নেশন্স লিগ
অবশেষে ইউরোপের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ড্র অনুষ্ঠিত
বেশ আগে থেকে ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের খেলা শুরু হয়ে গেলেও ইউরোপ অঞ্চলের খেলা তো দূরের কথা, এ বিষয়ে কোনো আলোচনাই ছিল না। অবেশেষে এই অঞ্চলের বাছাইপর্বের ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সুইজারল্যান্ডের জুরিখে বিশ্বকাপের ইউরোপ অঞ্চলের বাছাই পর্বের ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২০২৬ সালে প্রথমবার আয়োজন করা হবে ৪৮ দলের বিশ্বকাপ। এর মধ্যে ইউরোপ থেকে মোট ১৬টি দেশ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করবে। এই ১৬টি স্পটের জন্য ১২টি গ্রুপে ভাগ হয়ে লড়বে ৫৩টি দেশ।
১২টি গ্রুপের সব গ্রুপে অবশ্য সমান প্রতিপক্ষ নেই। ছয়টি গ্রুপ সাজানো হয়েছে চারটি করে দল নিয়ে। অন্য ছয়টি গ্রুপে রাখা হয়েছে পাঁচটি করে দল। গ্রুপের প্রতিটি দল নিজেদের মধ্যে একটি করে হোম ও অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলবে। গ্রুপের শীর্ষ ১২টি দল সরাসরি বিশ্বকাপের মূলপর্বের টিকিট পাবে।
আরও পড়ুন: ২০২৬ বিশ্বকাপের ফাইনালের ভেন্যুতেই হবে ২০২৫ ক্লাব বিশ্বকাপ ফাইনাল
বাকি চার দল বাছাই করতে গ্রুপগুলোর দ্বিতীয় সেরা ১২ দলের সঙ্গে যুক্ত হবে উয়েফা নেশন্স লিগ খেলা চার দল। নেশন্স লিগের গ্রুপ বিজয়ীদের মধ্যে সেরা, কিন্তু বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্রথম বা দ্বিতীয় স্থান অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে- এমন চারটি দলসহ মোট ১৬ দলের প্লে-অফ অনুষ্ঠিত হবে।
এই ১৬টি দলকে চারটি গ্রুপে ভাগ করে নকআউট পদ্ধতিতে প্রতিটি গ্রুপ থেকে সেমিফাইনাল ও ফাইনালের মাধ্যমে বিশ্বকাপের জন্য একেকটি দল নির্বাচিত করা হবে।
বাছাইপর্বের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের ২১-২৫ মার্চ, ৬-১০ জুন, ৪-৯ সেপ্টেম্বর, ৯-১৪ অক্টোবর এবং ১৩-১৮ নভেম্বর। ২০২৬ সালের ২৬ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত প্লে-অফ পর্বের ম্যাচগুলো আয়োজন করা হবে। এরপর ওই বছরের ১১ জুন শুরু হবে বিশ্বকাপের মূল আসর।
২০১৬ সালের ১৯ জুলাই নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচের মাধ্যমে বিশ্ব ফুটবলের এই সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ আসরের পর্দা নামবে।
আরও পড়ুন: ২০৩০ বিশ্বকাপ আয়োজনে ১ বিলিয়ন ইউরো ঋণ নেবে মরক্কো
এক নজরে ইউরোপ অঞ্চলের গ্রুপগুলো
গ্রুপ এ: জার্মানি/ইতালি (নেশন্স লিগের ম্যাচ জয়ী), স্লোভাকিয়া, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ও লুক্সেমবার্গ।
গ্রুপ বি: সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, স্লোভেনিয়া ও কসোভো।
গ্রুপ সি: পর্তুগাল/ডেনমার্ক (পরাজিত), গ্রিস, স্কটল্যান্ড ও বেলারুশ।
গ্রুপ ডি: ফ্রান্স/ক্রোয়েশিয়া (জয়ী), ইউক্রেন, আইসল্যান্ড ও আজারবাইজান।
গ্রুপ ই: স্পেন/নেদারল্যান্ডস (জয়ী), তুরস্ক, জর্জিয়া ও বুলগেরিয়া।
গ্রুপ এফ: পর্তুগাল/ডেনমার্ক (জয়ী), হাঙ্গেরি, আয়ারল্যান্ড ও আর্মেনিয়া।
গ্রুপ জি: স্পেন/নেদারল্যান্ডস (পরাজিত), পোল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া ও মাল্টা।
গ্রুপ এইচ: অস্ট্রিয়া, রোমানিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, সাইপ্রাস এবং সান মারিনো।
গ্রুপ আই: জার্মানি/ইতালি (পরাজিত), নরওয়ে, ইসরায়েল, এস্তোনিয়া ও মলদোভা।
গ্রুপ জে: বেলজিয়াম, ওয়েলস, নর্থ মেসিডোনিয়া, কাজাখস্তান ও লিখটেনস্টেইন।
গ্রুপ কে: ইংল্যান্ড, সার্বিয়া, আলবেনিয়া, লাটভিয়া ও অ্যান্ডোরা।
গ্রুপ এল: ফ্রান্স/ক্রোয়েশিয়া (পরাজিত), চেক প্রজাতন্ত্র, মন্টিনিগ্রো, ফারাও আইল্যান্ড ও জিব্রাল্টার।
১ সপ্তাহ আগে
নেশন্স লিগের শেষ আটের ড্র: কে কাকে পেল, কী সমীকরণ
গ্রুপ পর্বের খেলা শেষ হয়েছে আগেই, এবার নেশন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের ড্র এবং ফাইনালের পথ স্পষ্ট করে দিল উয়েফা।
শুক্রবার নেশন্স লিগের চলতি মৌসুমের ‘রোড টু ফাইনাল’ নির্ধারণ করে কোয়ার্টার ফাইনালের ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সম্প্রতি দারুণ ছন্দে থাকা নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হবে স্পেন। এছাড়া ফ্রান্স ক্রোয়েশিয়ার, জার্মানি ইতালির এবং ডেনমার্কের মুখোমুখি হবে পর্তুগাল।
