বৈশাখ
পহেলা বৈশাখ উদযাপনে প্রস্তুত ঢাবি
বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ এর সূর্যোদয় হতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম মামের প্রথম দিন উদযাপনে প্রস্তুত দেশবাসী।
প্রতি বছরের মতো এবারও বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানাতে বর্ণিল আয়োজনে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আর এজন্য রবিবার সকাল সোয়া ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হবে।
আরও পড়ুন: চালের বস্তায় লিখতে হবে ধানের জাত ও মিল গেটের মূল্য
এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার থিম নির্ধারণ করা হয়েছে 'আমরা তো তিমিরবিনাশী'।
শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
শোভাযাত্রাটি শাহবাগ মোড় ও শিশু পার্ক সংলগ্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে গিয়ে শেষ হবে।
মঙ্গল শোভাযাত্রার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ উপলক্ষে জয়নুল গ্যালারিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন দিক নির্দেশনা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল।
সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন তিনি। চারুকলা অনুষদ থেকে যথাসময়ে শোভাযাত্রা শুরু হবে।
নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আগামী ১৩ এপ্রিল (শনিবার) সন্ধ্যা থেকে এবং পহেলা বৈশাখের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত যানবাহন ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
শোভাযাত্রা চলাকালীন কাউকে উৎসবের মাস্ক পরতে দেওয়া হবে না। তবে অংশগ্রহণকারীদের হাতে উৎসবের মাস্ক বহন করার অনুমতি দেওয়া হবে।
শোভাযাত্রার সময় কোনো ধরনের বাঁশি বা ভুভুজেলা ব্যবহার না করারও পরামর্শ দেন উপাচার্য।
আরও পড়ুন: পহেলা বৈশাখ উদযাপনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ডিএমপির
পহেলা বৈশাখ উদযাপনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ডিএমপির
৭ মাস আগে
চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড
বৈশাখের প্রথম দিনেই অসহনীয় তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। শুক্রবার বেলা ৩টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে।
এনিয়ে টানা ১৩ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এ জেলায় রেকর্ড করা হলো।
গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া তীব্র তাপপ্রবাহ এখন আরও তীব্র হচ্ছে।
এই টানা তাপপ্রবাহে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে জনজীবন। তীব্র তাপদাহে এ জেলার খেটে খাওয়া মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে। তীব্র গরম ও রোদের তাপের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশা চালকরা কাজ করতে না পেরে অলস সময়ও পার করছে।
আরও পড়ুন: সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে: আবহাওয়া অধিদপ্তর
একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠান্ডা পরিবেশে স্বস্তি খুঁজছে সব শ্রেণির মানুষ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা-ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে। আবার অনেকে জরুরি প্রয়োজন ও জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড দাবদাহ উপেক্ষা করে কাজে বের হচ্ছেন।
অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকে। জেলা সদরের হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও বেড়েছে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী রোগীর সংখ্যা।
চুয়াডাঙ্গা গুলশানপাড়ার বাসিন্দা গৃহিণী নারগিস আক্তার বলেন, এতো তাপে ঘর থেকে বের হতে পারছি না। রান্না-বান্না করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ইফতারের পরে রোদ আর তাপ কমলে চুলার পাড়ে যাবো।
চুয়াডাঙ্গা সদরের কুলচারা গ্রামের শফিউল বলেন, 'এত তাপ সহ্য করা কঠিন। জমিতে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারলাম না। এখন ছায়ায় বসে আছি। আজ কাজ শেষ করতে দেরি হবে। যে গরম পড়ছে, আর কাজ করতে পারব কিনা জানি না।'
