চিকিৎসা
যুবদল নেতাকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে চিকিৎসা কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
কারাবন্দি যশোর জেলা যুবদলের সহসভাপতি অসুস্থ আমিনুর রহমানকে চিকিৎসা দেওয়া অবস্থায় হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরানো কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে তাকে ১০ দিনের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
এর আগে রবিবার (৩ ডিসেম্বর) কারাবন্দি যশোর জেলা যুবদলের সহ সভাপতি অসুস্থ মো. আমিনুর রহমানকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় চিকিৎসা দেওয়ার ঘটনার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটের আদেশের জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।
আমিনুর রহমানের স্ত্রী রাহাত আরা খানের করা রিটের শুনানি করে আদেশের দিন ধার্য করেন।
রবিবার রাহাত আরা খানের পক্ষে রিটটি দায়ের করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রিটে ওই যুবদল নেতার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুর মামলা: ফখরুলের জামিন আবেদনের শুনানি ৭ ডিসেম্বর
গত ২৯ নভেম্বর ‘ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে যুবদল নেতাকে’- শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের নজরে এনে উপস্থাপন করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবী। এসময় স্বপ্রণোদিত আদেশ চাইলে আদেশ দেননি হাইকোর্ট। আদালত বিষয়টি রিট আবেদন হিসেবে দায়ের করতে বলেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ রিটটি করা হয়েছে।
সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসপাতালের মেঝেতে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন এক ব্যক্তি। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় দুই পা ভাঁজ করে শুয়ে আছেন। ডান্ডাবেড়ি থাকায় দুই পা সোজা করতে পারছেন না। এক হাতে ঝুলছে হাতকড়া। অন্য হাতে ইনজেকশনের ক্যানোলা। দুই পায়ের মাঝখানে ঝুলছে ক্যাথেটার। রক্তমিশ্রিত প্রস্রাব সেখানে জমা হচ্ছে। ঢাকার কেরাণীগঞ্জ কারাগার থেকে নিয়ে এসে জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে ওই ব্যক্তিকে।
তার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) ছড়িয়ে পড়ে, যা রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে। ছবির ওই ব্যক্তির নাম আমিনুর রহমান মধু। তিনি যশোর জেলা যুবদলের সহসভাপতি। এ ছাড়া তিনি সদর উপজেলার আমদাবাদ ডিগ্রি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ কলেজশিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাহিত্য ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক।
আরও পড়ুন: আমানসহ ৪৫ জনের বিচার শুরু, রিজভীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
অসুস্থ আমিনুরের পরিপূর্ণ চিকিৎসায় বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পরিবারের। আর কারা পুলিশের এমন অমানবিক কাণ্ডে মর্মাহত তার পরিবার ও স্বজনরা। এরূপ আচরণ সমীচীন নয় বলে অভিমত জানান আইনজীবীরা।
দলীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ অক্টোবর রাতে যশোর-নড়াইল মহাসড়কে দুটি বাস থেকে ককটেল, লাঠি ও পেট্রোল জব্দের ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ ৮৭ জনকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ। ওই মামলায় আসামি যুবদল নেতা আমিনুর রহমান মধু। এরপর হরতাল–অবরোধে নাশকতার আরও দুই মামলার আসামি হন তিনি। গ্রেপ্তার আতঙ্কে আত্মগোপনে যান। কিন্তু ২ নভেম্বর সদর উপজেলার আমদাবাদ গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত ১২ নভেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় আমিনুর রহমান মধু হৃদরোগে আক্রান্ত হন। কারাগার থেকে তার দুই পায়ে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া লাগিয়ে প্রথমে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ওই রাতেই তাকে ঢাকার কেরাণীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
বিমানে করে গাজার হাসপাতালে চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে জর্ডান
জর্ডানের রয়্যাল এয়ার ফোর্সের একটি বিমান সোমবার (৬ নভেম্বর) গাজা উপত্যকায় জর্ডানের ফিল্ড হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসা সরবরাহ করেছে।
জর্ডানের রাষ্ট্র পরিচালিত পেট্রা নিউজ এজেন্সি এ তথ্য জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জর্ডানের সশস্ত্র বাহিনীর একটি সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবরুদ্ধ ভূখণ্ডে সহায়তা পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় হাসপাতালটিতে সরবরাহ শেষের পথে ছিল। গাজার জনগণকে সহায়তা করতে জর্ডানের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ এটি।