দুই লেগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের ২০ মার্চ। এর তিন দিন পর দ্বিতীয় লেগের ম্যাচ শেষে সেমি ফাইনালের চার দল নিশ্চিত হবে। এরপর আগামী ৪ ও ৫ জুন সেমি ফাইনাল এবং ৮ জুন ফাইনালের পর শিরোপা উঁচিয়ে ধরবে বিজয়ী দল।
চ্যাম্পিয়ন স্পেনের সামনে নেদারল্যান্ডস
শিরোপা ধরে রাখতে এবারও কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে স্পেনের। কোয়ার্টারে এবার তাদের প্রতিপক্ষ রোনাল্ড কুমানের নেদারল্যান্ডস।
ডাচদের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই কুমানের অধীনে দারুণ পারফর্ম করে চলেছে দলটি। সবশেষ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের সেমি ফাইনালে উঠেছিল ডাচরা। তার আগে গত বিশ্বকাপে কোয়ার্টারে উঠে দুর্দান্ত পারফর্ম করেও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার কাছে হারে তারা।
চলতি মৌসুমে নেশন্স লিগেও দারুণ ছন্দে রয়েছে নেদারল্যান্ডস। হাঙ্গেরি ও জার্মানির মতো দলগুলোর সঙ্গে এক গ্রুপে পড়ে প্রথম ম্যাচেই জার্মানির কাছে হেরে বসে ডাচরা। তবে তারপর অপরাজিত থেকে গ্রুপ রানার্স-আপ হয়ে শেষ আট নিশ্চিত করেছে কুমানের শিষ্যরা।
ফলে সম্প্রতি দুর্দান্ত ছন্দে থাকলেও ডাচ বাধা পেরোনো সহজ হবে না ইউরো ও নেশন্স লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন স্পেনের।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ-ইউরো-নেশন্স লিগ জেতা একমাত্র ফটুবলার অবসরে
এছাড়া চোটের কারণে বারবার স্কোয়াডে পরিবর্তন এনে দল সাজাতে হচ্ছে লুইস দেলা ফুয়েন্তের। চোট নিয়ে ইতোমধ্যে চলতি মৌসুমের জন্য ছিটকে গেছেন দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় দানি কারভাহাল ও রদ্রি।
তবে তরুণ এবং ফর্মে থাকা স্পেনের যেকোনো ফুটবলারকে জাতীয় দলে ডাক দিয়ে বারবার ফল নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসতে দেখা গেছে স্পেন বসকে। ফলে এই দুই দলের লড়াইটা দর্শকের জন্য হবে দর্শনীয়।
ফিরছে ২০১৮ বিশ্বকাপের ফাইনাল
শেষ আটের ড্রয়ে এবার মুখোমুখি হতে চলেছে ক্রোয়েশিয়া ও ফ্রান্স। এর ফলে ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালের পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে, তা-ও একবার নয়, দুবার।
ফ্রান্সের কাছে সেবার ৪-২ গোলে হেরে ক্রোয়েশিয়ার স্বর্ণযুগের খেলোয়াড়দের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। প্রায় পাঁচ বছর পর এবার সেই হারের প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ এসেছে ক্রোয়াটদের সামনে।
অবশ্য ভালো পারফর্ম করলেও ক্রোয়েশিয়ার সেই দল এখন আর নেই। বিশ্বকাপ স্কোয়াডের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই অবসরে চলে গেছেন। তবে এখনও লুকা মদ্রিচ, মার্সেলো ব্রোজোভিচের মতো অভিজ্ঞরা দলটিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সেইসঙ্গে আন্দ্রেই ক্রামারিচ, মাতেও কোভাচিচ, ইয়োস্কো গেভারদিওলের মতো প্রতিভাবান তরুণ ফুটবলার থাকায় গ্রুপ পর্বের চ্যালেঞ্জ উতরে এসেছে জ্লাতকো দালিচের দল।
অপরদিকে, দুর্দান্ত সব খেলোয়াড় থাকলেও ফর্মহীনতা, চোট ও সমন্বয়ের অভাবে ইউরোর পর থেকেই ধুঁকতে দেখা গেছে দিদিয়ের দেশমের শিষ্যদের। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ইতালির কাছে হারের পর সবশেষ পাঁচ ম্যাচ জিতলেও দলের বড় তারকারা নিজেদের নামের প্রতি এখনও সুবিচার করতে পারেননি। ফলে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ভালো কিছু করতে মুখিয়ে থাকবেন কিলিয়ান এমবাপে, উসমান দেম্বেলের মতো তারকারা।
গ্রুপের পঞ্চম রাউন্ডের ম্যাচে ইসরায়েলের কাছে ঘরের মাঠে গোলশূন্য ড্র করলেও শেষ ম্যাচে ইতালিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে তাদেরই টপকে গ্রুপ সেরা হয়ে কোয়ার্টারে উঠেছে ফ্রান্স।
শেষ চার ম্যাচেই দলের সঙ্গে ছিলেন না এমবাপে। চোটে আক্রান্ত না হলে কোয়ার্টার ফাইনালে তাকে দলে ফেরাতে পারেন দেশম। ফলে কৌশল দিয়েই দুর্দান্ত এই দলটিকে মাত করতে হবে মদ্রিচের ক্রোয়েশিয়ার।
১ মাস আগে
অবসর নিয়ে আরও স্পষ্ট বার্তা রোনালদোর
অবসর নিয়ে কিছুদিন আগেই নিজের ভাবনা জানিয়েছেন পর্তুগিজ ফুটবল সুপারস্টার ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। এবার সেটি আরও স্পষ্ট করেছেন তিনি।
