মৎস্য বিভাগ
কক্সবাজার উপকূলে ভেসে এসেছে বিশাল মৃত তিমি
কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে বিশালাকার একটি মৃত তিমি ভেসে এসেছে। মঙ্গলবার (৮এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে সৈকতের মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন হিমছড়ি পয়েন্টে তিমিটি ভাসতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: আবারও কক্সবাজারের সৈকতে বিশাল মৃত তিমি
খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, বন বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তাসহ জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে যান।
কক্সবাজার পর্যটক সেলের ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। মৃত তিমিটি পচে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়াতে পারে। তাই এটিকে তীরে এনে গর্ত করে পুঁতে ফেলার সিন্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের একই এলাকায় দুটি মৃত তিমি ভেসে আসে।
আরও পড়ুন: নিউজিল্যান্ডে তিমির সঙ্গে ধাক্কা লেগে নৌকাডুবে নিহত ২, নিখোঁজ ৩
সৈকতে ভেসে এলো বেলিন প্রজাতির মৃত তিমি!
১ বছর আগে
বাগেরহাটে ধরা পড়ছে না ইলিশ, হতাশ জেলেরা
বঙ্গোপসাগরে পশুর এবং বলেশ্বর নদীর মোহনায় বেহুন্দিসহ নানা ধরনের জাল পেতে রাখার কারণে ইলিশ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। ঝাঁক বেঁধে ইলিশ নির্বিগ্নে উপকূলের নদ-নদীতে প্রবেশ করতে পারছে না। এতে করে সাগর এবং নদ ও নদীতে ইলিশের প্রাচুর্য কমে গেছে। সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ইলিশের ওপর পড়েছে।
বিচরণ কমে যাওয়ায় জেলেরা জাল ফেললেও কাঙ্খিত ইলিশ ধরা পড়ছে না। ট্রলারের সক্ষমতা না থাকায় এই অঞ্চলের জেলেরা গভীর সাগরে যেতে পারেনা। ফলে উপক‚লীয় জেলা বাগেরহাটের পাইকারি মাছের আড়তে ইলিশের সরবারহ অনেক কমে গেছে। এ অবস্থায় জেলে, ট্রলার মালিক, আড়তদার এবং ইলিশ ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
এদিকে, মাছের প্রজননের সময় কেবলমাত্র বাংলাদেশে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণায় আপত্তি জানিয়ে বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে সাগরে অবরোধের দাবি করেছেন সুন্দরবন অধ্যুষিত উপকূলীয় বাগেরহাট জেলার জেলেরা। তবে প্রজনন বাড়াতে নদ ও নদীতে মাছ ধরা বন্ধ রাখার পক্ষে মৎস্য বিভাগ।
অপরদিকে, জেলা মৎস্য বিভাগ এবং সুন্দরবন বিভাগ সাগর মোহনায় ইলিশ বাধাগ্রস্ত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে।
বাগেরহাট অঞ্চলের জেলে ও ট্রলার মালিকরা বড় বড় টোলিং জাহাজ বন্ধ এবং ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সাগরে বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ অবরোধের দাবি জানিয়েছে। জেলেদের অভিযোগ, ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশ জলসীমায় প্রবেশ করে ইলিশ ধরে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: স্কুলশিক্ষকের তৈরি ভাসমান সেতুতে দুর্ভোগের অবসান হলো গ্রামবাসীর
মৎস্য বিভাগ বলছে, সুন্দরবন মাছের অনেক বড় প্রজনন ক্ষেত্র। এজন্য গোটা সুন্দরবনের নদ-নদীতে সারা বছর জুড়ে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করা গেলে ইলিশসহ সব ধরনের মাছের উৎপাদন কয়েকগুন বেড়ে যাবে।
সুন্দরবন বন বিভাগ জানায়, গোটা সুন্দরবনে সারা বছর মাছ আহরণ বন্ধ রাখতে হলে আগে জেলেদের বিকল্প কর্মস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
শনিবার বাগেরহাট কেবি বাজার পাইকারি মৎস্য আড়তে গিয়ে দেখা গেছে, ইলিশ নিয়ে কোনো ট্রলার ঘাটে ভেড়েনি। ট্রলার শূন্য আড়তের ঘাট। আড়তে ইলিশ নেই বললেই চলে। সামান্য পরিমাণ ইলিশ ছিল যা কোল্ডস্টোর থেকে আড়তে তোলা হয়েছে। তবে আড়ত জুড়ে ইলিশের ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে।
২ বছর আগে
মেঘনায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরায় ৪৫ জেলে আটক
