কানাডা
মরক্কো ছেড়ে কানাডায় যাওয়া রাষ্ট্রদূত হারুনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার
মরক্কোতে দায়িত্ব পালন শেষে দেশে না ফিরে কানাডায় গিয়ে সেখান থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা ও বিগত সরকারের সাফাই গাওয়ার মতো কর্মকাণ্ডের জেরে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হারুন আল রশিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১১ ডিসেম্বর মরক্কোয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হারুন আল রশিদকে দেশে প্রত্যাবর্তন ও অনতিবিলম্বে মন্ত্রণালয়ে যোগদানের জন্য আদেশ দেওয়া হয়। এ সত্ত্বেও তিনি স্বপদে বহাল থেকে এ বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব ত্যাগ করেন।
মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশে ফিরে আসার পরিবর্তে তিনি বিভিন্ন অজুহাতে যাত্রা বিলম্বিত করেন। মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমোদন ছাড়াই তিনি মরক্কোর রাবাত থেকে কানাডার অটোয়ায় চলে গেছেন বলে জানা গেছে। এরপর গত ৬ মার্চ তার অটোয়া থেকে ঢাকায় ফিরে আসার কথা থাকলেও তিনি আসেননি।
মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, আজ হারুন ফেসবুকে ‘A Plea for Bangladesh-and for Myself Subject: Bangladesh’s Descent into Anarchy under Yunus-The World’s Silence is painful’ শীর্ষক একটি লেখা পোস্ট করেন। যেখানে তিনি পূর্ববর্তী ‘নিপীড়ক ফ্যাসিবাদী সরকারের’ গুণকীর্তনের পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে গত ৫ আগস্ট-পরবর্তী বাংলাদেশে পরিস্থিতি ক্রমশ নৈরাজ্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে চিত্রিত করার অপচেষ্টা করেছেন। তার পোস্টে হারুন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্রচেষ্টাসহ বাংলাদেশের সামগ্রিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, “প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বর্তমান বাংলাদেশে বিরাজমান পরিস্থিতি এবং বাস্তবতাকে সম্পূর্ণরূপে বিকৃত উপস্থাপন করে ফেসবুকে এ ধরনের লেখা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য এবং এর বিষয়বস্তু গভীরভাবে উদ্বেগজনক। এরূপ রচনা লেখকের গোপন উদ্দেশ্য বা অসৎ অভিসন্ধির ইঙ্গিত দেয়।”
“বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন ও মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পরিবর্তে তিনি কানাডায় চলে যান এবং সেখান থেকে ফেসবুকে লেখালেখি শুরু করেন। তিনি তার ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে নিজেকে ‘নির্যাতিত কূটনীতিক’, ‘নির্বাসিত ঔপন্যাসিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যা মূলত বিদেশে সহানুভূতি অর্জনের অভিপ্রায়ে করা হয়েছে।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে তার এবং তার পরিবারের (সদস্যদের) পাসপোর্ট বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয় মোহাম্মদ হারুন আল রশিদের এহেন কর্মকাণ্ডের জন্য প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারীর এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে কোনোভাবে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না জানিয়ে ভবিষ্যতেও যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড করবে, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
১১ ঘণ্টা আগে
ট্রাম্পের মোকাবিলায় কানাডা কাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিচ্ছে?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধ মোকাবিলায় কানাডায় নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান মার্ক কার্নিকে বেছে নেওয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সময় রবিবার ( ৯ মার্চ) ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির নেতৃত্ব বাছাইয়ের ভোটে জয়ী হয়ে কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৫৯ বছর বয়সী সাবেক এই ব্যাংকারের।
এর আগে চলতি বছরের গত ৬ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে দলীয়প্রধানের পদ ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন জাস্টিন ট্রুডো। দীর্ঘ ৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পর তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দল নতুন নেতা নির্বাচন করার পর দলীয়প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: কানাডা-মেক্সিকোর পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর, ঘোষণা ট্রাম্পের
কানাডায় খাদ্য ও বাসস্থানের মূল্যবৃদ্ধি, অভিবাসন বেড়ে যাওয়ায় ট্রুডোর ওপর পদত্যাগের চাপ দিতে থাকে বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির নেতারা। নিজ দলের মধ্যেও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। নানামুখী চাপের কারণে আগামী অক্টোবরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও জানুয়ারিতেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন ট্রুডো।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য করার কথা জানান ট্রাম্প। এ ছাড়াও কানাডার পণ্যে ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন তিনি, যা গত সপ্তাহে কার্যকর হয়েছে।
কানাডার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ট্রাম্প মারাত্বক আঘাত হেনেছে বলে মনে করেন কানাডীয়রা। এতে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছেন উত্তর আমেরিকার দেশটির নাগরিকরা। তারা আমেরিকাতে ভ্রমন, এমনকি প্রতিবেশী দেশটির পণ্য কেনাও বন্ধ করে দিয়েছেন।এমন পরিস্থিতিতে বহুদিন ধরে চলা কানাডা-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। কানাডাবাসী বর্তমানে এমন কাউকে ক্ষমতায় দেখতে চান, যিনি আমেরিকার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার পরিবর্তে ট্রাম্পকে মোকাবিলা করতে সক্ষম হবেন।
তবে এসবের মধ্যেও জনমত জরিপে এগিয়ে রয়েছে লেবার পার্টি। রবিবার লেবার পার্টি কাকে ট্রুডোর উত্তরসূরি হিসেবে বেছে নিবেন; তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে সবার ওপরে রয়েছে মার্ক কার্নির নাম।
কে এই মার্ক কার্নি?
কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাশাপাশি ইংল্যন্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। দায়িত্ব পালনকালে তিনি সফলতার সঙ্গে অর্থনৈতিক নানা সংকট মোকাবিলা করেছেন।
কানাডাতে ব্যাংক সুদের হার সর্বনিম্ন ১ শতাংশে নামিয়ে এনে ঋণ দেওয়া অব্যাহত রেখে বাজারে অর্থের প্রবাহ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন মার্ক কার্নি, এ কারণে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন।
তিনি যে কেবল ঋণ সম্পর্কে একটি ভালো নীতি তৈরি করেছিলেন, তাই নয়; জনগণের কাছে এমনভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করেছিলেন যা সবার বোধগম্য হয়। তিনিই প্রথম কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রধান যিনি সুদের হারকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এত কম রাখার অঙ্গীকার করেছিলেন। তার এই পদক্ষেপ পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ অনুসরণ করেছে বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন: মাস্কের কানাডীয় নাগরিকত্ব বাতিলের পিটিশনে সই
জানুয়ারিতে কার্নিকে লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এর পর থেকেই মন্ত্রিসভার মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের কাছ থেকে একের পর এক সমর্থন পেয়ে চলেছেন তিনি।
নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় কার্নির একক প্রাধান্য প্রতিষ্ঠায় তিনটি বিষয় মুখ্য ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক নেলসন ওয়াইজম্যান। তার ভাষ্যে, প্রথমত, ক্রিষ্টিয়া ফ্রিল্যান্ড (অন্য প্রার্থী) ট্রুডোর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
ট্রুডোর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ায় ফ্রিল্যান্ডও পিছিয়ে থাকতে পারেন বলে মনে করেন তিনি। দ্বিতীয়ত, সংসদে থাকা লিবারেল সদস্যদের সমর্থন আদায়ে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তৃতীয়ত, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি অন্যতম একটি বিষয়, কার্নির পেশাগত অভিজ্ঞতা এক্ষেত্রে ভুমিকা পালন করতে পারে বলে ধারণা দেন ওয়াইজম্যানে।
লিবারেল পার্টির যেসব নেতারা সংসদে নিজেদের পদ হারানোর ভয়ে ছিলেন এবং যারা মনে করেন ফ্রিল্যান্ডের নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা কম; তারা কার্নিকে সমর্থন দিয়েছেন বলে মনে করেন এই অধ্যাপক।
ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড্যানিয়েল বিল্যান্ড মনে করেন, ট্রাম্প যেভাবে কানাডার অর্থনীতি ও সার্বভৌমত্বকে লক্ষ্য করে একের পর এক বিতর্কিত পদক্ষেপ নিয়ে চলেছেন ও বক্তব্য দিচ্ছেন, এরকম সংবেদনশীল একটি মুহূর্তে কার্নির শান্ত স্বভাব ও অসাধারণ পেশাদার জীবনবৃত্তান্ত অনেক কানাডিয়ানকে আশ্বস্ত করেছে।’
কার্নির এই শান্ত স্বভাব কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েরে পলিয়েভ্রের সম্পূর্ণ বিপরীত বলে মনে করেন তিনি। বিল্যান্ডের মতে, পলিয়েব্র একদম পুরোদস্তুর একজন রাজনীতিবিদ। তিনিও ট্রাম্পের মতো জনপ্রিয়তাবাদী বক্তব্য দেন।
ট্রাম্পের শুল্কারোপের ফলে কানাডার অর্থনীতির নেতিবাচক প্রভাব রুখে দিয়ে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো সমাধান করে দেশের উন্নতিকে ত্বরান্বিত করবে এমন এক সরকারপ্রধান চান কানাডার নাগরিকরা। কানাডার নির্বাচন উত্তর আমেরিকার ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা হয়ে উঠছে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
৬ দিন আগে
মাস্কের কানাডীয় নাগরিকত্ব বাতিলের পিটিশনে সই
মার্কিন ধনকুবের ও স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের কানাডীয় নাগরিকত্ব বাতিল করতে একটি পিটিশনে সই করেছেন দেড় লাখেরও বেশি মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্যে পরিণত করার হুমকি দিয়ে আসছেন। এতে দেশটির স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়েছে। একারণে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত মাস্কের জন্মসূত্রে পাওয়া কানাডার নাগরিকত্ব বাতিলের দাবিতে এই পিটিশনে সই করেছেন দেশটির নাগরিকরা।