একই গ্রামের তাপস দাস বলেন, ধানে এখন শিষ বের হয়েছে, কিন্তু প্রচণ্ড রোদে তা পুড়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন পানিও দেওয়া লাগছে। যেখানে আগে সপ্তাহে দুদিন পানি দিলেই চলত। এখন প্রতিদিন দিতে হচ্ছে। তারপরও কি হবে বলা যাচ্ছে না।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সড়কের বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবি এমদাদুল হক এমদাদ বলেন, মোটরসাইকেলযোগে বিভিন্ন স্থানে মার্কেটিংয়ের কাজ করি। মোটরসাইকেল চালালে বাতাসে স্বস্তির লাগলেও আজ রোদের প্রখরতার কারণে মনে হচ্ছে গরম হাওয়ায় পুড়ে যাচ্ছে শরীর। রোজায় আছি। এই গরমে গলা-বুক যেন শুকিয়ে আসছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, গত ২ এপ্রিল ৩৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়। যা ছিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
এরপর থেকে আজ পর্যন্ত একটানা ১৩দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এ জেলায় রেকর্ড করা হচ্ছে। গত ৩ এপ্রিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৪ এপ্রিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৫ এপ্রিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৬ এপ্রিল ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৭ এপ্রিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৮ এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৯ এপ্রিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১০ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ১১ এপ্রিল অর্থাৎ গত মঙ্গলবার ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১২ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১৩ এপ্রিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও আজ ১৪ এপ্রিল ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, আজ ১৪ এপ্রিল দুপুর ৩টায় দেশের ও এই মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে। এটি এই মৌসুমের ও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এছাড়া গত ২ এপ্রিল থেকে আজ ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এই চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড হলো। আপাতত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। ফলে এই তাপমাত্রা আরও বাড়বে। আর আজ থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড
দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে: আবহাওয়া অধিদপ্তর
১ বছর আগে
মাচায় ঝুলছে কৃষকের স্বপ্ন!
গাইবান্ধায় পটলের বাম্পার ফলন হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ার কারণেই ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে দরও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। এতে পটল চাষে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে কৃষক।
জেলা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাদুল্লাপুর, পলাশবাড়ী, গোবিন্দগঞ্জ, সাঘাটাসহ সাত উপজেলার অনেক জমিতেই এ বছর পটল চাষ হয়েছে। কার্তিক মাসে জমিতে মাচা করে লাগানো পটলের সারিসারি খেত দেখলে কৃষকসহ সকলের মন ভরে ওঠে। মাচায় মাচায় ঝুলছে কৃষকের স্বপ্ন।
গাইবান্ধা ঘাগোয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুজ্জামান রিংকু বলেন, রাস্তার দু’পাশে যতো দূর চোখ যায় পটলসহ সাথী ফসলের খেত । শুধু পটল নয় একই মাচায় ঝুলছে চিচিংঙ্গা, ধুন্দল, করলাসহ নানা জাতের সাথী ফসল। গাইবান্ধার যমুনা নদীর তীরবর্তী এলাকা গিদারী , ঘাগোয়া , মালিবাড়ি, লক্ষ্মীপুর খোলাহাটি , রুপারবাজার জুড়ে, সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাট , রসুলপুর , জামালপুর। এসব এলাকায় হাট বসে কয়েক জায়গায়। হাট থেকে পাইকাররা ট্রাক ভর্তি করে কিনে নিয়ে যান।
আরও পড়ুন: গরমে ঠাকুরগাঁওয়ে কদর বেড়েছে তালশাঁসের
