ইসরায়েল
ইসরায়েল থেকে ঢাকায় বিমান প্রসঙ্গে বেবিচকের ব্যাখ্যা
সম্প্রতি ‘ইসরায়েল থেকে বিমান এলো ঢাকায়’ শিরোনামে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ সংবাদের কারণে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
বেবিচক জানায়, বাংলাদেশ ও ইসরায়েলের মধ্যে কোনো বিমান চলাচল চুক্তি নেই এবং ইসরায়েলের কোনো বিমান বাংলাদেশে অবতরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বেবিচক এই কথা জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইসরায়েল থেকে বিমান এলো ঢাকায়- শিরোনামে বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভিন্নভাবে প্রকাশের ফলে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে একটি বিমান তেল আবিব থেকে গত ৭ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টা ২২ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ করে। কার্গো নিয়ে রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা ত্যাগ করে বিমানটি।
আরও পড়ুন: আজ আমাদের অত্যন্ত খুশির দিন: বেবিচক
এরপর গত ১১ এপ্রিল রাত ৭টা ৫৫ মিনিটে অন্য আরেকটি বিমান ঢাকায় অবতরণ করে। কার্গো নিয়ে মধ্য রাত ১২টা ২৯ মিনিটে ঢাকা ত্যাগ করে।
বেবিচক জানায়, দুটি বিমানই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত ও ওই দেশের বিমান সংস্থা ন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের।
বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিমান চলাচল চুক্তি অনুযায়ী কার্গো ফ্লাইট দুটি ঢাকায় আসে। ঢাকা থেকে তৈরি পোশাক নিয়ে ফ্লাইট দুটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ এবং ইউরোপে যায়।
বেবিচক মনে করে, ইসরায়েল থেকে বিমান এলো ঢাকায়- শিরোনামে বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভিন্নভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।
বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশনা অনাকাঙ্ক্ষিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে বিবেচ্য বলে জানিয়ে এ ধরনের সংবাদ পরিবেশনা থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানিয়েছে বেবিচক।
আরও পড়ুন: যাত্রীদের সুবিধার্থে ঈদে বিমানের অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট বৃদ্ধি
আশা করি পশ্চিমা দেশগুলো ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যারা নিরীহ মানুষ হত্যার জন্য ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ করে, তারা তাদের ভুল বুঝতে পারবে এবং অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করবে বলে প্রত্যাশা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
গাজায় ত্রাণকর্মীদের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিন ব্রিটিশ নাগরিক নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আশা করি পশ্চিমা বিশ্ব বুঝতে পারবে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ফিলিস্তিনিদের পাশে ছিলাম, আছি ও থাকব।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর সরবরাহ করা অস্ত্র দিয়ে গাজায় নিষ্পাপ শিশু ও নারীসহ বেসামরিক মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে।
ড. হাছান বলেন, ‘এমনকি ত্রাণকর্মীদেরও হত্যা করা হচ্ছে। এটা কল্পনার বাইরের ঘটনা। আমরা আশা করছি ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংসতা ও হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে। তারা জাতিসংঘের প্রস্তাবটিও বিবেচনায় নিচ্ছে না।
দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের মাধ্যমে গাজার অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়ার সময় ইসরায়েলি বিমান হামলায় সাতজন ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছেন। নিহতদের বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনরা শোক করছেন।
নিহতদের মধ্যে তিনজন ব্রিটিশ, একজন অস্ট্রেলিয়ান, একজন পোল্যান্ড, একজন মার্কিন-কানাডিয়ান ও একজন ফিলিস্তিনি নাগরিক রয়েছেন। নিহতদের কেউ কেউ যুদ্ধ, ভূমিকম্প ও দাবানলের পরবর্তী ত্রাণ তৎপরতায় অংশ নিয়ে বিশ্ব ভ্রমণ করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে সব আন্তর্জাতিক ফোরাম ও এর বাইরে অ্যাডভোকেসির মাধ্যমে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ লাভের জন্য তার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করতে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি।
চিঠিতে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির জন্য আমাদের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছি এবং বেসামরিক জীবন ও অবকাঠামো রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ ও সার্বভৌমত্বের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার জানিয়ে মাহমুদ আব্বাসকে প্রধানমন্ত্রীর চিঠি
