নববর্ষ
অভ্যুত্থান-পরবর্তী দেশে ‘সবার’ বৈশাখ
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে একটি বছরের ইতি ঘটে শুরু হয়েছে নতুন একটি বছরের। জরাজীর্ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দকে বিদায় জানিয়ে এসেছে ১৪৩২ সন।
হ্যাঁ, আজ পয়লা বৈশাখ, নববর্ষের প্রথম দিন। জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে নতুন এ বছর এসেছে আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে। পুরোনো সব ক্লেশ, দ্বেষ ও হতাশাকে পেছনে ফেলে নতুন আশার আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে দেশকে নতুন করে বিনির্মাণের আহ্বান নিয়ে এসেছে ১৪৩২ বঙ্গাব্দ।
বৈশাখ বাঙালির জীবনে কেবল একটি নতুন বছরই নিয়ে আসে না, বাঙালির ক্রমবিস্মৃত আত্মপরিচয়কেও নতুন করে জাগিয়ে দেয়। বাঙালিয়ানা নতুন করে প্রাণসঞ্চার করে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিশ্বের প্রতিটি কোনায় থাকা বাঙালির জীবনে। আর যার যার অবস্থান থেকে প্রত্যেকেই তা আলিঙ্গন করে নেয় সাদরে।
প্রতি বছরের মতো এবারও এসেছে বাঙালির প্রাণের বৈশাখ। আর নানা আয়োজনে তাকে বরণ করে নিচ্ছে দেশের সব জনগোষ্ঠীর মানুষ। এ বছর বর্ষবরণ উৎসবে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে সব জনগোষ্ঠীর মানুষের জন্য রাষ্ট্রীয় আয়োজন।
আরও পড়ুন: যেখান-সেখান দিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া যাবে না: ডিএমপি কমিশনার
সকাল সোয়া ছয়টায় আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে ভৈরবীতে রাগালাপ দিয়ে ছায়ানটের আয়োজনে রাজধানীর রমনা বটমূলে শুরু হয় বর্ষবরণ। নারী-পুরুষের সম্মিলনে প্রায় দেড়শ শিল্পীর সুরবাণীতে নতুন বছরকে আবাহন জানানো হচ্ছে সেখানে।
ছায়ানটের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এবার তাদের অনুষ্ঠানের মূল বার্তা ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। আলো, প্রকৃতি, মানুষ ও দেশপ্রেমের গান দিয়ে সাজানো হয়েছে তাদের অনুষ্ঠান।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দিকে দিকে এমন সব আয়োজনে মেতে উঠবে দেশের মানুষ। রাজধানীর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলায় নানা সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সংস্কৃতিবান মানুষের উদ্যোগে উৎসবের আকার ধারণ করবে বর্ষবরণ।
কোথায় কী আয়োজন
যুগ যুগ ধরে চলে আসা এ আনন্দ উৎসবের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় শোভাযাত্রা ও বৈশাখী মেলা। প্রতিবারের মতো এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।
‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩২’ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে সরকারও নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আজ সরকারি ছুটি।
মূলত চৈত্র সংক্রান্তিতে বর্ষবিদায়ের মধ্য দিয়ে এরই মধ্যে এই আয়োজন শুরু হয়ে গেছে। প্রথমবারের মতো এ বছর বাঙালির পাশাপাশি দেশের চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও গারোসহ অন্যান্য জাতিসত্তার মানুষেরও নববর্ষ উদযাপনের জন্য জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক পরিসরে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উৎসব আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: নববর্ষ ১৪৩২: পরিবর্তন ও নতুনত্বের আবহ
সরকারের নেওয়া কর্মসূচি অনুযায়ী, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, মহানগর ও পৌরসভা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে।
বাংলা একাডেমি এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বৈশাখী মেলার আয়োজন করবে।
তিন পার্বত্য জেলা এবং অন্যান্য নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক দলগুলোর শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের সমন্বয় করবে শিল্পকলা একাডেমি। পাশাপাশি রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো একই সঙ্গে বৈসাবি উৎসব উদযাপন করবে। এ ছাড়া নববর্ষ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে বিদেশি মিশনগুলো।
আজ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে সব জাদুঘর ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। শিশু ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য সেসব স্থানে প্রবেশে লাগবে না কোনো টিকিট। বর্ষবরণ উপলক্ষে দিনব্যাপী আনন্দ উৎসব চলবে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত।