৩৯ পেরিয়ে ৪০-এ পা দিতে আর বেশিদিন দেরি নেই। এই বয়সেও দুর্দান্ত পারফর্ম করে চলেছেন রোনালদো। গতরাতে নেশন্স লিগে পোল্যান্ডকে ৫-১ গোলে হারানোর ম্যাচেও জোড়া গোল পেয়েছেন তিনি। তার দ্বিতীয় ও পর্তুগালের পঞ্চম গোলটি আসে দৃষ্টিনন্দন এক বাইসাইকেল কিক থেকে।
এর ফলে জাতীয় দলের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জয়ের (১৩২টি) রেকর্ড এখন রোনালদোর। এই রেকর্ড গড়ার পথে তিনি পেছনে ফেলেছেন তারই সাবেক ক্লাব সতীর্থ সের্হিও রামোসকে। ২০২১ সালে স্পেনের জার্সিতে বিদায় নেওয়ার আগে ১৩১ ম্যাচ জেতেন এই রিয়াল মাদ্রিদ কিংবদন্তি।
পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশি বয়সে জোড়া গোল করার রেকর্ডটিও নিজের করে নিয়েছেন তিনি। জাতীয় দলের হয়ে তার গোলসংখ্যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৫টিতে।
নেশন্স লিগের ‘এ’ লিগের ১ নম্বর গ্রুপের পাঁচ ম্যাচে চার জয় ও একটি ড্রয়ে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে ইতোমধ্যে কোয়ার্টার-ফাইনাল নিশ্চিত করেছে পর্তুগাল। একইসঙ্গে ৫ গোল নিয়ে টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতাও পর্তুগিজ মহাতরকা। অবশ্য সমান সংখ্যক গোল নিয়ে স্লোভেনিয়ার বেনিয়ামিন শেশকোও তার পাশে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: অবসরের বিষয়ে আগে কাউকে কিছু জানাবেন না রোনালদো
এই ম্যাচের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আবারও অবসরের প্রসঙ্গটি উঠে আসে।
তার কথায়, ‘এখন শুধু (খেলা) উপভোগ করতে চাই। অবসর নিয়ে পরিকল্পনা বলতে… যদি নিতে হয় তো আগামী বছর দুয়েকের মধ্যেই নিয়ে নেব।’
‘আসলে কী হবে জানি না। ৪০-এ পড়তে যাচ্ছি…. এখন যতদিন পারি ফুটবল উপভোগ করতে চাই। তবে যতক্ষণ খেলার অনুপ্রেরণা পাচ্ছি, চালিয়ে যেতে থাকব। যখন দেখব ভেতর থেকে আর (খেলার) তাড়না পাচ্ছি না, অবসর নিয়ে নেব।’
তবে খেলা ছাড়ার পর সত্যিই যে ফুটবলের সঙ্গে আর থাকার ইচ্ছা নেই, সে কথাও উল্লেখ করতে ভুললেন না আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৪০-এ পা দিতে চলা এই স্কোরিং মেশিন।
‘জাতীয় দল ছাড়ার সিদ্ধান্তটি অবশ্যই ভেবেচিন্তে নেব। তারপর ম্যানেজার হিসেবে আর (ফুটবলে) ক্যারিয়ার শুরু করার পরিকল্পনা নেই। যদিও সময় অনেক কিছু পাল্টে দেয়, তবে এখন পর্যন্ত ফুটবলের বাইরে কিছু করার পরিকল্পনাই রয়েছে আমার।’
কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করায় ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচে রোনালদোকে বিশ্রাম দেওয়া হব বলে জানিয়ে দিয়েছেন কোচ রবের্তো মার্তিনেস।
ক্লাবের হয়েও চলতি মৌসুমের শুরুটা ভালো হয়েছে রোনালদোর। আল-নাসরের হয়ে ১৫ ম্যাচে ১০ গোলের পাশাপাশি তিনটি অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি।
১ মাস আগে
ইউরোপের দেশ না হয়েও ইসরায়েল কেন উয়েফার প্রতিযোগিতায়
দক্ষিণ ইসরায়েলে গাজার শাসক দল হামাসের গত বছরের অক্টোবরের হামলার জেরে উপত্যকাটিতে অব্যাহত অগ্রাসনের কারণে বিশ্বজুড়ে সমর্থন হারায় ইসরায়েল। অবরুদ্ধ গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে ক্রীড়াঙ্গনেও।
গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সম্প্রতি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফিলিস্তিনপন্থিদের সোচ্চার হতে দেখা গেছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা শঙ্কায় নেশন্স লিগে ইসরায়েলের বিপক্ষে ম্যাচ আয়োজনে অস্বীকৃতি জানায় বেলজিয়াম। পরবর্তী সময়ে হাঙ্গেরির একটি দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়।
গত ৬ নভেম্বর রাতে প্যারিসের পার্ক দে প্রান্স স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পিএসজি-আতলেতিকো মাদ্রিদ ম্যাচের আগে গ্যালারি থেকে ফিলিস্তিনপন্থিদের বিশাল ব্যানার প্রদর্শন করতে দেখা যায়। পরের দিন রাতে নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডামে ইউরোপা লিগের চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচের পর ইসরায়েলি ক্লাব মাকাবি তেল আবিবের সমর্থকদের ওপর হামলা হয়।
একই ঘটনা দেখা গেছে ফ্রান্সে নেশন্স লিগের ম্যাচ আয়োজনের আগেও। বৃহস্পতিবার রাতে ফ্রান্স-ইসরায়েল ম্যাচের আগে বিক্ষোভে উত্তাল ছিল পুরো প্যারিস শহর।
আরও পড়ুন: ফ্রান্স-ইসরায়েল ম্যাচের আগে বিক্ষোভে উত্তাল প্যারিস