পটল চাষী আলতাফ হোসেন জানান, মাচায় যে পটল হয়েছে। ৪৩ হাজার টাকার পটল বিক্রি করেছি তারপরেও আরও অন্তত ৬০ হাজার টাকার পটল বিক্রি করতে পারবো । তাতে খরচ বাদ দিয়ে আমার লাভ হবে অন্তত ৮৫ হাজার টাকা ।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেজা ই মাহমুদ জানান, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ, কোচাশহর, গুমানীগঞ্জ , তালুক কানুপুর, হরিরামপুর, দরবস্ত , শালামারা ইউনিয়নের জমিতে জমিতে সবুজের সমারোহ। তিনি বলেন, উপজেলা সদরে হাট বসে পটলের। এই পটল কেনার জন্য দূরদুরান্ত থেকে পাইকাররা আসেন। তারপর বস্তা ভরে ট্রাকে করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি হয়।
কৃষি কর্মকর্তা বলেন, চৈত্র, বৈশাখ মাস থেকে পটল উঠানো শুরু হয়। অনুকূল আবহওয়ায় এবছর পটলের ফলন ভালো হওয়ার পাশাপাশি বাজার দর ভালো পাওয়ায় লাভবান হয়েছেন চাষীরা। প্রতি কেজি খুচরা বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
আরও পড়ুন: চলতি মৌসুমে ফরিদপুরে সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন
পটল চাষী মোহাম্মেল হোসেন জানান, তিনি এবার তার ৫ বিঘা জমিতে পটল চাষ করেছেন। পটল চাষে ঝামেলামুক্ত এবং অল্প খরচেই হয় বলে এ আবাদ বেশী লাভজনক। পটল মানেই নগদ টাকার আবাদ। লাভের অংশ বেশি হওয়ায় প্রতিবছরই কৃষকদের মাঝে পটল চাষের আগ্রহ বাড়ছে। আতিমাত্রায় বৃষ্টি বা বন্যা না হওয়ায় অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে পটল আবাদ হয়েছে। এক বিঘার জমি থেকে সপ্তাহে ৮ থেকে ১০ মণ পর্যন্ত পটলের উৎপাদন হচ্ছে। এছাড়াও পটলের মধ্য আদা, কাঁচা মরিচ, হলুদ, আদা, মুখী কচু আবাদ করছেন। বিক্রি করেও নিজের চলে যায়।
ব্যাপারী আহম্মেদ আলী এসেছেন ঢাকা থেকে পটল কিনতে। হাটবারে পটল কিনে রাতেই নিয়ে যাবেন। তিনি বলেন ,উৎপাদনের শুরুতেই বাজারে প্রতিমণ পটল এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখনও তা এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আমরা কম লাভে আড়তে বিক্রি করি। কাঁচামালের ব্যবসা ভালো মন্দ দুই আছে। সে কারণে প্রতিদিন কিনি প্রতিদিন বিক্রি করি।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বেলাল হোসেন জানান, এবার জেলায় ৪শ’ ৮১ হেক্টর পটলের চাষ হয়েছে। হেক্টর প্রতি ফলন ২০ মেট্রিক টন। সরকার এ সবজির ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে পারলে এ চাষ আগামীতে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন চাষীরা।
আরও পড়ুন: হালদায় আশানুরূপ মাছের ডিম মিলছে না
২ বছর আগে
ব্রাসিলিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসে ঈদ ও বৈশাখ উদযাপন
যথাযোগ্য মর্যাদায় বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ব্রাসিলিয়া বাংলাদেশ দূতাবাসে ঈদ পুনর্মিলনী ও বৈশাখী উৎসব উদযাপিত হয়েছে। দূতাবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
সম্প্রতি দূতাবাস প্রাঙ্গনে উপস্থিত ব্রাজিলে বসবাসরত প্রবাসী ও ব্রাজিলিয় অতিথিদের সঙ্গে ঈদ ও নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা।
আরও পড়ুন: আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাসে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত
দূতাবাস পরিবার এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর মতবিনিময়ের আগে রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে সকলের মাঝে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তা পৌঁছে দেন এবং প্রবাসীদের যেকোনো প্রয়োজনে দূতাবাস সর্বদা পাশে থাকবেন এ মর্মে নিশ্চয়তা দেন।
এছাড়া রাষ্ট্রদূত ব্রাজিলে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সততা ও নিষ্ঠার প্রশংসা করে মানবপাচারসহ সকল প্রকার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে তাদের দূরে থাকার আহ্বান জানান।
২ বছর আগে
ইলিশ নিয়ে কথকতা
ইলিশ নিয়ে অতি পুরাতন রূপকথাসম এক কল্পকাহিনী দিয়ে শুরু করা যাক। একদিন নদীর পাড়ে বসবাসকারী এক হরিণের সাধ হলো ইলিশের সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায় নামার। ইলিশকে বলতেই সে রাজি হয়ে গেল। শর্ত ছিল যে হারবে তার শরীরের এক টুকরো বিজয়ীকে দিতে হবে। তীব্র সেই প্রতিযোগিতায় জয় হলো ইলিশের। হার মেনে নিল হরিণ। নিজের শরীর থেকে কিছুটা মাংস পুরস্কার হিসেবে ইলিশের গায়ে তুলে দিল। সেই থেকেই ইলিশ মাছ তার শরীরের গাদার অংশে গর্বভরে বয়ে বেড়াচ্ছে হরিণের মাংস। সেই ছোটবেলা থেকেই দাদী-নানীর কাছ থেকে এই কাহিনী শুনেই বড় হয়েছি। আজও ইলিশের গায়ে সেই হরিণের মাংসের দেখা মেলে!