ভোলার মেঘনা নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরার অপরাধে চার ট্রলারসহ ৪৫ জন জেলেকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার ভোর রাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে মৎস্য বিভাগ ও পুলিশ।
আটকদের মধ্যে ১৫ জনকে কারাদণ্ড ও ১৭ জনকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিন ভোলায় ১৫ জেলে আটক, ১২ জনের অর্থদণ্ড
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম জানান, তার নেতৃত্বে ভোলায় ইলিশা ও কাচিয়া এলাকার মেঘনা নদীতে মৎস্য বিভাগ ও পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ শিকার করার সময় ১০টি ট্রলারসহ ২৯ জেলেকে আটক করা হয়। ওই সময় তাদের কাছ থেকে ১০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল,দুটি বেহুন্দি জাল ও প্রায় এক মণ মাছ জব্দ করা হয়।
তিনি জানান, আটক জেলেদের মধ্যে ১৫ জনকে ২০ দিনের কারাদণ্ড ও ১৪ জনকে জরিমানা করেন ভ্রামাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সালে আহমেদ।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে জাটকা ধরায় ২৫ জেলে আটক
এছাড়া তজুমদ্দিন উপজেলায় আটক তিন জেলেকে জরিমানা ও চরফ্যাশন উপজেলার ১৬ জেলেকে আটক করায় হয়েছে বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, ইলিশসহ সব মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভোলার ১৯০ কিলোমিটার এলাকার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে অভয়াশ্রম ঘোষণা করে ১ মার্চ থেকে ৩১ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করে মৎস্য বিভাগ।
আরও পড়ুন: মা ইলিশ ধরার অপরাধে চাঁদপুরে ১৬ জেলে আটক
২ বছর আগে
ভোলায় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইলিশ শিকার: আটক ৩
মা ইলিশ রক্ষায় সরকার ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ভোলার মেঘনা নদীতে মাছ ধরার অভিযোগে তিনজনকে আটক করে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার বিকাল থেকে আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত মৎস্য বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আটক তিনজনকে জেল ও জরিমানা করেন। এছাড়া এ সময় প্রায় ২৭ হাজার মিটার কারেন্ট জাল, এক টন মাছ ও দুইটি নৌকা জব্ধ করা হয়।
দৌলতখান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহাফুজুল হাসনাইন জানান, মঙ্গলবার বিকালে দৌলতখানের মেঘনা নদী থেকে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ শিকারের অপরাধে দুই জেলেকে আটক করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৫ হাজার মিটার কারেন্ট জালও জব্দ করা হয়। পরে আটক জেলে ইউছুফকে এক বছর কারাদণ্ড ও নয়ন নামে আরেক জেলেকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মহুয়া আফরোজ।
আরও পড়ুন: ভোলায় নদীতে ডুবে জেলের মৃত্যু
এদিকে তজুমদ্দিন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন জানান, বুধবার সকালে উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের শশীগঞ্জ মাছ বাজারে অভিযান চালিয়ে হারুন নামে এক মাছ বিক্রেতাকে আইন অমান্য করে নদীর মাছ বিক্রি করায় দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
তজুমদ্দিন উজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মরিয়ম বেগম ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এই অর্থদণ্ড প্রদান করেন। পরে জব্দকৃত মাছ এতিমখানা ও মাদ্রাসায় বিতরণ করা হয়। এছাড়া এ সময় জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়।
এছাড়া ভোলা সদরে আড়াই হাজার মিটার, তজুমদ্দিনে পাঁচ হাজার মিটার, মনপুরায় পাঁচ হাজার মিটার, ও একটি মাছ ধরার নৌকা, চরফ্যাশন উপজেলায় ২৭ হাজার মিটার কারেন্ট জাল, এক টন মাছ ও একটি ট্রলার জব্দ করা হয়েছে। পরে জব্দকৃত অবৈধ জাল পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয় এবং মাছ দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুন: মিতু হত্যা: আসামি ভোলার জামিন
ভোলায় নসিমনচাপায় এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত
৩ বছর আগে
বাগেরহাটে টানা বৃষ্টিতে ভেসে গেল সাড়ে ১৬ হাজার চিংড়িঘের
