মুকেশ আম্বানি
আম্বানিপুত্রের বিয়ের চূড়ান্ত আয়োজন: অভিন্ন ঐতিহ্যে দেশি-বিদেশি তারকা ও বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিরা
ভারতীয় ঐতিহ্যের সব রঙ, দেশ-বিদেশের জনপ্রিয় তারকা আর বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব। অনন্ত আম্বানি ও রাধিকা মার্চেন্টের রাজকীয় বিয়ের চূড়ান্ত আয়োজনে এগুলোর সবই থাকা চাই। শত হলেও এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানির কনিষ্ঠ পুত্রের বিয়ে বলে কথা। বর ও কনের চার হাত এক করার লক্ষ্যে গত ৩ জুলাই থেকে যেন তারই মহড়া চলছে। উৎসবের মধ্যমণি অনন্ত-রাধিকা হলেও এখানে এমন সব তারকা ও ব্যক্তিদের একত্রিত করা হয়েছে, যা শুধুমাত্র আম্বানিদের পক্ষেই করা সম্ভব। চলুন, সেই পরিচিত মুখগুলোর পাশাপাশি চোখ ধাঁধানো এই আয়োজনের বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
৩ মাস আগে
আম্বানিপুত্রের রাজকীয় বিবাহ-পূর্ব অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি তারকা ও খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বদের মিলনমেলা
জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হওয়ায় বিয়ের সময়টাকে প্রত্যেকেই চেষ্টা করেন বিশেষ ভাবে স্মরণীয় করে রাখতে। কিন্তু প্রসঙ্গ যখন বিশ্বের অন্যতম ধনী পরিবারের কোনো বিয়ে নিয়ে, তখন তা অবস্মরণীয়ভাবে জাক জমকপূর্ণ হওয়াই স্বাভাবিক। ঠিক তারই যেন মহড়া হয়ে গেলো আম্বানি পুত্রের রাজকীয় প্রাক-বিবাহ অনুষ্ঠানে।
বিয়ের মূল অনুষ্ঠানের জন্য দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়েছে আগামী ১২ জুলাই। আর সেই দিনকে সামনে রেখে গত ১ মার্চ থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত বসেছিল বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিবর্গের মিলনমেলা। কারা ছিলেন সেই অতিথিবৃন্দ, আর কেমনি বা ছিল টানা ৩ দিনের আয়োজন, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
রাজকীয় অনুষ্ঠানের মধ্যমণি
বর ২৮ বছর বয়সী আনান্ত আম্বানী; ভারতের অন্যতম ধর্ণাঢ্য ব্যক্তি মুকেশ আম্বানি ও নিতা আম্বানির সর্বকনিষ্ঠ সন্তান। আনান্ত ইউএস (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)-এর ব্রাউন ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক করেছেন। বর্তমানে তিনি বাবা মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপের নতুন এনার্জি ব্যবসার পরিচালক পদে অধিষ্ঠিত।
কনে ২৯ বছর বয়সী রাধিকা মার্চেন্ট; ভারতীয় ফার্মাসিউটিক্যাল টাইকুন মার্চেন্ট বীরেন ও শায়লা মার্চেন্টের কন্যা। রাধিকা নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক করেছেন। বর্তমানে তিনি বাবার প্রতিষ্ঠিত ওষুধ প্রস্তুতকারক এনকোর হেলথকেয়ারের পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন। রাধিকার আরও একটি পরিচয় হচ্ছে যে, তিনি একজন ভরতনাট্যম নৃত্যশিল্পী।
আরও পড়ুন: ‘জঙ্গল’ থিমের পোশাক পরবেন আম্বানির ছেলের বিয়ের অতিথিরা, থাকবেন হলিউড-বলিউড তারকারা
৭ মাস আগে
‘জঙ্গল’ থিমের পোশাক পরবেন আম্বানির ছেলের বিয়ের অতিথিরা, থাকবেন হলিউড-বলিউড তারকারা
যখন এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির ছেলে বিয়ে করতে চলেছেন তখন কী কী হতে পারে ভাবতে পারছেন? বিয়ের প্রধান অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার চার মাস আগেই তার বাবা প্রাক-বিবাহ আনন্দ উদযাপনের আয়োজন করেন।
