তরুণ
তরুণদের ভবিষ্যৎকে প্রভাবিত করে এমন ইস্যুতে তাদের কথা শুনতে হবে: ইইউ রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ প্রতিনিধি দলের প্রধান চার্লস হোয়াইটলি বলেছেন, তারা ইউরোপ থেকে বাংলাদেশে আরও ব্যবসা দেখতে চান। একই সঙ্গে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজার হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে 'বাংলাদেশ ডিসাইডস: দ্য ইয়ুথ স্পিকস' (বিডিওয়াইএস) শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ ক্রমেই একটি আকর্ষণীয় বাজার হয়ে উঠছে। এ কারণেই আমাদের সম্পর্ক বিভিন্ন পর্যায়ে একটি অংশীদারিত্বে পরিণত হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: মজুরি নয়, অধিকারের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে সফররত ইইউ প্রতিনিধি দল: পররাষ্ট্র সচিব
রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি বলেন, তারা বাংলাদেশে তাদের বাণিজ্যিক আগ্রহ বাড়াতে ও এগিয়ে নিতে চান।
তিনি বলেন, 'ভবিষ্যতের মূল ইস্যুগুলোতে তরুণদের কথা শোনা জরুরি। অর্থনীতি ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মূল্যবান সুযোগ করে দিয়েছে আজকের এই আয়োজন। ইইউ বিশ্বব্যাপী তরুণদের সহায়তা করছে, যার মধ্যে গত বছর গৃহীত আমাদের ইয়ুথ অ্যাকশন প্ল্যানও রয়েছে।’
হারনেট টিভির প্রতিষ্ঠাতা সিইও ও এমডি আলিশা প্রধানের পরিকল্পনা ও ভাবনায় এই অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের আয়োজন করে হারনেট ফাউন্ডেশন।
বাংলাদেশে ইইউ দূতাবাসের সহঅর্থায়নে ও সহযোগিতায় আয়োজিত এ আয়োজন বাংলাদেশের তরুণদের ক্ষমতায়নে তাদের অঙ্গীকারের দলিল।
রপ্তানি বহুমুখীকরণের গুরুত্ব তুলে ধরে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, তৈরি পোশাক পণ্য এখনও বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে আধিপত্য বিস্তার করছে।
তিনি কৃষি খাতে বাংলাদেশের প্রশংসা করে বলেন, এ খাতের সাফল্য আশ্চর্যজনক এবং বাংলাদেশ এখন প্রধান ফসলের ক্ষেত্রেও স্বয়ংসম্পূর্ণ।
ইইউ রাষ্ট্রদূত নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে যৌথ প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, 'আমি বাংলাদেশে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে অনেক বেশি মনোযোগ দেখতে পাচ্ছি।’
তিনি গার্মেন্টস খাতের বিপ্লবের কথা উল্লেখ করেন এবং এটি কীভাবে নারীদের জন্য চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করে তা তুলে ধরেন।
ইইউ বাংলাদেশের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার। এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জনের পথে বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের সদ্ব্যবহার করেছে এবং 'এভরিথিং বাট আর্মস' ব্যবস্থার আওতায় ইইউতে বৈশ্বিক আমদানির ৬০ শতাংশেরও বেশি অংশ অর্জন করেছে।
বাংলাদেশ ইবিএর সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী, ২০২২ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে রপ্তানি ২৪ বিলিয়ন ইউরোতে পৌঁছেছে।
অনুষ্ঠানে মানবাধিকার ও শ্রম অধিকার ইস্যু পূরণের গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা করা হয়, যা ইবিএ ব্যবস্থার একটি অন্তর্নিহিত অংশ।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ককে কীভাবে আরও শক্তিশালী ও নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া যায় সে বিষয়ে সংলাপে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মতামত শোনেন এবং দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয় হারনেট টিভিতে। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং বাংলাদেশ সরকারের লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান নারীদের কণ্ঠস্বর প্রসারিত করতে এবং বিশ্বব্যাপী তাদের বৈচিত্র্যময় গল্পগুলো তুলে ধরতে গতিশীল প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের উন্নয়ন ও তৈরি পোশাক খাতে ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রশংসা ইইউ প্রতিনিধি দলের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (ডুটা) সভাপতি ড. মো. নিজামুল হক বুয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ১০টি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
তারা বিকশিত বাংলাদেশে তরুণদের সামনে থাকা চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে ছিলেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ব্যারিস্টার সমীর সাত্তার; জোন্টা ইন্টারন্যাশনালের গভর্নর ড. জারিন দেলাওয়ার হুসেন; জেসিআই-এর জাতীয় সভাপতি জিয়াউল হক ভূঁইয়া, হারনেট গ্রুপের উপদেষ্টা মনির প্রধান; মেঘনা ব্যাংকের এমডি মো. সোহেল হোসেন ও ব্যারিস্টার মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকী, রোটারির গভর্নর, আইটোর প্রেসিডেন্ট গোলাম মোস্তফাসহ আরও অনেকে।
