মাতৃভাষা
মায়ের মতো মাতৃভাষাকেও ভালোবাসতে হবে: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি বলেছেন, আমরা দেশমাতাকে যেমন ভালোবাসি, তেমনি ভাষাকেও ভালোবাসতে হবে। বাংলা ভালোভাবে শিখতে ও ব্যবহার করতে হবে।
তিনি বলেন, ভাষার বিকৃতি যেন আমরা না করি। কমপক্ষে আরেকটি ভাষা শিখি। ইংরেজি ভাষা সারা বিশ্বে চলে, সেই ভাষা অন্তত শিখব।
আরও পড়ুন: নতুন পাঠ্যপুস্তক নিয়ে গুজবে কান দিবেন না: দীপু মনি
আর কেউ যদি তৃতীয় ও চতুর্থ ভাষা শিখো, তাহলে তো কথাই নেই। সারা পৃথিবীর দরজা তোমার জন্য খোলা।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুর ১২টায় চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন অলিম্পিয়াড ২০২২ সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ভাষার শেখার পাশাপাশি তোমাদেরকে আইসিটিও শিখতে হবে। আইসিটিও কিন্তু এখন স্বাক্ষরতার অংশ। এক সময় আমরা শিখতাম ক, খ, এ বি সি এবং এক দুই তিন।
কিন্তু এখন আইসিটির বর্ণমালা শিখতে হচ্ছে। পাশাপাশি তোমাদেরকে বিজ্ঞান প্রযুক্তি এবং সূক্ষ্ম জ্ঞানের অধিকারী হতে হবে।
দীপু মনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছিলাম। আজকে তার মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বল্পন্নোয়ন দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছি। আগামী দিনে বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে।
তার জন্য স্মার্ট নাগরিক লাগবে, আর সেই স্মার্ট নাগরিক হবে তোমরা। তার জন্য তোমাদেরকে সে গুণাবলী অর্জন করতে হবে।
তিনি ছেলে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, আমি আশা করি তোমরা ছেলেরা নিজেদেরকে এমনভাবে গড়ে তুলবে, যাতে তোমরা নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। তুমি যেমন মানুষ, একজন নারীও মানুষ। কাজেই তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিলন মাহমুদ।
আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অসিত বরণ দাস, পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার, হাজীগঞ্জ পাইলট সরকারি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবু সাঈদ।
আরও পড়ুন: অনেক নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস নেই: দীপু মনি
তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুটাকে পচিয়ে ফেলেছে বিএনপি: দীপু মনি
১ বছর আগে
জাতিসংঘে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে টানা ৭ম বারের মতো বুধবার যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের যৌথ অংশীদারিত্বে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ডেনমার্ক, গুয়াতেমালা, হাঙ্গেরি, ভারত, মরক্কো ও পূর্ব তিমুর।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনের সভাপতি সাবা কোরেশি।
বিগত বছরের ন্যায় এ বছরও জাতিসংঘের ছয়টি দাপ্তরিক ভাষায় গোটা অনুষ্ঠানটি অনুবাদের সুব্যবস্থা রাখা হয়। নিউইয়র্কভিত্তিক সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রী চিন্ময় কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের থিম সঙ্গীত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এরপর ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাতৃভাষা বাংলার অধিকার আদায়ে জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
আরও পড়ুন: শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৩ উপলক্ষ্যে ব্যাংককে শিশু-কিশোরদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা
অনুষ্ঠানটির আলোচনা পর্বে সকল সহযোগী দেশগুলোর স্থায়ী প্রতিনিধি, জাতিসংঘের জেনারেল অ্যাসেম্বলি ও কনফারেন্স ব্যবস্থাপনাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল, নীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল, ইউনেস্কো’র নিউইয়র্ক অফিসের প্রতিনিধি এবং নিউইয়র্ক শহরের মেয়রের প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন। তাছাড়া, স্প্যানিশ ভাষাভাষী ফ্রেন্ডস গ্রুপের পক্ষ থেকে জাতিসংঘে নিযুক্ত কিউবার উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি এবং ভাষাবিষয়ক এনজিও কমিটির সভাপতি বক্তব্য রাখেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা শহীদগণ এবং ভাষা আন্দোলনের পথিকৃত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই জাতির পিতার নেতৃত্বে শুরু হয় বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রাম, যার চূড়ান্ত পরিণতি পায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয়ের মাধ্যমে। মহান একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভের জন্য প্রবাসী কয়েকজন বাংলাদেশির উদ্যোগকে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের পূর্ণ স্বীকৃতি আদায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কথা স্মরণ করেন রাষ্ট্রদূত মুহিত।