শুক্রবার ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় ছোট শহর জামনগরে রাষ্ট্রের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, হলিউড ও বলিউডের তারকাদের মেলা বসেছে। বিলিয়নিয়ার শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি তার ছোট ছেলের বিয়ে উপলক্ষে বিশাল এক আয়োজনের তারা জড়ো হয়েছেন।
প্রায় ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি অতিথিদের নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন পপতারকা রিয়ান্না, বিল গেটস, মার্ক জুকারবার্গ, সুন্দর পিচাই, ইভাঙ্কা ট্রাম্প ও বলিউড তারকা শাহরুখ খানও।
সবার চোখ এখন ২৮ বছর বয়সী অনন্ত আম্বানি ও তার দীর্ঘ সময়ের বান্ধবী রাধিকা মার্চেন্টের ওপর। আগামী জুলাইতে গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছেন তারা। এনকোর হেলথকেয়ার প্রাইভেট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী বীরেন মার্চেন্ট ও উদ্যোক্তা শায়লা মার্চেন্টের মেয়ে রাধিকা।
এই উৎসব আম্বানি পরিবারের জমকালো ও আভিজাত্যপূর্ণ অনুষ্ঠানের ঐতিহ্য তুলে ধরার পাশাপাশি অর্থনীতি ও রাজনীতিতে এই ভারতীয় বিলিয়নিয়ারের যে প্রভাব সেটিও প্রদর্শন করে।
দেশজুড়ে আলোচনায় থাকা আম্বানি পরিবার ও বিবাহ-পূর্ব এই জমকালো আয়োজন সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক-
কে এই মুকেশ আম্বানি?
১১৫ বিলিয়ন ডলারের মালিক ৬৬ বছর বয়সী মুকেশ আম্বানি ফোর্বস তালিকা অনুযায়ী বিশ্বের দশম এবং এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি।
তার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ একটি বিশাল সাম্রাজ্য যার বার্ষিক আয় ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। পেট্রোকেমিক্যাল, তেল-গ্যাস থেকে শুরু করে টেলিকমসহ রিটেইল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছে এই প্রতিষ্ঠান।
১৯৬৬ সালে তার বাবার প্রতিষ্ঠিত রিলায়েন্স আম্বানির নেতৃত্বে ২০১৬ সালে ৪জি ফোন ও ব্রডব্যান্ড পরিষেবা জিও চালু করার সঙ্গে সঙ্গে টেলিকম মূল্য যুদ্ধের সূত্রপাত করেছিল। বর্তমানে এটি ফাইভ জি পরিষেবা দিচ্ছে এবং গ্রাহকসংখ্যা ৪২০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। ভারতে নিজেদের ব্যবসা আম্বানির রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে একীভূত করতে ডিজনি এ সপ্তাহের শুরুতে ৮.৫ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি করেছে, যার মাধ্যমে নতুন একটি মিডিয়া জায়ান্টের জন্ম হতে চলেছে।
আম্বানি পরিবারের অন্যান্য সম্পদের মধ্যে রয়েছে মুম্বাইতে ১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অ্যান্টিলা নামে একটি ২৭ তলাবিশিষ্ট ব্যক্তিগত অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং। এটিতে তিনটি হেলিপ্যাড, একসঙ্গে ১৬০টি গাড়ির ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন গ্যারেজ, ব্যক্তিগত সিনেমা থিয়েটার, সুইমিং পুল ও ফিটনেস সেন্টার রয়েছে।
আম্বানির সমালোচকরা বলছেন, সত্তর-আশির দশকে কংগ্রেস সরকার এবং ২০১৪ সালের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শাসনামলে রাজনৈতিক সম্পর্কের জোরে আম্বানির প্রতিষ্ঠান বিকাশ লাভ করে। ভারতে এই ব্যবসায়ী নেতা ও সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে পারস্পরিক সুবিধাজনক সম্পর্ক (ক্রোনি ক্যাপিটালিজম) আম্বানির মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে উন্নতি লাভ করতে সাহায্য করেছে।