এ ছাড়া জাজ মাল্টিমিডিয়া,বাংলাদেশে ফরাসি দূতাবাস, রোটারি ক্লাব, ইউএনবি, সময় টিভি, বাংলাদেশ প্রতিদিন, গোল্ড স্যান্ডস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস, কাজী অ্যান্ড কাজী টি, জাজ মাল্টিমিডিয়া, ঢাকা লাইভ, মেঘনা ব্যাংক, হারনেট ব্লিসমাইন্ড, জেসিআই, জোন্তা, সাভার টেক্স এবং ব্যাকপেজ পিআরসহ পার্টনাররা এই আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বক্তারা হারনেট ফাউন্ডেশন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি তাদের জোরালো সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য যুব জনগোষ্ঠীকে তার সর্বোচ্চ সম্ভাবনায় কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের যুব উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন ও দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
সংলাপে সভাপতিত্ব করেন হারনেট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা আলিশা প্রধান।
রোটারি ক্লাব তরুণদের কল্যাণে অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরে একটি রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করে। মেঘনা ব্যাংক বিডিওয়াইএস ফোরামের সহযোগিতামূলক চেতনার প্রতিফলন ঘটিয়ে এই উদ্যোগের প্রতি তার অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে।
ফরাসি দূতাবাসের সহযোগিতায় 'টেকসই আগামীর জন্য আজকের কণ্ঠস্বর' স্লোগান নিয়ে ফোরামটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শুরু থেকে সৌদি দূতাবাস, গুলশান ক্লাব ও ওয়েস্টিন হোটেলের সঙ্গে সম্পৃক্ততার মধ্য দিয়ে যাত্রা অব্যাহত রাখবে।
আরও পড়ুন: শ্রম-মানবাধিকার খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কারে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান ইইউ প্রতিনিধি দলের
বাংলাদেশের তরুণদের প্রতি কৃতজ্ঞ: সজীব ওয়াজেদ
বাংলাদেশের তরুণরা সমস্যা সমাধানে চিন্তা করতে পারে। তাই বাংলাদেশের তরুণদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) চেয়ারম্যান সজীব ওয়াজেদ জয়।
তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের তরুণদের প্রতি কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশের অনেক সমস্যা আছে, তবে আপনারা শুধু সমস্যা নিয়ে চিন্তা করেন না এগুলোর সমাধানও চিন্তা করছেন। এরপর সমাধান বের করছেন এবং বাস্তবায়ন করছেন।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডের সপ্তম আসরের চূড়ান্ত পর্বে পুরস্কার বিতরণ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
এবার ৬টি ক্যাটাগরিতে মোট ১২টি সংগঠনকে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।
ইয়াং বাংলার পক্ষ থেকে ২০১৫ সাল থেকে এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, গত ১৫ বছরে দেশে যেই উন্নতি হয়েছে তা আগে কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। আগামী ১০-১৫ বছরে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে।
তিনি বলেন, আমি শুরু থেকে বাংলার তরুণদের বলছি, আমরা দেশ হিসেবে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি। বাংলাদেশের তরুণরাও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। নিজের উদ্যোগে আপনারা নিজের কর্মসংস্থান বের করতে পারেন। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যত সমস্যা আছে আপনারা এই সমস্যাও সমাধান করতে পারেন। শুধু সরকার পারে তা না, আমরা সবাই সব সমস্যা মোকাবিলা করতে পারি।
আরও পড়ুন: সামরিক শাসক ও মৌলবাদীদের কাছ থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে আ. লীগ: জয়
এ সময় জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী ও শীর্ষ বাছাই হওয়া সকল সংগঠনকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান তিনি।
সজীব ওয়াজেদ বলেন, ৭০০’র বেশি সংগঠন আবেদন করেছে। সবাইকে আমরা পুরস্কৃত করতে পারিনি। কিন্তু সবার জয়ই বাংলার জয়। আপনাদেরও অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। এত বছর ধরে ইয়াং বাংলার অ্যাওয়ার্ড করছি; পুরস্কার দিচ্ছি, আমি নিজেও অত্যন্ত গর্বিত। সংগঠনের সংখ্যা অনেক বেড়েছে, আমরা শুরু করেছিলাম মাত্র কয়েকশো’ নিয়ে। এখন সাতশোর বেশি আবেদন এসেছে।
তিনি বলেন, আপনারা যেভাবে সব জেলায় কাজ করছেন, যেভাবে ছড়িয়ে যাচ্ছেন এবং পরিশ্রম করছেন, জাতিসংঘ-ইউনেস্কো সবখানে স্বীকৃতি পাচ্ছেন, তা দেখে খুব গর্ব হয়।
তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য যেভাবে কাজ করছেন, পরিবেশের জন্য যে চিন্তা ও পরিশ্রম করছেন তা অসাধারণ। আমাদের স্বপ্ন ছিল তরুণরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আপনারাই হচ্ছেন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। আমাদের চিন্তা শুধু বাংলাদেশের বর্তমান নয়, ভবিষ্যৎ নিয়েও। গত ১৫ বছর ধরে যে গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আপনারা তা দেখিয়ে দিচ্ছেন। আমরা যখন শুরু করেছিলাম বাংলাদেশ তখন ছিল দরিদ্র দেশ, এখন মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে গেছি।