রাজধানী ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ ও অবদানের কথা স্মরণ করেন তিনি। এবারের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বাংলাকে সম্মান জানিয়ে নতুন বাংলা ইউনিকোড ফন্ট প্রকাশ করার জন্য ইউএনডিপিকে (জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচী) বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন স্থায়ী প্রতিনিধি।
১ বছর আগে
ভাষা শহিদদের আত্মত্যাগেই বিশ্বব্যাপী মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে: পররাষ্ট্র সচিব
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনে শহিদদের আত্মত্যাগে আজ বিশ্বব্যাপী মাতৃভাষার মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সোমবার সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রফিক, সালাম, জব্বার, বরকত, শফিউরসহ ১৯৫২ এর সকল ভাষা শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘তাঁদের আত্মত্যাগেই আমাদের মাতৃভাষার অধিকার, আমাদের পরিচয় এবং নিজস্ব সংস্কৃতির মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সাক্ষাত
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি গঠনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাঁর নেতৃত্বেই আমাদের সকল যুগান্তকারী আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালিত হয়েছে এবং অবশেষে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছি।’
মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের জন্য তৎকালীন গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত-সহ সকল ভাষা সৈনিকের অবদানের কথা পররাষ্ট্র সচিব শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহিদ, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যরা এবং জাতীয় চার নেতাসহ সকল শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, তাঁদের সকলের আত্মত্যাগেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে এবং উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের ভাষা আন্দোলন— শোষণ নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রথম সুসংগঠিত আন্দোলন— যা আমাদের মনোবল ও আত্মবিশ্বাস সুদৃঢ় করে জাতীয়তাবাদে উজ্জীবিত করেছিল।’
১৯৯৯ সালে ইউনেস্কোর মাধ্যমে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি অর্জনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, তাঁর নির্দেশনা এবং নেতৃত্বে এই গৌরবময় স্বীকৃতি অর্জন সম্ভব হয়েছে। তিনি একইসঙ্গে এই স্বীকৃতি অর্জনের জন্য তৎকালীন কানাডা প্রবাসী রফিক, সালাম-সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা বিশেষ করে, প্যারিসে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত (এ বছর একুশে পদকপ্রাপ্ত) প্রয়াত সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীর অবদানের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন একুশে পদকপ্রাপ্ত সাবেক কূটনীতিক সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীর ছেলে সৈয়দ নাজিব মুস্তাফা আলী। এছাড়া ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকরা নিজেদের মাতৃভাষায় অনুভূতি প্রকাশ করে ভাষা শহিদদের অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
আরও পড়ুন: ভাষা শহীদদের বিনম্র শ্রদ্ধা জানালেন সজীব ওয়াজেদ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম রাষ্ট্রীয় কাজে দেশের বাইরে অবস্থান করায় শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে তাঁদের প্রদত্ত বাণী অনুষ্ঠানে পড়ে শোনানো হয়। এছাড়া বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবরা, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এবং ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে বাংলাদেশ মিশনগুলোর প্রধানরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এবং ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকরা শোভাযাত্রাসহ ফরেন সার্ভিস একাডেমি প্রাঙ্গণে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
২ বছর আগে
শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে বাংলায় সহজ বৈজ্ঞানিক পরিভাষা ব্যবহারের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান চর্চায় আরও বেশি আগ্রহী করে তুলতে বাংলায় বৈজ্ঞানিক পরিভাষা ব্যবহার সহজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার বিকাশ ছাড়া কোনো জাতি এগিয়ে যেতে পারে না।’
তিনি বলেন, আমাদের প্রযুক্তিগত শিক্ষা নিতে হবে। এটি ছাড়া আমরা উন্নতি করতে পারব না।
আরও পড়ুন: শহীদ মিনারে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন
শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা, বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা ও গবেষণাভিত্তিক জ্ঞানকে জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে এবং এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিজ্ঞান এমনকি শিল্পসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