বর্তমানে মুকেশ আম্বানি তার দুই ছেলে ও মেয়েকে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে শুরু করেছেন। বড় ছেলে আকাশ আম্বানি এখন রিলায়েন্স জিওর চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আর মেয়ে ইশা রিটেইল সেক্টর ও সর্বকনিষ্ঠ, অনন্ত নতুন জ্বালানি শক্তির ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন।
সীমা অতিক্রম করাই আম্বানির আয়োজনের বিশেষত্ব।
২০১৮ সালে মেয়ের বিয়ের সময় পশ্চিম ভারতের শহর উদয়পুরে বিবাহপূর্ব জমকালো উৎসবে পপ সেনসেশন বিয়ন্সেকে নিয়ে এসে সংবাদের শিরোনাম হয়েছিলেন আম্বানি। সে সময় ভারতীয় সেলিব্রিটি ও বলিউড তারকাদের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়েছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন সেক্রেটারি অব স্টেট হিলারি ক্লিনটন ও জন কেরিও।
সেই বছরই ইশা আম্বানি ও আনন্দ পিরামল ইতালির লেক কোমোতে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বাগদান সম্পন্ন করেছিলেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মুম্বাইতে আম্বানির বাসভবনে বিয়ে করেছিলেন তারা।
আসন্ন বিবাহ-পূর্ব আয়োজনে বিশেষ যা রয়েছে-
আগামী জুলাইতে বিয়ের সময় কেমন জমকালো আয়োজন হতে চলেছে তারই আভাস দিচ্ছে তিন দিনব্যাপী এই প্রাক-বিবাহ আয়োজন।
গুজরাটের কাছেই মরুভূমিতে অবস্থিত ৬ লাখ জনসংখ্যার শহর জামনগরে আম্বানিরা এই উৎসবের আসর বসিয়েছে। যেখানে তাদের পারিবারিক নিবাস এবং তাদের ব্যবসার প্রধান তেল শোধনাগারও রয়েছে।
সেখানে জঙ্গল থিমের পোশাক পরে হবু বর অনন্ত পরিচালিত একটি প্রাণী উদ্ধার কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন অতিথিরা। নির্যাতিত, আহত ও বিপন্ন প্রাণীদের বিশেষ করে হাতিদের আশ্রয়ের জন্য ৩ হাজার একর জমির ওপর এই কেন্দ্র নির্মিত হয়েছে যা ‘ভানতারা’ বা ‘বনের তারকা’ নামে পরিচিত।
আমন্ত্রণপত্রে জানা যায়, অতিথিদের জন্য প্রতিদিন ভিন্ন ও নতুন এক ড্রেস কোড থাকবে। এজন্য তাদের সাহায্য করতে হোটেলে মুড বোর্ড, হেয়ার স্টাইলিস্ট, মেকআপ আর্টিস্ট ও পোশাক ডিজাইনাররা থাকবেন।
একটি মন্দির প্রাঙ্গণে ঐতিহ্যবাহী হিন্দু সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানও হবে।
অতিথিদের অনেকেই চার্টার্ড প্লেনে আসবেন। এই আয়োজনে প্রায় ১০০ শেফের তৈরি ৫০০ ধরনের খাবার পরিবেশন করা হবে।
অতিথিদের তালিকায় আরও রয়েছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন জসিম আল থানি; কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার; ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়াল ওয়াংচুক এবং রানী জেটসুন পেমা।
বুধবার, আশেপাশের গ্রামে বসবাসকারী ৫১ হাজার লোকের জন্য খাবারের আয়োজন করেছে আম্বানি পরিবার।
৮ মাস আগে
মুকেশ আম্বানিকে হারিয়ে এশিয়ার শীর্ষ ধনী গৌতম আদানি
গত ২৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার মুকেশ আম্বানিকে টপকে এশিয়ার শীর্ষ ধনকুবের সিংহাসনটি দখল করে নেন গৌতম আদানি। ২০১৫ সাল থেকে টানা ছয় বছর এশিয়ার শীর্ষ ধনীর অবস্থানটি ধরে রেখেছিলেন রিলায়েন্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ধীরুভাই-পুত্র মুকেশ আম্বানি। ৪৮ বছরে গড়ে ওঠা এশিয়ার বিখ্যাত আটটি প্রধান কোম্পানির মালিক আম্বানি অন্তর্ভুক্ত আছেন বিশ্বের উল্লেখযোগ্য ধনকুবেরদের সারিতেও। বিগত বছরগুলোতে সম্পদের দৌড়ে আম্বানির পিছু ধাওয়া করে আসছিলেন ৯টি কোম্পানির বহুজাতি ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি। তবে ২০২২ সালে এসে এশিয়ার এক নাম্বার ধনী হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন তিনি। চলুন সে ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেই।
