বিমসটেক
মানবপাচার রোধে শক্তিশালী আইনি কাঠামো প্রস্তুত করেছে বাংলাদেশ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
মানবপাচার রোধে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠাসহ শক্তিশালী আইনি কাঠামো প্রস্তুত করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। মানবপাচারে বন্ধ করতে বাংলাদেশ তার প্রতিশ্রুতিতে অটল রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রবিবার (৬ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের সুরমা হলে মানবপাচার সংক্রান্ত বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতা জোটের (বিমসটেক) সাব-গ্রুপের তৃতীয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা জানান, মানবপাচার রোধে বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে। এ সংক্রান্ত অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহি করার জন্য শক্তিশালী আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এছাড়া সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে পাচারের বিপদ সম্পর্কে সংশ্লিষ্টদের সচেতন করার করার জন্য বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে বলে তথ্য দেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মানবপাচার মোকাবেলায় জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, মানব পাচারের শিকার ভুক্তভোগীদের দক্ষতার সাথে শনাক্তকরণ ও তাদের চাহিদা মূল্যায়ন করে যথাযথ সেবা দেওয়ার জন্য একটি জাতীয় রেফারেল ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। অনলাইনে তৈরি এই প্লাটফর্মে সেবাদাতাদের সঙ্গে ভুক্তভোগীদের সংযুক্ত করা হবে।
পাশাপাশি মানবপাচার সংশ্লিষ্ট বিচারকাজ দ্রুত শেষ করার জন্য একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আরও পড়ুন: মানব পাচারবিরোধী প্রচেষ্টার জন্য টিআইপি হিরো অ্যাওয়ার্ড পেলেন বাংলাদেশি আল-আমিন নয়ন
বিমসটেক জোটের সদস্য দেশগুলোসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে মানবপাচার রোধে একসঙ্গে কাজ করার জন্য পারস্পরিক আইনি সহায়তা ব্যবস্থা আরও বিস্তৃত করা হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা।
এ সময় মানব পাচার বন্ধ করতে বিমসটেকের অন্যান্য দেশগুলো যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সে সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা অবগত হয়ে দেশের পাচারাবিরোধী কৌশল আরও শক্তিশালী করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘পাচার রোধে সরকারের পদক্ষেপগুলো এড়িয়ে চলতে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কৌশল গ্রহণ করে পাচারকারীরা। তারা সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক সংকট ও দারিদ্র্যকে কাজে লাগায়। এ কাজে প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে তাদের গোপন কার্যকলাপ এগিয়ে নেয়ার জন্য অভিবাসন রুটগুলোকে কাজে লাগাতে থাকে।’
এই অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি সম্মিলিত ও কৌশলগত কর্মপদ্ধতি প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য ও সেবাসমূহ বিনিময়ের মাধ্যমে একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিমসটেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সম্মিলিত প্রয়াস আমাদের পাচার বিরোধী কৌশলকে আরও শক্তিশালী করতে সক্ষম করবে।’
আরও পড়ুন: দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের শঙ্কা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
এ সময় আগামী দুই বছরের জন্য বাংলাদেশকে বিমসটেকের সভাপতির দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সভায় বিমসটেকভুক্ত সাত সদস্য দেশের (বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমার, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, নেপাল ও ভুটান) মানব পাচার সংক্রান্ত সাব-গ্রপের সংশ্লিষ্ট সদস্যগণ অংশগ্রহণ করেন।
১১ দিন আগে
প্রথম ধাপে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত নেবে মিয়ানমার
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৮ লাখ রোহিঙ্গা থেকে প্রথম ধাপে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের জন্য চিহ্নিত করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। তাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে এক বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমানের কাছে মিয়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ থান শিউ এ কথা জানান।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, ২০১৮ থেকে ২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ছয় দফায় এই তালিকাটি মিয়ানমারকে দিয়েছিল। এছাড়া, আরও ৭০ হাজার রোহিঙ্গার চূড়ান্ত যাচাইকরণের কাজ চলছে বলেও জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: আগামী ঈদ নিজ দেশে করবে রোহিঙ্গারা, প্রত্যাশা প্রধান উপদেষ্টার