বৈজ্ঞানিক পরিভাষার ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলা ভাষায় বৈজ্ঞানিক শব্দের কঠিন পরিভাষা ব্যবহার সবার বোধগম্য নাও হতে পারে। এক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত শব্দ এবং আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত শব্দ ব্যবহার করা যেতে পারে। আমাদের আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যে শব্দটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় তা গ্রহণ করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিজ্ঞানে ইংরেজি, ফরাসিসহ অনেক ভাষার শব্দ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বাংলা ভাষায় প্রায় আট হাজার বিদেশি শব্দ আছে ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এই বিষয়ে এতটা রক্ষণশীল হওয়া উচিত নয়, বিজ্ঞানের সহজ শিক্ষার জন্য বাংলা ভাষায় সাধারণভাবে ব্যবহৃত বৈজ্ঞানিক পরিভাষাগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে বলে আমি মনে করি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশকে উন্নয়নশীল থেকে উন্নত করতে হলে ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিজ্ঞানসহ সব বিষয়ে চর্চা ও গবেষণা জরুরি।’
আরও পড়ুন: বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রীর
২ বছর আগে
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ঢাবিতে প্রভাত ফেরি অনুষ্ঠিত
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঐতিহ্যবাহী ‘প্রভাত ফেরি’র আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)।
সোমবার সকাল ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে প্রভাত ফেরির মিছিল শুরু হয়।
পরবর্তীতে মিছিলটি নীলক্ষেত হয়ে আজিমপুর কবরস্থানে যায়। সেখানে শফিউর রহমান, আবুল বরকত ও আবদুল জব্বারের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ঢাবি উপাচার্য। পরে কবরস্থানে সকলের জন্য দোয়া করা হয়।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে সব বর্ষের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস শুরু ২২ ফেব্রুয়ারি
মোনাজাত শেষে তারা আজিমপুর মোড়, পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও জগন্নাথ হলের রাস্তার মাঝ দিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যান।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাবি উপাচার্যের নেতৃত্বে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
মিছিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা অংশ নেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ঢাবির এ এফ রহমান হলে শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ
উপাচার্যদের অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা উচিত নয়: ঢাবি উপাচার্য
২ বছর আগে
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে হিলি বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
অমর একুশ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। একইসঙ্গে বন্ধ রয়েছে বন্দরের অভ্যন্তর পানামা পোর্টে পণ্য উঠা-নামাসহ সব কার্যক্রম।
সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলা হিলি কাস্টমস সি অ্যান্ড এফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রহমান লিটন জানান, সোমবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশ ফেব্রুয়ারি উদযাপন করা হচ্ছে। সারা বিশ্বেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। এই উপলক্ষে বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যবসায়ীরা আজ হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি, বন্দরের অভ্যন্তরে পণ্য উঠা-নামাসহ কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
মঙ্গলবার থেকে পুনরায় বন্দরের সব কার্যক্রম শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
ওমিক্রন আতঙ্কে হিলি স্থলবন্দর ও ইমিগ্রেশনে সতর্কতা
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বন্ধ চাল আমদানি
ভারতে পাচারকালে স্বর্ণের বার জব্দ, হিলিতে আটক ১
২ বছর আগে
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের প্রতি জাতির শ্রদ্ধা নিবেদন
অমর একুশ, ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জাতি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন।
