জয়িতা
স্বনির্ভর উদ্যোক্তা তৈরিতে জয়িতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে: স্পিকার
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামীণ নারীদের পণ্য বিপণন ও বাজারজাতকরণে জয়িতা কাজ করে যাচ্ছে। সরকারিভাবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে নারীদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে নারীদের এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশীয় পণ্য বাজারজাতকরণের মাধ্যমে স্বনির্ভর উদ্যোক্তা তৈরিতে জয়িতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
আরও পড়ুন: বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংসদীয় কূটনীতি কার্যকর হাতিয়ার: স্পিকার
বুধবার রাজধানীর জয়িতা টাওয়ারের সভাকক্ষে 'জয়িতা ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম-সংক্রান্ত মত বিনিময়' সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমির সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারক।
স্পিকার বলেন, জয়িতার উদ্যোক্তারা কী ধরনের পণ্যের যোগান দেবেন, সে বিষয়ে একটা তালিকা তৈরি করতে হবে। দেশীয় পণ্যের বিপণনে এক্ষেত্রে প্রাধান্য দিতে হবে।
তিনি বলেন, জয়িতা টাওয়ারে ক্লাস্টারভিত্তিক পণ্য ও সেবা বিক্রয়ের জন্য ব্যবসায়ী উদ্যোগ নিতে হবে।
স্পিকার বলেন, বর্তমান সরকার নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের প্রতিটি নারী উদ্যোক্তাকে শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তায় পরিণত করতে হবে।
তিনি বলেন, ফ্রোজেন ফুড, টেইলারিং ও ফ্রেশ ভেজিটেবল বিক্রয়সহ ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের সমন্বিত ব্যবসায়ী উদ্যোগের মাধ্যমে নারীদের স্বাবলম্বী হতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জয়িতার উদ্যোক্তাদের জামানতবিহীন ঋণ দেওয়া হয়। নারী উদ্যোক্তারা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজেদের এগিয়ে নিতে পারে।
অনুষ্ঠানে জয়িতা টাওয়ারে লেভেল ৩ ও ৪ এ ব্যবসা-সংক্রান্ত পরিচালন পদ্ধতিতে বিশেষজ্ঞ প্যানেলে জয়িতা ফাউন্ডেশনের নারী উদ্যোক্তারা মতামত দেন। এসময় স্পিকারকে জয়িতা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ফুলেল অভ্যর্থনা ও শুভেচ্ছা স্মারক দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য শ্রমবাজার নয়, মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হওয়া জরুরি: স্পিকার
দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে ইউসেফ বাংলাদেশ কাজ করছে: স্পিকার
৫ মাস আগে
জীবনধারণে লড়ছেন জয়িতা পুরস্কার জয়ী খুলনার পাখি দত্ত হিজড়া
এবার নারী দিবসে জাতীয়ভাবে জয়িতা পুরস্কার পেয়েছেন খুলনার একজন পাখি দত্ত হিজড়া। বয়স ৩২ বছর বয়সী পাখি দত্ত হিজড়া রবিবার সকালে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙার খোকন সড়কে নিজ বাসায় ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে জানান তার সুখ-দুঃখের কথা।
এর আগে তিনি প্রধানমন্ত্রী, খুলনার মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে একটা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, কোনো কাজ না পেলে তাকে হয়তো জীবন ধারনের জন্য হিজড়া পেশায় ফিরে যেতে হবে। যেটা তার কাম্য নয়।
পাখি জানান, তাদের আদি বাড়ি বগুড়া জেলার জামালগঞ্জে। কাজের আশায় তার বাবা তার মাকে আশির দশকে খুলনার ডুমুরিয়ার মিকসিমিলে চলে আসেন। তারপরে তার বাবা খুললার দৌলতপুর একটা বেসরকারি ফার্মে চাকরি নেন। এখানেই ১৯৯২ সালের ২৭ ফেব্রয়ারি পাখি জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মংগল দত্ত এবং মা রীনা রানি দত্ত। প্রথম দিকে ভালোই চলছিল তার জীবন। কিন্তু বয়স যখন ১১-১২ বছর। বয়ঃসন্ধিকাল তখন তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। বুঝতে পারে সে অন্য সাধারণ মেয়ের চেয়ে আলাদা। এরপর থেকে শিক্ষকরা তার স্কুলে ভর্তি করা নিয়ে গড়িমসি করলেও পরবর্তীতে সে স্কুলে ভর্তি হয়। কিন্তু কোন ছেলে বা মেয়ে তার সঙ্গে মিশতো না। তাকে এড়িয়ে চলতো সকলেই।
আরও পড়ুন: ভোলায় জেলা পর্যায়ে জয়িতা সম্মাননা পেলেন ৫ নারী
এরপর প্রচার হয়ে যায় সে হিজড়া। তখন তার বাবা-মা সমাজের প্রতিহিংসার শিকার হন।
তাদের পরিবারকে একঘড়ে করা হয়। তখন সে বাধ্য হয়ে পিতা মাতার সংসার ছেড়ে খুলনার টুটপাড়া এক হিজড়া গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ দেয়।
এখানে তার কাজ ছিল অন্য হিজড়াদের সঙ্গে দলবেঁধে শিশুদের নাচানো, বাজার থেকে তরকারি, মাছ সংগ্রহ করা। এভাবে কেটে যায় কয়েক বছর। এই সময় পাখি হিজড়া গোষ্ঠীর প্রধানের দৈহিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়। এই কাজে তার মন বসছিল না। তাই একদিন সে আরও দুই জনকে নিয়ে পালিয়ে আসে। কিন্তু কি করবে চোখে অন্ধকার দেখতে থাকে। বাধ্য হয়ে সে ট্রেনে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করে।