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, চলমান রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের দিকে এই প্রথমবারের মতো কোনো তালিকার বিষয়টি নিশ্চিত করল মিয়ানমার।
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, আরও ৫ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গার পরিচয় যাচাইয়ের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।
সাক্ষাৎকালে ড. খলিলুর রহমান মিয়ানমারে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ আরও মানবিক সহায়তা পাঠাতে প্রস্তুত রয়েছে।
১৩ দিন আগে
তরুণদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে বিমসটেক ইয়ুথ ফেস্টিভ্যালের পরামর্শ ড. ইউনূসের
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট বিমসটেকের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর তরুণ-তরুণীদের মধ্যে সম্পৃক্ততা বাড়াতে একটি ইয়ুথ ফেস্টিভ্যাল (যুব উৎসব) আয়োজনের জন্য জোটের সচিবালয়কে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের শেষে ব্যাংককে জোটের মহাসচিব ইন্দ্র মণি পাণ্ডে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
এদিন সম্মেলনের শেষে বিমসটেকের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক ইউনূস। এ সময় দুই বছর পর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় পরবর্তী বিমসটেক সম্মেলনের সময় তরুণদের জন্য আলাদা একটি সম্মেলনের আয়োজনের কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন: মোদি-ইউনূস বৈঠক: হাসিনাকে প্রত্যর্পণসহ সীমান্ত হত্যা নিয়ে আলোচনা
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ইউএনবিকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর জোটের ভবিষ্যৎ উদ্যোগ নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিমসটেক মহাসচিব।
এ সময় ড. ইউনূস তাকে বলেন, ‘বিমসটেক নেতারা যখন মিলিত হবেন, তখন আলাদাভাবে তরুণদের জন্য একটি সভা হওয়া উচিত। এতে সদস্য দেশগুলোর তরুণদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি যৌথ ইয়ুথ ফেস্টিভ্যাল হওয়া উচিত। যেখানে প্রতিটি দেশ নিজেদের মতো অংশ নেবে এবং একটি দেশ নেতৃত্ব দেবে। এ উৎসব তরুণ-তরুণীদের একত্রিত করবে।’
এই প্রস্তাবগুলোকে স্বাগত জানিয়ে মহাসচিব পান্ডে বলেন, ‘এ ধারণাগুলো অসাধারণ। আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এগুলো বাস্তবায়নে কাজ করব।’
এ সময় বিমসটেক মহাসচিবের কাছ থেকে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনার অবস্থা সম্পর্কেও খোঁজখবর নেন প্রধান উপদেষ্টা। জবাবে বিমসটেক মহাসচিব জানান, সদস্য দেশগুলোর বাণিজ্য ও বাণিজ্যমন্ত্রীদের একটি বৈঠক আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে, যা গত ২১ বছরে অনুষ্ঠিত হয়নি।
আরও পড়ুন: অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করব: প্রধান উপদেষ্টা
বিমসটেক সচিবালয়কে সংস্থার কার্যক্রমের ফলপ্রসূ বাস্তবায়নের জন্য একটি বার্ষিক বৈঠকের ক্যালেন্ডার তৈরিরও আহ্বান জানান ড. ইউনূস।
শুক্রবার ব্যাংককে বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন শেষে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতোংতার্ন শিনাওয়াত্রা নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
১৩ দিন আগে
সম্পদ ও ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হলে সমাজ ভেঙে পড়ে: ড. ইউনূস
সম্পদ ও ক্ষমতার কেন্দ্রীভূত হওয়ার ঝুঁকি তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, একটি সমাজে সম্পদ ও ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হলে আজ হোক বা কাল, সেই সমাজ ভেঙে পড়েই। তিনি বলেছেন, ‘সম্পদের বণ্টন না হলে সমাজ টিকিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে পড়ে।’
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বিমসটেক ইয়াং জেনারেশন ফোরামে দেওয়া বক্তব্যে অধ্যাপক ইউনূস এসব কথা বলেন।
ক্ষুদ্রঋণ সৃষ্টি, সামাজিক ব্যবসা উদ্ভাবন ও দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকায় রাখায় নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জনকারী অধ্যাপক ইউনূস বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে দুই দিনের সফরে এখন ব্যাংকক রয়েছেন।
