ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
তরুণীর পেটে কাঁচি: তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল, চিহ্নিত হয়নি কেউ
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তরুণীর অস্ত্রোপচারের পর পেটে কাঁচি রেখে সেলাই করার প্রায় দুই বছর পর তা বের করার ঘটনার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি।
সোমবার হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমানের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।
সাইফুর রহমান জানান, ওই প্রতিবেদনে এ ঘটনার জন্য কে দায়ী, তা সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়নি। কিংবা কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশও করা হয়নি।
তিনি জানান, বিদেশি কয়েকটি নিবন্ধের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন দেশে এ জাতীয় ঘটনা আগেও ঘটেছে। তবে ভবিষ্যতে অস্ত্রপচারের সময় অধিক সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।
আরও পড়ুন: মিতু হত্যা: বাবুলের করা মামলা ফের তদন্তের নির্দেশ
গত ১২ ডিসেম্বর (রবিবার) পেটে কাঁচি রেখে সেলাই করার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির সভাপতি হলেন সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামরুল হাসান। অপর দুই সদস্য হলেন গাইনি বিভাগের অধ্যাপক কানিজ ফাতেমা ও সার্জারি বিভাগের মো. কামরুজ্জামান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, তদন্ত কমিটি কার গাফিলতিতে পেটে কাঁচি রাখার ঘটনাটি ঘটেছে, তা শনাক্ত করতে পারেনি। পাশাপাশি ওই অস্ত্রোপচারের সঙ্গে যুক্ত কারও ব্যাপারে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ারও সুপারিশ করেনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২০২০ সালের ৩ মার্চ সার্জারি ইউনিট-টু’র দায়িত্বে নিয়োজিত সহযোগী অধ্যাপক মোল্লা সরফউদ্দিনের অধীনে এ অস্ত্রোপচারের সময় আরও তিন-চারজন চিকিৎসক অংশ নেন। তবে কার গাফিলতিতে এ ঘটনা ঘটেছে, তা উল্লেখ করা হয়নি। বিশ্বের বিভিন্ন জার্নালের উদ্বৃতি দিয়ে সেখানে বলা হয়েছে, এ জাতীয় ঘটনা অপ্রতুল নয়। এমন নয়, এটিই প্রথম ঘটেছে। এর আগেও বিভিন্ন দেশে অস্ত্রোপচারের সময় এ জাতীয় ঘটনা ঘটেছে।
প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, গঠিত তদন্ত কমিটি এ ব্যাপারে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছে। এই সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- অস্ত্রোপচারের সময় একজন নার্সকে যন্ত্রপাতির দায়িত্বে নির্দিষ্টভাবে নিয়োজিত করা। পাশাপাশি অস্ত্রোপচারের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয় ও আয়াদের আরও অধিক দায়িত্বশীল হওয়ায় পরামর্শও সেখানে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া অস্ত্রোপচারের সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, মনিরা খাতুন এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তার শারীরিক অবস্থা ক্রমান্বয়ে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। তবে আর কত দিন ভর্তি থাকা লাগবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: মিতু হত্যা: বাবুল আক্তারের নারাজি আবেদনের আদেশ ৩ নভেম্বর
প্রসঙ্গত, গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ঝুটিগ্রামের বাসিন্দা খাইরুল মিয়ার মেয়ে মনিরা খাতুন (১৮)। ২০২০ সালের মার্চে ওই তরুণী মেজিনট্রিক ফিস্ট (রক্তের দলা) জনিত সমস্যা নিয়ে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর ৩ মার্চ সার্জারি বিভাগ ইউনিট টু-তে এ সমস্যার জন্য তার অস্ত্রোপচার করা হয়। ওই সময় চিকিৎসকদের অজ্ঞাতসারে অস্ত্রোপচারের কাজে ব্যবহৃত ছয় ইঞ্চি লম্বা অর্টারি ফরসেপ পেটের মধ্যে রেখে সেলাই করা হয়। বিষয়টি জানার পর ২০২১ সালের ১১ ডিসেম্বর (শনিবার) ওই হাসপাতালেই পুনরায় অস্ত্রোপচার করে তরুণীর পেট থেকে কাঁচি বের করা হয়।
৩ বছর আগে
দুই মাথাওয়ালা শিশু জন্মের তিন ঘণ্টা পর মৃত্যু