ন্যায়বিচার, শান্তি ও সম্প্রীতি সমুন্নত রাখা ইসলাম ও সব ধর্মের মূল শিক্ষা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা এটিকে সব সংঘাত ও দুর্ভোগের প্রতিষেধক বলে বিবেচনা করেন।
তিনি ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর থেকে গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের লাগামহীন গণহত্যায় শিশু, নারী ও পুরুষসহ নিরীহ মানুষের মর্মান্তিক প্রাণহানির জন্য ফিলিস্তিনের সরকার ও ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯ মার্চ আপনার দূত এবং ফাতাহ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদকের মাধ্যমে আমাকে লেখা আপনার চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করছি। গাজায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর যুদ্ধোত্তর পরিকল্পনা সম্পর্কে আমি জানি এবং এ নিয়ে আপনার গভীর উদ্বেগকে সমর্থন করছি।’
চিঠিতে বলা হয়, এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারকে অবমাননা এবং আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তির লঙ্ঘন।
চিঠিতে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা হতাশাজনক যে পরিকল্পনাটি এই দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের কোনো বাস্তব পথ সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং এর লক্ষ্য গাজায় ফিলিস্তিনিদের বৈধ জাতীয় আকাঙ্ক্ষাকে দমন করা এবং ভূমির ওপর ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণ চিরস্থায়ী করা।’
আরও পড়ুন:৭ ও ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সফরে আসছেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ৪ সমঝোতা স্মারক সইয়ের সম্ভাবনা
এমন প্রেক্ষাপটে তিনি বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘গাজার যেকোনো অংশ দখলে ইসরায়েলের যেকোনো পরিকল্পনার বিরোধিতা করছি আমরা।’
চিঠিতে বলা হয়েছে, গাজাবাসীদের তাদের নিজস্ব ভূখণ্ড থেকে বিতাড়িত করা হবে না, গাজার ভূখণ্ড হ্রাস করা হবে না, ইউএনআরডব্লিউএ'র ম্যান্ডেট বাস্তবায়নের ক্ষমতার ওপর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে না এবং ইসরায়েলের পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের একটি পৃথক ও স্বাধীন রাষ্ট্রের অধিকারকে ক্ষুণ্ন করা হবে না।
তিনি বলেন, 'আমরা মনে করি সামরিক উপায়ে এই সংঘাতের সমাধান নয়। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব এবং আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের আদেশের ভিত্তিতে চলমান সংকট সমাধানে একটি বিশ্বাসযোগ্য প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের সময় এসেছে, যা কেবল ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের পাশাপাশি বসবাসের মাধ্যমে দুই রাষ্ট্রের সমাধানের মাধ্যমেই অর্জন করা যেতে পারে।’
শেখ হাসিনা বলেন, দখলদারিত্ব ও গণহত্যার শিকার একটি জাতি হিসেবে বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থেই দখলকৃত ও নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা অনুভব করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘সুতরাং, আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফিলিস্তিনের জনগণের সঙ্গে আমাদের পূর্ণ সংহতি জানাচ্ছি। ইসরায়েলি দখলদারিত্বের নিন্দা করছি এবং আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে একটি ন্যায়সঙ্গত সমাধানের পক্ষে সমর্থন করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মুসলিম উম্মাহ হিসেবে আমরা পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের সীমান্ত অনুযায়ী স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের জন্য আপনার বৈধ আকাঙ্ক্ষার প্রতি আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখব।’
আরও পড়ুন: নতুন সরকার গঠনের পর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে ভারত ও চীন যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী
বিএনপি-জামায়াত ইসরায়েলের দোসরে পরিণত হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সারা পৃথিবীতে গাজায় হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয় আর বিএনপি-জামায়াত এই হত্যার বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি। তারা ইসরাইলের দোসরে পরিণত হয়েছে, এদের চিহ্নিত করতে হবে।
