কুমিল্লা
কুমিল্লায় থানা থেকে নারী আসামির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
কুমিল্লায় সতীনের ছেলেকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় আটক এক নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। হোমনা থানা হেফাজতে থাকা ববিতা নামের ওই নারী আসামির মরদেহ থানার নারী ও শিশু সহায়তা ডেস্কের একটি কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোরে ওই কক্ষে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ববিতার মরদেহ পাওয়া যায়।
নিহত ববিতা হোমনা উপজেলার ঘনিয়ারচর গ্রামের খলিল মিয়ার স্ত্রী।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্শেদুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, বুধবার সকালে ববিতা তার সতীনের ১১ বছর বয়সী ছেলে সায়মনকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর জখম করেন। এ সময় শিশুটির নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সায়মনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনার পর স্থানীয়রা ববিতাকে আটক করে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় আহত সায়মনের চাচা স্বপন মিয়া বাদী হয়ে রাতে হোমনা থানায় একটি মামলা করেন।
ওসি বলেন, ‘ববিতাকে রাতে থানার নারী ও শিশু সহায়তা ডেস্কে রাখা হয়েছিল। ওই কক্ষে তার সঙ্গে আরও একজন নারী আসামি ও একজন নারী গ্রাম পুলিশ উপস্থিত ছিলেন। ভোরের দিকে স্টাফ রুমে যাওয়ার সুযোগে ববিতা আত্মহত্যা করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, সকালে বিষয়টি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে অবহিত করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
১ দিন আগে
কুমিল্লায় বাস ধর্মঘট, যাত্রীদের ভোগান্তি
দাবি আদায়ে নগরীর তিনটি বাস টার্মিনাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করছে কুমিল্লা বাস মালিক সমিতি। এতে কুমিল্লা নগরীসহ জেলার প্রায় ৪০টি সড়কে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল থেকে নগরীর জাঙ্গালিয়া, শাসনগাছা ও চকবাজার বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। ফলে কুমিল্লা-ঢাকা, কুমিল্লা-চট্টগ্রাম, কুমিল্লা-সিলেট, কুমিল্লা-চাঁদপুরসহ অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সড়কগুলোতে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, জাঙ্গালিয়া বাস টার্মিনাল থেকে কুমিল্লা-চাঁদপুর সড়কে আইদি পরিবহন চলাচল বন্ধের দাবিতে এ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। পরিবহন নেতাদের দাবি, কুমিল্লা নগরীর তিনটি বাস টার্মিনাল ব্যবহার করে প্রতিদিন কয়েক হাজার বাস ও মিনিবাস চলাচল করে। তবে যথাযথ রুট পারমিট ছাড়াই টার্মিনাল ব্যবহার করতে চাইছে আইদি পরিবহন।
তবে আইদি পরিবহনের চেয়ারম্যান মীর পারভেজ আলমের অভিযোগ, ২০২৩ সালে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে অনুমতি নিয়েই কুমিল্লা-চাঁদপুর রুটে তাদের বাস চলাচল শুরু হয়। কিন্তু শুরু থেকেই কুমিল্লা বাস মালিক গ্রুপের একটি সিন্ডিকেট তাদের চলাচলে বাধা দিয়ে আসছে। এ কারণে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন বাসটিকে রুট পারমিট দেয়নি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে বাধ্য হয়ে জাঙ্গালিয়া বাস টার্মিনাল বাদ দিয়ে দুই কিলোমিটার দূরের পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড থেকে বাস সার্ভিস চালু করা হয়। আইনি কোনো বাধা না থাকলেও এখনো কুমিল্লা জেলা প্রশাসন থেকে অনাপত্তিপত্র দেওয়া হয়নি বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
অন্যদিকে, কুমিল্লা বাস মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম বলেন, আইদি পরিবহন চাঁদপুর জেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি পেলেও কুমিল্লা থেকে রুট পারমিট নেয়নি। এরপরও তারা কুমিল্লার বাস টার্মিনাল ব্যবহার করতে চাচ্ছে। এর আগে একাধিকবার তাদের বাধা দেওয়া হলেও বিজয় দিবসের দিন হঠাৎ করে কিছু বাস টার্মিনালে আনা হয়। বুধবারও সেখান থেকে বাস চলাচল করেছে। বৃহস্পতিবার আবার বাস আনার চেষ্টা করলে সকাল থেকে নগরীর তিনটি টার্মিনাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