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে দুই মাথাওয়ালা একটি শিশু জন্মের তিন ঘণ্টা পর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার সকালে পৌরসদরের দি ইস্টার্ন সার্জিক্যাল ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই শিশুটির জন্ম হয়। তিন ঘণ্টা পরেই শিশুটি মারা যায়।
আরও পড়ুন: কালীগঞ্জে নদীতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
জানা যায়, জেলার বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বারাংকুলা গ্রামের মো. সুমন মোল্যার স্ত্রী মোসা. সাথী আক্তার (১৯) অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের জন্য সকালে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন দি ইস্টার্ন সার্জিক্যাল ক্লিনিকে ভর্তি হন। এরপর গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলা ১০০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তত্ত্বাবধায়ক ডা. তাপস কুমার বিশ্বাস ওই ক্লিনিকে মহিলার অস্ত্রোপচার করলে দুই মাথাওয়ালা এক শিশু জন্মগ্রহণ করে। শিশুটির অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: ভাড়াটিয়াকে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ, শিশুর মৃত্যু
শিশুটির বাবা মো. সুমন মোল্যা জানান, ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে সাড়ে ১১টার দিকে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে, দুই সপ্তাহে ৩ শিশুর মৃত্যু
এ ব্যাপারে ডা. তাপস কুমার বিশ্বাস বলেন, আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টে উল্লেখ ছিল জমজ সন্তানের কথা। কিন্তু অপারেশনের পর দেখতে পাই কনজয়েন বেবি (সংযুক্ত)। মা সুস্থ থাকলেও শিশুটির অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় শিশুটিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
৩ বছর আগে
ফরিদপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা
ফরিদপুরের সালথায় জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিহত ওই বৃদ্ধের নিজ বাড়ির পাশে একটি বাগানে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. ওলিয়ার শেখ (৬০) উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের সাধুহাটি গ্রামের মৃত আদম শেখের ছেলে।
আরও পড়ুন: বিয়ানীবাজারে তরুণীকে কুপিয়ে হত্যা
বুধবার সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
নিহত ওলিয়ার শেখের স্ত্রীর আলেয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমরা গরীব, আমাদের বাড়ির জমি ছাড়া কোনো জমি নেই। আমার স্বামী বাড়ির পাশে ৩ শতক জমি লিজ নিয়ে বেগুনের আবাদ করেছে। আমাদের বেগুন খেতের পাশে প্রতিবেশি ইসহাক শেখের পানের বরজ রয়েছে। ওই পানের বরজে যাওয়া-আসার জন্য ইসহাক আমার স্বামীর কাছে বেগুন খেতের ভিতর দিয়ে একটি পথ বের করে দিতে বলেন। এতে আমার স্বামী রাজি না হলে তার উপর তিনি ক্ষিপ্ত হন।
আরও পড়ুন:কুমিল্লায় যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
তিনি বলেন, এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে কয়েক দফা সালিশ হয়েছে। কয়েকবার আমার স্বামীর উপর হামলাও করেছে ইসহাক ও তার ছেলেরা। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সাধুহাটি গ্রামের একটি চায়ের দোকান থেকে চা খেয়ে বাড়ি ফেরার পথে ইসহাক শেখ ও তার সহযোগীরা আমার স্বামীকে নির্মমভাবে কুপিয়ে জখম করে। খবর পেয়ে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার সময় পথিমধ্যে সে মারা যায়। তবে মৃত্যুর আগে আমার স্বামী ওদের নাম বলে গেছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে ইসহাক শেখ ও তার পরিবারের সকল সদস্য পলাতক রয়েছে। এ কারণে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ওই এলাকার বাসিন্দা সোহেল সরদার বলেন, ওলিয়ার এলাকায় এক জন ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত। তিনি নিতান্তই গরীব। নিজের জমির উপর একটি ছাপড়া ঘর ছাড়া আর কিছুই নেই। তাকে কেন এমন নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হলো তা বুঝতে পারছি না।