সাম্প্রতিক এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কারও কারও মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিতে পারে যে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ হওয়া সত্ত্বেও কেন ইউরোপের প্রতিযোগিতায় খেলে ইসরায়েল ও তার ক্লাবগুলো।
এর উত্তর পেতে আমাদের ঢুঁ মারতে হবে ইতিহাসের পাতায়।
ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার বছর ১৯৪৮ সালে দেশটির জাতীয় ফুটবল দল গঠন হয়। এর আগে ১৯২৯ সাল থেকেই ফিলিস্তিন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (পিএফএ) ব্যানারে ফিফার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আসছিলেন ইহুদি খেলোয়াড়রা। সে সময় আরব, ইহুদি, এমনকি ব্রিটিশ শাসনামলে ওই অঞ্চলে কর্মরত ব্রিটিশ পুলিশ ও সেনাদের ক্লাবগুলোও পিএফএর অধীনে ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশ নিত।
জাতীয় দল গঠনের পর এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন বা এএফসির একেবারে শুরুর দিকে আয়োজিত কয়েকটি এশিয়ান কাপেও অংশ নেয় ইসরায়েল। ১৯৫৬ সালে এশিয়ান কাপের প্রথম আসরসহ ১৯৬০, ১৯৬৪ ও ১৯৬৮ সালের আসরে অংশ নেয় ইসরায়েল জাতীয় ফুটবল দল। এর মধ্যে ১৯৬৪ সালে আয়োজক দেশ হিসেবে এশিয়ান কাপের শিরোপা জেতে দেশটি।
১৯৭৩ সালের শেষের দিকে মিসর ও সিরিয়ার সঙ্গে ইসরায়েলের ইয়ম কিপুর যুদ্ধের অবসানের পর পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থেকে। আরব দেশগুলোর সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বিরোধ ফুটবলের ময়দানেও ছাপ ফেলে। সে সময় প্রতিবেশী দেশগুলো ইসরায়েলের সঙ্গে খেলতে অস্বীকৃতি জানায়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭৪ সালে কুয়েতের তদবিরে আরব দেশগুলো ইসরায়েলকে এএফসি থেকে বহিষ্কারের পক্ষে ভোট দিলে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দেশটি।
আরব লিগ থেকে বহিষ্কৃত হয়ে দেশের ফুটবল বাঁচাতে বিকল্প খুঁজতে থাকে ইসরায়েল। এশিয়া থেকে বের হয়ে ১৯৭৮ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের জন্য ওশেনিক ফুটবল ফেডারেশনে (ওএফসি) যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করে দেশটি।
পরে সদস্য দেশ না হয়েও উয়েফার বিশেষ অনুগ্রহে ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্রতিযোগিতা করার সুযোগ পায় ইসরায়েল। ১৯৮২ সালে উয়েফা এবং তার পরের দুটি বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ওএফসির অধীনে খেলে তারা।
আরও পড়ুন: নেদারল্যান্ডসে ইসরায়েলি ফুটবল সমর্থকদের ওপর হামলা
পরবর্তী সময়ে ক্রীড়াক্ষেত্রে একটি কৌশলগত সমাধানের অংশ হিসেবে ১৯৯১ সালে ইসরায়েলি ক্লাবগুলোকে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় খেলার সুযোগ দেয় উয়েফা। এরপর ১৯৯৪ সালে ইসরায়েলকে সদস্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউরোপীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। তার পর থেকে স্থায়ীভাবে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ (ইউরো) ও নেশন্স লিগের মতো প্রতিযোগিতায় ইসরায়েল এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ইউরোপা লিগে অংশগ্রহণ করে চলেছে দেশটির ক্লাবগুলো।
ইউরোপের এলিট ফুটবলে খেললেও গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে চলমান সংকটের কারণে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ইসরায়েল। দেশটির বিভিন্ন ক্লাব ও সমর্থকদের প্রতি ক্ষোভ থেকে মাঝেমধ্যেই উত্তেজনা ছড়াচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। বিষয়টি কেবল ক্রীড়া ক্ষেত্রে নয়, শিক্ষা রাজনীতিসহ ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন অঙ্গনে।
অবশ্য ফুটবলকে কেন্দ্র করে ইহুদিদের রাজনৈতিক সক্রিয়তার অভিযোগও ওঠে প্রায়ই। সবশেষ গত রাতে অনুষ্ঠিত ফ্রান্স-ইসরায়েল ম্যাচের আগেও এমন ঘটনার কথা জানায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
