সিকৃবি
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের সই করা এক অফিস আদেশে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
আরও পড়ুন: সিকৃবিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
অফিস আদেশে বলা হয়, ‘গত ১৪ আগস্ট ডিন কাউন্সিলের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে সব রাজনৈতিক সংগঠন ও এর কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ করা হলো। কোনো শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যদি রাজনৈতিক সংগঠন ও রাজনৈতিক কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এর আগে, গত কয়েকদিন ধরেই রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস, দুর্নীতিবাজ উপাচার্যের পদত্যাগসহ কয়েকদফা দাবিতে আন্দোলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও শিক্ষার্থীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার ডিন কাউন্সিলের জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যান্য দাবিও দ্রুত বাস্তবায়ন ও সিন্ডিকেট সভায় পাস করার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: সিকৃবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে জয়ী আওয়ামীপন্থী প্যানেল
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিকৃবির সমন্বয়ক আজিজুল হক আজাদ বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপির পরিপ্রেক্ষিতে রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবি ডিন কাউন্সিলের সভায় পাস হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের অন্য দাবির মধ্যে আছে- গণহত্যার সমর্থক উপাচার্যের পদত্যাগ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার বিচার, দ্রুত ক্যাম্পাস খুলে দেওয়া ও ছাত্র সংসদ চালু করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই এসব দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে এবং সিন্ডিকেট সভায় পাস হবে। যতদিন এই দাবিগুলো আদায় হবে না ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে।’
আরও পড়ুন: খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রাণীদের প্রতি সদয় হতে সিকৃবি উপাচার্যের আহ্বান
৩ মাস আগে
সিকৃবিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন সিকৃবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
‘ফ্যাসিস্ট ও স্বার্থান্বেষী’ আখ্যা দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সিকৃবির শতাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী কমিটিকে অবাঞ্ছিত বলে ঘোষণা দেন।
সিকৃবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ফেসবুক ওয়ালে এই ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন: সিকৃবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে জয়ী আওয়ামীপন্থী প্যানেল
গত ৪ আগস্ট সিকৃবির বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ৮ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হলেও, শিক্ষার্থীরা তখন থেকেই দাবি করতে থাকেন, এটি স্বঘোষিত কমিটি। যার সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
এ বিষয়ে সিকৃবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটির প্রধান সমন্বয়ক দাবি করা কৃষি অনুষদের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আজিজুল হক বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের আসলে বোঝা উচিত তারা কাদের কথায় বা প্ররোচনায় এমন করছেন। সারাদেশের মতো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও যারা আওয়ামী স্বৈরাচারী ছিলেন, তারাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্ট নিয়ে খেলা করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগের অনেক নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরাও এর পেছনে জড়িত। এসব স্বৈরাচারীরা আবারও আমাদের আগের ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. জামাল উদ্দিন ভূঞাকে চাচ্ছেন। যেন ক্যাম্পাসে আওয়ামী লীগের নৈরাজ্য আবারও চালু হয়। আমি সাধারণ শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানাব, তারা যাই করুক যেন বুঝেশুনে করে। কারো কথায় প্ররোচিত হয়ে যেন কিছু না করে।’