বুধবার(২৭ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টনে একটি হোটেলে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ আয়োজিত ইফতারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় ফিলিস্তিনের গাজায় ৩২ হাজারেরও বেশি মানুষ হত্যার শিকার হয়েছে, তার মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও নারী। লন্ডন, ওয়াশিংটন, সিডনিসহ বিশ্বের বহু জায়গায় এমনকি ইসরায়েলের তেল আবিবেও মানুষ এই হত্যার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে। অথচ ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে বিএনপি-জামায়াত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করে নাই, কোনো বৃহৎ শক্তি নাখোশ হতে পারে এই ভয়ে। অর্থাৎ তারা আজ ইসরায়েলের দোসরে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় গণহত্যা মানব সভ্যতার কলঙ্কজনক অধ্যায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মন্ত্রী হাছান বলেন, বিএনপি-জামায়াত ভেবেছিল একটি বড় দেশ তাদের ফিডার খাওয়াতে খাওয়াতে কোলে করে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। কিন্তু তা হয়নি। ইসরায়েলি সেনাদের অনুকরণে তারা ঢাকায় পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। আর এখন তারা হাঁটে। হেঁটে হেঁটে লিফলেট বিতরণ করে। এটা তারা করুক, কিন্তু আগের মতো আগুনসন্ত্রাস যেন না করতে যায়, তাহলে জনগণ তাদের উচিত শিক্ষা দেবে।
এ সময় ইসলামের কল্যাণে সরকারের অবদান তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ইসলাম ও আলেম সমাজের কল্যাণে যা করেছেন অন্য কোনো সরকার তা করেনি। কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতিদান, প্রতিটি উপজেলায় মনোরম মসজিদ, শিক্ষকসহ মক্তব, আলেমদের সম্মান প্রতিষ্ঠা ও কল্যাণ আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে।
আরও পড়ুন: ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করাই বিএনপির উদ্দেশ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইসলামিক ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আল্লামা বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদীর সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন ফ্রন্টের ভাইস চেয়ারম্যান এএএম একরামুল হক ও অধ্যক্ষ এম ইব্রাহীম আখতারী, যুগ্ম মহাসচিব মোশাররফ হোসেন হেলালী এবং স ম হামেদ হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মারুফ আজহারী প্রমুখ।
আরও পড়ুন: বিএনপি জনগণের নয়, বিদেশিদের সহযোগিতা চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ঢাকার সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ফাতাহ কর্মকর্তার, ইসরায়েলকে থামাতে আরো বেশি পদক্ষেপের আহ্বান
গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ইসরায়েল সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে অব্যাহত যোগাযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন কামনা করেছেন ঢাকায় সফররত ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ফাতাহর কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল জিবরিল রাজৌব।
মহাসচিব আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) সমর্থনসহ ফিলিস্তিনের সমর্থনে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
রবিবার (২৪ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন সফররত জিবরিল রাজৌব।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মহাসচিব গাজা উপত্যকায় চলমান সংঘাত নিয়ে মতবিনিময় করেন।
মহাসচিব গাজা ও পশ্চিম তীরে চলমান ইসরাইলি নৃশংসতার ফলে নজিরবিহীন গণহত্যা, অবকাঠামো ধ্বংস এবং মানবিক সহায়তা প্রাপ্তির সুযোগ সীমিত হওয়ার ফলে গাজায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে সে সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
সাক্ষাৎকালে মহাসচিব গাজায় নতুন বসতি স্থাপন এবং গাজা, পশ্চিম তীর ও এর বাইরেও ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ আরোপের মাধ্যমে যুদ্ধোত্তর গাজার জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর অবৈধ নতুন সংযুক্তি পরিকল্পনা সম্পর্কে তাকে অবহিত করেন।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরাইলের তাণ্ডব ঠেকাতে বিশ্বের ব্যর্থতায় প্রধানমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজা উপত্যকায় কঠিন মানবিক পরিস্থিতিতে শিশু ও নারীসহ বেসামরিক হতাহত এবং কষ্টের জন্য গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তিনি এই যুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি সমন্বিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন। গাজা ও পশ্চিম তীরে পর্যাপ্ত মানবিক প্রবেশাধিকারসহ অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বানও জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি মহাসচিবকে আশ্বস্ত করে বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফিলিস্তিন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় অবস্থান অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরব দেশগুলোর ঐকমত্য অর্জনে গাজায় যুদ্ধ অবসানে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহাসচিবের প্রতি আহ্বান জানান।