ম্যাচের আগে প্যারিসে একটি জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইসরায়েলের সমর্থনকারী ফ্রান্সের উগ্র ডানপন্থি ইহুদিরা। ফ্রান্সে বসবাসকারী ইহুদিদের সংগঠিত করতে মূলত ‘ইসরায়েল ইজ ফরেভার’ নামের একটি ইসরায়েলপন্থি সংগঠন ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ফিলিস্তিনে আগ্রাসন চলাকালে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর জন্য তহবিল সংগ্রহও অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে ছিল বলে খবর পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, ফুটবলে ১৯৬৪ সালের এশিয়ান কাপ জয়ই ইসরায়েলের এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় অর্জন। উয়েফার কোনো প্রতিযোগিতায় এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কিছু করে দেখাতে পারেনি তারা।
উয়েফায় যোগ দেওয়ার পর থেকে ২০০৮ সালে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে সর্বোচ্চ ১৫তম অবস্থানে উঠেছিল ইসরায়েল। এ র্যাঙ্কিংয়ে তাদের বর্তমান অবস্থান ৮১তম।
১ মাস আগে
রিয়ালের খেলোয়াড় ছাড়াই স্পেনের স্কোয়াড, আছে নতুন দুই মুখ
নেশন্স লিগের গ্রুপ পর্বের শেষ দুই ম্যাচের জন্য দল ঘোষণা করেছেন স্পেন কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে। তবে এই দুই ম্যাচের জন্য দুই ফুটবলারকে প্রথমবার জাতীয় দলে ডাকলেও রিয়াল মাদ্রিদের কোনো খেলোয়াড়কে স্কোয়াডে রাখেননি তিনি।
এর ফলে ২০২১ সালের পর প্রথম স্পেন দলে ডাক পেল না মাদ্রিদ জায়ান্টদের কোনো খেলোয়াড়। সে বছর লুইস এনরিকের অধীনে নেশন্স লিগের সেমিফাইনালে রিয়ালের ফুটবলারবিহীন ছিল স্পেন। তবে ওই বছরই ইউরোতে আবার লস ব্লাঙ্কোসদের খেলোয়াড় নিয়ে স্কোয়াড সাজান বর্তমান পিএসজি কোচ এনরিকে।
এ বছর অনুষ্ঠিত ইউরোতেও স্পেন দলে ছিলেন রিয়ালের তিন খেলোয়াড়- দানি কারভাহাল, নাচো ও হোসেলু। তবে মৌসুম শেষে নাচো ও হোসেলু রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে যথাক্রমমে সৌদি আর ও কাতারে চলে যান।
অবশ্য রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড় স্কোয়াডে না রাখার দায় মোটেও দে লা ফুয়েন্তের ওপর পড়ে না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লা লিগা চ্যাম্পিয়নদের স্কোয়াডেই স্প্যানিশ প্রভাব কমেছে।
আরও পড়ুন: রেকর্ড চতুর্থবার শিরোপা জিতে নবযুগের সূচনা করল স্পেন
বর্তমানে দানি কারভাহাল, লুকাস ভাসকেস, হেসুস ভায়েহো, দানি সেবায়োস ও ফ্রান গার্সিয়া থাকলেও মাঠের খেলায় নিয়মিত শুধু কারভাহাল। তবে চোটে কারভাহালের মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়ায় তার জায়গায় ডাক পেয়েছেন লুকাস ভাসকেস। এছাড়া ফ্রান গার্সিয়া ও সেবায়োস মাঝেমধ্যে খেলে থাকলেও বেশিরভাগ সময় বেঞেই বসে থাকতে দেখা যায় তাদের।
অন্যদিকে, লা মাসিয়ার কল্যাণে বরাবরই দুর্দান্ত সব স্প্যানিশ প্রতিভা বিশ্ব দরবারে তুলে আনে বার্সেলোনা। ফলে জাতীয় দলেও ক্লাবটির খেলোয়াড়দের আধিক্য লক্ষ করা যায়। তবে সম্প্রতি লা লিগাসহ ইউরোপের শীর্ষ লিগগুলোতে স্প্যানিশ ফুটবলারদের প্রভাব বাড়ায় জাতীয় দল সাজাতে বিভিন্ন ক্লাবের খেলোয়াড়দের উপস্থিতি চোখে পড়ছে।
এরই ধাবাহিকতায় ঘরোয়া ও ইউরোপা লিগে অসাধারণ পারফর্ম করে জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন গ্রীষ্মের দলবদলে পোর্তোয় নাম লেখানো স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড সামু ওমরোদিয়ন।
আরও পড়ুন: প্রায় পুরো ম্যাচ ১০ জনে খেলা স্পেনে বিধ্বস্ত সুইজারল্যান্ড
১ মাস আগে
অবশেষে বেলজিয়াম স্কোয়াডে ফিরলেন লুকাকু
উয়েফা নেশন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে কাগজে-কলমে এখনও টিকে আছে বেলজিয়াম। এমতাবস্থায় শেষ দুই ম্যাচ জয়ের বিকল্প নেই দমিনিকো তেদেস্কোর দলের। এমন সমীকরণের সামনে রোমেলু লুকাকুকে দলে ফেরালেন কোচ।
আগামী বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ইতালি ও ১৭ নভেম্বর বুদাপেস্টে ইসরায়েলের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে চলতি মৌসুমে নেশন্স লিগের গ্রুপ পর্বের খেলা শেষ করবে বেলজিয়াম। এই দুই ম্যাচের জন্য শুক্রবার স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন তেদেস্কো। ২৩ সদস্যের এ স্কোয়াডে আসরে প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন লুকাকু।
নেশন্স লিগের প্রথম চার ম্যাচে জাতীয় দলে ছিলেন না লুকাকু। ক্লাব ফুটবলে দলবদলের কারণে সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রথম দুই ম্যাচে বেলজিয়ামের হয়ে খেলেননি তিনি। এরপর ফিট না থাকায় অক্টোবরের দুই ম্যাচেও দলের বাইরে ছিলেন ৩১ বছর বয়সী এই নাপোলি স্ট্রাইকার।