ব্যাংককে বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতা জোটের (বিমসটেক) ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলন চলছে। আগামীকাল (শুক্রবার) সম্মেলনের শেষের দিন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে বিমসটেকের পরবর্তী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। আগামী দুই বছর বাংলাদেশ এই জোটের নেতৃত্ব দেবে। ২০২২ সালের ৩০ মার্চ পঞ্চম শীর্ষ সম্মেলনে শ্রীলঙ্কার কাছ থেকে বিমসটেকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিল থাইল্যান্ড।
ফোরামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে নতুন সভ্যতা সম্পর্কে ড. ইউনূস বলেন, ‘লোভ-লালসায় প্রভাবিত হয়ে কোনোভাবেই ব্যবসা পরিচালনা করা যাবে না। নতুন সভ্যতার এটাই প্রথম শর্ত।’
‘লোভ আমাদের ধ্বংস করে দেবে। কারণ যদিও আমরা সরকারকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে আমরা এটা-সেটা করছি। আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, জিডিপি বাড়ছে এবং প্রবৃদ্ধির হার এত বেশি। কিন্তু বাস্তবে তার কতটুকু হচ্ছে? দেশের সম্পদ গুটিকয়েক মানুষের হাতে কেন্দ্রীভূত হয়ে যাচ্ছে। তারা ধনী থেকে আরও ধনী হচ্ছে, আর আমরা এটাকে বলছি উন্নয়ন। এটাকে আমরা বলি প্রবৃদ্ধি, চমৎকার অর্থনীতি। আর এভাবেই আত্মবিনাশের বীজ রোপিত হয়।’
এই একটিমাত্র কারণে সভ্যতা টিকতে পারে না; আমাদের গ্রহকে তারা ধ্বংস করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
১৪ দিন আগে
বিমসটেক: ড. ইউনূস ও মোদির সাক্ষাৎ, একসঙ্গে নৈশভোজ
বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে বহুখাতীয়, কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা উদ্যোগ—বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দেশের নেতাদের জন্য বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) এই নৈশভোজের আয়োজন করেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ ইউএনবিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিন শাংগ্রি-লা হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে বিমসটেক নেতাদের স্বাগত জানান থাই প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন সিনাওয়াত্রা। এরপর নৈশভোজে একটি সংক্ষিপ্ত বক্তব্যও দেন তিনি।
আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছবিও তোলেন থাই প্রধানমন্ত্রী সিনাওয়াত্রা।
১৪ দিন আগে
ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে বিদেশ সফর শুরু হবে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের
সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে আয়োজিত হতে যাওয়া বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দেবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে এটাই হতে যাচ্ছে তার প্রথম বিদেশ সফর।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অধ্যাপক ইউনূস ৪ সেপ্টেম্বর সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন।
বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টোরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক) পরবর্তী সম্মেলনের আয়োজক থাইল্যান্ড। বিমসটেকের পরবর্তী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ।
সফরের খসড়া সূচি অনুযায়ী, প্রধান উপদেষ্টা আগামী ৩ সেপ্টেম্বর ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং ৫ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরবেন।
এ সফরে সম্মেলনের অংশগ্রহণের পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকসহ বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা।
সম্প্রতি বিমসটেকের সেক্রেটারি জেনারেল ইন্দ্র মণি পান্ডে বলেন, পরবর্তী শীর্ষ সম্মেলনে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য প্রাপ্তি থাকবে যেগুলো বিমসটেকের ভবিষ্যতের জন্য একটি দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করবে।
আসন্ন এই শীর্ষ সম্মেলন বিমসটেকের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতায় নতুন প্রাণশক্তি যোগাবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিমসটেক মহাসচিব।
সম্প্রতি ঢাকায় বিমসটেকের সদর দপ্তরে বিমসটেকের কার্যক্রম নিয়ে একটি আয়োজনে তিনি বলেন, ‘বিমসটেকের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি। বিমসটেককে সফল করতে সব সদস্য রাষ্ট্র সত্যিকার অর্থে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
তিনি আরও বলেন, এবারের সম্মেলনে ব্যাংকক ভিশন-২০৩০ গ্রহণ করা হবে যা বিমসটেককে দিকনির্দেশনা দেওয়ার একটি পূর্ণাঙ্গ দলিল হবে।