দ্য কানাডিয়ান প্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার লেখক কোয়ালিয়া রিড এই পিটিশনটি কানাডার হাউস অব কমন্সে উত্থাপন করেন। নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির এমপি ও মাস্কের সমালোচক চার্লি অ্যাঙ্গাসের অর্থায়নে এই পিটিশনটি হয়েছে।’
ট্রাম্পঘনিষ্ঠ মাস্ক দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি টেসলা, স্পেসএক্স এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এর প্রধান। মায়ের সূত্রে কানাডার নাগরিক মাস্ক। কানাডার সাসকাচোওয়ান প্রদেশের রাজধানী রেজিনা তার মায়ের জন্মস্থান।
আরও পড়ুন: কানাডাকে ‘সত্যিকার অর্থে’ ৫১তম অঙ্গরাজ্য করতে চাচ্ছেন ট্রাম্প: ট্রুডো
ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রশাসনের সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় মাস্ককে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি দাখিল করা রিডের পিটিশনে অভিযোগ করা হয়েছে, মাস্ক ‘ট্রাম্পের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করার মাধ্যমে কানাডার জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত’ হয়েছেন।
ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণ করেই নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কানাডার পণ্যে উচ্চ শুল্কারোপ করেন। এছাড়াও কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করার হুমকি দেন। এতে কানাডার জনগণের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
পিটিশনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়া মানে মাস্ক এমন এক ‘বিদেশি সরকারের সদস্য, যারা কানাডার সার্বভৌমত্ব মুছে ফেলতে চায়।’
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কাছে মাস্কের নাগরিকত্ব অবিলম্বে বাতিল করার এবং তার কানাডীয় পাসপোর্ট প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয়েছে পিটিশনে। ট্রাম্প আগেও ট্রুডোকে ব্যঙ্গ করে ‘গভর্নর’ বলেছেন। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলোর প্রধান নির্বাহীদের গর্ভনর বলা হয়।
গেল জানুয়ারিতে কানাডার ক্ষমতাসীন দল লিবারেল পার্টির প্রধানের পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন ট্রুডো, এই ঘোষণার পর মাস্ক এক্সে ব্যাপক উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যে শুল্কারোপ করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প
কানাডার সংবাদমাধ্যম দ্য কানাডিয়ান প্রেস জানিয়েছে, সাধারণত এ ধরনের পিটিশনটি স্বীকৃতি পেতে কমপক্ষে ৫০০ স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়। তাহলে সেটি হাউস অব কমন্সে উপস্থাপন করা যায় এবং সরকারিভাবে প্রতিক্রিয়া পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
রিডের পিটিশন সহজেই এই শর্ত পূরণ করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। জানা যায়, রোববার রাত পর্যন্ত পিটিশনে প্রায় ১ লাখ ৫৭ হাজার স্বাক্ষর পড়েছে এবং ক্রমেই স্বাক্ষরের সংখ্যা বাড়ছে। আগামী ২০ জুন পর্যন্ত স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হবে।
কানাডার হাইস অব কমন্সের কার্যক্রম আগামী ২৪ মার্চ পুনরায় শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। তবে পার্লামেন্টের সদস্যদের ফিরে আসার আগেই দেশটিতে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
১৮ দিন আগে
বাংলাদেশ-কানাডার মধ্যে ‘ফিপা’ ব্যবসায়িক আস্থা বাড়াতে পারে: মন্ত্রী হুসেন
কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী আহমেদ হুসেন বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড প্রটেকশন এগ্রিমেন্ট (ফিপা) সই করা হলে কানাডার ব্যবসায়ীরা উৎসাহিত হবেন।
দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক সম্প্রসারণে এফআইপিএ নিয়ে কারিগরি আলোচনা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানিয়েছে কানাডা।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে কানাডার মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী হুসেন বলেছেন, ‘এফআইপিএ সই হলে কানাডার ব্যবসায়ীরা উৎসাহিত বোধ করবে। তারা এটিকে একটি ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখবে।’
এসময় ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং এবং সিনিয়র সচিব ও এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা কানাডাকে বাংলাদেশের যুব শক্তিকে কাজে লাগাতে তাদের উৎপাদন কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর এবং দেশটিকে একটি উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
তিনি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত করতে কানাডার মন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।
প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে সাড়া দিয়ে কানাডার মন্ত্রী বলেন, ‘তারা বাংলাদেশের যেকোনো বৈধ শিক্ষার্থীকে স্বাগত জানাবেন এবং সম্প্রতি কানাডা যেসব শিক্ষার্থীর স্টাডি পারমিটের সংখ্যা কমানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে বাংলাদেশিদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি। আমরা ভিসা সীমিত করেছি। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এমন কিছু নেই। বাংলাদেশের যেকোনো বৈধ শিক্ষার্থীকে স্বাগত জানাই।’
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ থেকে চুরি যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে আবারও কানাডার সহায়তা কামনা করেন।
তিনি বলেন, 'বেগম পাড়া বলে পরিচিত একটি পুরো এলাকা আছে, যেখানে দুর্নীতিবাজদের পরিবারের সদস্যরা বসবাস করছে। দুর্নীতি রোধে আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করছি, কারণ দুর্নীতি সর্বত্র।’
বাংলাদেশকে কানাডা সরকারের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে মন্ত্রী বলেন, 'আমরা কানাডায় জনগণের অর্থ লুটপাট করে দুর্নীতি চাই না।’
সাক্ষাৎকালে কানাডার মন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি তার সরকারের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমি জানি, বাংলাদেশের মানুষ তাদের আশা ও প্রত্যাশা পূরণের জন্য আপনার ও আপনার সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে।’
প্রধান উপদেষ্টা ও কানাডার মন্ত্রী বাংলাদেশে চলমান সংস্কার উদ্যোগ, আসন্ন সাধারণ নির্বাচন এবং মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্দশা নিয়েও আলোচনা করেন।
৩২ দিন আগে
কানাডাকে ‘সত্যিকার অর্থে’ ৫১তম অঙ্গরাজ্য করতে চাচ্ছেন ট্রাম্প: ট্রুডো
প্রতিবেশী দেশ কানাডাকে ‘সত্যিকার অর্থেই’ যুক্তরাষ্ট্রের একান্নতম অঙ্গরাজ্য হিসেবে একীভূত করতে চাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এমন কথা বলেছেন কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
দেশটির সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম সিবিসি জানিয়েছে, শ্রম ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার সময় ট্রুডো এসব কথা বলেন। তখন ভুলবশত মাইক্রোফোন চালু ছিল, যে কারণে ট্রুডোর এই বক্তব্য রেকর্ড হয়ে যায়।
ব্যবসায়ী নেতাদের ট্রুডো বলেন, কানাডার সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সম্পদের লোভেই ট্রাম্প এমন কথা বলছেন। আমাদের দেশকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করেই এটা সহজে করা সম্ভব বলে তার মনে হয়েছে। তারা আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে সচেতন—আমাদের কী আছে এবং সেসব থেকে তারা কীভাবে সুবিধা নিতে পারেন। তার (ট্রাম্প) সঙ্গে আমার আলাপচারিতায়... (এরপরেই মাইক্রোফোন বন্ধ হয়ে যায়)।
এ নিয়ে ট্রুডোর অফিসের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সামাজিকমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে আলবার্টা ফেডারেশন অব লেবার এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