তারা বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের মধ্যে ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও উন্নয়নে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
এর আগে সকালে ফাতাহ মহাসচিব প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ফিলিস্তিনে মানবিক বিপর্যয় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
আরও পড়ুন: গাজায় গণহত্যা মানব সভ্যতার কলঙ্কজনক অধ্যায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ১৩ জনের মৃত্যু; রাফাহ অভিযান নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে
গাজা উপত্যকার দক্ষিণ সীমান্তের রাফাহ শহরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন নারী ও ৫ জন শিশু বলে জানিয়েছে গাজার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার কয়েক ঘণ্টা পরেই রাতভর বিমান হামলা শুরু হয় এবং রাফাহতে এই হামলা আরও বাড়বে বলেও জানান নেতানিয়াহু।
অন্যদিকে দুই ঘনিষ্ঠ মিত্রের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার ইসরায়েল ত্যাগ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
অব্যাহত সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ইসরায়েল গাজার ২৩ লাখ জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মিশর সীমান্তের দিকে স্থানান্তর করেছে। ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড ত্যাগ করতে না পেরে অনেকে অস্থায়ী তাবু গেড়ে বা জাতিসংঘের শরণার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।
আরও পড়ুন: গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে গাজায় যুদ্ধবিরতি চান অ্যানি লেনক্স
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ২৭ হাজার ৮৪০ জন ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়াও গাজার অধিবাসীদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষ অনাহারে জীবনযাপন করছেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় এই যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। এই হামলায় ১২০০ ইসরায়েলির মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই বেসামরিক ছিল। আর ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়। হামাস এখনও ১৩০ জনেরও বেশি ইসরায়েলিকে জিম্মি করে রেখেছে যাদের মধ্যে প্রায় ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইয়েমেনে মার্কিন-ব্রিটিশ বিমান হামলার নিন্দা হামাসের
যারা ইসরায়েলের পক্ষ নিচ্ছে, তারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার অধিকার হারিয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গাজায় নিরীহ নারী ও শিশুদের প্রতি যে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চলছে, একবিংশ শতাব্দীতে এসেও তা বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে।
তিনি বলেন, গাজায় এমন মানবিক বিপর্যয়েও যারা ইসরায়েলের পক্ষ নিচ্ছে, তারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার অধিকার হারিয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নামক ‘কারাগারে’ বন্দি তাদের নেতারা: তথ্যমন্ত্রী
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমি আশা করব ফিলিস্তিনিদের এ আর্তনাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ সবখানে পৌঁছাবে এবং অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি কার্যকর ও ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। আমাদের সরকার ও প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ছিলেন, আছেন ও থাকবেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমার সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে। তিনি ফিলিস্তিনের প্রতি আমাদের অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আমি তাকে জানিয়েছি, প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনের পক্ষে বলেছেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে এ সমস্যা সমাধান হবে। আমরা ‘টু স্টেট’ পলিসিকে সমর্থন করি। ফিলিস্তিনে পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া এ সমস্যার সমাধান নেই।
ফিলিস্তিনে চলমান সংকট নিরসনে আরব বিশ্বের নেতাদের ভূমিকা নিয়ে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত হতাশা ব্যক্ত করেছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, চার হাজার কিলোমিটার দূরে থেকেও যেভাবে প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়িয়েছেন, সেজন্য রাষ্ট্রদূত তার প্রশংসা করেছেন।
