায়েলের অভিবাসন মন্ত্রীর বরাতে স্কাই নিউজের খবর বলছে, তাদের ইসরায়েলবিরোধী বিদ্বেষ ছড়ানো ও নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকাণ্ড নথিভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে।
তবে ইসরায়েলের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই দুই ব্রিটিশ এমপি। যুক্তরাজ্যের কয়েকটি দাতব্য সংস্থার সহায়তায় ৪ সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে ইসরায়েল সফরে গিয়েছিলেন বলে তারা জানান।
এই সফর যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের একটি অংশ ছিল বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে। তবে এই প্রতিনিধি দলকে তেল আবিবের পক্ষ থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে ইসরায়েল প্রশাসন।
ইসরায়েল প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে ডেভিড ল্যামি বলেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য, অকার্যকর ও গভীর উদ্বেগের বিষয়। আমরা ইসরায়েল প্রশাসনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। যুক্তরাজ্যের এমপিদের সঙ্গে এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
অবশ্য ইসরায়েলের নিজেদের সীমানা নিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি ব্যাডনোচ।
ইউয়ান ও আবতিসাম গত বছর প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে এমপি নির্বাচিত হন। এরপর বেশ কয়েকবার পার্লামেন্টে ইসরায়েল-হামাস দ্বন্দ্ব নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন তারা। একারণেই তাদের এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত ফেব্রুয়ারিতে আবতিসামের নেতৃত্বে ইসরায়েলের পণ্য নিষিদ্ধ করতে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষের ৬১ সদস্যের স্বাক্ষরিত একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল। এছাড়া, গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেছিলেন তিনি।
এদিকে, উত্তর গাজায় বসতি নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়ায় ইসরায়েলি মন্ত্রী ইতামার বেন গাভির ও বেজালেল স্মোট্রিচের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আহ্বান করেছিলেন ইউয়ান। এ ছাড়াও গাজায় সাংবাদিক ও চিকিৎসকদের জীবন নিয়ে ঝুঁকির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
শনিবার বিমানবন্দরের ঘটনার পর এক যৌথ বিবৃতিতে ওই দুই এমপি জানান, বেশ কয়েক মাস ধরে ইসরায়েলের কার্যকলাপ নিয়ে পার্লামেন্টে সরব ছিলেন তারা। ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিধিবিধান মেনে চলার ব্যাপারে জোর দিয়েছিলেন তারা। পার্লামেন্টে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের অধিকার তাদের রয়েছে। সেই অধিকার বলেই ইসরায়েল ও গাজা সম্পর্কে নিজেদের বক্তব্য রেখেছেন তারা।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬০, আহত ১৬২
পার্লামেন্টের কাজের সুবিধার্থে পশ্চিমতীরে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন বলে বিবৃতিতে জানান তারা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। পরদিন থেকেই হামাসশাসিত গাজায় ইতিহাসের বর্বোরোচিত হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামলার এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অর্ধলাখের বেশি মানুষ, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়ার বিবৃতিতে ল্যামি বলেছেন, যুক্তরাজ্য গাজার এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধ করতে চায়। জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করে এই সংঘাতের শেষ চান তারা।
১১ দিন আগে
গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ১৭
গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরও ১৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ভোরে চালানো বিমান হামলায় এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
অন্যদিকে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলের আরও গভীরে প্রবেশ করেছে এবং হামাসের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান জোরদার করেছে।
হামাস পরিচালিত গাজার হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে বিমান হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের অনেকেই একই পরিবারের সদস্য। হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টা পরও ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে জীবিতদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