সোমবার ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ তার এক্স অ্যাকাউন্টে বলেছেন, ‘আমাদের নির্ভীক বিমানবাহিনীর কর্মীরা মধ্যরাতে গাজার জর্ডানের ফিল্ড হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সব ধরনের চ্যালেঞ্জ ও অসুবিধা সত্ত্বেও জর্ডানের ফিল্ড হাসপাতাল গাজা থেকে আহতদের চিকিৎসা করছে এবং ফিলিস্তিনের মানুষের দুর্ভোগ কমাতে মানবিক ভূমিকা পালন করছে।
আরও পড়ুন: রাফাহ সীমান্ত দিয়ে ঢুকল সহায়তা বহনকারী তৃতীয় চালান, ২ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি হামাসের
মানবিক সহায়তা নিয়ে ট্রাক রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গাজায় প্রবেশ করেছে
অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তার আহ্বান জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞের
দেশে ফিরলেন রাষ্ট্রপতি
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাকে বহনকারী বিমানটি ফ্লাইট বিজি-৫৮৫ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, কূটনৈতিক কোরের ডিন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনী প্রধান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, জননিরাপত্তা সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব, বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরের কনসাল শিলা পিল্লাইসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: চিকিৎসা শেষে ১ নভেম্বর দেশে ফিরবেন রাষ্ট্রপতি
গত ১৬ অক্টোবর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পরে ১৮ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে তার বাইপাস সার্জারি সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
সার্জারি পরবর্তী ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ডাক্তারের নিবিড় পরিচর্যায় থাকার পর রাষ্ট্রপতিকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় গত ২৫ অক্টোবর হাসপাতাল থেকে হোটেলে ফেরেন রাষ্ট্রপতি। হোটেলে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হাঁটাচলা ও স্বাভাবিক কাজকর্মের পাশাপাশি দাপ্তরিক কার্যক্রমও সম্পন্ন করেন।
সার্জারি পরবর্তী রাষ্ট্রপতির চিকিৎসা ও শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনার লক্ষ্যে গঠিত চিকিৎসকদের বোর্ড সভায় বিভিন্ন রিপোর্ট ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে রাষ্ট্রপতি পহেলা নভেম্বরের মধ্যেই বিমানে ভ্রমণ করতে পারবেন বলে মত প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার দেশে ফিরলেন তিনি।
আরও পড়ুন: সিঙ্গাপুর থেকে বুধবার দেশে ফিরছেন রাষ্ট্রপতি
তফসিল ঘোষণার বিষয়ে আলোচনা করতে ৫ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে সিইসি’র নেতৃত্বাধীন কমিশন
চিকিৎসা শেষে ১ নভেম্বর দেশে ফিরবেন রাষ্ট্রপতি
চিকিৎসা শেষে আগামী ১ নভেম্বর সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানিয়েছেন, সোমবার সকালে সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে রাষ্ট্রপতির শারীরিক অবস্থার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট পর্যালোচনা করে চিকিৎসকরা রাষ্ট্রপতির শারীরিক সুস্থতার অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। পরে সার্জারি পরবর্তী রাষ্ট্রপতির চিকিৎসা ও শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনার জন্য গঠিত চিকিৎসকদের বোর্ড সভায় বিভিন্ন রিপোর্ট ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ১ নভেম্বরের মধ্যেই
বিমানে ভ্রমণ করতে পারবেন বল মত দেন চিকিৎসকরা।
উল্লেখ্য, ১৮ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে রাষ্ট্রপতির বাইপাস সার্জারি সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
আরও পড়ুন: সিঙ্গাপুরে হোটেল থেকে দাপ্তরিক কাজ করছেন রাষ্ট্রপতি: প্রেস সচিব
হাসপাতাল থেকে হোটেলে ফিরেছেন রাষ্ট্রপতি
দেশে চিকিৎসা সেবার ইতিহাসে নতুন মাইলফলক টেস্টটিউব বেবি: বিএসএমএমইউর উপাচার্য
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) প্রথম টেস্টটিউব বেবির জন্ম হয়েছে।
বুধবার (২৫ অক্টোবর ২০২৩ ) সকাল সাড়ে ৯টায় সি-ব্লকে মা ও প্রসূতি বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে এ টেস্টটিউব নবজাতকের জন্ম হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
অস্ত্রোপচারের আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ অপারেশন থিয়েটারে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের অনুপ্রেরণা দেন এবং টেস্টটিউব নবজাতকের মাকে অভয় দেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফার্টিলিটি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জেসমিন বানুর তত্ত্বাবধানে সফল সিজারিয়ানের মাধ্যমে প্রথম টেস্টটিউব বেবির জন্ম দেন।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে আরও ১১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ১৯১৭