বাংলাদেশের পার্লামেন্টের সংসদ নেতা হিসেবে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশেষ আলোচনার আয়োজন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷
একইসঙ্গে গাজায় যে হত্যাযজ্ঞ চলছে তার প্রতিবাদ করেছেন তিনি৷
আরও পড়ুন: দগ্ধ মানুষের আর্তনাদ কি বিএনপি-জামাতের কানে পৌঁছায় না: তথ্যমন্ত্রী
জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় সর্বজনীন আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ব্যবস্থার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
ফিলিস্তিনের ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান শেখ হাসিনার
ফিলিস্তিনি জনগণের উপর ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বজুড়ে চলমান সব ধরনের যুদ্ধ বন্ধে বাংলাদেশ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে চলছে যুদ্ধ। ইউক্রেন যুদ্ধ ও ফিলিস্তিনি জনগণের উপর ইসরায়েলিদের হামলায় শিশু ও নারী হত্যা অব্যাহত। আমরা এগুলো কখনোই চাই না।’
আরও পড়ুন: পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমেই মানুষ ও পৃথিবীর অস্তিত্ব টিকে থাকতে পারে: জি-২০ সম্মেলনে শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (৩০ অক্টোবর) রূপগঞ্জের পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে জাতীয় ইমাম সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
সারাদেশ থেকে প্রশিক্ষিত ইমামরা জাতীয় ইমাম সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।
এই জাতীয় ইমাম সম্মেলন কর্মসূচি থেকে ষষ্ঠ ধাপে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ফিলিস্তিনের নারী, শিশু ও জনগণের জন্য ওষুধ, খাবার ও শুকনো খাবার পাঠিয়েছে বাংলাদেশ।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলমানরা তাদের ধর্ম যথাযথভাবে পালন করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই সবাই শান্তিতে বসবাস করুক।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি তার সাম্প্রতিক বেলজিয়াম সফরসহ একটি আন্তর্জাতিক ফোরামে যোগদান করে, সব সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানকে যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই। আমরা জনগণের উন্নয়ন চাই। কারণ আমি জানি যুদ্ধ কতটা ধ্বংসাত্মক হতে পারে।’
জাতীয় ইমাম সম্মেলনে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জনগণের কাছে ইসলামের সত্য বার্তা পৌঁছে দিতে সরকার ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে সরকারের অর্জন নিয়ে ১১৩৭ ভিডিও কন্টেন্ট প্রকাশ
মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাসহ ওজু ও নামাজের জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে।
এ ছাড়া হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র ও ইসলামিক লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, দাফনের আগে আচার-অনুষ্ঠান ব্যবস্থা, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, হিফ্জখানা, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা, ইসলামি সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ও ইসলামি দাওয়াতের জন্য সম্মেলনকক্ষ, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র এবং দেশি-বিদেশি অতিথিদের জন্য বোর্ডিং সুবিধা থাকবে।
২০১৭ সালে দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও পৌরসভায় ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও মডেল মসজিদ নির্মাণের জন্য ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার।
এ ছাড়া এ পর্যন্ত ছয় ধাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে মোট ৩০০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন।
জাতীয় ইমাম সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সৌদি আরবের মদিনার মসজিদের আল-নববীর সৌদি ইমাম শায়খ ডক্টর আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল-বুয়া'ইজান।
জাতীয় ইমাম সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন- ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের (বিটিএফ) চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বাশার মাইজভান্ডারি ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এ জমাদ্দার।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর মধ্যে আলোচনা চলছে
ফিলিস্তিন সমস্যায় এবার আরব বিশ্ব নড়েচড়ে বসেছে: সাবেক রাষ্ট্রদূত
ফিলিস্তিন সমস্যায় এবার আরব বিশ্ব নড়েচড়ে বসেছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. হুমায়ুন কবির।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ নিয়ে কোনো বিভক্তি নেই, সবাই ফিলিস্তিনের পক্ষে। ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানে আরব বিশ্ব দোদুল্যমান। এখনও তারা জোটবদ্ধ হতে পারেনি। তবে এবার নড়েচড়ে বসেছে।’