বাগেরহাটে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে হাজার হাজার চিংড়িঘের আর শত শত পুকুর ডুবে গেছে। ভেসে গেছে চাষিদের স্বপ্নের চিংড়ি, কাঁকড়া আর বিভিন্ন প্রজাতির সাদা মাছ। কোটি কোটি টাকার লোকসানের মুখে পড়েছে চিংড়ি চাষিরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিবছরই নানাভাবে বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে এই জেলার চিংড়িঘেরগুলো। অতিবৃষ্টি, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস, অতিরিক্ত খরা আর ভাইরাসে চিংড়িঘের উজাড় হচ্ছে। এতে করে পুঁজি হারিয়ে অনেক চিংড়ি চাষি এখন সর্বশান্ত হওয়ার পথে। এ অবস্থায় এই অঞ্চলের চিংড়ি চাষিরা হতাশায় ভুগছেন। তাই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে সরকারের কাছে প্রণোদনা চাইলেন চিংড়ি চাষিরা।
আরও পড়ুন: বরিশালে ৩ কোটি টাকার চিংড়ি রেনু জব্দ, ৪ জনকে জরিমানা
বাগেরহাট জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, সম্প্রতি অতিবর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে জেলার ৯ উপজেলার আট উপজেলায় ৯ হাজার চিংড়িঘের, সাত হাজার ৫০০ পুকুর ও ২৭০ কাঁকড়াঘের ডুবে গেছে। ৪৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এসব মৎস্যঘের ও পুকুর ডুবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাকার অংকে ক্ষতির পরিমাণ ১১ কোটি টাকা। তবে চিংড়ি চাষিদের দাবি তাদের ক্ষতির পরিমাণ আরও অনেক বেশি।
জানা গেছে, প্রায় প্রতিবছরই একের পর এক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে চিংড়ি শিল্প। চিংড়ি পোনা সংকট, ঘেরে ভাইরাস, দরপতন আর পানিতে চিংড়ি ভেসে যাওয়ার ঘটনা এখন প্রতিবছরই ঘটছে। এছাড়া প্রায় প্রতিবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগতো লেগেই আছে। সর্বশেষ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে ভারি বৃষ্টিপাত ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটে ৯ হাজার চিংড়িঘের ডুবে গেছে। এর আগে ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জলোচ্ছাসে বাগেরহাট সাড়ে ছয় হাজার মৎস্যঘের ডুবে যায়।
বাগেরহাটের চাষিদের তথ্য মতে, ইয়াসে প্রভাবে তাদের ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
৩ বছর আগে
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে বাগেরহাটে সাড়ে ৬ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে : মৎস্য বিভাগ
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটে ৪ হাজার ৪৭০টি মৎস্য ঘের ও ৪০০ পুকুর ডুবে গেছে। এসব ঘের ডুবে সাড়ে ৬ কোটি টাকা মূল্যের চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাদা মাছ ভেসে গেছে। পুকুর ডুবে অনেক এলাকায় মিষ্টি পানির উৎস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে জেলা মৎস্য বিভাগ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস : খুলনায় অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত
তথ্য অনুযায়ী, বুধবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বাগেরহাটের বিভিন্ন নদীতে বিপদসীমার ১ ফুট ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট পানি বৃদ্ধি পায়। নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন গ্রাম এবং মৎস্যঘেরে পানি ঢুকে পড়ে। পানির চাপে একের পর এক মৎস্য ঘের ও পুকুর ডুবে যায়। এসব ঘের থেকে চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাদা মাছ ভেসে গেছে।
মৎস্য চাষিদের তথ্য মতে, তাদের ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: সাতক্ষীরার ৪৪ পয়েন্টে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম রাসেল জানান, অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটের আট উপজেলায় ৪,৪৭০টি মৎস্য ঘের ও ৪০০ পুকুর ডুবে যায়। এসব মৎস্য ঘের ডুবে সাড়ে ৬ কোটি টাকার চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ভেসে গেছে। বিশেষ করে বাগেরহাটের শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, রামপাল এবং মোংলা উপজেলায় মৎস্যঘের সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে ইয়াসের প্রভাবে ১৬ গ্রাম প্লাবিত