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এটিই প্রথম টেস্টটিউব বেবির জন্ম। বরিশালের বাসিন্দা এই দম্পতি দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে বন্ধ্যাত্ব সমস্যায় ভুগছিলেন। ৮ বছর আগে দম্পতির রোগটি ডায়াগোনোসিস হয়। এ দম্পতি বিভিন্ন জায়গায় বন্ধ্যাত্ব সমস্যা নিরসনে চিকিৎসা নিলেও কোনো সফলতা বা তারা ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশনের (আইভিএফ) সুপরামর্শও পাননি। এরপর ২০২২ সালে এই দম্পতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফার্টিলিটি বিভাগে চিকিৎসা শুরু করেন। পরিপূর্ণ ইভাউলিউশন শেষে এই বিভাগ তাকে আইভিএফ উইথ আইসিএসআই এর পরামর্শ দেওয়া হয়। স্টেম সেল থেরাপি গ্রহণের মাধ্যমে তারা এ চিকিৎসা শুরু করেন। যথাযথ চিকিৎসা শেষে গত ফেব্রুয়ারি এই নবজাতকের মা গর্ভধারণ করেন এবং নিয়মিত চেকআপে থাকেন। ৩৮ সপ্তাহের পর সুদীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সফলতার নিদর্শন স্বরূপ ২৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টায় এ টেস্টটিউব নবজাতকের জন্ম হয়।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ টেস্টটিউব নবজাতকের জন্ম গ্রহণের মাধ্যমে আরেকটি সফলতার পালক যুক্ত হলো। নিঃসন্তান দম্পতিদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটানোর জন্য সব সময় কাজ করছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফার্টিলিটি বিভাগ। টেস্টটিউব নবজাতক ও তার মা সুস্থ আছেন। তাদের দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য দেশবাসীর দোয়া প্রার্থনাও করেন তিনি।
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত আরও ৪ জন, মৃত্যু নেই
শারফুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাডাভেরিক, কিডনি, লিভার ট্রান্সপ্লান্ট, কর্নিয়া ট্রান্সপ্লান্ট করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছে। আমি আশা করি ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে দেশে একটি স্মার্ট হেলথ সিস্টেম চালু করতে সমর্থ হব।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম টেস্টটিউব নবজাতকের সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের সময় অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের শিক্ষক নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. দেব্রবত বণিক, ডা. মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, নিউন্যাটোলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রাইন অ্যান্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারজানা দীবা, সহযোগী অধ্যাপক (অনারারী) ডা. শাহীন আরাসহ ১৭ জন চিকিৎসক, ৫ জন নার্স অংশ নেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রাইন অ্যান্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগের প্রধান জানান, সাধারণত বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় শতকরা ৫-১০ শতাংশ রোগীদের আইভিএফ পদ্ধতির প্রয়োজন হয়। ২০০৩ সালের ডিসেম্বর থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনফার্টিলিটি বিভাগ চালু হয়। তবে ২০১৯ সাল থেকে অধ্যাপক ডা. জেসমিন বানুর তত্ত্বাবধানে টেস্টটিউব বেবির আইভিএফ পদ্ধতি পুরোদমে চালু হয়। করোনার সময় এই সেবা কিছুটা স্থগিত থাকে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ দায়িত্বগ্রহণের পরপর ২০২২ সালে পুনরায় আইভিএফ পদ্ধতি চালুর জন্য ব্যাপক উদ্যোগ নেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রাইন অ্যান্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জেসমিন বানুর নেতৃত্বে বন্ধ্যাত্বের সর্বাধুনিক চিকিৎসা স্টেম সেল থেরাপি, পিআরপি থেরাপি, রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জারি, এআরটি, আইইউআই, আইভিএফ সেবা দিয়ে আসছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু সম্পর্কে ১০টি প্রচলিত ধারণা: জেনে নিন সঠিক তথ্য
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসছেন ৩ চিকিৎসক
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বুধবার ঢাকায় আসছেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারের অনুমতি পাওয়ায় এই তিন চিকিৎসক বুধবার ঢাকায় আসবেন।
এর আগে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সহায়তার জন্য সরকার বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনার অনুমতি দিয়েছে।
তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘চিকিৎসকদের ভিসা প্রদানে যাতে কোনো সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: সিসিইউ থেকে কেবিনে খালেদা জিয়া
আনিসুল হক বলেন, খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে প্রায় ৯ ঘণ্টা রাখার পর মঙ্গলবার বিকালে আবারও করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) থেকে কেবিনে ফিরিয়ে আনা হয়।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। চিকিৎসকরা বারবার বলছেন যে তিনি খুব অসুস্থ। গতকাল রাতে তাকে সিসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর দুপুর ১২টার দিকে তাকে কেবিনে নিয়ে যাওয়া হয়।’
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, সকালে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তারা (চিকিৎসকরা) বলেছেন, ম্যাডাম এখন খুবই উদ্বেগজনক অবস্থায় আছেন।
৯ আগস্ট থেকে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন।
আরও পড়ুন: আড়াই ঘণ্টা পর সিসিইউ থেকে কেবিনে ফিরেছেন খালেদা জিয়া
খালেদা জিয়া ও হাজী সেলিম নির্বাচন করতে পারবেন না: খুরশীদ আলম
বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দাবিতে বিএনপির প্রতীকী অনশন শুরু
কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে তিন ঘণ্টার প্রতীকী অনশন কর্মসূচি শুরু করেছে বিএনপি।
শনিবার সকাল ১১টা ২১ মিনিটে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কর্মসূচি শুরু হয়।
দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জীবন বাঁচাতে বাধা অপসারণ করুন: সরকারের প্রতি বিএনপির নীতিনির্ধারকদের আহ্বান
বিএনপি চেয়ারপার্সনের স্থায়ী মুক্তির দাবিতে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরা এ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন।
প্রতীকী অনশন দুপুর ২টার দিকে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এছাড়া দেশের সব জেলা শহর ও মেট্রোপলিটন শহরে একই ধরনের কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
একই দাবিতে গত সোমবার রাজধানীতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেসহ সারাদেশে সমাবেশ করেছে বিএনপি।
আরও পড়ুন: বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে: ওবায়দুল কাদেরের 'ইউরেনিয়াম' মন্তব্য প্রসঙ্গে আব্বাস
গত ৯ আগস্ট থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে মেডিকেল বোর্ড সুপারিশ করে যে, বাংলাদেশে এখন তার চিকিৎসার কোনো বিকল্প না থাকায় তাকে দ্রুত বিদেশে একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি সেন্টারে পাঠানো হোক।
লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট, চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন খালেদা জিয়া।
গত ৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করলেও তা প্রত্যাখ্যান করা হয়।
আরও পড়ুন: আমাদের সর্বোচ্চটা করেছি, প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা পাচ্ছেন না খালেদা জিয়া: মেডিকেল বোর্ড
আমাদের সর্বোচ্চটা করেছি, প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা পাচ্ছেন না খালেদা জিয়া: মেডিকেল বোর্ড
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে জরুরি লিভার ট্রান্সপ্লান্টের জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছে এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড।
মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ড. শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, লিভার সিরোসিসসহ বেশ কিছু গুরুতর রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি (খালেদা জিয়া) যেকোনো সময় সংকটে পড়তে পারেন।
সোমবার (৯ অক্টোবর) এভারকেয়ার হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ড. এফ এম সিদ্দিক বলেন, লিভার সিরোসিসের জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সনের এই মুহূর্তে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হচ্ছে না।
তিনি বলেন, 'আমরা যা করতে পারি সব করেছি। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য বিদেশের যেকোনো উন্নত প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরও বলেন, 'যথাযথ চিকিৎসার অভাবে' বিএনপি চেয়ারপার্সনের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে।
ড. এফ এম সিদ্দিক বলেন, 'মেডিকেল বোর্ডের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলতে চাই যে, যেকোনো মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি প্রতিষ্ঠানে লিভার ট্রান্সপ্লান্টের জন্য ট্রান্সসাগুলার ইন্ট্রাহেপাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শন্ট (টিআইপিএস) দিয়ে তার চিকিৎসা করার জন্য এখনও সময় আছে।’