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুজ্জামান বলেন, ওলিয়ার ১৫ হাজার টাকা দিয়ে ৩ শতক জমি লিজ নিয়ে সবজির চাষ করেছিল। ওই সবজি খেতের ভিতর দিয়ে পথ বের করাকে কেন্দ্র করে ওলিয়ারের সাথে ও পার্শ্ববর্তী জমির মালিক ইসহাকের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই বিরোধের জের ধরে ওলিয়ারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে তার পরিবারের অভিযোগ। ওলিয়ারের শরীরে একাধিক কোপের দাগ রয়েছে। আমরা তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
৩ বছর আগে
ফরিদপুরে আইসিইউতে চিকিৎসক ও যন্ত্রাংশের অভাবে স্বাস্থ্যসেবা ব্যহত
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিটে চিকিৎসক সংকট আর প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের অভাবে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে করোনা রোগীরা। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, যতোটুকু সামর্থ রয়েছে তার সবটুকু দিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এই হাসপাতালটিতে ১৬ বেডের আইসিইউ ইউনিটের জন্য চিকিৎসক থাকার কথা দুই সিফটে ২৪ জন। বর্তমানে সেখানে রয়েছে ৯ জন। অন্যদিকে আইসিইউ বেডের ১৬টির মধ্যে মনিটর স্বচল রয়েছে ১০টির, এছাড়াও ভেন্টিলেটর স্বচল ৮টির। এই ওয়ার্ডে গুরুতর করোনা রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এই স্বল্প সংখ্যক চিকিৎসক আর প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের অভাবে জরুরি চিকিৎসা পেতে আসা রোগীদের সেবাদান কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি: আইসিইউ বেড ও বিশেষজ্ঞের সঙ্কট
ফরিদপুর জেলার ৯ উপজেলায় প্রায় ২০ লাখের বেশি মানুষের বসবাস। এ জেলা ছাড়াও বৃহত্তর ফরিদপুরের অনেক মানুষের চিকিৎসার আশ্রয়স্থল ৫১৭ বেডের এই হাসপাতালটি।
ফরিদপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাপে ফরিদপুরে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। গত ৭ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৯ হাজার ৭৭ জন, মারা গেছে ১৭ জন। জেলায় এ পর্যন্ত মারা গেছে ১৩৭ জন। বর্তমানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ৫৬৮ জন। এর মধ্যে শুধু সদর উপজেলাতেই রয়েছে ৫ হাজার ৭৬১ জন আর মারা গেছেন ৯২ জন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে স্বামীর দেয়া আগুনে দগ্ধ গৃহবধূর মৃত্যু
এতো সমস্যার পরেও নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের সেবাকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ওয়ার্ডের নিয়োজিত কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
আইসিইউ ওয়ার্ডের সেবিকা জুথিকা বিশ্বাস বলেন, ‘করোনার সব থেকে ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের সেবা দেয়া হয় এই ওয়ার্ডে, আমরা সকলেই সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। স্বল্প সংখ্যক জনবল আর যতোটুকু চিকিৎসা সরঞ্জামাদি রয়েছে তা দিয়েই কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে জমিদার বাড়ি সংরক্ষণ ও পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আইসিইউ ওয়ার্ডের ইনচার্জ ডা. আনন্ত কুমার বিশ্বাস হাসপাতালের নানান সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আইসিইউ ওয়ার্ডের করোনা রোগীর চাপ অনেক বেশি, সেই তুলনায় চিকিৎসক নেই। যেখানে প্রয়োজন ২৪ জন চিকিৎসক সেখানে মাত্র ৯ জন চিকিৎসক রয়েছে। করোনা ওয়ার্ড ছাড়াও অন্য ওয়ার্ডগুলোর একই অবস্থা।’
তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে চিকিৎসক, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানেলা, মনিটর ও ভেন্টিলেটর পেলে আমরা যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারবো।