এর মধ্যে বাবা মারা গেলে তাদের সংসারে নেমে আসে কালো মেঘ। এই সময় একজন এনজিও পরিচালকের সঙ্গে তার কথা হয় এবং তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। পরিচয় হতে থাকে সমাজসেবা ও যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে। এনজিওতে কাজ করার পাশাপাশি তিনিসহ আরও তিনজন ঢাকা থেকে পাইকারি দামে শাড়ী, থ্রীপিছ খুলনায় এনে বিক্রি শুরু করেন। মোটামুটি লাভের মুখ দেখা যায়।
এরপর ২০১৮ সালে নক্ষত্র যুব মানব কল্যাণ সংস্থা গঠন করে খুলনা যুব উন্নয়য় অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নিয়ে সমাজসেবা, নারী-শিশু ও বয়স্কদের উন্নয়নে কাজ শুরু করেন পাখি দত্ত।
আরও পড়ুন: ফেনীর পরশুরামে বেগম রোকেয়া দিবসে জয়িতাদের সংবর্ধনা
এর মধ্যে ২০২০ সালে দেশে করোনা শুরু হলে পাখি ও তার দল করোনা রোগীদের সেবা, খাবার সংগ্রহ বহুমুখী কাজ করে। লকডাউনে ঘরে বসে না থেকে প্রতিনিয়ত ছুটে যায় করোনা রোগীদের পাশে। তিনি নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
তিনি তার কাজের জন্য খুলনা মহানগরী, জেলা ও বিভাগে ২০২২ ও ২০২৩ সালে সেরা জয়িতা মনোনীত হয়। আর এবছর নারী দিবসে পেল রাষ্ট্রীয় সেরা জয়িতা পুরস্কার।
তবে অসহায়ভাবে পাখী দত্ত হিজড়া জানালো তার বৃদ্ধ অসুস্থ মা এবং সপ্তম শ্রেণীতে পড়া একমাত্র বোনকে নিয়ে তাদের দারুণ অর্থকষ্টে দিন কাটানোর কথা। তার এখন দরকার একটা চাকরি।
আর না হলে তাকে আগের পেশায় ফিরে যেতে হবে। যা সে চায় না।
আরও পড়ুন: ‘সফল জননী’ হিসেবে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা পেলেন চা শ্রমিক কমলি রবিদাস
৯ মাস আগে
সম্মাননা পদক পেলেন ঢাকা বিভাগের নির্বাচিত ৫ শ্রেষ্ঠ জয়িতা
ঢাকা বিভাগের পাঁচ শ্রেষ্ঠ জয়িতাকে সম্মাননা দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সভাকক্ষে ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ শীর্ষক ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের হাতে সম্মাননা স্মারক, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন- অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী ক্যাটাগরিতে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মর্জিনা আক্তার, শিক্ষা ও চাকুরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী ঢাকার ধামরাই উপজেলার মুক্তা আক্তার, সফল জননী ক্যাটাগরিতে গাজীপুরের টঙ্গীর মাহমুদা খাতুন, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করা রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মোছা. আলেয়া বেগম ও সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় ঢাকার পল্লবী এলাকার রোকছানা পারভীন দীপু।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে ১০ জয়িতাকে সংবর্ধনা
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, জীবন সংগ্রামে অপ্রতিরোধ্য ও আত্মপ্রত্যয়ী নারীর নাম জয়িতা। সরকার তাদের অসামান্য অর্জনের যথাযথ স্বীকৃতি প্রদান করছে। দেশে ক্ষুদ্র ব্যবসা ও অনলাইন ভিত্তিক ই-কমার্সের যে জয়জয়কার, তার পেছনে জয়িতা কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের শতকরা ৮০ ভাগ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন নারী উদ্যোক্তারা। যার ফলে নারীরা আর্থিক স্বচ্ছলতা ও স্বাবলম্বীতা অর্জনের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ ও সিদ্ধান্ত নিতে পারছে।
বাল্যবিবাহ এবং নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, আমরা যদি বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে না পারি তাহলে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় পিছিয়ে পড়বে। বাল্য বিয়ে এবং নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ করতে বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটিগুলোর কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন, ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ হাবিবুর রহমান ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম।
আরও পড়ুন: জয়িতা ফাউন্ডেশন চলচ্চিত্র উৎসব ২০২১ এর পর্দা নামল
এছাড়া অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আরও উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপাররা।
২ বছর আগে
মানিকগঞ্জে ১০ জয়িতাকে সংবর্ধনা
আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে মানিকগঞ্জে সমাজ উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য ১০ জন জয়িতাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে।
৫ বছর আগে