তরুণরা বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের যে পাথফাইন্ডার আছে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল; স্বাধীনতার আগে থেকেই আপনারা বাংলাদেশের চেতনা ও স্বাধীনতার চেতনা দেখিয়েছেন। এই তরুণরা আপনাদেরই সন্তান। আপনাদের প্রতি আমার ব্যক্তিগত কৃতজ্ঞতা। আমাদের জুরিরা পরিশ্রম করেছেন। আবেদনের সংখ্যা বাড়ছে, তাদের (জুরি) পরিশ্রমও বাড়ছে। আপনাদের প্রতিও আমার ব্যক্তিগত কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।
দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৫ বছর আগে কেউ কল্পনা করতে পারেনি উন্নয়নের এই গতি হতে পারে। এই গতি যদি ধরে রাখা যায় আগামী ১০-১৫ বছরে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশ হবে। আর আগামী ১০-১৫ বছরে বাংলাদেশ বিএনপি-জামায়াত বলে কোনো দল টিকবে না। যখন বাংলাদেশ থেকে এই জঙ্গি ও মৌলবাদী শক্তির চিহ্ন মুছে যাবে, তখন বাংলাদেশে শান্তি আসবে।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ নেই জানিয়ে বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র বলেন, অনেকেই মৌলবাদী ও সন্ত্রাসীদের উস্কাচ্ছে। যেহেতু নির্বাচন সামনে, তাই আমি আপনাদের অনুরোধ করব এদের কথায় কান দেবেন না। বিশেষ করে আমাদের অনেক বিদেশি রাষ্ট্রদূত নির্বাচনের আগে অনেক বেশি কথা বলা শুরু করে। ঠিক তখনই এই সন্ত্রাস, সংঘর্ষ, জ্বালাও-পোড়াও শুরু হয়। তার মানে কি? তাদের এরাই উস্কাচ্ছে।
তবে চিন্তা করবেন না, যেদিন নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে, তারাও চুপ হয়ে যাবে। আর বেশি দিন নাই, মাত্র দেড় মাস। সামনে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে চাইলে একটি উপায়। আগামী ৭ জানুয়ারি নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন।
আরও পড়ুন: খোলা মাঠ থাকতেও কেন সড়কে সমাবেশ: বিএনপিকে জয়ের প্রশ্ন
খোলা মাঠ থাকতেও কেন সড়কে সমাবেশ: বিএনপিকে জয়ের প্রশ্ন
রাজশাহীতে অস্ত্র হাতে তরুণদের উল্লাস, আটক ৭
রাজশাহী নগরীর শাহ মখদুম থানা এলাকায় দেশীয় বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র উঁচিয়ে একদল তরুণের উল্লাস করার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে অস্ত্র কারখানার সন্ধান, সরঞ্জামসহ গ্রেপ্তার ২
ইতোমধ্যে এ ঘটনায় সাতজনকে নগরীর শাহ মখদুম থানা পুলিশ আটক করেছে। তাদের শাহ মখদুম থানা হেফাজতেই রাখা হয়েছে।
তারা হলেন- মো. সোহেল রানা, মো. মনিরুল ইসলাম অপূর্ব, মো. রফিকুল ইসলাম সম্রাট, নাজমুস সাকিব আবির, মোহাইমিনুল শেখ, মো. জিসাদ ও মো. মারুফ হোসেন। আটক সবার বাড়ি নগরীর শাহ মখদুম থানার চকপাড়া দুরুলের মোড় এলাকায়।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (শাহ মখদুম জোন) নূর আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘অস্ত্র হাতে একদল কিশোরের (তরুণ) নাচানাচির একটি ভিডিও আমাদের নজরে আসে। এরপর মঙ্গলবার রাতভর ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের মধ্যে সাতজনকে আমরা আটক করি।’
আরও পড়ুন: কাশিমপুর কারাগারে গাঁজা ও দেশীয় অস্ত্র জব্দ, গ্রেপ্তার ২
জ্ঞান অর্জন ও বিজ্ঞান চর্চা কর: ঢাবির সমাবর্তনে তরুণদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
জ্ঞান অর্জন ও বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে দেশকে উন্নত ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমার জন্য যা যা সম্ভব আমি তাই করছি। তরুণদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যেন থেমে না যায়।’
রবিবার (২৯ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: সড়ক যোগাযোগে নতুন যুগের সূচনায় বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মরণোত্তর সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি প্রদানের লক্ষ্যে এই বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন।
নয়াপল্টন ও শাপলা চত্বরে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত সরকারবিরোধী সমাবেশকে কেন্দ্র করে শনিবারের সহিংসতার প্রতিবাদে বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা হরতাল সত্ত্বেও কর্মসূচি পালন করা হয়।
শেখ হাসিনা গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, ‘গবেষণাকাজে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কৃষি গবেষণায় আমরা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছি। আজ আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে এবং দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তারপর আমাদের চাঁদে যেতে হবে। চাঁদে যাওয়ার জন্য আমি ইতোমধ্যে লালমনিরহাটে এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার একমাত্র লক্ষ্য জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আমার কাছে কিছুই নয়। আমি অনেক আগেই প্রধানমন্ত্রী হতে পারতাম। কিন্তু আমি এটা এভাবে চাইনি।’
