অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা
উপকূল, চর ও দুর্গম এলাকার উন্নয়নে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার
দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে নদীর তীর, উপকূল, চর ও পার্বত্য এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে উন্নয়ন কার্যক্রমে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার।
সংসদে উত্থাপিত একটি সরকারি নথিতে বলা হয়েছে, ‘সরকার এই অঞ্চলের জনগণকে অন্যান্য অঞ্চলের মতো একই মানের পরিষেবা দেওয়ার জন্য কাজ করছে।’
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) মাধ্যমে এসব প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য স্বল্প খরচে জ্বালানি প্রাপ্যতা বাড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য পারমাণবিক ও পুনর্নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহারের দিকে মনোনিবেশ করছে সরকার।
আরও পড়ুন: কম রাজস্ব আদায় ঋণ ব্যবস্থাপনাকে বাধাগ্রস্ত করে: অর্থ মন্ত্রণালয়
নথিতে আরও বলা হয়েছে, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাকালে উপকূলীয়, হাওর ও চরাঞ্চলের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে বরিশাল, চট্টগ্রাম (পার্বত্য এলাকা ব্যতীত) ও সিলেট বিভাগে আঞ্চলিক একাডেমি স্থাপনের মাধ্যমে কার্যক্রম সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেবে বার্ড।
পাশাপাশি পল্লী উন্নয়নের বিভিন্ন মডেল এবং দারিদ্র্য বিমোচনে উদ্ভাবনী প্রযুক্তির প্রসারের মাধ্যমে টেকসই পল্লী উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জামালপুর ও রংপুরে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
এছাড়াও উপকূল, হাওর ও চরাঞ্চলে লবণাক্ততা, ঘূর্ণিঝড়, আকস্মিক বন্যা এবং বন্যার মতো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য দুর্যোগ প্রভাব মূল্যায়ন (ডিআইএ) পদ্ধতি প্রণয়নের কাজ হাতে নিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।
দুর্যোগ সম্পর্কিত ঝুঁকি সম্পর্কে জ্ঞান ও তথ্য একীভূত করে সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে পরিকল্পনা করার আগে স্টেকহোল্ডারদের জানানোর জন্য এই নথি প্রণয়ন করা হয়েছে।
প্রত্যন্ত এলাকাগুলোর উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিকল্পনা কমিশন ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় গৃহীত বিদ্যমান উদ্যোগের সঙ্গে সমন্বয় করে একটি ডিজিটাল রিস্ক ইনফরমেশন প্ল্যাটফর্ম (ডিআরআইপি) প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়নে দুর্যোগের বিষয়টি যুক্ত করা হবে।
আরও পড়ুন: আগামী ২ অর্থবছরে সহনীয় সীমার মধ্যে থাকবে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ
এছাড়াও এই প্ল্যাটফর্মের ফলে মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা সম্ভব হবে বলে নথিতে বলা হয়েছে।
প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে যেখানে স্যাটেলাইট পরিষেবা অসম্ভব, সেখানে অপটিক্যাল ফাইবার / মাইক্রোওয়েভভিত্তিক ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক বাস্তবায়নের ব্যাপারে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
পাশাপাশি, বন্যাপ্রবণ প্রান্তিক জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত দ্বীপগুলো যেখানে মৌলিক পরিষেবার অভাব রয়েছে, সেসব জায়গায় পরিষ্কার পানি, স্যানিটেশন ও পরিচ্ছন্নতাবিষয়ক অবকাঠামো ‘ওয়াশ’ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।
সীমিত সম্পদ সত্ত্বেও পরিষেবার মান বাড়াতে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, ভূগর্ভস্থ উৎস থেকে আর্সেনিক/লোহা অপসারণ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে উন্নত প্রযুক্তি স্থাপনের মাধ্যমে পানির ঘাটতি মোকাবিলা করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও প্রধান প্রধান নদীপথগুলোর স্মার্ট ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বাঁধ পুনর্নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও নাব্য বৃদ্ধির গুরুত্ব অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় তুলে ধরা হয়েছে।
এছাড়া এসব অঞ্চলে চরম দারিদ্র্য মোকাবিলা করতে চর উন্নয়ন বোর্ড গঠন ও সুনির্দিষ্ট জীবিকা কর্মসূচির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মার্কিন ডলারের বিনিময় মূল্য বাড়ায় ক্ষতির মুখে বিপিডিবি
১৯৯৭ সাল থেকে ৮ লাখ ৪১ হাজারের বেশি পরিবার আবাসন ও ভূমি সহায়তা পেয়েছে, যার ফলে ৪২ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি ব্যক্তি উপকৃত হয়েছে।
নথিতে বলা হয়েছে, 'দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান' প্রকল্পসহ বেশ কয়েকটি সমাজকল্যাণমূলক কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে, যা বিশেষত দরিদ্র অঞ্চলে বার্ষিক ৮ লাখ ব্যক্তিকে ৮০ দিনের কর্মসংস্থান দিয়েছে।
এছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকার কাঠামো শক্তিশালী ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদ আইনকে আরও আধুনিক ও সেবাবান্ধব করার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) আইন, ২০২৩ এর কাজ চলছে।
জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে দায়িত্ব সুর্নিদিষ্টভাবে ভাগ করে দেওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেন্দ্রীয় সরকারের যেসব কাজ দেওয়া যেতে পারে সেগুলো হস্তান্তরের উদ্যোগ চালিয়ে যেতে কাজ করছে সরকার।
আরও পড়ুন: রিজার্ভের পরিসংখ্যানের ভিন্নতা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি স্থানীয় বাজারকে অস্থিতিশীল করছে
৫ মাস আগে
বাংলাদেশ রেলওয়ে: ঢেলে সাজানোর বিস্তর পরিকল্পনা সরকারের
যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের জন্য রেলওয়ে খাতটিকে সবচেয়ে নিরাপদ, আরামদায়ক, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয় বলে সরকার দেশের রেলওয়ে নেটওয়ার্ককে উন্নত করার জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছে।
একটি সরকারি নথি অনুসারে, রেলওয়ে খাতের গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার একটি সমন্বিত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায়।
এ সমস্ত কার্যক্রম অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার (২০২১-২০২৫) অধীনে করা হবে, যা পরবর্তী পাঁচ বছরে গড়ে আট দশমিক ৫১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। পরিকল্পনাটি সময়সীমার শেষে দারিদ্র্যের হার ১৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অধীনে ৭৯৮ দশমিক ০৯ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ, বিদ্যমান রেললাইনের বিপরীতে ৮৯৭ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ/ডাবল রেললাইন এবং ৮৪৬ দশমিক ৫১ কিলোমিটার রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সংস্কারের জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এর মধ্যে ৯টি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে সেতু নির্মাণ এবং লেভেল ক্রসিং গেট, দেশীয় কনটেইনার ডিপো নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ আউটলেটগুলোর নির্মাণ ও আধুনিকীকরণসহ অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন: বুধবার থেকে সব আসনে যাত্রী নিয়ে চলবে ট্রেন: বাংলাদেশ রেলওয়ে
নথিতে বলা হয়েছে যে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অধীনে ১৬০টি লোকোমোটিভ, এক হাজার ৭০৪টি যাত্রীবাহী কোচ, আধুনিক রক্ষণাবেক্ষণ সরঞ্জাম, ২২২টি স্টেশনে সিগনাল সিস্টেমের উন্নতি এবং রেলওয়ে ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করা হবে।
এদিকে, সরকার বাংলাদেশ রেলওয়ের ৩০ বছর মেয়াদী সংশোধিত মহাপরিকল্পনা (২০১৬-২০৪৫) বাস্তবায়ন করছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় ঢাকাকে কক্সবাজার, মোংলা সমুদ্রবন্দর, টুঙ্গিপাড়া, বরিশাল, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত উদ্যোগগুলো হল- ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে ও আঞ্চলিক রেলওয়ে নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা এবং আধুনিক কমিউটার ট্রেন পরিষেবা চালু করে নিকটবর্তী শহরতলির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোকে সংযুক্ত করা।
১৯৬০ এর দশকে শুরু হওয়া ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্ক আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এক লাখ ১৪ হাজার কিলোমিটার রেলপথ নিয়ে গঠিত। এটির লক্ষ্য হচ্ছে ইএসসিএপি (ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন ফর এশিয়া অ্যাড দ্য প্যাসিফিক) অঞ্চল এবং এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে পণ্য ও যাত্রীদের জন্য কার্যকর রেল পরিবহন পরিষেবা প্রদান করা।
এই মহাপরিকল্পনার আওতায় ছয়টি ধাপে ২৩০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। যাতে খরচ হবে পাঁচ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা।
নথিতে বলা হয়েছে, পদ্মা বহুমুখী রেল সংযোগ প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৫৮ শতাংশ এবং যমুনা নদীর ওপর ডাবল ট্র্যাক ডুয়েল গেজ রেল সেতু নির্মাণ কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৪০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে রেলওয়ের ৪ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য বরখাস্ত
এতে আরও বলা হয়, দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত এবং রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী গুনদুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাকের ৭১ শতাংশ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
এ ছাড়া খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
এতে উল্লেখ আছে, রূপসা রেলসেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ।
সরকার ফরিদপুরের ভাঙা থেকে পায়রা বন্দর হয়ে বরিশাল ও পটুয়াখালী হয়ে পায়রা বন্দরকে পদ্মা রেলপথের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য রেললাইন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।
নথি অনুসারে, ৪৭ হাজার ৭০৩ টি পদের সংশোধিত জনবল কাঠামোর অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, যা রেলওয়ের পরিষেবার মান বাড়াবে।
আরও পড়ুন: রেলের অব্যবস্থাপনার বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে ৭ দিন সময় পেল রেলওয়ে
২ বছর আগে
জীবন যখন ভালো চলে তখন খারাপ কিছু ঘটে, সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী
মানুষ যখন একটি ভালো জীবনযাপন করে এবং দেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যায় তখনই খারাপ কিছু ঘটে বলে সতর্ক করে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের সতর্ক করতে চাই, একটি জিনিস আপনারা লক্ষ্য করবেন যে যখন বাংলাদেশের মানুষের জন্য ভালো সময় আসে, মানুষ যখন একটি সুন্দর জীবন কাটানোর স্বপ্ন দেখতে শুরু করে এবং যখন জীবনযাত্রার মান সামান্য উন্নত হয় তখনই হামলার সম্ভাবনা উদ্ভূত হয়েছে, এ জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
৩ বছর আগে
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা: আর্থিক প্রণোদনা পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউকে সামনে রেখে বুধবার আর্থিক প্রণোদনার একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৩ বছর আগে