তবে শেষ দুই ম্যাচে তাকে দলে ফিরিয়ে তেদেস্কো বলেন, ‘ফিরতে তার কোনো সংশয় ছিল না। সে বিশ্বসেরা স্ট্রাইকারদের একজন। নিজেকে কারও কাছে প্রমাণের প্রয়োজন নেই তার। মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে- তার দক্ষতা দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে সহজাত নেতা এবং তরুণ ফুটবলারদের সাহায্য করতে তার জুড়ি নেই।’
আরও পড়ুন: এবার এমবাপেকেই ছাড়াই ফ্রান্সের দল ঘোষণা
জার্মানিতে অনুষ্ঠিত ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে (ইউরো) সর্বশেষ বেলজিয়ামের হয়ে খেলেন লুকাকু। জাতীয় দলের হয়ে এখন পর্যন্ত ১১৯ ম্যাচে তার গোল সর্বোচ্চ, ৮৫টি। তার পরে ৩০ গোলের বেশি নেই আর কারও।
লুকাকু ফিরলেও কেভিন ডি ব্রুইনেকে পাচ্ছে না বেলজিয়াম। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট কাটিয়ে কদিন আগে ক্লাবের হয়ে মাঠে ফিরলেও ম্যানচেস্টার সিটির অনুরোধে এই মিডফিল্ডারকে স্কোয়াডে রাখেননি তেদেস্কো।
নেশন্স লিগে ‘এ’ লিগের দুই নম্বর গ্রুপে ৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে রয়েছে বেলজিয়াম। সমান ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ইতালি এবং ৯ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ফ্রান্স।
বেলজিয়ামকে কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে হলে তাই নিজেদের বাকি দুই ম্যাচ শুধু জিতলেই হবে না, অন্যান্য ম্যাচের ফলের দিকেও তাদের চেয়ে থাকতে হবে। কারণ গ্রুপের শীর্ষ দুই দল উঠবে শেষ আটে।
আরও পড়ুন: চেলসি ছেড়ে নাপোলিতে লুকাকু
বেলজিয়াম স্কোয়াড
গোলরক্ষক: কোয়েন কাস্টিলস (আল কাদসিয়াহ), মাটস সেলস (নটিংহ্যাম ফরেস্ট), মার্টেন ফন্ডেফুর্ট (লাইপসিগ)।
ডিফেন্ডার: আমিন আল-দাখিল (স্টুটগার্ট), টিমোথি কাস্টানিয়া (ফুলহ্যাম), জেনো ডেবাস্ট (স্পোর্তিং), মাক্সিম ডি কাইপার (ক্লাব ব্রুজ), ভাউট ফাস (লেস্টার সিটি), হোয়াকিন সেইস (ক্লাব ব্রুজ), মাতে স্মেটস (গেঙ্ক), আর্থুর থেইয়াটে (ফ্রাঙ্কফুর্ট)।
মিডফিল্ডার: চার্লে ডি কেইটেলারে (আতালান্তা), আর্নে এঙ্গেলস (সেল্টিক), রোমিও লাভিয়া (চেলসি), ওরেল মাঙ্গালা (এভারটন), আমাদু ওনানা (অ্যাস্টন ভিলা)।
ফরোয়ার্ড: ইয়োহান বাকায়োকো (আইন্ডহোভেন), জেরেমি ডকু (ম্যানচেস্টার সিটি), মালিক ফোফানা (অলিম্পিক লিওঁ), দদি লুকেবাকিও (সেভিয়া), রোমেলু লুকাকু (নাপোলি), লুইস ওপেন্ডা (লাইপসিগ), লিয়ান্দ্রো ট্রোসার্ড (আর্সেনাল)।
১ মাস আগে
এবার এমবাপ্পেকেই ছাড়াই ফ্রান্সের দল ঘোষণা
চোটের কারণ দেখিয়ে অক্টোবরের আন্তর্জাতিক বিরতির সময়ে ফ্রান্স দলে ছিলেন না রিয়াল মাদ্রিদের তারকা স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে। এবার নভেম্বরে নেশন্স লিগের দুই ম্যাচের জন্য তাকে ছাড়াই দল ঘোষণা করেছে ফ্রান্স।
নেশন্স লিগের ‘এ’ লিগের ২ নম্বর গ্রুপের পঞ্চম ম্যাচে আগামী ১৪ নভেম্বর ইসরায়েলকে আতিথ্য দেবে দিদিয়ের দেশমের দল। এর তিন দিন পরে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে টেবিলের শীর্ষে থাকা ইতালির বিপক্ষে মাঠে নামবে ২০২১ সালের শিরোপাজয়ীরা।
এই দুই ম্যাচের জন্য ঘোষিত ২৩ সদস্যের ফ্রান্স স্কোয়াডে প্রথমবার ডাক পেয়েছেন চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দারুণ পারফর্ম করা লিলের তরুণ গোলরক্ষক লুকা শেভালিয়েঁ। তবে ঘোষিত স্কোয়াডে জায়াগা হয়নি এমবাপ্পের।
অক্টোবরে চোটের কারণ দেখিয়ে রিয়াল মাদ্রিদে থেকে যান এমবাপ্পে। এরপর ইউরোপীয় সংবাদধ্যমের খবরে জানা যায়, ফ্রান্স যখন নেশন্স লিগের ম্যাচ খেলছে, তখন তিনি সুইডেনের একটি ক্লাবে আড্ডা দিচ্ছেন।
ওই ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ২৫ বছর বয়সী ফরাসি অধিনায়ক।
স্টকহোমের যে হোটেলে তখন তিনি ছিলেন, সে সময় সেখানে একটি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। এ খবর চাউর হওয়ার পর রিয়াল মাদ্রিদ তাকে পোশাকের একটি বিজ্ঞাপন থেকেও সরিয়ে দেয়। এবার রিয়ালের জার্সিতে মাঠে বেশ কিছুদিন ধরে বিবর্ণ থাকার পর ফ্রান্স দলেও ব্রাত্য হলেন এই ফরোয়ার্ড।
আরও পড়ুন: ‘ধর্ষণ অভিযোগের’ তদন্তের মধ্যে এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
স্কোয়াড ঘোষণার সময় এমবাপ্পের অনুপস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দেশম বলেন, ‘অনেক ভেবেচিন্তে আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার কাছে মনে হয়েছে, এই মুহূর্তে এটিই সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত।’