তিনি বলেন, তিনি জনগণের কল্যাণে ক্ষমতা ব্যবহারে বিশ্বাসী।
তিনি বলেন, ‘আমি যা করছি তা হলো জাতির পিতা যেভাবে দেখতে চেয়েছিলেন, সেভাবেই দেশের উন্নয়ন করা। এটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য।’
তিনি শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে গ্রামাঞ্চলে বসবাসরত মানুষের কথা ভুলে না যাওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ মানুষ যত বেশি উন্নত হবে, দেশের জন্য তত ভালো হবে। মুষ্টিমেয় মানুষের অগ্রগতি কাম্য নয়। এটি সর্বজনীন হতে হবে। আমাদের উন্নয়ন তৃণমূল থেকে, গ্রাম থেকে আসবে।’
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বাংলাদেশ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা বার বার উল্লেখ করেন। তিনি (বঙ্গবন্ধু) কৃষি, দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য ও সংস্কৃতির উপর গুরুত্বারোপ করার কথা বলতেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন ব্যর্থ হবেই: আনোয়ারায় জনসভায় প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় রয়েছে এবং বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার প্রতিটি বাণী হৃদয়ে ধারণ করে এবং তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা তা করতে সক্ষম হয়েছি। আমি এভাবেই করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচন করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। তবে করোনা ও যুদ্ধ গোটা বিশ্বের জন্য বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে।’
তিনি বলেন, রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা এই স্বাধীনতার সুফল সবার কাছে পৌঁছে দেব। এই বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন বা ভূমিহীন থাকবে না।
তিনি বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।
বঙ্গবন্ধুকে ‘ডক্টর অব লজ’ প্রদানের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার হৃদয়ের বিশ্ববিদ্যালয়। আমি যদি আবার ভর্তি হতে পারতাম, এখান থেকে মাস্টার্স শেষ করতে পারলে খুশি হতাম।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি বিশ্বের অনেক দেশ থেকে অনেক ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি এতে সন্তুষ্ট নই। আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তা পাইনি। যদিও আমাকে এখান থেকে সম্মানসূচক ডিগ্রি দেওয়া হয়েছিল, তবে আমি যদি এখানে আবার পড়াশোনা করতে পারতাম তবে আরও ভালো হতো।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের কাছ থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ (মরণোত্তর) ডিগ্রি গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের উপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে টোল নিয়ে ঝুমুরের স্বপ্ন পূরণ
ফেসবুকে কথা-কাটাকাটি, ছুরিকাঘাতে তরুণ নিহত
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ফেসবুকের মেসেঞ্জারে কথা কাটাকাটির জেরে ছুরিকাঘাতে এক তরুণকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আরও এক যুবক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমুড়া ইউনিয়নের আমনি বাজারের পূর্বে শাহী ঈদগাহের পাশে এ ঘটনাটি ঘটে।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় ট্রেনের ধাক্কায় যুবক নিহত
নিহত তাজেল আহমদ (১৮) উপজেলার আমুড়া ইউনিয়নের আমুড়া গ্রামের ময়ন মিয়ার ছেলে এবং আহত তানভীর আহমদ একই গ্রামের সফিক উদ্দিনের ছেলে।
তানভীর আহমদ জানান, এক সপ্তাহ আগে আমুড়া ইউনিয়নের কদমরসূল গ্রামের অপু আহমদের সঙ্গে তানভীর আহমদের ফেসবুকের মেসেঞ্জারে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার অপু আহমদ ৫/৬ জন যুবক নিয়ে তাজেল আহমদের উপর হামলা চালায়। এসময় তাজেল আহমদকে ছুরিকাঘাত করা হলে তাজেলের সঙ্গে থাকা তানভীর তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়।
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাজেল মৃত্যুবরণ করে। এ ঘটনায় আহত তানভীর বর্তমানে ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য জনি চৌধুরী জানান, ফেসবুক মেসেঞ্জারে গালাগালি নিয়ে অপু ও সাঈদ নামে দুজনের ছুরিকাঘাতে তাজেল নিহত হন। লাশ বর্তমানে ওসমানী হাসপাতালে রয়েছে।
গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, নিহতের বিষয়টি শুনেছি। বিস্তারিত জেনে পরে বলব।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে বাসচাপায় তরুণ নিহত
কুড়িগ্রামে ‘বিএসএফের গুলিতে’ বাংলাদেশি তরুণ নিহত
তরুণদের মধ্যে ই-সিগারেটের ব্যবহার বাড়ছে: ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা
জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানিয়েছেন, বর্তমান প্রজন্মের তরুণদের মধ্যে আশঙ্কাজনকভাবে ই-সিগারেটের ব্যবহার বাড়ছে। এতে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা হুমকিতে পড়ছে।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সিরডাপে “তামাক ও অসংক্রামক রোগ: জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ‘এফসিটিসি’র সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের গুরুত্ব’’- শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বর্তমানে নারীদের মধ্যেও ধূমপান ব্যবহারের মাত্রা বাড়ছে। তারাও ই-সিগারেটের মতো ভয়ংকর নেশায় বুঁদ হয়ে পড়ছে। তাই তরুণদের জনস্বাস্থ্য রক্ষায় অবিলম্বে ই-সিগারেটের মতো ক্ষতিকর পণ্যের আমদানি ও রপ্তানি নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। এজন্য বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা’র এফসিটিসির আলোকে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করতে হবে।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. শাহ মনির হোসেন।
এতে স্বাগত বক্তব্য দেন পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট ডা. আবু জামিল ফয়সাল।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণার বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী ও পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. নিজাম উদ্দীন আহমেদ।
আরও পড়ুন: সংশোধিত তামাক আইন পাস হলে মৃত্যু কমবে, এসডিজি লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে
তারা জানান, তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের কারণে দেশে অসংক্রামক রোগ যেমন- হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, ক্যানসার ও শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদি রোগ ইত্যাদি বাড়ছে। বর্তমানে দেশে মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশই অসংক্রামক রোগের কারণে ঘটছে। আর এই অসংক্রামক রোগ সৃষ্টির কারণ মূলত ধূমপান ও তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার।
তারা আরও বলেন, দেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। কর্মক্ষেত্রসহ উন্মুক্ত স্থান ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। আর তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
সেমিনারে সভাপতি ডা. শাহ মনির হোসেন বলেন, তামাক ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে। এর কারণ বাংলাদেশ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ এবং তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রণোদনা নির্মিত করার ক্ষেত্রে এখনও সর্বোত্তম মান অর্জন করতে পারেনি। তাই প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মানে বিদ্যমান তামাকনিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে তামাক নির্মূলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. এ এস এম শহিদুল্লাহ, ডা. নাদিরা সুলতানা, পুষ্টিবিদ তাসনিমা হক, সাভার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীসহ তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
উল্লেখ্য, বিদ্যমান আইনের ছয়টি ধারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। সেগুলো হলো- আইনের ধারা ৪ ও ৭ বিলুপ্ত করা অর্থাৎ সব উন্মুক্ত স্থান ও গণপরিবহণে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির যেকোনো ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা; বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা; ই-সিগারেটসহ সব ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস্ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা।
আরও পড়ুন: তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাসের দাবিতে সিগনেচার ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের তুলনায় তামাকের দাম কমবে: প্রজ্ঞা
জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণ নেতাদের আবেগ ও উদ্ভাবন অমূল্য সম্পদ: রাষ্ট্রদূত হাস
জলবায়ু ফ্রন্টে তরুণ নেতাদের প্রশংসা করে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বলেছেন, বিশ্বের সামনে উদ্ভূত জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের প্রতিশ্রুতি সত্যিই প্রশংসনীয় ও অনুপ্রেরণাদায়ক।
তিনি বলেন, ‘সবাইকে অবশ্যই তাদের ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি আপনাদের নিজ নিজ দেশে কমিউনিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে আপনাদের উত্সর্গের জন্য সমস্ত জলবায়ু চ্যাম্পিয়নদের প্রশংসা করি।’
২৬-২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস, একটি যুব-নেতৃত্বাধীন সামাজিক উদ্যোগ জেনল্যাবের সঙ্গে সহযোগিতায়, ক্লাইমেট অ্যাকশন চ্যাম্পিয়ন্স নেটওয়ার্ক (সিএসিএন) বাংলাদেশ কনক্লেইভের আয়োজন করে।
লক্ষ্য ছিল বায়ুর মান উন্নত করায় তরুণ জলবায়ুকর্মীদের সঙ্গে সহযোগিতার সুযোগ নিয়ে আলোচনা করা।
বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার ৫০ জন জলবায়ু উদ্যমী তরুণ এই ইভেন্টে যোগ দেয়।