শুক্রবার কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে একদিনের একটি সম্মেলনের উদ্বোধনীতে দেওয়া বক্তব্যে ট্রুডো বলেন, ‘কানাডীয় পণ্যে ট্রাম্পের চড়া শুল্কারোপের হুমকি কীভাবে মোকাবিলা করা হবে; তা নিয়ে কানাডাকে কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।’
‘শুল্কারোপ থেকে বাঁচতে কানাডা অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করবে। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বাধাগুলো দূর করে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে হবে কানাডাকে,’ বলেন তিনি।
ট্রুডো বলেন, ‘আর এটিই সেই মুহূর্ত। দেশের ইতিহাসের এই সময়টি ব্যাপক গুরুত্ব বহন করছে।’
এরআগে সোমবার কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ মাদক ফেনটানিল পাচার ও অবৈধ অভিবাসীদের প্রবেশ বন্ধে সহযোগিতার শর্তে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নেন। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদনে জোর দিতে ও কেন্দ্রীয় সরকারের রাজস্ব বাড়াতে বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শুল্কারোপের কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যে শুল্কারোপ করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প
৩৪ দিন আগে
বেগমপাড়ার সম্পত্তি উদ্ধারে কানাডার সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকায় কানাডীয় হাইকমিশনার অজিত সিংয়ের বৈঠকে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের জনগণের কাছ থেকে চুরি হয়ে যাওয়া অর্থ দিয়ে বেগমপাড়ায় সম্পত্তি কেনা হয়েছে। সেই সম্পত্তি উদ্ধারে আপনাদের সহায়তা দরকার—এগুলো সবাই আমাদের জনগণের সম্পত্তি।
ইউনূস বলেন, ‘স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ রাজনীতিবিদ, সহযোগী ও অলিগার্করা হাজার হাজার কোটি ডলার বাংলাদেশ থেকে লুট করেছে। সেই অর্থের একটা অংশ কানাডায় পাচার করেছে এবং টরোন্টোর কুখ্যাত বেগমপাড়ায় সম্পদ কিনেছে।
আরও পড়ুন: একুশের টান প্রজন্মের ঊর্ধ্বে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান তারই জ্বলন্ত প্রমাণ: প্রধান উপদেষ্টা
পাচারকারীদের শনাক্ত, সম্পদ জব্দ ও উদ্ধারে কানাডার সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময়ে চুরি হয়ে যাওয়া অর্থ উদ্ধারে ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার প্রশংসা করেছেন কানাডীয় হাইকমিশনার, কানাডা সহায়তা করবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
কানাডার হাইকমিশনার জানান, কানাডার সরকার চিহ্নিত ব্যক্তিদের পাচার করা অর্থ জব্দ এবং তা পুনরুদ্ধারের জন্য একটি ‘প্রক্রিয়া’ চালু রেখেছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত সংস্কার কর্মসূচিকে সহযোগিতা প্রদানে তার দেশ প্রস্তুত রয়েছে।
রাষ্ট্র সংস্কার কর্মসূচির প্রতি ইঙ্গিত করে অজিত সিং বলেন, আপনারা যে মহৎ কাজ করছেন, আমরা তা সমর্থন করি। এরইমধ্যে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা প্রশংসনীয়। আমরা জানতে আগ্রহী, আরও কীভাবে আপনাদের সাহায্য করতে পারি।
কানাডা বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী। পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করতে কানাডার একজন মন্ত্রী শিগগিরই বাংলাদেশ সফরে আসবেন বলেও জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে তার বৈঠকের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ঢাকা আরও বেশি কানাডীয় বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছে।
কানাডার হাইকমিশনারকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ ব্যবসার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। আমরা আপনাদের দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে চাই এবং আমরা চাই কানাডীয় কোম্পানিগুলো তাদের কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর করুক।
আরও পড়ুন: অনলাইনে মামলা গ্রহণ করতে পুলিশকে নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বর্তমানে বহু বাংলাদেশি কানাডায় বসবাস ও পড়াশোনা করছে। তাই ঢাকায় কানাডার একটি ভিসা অফিস স্থাপন করা প্রয়োজন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