এদিকে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় কর্মস্থলগামী মানুষ, শিক্ষার্থী ও দূরপাল্লার যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেককে বিকল্প যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
১ দিন আগে
হাদিকে গুলির পর কুমিল্লা সীমান্তে বিজিবির নজরদারি বৃদ্ধি
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের পর থেকে কুমিল্লা সীমান্তজুড়ে টহল জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সীমান্তের যেসব এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই, সেখানে অতিরিক্ত নজরদারির পাশাপাশি ফোর্স বাড়ানো হয়েছে। গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) থেকে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে জেলার চৌদ্দগ্রাম, সদর দক্ষিণ ও সদর উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা ঘুরে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গোলাবাড়ি, বিবিরবাজার, বৌয়ারা বাজার ও চৌদ্দগ্রামের আমানগড় এলাকায় বিজিবি সদস্যদের তৎপরতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
বিবিরবাজার এলাকার বাসিন্দা আবু হাশেম বলেন, ঢাকায় গুলির ঘটনার পর শুক্রবার ও শনিবার সীমান্ত অনেকটা গরম। বিজিবি চেকপোস্ট বাড়িয়েছে, যাকে পাচ্ছে তাকেই তল্লাশি করছে।
৫ দিন আগে
দুই জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
দেশের দুই জেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় অন্তত ১ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে কুমিল্লা ও ঝিনাইদহ জেলায় এই দুর্ঘটনাগুলো ঘটে।
গতকাল (মঙ্গলবার) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঝিনাইদহে দুইটি ট্রাকের সংঘর্ষে রবিউল ইসলাম (৬০) নামে এক চালক নিহত হয়েছেন। ঢাকা-ঝিনাইদহ সড়কের মারকাজ মসজিদ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত রবিউল ইসলামের বাড়ি মাগুরার শালিখা উপজেলার শাপাহাটি গ্রামে।
পুলিশ জানায়, যশোরগামী একটি বালিবাহী ট্রাক ঝিনাইদহ শহরের মারকাজ মসজিদের সামনে পৌঁছালে মাগুরা থেকে আগত বিচালি বোঝাই অপর একটি ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে বিচালি বোঝাই ট্রাকের চালক রবিউল ইসলাম গুরুতর আহত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক হামিদুর রহমান বেলাল বলেন, ট্রাক চালক রবিউল ইসলামকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তিনি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান।
আরাপপুর হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, মরদেহ ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আর ট্রাক দুইটিকে জব্দ করা হয়েছে।
এর আগে, রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুমিল্লার হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ওয়াইব্রিজের গোড়ায় মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার সংঘর্ষে সৌদি আরব প্রবাসী একজন নিহত ও একজন আহত হন।
নিহত নিশাদ (২৬) উপজেলার রামকৃষ্ণপুর বাঁশগাড়ি গ্রামের মমিন মেম্বারের ছেলে। আহত ইফাত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ঝুনারচর গ্রামের মো. জিলানীর ছেলে। ইফাতকে স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় ও পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিশাদ রাতে বন্ধুর সঙ্গে মোটরসাইকেলে ওয়াইব্রিজে ঘুরতে যান। ব্রিজের ওপর উঠতে গিয়ে একটি অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে নিশাদের মাথা ফেটে দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। স্বজনরা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাইফুল ইসলাম তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. শহীদুল্লাহ বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
৯ দিন আগে
গোমতীর দুই পাড়ে মাটি লুটের মহোৎসব, মাটিখেকোদের ‘ম্যানেজে’ নির্বিকার প্রশাসন
কুমিল্লায় গোমতী নদীর দুই পাড়ে অবৈধভাবে মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। শীতের শুরুতেই আদর্শ সদর উপজেলার পালপাড়া থেকে গোলাবাড়ি পর্যন্ত সারিবদ্ধভাবে ট্রাক্টর নিয়ে রাতদিন মাটি তোলা হচ্ছে। নদীর পাড় থেকে মাটি কাটার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে নদীর বাঁধ, সংরক্ষিত সড়ক ও সেতু। বিষয়টি স্থানীয়দের উদ্বেগের কারণ হলেও জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড এখনো তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ তাদের।