আদানির এশিয়ার এক নাম্বার ধনী হওয়ার কারণ
২৭ জানুয়ারি শেয়ার বাজার বন্ধের ফলে তারতম্য দেখা দিতে শুরু করে রিলায়েন্স এবং আদানী গ্রুপের শেয়ারগুলোতে। মূলত এই কারণেই আদানির ধনীর তালিকার শীর্ষে উঠে আসা। প্রথম দিকে আম্বানির সম্পদের মূল্য ছিল ৯,১০০ কোটি ডলার যা প্রায় ৭ লাখ ৮১ হাজার কোটি টাকার সমান। অন্যদিকে গৌতম আদানির ক্ষেত্রে সেই অঙ্কটি ছিল ৮,৮৮০ কোটি ডলার বা প্রায় ৭ লাখ ৬২ হাজার কোটি টাকা। পরে আম্বানি তাঁর সম্পদে ১,৪৩০ কোটি ডলার বা প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা যোগ করায় আদানিও নিজের সম্পদে অর্থ যোগ করেন। তবে তাঁর পরিমাণটা ছিলো অনেক বেশি- ৫,৫৫০ কোটি ডলার যা প্রায় ৪ লাখ সাড়ে ৭৬ হাজার কোটি টাকার সমান।
স্বভাবতই এই দুই ভারতীয় শিল্পপতির সম্পদের তফাত প্রথমে প্রায় ২.৪ শতাংশ হলেও সমন্বিত পুঁজি বাজার অনুসারে মুকেশ আম্বানিকে ছাড়িয়ে যান গৌতম আদানি।
একদিকে যেমন আম্বানির রিলায়েন্সের শেয়ারের দাম পড়ে যায় ১.৭২ শতাংশ, অন্যদিকে আদানি গ্রুপের বিভিন্ন শেয়ারের দাম ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।
উল্লেখযোগ্য ভাবে আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ার দাম বাড়ে শতকরা ২.৩৪ ভাগ এবং আদানি পোর্ট অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোনের শেয়ারের দাম শতকরা ৪ ভাগ বাড়ে। অপরদিকে রিলায়েন্সের শেয়ারে টানা তৃতীয় দিন ধরে ধ্বস নামলে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার কমে দাড়ায় ১.৪৪ শতাংশতে।
আরও পড়ুন: রাজু ভাস্কর্যের সামনে নৃত্যরত ইরা: সপ্রতিভ উত্থানে এক বাংলাদেশি ব্যালেরিনা
বিগত অর্থ বছরে আদানি ট্রান্সমিশন-এর বৃদ্ধি ছিলো ২৮৮ শতাংশ। একই সময়ে আদানি টোটাল গ্যাস বেড়েছিলো ৩৫১.৪২ শতাংশ। পাশাপাশি আদানি পোর্টস, আদানি পাওয়ার, আদানি এন্টারপ্রাইজ, আদানি গ্রিন, আদানি টোটাল গ্যাস প্রতিষ্ঠানগুলো লাভের মুখ দেখেছিল।
এভাবে সমন্বিত পুঁজি বাজারে সংস্থাগুলো মূলধন যোগ করায় শেয়ার বাজার বন্ধের ব্যাপারটি গৌতম আদানির জন্য পোয়াবারো হিসেবে কাজ করেছে।
আম্বানি-আদানির সম্পদের তুলনামূলক অবস্থান
আদানির বর্তমান সম্পদ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৯ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যে, যা প্রায় ৭৬ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার সমান। আর প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা দূরত্বে আম্বানির সম্পদের মূল্য হয়েছে ৮৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৭৬ লাখ সাড়ে ৭১ হাজার কোটি টাকা।
অবশ্য ঘটনাটির পুনরাবৃত্তি ঘটেছিল ২০২১ এর নভেম্বরে। তখনকার হিসেব অনুসারে বিগত দুই বছরে প্রায় ১,৮০৮ শতাংশ বেড়েছিলো আদানির সম্পদ। ঠিক সে সময়ে আম্বানির সম্পদের বৃদ্ধি ছিলো মাত্র ২৫০ শতাংশ। বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ফোর্বস-এর রিয়েলটাইম ডাটা নেটওয়ার্থ মতে গৌতম আদানি এখন বিশ্বের এগারতম ধনী ব্যক্তি।
আরও পড়ুন: ক্রেডিট কার্ড কীভাবে করবেন
নতুন বিনিয়োগে আদানি বনাম আম্বানি