নিজেদের মধ্যে বহুমুখী সহযোগিতার জন্য দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাতটি দেশের সমন্বয়ে গঠিত হয় বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টোরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক)।
২৩৯ দিন আগে
১৬-১৯ জুলাই ঢাকায় বিমসটেকের ৫ম বৈঠক
বিমসটেকের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনাবিষয়ক এমিনেন্ট পারসনস গ্রুপের (ইপিজি) পঞ্চম বৈঠক আগামী ১৬-১৯ জুলাই ঢাকায় বিমসটেক সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত হবে।
চার দিনব্যাপী এই বৈঠকে বিমসটেক ব্যাংকক ভিশন-২০৩০ বাস্তবায়ন এবং ইপিজির খসড়া প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা করা হবে।
ইপিজি তাদের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে বিমসটেক নেতাদের কাছে তার প্রতিবেদন জমা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সভায় সভাপতিত্ব করবেন বিমসটেকের বর্তমান চেয়ারম্যান থাইল্যান্ডের ইপিজির সদস্য ড. সুনথর্ন চাইনদিপম।
বিমসটেক সদস্য দেশগুলোর ইপিজির সদস্যরা এ সম্মেলনে যোগ দেবেন।
বিমসটেক সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মহাসচিব ইন্দ্র মণি পান্ডের নেতৃত্বে বিমসটেক সচিবালয় এই বৈঠকের আয়োজন করছে এবং ইপিজিকে আলোচনায় সহায়তা করবে।
একটি সমৃদ্ধ, স্থিতিস্থাপক ও উন্নত বিমসটেক অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিমসটেকের সংস্কার, পুনরুজ্জীবন ও পুনর্গঠনের জন্য সুপারিশ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইপিজিকে।
একটি সুরক্ষিত, উন্নত ও সমৃদ্ধ বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের লক্ষ্য অর্জনে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার ও গভীর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিশ্রুতির পরিচায়ক এই ইপিজি।
বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের ৭টি দেশ বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড নিয়ে বিমসটেক গঠিত।
বিমসটেক ৭টি খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা দিয়ে থাকে সেগুলো হলো- কৃষি ও খাদ্য সুরক্ষা; কানেক্টিভিটি; পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন; মানুষে মানুষে যোগাযোগ; বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন; নিরাপত্তা এবং বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও উন্নয়ন।
ব্লু ইকোনমি, মাউন্টেন ইকোনমি, জ্বালানি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, দারিদ্র্য বিমোচন, স্বাস্থ্য ও মানবসম্পদ উন্নয়নসহ ৮টি উপখাতে সহযোগিতা করে থাকে বিমসটেক।
২৭৬ দিন আগে
রাজনীতিতে কখনো সহিংসতা চাই না: ট্রাম্পের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনি সমাবেশে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে আমরা কোনো সংঘাত চাই না। আমাদের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। আমাদের দেশে যেমন মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়, মানুষের সম্পত্তি পোড়ানো হয় সেটি কখনো কাম্য নয়। এটি অনভিপ্রেত, আইনবিরোধী।’
রবিবার (১৪ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ট্রাম্পের ওপর হামলা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘অতীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে কখনো ভায়োলেন্স ছিল না। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ হামলায় আমরা চিন্তিত ও নিন্দা জানাই। রাজনীতিতে ভায়োলেন্স থাকা উচিত নয়।’
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে জানতে চাইলে ড. হাছান বলেন, ‘কোটার বিষয়টি আদালতের মাধ্যমে এসেছে। সরকার শিক্ষার্থীদের ওপর সহানুভূতিশীল হয়ে পুরো কোটাই বাতিল করে দিয়েছিল। হাইকোর্ট সেটি পুনর্বহাল করেছিল, সুপ্রিম কোর্ট স্থগিত করেছে। কোটা আদালতের একটি বিচারাধীন বিষয়। সে কারণে এর ওপর সরকার কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। তাহলে আদালত অবমাননা হবে। আদালতের মাধ্যমেই এর সমাধান হতে হবে।
কোটা আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘এখন যে আন্দোলন হচ্ছে সেটির কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে মনে করি না। এটি আসলে আদালতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলিও বটে। কোটা পদ্ধতি বাতিলের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক সমস্যাও দেখা দিয়েছে। যেমন অনেক জেলা থেকে অনেক ক্যাডারে কেউ সুযোগ পাচ্ছে না, মেয়েদের অংশগ্রহণ কমে গেছে -এসব সমস্যা দেখা দিয়েছে।’