এই গল্প থেকে একটা কথা পরিস্কার হলো যে ইলিশ গভীর জলের অতি দ্রুত গতির মাছ। ইলিশ তার জীবনকালে অধিকাংশ সময় সাগরে থাকলেও ডিম ছাড়ার সময় হলে সাগর থেকে (আমাদের দেশের বেলায় বঙ্গোপসাগর) চলে আসে মিঠা পানির নদীতে। বঙ্গোপসাগর থেকে প্রথমে মেঘনা, সেখান থেকে পদ্মা। কখনো ধীরে, কখনো বা দৌড়ে চলে একেবারে আরিচাঘাট পর্যন্ত। এই চলার পথে মিঠা পানির সংস্পর্শে ইলিশের গা থেকে নোনা বিলীন হতে থাকে।
কাজেই ইলিশ ডিম ছাড়ার সময় ও পরে যত বেশিদূর উজানে দৌড়াবে তত বেশি তার স্বাদ হবে। তার আকার পরিবর্তন হবে, দেখতে হবে নাদুস-নুদুস, অতি আকর্ষণীয়। বলা হয় নদীর পলিমাটি, বিশেষ করে পদ্মার মাটি না খেলে ইলিশের শরীরে তেল জমে না, স্বাদও হয় না। এ কারণেই পদ্মার ইলিশের যে অনুপম স্বাদ তা অন্য কোন নদীর ইলিশে পাওয়া যায় না।
দুঃখের বিষয় পদ্মা নদীতে এখন আর ইলিশ তেমন পাওয়া যায় না। সাগর মুখেই এখন জেলেরা ইলিশ ধরে নেয়। সাগরস্থল পেরিয়ে মেঘনায় যখন আসে সেখানেই তার যাত্রা শেষ হয়ে যায়। পদ্মা নদীতে আসার তেমন সুযোগ হয় না। কাজেই মাওয়া ঘাটে বা ঢাকার বাজারে পদ্মার ইলিশ বলে যে মাছ গ্রাহকের থলিতে গছিয়ে দেয়া হয় তার প্রায় পুরোটাই ফাঁকি।
আমরা যারা পদ্মা পাড়ের মানুষ, তারা জানি কোনটা কোন নদীর মাছ। ছোটবেলায় প্রথম যেদিন একা একা মাছ কেনার জন্য গ্রামের বাজারে গিয়েছিলাম, তার আগে পদ্মার ইলিশ সঠিকভাবে চেনার তালিম দেয়া হয়েছিল।
ছোট মুখ, চওড়া পিঠ এটাই হলো পদ্মার ইলিশের প্রধান চেহারা। মেঘনাসহ অন্য নদীর মাছ লম্বাটে মুখ, লম্বা দেহ নধরকান্তি হবে না। মাছ কিনে দুরু দুরু বুকে মায়ের মাছ কাটার বটির সামনে দাঁড়াতাম পরীক্ষার ফল প্রকাশের জন্য। বটিতে এক কোপ দিতেই মা বুঝে ফেলতেন এটা পদ্মার মাছ কিনা। পদ্মার মাছের ঘ্রাণও ভিন্নতর। সেটা রান্নার আগেও। আর ইলিশ যদি সত্যি পদ্মার হয় তবে সে রান্না করার সময়ই পাড়া-প্রতিবেশীদের জানান দেয়। এক ঘরে ইলিশ রান্না হলে তার ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের বারো ঘরে। আজ কি আমরা সেই ঘ্রাণ পাই? আমরা যারা পদ্মা পাড়ের বা পদ্মার কাছকাছি এলাকার মানুষ তাদের মুখে পদ্মার ইলিশ না হলে রসনার তৃপ্তি হয় না। ইলিশ খাব তো পদ্মার ইলিশই খাব। সেই পদ্মাও নেই, নেই তার ইলিশও। কাজেই ইলিশ এখন আর মুখে রোচে না।
ইলিশ নিয়ে আমাদের দেশে অনেক ধাপ্পাবাজি আছে। পদ্মার ইলিশ খাওয়ানোর কথা বলে হোটেল-রেস্তোরাঁয় চলছে ক্রেতাদের পকেট কাটার উৎসব।
পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ বাংলার সংস্কৃতি বলে বিজ্ঞাপনের ঝলক তুলে চলছে ঠগবাজির বাণিজ্য। অনলাইনে, সুপারশপে, বাজারে, ফুটপাতে, ভ্যানে এই ভরা মৌসুমে ইলিশের ছড়াছড়ি। কেজি প্রতি মূল্য ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকা। মজার ও বেদনার ব্যাপার হলো, এরা সবাই বলে: ‘নিয়ে যান, এটা পদ্মার ইলিশ।’ এমন কী নয়া দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কে বাঙালি প্রধান এলাকার মাছের বাজারে ঘটা করে সাইন বোর্ড টাঙ্গানো আছে, এখানে পদ্মার ইলিশ পাওয়া যায়। দেড় কেজি কিংবা তারও চেয়ে বেশি ওজনের লোভনীয় আকারের ইলিশ মেলে সেখানে। চার বছর দিল্লি বাসে বহুবার সেই মাছের বাজারে গিয়েছি। তবে পদ্মার ইলিশের সেই ফাঁদে পা দেইনি।