আরও পড়ুন: নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাসের সম্মতি, পাল্টা প্রস্তাব ইসরায়েলের
এই হামলার মাত্র একদিন আগেই ইসরায়েলি হামলায় শতাধিক ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হাতে জিম্মি হওয়া ইসরায়েলিদের মুক্তি দিতে চাপ সৃষ্টি করতেই ইসরায়েল গাজায় হামলা বাড়িয়েছে। ইসরায়েলি বাহিননীর হামলায় গাজায় গত দুই সপ্তাহেই শত শত লোক মারা গেছেন।
শুক্রবার ইসরায়েল ঘোষণা করেছে, ‘নিরাপত্তা অঞ্চল’ বাড়ানোর জন্য তাদের স্থল বাহিনী গাজার উত্তরাঞ্চলে প্রবেশ করেছে।
স্থল অভিযানের আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী উত্তর গাজার কিছু অংশ থেকে খালি করার জন্য বাসিন্দাদের নির্দেশ দিয়েছিল।
গত মাসে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা দপ্তর।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন। এসময় ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা। এরপর যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে বেশিরভাগ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যদিও ইসরায়েলও অসংখ্য মৃতদেহসহ মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনিদের ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করত ইসরায়েলি বাহিনী
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি হামলায় ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়টির দেওয়া হিসাবে বেসামরিক নাগরিক ও যোদ্ধার আলাদা হিসাব দেওয়া হয়নি। তথ্যমতে, নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু। ইসরায়েল প্রায় ২০ হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করার দাবি করলেও এর সমর্থনে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।
চলমান এই যুদ্ধ গাজাকে ধ্বংস করেছে। বেশিরভাগ অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলি হামলার মাত্রা এতো বেশি যে, ভূখন্ডটির নজনসংখ্যার ৯০ শতাংশ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
১২ দিন আগে
নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাসের সম্মতি, পাল্টা প্রস্তাব ইসরায়েলের
মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় নতুন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কথা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারীদের পূর্ণ সহযোগিতায় পাল্টা প্রস্তাব দেওয়ার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল।
নিজেদের পাল্টা প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেয়নি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয়। শনিবার (২৯ মার্চ) তারা জানিয়েছে, শুক্রবার আলাপ-আলোচনার পরই এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি, একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহারের বিনিময়ে অবশিষ্ট জিম্মিদের ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে হামাস।
নড়বড়ে অস্ত্রবিরতি চুক্তিকে পুনর্বহাল করতে চলতি সপ্তাহের শুরুতে একটি প্রস্তাব দিয়েছিল মিসর। যদিও তার আগেই গাজায় নতুন করে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এতে কেবল গত ১৮ মার্চই চার শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
হামাস নেতা খলিল আল-হাইয়া নতুন যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার আগে তাতে কোনো পরিবর্তন আনা হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।
মিসরের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, জীবিত থাকা পাঁচ জিম্মিকে ছেড়ে দেবে হামাস, যাদের মধ্যে একজন আমেরিকান-ইসরায়েলিও রয়েছেন। বিনিময়ে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেবে ইসরায়েল। সামরিক আগ্রাসনেও সপ্তাহখানেকের জন্য বিরতি দেবে দখলদার বাহিনী। এছাড়া কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দিকেও মুক্তি দেওয়ার কথা বলেছিল তারা।
হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের ২৪ জন এখনও জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের ছেড়ে দেওয়া না হলে যুদ্ধ তীব্রতর করার হুমকি দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ ছাড়াও ইসরায়েলের শর্তের মধ্যে ছিল—হামাসকে নিরস্ত্র হতে হবে, গাজার ক্ষমতা ছাড়তে হবে এবং তাদের নেতাদের দেশের বাইরে নির্বাসনে পাঠাতে হবে।