রাষ্ট্রদূত হাস সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি তরুণ প্রতিনিধিদের পরিবেশ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় কাজ চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং সীমানা পেরিয়ে কাজ করার মাধ্যমে এই তরুণ নেতারা তাদের সম্প্রদায়কে দেখিয়ে দিচ্ছেন যে ভাগ করা সমৃদ্ধির জন্য তাদের একে অপরের প্রয়োজন।
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, ‘আপনাদের আবেগ, উত্সর্গ ও উদ্ভাবনী চিন্তা আমাদের সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলোর একটি মোকাবিলার অমূল্য সম্পদ।’
তিনি বলেন, ‘ইতিবাচক কাজ চালিয়ে যান এবং জেনে রাখুন যে বিশ্ব আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা দেখছে এবং সমর্থন করছে। একইসঙ্গে আমরা সকলের জন্য আরও টেকসই এবং ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব গড়ে তুলতে পারি।’
ক্লাইমেট অ্যাকশন চ্যাম্পিয়নস নেটওয়ার্ক (সিএসিএন) হলো ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের অর্থায়নে আঞ্চলিক একটি উদ্যোগ। যার লক্ষ্য এই অঞ্চলে জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য তরুণ নেতৃত্বকে প্রশিক্ষণ দেয়া ও ক্ষমতায়ন করা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ‘অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ’ নির্বাচনে সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র: পিটার হাস
বাংলাদেশের তরুণদের দক্ষতা বাড়াতে ইউএনডিপি ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের সমঝোতা চুক্তি
বিশ্বায়নের এই যুগে ইংরেজি ভাষার ওপর আরও দক্ষতা বাড়াতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশ এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল সোমবার (১৯ জুন) ইউএনডিপি ঢাকা অফিসে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যার মূল লক্ষ্য হলো স্থানীয় ও বৈশ্বিক চাকরির বাজারে তরুণদেরকে তৈরি করা।
এই চুক্তিটি 'ফিউচারনেশন' এর আওতায় বাস্তবায়ন হবে। ফিউচারনেশন দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে সরকার, বেসরকারি খাত ও উন্নয়ন খাতের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে। যেটি ইউএনডিপি, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও গ্রামীণফোনের একটি যৌথ উদ্যোগ।
ইংরেজি যোগাযোগের বৈশ্বিক ভাষা হিসেবে পরিচিত।
কর্মসংস্থানের সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য এবং উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ইংরেজি ভাষার দক্ষতা অপরিহার্য।
ইংরেজি ভাষাশিক্ষা প্রদানে ব্রিটিশ কাউন্সিলের রয়েছে ৪০ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা। এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ইউএনডিপি এর ফিউচারনেশন বাংলাদেশের তরুণদের কর্মক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে কাজ করবে।
এই যৌথ উদ্যোগের অংশ হিসেবে, ইউএনডিপি বাংলাদেশ এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল, গ্লোবাল সিটিজেনশিপ, প্রশিক্ষণ এর একটি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল লাইব্রেরি অ্যাপ চালু করল ইউএনডিপি
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার চুক্তি স্বাক্ষর কালে বলেন, ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং ইউএনডিপির এই যৌথ উদ্যোগ শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের জন্য একসঙ্গে পথচলার একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে।
উভয় পক্ষের শক্তি, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাকে সমন্বিত করে, আমরা আরও বড় ফলাফল নিয়ে আসতে পারব এবং কার্যক্রমকে আরও ত্বরান্বিত করতে পারব বলে আমি আশা করি।
এই চুক্তির প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো, যৌথ ভাবে তরুণদের জন্য ব্যবহারিক ইংরেজি ভাষার ওপর কোর্স তৈরি করা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং সবার জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি করা।
পাশাপাশি তরুণদেরকে জলবায়ু কার্যক্রম, ব্যবসা ও মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে সম্পৃক্ত করা এবং সমাজের উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয়ে প্রচারাভিযান করা।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের কান্ট্রি ডিরেক্টর টম মিশশা বলেন, আমরা ইউএনডিপির ফিউচারেশন প্রোগ্রামের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পেরে আনন্দিত। মানুষকে পরিবর্তন করার পেছনে শিক্ষার যে শক্তি তা কাজে লাগিয়ে আমরা সারাদেশে তরুণদের ইংরেজি ভাষার দক্ষতা বৃদ্ধিতে সম্মিলিতভাবে কাজ করব এবং তাদের উদ্যোক্তা বা চাকরির সম্ভাবনাকে আরও শক্তিশালী করে তুলব বলে আশা রাখি।