জানি, পদ্মা নদীতে আর তেমন ইলিশ আসবে না। জানি ইলিশের মৌ মৌ সেই ঘ্রাণ পাড়াজুড়ে আর কখনো ছড়িয়ে পড়বে না। তবু ইলিশের নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে পদ্মা। সেটাই আমাদের বড় প্রাপ্তি।
ফরিদ হোসেন: উপদেষ্টা সম্পাদক, ইউএনবি
আরও পড়ুন: কমছে পদ্মার ইলিশ, বাড়ছে দাম
বাণিজ্যিকভাবে ইলিশ রপ্তানির পরিকল্পনা নেই: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
নিষেধাজ্ঞা শেষে পদ্মায় ইলিশ শিকারে গিয়ে হতাশ জেলেরা
৩ বছর আগে
কোভিড-১৯: পহেলা বৈশাখ উদযাপনে সরকারের নিষেধাজ্ঞা
কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ রোধে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বাংলা নববর্ষ উদযাপনে কোনোভাবেই জনসমাগম করা যাবে না বলে সরকার জানিয়েছে।
তবে১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ ১৪২৮ এর অনলাইন উৎসবকে স্বাগত জানিয়েছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
ছয় শতাব্দী আগে শুরু হওয়ার পর থেকে পহেলা বৈশাখ উদযাপন বাঙালি সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে পালিত হয়।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যবিধি না মানলে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসবে না: মন্ত্রী
বুধবার মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বর্তমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক জারি করা নির্দেশনা অনুসরণপূর্বক জনসমাগম হয় এমন অনুষ্ঠান পরিহার করে সম্ভব হলে অনলাইন বা ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য অনুরোধ জানানো হলো। কোনো অবস্থাতেই জনসমাগম করা যাবে না।
কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে জনসমাগম এড়াতে গত বছরও সব কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: জনগণের উদাসীনতার মাঝেই দেশে লকডাউনের ২য় দিন শুরু
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ও মৃত্যু ঊর্ধ্বগতি রয়েছে।
গত বছরের মার্চ মাসে প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে বুধবার সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৬২৬ জন আক্রান্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় এই ভাইরাসে আরও ৬৩ জন মারা গেছেন।
যদিও জনগণের চলাচল, দোকানপাট, শপিংমল এবং গণপরিবহন বন্ধ রেখে সরকার সোমবার থেকে সাত দিনের লকডাউন চলছে। কিন্তু লকডাউন পালনে জনগণের মধ্যে অনীহা দেখা যাচ্ছে, যা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন: লকডাউনের তৃতীয় দিন: আন্তনগর বাস চলছে
এছাড়াও, লকডাউন শুরুর দুদিন পর বুধবার গণপরিবহন চলাচল আবার শুরু হয়েছে। সরকার সিটি করপোরেশনভুক্ত এলাকায় যাত্রীদের জন্য গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দিয়েছে।
৩ বছর আগে