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, ২৫০ বেডের করোনা ডেডিকেটেড এই হাসপাতাল শুধু ফরিদপুর নয়, পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোরও করোনা রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সময়ে রোগী বাড়ছে। প্রতিদিনই রোগীদের আইসিইউ বেডের চাহিদা রয়েছে কিন্তু আসন না থাকায় বাধ্য হয়ে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, মহামারি এই করোনার সময়ে বিপুল সংখ্যক রোগীদের জন্য আরও চিকিৎসক এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি।
করোনার এই দূর্যোগের সময়ে ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মরণব্যাধী করোনা রোগীদের সেবা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন ফরিদপুর নাগরিক মঞ্চের কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, শুধু ফরিদপুর নয়, দেশের দক্ষিণবঙ্গে অনেক রোগী এই হাসপাতালটিতে সেবা নিতে আসে। তাদের কথা বিবেচনায় নিয়ে এখানে আইসিইউ আসন বৃদ্ধি ও সেবাকাজে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ সরবরাহ করতে হবে।
৩ বছর আগে
ফরিদপুরে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার, স্বামী পলাতক
ফরিদপুরের মধুখালীতে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার দুপুরে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহত ঝর্ণা বেগম (২৬) উপজেলার মীরের কাপাষহাটিয়া গ্রামের আলতু শেখের স্ত্রী।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কামালদিয়া ইউনিয়নের মীরের কাপাষহাটিয়া গ্রামের আমজাদ শেখের ছেলে আলতু শেখের (৩০) সাথে একই এলাকার জবেদ আলীর কন্যা ঝর্ণার বেগমের (২৬) মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে দীর্ঘ ৮ বছর আগে। ওই সময়ই তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তাদের দুজনের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। এভাবেই চলছিল তাদের সংসার জীবন। তাদের সংসারে ৪ বছরের ছেলে ও ৭ বছরের মেয়ে সন্তান রয়েছে। মাঝে মধ্যেই স্বামী আলতু শেখ স্ত্রী ঝর্ণা বেগমকে মারধর করতো।
আরও পড়ুন: রান্না করতে গিয়ে কুড়িগ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে গৃহবধূর মৃত্যু
জানা গেছে, এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আলতু শেখ ও ঝর্ণা বেগমের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে স্বামী আলতু শেখ স্ত্রী ঝর্ণা বেগমকে বেদম মারপিট করে। বুধবার সকালে বাড়ির সকলে দেখতে পায় ঝর্ণা বেগমের মরদেহ ঘরের মধ্যে পড়ে আছে। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে স্বামীর দেয়া আগুনে দগ্ধ গৃহবধূর মৃত্যু
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নুরুল ইসলাম জানান, আলতু শেখের সাথে ৮ বছর আগে ঝর্ণা বেগমের প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে। স্ত্রীকে মারপিটের কথা শুনেছি। মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে, না কি সে আত্মহত্যা করেছে বিষয়টি জানতে ওদের বাড়িতে গিয়েছিলাম, কিন্তু বুঝতে পারছি না। সংবাদ পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।
ঝর্ণার মামা মো. বিশু খাঁ বলেন, ঝর্ণাকে নির্যাতন করে মেরে মুখে বিষ ঢেলে দেয়া হয়েছে। সে নিজের ইচ্ছায় প্রেম করে আলতুর সাথে ৮ বছর আগে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। ঝর্ণাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে আলতু ও পরিবারের সদস্যরা জড়িত। এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানাই।
এদিকে আলতু শেখের বাড়িতে গিয়ে তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের পাওয়া যায়নি। এ কারণে তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: রুটি বানাতে দেরি, থাপ্পড়ে গৃহবধূর মৃত্যু
মধুখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রথিন্দ্র নাথ তরফদার জানান, খবর পেয়ে গৃহবধূ ঝর্ণার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলেই বোঝা যাবে এটি আত্মহত্যা না হত্যা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে।
৩ বছর আগে