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) ঢাকার এফডিসিতে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট নিরসনে জাতিসংঘের ভূমিকা নিয়ে এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম. হুমায়ুন কবির এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এই যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে কথোপকথোন শুরু হয়েছে, এটি ইতিবাচক। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ একটি সহিংস চক্রের মধ্যে পড়েছে। এই যুদ্ধে ফিলিস্তিনই ন্যায়ের পক্ষে আছে। এটি হঠাৎ কোনো ঘটনা নয়, দীর্ঘ বঞ্চনার প্রতিফলন। গাজায় আজ যে নৃসংশতা ও মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে তার কোনো ব্যাখ্যা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানে দুটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া উচিৎ। যাতে দুটি রাষ্ট্র পাশাপাশি শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করতে পারে। জাতিসংঘ ছাড়া আর কোনো প্রতিষ্ঠান নেই যারা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানে মধ্যস্থতা করতে পারে। তাই বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত করে ফিলিস্তিন -ইসরায়েল সংকট সমাধানে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট শিরোনামে প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনের কাছে মানবিক সহায়তা হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ বন্ধ করুন, নারী ও শিশুদের বাঁচান: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার সর্বশেষ যুদ্ধসহ সব ধরনের যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এসব যুদ্ধ চাই না। একজন নারী রাজনীতিবিদ বা নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, একজন মা হিসেবে আমি বিশ্ব নেতাদের এই যুদ্ধগুলো বন্ধ করার আহ্বান জানাবো।’
তিনি বলেন, ‘অস্ত্র ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন, কারণ এগুলো নারী ও শিশুদের জন্য সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে স্ট্যান্ডার্ড এভিয়েশন নেভিগেশন সার্ভিসের জন্য আইসিএওর সহায়তা কামনা প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধানমন্ডিতে নবনির্মিত ১২ তলা জয়িতা টাওয়ার উদ্বোধন শেষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, এই মুহূর্তে সারাবিশ্বে সবাই যুদ্ধের হাহাকার দেখছে।
তিনি বলেন, ‘আগে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, এখন ইসরাইল ফিলিস্তিনে হামলা চালিয়েছে এবং ইসরায়েল ইতোমধ্যে ফিলিস্তিনের অর্ধেকেরও বেশি দখল করে নিয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেছেন যে তার পরিবারের সদস্যদের ও তার যুদ্ধ ও হত্যাকাণ্ড নিয়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা রয়েছে।
আরও পড়ুন: গণভবনে বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকের শিল্পী ও কলাকুশলীদের নিয়ে নৈশভোজের আয়োজন প্রধানমন্ত্রীর
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা দখলদার বাহিনীর হাতে বন্দী ছিলাম এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর আমরা শরণার্থী জীবনের নৃশংসতা দেখেছি।’
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি সচিব নাজমা মোবারেক এবং জয়িতা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজ খান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে গিয়ে জয়িতা টাওয়ারের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন এবং জয়িতা টাওয়ারে জামদানি গ্যালারি ও জয়িতা মার্কেট প্লেসের উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশ নিয়ে ডাকটিকিট প্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর
ফিলিস্তিনিদের বেঁচে থাকার কথা কে ভাববে?: প্রশ্ন চীনের রাষ্ট্রদূতের
চীন সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে সংযম প্রদর্শন, বস্তুনিষ্ঠ ও ন্যায়সঙ্গত অবস্থান গ্রহণ, সংঘাত প্রশমনে কাজ করার এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার ওপর আরও বড় ধরনের আঘাত এড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
'চীন বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সব ধরনের সহিংসতা ও হামলার নিন্দা জানায় এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনকারী সব কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করে।’
সোমবার (১৬ অক্টোবর) বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ রামাদানের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এসব কথা বলেন।
