অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)
বিদেশগামী প্রবাসী কর্মীদের জন্য বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করছে সরকার
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বুধবার থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনের মধ্যে প্রবাসী কর্মীদের বহনের জন্য পাঁচটি দেশে বিশেষ ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বুধবার এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ ইউএনবিকে বলেন, ‘লকডাউনকালীন বিদেশগামী কর্মীদের জন্য ফ্লাইট চালু করা হবে।’
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চালুর দাবি আটাবের
তিনি বলেন, ‘সৌদি আরব,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুরের জন্য অতিশীঘ্রই স্পেশাল ফ্লাইট চালু করা হবে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এ বিষয়ে বিস্তারিত ওয়ার্ক প্ল্যান তৈরি করবে।’
মন্ত্রী বলেন, যে পাঁচটি দেশে আমরা ফ্লাইট চালু করব সে সব দেশ এখনো ওপেন আছে। সে দেশে কোন সমস্যা নেই।
তিনি বলেন, যারা বিদেশকর্মী বা ওয়ার্কার তাদের কীভাবে বিদেশ পাঠানো যায়, আমরা সেটি নিয়ে কাজ করছিলাম। এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে আসল ।
কবে নাগাদ সিদ্ধান্ত হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ফ্লাইট চালু বিষয়ে সিদ্ধান্ত আপনি ফাইনালই বলতে পারেন। এ বিষয়ে গতকাল এবং আজকে মিটিং এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুধু প্রক্রিয়াটা কী হবে তার সিদ্ধান্ত হবে। আগামীকাল বিকাল ৩টায় আরেকটি মিটিং হবে। যারা এখন বিদেশ যাবেন তাদের বিষয়ে কিছু শর্ত থাকবে। সেখানে সব সিদ্ধান্ত হবে।
বিদেশগামী কর্মীদের প্রক্রিয়াটা কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা নেগেটিভ সনদসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এয়ারপোর্টে আনার দায়িত্ব রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহের।
আরও পড়ুন: লকডাউনে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বন্ধ থাকবে: বেবিচক
মন্ত্রী বলেন, 'প্রবাসী কর্মীরা কেবল জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মিশনের ছাড়পত্র গ্রহণ করে এবং দেশে প্রযোজ্য কোয়ারেন্টাইন শর্ত মেনে কোভিড নেগেটিভ সনদ নিয়ে দেশে আসতে পারবেন।
কতজন কর্মী এখন আটকে আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটির সঠিক সংখ্যা বলা কঠিন। তবে এজেন্সিগুলো বলছে ২৫-৩০ হাজার। আমার ধারণা যখন ফ্লাইট চালু করব তখন দেখবেন আরও অনেকে যাবে, তখন সংখ্যা ১ লাখ হয়ে যেতে পারে।'
এদিকে, অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সভাপতি মনছুর আহামেদ কালাম ইউএনবিকে বলেন, 'ছুটিতে আসা প্রবাসী কর্মী ও নতুন ভিসা প্রাপ্তদের যাতায়াত সচল রাখার নিমিত্তে লকডাউনের মাঝে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটসমূহ চলাচল রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছি সরকারে কাছে। এ বিষয় গতকাল আমরা সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের দাবি জানাই।'
আটাবের সভাপতি বলেন, 'মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী অনেক প্রবাসী ছুটি নিয়ে বা জরুরি প্রয়োজনে বর্তমানে দেশে অবস্থান করছেন এবং তাদের অনেকের ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হতে চলেছে। তারা এয়ারলাইন্সের টিকিট সংগ্রহ করে কর্মস্থলে গমনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছেন। তাছাড়াও অনেক নতুন কর্মী ভিসা প্রাপ্ত হয়ে কর্মস্থলে গমনের অপেক্ষায় রয়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে যোগদান না করতে পারলে নিয়োগকর্তা তাদের অনেকেরই ভিসা বাতিল করবেন।'
তিনি বলেন, 'একজন প্রবাসীর আয়ের ওপর তার পুরো পরিবার নির্ভরশীল। সঠিক সময়ে নিজ কর্মস্থলে গমন করতে না পারার কারণে তাদের কর্মচ্যুতি হলে তাদের পরিবার পথে বসার উপক্রম হবে। তাই ছুটিতে আসা প্রবাসী কর্মী এবং নতুন ভিসাপ্রাপ্ত কর্মীদের সময় মত কর্মস্থলে পৌঁছানোর বিষয়টিও বর্তমান সরকার মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।'
আরও পড়ুন: ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক: বেবিচক