মহান ভাষা আন্দোলন জাতির ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। যার লক্ষ্য ছিল মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নিজস্ব-সত্তা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষা করা।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিবসটি উপলক্ষে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম রবিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী রবিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে মিনিটে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আরও পড়ুন: শহীদ মিনারে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার স্বীকৃতি অর্জনের জন্য প্রাণ দিয়েছেন যারা তাদের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন দেশের আপামর জনতা।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করে। এ সময় পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসাবে উর্দু চাপিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে ঢাকার ছাত্র ও সাধারণ জনগণ রাস্তায় নেমে আসেন।
১৯৫২ সালের আজকের এই দিনে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা মিছিল নিয়ে বের হলে পুলিশের গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরও কয়েকজন বীর সন্তান নিহত হন।
ভাষা আন্দোলনের রক্তপাতের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বে জাতি স্বাধীনতা অর্জন করে।
১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বে এই দিবসটি পালিত হয়।
আরও পড়ুন: প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষাকে এগিয়ে নিতে কন্টেন্টের মান নিশ্চিত করতে হবে: মোস্তাফা জব্বার
আজকে দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয় এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়।
অন্যদিকে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ছায়ানটসহ অন্যান্য সংগঠন দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে। সরকারি ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল, রেডিও স্টেশন ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
বিকাল ৪টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে বিশেষ বক্তব্য দেবেন অধ্যাপক মেসবাহ কামাল।
অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের শিল্পীরা আবৃত্তি পরিবেশন করবেন এবং অনুষ্ঠানটিতে গারো কালচারাল একাডেমির গানের পরিবেশনা এবং আদিবাসী নৃত্যদল কালারস অফ হিল-এর নৃত্য আবৃত্তিও পরিবেশিত হবে।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শিল্পকলা একাডেমি তার জাতীয় নাট্যশালায় ‘বিশ্বের সব দেশে মাতৃভাষা রক্ষা করবে বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের অংশগ্রহণ থাকবে।
আরও পড়ুন: মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণ কেন জরুরি?
দেশের স্বনামধন্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট রাত ৮টায় ফেসবুক ও ইউটিউবে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান ‘ফাগুন মাসের আগুন’ সম্প্রচার করবে। যেখানে গান, আবৃত্তি ও একটি বিশেষ তথ্যচিত্র উপস্থাপনা থাকবে।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে রবিবার পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘অমর একুশের চেতনা এখন বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার মানুষের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অনুপ্রেরণার এক অবিরাম উৎস।’
এতে আরও বলা হেয়, ‘বিশ্বের অনেক ভাষাই বর্তমানে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। একটি ভাষার বিলুপ্তি মানে পৃথিবীর মুখ থেকে একটি সংস্কৃতি, একটি জাতি ও একটি সভ্যতার বিলুপ্তি। সুতরাং বিশ্বের জনগণকে তাদের নিজ নিজ মাতৃভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশসহ সব জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার জন্য তাদের আওয়াজ তুলতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এবারের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রতিপাদ্য – ‘বহুভাষিক শিক্ষার জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার: চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ’ – খুবই উপযুক্ত; কারণ সরকার দীর্ঘদিন ধরে একটি ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি, বিপন্ন ভাষা সংরক্ষণ এবং তাদের মর্যাদা রক্ষার উদ্যোগ নিয়েছি এবং তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করেছি।’
২ বছর আগে
শহীদ মিনারে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘অমর একুশে’- আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস উপলক্ষে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী রবিবার দিবাগত রাত ১২টা ১মিনিটে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আরও পড়ুন: বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রীর
দেশের প্রাণবন্ত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে দিন: শেখ হাসিনা
উন্নয়নের জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অপরিহার্য: শেখ হাসিনা
২ বছর আগে
মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণ কেন জরুরি?