কোটা আন্দোলন থেকে বিএনপি সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে কি না- এ প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘বিএনপি তো সবসময় চায় দেশকে অস্থিতিশীল করতে। বিএনপি কোটা আন্দোলন থেকেও সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের পর সুপ্রিম কোর্ট স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য আদেশ দিয়েছে। অর্থাৎ সরকার যে কোটা বাতিল করেছিল, সেটিই বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপরও যখন আন্দোলন হয় বুঝতে হবে এটির সঙ্গে রাজনীতি যুক্ত হয়েছে।’
গত ১১-১২ জুলাই ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত বিমসটেক দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দ্বিতীয় রিট্রিট সম্মেলনের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, চিকিৎসা, জ্বালানি নিরাপত্তা খাতে সহায়তা এবং নেপাল ও ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে সবুজ শক্তি ব্যবহার বাড়ানো বিষয়ে রিট্রিটে কথা হয়েছে।
হাছান মাহমুদ আরও জানান, আগামী সেপ্টেম্বর মাসের চার তারিখে থাইল্যান্ডে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন। সেখানে বিমসটেকের পরবর্তী চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব নেবে বাংলাদেশ।
রিট্রিটের সাইডলাইনে ভারত ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে মন্ত্রী হাছান জানান, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশের জন্য পচনশীল পণ্য আমদানিতে কোটা নির্ধারণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিস্তা বিষয়ে কারিগরি দল পাঠানো, ব্রিকসে অন্তর্ভুক্তি ও জয়েন্ট কনসাল্টেটিভ কমিটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ড. হাছান আরও জানান, মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু সেটি রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর।
২৭৭ দিন আগে
নয়াদিল্লিতে বিমসটেক রিট্রিটে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দ্বিতীয় বিমসটেক রিট্রিট সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চীন সফর শেষে বুধবার রাতে বেইজিং থেকে সরাসরি দিল্লির উদ্দেশে রওনা হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে সম্মেলনে যোগ দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী এই রিট্রিটে বিমসটেক দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বিমসটেক প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করা এবং আসন্ন ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনকে সফল ও ফলপ্রসূ করার বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন। নেপালের প্রতিনিধিত্ব করছেন তাদের পররাষ্ট্র সচিব।
আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আঞ্চলিক এই জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, সংযোগ ও সুনীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে কার্যকর সহযোগিতার ওপর জোর দেন।
বৈঠকের পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান ভারত ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং পারস্পরিক স্বার্থের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বাংলাদেশে নিত্যপণ্য আমদানিতে অব্যাহত সুবিধা বজায় রাখা ও তিস্তা প্রকল্পের জন্য কারিগরী দল পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
অপরদিকে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সুই বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেন। নেপালের পররাষ্ট্র সচিব সেওয়া লামসাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
উল্লেখ্য, বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল, টেকনিকাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন (বিমসটেক) দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ৭টি দেশ নিয়ে গঠিত একটি আঞ্চলিক জোট। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড নিয়ে এই জোট গঠিত হয়।
আরও পড়ুন: জিডিসির সমাপনী অধিবেশনে ডিজিটাল রূপান্তরে বিমসটেকের সহযোগিতার আহ্বান ঢাকার
২০১৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় বিমসটেকের সদর দপ্তর উদ্বোধন করেন।
বিমসটেকের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং বঙ্গোপসাগর উপকূলের দেশগুলোর মধ্যে প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পারস্পারিক সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি করা। ব্যবসা, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি, পর্যটন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, কৃষি উন্নয়ন, মৎস্যসম্পদ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, পোশাক ও চামড়া শিল্পসহ আরও অনেকগুলো ক্ষেত্র বিমসটেকের আওতাভুক্ত।