সরকারের গৃহীত কর্মসূচি অনুযায়ী, বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশের পরিবর্তে সংবাদপত্রগুলোতে পয়লা বৈশাখের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ ফিচার প্রকাশ করা হয়েছে এবার। এ ছাড়াও বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলসহ অন্যান্য প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলো নববর্ষের অনুষ্ঠান সম্প্রচার ও চিত্রিত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।
আরও পড়ুন: দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং সব সরকারি ও বেসরকারি টিভি চ্যানেল, রেডিও স্টেশন এবং বাণিজ্যিক ও কমিউনিটি রেডিওতে শোভাযাত্রা সম্প্রচারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।
সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী
এদিকে এই উৎসব ঘিরে যেন কোনোপ্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয়, সে জন্য প্রতি বছরের মতো এবারও ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যেও ঢাবির চারুকলা অনুষদের তৈরি ‘স্বৈরাচারের মুখাবয়ব’ মোটিফে আগুন দেওয়ার ঘটনায় নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রবিবার র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, ‘পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান ঘিরে পুলিশ, র্যাবসহ গোয়েন্দাবাহিনী সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। সেই সঙ্গে দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, টিএসসি, শাহবাগ, রমনা, হাতিরঝিলসহ যেসব জায়গায় জনসমাগম হবে, সেখানে র্যাবের পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন থাকবে। যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে র্যাব সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর পাশাপাশি পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সিসিটিভি ক্যামেরা, আর্চওয়ে গেট, হেল্প ডেস্ক, কন্ট্রোল রুম, অস্থায়ী পাবলিক টয়লেট ও অস্থায়ী মেডিক্যাল ক্যাম্পসহ নানা ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
১৯ দিন আগে
দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রবিবার (১৩ এপ্রিল) এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্যে পহেলা বৈশাখ বিশেষ স্থান দখল করে আছে। পহেলা বৈশাখ বাঙালির সম্প্রীতির দিন, মহামিলনের দিন।’
তিনি বলেন, ‘আবহমান কাল ধরে নববর্ষের এই উৎসবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র বাঙালি জাতি জেগে ওঠে নবপ্রাণ স্পন্দনে, নব-অঙ্গীকারে। সারা বছরের দুঃখ-জরা, মলিনতা ও ব্যর্থতাকে ভুলে এদিনে বাঙালি রচনা করে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য, আনন্দ ও ভালোবাসার মেলবন্ধন।’
‘বাংলা নববর্ষ পালনের সূচনা হয় মূলত মুঘল সম্রাট আকবরের সময় থেকে। কৃষিকাজের সুবিধার্থে সম্রাট আকবর ফসলি সন হিসেবে বাংলা সন গণনার যে সূচনা করেন, তা কালের পরিক্রমায় সমগ্র বাঙালির কাছে অসাম্প্রদায়িক চেতনার স্মারক উৎসবে পরিণত হয়েছে,’ বলেন ড. ইউনূস।
আরও পড়ুন: সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার
তিনি বলেন, ‘আসুন, আমরা বিগত বছরের গ্লানি, দুঃখ-বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে, নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে চলি। ’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান আমাদের সামনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে। এই অভ্যুত্থান বৈষম্যহীন, সুখী-সমৃদ্ধ, শান্তিময় ও আনন্দপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমাদের প্রেরণা দেয়। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এই বাংলা নববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার।
এ সময়ে নববর্ষ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সব উদ্যোগের সাফল্য কামনা করেন প্রধান উপদেষ্টা।
২০ দিন আগে
চারুকলায় ফের হচ্ছে ফ্যাসিবাদের প্রতিকৃতি, নববর্ষে থাকছে ‘সারপ্রাইজ’
বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ফ্যাসিবাদের প্রতিকৃতি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষের আদেশে নতুন করে সেই প্রতিকৃতি তৈরি করছেন শিল্পীরা।
সরেজমিনে ঢাবির চারুকলা অনুষদ ঘুরে দেখা যায়, পুরোদমে প্রতিকৃতিটি তৈরির কাজ চলছে। রাতারাতি কাজ শেষ করতে আপাতত কর্কশিট দিয়েই কাজ চালাচ্ছেন শিল্পীরা।
এর আগের মোটিফটি তৈরি করতে প্রায় ১ মাস সময় লেগেছিল, সেখানে এক রাতের মধ্যে একই ধরনের আরেকটি মোটিফ তৈরি দুঃসাধ্য হলেও সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন: যেখান-সেখান দিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া যাবে না: ডিএমপি কমিশনার
কর্মরত শিল্পীরা বলেন, আগের মোটিফটি তৈরিতে প্রচুর শ্রম ব্যয় হয়েছে। যারা মোটিফটিতে আগুন দিয়েছেন, তারা এর শিল্পী এবং শিল্প—উভয়কেই অপমান করেছেন। দুর্বৃত্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা।