স্থানীয়রা জানান, নদীর উত্তর তীরে ৫ কিলোমিটার এবং দক্ষিণ তীরে মোটামুটি ২৫ কিলোমিটার এলাকায় ট্রাক্টর ওঠানামা করছে। এসব ট্রাক্টরে নদীর মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটা ও বসতবাড়িতে ব্যবহারের জন্য। নদীর উৎসমুখ কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার কটকবাজার ও গোলাবাড়ি থেকে শুরু করে পালপাড়া পীরবাড়ির সামনে পর্যন্ত উভয় তীরে মাটি কাটার প্রক্রিয়া চলছে প্রকাশ্যে। এতে গোমতীর বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাঁধসংলগ্ন পাকা সড়কের বিভিন্ন স্থান থেকে পিচ উঠে গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীর দক্ষিণ তীরে দুর্গাপুর, ভাটপাড়া, পালপাড়া পীরবাড়ি, কাপ্তানবাজার, চানপুর মাস্টারবাড়ি, শালধর এবং সামারচর এলাকায় অন্তত ২০টি ট্রাক্টর দিয়ে মাটি তোলা হচ্ছে। এসব ট্রাক্টর চলাচলের জন্য সড়কের একটি অংশ কেটে বাঁধের ভেতর দিয়ে চলার পথ তৈরি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, নদীর উত্তর পাড়ে ছত্রখিল এলাকায় অবস্থিত পুলিশ ফাঁড়ির সামনেই চলছে মাটি কাটার কাজ। বৈদ্যুতিক খুঁটির গোড়া ও নদী তীরের গাছের নিচ থেকেও মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। চানপুর বেইলি সেতু এবং কাপ্তান বাজার পশ্চিম অংশেও মাটি কাটতে দেখা গেছে।
নদীর দুই তীরে মোট ৭টি ঘাট থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গোমতীর স্বাভাবিক গতিপথ, নদীর চরসহ তীরবর্তী পরিবেশ।
১১ দিন আগে
কুমিল্লায় ট্রাক উল্টে নদীতে, গোসলরত ৩ নারী নিহত
কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় মালবাহী ট্রাক (ট্রলি) উল্টে নদীতে পড়ে তিন নারী নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার কড়িকান্দি-রাজাপুর সড়কের ইমন মিয়ার বাড়ির সামনে তিতাস নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— শুক্কুর আলীর স্ত্রী রিনা আক্তার (৩৫), ইমন মিয়ার স্ত্রী রুজিনা আক্তার (৩০) ও ফারুক মিয়ার স্ত্রী সামছুন নাহার (৪০)। তাদের মধ্যে রুজিনা ও সামছুন নাহার আপন জা এবং রিনা আক্তার তাদের ভাগ্নে-বৌ।
নিহতদের পরিবারের সদস্যরা জানান, তিতাস নদীতে গোসল করতে নেমেছিলেন ওই তিন নারী। এমন সময় রাজাপুর থেকে কড়িকান্দি বাজারগামী একটি খালি ট্রলি ইমন মিয়ার বাড়ির সামনে এসে উল্টে নদীতে নারীদের ওপর পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই রিনা ও রুজিনা নিহত হন। স্থানীয়রা সঙ্গে সঙ্গে সামছুন নাহারকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, একই পরিবারের তিন নারীর মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কয়েক গ্রামের শত শত নারী-পুরুষ ছুটে এসে তাদের মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। কান্না এবং স্বজনদের আহাজারিতে সে সময় বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।
ঘটনার খবর পেয়ে তিতাস থানা পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদ সাইফুল্লাহ জানান, মরদেহ পরিবারের নিকট বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
১৫ দিন আগে
দুই দফতরের দ্বন্দ্বে গোমতী সেতু প্রকল্পে অচলাবস্থা, দুর্ভোগে এলাকাবাসী
কুমিল্লার মুরাদনগরে গোমতী নদীর ওপর বহুল প্রতীক্ষিত সেতু নির্মাণ প্রকল্প এখন অনিশ্চয়তার মুখে। সেতুটি কতটা উঁচু হবে, তা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে দুটি সরকারি সংস্থা। যার ফলে মুরাদনগর–দাউদকান্দি সড়কের উন্নয়ন প্রকল্পের তৃতীয় প্যাকেজের কাজ পুরোপুরি থেমে গেছে, দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো এলাকাবাসী।
জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আপত্তির কারণেই স্থগিত হয়ে আছে প্রায় ৮৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার ওই বরাদ্দ। পাউবো দাবি করছে, নতুন সেতুটি বর্তমান বেইলি সেতুর চেয়ে অন্তত ২০ ফুট উঁচুতে নির্মাণ করতে হবে, যাতে নদীর পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত না হয়।