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
৩ বছর আগে
একদিনের ব্যবধানে ভেসে এলো আরও একটি মৃত তিমি
একদিনের ব্যবধানে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের হিমছড়ি পয়েন্টে আরও একটি মৃত তিমি ভেসে এসেছে।
শনিবার ভোরে এই মৃত তিমি সৈকতের বালুচরে দেখতে পায় স্থানীয়রা।
পরে জেলা প্রশাসন, বনবিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিমিটির প্রাথমিক তদন্ত করেন। এই সময় তারা তিমিটির মাপ, ওজন নির্ণয় করেন। সেই সাথে তিমিটির শরীরে আঘাত আছে কিনা তা দেখেন।
মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশরাফুল হক জানান, এই তিমিটিও এর আগের দিন পাওয়া তিমির প্রায় সমান সাইজ। ওজন প্রায় আনুমানিক আড়াই টন। এটি ৪৬ ফুট দৈর্ঘ্য , ডায়া (প্রস্থ) ২০ ফুট ও উচ্চতা ৯ ফুট। আগের দিনের তিমিটি ৪৪ ফুট দীর্ঘ ও ২৬ ফুট ডায়া ছিল।
এর আগে, ৯ এপ্রিল কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মেরিনড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি সৈকতে ভেসে এসেছে বিশালাকৃতির মৃত তিমি। তখনো পুরোপুরি জোয়ারের পানি নেমে যায়নি। জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ার পর পূর্ণ ভাটায় সাগরের বালুতটে পড়ে থাকা মৃত তিমি স্পষ্ট দৃশ্যমান হয়। আনুমানিক ১৬ থেকে ১৭ বছর বয়সী এ তিমি দুইটি হয়তো সপ্তাহ পূর্বে মারা গেছে বলে জানান মেরিন লাইফ বিশেষজ্ঞ জহিরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: হিমছড়ি সমুদ্র সৈকতে ভেসে উঠেছে বিশালাকৃতির মৃত নীল তিমি
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট কক্সবাজারের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুরর রহমান জানান,এই দুইটি নীল তিমি নয়। এরা কুঁজো (হাম্পব্যাক হোয়েল) তিমি। বিশ্বেএই কুঁজো তিমি বিরল। বিরল প্রজাতির এই তিমি মহাসাগরে বিচরণ করে। দলবেঁধে বিচরণ করাই তাদের স্বভাব। একে অপরের প্রতি তাদের খুব মায়া মমতা থাকে।
তিনি ধারণা করেন, এই তিমি দুইটি দলছুট হয়ে যাওয়ায় মৃত্যু হয়। এরা খুব অভিমানি হয় তাই তাদের দল থেকে বের করে দেয়ায় এই তিমি হয়তো আত্মহত্যা করেছে। নিজেদের বিচরণ স্থান ত্যাগ করে খাদ্য গ্রহণ না করাসহ নানা বিপদের সম্মুখীন হয়ে মৃত্যু হতে পারে। বাংলাদেশের জলসীমার বাইরে মৃত্যু হয়ে পরে বঙ্গোপসাগর হয়ে কক্সবাজারের হিমছড়িতে ভেসে এসেছে।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু ধারণা করে বলেন, সাগরে কোনো বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এই তিমি দুইটির মৃত্যু হতে পারে। অথবা বড় কোনো জাহাজ থেকে ফেলা বিস্ফোরক দ্রব্য খেয়ে তাদের মৃত্যু হতে পারে। এছাড়া সাগরে পরিবেশ দূষণের কারণে এসব জলজ প্রাণীর মৃত্যু হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ভেসে আসা বিশাল আকারের এই দুইটি তিমি পঁচে গন্ধ ছড়াচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি মাটিতে পুঁতে ফেলা না হলে দুর্গন্ধে পরিবেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। তিনি তার আগে তিমি দুইটির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ময়নাতদন্তের দাবি জানান।
কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম খালেকুজ্জামান বলেন, এ প্রজাতির তিমি আমাদের বঙ্গোপসাগরে রয়েছে। বিশেষ করে সুন্দরবনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এসব তিমি দেখা যায়।
তিনি বলেন, 'মৃত তিমিটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে কি কারণে মারা গেছে সেটি জানা যাবে ময়নাতদন্তের পর।'
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজ মৃত তিমি পরিদর্শন শেষে বলেন, প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর, মৎস্য সম্পদ অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি করে মৃত্যুর কারণ উদঘাটন করা হবে। তবু কোন কারণে তিমি দুইটি মারা গেছে, তা নির্ণয়ের চেষ্টা করা হবে।
৩ বছর আগে