এই কমিটিতে থাকা ভেটেরিনারি অনুষদের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও সমন্বয়ক মাহফুজা আক্তার বলেন, ‘সরকার পতনের কয়েকদিন আগে সিকৃবির একটি গ্রুপে সমন্বয়ক চেয়ে লিংক দেওয়া হয়। এর ভিত্তিতে আমি নাম দিই। আন্দোলন শেষ হওয়ার পর সমন্বয়কদের একটি তালিকা প্রকাশিত হয়। আমার বন্ধুরা জানায়, এই তালিকার কয়েকজন বিভিন্ন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন। তাই গত ৭ আগস্ট আমি পদত্যাগ করি।’
আরও পড়ুন: খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রাণীদের প্রতি সদয় হতে সিকৃবি উপাচার্যের আহ্বান
এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বায়োটেকনোলজি অনুষদের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের তাসনিম সাকিব বলেন, ‘সমন্বয়কদের নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠেছে, তখন তারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার পরিবর্তে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আলাদা তৃতীয় পক্ষ হিসেবে বিবেচনা করছেন। যেখানে তাদের আসল কাজই হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে সমন্বয় করা। আর তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে যেটি করার চেষ্টা করছেন, সেই কাজটিই এক ধরনের বৈষম্য। যা এই সম্পূর্ণ আন্দোলনের আদর্শের পরিপন্থী।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রশ্ন আর ধোঁয়াশা রেখে কোনো গোষ্ঠী যদি নিজেদের সমন্বয়ক দাবি করে তাদের মতামতকে সর্বেসর্বা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে থাকে, তাহলে তাদের সচেতন শিক্ষার্থীরা বর্জন করবেই এবং হচ্ছেও তাই।’
কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল আহমেদ অয়ন বলেন, ‘ক্যাম্পাসে একটি স্বঘোষিত সমন্বয়ক কমিটি দেখা গেলেও আন্দোলনের সময় কোনো সমন্বয়কের কার্যক্রম লক্ষ করা যায়নি। তাই সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের বর্তমান কার্যক্রমকে ব্যক্তিস্বার্থ, নিজস্ব রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন ও উদ্দেশ্যমূলক মনে করে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ স্বার্থান্বেষী সমন্বয়ক কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: ভিসির দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে আন্দোলনে সিকৃবির শিক্ষকরা
৩ মাস আগে
সিকৃবিতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) দুপুর দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক গ্রুপ ও অপর একটি বিদ্রোহী গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিকাল ৪টা পর্যন্ত উভয়পক্ষের মধ্যে চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের পরিচয় জানা যায়নি।
এদের মধ্যে গুরুতর আহত একজনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা বিশ্ববিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন।
জানা গেছে, কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ছাত্রলীগের কর্মীসভা দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এতে বাঁধা দেন ছাত্রলীগ শাখা সভাপতি আশিকুর রহমান ও সেক্রেটারি এমাদুল হোসেনের বিদ্রোহী সহসভাপতি শরীফ হোসাইন, সাব্বির মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান হোসাইন, আকাশ ভূইয়া ও প্রান্ত ইসলামের নেতৃত্বে বিদ্রোহী গ্রুপ। এসময় দুপক্ষের অনুসারীরা সভাস্থলে এসে অবস্থান নেয়। তখন উভয় পক্ষে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার বিকাল ৫টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: বিজয় মেলাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ-যুবলীগ সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৬
১ বছর আগে
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিনি চা বাগান
টিলাঘেরা সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) সবুজ ক্যাম্পাসের দুটি টিলায় শুরু হয়েছে চা নিয়ে গবেষণা। দুই একর জায়গা নিয়ে বাংলাদেশের অন্যতম এই অর্থকরী ফসলের চাষ ও গবেষণা চলছে। গত তিন বছর ধরে এই চা বাগান গড়ে তুলেছেন কৃষি অনুষদের ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান ও চা উৎপাদন প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ.এফ.এম. সাইফুল ইসলাম।