আরও পড়ুন: খালেদার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি হয়নি: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, তার পেট ও বুকে পানি জমে যাওয়া এবং অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে (টিআইপিএস) প্রয়োজন।
বোর্ডের আরেক সদস্য উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক ঘন ঘন ব্যবহারের কারণে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় কাজ করছে না।
গত ৯ আগস্ট থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
তিনি লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার তার নিঃশর্ত মুক্তি এবং জীবন বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে 'অ্যাডভান্সড মেডিকেল সেন্টারে' চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেন।
কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছে, তাকে প্রথমে কারাগারে ফিরে যেতে হবে এবং পরে এ বিষয়ে অনুমতি নিতে আদালতে আবেদন করতে হবে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী ইতোমধ্যে মীমাংসিত পিটিশনটি খোলার কোনো সুযোগ নেই। এটি খোলার আর কোনো সুযোগ নেই।
তবে কিছু আইন বিশেষজ্ঞ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবী মনে করেন, সরকার তার বিচক্ষণ ক্ষমতা ব্যবহার করে তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিতে পারে।
গত ৩ অক্টোবর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, বর্তমান 'কাপুরুষোচিত' সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি না দিয়ে 'হত্যা' করতে চায়।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে ছয় মাসের জন্য কারাগার থেকে মুক্তি দেয়। তবে শর্ত দেওয়া হয় যে, তিনি গুলশানের বাসায় অবস্থান করবেন এবং দেশ ত্যাগ করবেন না। পরে সরকার অষ্টমবারের মতো খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ায়।
আরও পড়ুন: অবিলম্বে খালেদাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান বিএনপির
খালেদার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি হয়নি: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর অনুমতি নিয়ে কোনো রাজনীতি হয়নি।
তিনি বলেন, এ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করেছেন।
বুধবার (৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: আমলযোগ্য অপরাধ ছাড়া বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের সুযোগ নেই: আইনমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, এটা আইনি ব্যাপার, এখানে রাজনীতির কোনো প্রশ্ন নেই। তার (খালেদা জিয়া) পরিবার দরখাস্ত করেছিল, সেটা নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, আইনে কোথাও নেই তাকে এই দরখাস্তে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যায়। বিদেশ যেতে পারবেন না বলে আগেই শর্ত দেওয়া ছিল, এখন সেটিকে পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ নেই।
যে দুই শর্তে খালেদা জিয়াকে দণ্ড স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হয়েছে তা পরিবর্তন করা যায় কি না- এ প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, আইনে আছে শর্তযুক্ত অথবা শর্তমুক্ত। শর্ত যদি দেওয়া হয় তা মানতে হবে।
তিনি বলেন, আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রীর যে ক্ষমতা তিনি প্রয়োগ করেছেন, এটা পুনরায় প্রয়োগ করার সুযোগ নেই।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিষয়ে আইনমন্ত্রী কারো নাম উল্লেখ না করে বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইলে দোষ স্বীকার করে চাইতে হয়। বিষয়টি যিনি ক্ষমা চাইবেন তার বিষয়। এটা হচ্ছে সাংবিধানিক অধিকার, যে কেউ রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে পারে।
আরও পড়ুন: হাসিনা-বাইডেন নয়, বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার সেলফি: আইনমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে সরকারের কিছু করার নেই: আইনমন্ত্রী
অবিলম্বে খালেদাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান বিএনপির
প্রবীণ নাগরিকের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করে দলের অসুস্থ চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে যত দ্রুত সম্ভব উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সঠিক চিকিৎসা পাওয়া একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। বেগম খালেদা জিয়া দেশের একজন প্রবীণ নাগরিক। সংবিধান তার জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত করেছে।’
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দলের চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ফখরুল।