এমবাপ্পেকে দলের বাইরে রাখার সিদ্ধান্তের পেছনে ফুটবলের বাইরের কোনো কারণ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কিলিয়ানের সঙ্গে কথা বলেছি। সে দলে ফিরতে চায়। তবে আগামী দুই ম্যাচের জন্য এটি একটি বিশেষ সিদ্ধান্ত।’
ফ্রান্স স্কোয়াড
গোলরক্ষক: লুকা শেভালিয়েঁ (লিল), মাইক মাইনিয়ঁ (এসি মিলান) ও ব্রাইস সাম্বা (লঁস)।
ডিফেন্ডার: জনাথন ক্লুস (নিস), লুকা দিনিয়ে (অ্যাস্টন ভিলা), ওয়েসলে ফোফানা (চেলসি), থেও এরনান্দেস (এসি মিলান), ইব্রাহিমা কোনাতে (লিভারপুল), জুল কুন্দে (বার্সেলোনা), উইলিয়াম সালিবা (আর্সেনাল) ও দায়োত উপামেকানো (বায়ার্ন মিউনিখ)।
মিডফিল্ডার: এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা (রিয়াল মাদ্রিদ), মাতেও গেন্দুসি (লাৎসিও), এনগলো কান্তে (আল ইত্তিহাদ), মানু কোনে (রোমা), আদ্রিয়েন রাবিও (অলিম্পিক মার্শেই) ও ওয়ারেন জাইরে-এমেরি (পিএসজি)।
ফরোয়ার্ড: ব্রাদলে বারকোলা (পিএসজি), উসমান দেম্বেলে (পিএসজি), রান্দাল কোলো মুয়ানি (পিএসজি), ক্রিস্তোফার এনকুঙ্কু (চেলসি), মিকেল অলিস (বায়ার্ন মিউনিখ) ও মার্কাস থুরাম (ইন্টার মিলান)।
১ মাস আগে
জোড়া গোলে শততম ম্যাচ রাঙালেন কেইন
ইংল্যান্ডের জার্সিতে শততম ম্যাচ খেলতে নেমে অসাধারণ হ্যারি কেইনে মাতল ইংলিশ সমর্থকরা। ম্যাচজুড়ে অসাধারণ পারফর্ম করে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লেন ইংলিশ অধিনায়ক।
নেশন্স লিগের ‘বি’ লিগের দ্বিতীয় গ্রুপের ম্যাচে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে ফিনল্যান্ডের বিপক্ষে ২-০ গোলের জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। ম্যাচের দুটি গোলই করেছেন হ্যারি কেইন।
এদিন ম্যাচ শুরুর আগে শত ম্যাচের মাইলফলক স্পর্শ উপলক্ষে কেইনকে বিশেষ সম্মাননা জানায় ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ম্যাচে নেমেই জোড়া গোল করেন এই তারকা স্ট্রাইকার।
আরও পড়ুন: জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু
গোল পেতে এদিন মুখিয়ে থাকলেও বারবার হতাশ হতে হয়েছে কেইনকে। ম্যাচের ২১তম মিনিটে অসাধারণ দক্ষতায় কেইনের নিশ্চিত একটি গোল ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন ফিনিশ গোলরক্ষক লুকাশ রাদাস্তকি। তার দুই মিনিট পর জালে বল পাঠান ৩১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড, কিন্তু অফসাইডের ফাঁদে পড়ে সে গোলটি বাতিল হয়ে যায়।
ফলে স্কোরলাইন গোলশূন্য রেখে বিরতিতে যায় দুই দল।
৩ মাস আগে
নতি স্বীকার করল না উড়তে থাকা দুই দলের কেউ
উয়েফা নেশন্স লিগের ‘এ’ লিগের তৃতীয় গ্রুপে উড়ন্ত শুরু করে জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস। জার্মানি হাঙ্গেরিকে ৫-০ ব্যবধানে এবং বসনিয়া ও হার্জেগোভিনাকে ৫-২ ব্যবধানে হারিয়ে নেশন্স লিগের নিজেদের যাত্রা শুরু করে নেদারল্যান্ডস। দ্বিতীয় রাউন্ডে এই দুই দল মুখোমুখি হওয়ায় এদের মধ্যে কে সেরা, তা দেখার অপেক্ষায় ছিল ফুটবল বিশ্ব। তবে কেউ কারো কাছে নতি স্বীকার না করায় দর্শকদের অপেক্ষা আরও বেড়েছে।
অ্যামস্টারডামের ইয়োহান ক্রইফ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাতে নেদারল্যান্ডস ও জার্মানির মধ্যকার ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছে।
ম্যাচের শুরুতেই তিজানি রেইন্ডার্সের গোলে স্বাগতিকরা এগিয়ে যাওয়ার পর ৩৮তম মিনিট ও প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে যথাক্রমে ডেসিন উনডাভ ও ইয়োশুয়া কিমিখের গোলে এগিয়ে যায় জার্মানি। তবে বিরতি থেকে ফিরেই দলকে সমতায় ফেরান ডাচ উইংব্যাক ডেনসেল ডুমফ্রিস। এরপর আর কোনো গোল না হলে সমতাতেই শেষ হয় ম্যাচ।
ম্যাচের প্রথমার্ধে বেশিরভাগ সময় ডাচরা কোণঠাসা হয়ে থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের মেলে ধরে রোনাল্ড কুমানের দল। বল দখলেরও লড়াইয়েও দুই দল একে অপরের চেয়ে খুব বেশি এগিয়ে-পিছিয়ে ছিল না; জার্মানির ৫৭ শতাংশ সময়ে বিপরীতে নেদারল্যান্ডসের পায়ে বল ছিল ৪৩ শতাংশ সময়।
এছাড়া ম্যাচজুড়ে জার্মানির ১৯ শটের পাঁচটি লক্ষ্যে ছিল, যেখানে নেদারল্যান্ডনের ১১ শটের লক্ষ্যে ছিল চারটি।
আরও পড়ুন: বড় জয়ে ডাচদের নেশন্স লিগ অভিযান শুরু