৩৮ দিন আগে
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কানাডার ভিসা দ্রুত সময়ে চায় ঢাকা
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রক্রিয়াকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে করতে কানাডার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
বাংলাদেশে নবনিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং সোমবার (২৭ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা তৌহিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা দেশে প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে তা উল্লেখ করেন। তাদের (রোহিঙ্গা) নিজদেশে টেকসই নিরাপদ প্রত্যাবাসনে কানাডার জোরালো সমর্থনসহ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং ঢাকাস্থ কানাডার হাইকমিশনের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।
অজিত সিং বাংলাদেশে কানাডার হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় তাকে স্বাগত ও অভিনন্দন জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তারা কৃষি সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, আর্থিক খাত এবং রোহিঙ্গা সংকটসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: ইতালির ভিসা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে, আশা উপদেষ্টা তৌহিদের
হাইকমিশনার এসব উদ্বেগের কথা উল্লেখ করেন এবং তা সমাধানে সর্বোচ্চ সহায়তার আশ্বাস দেন।
দুই শীর্ষ ব্যক্তি দু'দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, সক্ষমতা বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়ন, কারিগরি সহায়তা এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরও জোরদার করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হাইকমিশনারকে তার মেয়াদকালে বাংলাদেশ-কানাডা অংশীদারিত্ব জোরদারে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
৪৬ দিন আগে
ট্রাম্পকে নিয়ে এবার কানাডা-মেক্সিকোর রসিকতা
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে বিশ্বনেতারা এক ধরনের রসিকতায় মেতেছেন। ফ্রান্স-জার্মানির পর ট্রাম্পের রাষ্ট্রের সীমারেখা বাড়ানো নিয়ে মুখ খুলেছে কানাডা এবং মেক্সিকো।
কানাডা একীভূত করা তো দূরের কথা উল্টো যুক্তরাষ্ট্রের দুই অঙ্গরাজ্য- আলাস্কা এবং মিনেসোটা কেনার প্রস্তাব দিয়েছেন কানাডার অন্তারিও রাজ্যের প্রধান ডগ ফোর্ড।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ফোর্ড বলেন, আলাস্কা আর মিনেসোটা কিনে নেওয়া যেমনি বাস্তবতার নিরিখে অবাস্তব, একইভাবে ট্রাম্পের কানাডা একীভূত করার বাসনাও নিতান্তই অলীক।
ট্রাম্পের এ ধরনের প্রস্তাবকে রসিকতা বললেও একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের ওপর কানাডার তীক্ষ্ম নজর থাকবে বলেও জানান এই রাজ্যপ্রধান।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র-কানাডাকে একীভূত করার প্রস্তাব ট্রাম্পের
ট্রাম্পের অতিরিক্ত রাজস্ব আরোপের হুমকি প্রসঙ্গে ফোর্ড বলেন, বাণিজ্যিক দিক থেকে কানাডা একমুখীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল না। প্রতিদিন ৪৩ লাখ ব্যারেল তেল কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহ করা হয়। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যুতের বড় একটি যোগান আসে কানাডা থেকে।
বাণিজ্যের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র অসহযোগিতামূলক আচারণ করলে সেটি কারও জন্য কল্যাণকর হবে না বলে জানান তিনি।
ট্রাম্পের প্রস্তাবের জবাবে কানাডার সদ্যসাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এক্সে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছে, কোনো সময়েই কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হবে না। দুই দেশের অধিবাসীদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখারও ওপরও জোর দেন তিনি।