অন্যদিকে, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ বলছে, গোমতীর অন্যান্য স্থানে স্থাপিত সেতুগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে ৩ থেকে ৪ ফুট উঁচু করলেই যথেষ্ট হবে।
এই মতবিরোধের জেরে সেতুর নকশা ও ডিজাইন চূড়ান্ত করা সম্ভব হচ্ছে না, ফলে দরপত্র আহ্বানও বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দুই সংস্থার টানাপোড়েনে গুরুত্বপূর্ণ এই অবকাঠামো প্রকল্পটি ঝুলে আছে।
বর্তমানে গোমতী নদীর ওপর রয়েছে ১৯৮৮ সালে নির্মিত একটি বেইলি সেতু, যা এখন নড়বড়ে ও জীর্ণ অবস্থায়। প্রতিদিন শত শত যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে এই সেতু পার হচ্ছে। ভারী যান উঠলেই সেতু কেঁপে ওঠে, ফলে যে কোনো মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
তাদের অভিযোগ, একদিকে যানজট, অন্যদিকে ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল—এই দুইয়ের ফাঁদে প্রতিদিন ভোগান্তিতে পড়ছেন হাজারো মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় ৪০ বছর ধরে একই বেইলি সেতু দিয়ে চলতে হচ্ছে। সরকার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে, কিন্তু দুই অফিসের ঝগড়ায় কাজ শুরুই হচ্ছে না। আমাদের স্বপ্ন এখন হতাশা।’
২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর ৩৪৮ কোটি ২৬ লাখ টাকার এই প্রকল্পে অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর আওতায় ৩৫ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ ও বাঁক সরলীকরণ, ৮টি পুরনো বেইলি ব্রিজের বদলে ৫টি নতুন আরসিসি গার্ডার সেতু এবং ৩টি আরসিসি কালভার্ট নির্মাণের কথা ছিল।
প্রকল্পটি তিনটি প্যাকেজে ভাগ করা হয়, যার মধ্যে প্রথম দুটি প্যাকেজে কাজ চলমান থাকলেও তৃতীয় প্যাকেজের কাজ পাউবোর অনুমোদন না মেলায় স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে বরাদ্দ অর্থ ফেরত যাওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুর রহমান বলেন, গোমতী নদীর ওপর একটি টেকসই সেতু নির্মাণ সময়ের দাবি। এটি না হলে জনদুর্ভোগ লাঘব হবে না। আমরা দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।
সওজ বিভাগের কুমিল্লা নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, পাউবো যে উচ্চতা নির্ধারণ করেছে, তা বাস্তবসম্মত নয়। সে পরিমাণ উচ্চতায় ডিজাইন করা সম্ভব নয়। ফলে দরপত্র আহ্বান করা যাচ্ছে না। তবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে, পাউবো কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদ শাহরিয়ার জানান, আমি এখানে এক বছর ধরে আছি, বিষয়টি আমার জানা নেই।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকার উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দিলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত দফতরগুলোর গাফিলতি, টালবাহানা ও সমন্বয়ের অভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন আটকে যাচ্ছে। তাদের দাবি, দ্রুত সমস্যার সমাধান করে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু না হলে বরাদ্দ অর্থ ফেরত যাবে, যা মুরাদনগরবাসীর জন্য বড় ক্ষতি হবে।
৫৬ দিন আগে
ভাড়া বাসা থেকে মিলল কুবি শিক্ষার্থী ও তার মায়ের মরদেহ
কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুরি এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক শিক্ষার্থী ও তার মায়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে কালিয়াজুরি খেলার মাঠসংলগ্ন একটি ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন—তাহমিনা বেগম ফাতিমা (৫০) এবং তার মেয়ে সুমাইয়া আফরিন রিন্তি (২৪)। সুমাইয়া আফরিন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
নিহতের ছেলে তাজুল ইসলাম ফয়সল জানান, গতকাল (রবিবার) রাত ১১টার দিকে বাসায় ফিরে আলাদা দুটি কক্ষে মা ও বোনের মরদেহ দেখতে পান। তাদের মুখ ও গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিল।
ফয়সলের ভাষ্যে, পারিবারিক শত্রুতা কিংবা এলাকার কারো সঙ্গে তাদের বিরোধ ছিল না।