এদিন ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। দ্বিতীয় মিনিটে রায়ান গ্রাভেনবার্খের বাড়ানো পাস ধরে জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিজানি রেইন্ডার্স।
অষ্টম মিনিটে মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেনের লং পাস দেখে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যান ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টস। তবে এগিয়ে এসে কোনোরকমে বুক দিয়ে ঠেকিয়ে দলকে বিপদমুক্ত করেন ডাচ গোলরক্ষক বার্ট ভেরব্রুখেন।
এরপর বলের দখল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে একের পর এক গোলের সুযোগ খুঁজতে থাকে জার্মানি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে একাদশ মিনিটে ভিয়ার্টসের পাস ধরে প্রতিপক্ষের বক্সের ঢুকেই ডান পাশ থেকে জোরালো শট নেন কাই হাভার্টস, তবে ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে শটটি প্রতিহত করেন ভেরব্রুখেন।
পঞ্চদশ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে আসা ক্রসে ব্যবধান প্রায় দ্বিগুণ করে ফেলেছিলেন ডেনসেল ডুমফ্রিস। তবে তার জোরালো হেডারটি পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে বেরিয়ে গেলে হতাশ হন তিনি।
৩ মাস আগে
প্রায় পুরো ম্যাচ ১০ জনে খেলা স্পেনে বিধ্বস্ত সুইজারল্যান্ড
স্পেন কেন বর্তমানে ইউরোপের সেরা দল, আজ তার সবচেয়ে পরিষ্কার প্রমাণ দেখল বিশ্ব। ম্যাচের ৭০ মিনিটের বেশি সময় দশ খেলোয়াড় নিয়ে খেলে, রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলে কোনোমতে প্রতিপক্ষকে ঠেকিয়ে, চকিতে পাওয়া সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা সুইজারল্যান্ডের ঘরের মাঠ থেকে ৪-১ ব্যবধানের জয় তুলে নিয়েছে তারা।
জেনেভায় নেশন্স লিগের ‘এ’ লিগের চতুর্থ গ্রুপের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে রবিবার রাতে স্বাগতিক সুইসদের বিপক্ষে বড় জয়ে নকআউটে যাওয়ার পথে ফিরেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
দলের হয়ে মাঝের দুটি গোল করেন মিডফিল্ডার ফাবিয়ান রুইস এবং বাকি গোলদুটি থেকে ম্যাচের প্রথম গোলটি করেন রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড হোসেলু এবং শেষেরটি বার্সেলোনা স্ট্রাইকার ফেররান তোরেস। অপরদিকে, সুইসদের একমাত্র গোলটি করেন জেকি আমদুনি।
প্রথম ম্যাচে সার্বিয়ার বিপক্ষে গোলশূন্য ড্রয়ের পর এদিন পুরোনো ধ্বংসাত্মক চেহারায় ফেরে লুইস দে লা ফুয়েন্তের শিষ্যরা। ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের পর আক্রমণ চালাতে থাকে তারা।
এরই ধারাবাহিকতায় তৃতীয় মিনিটে প্রথম আক্রমণে যায় স্পেন এবং দ্বিতীয় প্রচেষ্টাতেই গোল পেয়ে যায় তারা।
আরও পড়ুন: সার্বিয়ার ‘রক্ষণ দুর্গ’ ভাঙতে ব্যর্থ চ্যাম্পিয়নরা
পাল্টা আক্রমণে উঠে বক্সের ভেতর থেকে শট নিলে হোসেলুর সেই শট ঠেকিয়ে কর্নারে পরিণত করেন ইয়ান জমারের অবসরের কারণে সুইসদের গোলপোস্ট সামলানো গ্রেগর কোবেল। এরপর শর্ট কর্নারের পর ডান দিক থেকে প্রতিপেক্ষর একাধিক ডিফেন্ডারকে ড্রিবল করে ভেতরে ঢুকে গোলমুখে ক্রস দেন লামিন ইয়ামাল। সেখান থেকে হেডারে বল লক্ষ্যে পাঠান হোসেলু। শূন্যে ভাসা অবস্থায় কোবেল বল ক্লিয়ার করলেও ভিএআর রিভিউতে দেখা যায় ততক্ষণে গোললাইন অতিক্রম করেছে বল। ফলে গোল পেয়ে ম্যাচে এগিয়ে যায় স্পেন।
চার মিনিট পরই অবশ্য চমৎকার এক পাল্টা আক্রমণে উঠে সমতায় ফেরে সুইজারল্যান্ড। তবে অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল হয়ে যায়। বাঁ পাশ ধরে উঠে গিয়ে গোলমুখে ক্রস দেন ব্রাইল এম্বলো, কিন্তু বেসির ওমেরাজিক বল জালে পাঠালেও ভিএআর রিভিউতে দেখা যায়, অফসাইড ছিলেন তিনি।
ত্রয়োদশ মিনিটে লামিন ইয়ামালের নৈপুণ্যে ব্যবধান বাড়ায় স্পেন। নিজেদের অর্ধ থেকে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে চ্যালেঞ্জ করে বল কেড়ে নেন ১৭ বছর বয়সী এই প্রতিভাবান তরুণ। এরপর দ্রুতগতিতে বল নিয়ে উঠে গিয়ে বক্সের কিছুটা বাইরে থেকে তারই সঙ্গে দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসা নিকো উইলিয়ামসকে পাস বাড়ান লামিন। নিকো সেখান থেকে এক ডিফেন্ডারকে ড্রিবল করে গোলে শট নিলেও তার প্রচেষ্টা ফিরিয়ে দেন কোবেল। কিন্তু ভাগ্য সহায় না থাকলে যা হয়; বল এসে পড়ে ছয় বক্সের বাইরে থাকা ফাবিয়ান রুইসের সামনে। সময় নষ্ট না করে সেখান থেকে জোরালো শটে ঠিকানা খুঁজে নেন এই মিডফিল্ডার।
৩ মাস আগে