সকালের সোনালী আলোতে চা বাগানে ঢুকতেই উঁচু নিচু সবুজ ল্যান্ডস্কেপ মনকে তরতাজা করে দেয়। এই ভাদ্র মাসে ছায়াগাছ দিয়ে আবৃত চা বাগান কচি কশিলয়ের ঘ্রাণে মো মো করছে। বোঝাই যাচ্ছে চায়ের পাতার তোলার উপযুক্ত সময় চলছে। ছায়াগাছের গোড়ায় গোড়ায় লাগানো গোলমরিচ ও খুলনা বিভাগের বিখ্যাত চুই ঝাল গাছ লতে বেয়ে উপরে উঠে যাচ্ছে।
শুধু চা নয় কফি গাছেরও দেখা মিলল বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি চা বাগানে। পানীয় ফসলের এই বাগানে আরও রয়েছে লেমন ঘাস ও তুলসি। অধ্যাপক সাইফুল জানিয়েছেন এগুলো চায়ের মূল্য সংযোজন করে। আরও রয়েছে কাজু বাদাম। এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান থাকার কারণে চা নিজেই ওষধি গাছ। তুলসী, বাদাম এবং লেমন ঘাস এর ঘ্রাণ ও মানের সাথে ওষুধি গুণাগুণও বাড়িয়ে দেবে।
চা গাছে যেমন কচি পাতা এসেছে, কফি গাছেও এসেছে থোকায় থোকায় ফল। কফি এরাবিক ও কফি রোবাস্তা এই দুই জাতের কফির গবেষণা চলছে এখানে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড় এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে কফির চারা সংগ্রহ করা হয়। চাষ ব্যবস্থাপনা, জাত নির্বাচনের তারতম্যে কফি উৎপাদনে কী প্রভাব পড়ছে সেটি দেখাই মূল উদ্দেশ্য। এছাড়াও ফল সংগ্রহের সময় এবং বেকিং টইম কম বেশি করে কফির উৎপাদন ও মান বৃদ্ধি নিয়ে গবেষণা চলছে।
ড. সাইফুল বলেন, ‘পাট শিল্প, চিনি শিল্প ইতোমধ্য নিঃশ্বেষ হয়ে গেছে, চা শিল্পের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র চলছে। গ্রাম থেকে শহর আবাল-বৃদ্ধবনিতা প্রিয় পানীয় চা। বাংলাদেশে দিনদিন এর চাহিদা বেড়েছে কিন্তু উৎপাদন সে অনুপাতে বাড়েনি। চাহিদার কথা মাথায় রেখে সরকারকে ২০১৫ সাল থেকে বাইরের দেশ থেকে চা আমদানি করতে হচ্ছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো, নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৫ মাস খরার সময় বাংলাদেশে চা পাতা তোলা যায় না। তাই সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চা বাগানে ড্রট টলারেন্ট ভ্যারাইটি বা খরা সহিষ্ণু চায়ের জাত উদ্ভাবনের প্রক্রিয়া চলছে।’
পড়ুন: কাজে ফিরেছেন চা শ্রমিকরা
তিনি জানান, একজন পিএইডি ছাত্র তার সাথে বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে গবেষক দলটি দেশ বিদেশের বিভিন্ন বাগানের সেরা সেরা চায়ের চারা সংগ্রহ করেছে। সেচের পরিমাণ কমিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে চা গাছ টেকানো যায় কি না, তা পরীক্ষা করা হচ্ছে। পাশাপাশি মাইট (পাতার রস খেয়ে ফেলে এক ধরণের ক্ষুদ্র পোকা) এবং অন্যান্য পোকা চা পাতার কি কি ক্ষতি করছে সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং মাইট ও পোকা সহিষ্ণু চায়ের জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে দুই প্রকার চায়ের চাষ হয়। একটি চীনের চা বা ক্যামেলিয়া সাইনেসিস, আরেকটি আসামের চা বা ক্যামেলিয়া আসামিকা। সিলেট এক সময় ভারতের আসাম অঞ্চলেরই অংশ ছিল। সিলেট ও আসামের ভূপ্রকৃতি এবং আবহাওয়া প্রায় একই রকম। তাই সিলেটের উপত্যকায় আসামিকা চায়েরই উৎপাদন বেশি। স্ট্রং মল্ট ফ্লেভার এবং বড় দানার জন্য এর চাহিদা ব্যাপক। আসামের টোকলাই চা গবেষণা কেন্দ্র থেকে আনা হয়েছে বিশেষ প্রজাতির ৯টি জাত। তবে গবেষক ড. সাইফুল মানের দিক দিয়ে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বিটি-২ চা কে এগিয়ে রেখেছেন।
তিনি বলেন, বিটি-২ এর পপুলেশন ডেনসিটি (স্থান অনুযায়ী গাছের আধিক্য) সামান্য বাড়িয়ে দিলেই মোট উৎপাদন বেড়ে যায়। তিনি প্লান্ট স্পেসিং (এক গাছের থেকে আরেক গাছের দূরত্ব) কমিয়ে বিটি-২ চাষ করতে চা বাগান মালিকদের পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, পাতা বড় দেখে অনেকে আসামিকা জাত চাষ করে থাকেন। কিন্তু মানের দিকে বাংলাদেশি জাতগুলোই সেরা।
উৎপাদন বাড়াতে তিনি একশ বছরের বুড়ো চা গাছগুলোকে রিপ্লেস করার জন্য টি স্টেটগুলোকে অনুরোধ করেছেন। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চা বাগানে ৯ প্রজাতির ভারতীয় টোকলাই প্রজাতির চা গাছ ছাড়াও, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বিটি-১ থেকে বিটি-২২ পর্যন্ত ক্লোনগুলো চাষাবাদ হচ্ছে। সাথে রয়েছে একটি বাইক্লোনাল ভ্যারাইটি ও ৪টি বাংলাদেশি বাগানের ক্লোন। ল্যাটিন স্কয়ার ডিজাইনের এই গবেষণা মাঠ থেকে প্রতিদিন ২৪টি প্যারামিটারে তথ্য সংগ্রহ চলছে।
