মাছ
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু ২০ মে থেকে: মন্ত্রণালয়
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিগত বছরের মতো, সরকার মাছের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করতে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ওপর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করতে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেনের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে এই সময়কালে সব ধরনের লোনা পানির মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। সমস্ত বাণিজ্যিক ট্রলারকে নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে মেঘনায় মার্চ-এপ্রিল সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ
আজ থেকে ৬৫ দিন সমুদ্রে মাছ ধরা নিষিদ্ধ
অস্ট্রেলিয়ায় তাপদাহে ভেসে আসছে লাখ লাখ মরা মাছ
দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়ায় কয়েক মিলিয়ন মাছ মৃত অবস্থায় ভেসে উঠেছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ এবং বিজ্ঞানীরা বলছেন যে সাম্প্রতিক বন্যা এবং গরম আবহাওয়ার পরে নদীতে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে এমনটি ঘটেছে।
নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের মেনিন্ডি শহরের আউটব্যাক শহরের বাসিন্দারা মৃত মাছের ভয়ানক গন্ধ পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয় প্রকৃতির ফটোগ্রাফার জিওফ লুনি বলেছেন, ‘গন্ধ ভয়ানক ছিল, আমাকেও প্রায় একটি মুখোশ পরতে হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমি আমার নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। উপরের দিকের সেই পানিশহরের জন্য আমাদের পাম্পিং স্টেশনে নেমে আসে। মেনিন্ডির উত্তরের বাসিন্দারা বলছে যে নদীর সর্বত্র কড এবং পার্চ ভাসছে।
প্রাইমারি ইন্ডাস্ট্রিজ ডিপার্টমেন্ট বলেছে যে, বন্যা কমে যাওয়ার কারণে সম্ভবত অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার ফলে মাছের মৃত্যু হয়েছে। উষ্ণ আবহাওয়ায় মাছের আরও অক্সিজেনের প্রয়োজন হওয়ার কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
পুলিশ এই সপ্তাহে একটি ব্যাপক পরিচ্ছন্নতার সমন্বয় করতে মেনিন্দিতে একটি জরুরি অপারেশন সেন্টার চালু করেছে।
স্টেট ইমার্জেন্সি অপারেশন কন্ট্রোলার পিটার থারটেল বলেছেন, অবিলম্বে বাসিন্দাদের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ওপর গুরুত্ব ছিল।
তিনি বলেন, ‘বাসিন্দাদের উদ্বেগের কোন প্রয়োজন নেই কারণ প্রাথমিক মূল্যায়নে মেনিন্দি টাউনশিপ এবং তার চারপাশের এলাকায় পানি সরবরাহ বজায় রাখতে একাধিক কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সাকার মাছ নিষিদ্ধ করেছে সরকার
রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোও এলাকায় দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ানোর জন্য যেখানে সম্ভব উচ্চ-মানের পানি ছেড়ে দেয়া শুরু করেছে।
মেনিন্ডির বাসিন্দা জ্যান ডেনিং বলেছেন, ‘আমরা সবেমাত্র পরিষ্কারের কাজ শুরু করেছি। তারপরে এটি ঘটেছে। এটি এমন যে আপনি একটি শুকনো জগাখিচুড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং তারপরে আপনি এই গন্ধের গন্ধ পাচ্ছেন। এটি একটি ভয়ানক গন্ধ এবং এই সমস্ত মৃত মাছ দেখতে ভয়ঙ্কর।’
সাম্প্রতিক সপ্তাহে ডার্লিং-বাকা নদীতে ব্যাপক মাছ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে একই স্থানে কয়েক হাজার মাছ পাওয়া গিয়েছিল, যখন দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া এবং ভিক্টোরিয়া রাজ্যের সীমান্তের কাছে পুনকারি এলাকায় মৃত মাছের অনেকগুলো খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে ২০১৮ সালের শেষের দিকে এবং ২০১৯ সালের শুরুর দিকে তীব্র খরা পরিস্থিতির সময় মেনিন্দিতে নদীতে প্রচুর মাছ মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা অনুমান করেছিলেন মিলিয়ন মিলিয়ন মাছের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় দুই ভোল মাছ সাড়ে ১৮ লাখ টাকায় বিক্রি!