এদিকে ট্রাম্পের গালফ অব মেক্সিকোর নাম বদলে গালফ অব আমেরিকা রাখার প্রস্তাবের জবাবে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউম উল্টো প্রস্তাব দিয়েছেন ট্রাম্পকে। যুক্তরাষ্ট্রের নাম বদলে আমেরিকা মেক্সিকানা রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
নিজের প্রস্তাবের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে ক্লাউডিয়া বলেন, সতের শতকে আমেরিকান এই ভূমিকে মানুষ আমেরিকা মেক্সিকানা নামেই ডাকতো। এখন থেকে চাইলে পুরোনো সেই নাম আবার চালু করা যায়। শুনতেও এই নাম ভালো লাগে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: গ্রিনল্যান্ড নিয়ে ট্রাম্পকে কড়া জবাব ফ্রান্সের
৬৪ দিন আগে
ক্ষমতা ছাড়তে পারেন ট্রুডো
ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হতে পারেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। দিনকে দিন ট্রুডোর বিরুদ্ধে তার নিজের দল লিবারেল পার্টি বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠছে। তাদের অভিযোগ, ৯ বছর ক্ষমতায় থাকা এ প্রধানমন্ত্রী এখন আর দেশের অভ্যন্তরীণ সংকট সামাল দিতে পারছেন না।
বিগত কয়েক বছর ধরে বড় রকমের শ্রম সংকট চলছে কানাডায়। এর বাইরে কানাডার পণ্য আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ করারোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কানাডার অর্থনীতির চ্যালেঞ্জিংয়ের এ সময়ে গত বছর ডিসেম্বরে পদত্যাগ করেন দেশটির অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। এরপরেই ট্রুডো নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন।
ডিসেম্বর থেকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের সামনে আসেননি। জনসমক্ষে সেভাবে তার উপস্থিতি দেখা যায়নি। লিবারেল পার্টির ট্রুডো ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তিনি রিসোর্টে ব্যক্তিগত সময় কাটাচ্ছেন। সেখান থেকে ফিরেই হয়তো পদে থাকা না-থাকা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
সংসদে ট্রুডোর দল লিবারেল পার্টির আসন ১৫৩টি। এর মধ্যে ২০ জন সাংসদ সরাসরি ট্রুডোর পদত্যাগ চেয়েছেন। বাকিদের অনেকেই পার্টি মিটিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিপক্ষে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।
এদিকে ট্রুডোর পদত্যাগের গুঞ্জনে ডলার বিপরীতে কানাডীয় মুদ্রার দাম বাড়তে শুরু করেছে। ২০২০ সালে ডলারের বিপরীতে দেশটির মুদ্রা ৭ শতাংশ অবমূল্যায়ন হলেও, বর্তমান অবস্থান করছে ডলারের মূল্যের ওপরে।
আরও পড়ুন: কানাডায় ভারতের সহিংসতার অভিযোগ ট্রুডোর
তবে ট্রুডো ক্ষমতা ছাড়ার পর লিবারেল পার্টির কোন নেতা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পাবেন, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। অনেকে ক্ষমতার চেয়ার নিয়ে দলীয় কোন্দলের শঙ্কাও করছেন।
দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, চাইলে দল সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগ পর্যন্ত ট্রুডো নিজ পদ ধরে রাখতে পারেন। এদিকে দেশটির বিরোধী দল জানিয়েছে, সংসদের আগামী অধিবেশনে তারা সরকার পতনের ডাক দেবে। সব মিলিয়ে কানাডা বড় রকমের অস্থিরতার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।
৬৭ দিন আগে
কানাডায় বাবা-মা নিয়ে স্থায়ী হওয়ার সুবিধা বন্ধ, বিপাকে বাংলাদেশিরা
এতদিন নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে কানাডায় স্থায়ী হওয়া সন্তানরা তাদের বাবা-মা, দাদা-দাদি ও নানা-নানির জন্য স্থায়ী আবাসনের (পিআর) ব্যবস্থা করতে পারলেও ২০২৫ সালে এ ধরনের সুবিধা নতুন করে আর দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে দেশটির অভিবাসন, উদ্বাস্তু ও নাগরিকত্ব বিষয়ক বিভাগ আইআরসিসি।
প্যারেন্ট অ্যান্ড গ্রান্ডপ্যারেন্টস স্পন্সরশিপের (পিজিপি) আওতায় নতুন বছরে আর কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না বলে নিশ্চিত করেছে আইআরসিসি। এতে করে কানাডার স্থায়ীভাবে বসবাসকারীরা আগের মতো বাবা-মা, দাদা-দাদি কিংবা নানা-নানির জন্য পিআরের ব্যবস্থা করতে পারবেন না।
আইআরসিসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে যারা পিজিপির আবেদন করেছিল নতুন বছরে শুধু সেসব আবেদনপত্র নিয়ে কাজ চলছে। তবে কেউ চাইলে দেশটির সুপার ভিসা সুবিধার আওতায় নিজের নিকটাত্মীয়দের কানাডা বসবাসের সুযোগ করে দিতে পারবেন। এ ভিসার আওতায় এক নাগাড়ে পাঁচ বছর কানাডা থাকার সুযোগ পাবেন তারা।
অভিবাসীর সংখ্যা কমাতে ২০২৫ সালে আইআরসিসি ২০ শতাংশ পিআর সুবিধা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে বছরের শুরুতেই প্রভাব পড়েছে পিজিপি প্রোগ্রামের ওপর। আগের আবেদনের ভিত্তিতে পিজিপি প্রোগামে এ বছর সাড়ে ২৪ হাজার মানুষকে কানাডায় স্থায়ীকরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে আইআরসিসি।
অভিবাসনে কড়াকড়ি
বিগত বছরগুলোতে কানাডা অভিবাসন নীতিতে উদার থাকলেও, সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছেন, বর্তমানে কানাডা অভিবাসীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে চায়।
অভিবাসনের ব্যাপারে কঠোর নীতির ফলে ২০২৫ সালে পিআর প্রোগ্রামের বাইরে কানাডায় বসবাসকারী অস্থায়ী ১২ লাখ বিদেশি দেশত্যাগে বাধ্য হতে পারেন- এমন তথ্য উঠে এসেছে টরন্টোভিত্তিক বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে।
এখন থেকে প্রতি বছর পিআর সুবিধা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইআরসিসি। বিগত সময়ে প্রতি বছর পাঁচ লাখ পিআর দেওয়া হলেও এখন সেটি কমিয়ে ২০২৫ সালে ৩ লাখ ৯৫ হাজার অভিবাসীকে পিআর দেবে বলে নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ। এ সুবিধা ২০২৬ সালে কমিয়ে ৩ লাখ ৮০ হাজার এবং ২০২৭ সালে আরও কমিয়ে ৩ লাখ ৬৫ হাজার নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০২৫ সালে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, ৯৪ হাজার ৫০০ ফ্যামিলি অর্থাৎ পারিবারিক ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত আইআরসিসির। এর মধ্যে ৭০ হাজার ভিসা পাবে স্থায়ীভাবে দেশটিতে বসবাসকারীদের স্ত্রী-সন্তানরা।
ট্রুডো সরকার কানাডার জনসংখ্যা বৃদ্ধি থামানোর প্রয়াস হিসেবে এই নীতি গ্রহণ করেছে। ২০১৫ সাল থেকে উদারনীতির আওতায় বিগত এক দশকে কানাডায় অভিবাসীর সংখ্যা বেড়েছে বহুগুণ। এতে দেশটির স্বাস্থ্যসেবা ও আবাসন সুবিধা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। তাই অভিবাসনের ওপর কড়াকড়ি আরোপে অটুট থাকছে দেশটির সরকার।
বিপাকে বাংলাদেশিরা
ঢাকার কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ দাশ জয় (৩৫) পাঁচ বছর ধরে কানাডার একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করছেন। নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে কানাডায় পিআর পাওয়া রীতিমতো দূরহ হয়ে উঠেছে। পিআর পেতে সরকার-নির্ধারিত নির্দিষ্ট পয়েন্ট অর্জন করতে হয়, যার মান বাড়ানো হয়েছে সম্প্রতি। এতে যেসব বাংলাদেশি পিআর ছাড়া কানাডায় বাস করছেন তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
শুধু প্রসেনজিৎ নন, কানাডায় প্রায় এক দশক ধরে ব্যবসা করছেন সালাহউদ্দিন বাচ্চু (৩৭)। তিনি জানান, তার কানাডা যাওয়ার প্রথমদিকে চাইলে নিজ খরচে স্ত্রী-সন্তান ও বাবা-মাকে নিয়ে আসা যেত। দিন দিন এই অবস্থা কঠিন হয়েছে। প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ পিজিপির আবেদন করছেন আর সুযোগ পাচ্ছেন লটারিতে নাম ওঠা হাতেগোনা কয়েকজন।
কানাডার অটোয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশটিতে ১ লাখের বেশি বাংলাদেশি স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। ৬০-এর দশক থেকে কানাডায় বাংলাদেশি অভিবাসীদের বসবাস শুরু হলেও ৮০’র দশকের শেষের দিকে বাংলাদেশিদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। সর্বশেষ গত দুই দশকে কানাডায় বাংলাদেশির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
এতদিন কানাডায় বাংলাদেশিদের কাজ পাওয়া কিংবা পিআর সুবিধার জন্য কোনো বেগ পেতে না হলেও দিন দিন পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠছে। এর ওপর পিজিপি সুবিধা বন্ধ হওয়ায় যারা পিআর পেয়েছেন, পরিবার নিয়ে তারাও পড়েছেন বিপাকে।
৬৯ দিন আগে