সম্পদের প্রতিযোগিতার ফলাফল উপেক্ষা করে সমান উদ্যমে চলছে আদানি ও আম্বানির বিনিয়োগের ধারা। আম্বানির রিলায়্যান্স গুজরাট ভিত্তিক বিশাল বিনিয়োগ করতে চলেছে। ইতোমধ্যে সেখানে মোট ৫ দশমিক ৯৫ লাখ কোটি টাকা বিনিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে জায়ান্ট গ্রুপটি। তারা ৫ লাখ কোটি রুপির নিশ্চয়তা দিয়েছে হাইড্রোজেন শক্তি উৎপাদন এবং ১০০ গিগাওয়াটের অপ্রচলিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থা নির্মাণকল্পে। এজন্য শিঘ্রই শুরু হবে জমি দেখা। তাছাড়া ব্যাটারি স্টোরেজ ও সৌরবিদ্যুৎ সহ আরো চারটি কারখানা স্থাপনের জন্য বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ ঠিক হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার কোটি রুপি। বিনিয়োগের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে আম্বানির অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর আওতাভুক্ত ব্যবসাগুলোতে।
অপরদিকে আম্বানির দেখানো পথে গুজরাট কেন্দ্রিক অর্থ বিনিয়োগ চলছে আদানি গ্রুপেরও। তাদের প্রধান ক্ষেত্র ছিলো বন্দর কেন্দ্রিক শিল্পাঞ্চলগুলো। তবে এবার তারা ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে বৈচিত্র্যপূর্ণ খাতে। পস্কো’র সাথে করা সাম্প্রতিক চুক্তিটি তারই প্রমাণ। দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিটির সাথে রিনিউএবল এনার্জি সহ অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোতে ব্যবসায়িক লেনদেনের জন্য চুক্তিটি সম্পাদন করেছে আদানি ইস্পাত। এই বিনিয়োগকৃত অঙ্কের সম্ভাব্য অর্থ প্রায় ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি রুপি। চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল।
আরও পড়ুন: ট্রেড লাইসেন্স করার পদ্ধতি: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, খরচ ও সময়
আম্বানি ও আদানির আয়ের প্রধান উৎস
গৌতম আদানির আয়ের সিংগভাগ আসে তাঁর নিজের গড়া শিল্পপ্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপ থেকে। এই বহুজাতি গ্রুপটিতে অন্তর্ভুক্ত আছে বন্দর ব্যবস্থাপনা, নবায়নযোগ্য শক্তি, বৈদ্যুতিক বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সরবরাহ, বিমানবন্দর অপারেশন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, প্রাকৃতিক গ্যাস, এবং অবকাঠামো তৈরির মত ব্যবসায়িক ক্ষেত্রগুলো।
অন্যদিকে মুকেশ আম্বানির আয়ের প্রধান উৎস আম্বানি পরিবারের রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এর অধিভুক্ত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর কেন্দ্রবিন্দু হলো শক্তি, প্রাকৃতিক গ্যাস, পেট্রোকেমিক্যাল, গণমাধ্যম, এয়ারপোর্ট, টেক্সটাইল এবং টেলিযোগাযোগ।
শেষাংশ
মুকেশ আম্বানি ও গৌতম আদানি; দুই বিলিয়নেয়ারই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল। আম্বানি খুচরো পণ্যজাত এবং টেলিকমের মতো ডাটা-চালিত ভোক্তা ব্যবসার দিকে ঝুঁকেছিলেন, যেখানে অবকাঠামো এবং ইউটিলিটিগুলোতে মনোনিবেশ করেছিলেন আদানি। অবশ্য এনার্জি নিয়ে ব্যবসা ক্ষেত্রতে তাদের দুজনেরই অবদান থাকছে। ৫৫ বছর বয়সী আদানি এখন অধৈর্য্য হয়ে তার সফল বন্দর কেন্দ্রিক গন্ডির বাইরে যেয়ে উপার্জনকে বৈচিত্র্যময় করতে ব্যস্ত। কিন্তু ৬৪ বছর বয়সী আম্বানি এখন তাঁর রাজ্যের উত্তরাধীকারদের দিকেই বেশি নজর দিচ্ছেন।
২ বছর আগে
রিলায়েন্সের বিদ্যুৎ প্রকল্পে নেই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি
ঢাকার উপকণ্ঠে ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানির মালিকানাধীন রিলায়েন্স গ্রুপের ৭১৮ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পটি গত এক বছরে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি করতে পারেনি।
৩ বছর আগে