পড়ুন: পেঁয়াজ সংরক্ষণে আলোর মুখ দেখাচ্ছে ‘এয়ার ফ্লো মেশিন’
চা শিল্পের বেহাল দশা নিয়ে গবেষক ড. সাইফুলের কিছু আক্ষেপ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি প্রায় ৩০টিরও বেশি বাগান পরিদর্শন করে দেখেছি, চা উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনায় চা বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন এমন লোক নেই। বাগানগুলোতে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগ হচ্ছে না বিধায় আজ চা শিল্পের বেহাল দশা। চা উৎপাদনশীলতা, চা গাছের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও মান নিয়ন্ত্রণের জন্য অবশ্যই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা গ্রাজুয়েট লাগবে।’
সঠিক জায়গায় সঠিক মানুষ না থাকলে একসময় এ শিল্পটি মুখ থুবরে পড়তে পারে বলে এই গবেষক আশঙ্কা প্রকাশ করেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রতিটি চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক পদে উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধা দিয়ে কৃষিবিদ নিয়োগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সিকৃবির জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তর জানায়, ক্যাম্পাসের এই ছোট্ট চা বাগানটি প্রাথমিক অবস্থায় এনএটিপির প্রজেক্ট ছিল। পরবর্তীতে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় এখন বড় একটি জার্মপ্লাজম স্থাপিত হলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান ও চা উৎপাদন প্রযুক্তি বিভাগ ও কীটতত্ত্ব বিভাগ এই গবেষণায় সরাসরি যুক্ত হয়েছে। প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. এ.এফ.এম. সাইফুল ইসলাম ছাড়াও এই গবেষণায় যুক্ত রয়েছেন প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মালেক এবং রশীদুল হাসান।
পড়ুন: রাজধানীতে বাস মালিকদের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ
২ বছর আগে
ভিসির দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে আন্দোলনে সিকৃবির শিক্ষকরা
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. মতিয়ার রহমান হাওলাদারের দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষকরা। মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) সকাল এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত এই মানববন্ধনে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষক অংশ নিচ্ছেন।জানা গেছে, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. মতিয়ার রহমান হাওলাদার প্রতিনিয়ত শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে থাকেন। যার ধারাবাহিকতায় শনিবার (২ এপ্রিল) দুই জন অধ্যাপককে অশালীন ভাষায় গালি দেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে শিক্ষকদের মাঝে।
আরও পড়ুন: সিকৃবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে জয়ী আওয়ামীপন্থী প্যানেলমানববন্ধনে অংশ নেয়া কয়েকজন শিক্ষক জানান, বর্তমানের ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ে একনায়কতন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। দায়িত্বে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে পারেননি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে যে ভাষায় কথা বলেন কিংবা আচরণ করেন তা ভদ্রসমাজে কাম্য নয়। দায়িত্বশীল পদে থেকে এ ধরনের আচরণের সুষ্ঠু বিচারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মোশাররফ হোসেন সরকারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অংশ নেন সভাপতি প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. এম এম মাহবুব আলম, প্রফেসর ড. এএফএম সাইফুল ইসলাম, প্রফেসর জামাল উদ্দিন ভুঁইয়া প্রমুখ।মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণে শিক্ষকরা জরুরি সভায় বসবেন বলে জানা গেছে।
২ বছর আগে
মাছের টিকা উদ্ভাবন করলেন সিকৃবির শিক্ষক