অন্যদিকে, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা)- সাধারণ সদস্যদের ব্যানারে আয়োজিত গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেছেন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্য এসব দেশে এখন করোনার প্রকোপ নেই। শ্রমিক গ্রহণকারী এসব দেশের পক্ষ থেকেও কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। তাই, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এসব দেশে শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করা যুক্তিযুক্ত নয়। এতে হাজার হাজার বিদেশগামী এবং সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তাই, চলমান লকডাউনে বিদেশগামীদের কথা চিন্তা করে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট দেশে বিমান চলাচল স্বাভাবিক রাখার দাবি জানান রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা। প্রয়োজনে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করে হলেও বিদেশগামীদের যথাসময়ে সংশ্লিষ্ট দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রকোপ আকার ধারণ করায় বুধবার থেকে আট দিনের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনে বাংলাদেশ। গণপরিবহনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও বন্ধ ঘোষণা করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এই অবস্থায় সঙ্কটে পড়েছেন বিদেশগামীরা।
৩ বছর আগে
আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চালুর দাবি আটাবের
ছুটিতে আসা প্রবাসী কর্মী ও নতুন ভিসা প্রাপ্তদের যাতায়াত সচল রাখার নিমিত্তে লকডাউনে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটসমূহ চালু রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরর দাবি জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)।
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মলেন লিখিত বক্তব্যে আটাবের সভাপতি মনছুর আহামেদ কালাম এ দাবি জানান।
আরও পড়ুন: লকডাউন: স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সকল প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশ
তিনি বলেন, 'দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের বর্তমান অস্বাভাবিক প্রাদুর্ভাবের কারণে আগামী ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপের সাথে সহযোগিতা করা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আমাদের সকলেরই দায়িত্ব।'
আটাবের সভাপতি বলেন, 'লকডাউনে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ভ্রমণপথে সকল ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী অনেক প্রবাসী ছুটি নিয়ে বা জরুরি প্রয়োজনে বর্তমানে দেশে অবস্থান করছেন এবং তাদের অনেকের ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হতে চলেছে। তারা এয়ারলাইন্সের টিকেট সংগ্রহ করে কর্মস্থলে গমনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছেন। তাছাড়াও অনেক নতুন কর্মী ভিসা প্রাপ্ত হয়ে কর্মস্থলে গমনের অপেক্ষায় রয়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে যোগদান না করতে পারলে নিয়োগকর্তা তাদের অনেকেরই ভিসা বাতিল করবেন।'
আরও পড়ুন: লকডাউনে মোংলা বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক
তিনি বলেন, 'একজন প্রবাসীর আয়ের ওপর তার পুরো পরিবার নির্ভরশীল। সঠিক সময়ে নিজ কর্মস্থলে গমন করতে না পারার কারনে তাদের কর্মচ্যুতি হলে তাদের পরিবার পথে বসার উপক্রম হবে।'
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে মনছুর আহামেদ বলেন, ছুটিতে আসা প্রবাসী কর্মী এবং নতুন ভিসাপ্রাপ্ত কর্মীদের সময় মত কর্মস্থলে পৌঁছানোর বিষয়টিও বর্তমান সরকার মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
‘লকডাউনের সময় যাদের ফ্লাইট র্নিধারিত ছিল বা যাদের ভিসা মেয়াদোত্তীর্ণের পথে তারা সময়মত কর্মস্থলে পৌঁছাতে না পারলে ব্যক্তি, পরিবার এবং রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে।'
তিনি বলেন, 'এছাড়া প্রবাসী কর্মীরা যে সকল দেশে গমন করবেন বিশেষত সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অনেক দেশ এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি যাত্রী প্রবেশে কোন প্রকার বিধি-নিষেধ আরোপ করেনি।'
আরও পড়ুন: লকডাউনে ৮টি বিশেষ পার্সেল ট্রেন চলবে: রেলপথ মন্ত্রী
উল্লেখ্য, আটাব দেশের প্রায় ৩ হাজার ৫০০ সরকার নিবন্ধিত ট্রাভেল এজেন্সির একটি অলাভজনক সংগঠন। বিদেশগামী যাত্রীদের এয়ার টিকেট ও অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতাসহ দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর সাথে আটাব নিবিড়ভাবে কাজ করছে এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহযোগী সংস্থা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
৩ বছর আগে