তিনি বলেন, দেশে যে রোগের চিকিৎসা করা যায় না, তার চিকিৎসার জন্য খালেদাকে বিদেশে যেতে বাধা দেওয়া সংবিধানকে উপেক্ষা করার শামিল।
বিএনপি নেতা অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আমাদের নেত্রীকে (খালেদা) সংবিধানে দেওয়া চিকিৎসা সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটা অন্যায্য, অমানবিক ও অসাংবিধানিক।’
তিনি বলেন, আইনের অজুহাতে গুরুতর অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করার কোনো সুযোগ নেই।
ফখরুল বলেন, দেশে বিএনপি চেয়ারপার্সনের চিকিৎসা অসম্ভব। ‘সরকার অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আইনের অজুহাতে তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
আরও পড়ুন: খালেদাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ক্ষমতা রয়েছে সরকারের: আইন বিশেষজ্ঞরা
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে অন্যায়ভাবে হত্যার পরিণতি কখনোই ভালো হতে পারে না। তাই আমরা আবারও সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, আমাদের নেত্রীকে নাগরিক হিসেবে তার মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিন।
অন্যথায়, একজন গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় প্রবীণ নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার অস্বীকার করা এবং তার প্রতি অবৈধ, অমানবিক ও নিষ্ঠুর মনোভাব দেখানোর জন্য সরকার দায়ী থাকবে।
এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার তার নিঃশর্ত মুক্তি এবং তার জীবন বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে একটি ‘উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে’ চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে একটি আবেদন জমা দেন।
তবে, আইন মন্ত্রণালয় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি প্রত্যাখ্যান করেছে পরামর্শ দিয়েছে যে তাকে প্রথমে কারাগারে ফিরতে হবে এবং এরপরই এই বিষয়ে অনুমতি পেতে আদালতে আবেদন করতে পারেন তিনি।
লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন বলে গত ৯ আগস্ট থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন খালেদা।
সরকার খালেদাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি না দেওয়ায় বিএনপি কী করতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, চিকিৎসকরা তাকে দেশেই সম্ভাব্য সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাকে জোর করে বিদেশে নিয়ে যেতে পারি না। এটা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়... আমরা বিশ্বাস করি জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন নিশ্চিত হবে এবং তারপর তার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’
ফখরুল বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ১৯৭৯ সালে ১০ বছরের সাজা ভোগ করে কারাগারে থাকা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের নেতা আ স ম আবদুর রবকে চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে যেতে দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, একইভাবে ১৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম ২০০৮ সালে ১/১১ সরকার তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছিল। ‘এমন আরও উদাহরণ রয়েছে।’
লন্ডনে খালেদাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘অশালীন’ মন্তব্যের জন্য ফখরুল বলেন, এটা বর্তমান সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমি লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই... একজন দায়িত্বশীল প্রধানমন্ত্রী এমন অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতে পারেন তা আমরা কল্পনাও করতে পারি না।’
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে খালেদা জিয়াকে নিয়ে মিথ্যা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী: ফখরুল
বিএনপি নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যও প্রমাণ করে যে তিনিই এই দেশের একমাত্র মালিক এবং তিনিই বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করেন। ‘তিনি আইন ও প্রশাসনের পরোয়া করেন না এবং সমস্ত অপকর্মের আদেশদাতা।’
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন তা অমানবিক ও প্রতিহিংসাপরায়ণ বলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে এবং খালেদাকে বাদ দিয়ে বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে না। ‘এটা আমাদের স্পষ্ট অবস্থান। আমি আবার এটি পুনরাবৃত্তি করেছি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলু।
আরও পড়ুন: খালেদার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি না দেওয়ায় সরকারকে ‘কাপুরুষ’ বললেন ফখরুল