শনিবার মিসর সীমান্তের কাছাকাছি রাফাহ শহরে স্থল অভিযান প্রসারিত করেছে ইসরায়েল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার মধ্য দিয়ে গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। তখন ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলিকে হত্যা করেছিল হামাস। পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি করে উপত্যকায় নিয়ে যায় তারা। তারপর থেকে গাজাজুড়ে আগ্রাসন চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত উপত্যকার ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
১৮ দিন আগে
ইসরায়েলি হামলায় হামাসের রাজনৈতিক নেতাসহ নিহত ১৯
ইসরায়েলি বিমান হামলায় হামাসের এক জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতাসহ ১৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শনিবার (২২ মার্চ) দিবাগত রাতে এই হামলা চালানো হয়েছে। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন নারী ও শিশুও রয়েছে।
মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের খবর অনুসারে, মিসর সীমান্তের রাফাহ শহরের একটি অংশ থেকে লোকজনকে সরে যেতে বলেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
সেখানকার তেল-সুলতান অঞ্চলে অভিযান পরিচালনার কথা বলেছে তারা। এরইমধ্যে বিমান হামলায় অঞ্চলটি ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে। গেল মে মাসে সেখানে বড় ধরনের অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
মিসর সীমান্তের এই শহরটিতে একটি কৌশলগত করিডোর ও রাফাহ ক্রোসিং রয়েছে।
মাওয়াসি এলাকায় একটি একমুখী পথ ধরে পায়ে হেঁটে লোকজনকে চলে যেতে বলা হয়েছে। মাওয়াসিতে ব্যাপক দারিদ্র্যপীড়িত শরণার্থী শিবির রয়েছে, যেখানে উল্লেখ করার মতো সরকারি সেবা নেই।
লোকজনকে চলে যেতে এই নির্দেশ নতুন করে স্থল অভিযানের আভাস দিচ্ছে কিনা; তা এখনো পরিষ্কার না।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল অভিচাই আদ্রেই বলেন, ‘তেল আল-সুলতানের এসব বসতি, তাঁবু কিংবা শারণার্থী শিবিরে থাকা বা অন্য কোনো পথ ধরে হেঁটে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে আপনার ও আপনার পরিবারের জীবন ঝুঁকিতে ঠেলে দেওয়া।’
হামাস জানিয়েছে, মাওয়াসিতে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় স্ত্রীসহ রাজনৈতিক ব্যুরো ও ফিলিস্তিনি পার্লামেন্ট সদস্য সালাহ বারদাওয়েল নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনটির রাজনৈতিক শাখার একটি পরিচিত মুখ হলেন সালাহ। বহুবছর ধরে তিনি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে আসছিলেন।
দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজার দুটি হাসপাতাল জানিয়েছে, কয়েকজন নারী ও শিশুসহ তারা সতেরোটি মরদেহ পেয়েছেন। তবে হামাস নেতার ও তার স্ত্রীর মরদেহ সেখানে ছিল না।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নারী ও শিশুসহ ১২ ফিলিস্তিনি নিহত
দ্য ইউরোপীয় হাসপাতাল জানিয়েছে, এসব মরদেহের মধ্যে খান ইউনিসের পাঁচটি শিশু ও তাদের বাবা-মা রয়েছেন।
এছাড়া এক নারী ও শিশুর মরদেহ পাওয়ার কথা জানিয়েছে দ্য কুয়েত হাসপাতাল।
রাফাহে হামলার পর সেখানে অ্যাম্বুলেন্স যেতে দিচ্ছে না ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট। তাদের কয়েকজন চিকিৎসকও আহত হয়েছেন।
২৫ দিন আগে
গাজায় এমন হামলা হবে, যা আগে কেউ কখনো দেখেনি: ইসরায়েল
হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েলিদের মুক্তি না দিলে গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎস। গাজায় এমন তীব্র হামলা চালানো হবে ‘যা আগে কেউ কখনো দেখেনি’ বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
গাজার নেতজারিম করিডোরের একটি অংশ ফের দখলে নেওয়ার পর এ হুমকি দেন কাৎস। স্থানীয় সময় বুধবার (১৯ মার্চ) উত্তর ও দক্ষিণ গাজাকে বিভক্তকারী কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলটিতে সেনা মোতায়নের তথ্য নিশ্চিত করেছে ইসরায়েল প্রশাসন।
জিম্মি ইসরায়েলিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত ও গাজার শাসনক্ষমতা না ছাড়া পর্যন্ত গাজায় হামলার তীব্রতা বাড়তে থাকবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)।