আরও পড়ুন: এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও বাংলাদেশকে জিরো ট্যারিফ সুবিধা দেবে চীন
২৮০ দিন আগে
জিডিসির সমাপনী অধিবেশনে ডিজিটাল রূপান্তরে বিমসটেকের সহযোগিতার আহ্বান ঢাকার
এই অঞ্চলে অর্থবহ ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ, আন্তঃসীমান্ত তথ্য প্রবাহ এবং উন্নয়নমুখী উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক) সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
রবিবার (২৩ জুন) ঢাকায় দুই দিনব্যাপী 'রিজিওনাল কনসালটেশন অন গ্লোবাল ডিজিটাল কমপ্যাক্ট (জিডিসি)'র সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সরকার ও বিমসটেক সেক্রেটারিয়েট যৌথভাবে দুই দিনব্যাপী এই আঞ্চলিক আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ বিমসটেক মহাসচিবের
নিউইয়র্কে জাতিসংঘে জিডিসি সম্পর্কিত চলমান আলোচনায় ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠস্বর সহজতর করার জন্য অভিন্ন উদ্দেশ্য এবং প্রাসঙ্গিক অগ্রাধিকারগুলো চিহ্নিত ও প্রচার করা এই আলোচনার লক্ষ্য।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের ভবিষ্যৎ শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা জিডিসি গ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার 'স্মার্ট বাংলাদেশ' রূপকল্প-২০৪১ এর আলোকে ডিজিটাল কূটনীতিতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী পলক।
এ প্রসঙ্গে তিনি গত বছর জাতিসংঘে 'জিরো ডিজিটাল ডিভাইড' বিষয়ে আইসিটি ডিভিশনের অধীনে এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) উত্থাপিত প্রস্তাবের কথা স্মরণ করেন। তিনি ডিজিটাল পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি এবং ইনোভেশন বিষয়ে গ্লোবাল সাউথের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের শেয়ার করা বেশ কয়েকটি উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন।
প্রতিমন্ত্রী পলক মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার পাশাপাশি তথ্যের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, সরকার সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক নিয়ম ও মান মেনে একটি তথ্য সুরক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে।
বৈঠকের সভাপতি পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন পরবর্তী বিমসটেক চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশের ক্ষমতায় আঞ্চলিক পরামর্শের মাধ্যমে সৃষ্ট গতিকে এগিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দেন।
অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে, তিনি ডিজিটাল সাক্ষরতা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অন্যান্য উদীয়মান প্রযুক্তির মানব-কেন্দ্রিক প্রয়োগের প্রচারের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছিলেন।
শামসুল আরেফিন তার বক্তব্যে ডিজিটাল কানেক্টিভিটি, সাইবার নিরাপত্তা ও ডিজিটাল লিটারেসি বিষয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সর্বোত্তম অনুশীলনগুলো বিনিময়ের জন্য 'বিমসটেক সেন্টার অব এক্সিলেন্সি' প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস সবার জন্য উন্মুক্ত, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে জাতিসংঘের উদ্যোগকে ঘিরে আঞ্চলিক আলোচনা সভা আয়োজনে বাংলাদেশের উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
পিছিয়ে পড়াদের ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করাসহ আগামী বছরগুলোতে জিডিসি বাস্তবায়নে দেশগুলোকে সহায়তা করতে জাতিসংঘের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শ্রীলঙ্কার অধ্যাপক ভেরানজা করুনারত্নে, বিমসটেক সচিবালয়ের পরিচালক (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন) মাহিশিনি কোলন এবং বাংলাদেশ ইনিশিয়েটিভ ফর ইউনিফাইড ভয়েসেস অন গ্লোবাল ডিজিটাল কমপ্যাক্ট ও ইউএন সামিট অব দ্য ফিউচার ২০২৪-এর নির্বাহী সমন্বয়ক এ এইচ এম বজলুর রহমান।
দুই দিনের এই আয়োজনে পাঁচটি কারিগরি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়; যেখানে বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলো জিডিসির পাঁচটি মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কিত অভিন্ন অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনা করে।
কারিগরি আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (জাতিসংঘ ও এমইএ) ফাইয়াজ মুরশীদ কাজী।
আরও পড়ুন: উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য পরবর্তী বিমসটেক সম্মেলনে কিছু উল্লেখযোগ্য ফলাফল আসতে যাচ্ছে: মহাসচিব
২৯৭ দিন আগে