কক্সবাজার সৈকতে মাছ কুড়ানোর উৎসব!
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ঢেউয়ের সঙ্গে ভেসে আসছে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ। পর্যটক ও স্থানীয়রা মাছ কুড়ানোর উৎসবে মেতে উঠে।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ৭ টা থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কক্সবাজার সৈকতের শৈবাল পয়েন্ট, লাবণী পয়েন্ট, কবিতা চত্বর পয়েন্টে ভাসতে দেখা যায়।
স্থানীয়দের পাশাপাশি পর্যটকরাও কুড়িয়ে নেয় এসব মাছ।
জেলা প্রশাসনের বীচ কর্মী মো. বেলাল জানান, সকালে হঠাৎ করে সাগর থেকে মাছ ভেসে আসে। প্রায় দেড় কিলোমিটার সৈকত মাছে মাছে ভরে যায়। অনেক মাছ সমুদ্রে ভাসমান রয়েছে। সৈকতে ঘুরতে আসা পর্যটকরা মাছ কুড়িয়ে নেয়। অন্যদিকে খবর পেয়ে স্থানীয়রা বস্তা সহ নানা পাত্র নিয়ে এসে মাছ কুড়িয়ে নেয়। সৈকতে মাছ কুড়ানো উৎসবে পরিণত হয়।
নরসিংদী থেকে আসা পর্যটক ইকবাল হোসেন তার বন্ধু মিরাজ উদ্দিন জানান, সৈকতে হাজার হাজার মাছ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব মাছ কুড়িয়ে নিতে মজা লেগেছে। প্রায় ৩০ কেজির মতো মাছ কুড়িয়েছি। কুড়ানোর পর এসব মাছ স্থানীয়দের দিয়ে দিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: নারী পর্যটকের জন্য কক্সবাজার সৈকতে বিশেষ জোন
কি কারণে এসব মাছ সাগর থেকে ভেসে এসেছে তা জানিয়ে মাছের ট্রলারে থাকা রহিম মিয়া নামের এক জেলে জানান, সমুদ্রে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত মাছ জেলেদের টানা জালে আটকা পড়ে। পরে এসব মাছ ট্রলারে টেনে তোলার চেষ্টা করলে তা ট্রলারে তোলা সম্ভব হয়নি। এক সময় মাছসহ জাল ট্রলার থেকে ছিটকে যায়। তখন এসব মাছ ছড়িয়ে ছিটিয়ে সৈকতে ভেসে আসে।
তিনি আরও জানান, জালে প্রায় ছয়টি ট্রলারের সমান মাছ ধরা পড়ে। প্রায় তিন শ’ টনের মতো মাছ হবে।
মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে আনসার সদস্যের মৃত্যু
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় মাছ ধরতে গিয়ে বড়াল নদে পড়ে এক আনসার সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার ইউএনও পার্ক এলাকায় বড়াল নদ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত সাদেকুল ইসলামের বাড়ি পৌর এলাকার দক্ষিণ মুরাদপুরে।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে পানিতে পড়ে শিশুর মৃত্যু
বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, শুক্রবার দুপুরে সাদেকুল জাল নিয়ে বাগাতিপাড়া ইউএনও পার্ক সংলগ্ন বড়াল নদের মাছ ধরার জন্য জাল ফেললে পা ফসকে পানিতে পড়ে যায়। তার সঙ্গে থাকা অন্যরা তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে ব্যার্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়।
পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা পানিতে তল্লাশি চালিয়ে সাদেকুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: মতলব দক্ষিণে খেলতে খেলতে খাদের পানিতে পড়ে ২ শিশুর মৃত্যু
বাগেরহাটে জোয়ারের পানিতে পড়ে ৪ বছরের শিশুর মৃত্যু
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার মাছ ধরার ছবি নেটিজেনদের মন ছুঁয়েছে
ছোট বোন শেখ রেহানার সঙ্গে কাটানো মুহূর্ত নেটিজেনদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদের এই মাছ ধরার ছবি নেটিজেনদের মন জয় করছে।
শুক্রবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের মাধ্যমে শেয়ার করা প্রধানমন্ত্রী ও তার বোনের কয়েকটি ছবি প্রকাশ করা হয়।
দৌলতদিয়ায় জেলের জালে ৩৮ কেজির বাগাড় মাছ!