বাংলাদেশের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ইংরেজি, শিক্ষা এবং শিল্প সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে তাদের দক্ষতা, আত্মবিশ্বাস এবং যোগাযোগ বাড়াতে ব্রিটিশ কাউন্সিল সবসময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ইউএনডিপি এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের এই যৌথ উদ্যোগ ভবিষ্যতে আরও অনেক বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদান এবং মতবিনিময় করার সুযোগ তৈরি করবে।
সবার জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে একসাথে কাজ করে যাওয়াই দুই পক্ষের মূল লক্ষ্য।
আরও পড়ুন: বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস উপলক্ষে ইউএনডিপি’র ‘ক্লিক ফর ওয়াইল্ডলাইফ’ প্রচারাভিযান
তরুণদের অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরিতে কাজ করবে ইউএনডিপি-গ্রামীণফোন
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য তরুণ ও নারীদের প্রস্তুত করতে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে তরুণ ও নারীদের চালিকাশক্তি হিসেবে তৈরি করতে গবেষণা, উদ্ভাবন ও উন্নয়ন কাজের জন্য আগামী বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও উদ্ভাবন কেন্দ্রের মাধ্যমে ৮০ হাজার তরুণ-তরুণীকে উন্নত প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে প্রশিক্ষণ দেবেন।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের সময় তিনি বলেন, ‘আমরা অবকাঠামো তৈরি করছি এবং স্টার্টআপ এবং উদ্যোক্তা উন্নয়নের জন্য উপযোগী সুবিধা প্রদান করছি।’
আরও পড়ুন: বাজেটে বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭.৫ ও মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশ নির্ধারণ
অর্থমন্ত্রী বলেন, দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি তরুণদের জন্য দেশে ও বিদেশে চাকরির সুযোগ সৃষ্টিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, তারা তরুণদের চাকরি পাওয়ার প্রথাগত মানসিকতা থেকে বেরিয়ে এসে কর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্র খুঁজতে এবং সমাজে অবদান রাখতে উদ্বুদ্ধ করতে চান।
একই সঙ্গে তিনি বলেন, তারা সঠিক প্লাটফর্ম তৈরি করতে চান। ‘সাধারণ, প্রযুক্তিগত, বৃত্তিমূলক এবং সারা জীবন শিক্ষার জন্য বিভিন্ন ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মে অনলাইন শিক্ষার সুযোগ তৈরি এবং প্রসারিত করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: বাজেট ‘জনবান্ধব’: ওবায়দুল কাদের
প্রাণঘাতী জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধের দাবি বাংলাদেশি তরুণদের
বাংলাদেশের তরুণ কর্মীরা জীবাশ্ম জ্বালানি-ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের অর্থায়ন অবিলম্বে বন্ধ করতে এবং নবায়নযোগ্য বিদ্যুতে বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য জি-৭ দেশগুলোর বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার(১৯ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত জলবায়ু ধর্মঘটের সময়, ফ্রাইডেস ফর ফিউচার বাংলাদেশ এবং ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধ করার এবং জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানির ওপর দেশের নির্ভরতা কমানোর অঙ্গীকার করেছে, প্রাথমিকভাবে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস(এলএনজি)।
বক্তারা বলেন, অক্সফামের সর্বশেষ বিশ্লেষণে দেখা যায় যে গ্রুপ অব সেভেন (জি-৭) দেশগুলোর জলবায়ু কর্মকাণ্ডের জন্য অবৈতনিক সহায়তা এবং অর্থায়নে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর কাছে ১৩ দশমিক তিন ট্রিলিয়নমার্কিন ডলার ( ১২ দশমিক তিন ট্রিলিয়ন ইউরো) বকেয়া ঋণ রয়েছে।
জাপানের হিরোশিমায়২০২৩ সালের ১৯-২১মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ৪৯তম জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের আগে এই জরুরি আবেদনটি আসে। শীর্ষ সম্মেলনে জরুরি জলবায়ু সংকট সহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংকট নিয়ে আলোচনা করা হবে।
তারা বলেন, ‘বাংলাদেশ, একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং উন্নত দেশগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানায়।’
তাদের আবেগপূর্ণ আবেদনে, তরুণ কর্মীরা হাইড্রোজেন এবং অ্যামোনিয়ার মতো মিথ্যা সমাধানের বিরুদ্ধে সতর্ক করার পাশাপাশি ক্ষতি এবং ক্ষতির অর্থায়নের গুরুত্বের উপর জোর দেয়।
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৪০% বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশের প্রয়োজন ২৬.৫ বিলিয়ন ডলার
বাংলাদেশি তরুণ কর্মীদের দাবি যে জি-৭ দেশগুলো জ্বালানি নিরাপত্তা এবং ক্লিন এনার্জিকে অগ্রাধিকার দেয়। বিশেষ করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে অর্থায়নে সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে।