নেতজারিম করিডোর দখলে নেওয়ার পর বুধবার এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে আইডিএফ জানায়, জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপ কার্যকর হওয়ার পর এই অঞ্চলটি থেকে ইসরায়েলি সেনাপ্রত্যাহার করা হয়েছিল। এখন আবার সেখানে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধে জন্ম নিয়ে, যুদ্ধেই শহীদ শিশুটি
এর আগে মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সেহরির সময় নতুন করে আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এতে নারী-শিশুসহ চার শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হন বলে জানিয়েছে হামাসশাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে করে ভেঙে পড়েছে চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি।
দীর্ঘ পনেরো মাসের সংঘাত শেষে যে একটু আশার আলো দেখতে শুরু করেছিলেন গাজার বাসিন্দারা। মানবিক সাহায্য আসতে শুরু করেছিল, ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন কয়েকশত ফিলিস্তিনি। যাদের মধ্যে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিও ছিলেন।
তবে মঙ্গলবারের হামলায় আশার সব আলো নিভে গেছে। এরইমধ্যে নেতজারিম করিডোরের দখল দুইপক্ষকে ফের সর্বাত্মক যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও মঙ্গলবারের ইসরায়েলি বিমান হামলার পর এখন পর্যন্ত হামাসের কোনো পাল্টা হামলার খবর পাওয়া যায়নি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর পরবর্তী যুদ্ধে প্রায় ৪ মাইল (৬ কিলোমিটার) দীর্ঘ এই করিডোরটিকে একটি সামরিক অঞ্চল হিসেবে ব্যবহার করেছে ইসরায়েল। এটি ইসরায়েলি সীমান্ত থেকে উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত।
আরও পড়ুন: সেহরির সময় ইসরায়েলি হামলা, গাজায় নারী-শিশুসহ নিহত ৪ শতাধিক
যুদ্ধকালীর উত্তর গাজার অনেকেই পালিয়ে দক্ষিণ গাজায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। পনেরো মাসের সংঘাত শেষে করিডোর থেকে আইডিএফ সেনারা সরে গেলে অনেকেই উত্তর গাজায় ফিরেছিলেন।
নেতজারিম করিডোর দখলের পর অঞ্চলটি থেকে সব ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎস। তিনি জানান, ‘মঙ্গলবারের বিমান হামলা তো কেবল শুরু।’
কাৎস বলেন, ‘হামাস যদি জিম্মিদের মুক্তি না দেয়, তাহলে এমন ভয়াবহ হামলা চালানো হবে যা আগে কেউ কখনো দেখেনি।’
ফের আগ্রাসন শুরু করে নিজ দেশেও বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। নিজ দেশের নাগরিকদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলে নিজের গদি বাঁচাতে পুনরায় হামলা শুরু করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।
হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েলিদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে গতকাল (বুধবার) নেসেটের (ইসরায়েলের পার্লামেন্ট) সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন জিম্মিদের স্বজনরা। এরপর তারা জেরুজালেমে নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনেও বিক্ষোভ করেন।
তবে এসবকে পাত্তা না দিয়েই হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলের সেনারা। মঙ্গলবারের হামলায় নিহতদের প্রতি শোক জানাতে জড়ো হওয়া মানুষের ওপরও ইসরায়েল হামলা করেছে বলে জানান গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ফারেস আওয়াদ।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ২০০
ওই হামলায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন বলে জানান তিনি। ইসরায়েলি হামলায় এ অবধি প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৪৯ হাজার ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্য অধিকাংশ নারী ও শিশু।
তবে ইসরায়েলের দাবি, তারা কেবল সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করেই হামলা চালায়, হামাস ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে সামরিক কার্যক্রম পরিচালনা করে বলে অভিযোগ করেন তারা।
গত ১ মার্চ গাজায় প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি শেষ হয়। এরপর প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়িয়ে জিম্মিদের মুক্ত করতে চাইছিল ইসরায়েল।
হামাস সদস্যরাও জানিয়েছে, তারা অবশ্যই ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেবেন। তবে তা কেবল যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে। যেখানে মুক্তি পাবেন ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিরা। এছাড়াও হামাসের দাবি, একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরায়েলের সেনাপ্রত্যাহার।
২৮ দিন আগে