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া এলাকায় পদ্মা নদীতে ৩৮ কেজি ওজনের একটি বিপন্ন প্রজাতির বাগাড় মাছ ধরা পড়েছে। শনিবার সকাল ৯টার দিকে আক্কাছ শেখ নামের এক জেলের জালে মাছটি ধরা পড়ে।
আক্কাছ শেখের বাড়ি পাবনার ঢালারচর এলাকায়। স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ প্রতিকেজি এক হাজার ৩০০ টাকা দরে মোট ৪৯ হাজার ৪০০ টাকায় মাছটি কেনেন। এবং তিনি আবার প্রতিকেজি ৩৫০ টাকা দরে মোট ৫১ হাজার ৩০০ টাকা বিক্রি করেন।
স্থানীয় মৎস্যজীবীরা জানান, শনিবার সকালে জেলে আক্কাছ শেখের জালে বাগাড় মাছটি ধরা পড়ে। দৌলতদিয়া ছয় নম্বর ফেরি ঘাটে আনলে আড়তদার বাবু সরদার ওজন দিয়ে দেখেন ৩৮ কেজি হয়েছে। বিশাল বাগাড়টি তিনি নিলামে তুললে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ফেরিঘাট এলাকার মাছ ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ এক হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে কেনেন।
মাছটির ক্রেতা শাহজাহান শেখ বলেন,সকাল ১০টার দিকে নদীতে বড় বাগাড় মাছ ধরা পড়ার খবর পাই। ছয় নম্বর ফেরি ঘাটে বাগাড়টি নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে এক হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে ৪৯ হাজার ৪০০ টাকায় কিনে নেই। পরে ঢাকার গুলশান এলাকার মনির খান নামের ঠিকাদারের কাছে কেজি প্রতি ৫০ টাকায় লাভে ৫১ হাজার ৩০০ টাকায় মুঠোফোনে বিক্রি করি। দুপুর ১২টার দিকে মাছটি ঢাকার এক পরিবহনে তুলে দিয়েছি।
আরও পড়ুন: পদ্মায় ২৪ কেজির বিপন্ন প্রজাতির বাগাড় ২৭ হাজারে বিক্রি
‘একযুগে দেশীয় মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৪ গুণ’
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, গত একযুগে চাষের মাধ্যমে দেশীয় মাছের উৎপাদন চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ন: নিরাপদ ও টেকসই পোল্ট্রি উৎপাদনে সবধরনের সহায়তা দেবে সরকার -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
তিনি বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট গবেষণার মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৩৭ প্রজাতির বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় মাছের প্রজনন কৌশল ও চাষাবাদ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। যার মধ্যে গত এক বছরে ১১ প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় মাছ ফিরিয়ে আনা হয়েছে। দেশীয় মাছ সংরক্ষণে লাইভ জিন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মাছ উৎপাদন গবেষণা কার্যক্রম অতীতের তুলনায় জোরদার করা হয়েছে। গত ১২ বছরে চাষের মাধ্যমে দেশীয় মাছের উৎপাদন চার গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৬৭ হাজার মেট্রিক টন থেকে দুই দশমিক ছয় লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে।
বুধবার সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বোর্ড অব গভর্নরসের ৪১তম সভায় মন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণালব্ধ ফলাফলের ভিত্তিতে মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও সরকারের বাস্তবমুখী কার্যক্রম গ্রহণে কারণে দেশে ইলিশের বিস্তৃতি ও উৎপাদন বেড়েছে। গত ১২ বছরে ৮৫ শতাংশ ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। পাশাপাশি বড় আকারের ইলিশের প্রাপ্যতা আগের তুলনায় ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইলিশ সংরক্ষণ ও সহনশীল আহরণ নিয়েও গবেষণা চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন: চিংড়ি উৎপাদন ও রপ্তানি সমস্যা সমাধানে সরকার বদ্ধপরিকর: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
তিনি বলেন, দেশ অনেক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ খাত হচ্ছে মৎস্য খাত। এ খাতে সরকারের বিভিন্ন রকম অনুদান ও বরাদ্দ রয়েছে।