যোগাযোগের চিরায়ত মাধ্যম ভাষা মানুষকে পরস্পরের সঙ্গে মনের ভাব প্রকাশে সহায়তা করে। কিন্তু যখন শিক্ষা গ্রহণের প্রশ্ন আসে, তখন ভাব বিনিময়ের প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি সেখানে আরও কিছু নির্ণায়ক জুড়ে যায়। যুগ যুগ ধরে বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা পদ্ধতির বিকাশের চাকার ঘূর্ণনকে নানা দিকে বদলেছেন বিশ্ব শিক্ষার নীতি নির্ধারকগণ। সব কিছুকে ছাপিয়ে বারবার যে বিষয়টি এই অগ্রগতির রূপরেখায় অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়েছিল, তা হলো মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণের গুরুত্ব। এই পরিপ্রেক্ষিতেই মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণের গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক তুলে ধরা হলো এই ফিচারে।
সামঞ্জস্য বিধানের সহজাত দক্ষতা
স্কুলে যেয়ে একটি শিশু যখন তার পরিবারের লোকদের বলা কথাগুলোই শুনতে ও বুঝতে পারে, তখন তার ভেতরে ইতোমধ্যে সংরক্ষিত শব্দগুলো দিয়ে স্কুলের শেখানো শব্দগুলোর সামঞ্জস্য বিধান করতে পারে। ভিন্ন ভাষার শব্দ হলে তখন তার এই সামঞ্জস্য করার দক্ষতা বিলম্বিত হয়। প্রতিটি শিশুর ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য। শিশুর যাচাই করার ক্ষমতার এই প্রাথমিক স্তরে কাঠামোর ভিত্তি গড়তে তাই প্রয়োজন তার মস্তিষ্কে তার মাতৃভাষার শব্দগুলোর প্রবেশ ঘটানো।
আরও পড়ুন: বর্ণিল আয়োজনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
অনুশীলনের সুবিধা
পরিবারের গণ্ডিতে যে কথ্য ভাষায় তিন থেকে চার বছর শিশুটি লালিত হয়, সে ভাষাটি স্কুলেও পেলে শিক্ষক ও বন্ধু-বান্ধবদের সাথে তা নিয়ে তার অন্তর্নিহিত ভাবগুলো অনায়াসেই প্রকাশ করতে পারে। তাছাড়া স্কুলে দেয়া হোমওয়ার্কগুলো বাবা-মার সহায়তায় বাসায় চর্চার সুবিধা তো আছেই। বিশেষত নতুন কোন কিছু বা জটিল বিষয়গুলো শেখার ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে বেশি কাজে দেয়। আশেপাশের মানুষদের সাথে ভাব বিনিময়ের মাধ্যমে অনুশীলনের ফলাফল হিসেবে অনুশীলনকৃত বিষয়টির ঠিক-বেঠিক নির্ণয়ে মাতৃভাষা সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
সৃজনশীলতার সহায়ক
শিশুটির মস্তিষ্ক যখন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ শব্দভান্ডারে বিকশিত হয়, তখন সময় আসে সে সেগুলো নতুন করে ব্যবহার করতে পারছে কিনা তা যাচাই করে দেখার। অবশ্য এটি বিভিন্ন শিশুর মধ্যে তার পরিবেশ ও শিক্ষা গ্রহণের ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন সময়ে পরিলক্ষিত হয়। তবে জীবনের প্রাথমিক স্তরে মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণ শিশু মস্তিষ্কে সৃজনশীলতার বীজ বুনতে সাহায্য করে। এমনকি, এর ওপর নির্ভর করে শিশুর স্বাভাবিক মানসিক ক্রমবিকাশ পরিচালিত হয়। এর পরিধি কয়েকটি বর্ণ মিলিয়ে একটি শব্দ গঠন থেকে শুরু করে নতুন অনুভূতি প্রকাশ করা পর্যন্ত বিস্তৃত।
আরও পড়ুন: ২০২২ সালে একুশে পদক পাবেন ২৪ বিশিষ্ট নাগরিক
সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখার প্রয়োজন
সংস্কৃতির মধ্যে নিহিত থাকে প্রতিটি মানুষের শিকড়। আর এর উপরেই মাটি ভেদ করে আকাশের দিকে ধীরে ধীরে ডালপালা গজাতে শুরু করে মূল্যবোধের বৃক্ষটির। ব্যক্তির আচার-আচরণ থেকে শুরু করে ভুল-শুদ্ধ নিরূপণের ভীত রচনা করার মোক্ষম হাতিয়ার সংস্কৃতি। মাতৃভাষা শুধু এই হাতিয়ার বানাতেই সাহায্য করে না বরং একজন পরিণত মানুষের জন্য এই হাতিয়ারকে শাণীত রাখার একমাত্র মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। ফলশ্রুতিতে নিজ গোষ্ঠী ও প্রথাগুলোকে মর্যাদাপূর্ণ করার পাশাপাশি ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের সঙ্গেও পারস্পরিক লেনদেনের উৎস উন্মোচিত হয়।