বাংলাদেশে মাছের জন্য প্রথম টিকা উদ্ভাবন করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) এক শিক্ষক। এই টিকা মাছের ব্যাকটেরিয়াজনিত একাধিক রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করবে ও মৃত্যুহার কমিয়ে উৎপাদন বাড়াবে বলে আশা এর উদ্ভাবক সিকৃবির মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুনের।
২০১৬ সাল থেকে মাছের টিকা উদ্ভাবন নিয়ে গবেষণা করা এই শিক্ষক জানান, এরোমোনাস হাইড্রোফিলা নামে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মাছের ক্ষত রোগ, পাখনা পচাসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। এতে প্রতি বছর প্রচুর মাছ মারা যায়। তবে এই উপমহাদেশে মাছের টিকা নিয়ে তেমন কাজ হয়নি।
আব্দুল্লাহ আল মামুন উদ্ভাবিত টিকার নাম দেয়া হয়েছে ‘বায়োফ্লিম’।
তিনি বলেন, ‘আমরা সিকৃবির গবেষণাগারে কিছু পাঙ্গাশ মাছের শরীরে এই টিকা প্রবেশ করিয়ে ৮৪ শতাংশ সফলতা পেয়েছি। এরপর মাঠ পর্যায়ে এটি প্রয়োগ করা হবে।’
পড়ুন: বিশ্ব সুরক্ষায় বাংলাদেশি তরুণের উদ্ভাবনী উদ্যোগ
‘আগামী মার্চ থেকে সিলেটের বিভিন্ন পুকুরের মাছের শরীরে এই টিকা প্রয়োগ করা হবে। এর মধ্যে কয়েকটি পুকুরও নির্ধারণ করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগে সফলতা মিললেই বাণিজ্যিক উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া হবে,’ বলেন এই উদ্ভাবক।
এই টিকা খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে মাছকে খাওয়ানো হবে জানিয়ে মামুন বলেন, ‘এই টিকা ব্যাপক আকারে উৎপাদনের সক্ষমতা আমাদের নেই। আমাদের যে সক্ষমতা আছে তাতে প্রতি মাসে ১০০ মিলিলিটার উৎপাদন করতে পারব। এই পরিমাণ টিকা ১ কেজি মাছের খাবারের সঙ্গে মেশানো যাবে।
তিনি জানান, এই গবেষণা কাজে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সে একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
সিলেট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এই অঞ্চলের বেশিরভাগ মাছই ক্ষত রোগে আক্রান্ত হয়। একে মাছের ক্যান্সারও বলা হয়। প্রতি বছর অনেক মাছ ক্ষত রোগে মারা যায়।
তিনি বলেন, ‘বাইরের অনেক দেশে মাছের শরীরে টিকা প্রয়োগ করা হলেও আমাদের দেশে এখনও শুরু হয়নি। ক্ষত রোগ থেকে মুক্ত রাখতে আমরা সাধারণত জলাশয়ে চুন ও লবণ ব্যবহার করে থাকি। মাছের টিকা উদ্ভাবন সফল হলে উৎপাদন অনেক বাড়বে।’
পড়ুন: দেশে প্রথমবারের মতো ভার্টিক্যাল ফ্লোটিং বেড পদ্ধতি উদ্ভাবন
পাঙ্গাসের মড়ক রোধে সিকৃবিতে ‘বায়োফিল্ম’ ভ্যাকসিন উদ্ভাবন
সিকৃবির মৎস্য অনুষদ সূত্রে জানা যায়, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, চিলিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাছের জন্য ২৮ ধরনের টিকা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যবহার হয়। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এ ধরনের টিকা উদ্ভাবন হয়েছে। স্বাদু পানিতে চাষযোগ্য মাছে এই টিকা প্রয়োগ করা যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মতিয়ার রহমান হাওলাদার জানান, বাংলাদেশে প্রায় ৪০ লাখ টন মাছ উৎপাদন হয়। মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। তবে মাছের বিভিন্ন রোগের কারণে মড়ক দেখা দেয়। এতে প্রচুর পরিমাণ মাছ মারা যাওয়ায় চাষি ও দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এই গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এই টাকায় আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। আমার আশা, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উৎপাদিত টিকা মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের আমিষের চাহিদা পূরণে অবদান রাখবে।’
৩ বছর আগে
দেশে প্রথমবারের মতো মাছের ভ্যাকসিন উদ্ভাবন
মাছের মড়ক থেকে রেহাই পেতে দেশে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যবহার উপযোগী মাছের ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) মৎস্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আবদুল্লাহ আল মামুন।
৩ বছর আগে
পাঙ্গাসের মড়ক রোধে সিকৃবিতে ‘বায়োফিল্ম’ ভ্যাকসিন উদ্ভাবন
দেশের মানুষের খাদ্য তালিকায় থাকা জনপ্রিয় মাছ পাঙ্গাসের মড়ক রোধ করতে ‘বায়োফিল্ম’ নামে নতুন ভ্যাকসিন উদ্ভাবিত হয়েছে।
৩ বছর আগে
সিকৃবিতে ‘সমন্বিত পদ্ধতিতে’ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ‘সমন্বিত পদ্ধতিতে’ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৪ বছর আগে