৭ অক্টোবর থেকে ২২ দিন ইলিশ আহরণ বন্ধ
প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় আগামী ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকবে। এ সময় ইলিশ আহরণ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ বন্ধের সময় নির্ধারণ এবং মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২২ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এ সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, নিষিদ্ধ সময়ে যারা মাছ ধরতে নামে তারা সবাই মৎস্যজীবী নয়। তাদের নেপথ্যে অনেক ধনী ব্যক্তি থাকে, ক্ষমতাবান ব্যক্তি থাকে। ইলিশ সম্পদ রক্ষায় অতীতের মত এবারও এসব অসাধু ব্যক্তিদের ছাড় দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, ইলিশ সম্পদ ধ্বংসকারী দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। দিনে অভিযানের পাশাপাশি এবার রাতেও অভিযান জোরদার করা হবে। সংশ্লিষ্ট জেলা-উপজেলায় বরফ কল বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। গত বছরের ন্যায় এবারও অবৈধ জাল উৎপাদনস্থলে অভিযান পরিচালনা করা হবে। অবৈধ পথে ইলিশ পাচার রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইলিশ সম্পৃক্ত জেলা উপজেলায় নদীতে ড্রেজিং বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। ইলিশের নিরাপদ প্রজননের মাধ্যমে ইলিশ সম্পদ উন্নয়নে যা যা করা দরকার তা করতে হবে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, মাছ ধরা বন্ধকালে যাচাই-বাছাই করে নিবন্ধিত জেলেদের নানাভাবে সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়। তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়। জেলদের জন্য নানাভাবে রাষ্ট্র সহায়তা করছে।
অতীতে এত ইলিশ উৎপাদন হয়নি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সরকারের নানাবিধ উদ্যোগে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে গ্রাম-গঞ্জে এখন ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। দেশের মানুষ ইলিশ খেতে পারছে। ইলিশ রপ্তানিও করা যাচ্ছে।
রেজাউল করিম বলেন, প্রজননস্থলে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের করা হলে ইলিশের প্রজনন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যে ধরণের পরিবেশ ইলিশ ডিম দেয়ার জন্য উপযুক্ত অনেক সময় ভারী যানবাহন চলাচল, যানবাহনের পোড়া মবিল নির্গত হওয়া, ময়লা-আবর্জনা নির্গত হওয়ায় কারনে ইলিশের প্রজনন পরিবেশ নষ্ট হয়। ফলে ইলিশ ওই অঞ্চলে থাকে না। অন্যত্র চলে যায়।
আরও পড়ুন: ভরা মৌসুমেও খুলনায় ইলিশের দাম চড়া
প্রথম চালানে ভারতে গেল ৮ মেট্রিক টন ইলিশ
বাগেরহাটে ধরা পড়ছে না ইলিশ, হতাশ জেলেরা
মাছ ধরা শুরু, ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পেয়ে খুশি বরগুনার জেলেরা
কাঙ্খিত মাছ পেয়ে খুশি সুন্দরবনের জেলে ও ব্যবসায়ীরা
নিষেধাজ্ঞা শেষে নৌকা-জাল নিয়ে ফের নদীতে মাছ শিকারে নেমেছে সুন্দরবনের জেলেরা।
দীর্ঘ দিনের নিরবতা কাটিয়ে এবং চরম অর্থ কষ্টে দিনাতিপাত করে পর্যাপ্ত জ্বালানি আর খাবার নিয়ে নৌকায় সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে মাছ ধরে গিয়ে কাঙ্খিত মাছ পাওয়ায় খুশি জেলে, ট্রলার মালিক ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: মাছ ধরা শুরু, ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পেয়ে খুশি বরগুনার জেলেরা
বর্তমানে খুলনার বাজারগুলোতে মাছ সরবরাহ বেড়েছে। দামও কিছুটা কমেছে, এতে ক্রেতারাও বেশ খুশি।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন এবং টেকসই মৎস্য আহরণের লক্ষ্যে ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা বেধে দেয় সরকার। নিষেধাজ্ঞা শেষে ১ সেপ্টেম্বর থেকে জেলেদের সুন্দরবনের অভ্যন্তরের বিভিন্ন খাল ও নদীতে পুনরায় মাছ শিকারের অনুমতি দেয় কৃর্তপক্ষ।