তারা জি-৭-এর মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানি এবং নবায়ণযোগ্য জ্বালানিতে অর্থায়নের বিষয়ে আলোচনাকে ঘিরে বিদ্যমান অস্পষ্টতা, বিলম্ব এবং অস্থিরতার উপর আলোকপাত করেছে।
তরুণ কর্মীরা মতামত দিয়েছেন যে দুর্ভাগ্যবশত, সদস্য দেশগুলোর প্রতিশ্রুতিগুলো বর্তমানে স্থবির বা এমনকি বিপরীত দিকেও চলছে ।
বাংলাদেশের উৎসাহী যুবকরা তাদের দেশের বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলা করার জন্য সমালোচনামূলক স্টেকহোল্ডারদের আহ্বান জানায়। এলএনজির মতো ব্যয়বহুল জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানির ক্ষতিকর পরিণতিগুলো তুলে ধরে, যা দেশের জন্য আর্থিকভাবে বোঝা।
তারা জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি এবং ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে উদ্ভূত জটিল চ্যালেঞ্জগুলোর উপর আরও জোর দেয়। নতুন বিদ্যুৎ খাতের মাস্টার প্ল্যানে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উচ্চ অনুপাতের জন্য তাদের দৃঢ় সমর্থনের লক্ষ্য হলো জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ন্যায়সঙ্গত পরিবর্তনের প্রসার।
এছাড়াও, বাংলাদেশি তরুণদের দাবি যে উন্নত দেশগুলো প্যারিস চুক্তি মেনে চলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে কঠোরভাবে এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করে এবং বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানি বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগ থেকে নিরুৎসাহিত করে, যার ফলে ক্ষতিকারক কার্বন নিঃসরণ হ্রাস পায়।
ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান ঘোষণা করেছেন, ‘ক্ষতিকর এবং ব্যয়বহুল জীবাশ্ম জ্বালানি পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার জরুরি প্রয়োজন অনুধাবন করার জন্য আমরা আগামীকালের জন্য অপেক্ষা করতে পারি না। এখনই পদক্ষেপ নেয়ার সময় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব ইতোমধ্যেই জলবায়ু ও জ্বালানি সংকটে ভুগছে, এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যথেষ্ট বিনিয়োগ এবং জি-৭ দেশগুলোর মতো বিশ্ব নেতাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ অপরিহার্য। আমরা আর কোনো বিলম্ব সহ্য করতে পারি না; তাদের এই মুহূর্তের জরুরিতার প্রতি জাগ্রত হতে হবে।’
তরুণ অ্যাক্টিভিস্টরা জলবায়ু অর্থায়নের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রতিশ্রুতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়, বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতির পক্ষে কথা বলে, যার অন্তত ৫০ শতাংশ নবায়ণযোগ্য জ্বালানির অর্থায়নের জন্য বিশেষভাবে বরাদ্দ করা হয়।
তদুপরি, তারা দৃঢ়ভাবে দাবি করে যে জাপান সহ জি-৭ দেশগুলো বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর উপর হাইড্রোজেন জ্বালানি এবং অ্যামোনিয়ার মতো অপরীক্ষিত, বিতর্কিত এবং ব্যয়বহুল প্রযুক্তি চাপিয়ে দেওয়া থেকে বিরত থাকে।
আরও পড়ুন: জ্বালানির দাম স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যুত ও গ্যাসের দাম কমানো যাবে না: তৌফিক ইলাহী
সেন্টার ফর অ্যাটমোস্ফিয়ারিক পলিউশন স্টাডিজ (ক্যাপস) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ডক্টর আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে এবং বায়ু দূষণরোধে অবিলম্বে কাজ করতে হবে। কারণ, দু’টি আন্তঃসম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আসুন আমরা ব্যক্তি, ব্যবসায়িক হিসাবে ঐক্যবদ্ধ হই। এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নবায়ণযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের সুবিধার্থে এবং একটি টেকসই ভবিষ্যতের দিকে পথ প্রশস্ত করি৷ আমরা প্রতিটি নিঃশ্বাস গ্রহণ করি এবং প্রতিটি তাপপ্রবাহ সহ্য করার জন্য জরুরি পদক্ষেপের একটি প্রখর অনুস্মারক৷’
কপ-২৮ প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইসিসিসিএডি) -এর পরিচালক প্রফেসর সালেমুল হক জোর দিয়ে বলেন, ‘জলবায়ু সংকট ভবিষ্যতের জন্য সীমাবদ্ধ কোনো দূরের হুমকি নয়; তাদের ন্যূনতম অবদান থাকা সত্ত্বেও এটি ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাপী এবং বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়ের উপর ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে।’
‘ধনী দেশগুলো এবং জীবাশ্ম জ্বালানির জন্য অপরাধী প্রধান কর্পোরেশনগুলো তারা যে ক্ষতি করেছে তার জন্য দায়িত্ব নেওয়া এবং সকলের জন্য একটি ন্যায্য এবং টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার এটিই উপযুক্ত সময় ।
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক দেরি হওয়ার আগে আমরা এখন আমাদের সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের কাছে সিদ্ধান্তমূলকভাবে কাজ করার জন্য ঋণী।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে ১৭০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন: নসরুল