মাতৃভাষায় শিক্ষা পদ্ধতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত
পাঠ্যক্রমগুলোতে মাতৃভাষার দারুণ প্রয়োগ দেখা যায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। জাপান, জার্মানি, ও ফ্রান্স বিভিন্ন চড়াই-উৎড়াইয়ের পরেও দেশ গঠনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের মাতৃভাষা প্রয়োগ থেকে বিরত থাকেনি। বরং সারা বিশ্বের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাব্রত পালন করতে এই দেশগুলোতে ভীড় জমানোর সময় তাদের মাতৃভাষা শেখায় গুরুত্ব দেয়।
আরও পড়ুন: গ্রাফিক নভেল ‘মুজিব’ ইতিহাসের এক অসাধারণ দলিল: জাফর ইকবাল
বলিভিয়ার জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ আদিবাসী হওয়ায়, বলিভিয়ান ক্যাম্পেইন ফর দ্য রাইট টু এডুকেশন (সিবিডিই) অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা পদ্ধতি অনুসরণ করে। ২০১০ সালে বলিভিয়ার জাতীয় শিক্ষা কার্যক্রম প্রত্যেক শিশুকে স্প্যানিশ ছাড়াও একটি আদিবাসী ভাষা এবং সংস্কৃতি শেখার বিধান জারি করে।
জিম্বাবুয়ে স্কুল পরীক্ষা পরিষদ আদিবাসী ভাষা শিক্ষায় উৎসাহিত করতে সংখ্যালঘু ভাষায় পরীক্ষা চালু করেছে।
আরও পড়ুন: রাজু ভাস্কর্যের সামনে নৃত্যরত ইরা: সপ্রতিভ উত্থানে এক বাংলাদেশি ব্যালেরিনা
২০১৬ সালে মাদাগাস্কারের আনালাভরি কমিউনের একটি স্কুল তাদের মাতৃভাষা মালাগাসিতে লেখা গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর এডুকেশন (জিপিই) থেকে ৫৪টি পাঠ্যপুস্তক পেয়েছে। এগুলো শিশুদেরকে তৃতীয় গ্রেড পর্যন্ত তাদের মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণের সুবিধা দিয়েছে। চতুর্থ শ্রেণি থেকে তারা দেশের দ্বিতীয় সরকারী ভাষা ফরাসি শেখা শুরু করে।
২০১৪ সালে জিপিই-এর ৩৫ দশমিক দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদানের একটি অংশ দেয়া হয়েছিলো জাম্বিয়ার চাভুমা জেলায়। এতে করে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিশুরা তাদের মাতৃভাষা লুভালে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। সে বছর থেকে জাম্বিয়ান প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো গণিত সহ উচ্চতর পরীক্ষায় ক্রমাগত সাফল্য পেয়ে আসছে।
আরও পড়ুন: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আফসান চৌধুরীসহ ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার পেলেন ৬ লেখক
১২৩ টিরও বেশি ভাষা থাকলেও নেপালি ভাষা নেপালের স্কুলগুলোর প্রধান ভাষা। ২০১৫ সালে নেপালি মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণের জন্য নতুন সংবিধান চালু করা হয়।
শেষাংশ
শুরুটা হোক মাতৃভাষায়- এই দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে শিক্ষা লাভের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে একটি নিরবচ্ছিন্ন গতি দেয়া যেতে পারে। সেই সঙ্গে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রগুলোতে জাতীয়ভাবে যথাযথ সুযোগ-সুবিধার প্রণয়নে মাতৃভাষার পেশাগত মর্যাদার পাশাপাশি বজায় থাকবে সাংস্কৃতিক উন্নয়নের ধারা। বিদেশি ভাষা বয়কট নয়; বরং বিশ্ব দরবারে মাতৃভাষাকে সমুন্নত করতেই বিদেশি ভাষা শিক্ষার নিমিত্তে মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করতে হবে।
আরও পড়ুন: লিটল ম্যাগাজিন প্রদর্শনীর সময় বাড়ল
২ বছর আগে
মাতৃভাষা যথাযথভাবে শিখতে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার মাতৃভাষা শেখার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন যা ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে রক্ষা করে।
৩ বছর আগে