তবে এই মাছ ধরা নিয়ে অভিযোগ করেছে জেলেরা।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ২ মাসের নিষেধাজ্ঞার পর মাছ ধরা শুরু
তাদের অভিযোগ, একজনের নামের বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট (বিএলসি) মহাজনরা অন্য জনের নামে পাশ কেটে ভাড়া দিচ্ছেন। ফলে অনেক প্রকৃত জেলে সুন্দরবনে মাছ ধরতে যেতে পারছেন না।
এদিকে, মাছ ধরে অনেক জেলে উপকূলে ফিরে এসেছেন। তারা জানান, গহীন বনে একেকটা জালে কয়েক মণ চিংড়ি পেয়েছেন।
কয়রার মহারাজপুর এলাকার জেলে জামাল উদ্দিন বলেন, আশা করেছিলাম বেশি মাছ পাব, আশা পূরণও হয়েছে। সুন্দরবন খুলে দেয়ার প্রথম দিনেই প্রচুর মাছ পেয়েছি। পরের কয়েক দিনও ভালো মাছ পেয়েছি।
মহারাজপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য মো. আবু সাঈদ বলেন, পাশ নিয়ে বেশ জটিলতার সৃষ্টি হলেও অধিকাংশই সমাধান হয়েছে। তবে এর জন্য ফরেস্ট অফিস দায়ী নয়, স্থানীয় অসাধু মহাজনদের কারণে জটিলতার সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: তিন মাস বন্ধের পর কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা শুরু
তবে স্থানীয় জেলেদের অভিমত, মহাজনেরা এক সঙ্গে অনেকের বিএলসি নিয়ে ফরেস্ট অফিস থেকে অন্যের নামে পাশ করায় কীভাবে? যার বিএলসি তাকেই পাশ দেয়ার নিয়ম।
কয়রার দেওলিয়া মৎস্য আড়তের মেসার্স হোগলা ফিসের স্বত্বাধিকারী মো. ইনসান আলী বলেন, মাছের সাইজ প্রকার অনুযায়ী বিভিন্ন দামে আমরা কিনছি। ছোট-বড় সব সাইজের মাছ পাচ্ছি। তবে মাঝারি সাইজের বেশি। চিংড়ি ৩৩০ থেকে ৩৮০ টাকার সাইজ বেশি পাচ্ছি। দাঁতনি মাছ ১৮০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের চেয়ে দাম একটু কমেছে।
কয়রা কাসিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, তার আওতায় ৭০০ বিএলসির পাশ দেয়া হয়েছে। সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞার কারণে সুন্দরবনে মাছের ঘনত্ব বেড়েছে।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, চরপাটা জাল ও ভেপদি জাল দিয়ে সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে নৌকা ও ট্রলারে মাছ ধরছেন জেলেরা। সুন্দরবনে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৫০টি নদী-খাল রয়েছে। অভয়ারণ্য ঘোষিত ৩০টি খাল এবং ২৫ ফুটের কম প্রশস্ত খালে সারাবছরই মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। আর বাকি অংশের নদী-খাল ও জলাভূমিতে পারমিটধারী জেলেরা মৎস্য আহরণ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে। মৎস্য আহরণের উপর সুন্দরবন উপকূলের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক জেলে পরিবারের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে।
কুড়িগ্রামে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে জেলের মৃত্যু
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বিলে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে জিয়াউর রহমান (৩৬) নামের এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার কচাকাটা থানার বালাবাড়ি বিলে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জিয়াউর কেদার ইউনিয়নের বালাবাড়ি গ্রামের মৃত নাদু শেখের ছেলে। তিনি দুই সন্তানের জনক।
স্থানীয়রা জানান, বিকালের দিকে জিয়াউর রহমান কেদার ইউনিয়নের বালাবাড়ি এলাকার সংকোষ নদীর শাখা নদীতে মাছ ধরতে যান। এসময় মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। হঠাৎ বজ্রপাতে তিনি গুরুতর আহত হন।
পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে নাগেশ্বরী উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মর্তুজা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করছেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বজ্রপাতে নারীর মৃত্যু
নাটোরে বজ্রপাতে নানা-নাতির মৃত্যু
নাটোরে পৃথক বজ্রপাতে নিহত ২, আহত ৭