বাড়ির মালিক আনিছুল ইসলাম রানা জানান, প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার বছর আগে কুমিল্লা আদালতের কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বাড়িটি ভাড়া নেন। তার মৃত্যুর পর স্ত্রী তাহমিনা বেগম, মেয়ে সুমাইয়া ও আরও দুই ছেলেসহ পরিবারটি ওই বাড়িটিতে ভাড়া থাকতেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ভোলায় ছাত্রলীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম জানান, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। কীভাবে হত্যাটি সংঘটিত হয়েছে তা তদন্তের পর জানা যাবে।
তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
১০২ দিন আগে
কুমিল্লা কারাগারে হত্যা মামলার আসামির কন্যাসন্তান প্রসব
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের হত্যা মামলার এক আসামি সন্তান প্রসব করেছেন। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনি এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। বর্তমানে মা ও নবজাতক সুস্থ আছেন এবং কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কারাবন্দি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার হালিমা খাতুন। তিনি জানান, ওই নারী আসামি কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বাসিন্দা। গত ১১ আগস্ট তাকে হত্যা মামলায় আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়।
জেল সুপার আরও বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে প্রসববেদনা শুরু হলে তাকে দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা তাৎক্ষণিক অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত দেন। তখন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা না গেলেও জরুরি পরিস্থিতিতে জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ অপারেশনের অনুমতি দেয়। বিকালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।
তিনি আরও জানান, মা ও নবজাতকের চিকিৎসাসেবা ও যত্ন নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং কারা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। শিশুর জন্য পোশাক থেকে শুরু করে খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকেও তারা সুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
১১৪ দিন আগে
কুমিল্লায় সড়ক দুর্ঘটনায় এক পরিবারের ৪ জন নিহত
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার পদুয়ার বাজার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় এক পরিবারের ৪ জন নিহত হয়েছেন। সিমেন্ট বোঝাই একটি লরি উল্টে প্রাইভেট কারের ওপর পড়লে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময়ে কভার্ড ভ্যানের চাপায় একটি সিএনজি অটোরিকশার আরও দুই যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের মোহাম্মদ ওমর আলী (৮০), তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৬৫), বড় ছেলে আবুল হাশেম (৫০) এবং ছোট ছেলে আবুল কাশেম (৪৫)। প্রাইভেট কারটি চালাচ্ছিলেন আবুল হাশেম।
ময়নামতি ক্রসিং হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিসুর রহমান ইউএনবিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ফের দুর্ঘটনা, নিহত ৩
উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া পুলিশের কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম বলেন, দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে মহাসড়কের পদুয়ার বাজার ইউটার্নে ঢাকামুখী লেনে একটি যাত্রীবাহী বাস উল্টো পথে এসে রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করছিল। তখন বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টবোঝাই লরিটি বাসটিকে পাশ কাটাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এ সময় বাসের পেছনে থাকা একটি প্রাইভেট কার ও একটি সিএনজি অটোরিকশাকে চাপা দেয় লরিটি।
তিনি আরও জানান, এতে ঘটনাস্থলেই প্রাইভেট কারের চালকসহ চারজন নিহত হন। এ ছাড়া সিএনজিতে থাকা তিন যাত্রী গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ময়নামতি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার মজুমদার জানান, এই দুর্ঘটনায় একই পরিবারের চারজন নিহত হয়েছেন। পুলিশ মরদেহ ও দুর্ঘটনাকবলিত প্রাইভেট কারটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
১১৯ দিন আগে