এসময় উভয় পক্ষ ফিলিস্তিন ইস্যুতে গভীর মতবিনিময় করেন।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও উল্লেখ করেন, সংঘাতের সর্বশেষ পরিস্থিতির আলোকে চীন মনে করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব লড়াই বন্ধ করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো, এটি অবিরামভাবে ছড়িয়ে পড়া রোধ করা এবং পরিস্থিতির আরও অবনতি এড়াতে একটি শীর্ষ অগ্রাধিকার।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলা, বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো, যত দ্রুত সম্ভব মানবিক উদ্ধার ও সহায়তার পথ উন্মুক্ত করা এবং মারাত্মক মানবিক বিপর্যয় রোধ করা অপরিহার্য।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘের যথাযথ ভূমিকা পালন করা উচিত।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের দখলদারি বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান বাংলাদেশের
সশস্ত্র সংঘাতে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অধীনে একটি রেড লাইন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে, যত দ্রুত সম্ভব আন্তর্জাতিক ঐকমত্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থাও নিতে হবে।’
রাষ্ট্রদূত ইয়াও আরও বলেন, নির্বিচারে বলপ্রয়োগ অগ্রহণযোগ্য এবং ফিলিস্তিনি বা ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়। জাতিসংঘের কর্মী ও মানবিক সহায়তা কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস জানিয়েছে, চীন সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে চীন সরকারের বিশেষ দূত শিগগিরই এ অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট দেশগুলো সফর করবেন এবং সহিংসতা বন্ধ ও উত্তেজনা প্রশমনে সক্রিয় প্রচেষ্টা চালাবেন।
ইতোমধ্যে শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক ঐকমত্য গড়ে তুলতে এবং ফিলিস্তিন সমস্যার একটি সমন্বিত, ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী সমাধানে দ্রুত কাজ করার লক্ষ্যে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আরও কর্তৃত্বপূর্ণ, প্রভাবশালী ও বিস্তৃত পরিসরে আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছে চীন।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও উল্লেখ করেন যে ফিলিস্তিন প্রশ্নে এটি মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুর কেন্দ্রবিন্দু এবং একটি ক্ষত যা আজকের বিশ্বকে আহত করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, 'এই প্রশ্নের মূল কারণ হচ্ছে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বপ্ন বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি ঐতিহাসিক অবিচারের প্রতিকারে ব্যর্থতা।
চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, 'ইসরায়েলের যেমন রাষ্ট্রের অধিকার রয়েছে, তেমনি ফিলিস্তিনেরও রয়েছে। ইসরায়েলিরা বেঁচে থাকার জন্য সুরক্ষা ব্যবস্থা অর্জন করেছে, কিন্তু ফিলিস্তিনিদের বেঁচে থাকার বিষয়ে কে চিন্তা করবে? ইহুদি জাতি বিশ্বে আর গৃহহীন নয়, কিন্তু ফিলিস্তিনি জাতি কখন তার বাড়িতে ফিরে আসবে? পৃথিবীতে অন্যায়ের কমতি নেই, কিন্তু ফিলিস্তিনের প্রতি অবিচার চলছে অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে। যে দুর্ভোগগুলো প্রজন্মকে জর্জরিত করে তা চলতে দেওয়া উচিত নয়।’
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি বাংলাদেশিদের ভালোবাসা ও সমর্থন দেখে অভিভূত: রাষ্ট্রদূত
তিনি বলেন, প্রশ্নটির উত্তর হলো দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান এবং একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, ‘এভাবেই ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল শান্তিতে সহাবস্থান করতে পারে এবং আরব ও ইহুদিরা কীভাবে সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করতে পারে। 'দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলেই মধ্যপ্রাচ্য সত্যিকার অর্থে শান্তি উপভোগ করতে পারবে এবং ইসরায়েল স্থায়ী নিরাপত্তা উপভোগ করতে পারবে।’
তিনি বলেন, দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সঠিক উপায় হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু করা। শান্তির জন্য সকল প্রক্রিয়াকে অবশ্যই ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও জোর দিয়ে বলেন, ফিলিস্তিন প্রশ্নে শান্তির পক্ষে চীন, ন্যায়বিচারের পক্ষে, আন্তর্জাতিক আইনের পক্ষে। বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষার পক্ষে এবং মানুষের বিবেকের পক্ষে দাঁড়িয়ে থাকবে তার দেশ।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের স্থল হামলার হুমকিতে অনেক ফিলিস্তিনি গাজার উত্তরাঞ্চল ছেড়েছে