ঢাবি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সকাল থেকে শিল্পীরা কাজ করছেন। পুরো ব্যাপারটি তাদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে ঢাবির চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের অধ্যাপক এ এ এম কাউসার হাসান বলেন, ‘২৪-এর অভ্যুত্থানকে উপলক্ষ করে আমরা একটি মোটিফ বানিয়েছিলাম। সেটি ছিল ফ্যাসিস্টের একটি মোটিফ। পরবর্তীতে বাংলাদেশে যেন আর কোনো ফ্যাসিস্ট তৈরি না হয়, এই প্রতিপাদ্য ধারণ করেই সেটি আমরা বানিয়েছিলাম। কিন্তু মোটফটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘তবে শিল্পীরা তো দমার পাত্র নন। ২৪-এ যারা আত্মাহুতি দিয়েছে, যারা আহত হয়েছে, তাদের কথা স্মরণ করে আমরা আরেকটি ফ্যাসিস্টের মোটিফ তৈরি করছি। কালকে (নববর্ষে) সবাই সারপ্রাইজ হিসেবে সেটি দেখতে পাবেন।’
২০ দিন আগে
‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নয়, এবার হবে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) এতদিন ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে আয়োজিত শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ঢাবির চারুকলা অনুষদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম শেখ।
এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘নববর্ষে ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। গত ২৪ মার্চ সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে উপাচার্যের সভাপতিত্বে এটি চূড়ান্ত হয়।
আয়োজকরা জানান, সংস্কৃতির মুক্তির বার্তা নিয়ে চারুকলা অনুষদের এই আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সব ভাষা ও জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে।
তারা বলেন, এবারের বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা দেশীয় বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও উদার সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটাবে। নববর্ষ উদযাপন বাক-স্বাধীনতা, সাংস্কৃতিক চর্চা ও মানবিক রাষ্ট্র গঠনের উদ্দেশ্যে অগ্রসর একটি পদক্ষেপ।
তারা আরও বলেন, সংস্কৃতির মূল লক্ষ্যই হচ্ছে মানবিক ও উদার একটি সমাজ বা রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তোলা। এবারের বৈশাখ হবে সকলের। পাহাড় থেকে সমতল—সকল জাতিগোষ্ঠী এতে অংশগ্রহণ করবে। একপেশে সংস্কৃতির সংকীর্ণতা থেকে বের হয়ে আমরা শুদ্ধ ও উদার চর্চার দিকে এগিয়ে যাব—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
এবারের বৈশাখ ফ্যাসিবাদ ও নিপীড়নের কালপর্ব শেষে নতুন এক সাংস্কৃতিক মুক্তির সূচনা আনবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তারা।
শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে চারুকলা অনুষদের ডিন বলেন, “আপনারা জানেন, ১৯৮৯ সালে আমরা এই বর্ষবরণ প্রথা শুরু করেছিলাম ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ নামে। পরে তা ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নাম নেয়। এবার আমরা মূল নামকে পুনরুদ্ধার করেছি।”
আগামী ১৪ এপ্রিল সকাল ৯টায় শোভাযাত্রা শুরু হবে। এটি চারুকলা থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ, রাজু ভাস্কর্য, শহিদ মিনার, দোয়েল চত্বর ও বাংলা একাডেমি ঘুরে আবার চারুকলায় এসে শেষ হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলের ইঙ্গিত ফারুকীর
শোভাযাত্রাকালে বাংলামোটর, বারডেম, পলাশী ও মৎস ভবন থেকে শাহবাগের দিকে আসার রাস্তা বন্ধ থাকবে। সাধারণ মানুষের জন্য প্রবেশ উন্মুক্ত থাকবে নীলক্ষেত ও পলাশীর দিক থেকে।
র্যালির সময় রমনা উদ্যানের তিনটি গেট—ছবির হাট, রাজু ভাস্কর্যের পেছনের গেট ও কালীমন্দির গেট বন্ধ থাকবে।
শোভাযাত্রার সামনে থাকবে ২০টি সজ্জিত ঘোড়া এবং পেছনে থাকবে রিকশার বহর। সাধারণ মানুষ পেছনের দিক থেকে শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন।
নিরাপত্তার স্বার্থে সকাল ৮টা থেকে দুপুর পর্যন্ত শাহবাগ ও টিএসসি মেট্রোরেল স্টেশন বন্ধ থাকবে। এ সময় এই স্টেশনগুলোতে যাত্রী ওঠা-নামা বন্ধ থাকবে এবং শোভাযাত্রা শেষে স্টেশনগুলো চালু হবে।
ক্যাম্পাসে অন্যান্য কর্মসূচিতে অংশ নিতে পলাশী ও নীলক্ষেত সড়ক দিয়ে প্রবেশ করতে বলা হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ আইডি কার্ড ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
এবারের শোভাযাত্রায় অংশ নেবে ২৮টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোর ব্যান্ড, পার্বত্য চট্টগ্রামের শিল্পীগোষ্ঠী, বামবা ব্যান্ড শিল্পীগোষ্ঠী, বাউল-সাধুশিল্পী দল, কৃষকদল, মূলধারার শিল্পীগোষ্ঠী, সাধনা নৃত্যসংগঠন, রংধনু পোশাকশ্রমিক শিল্পী দল, নারী ফুটবল দল, অ্যাক্রোব্যাটিক শিল্পীগোষ্ঠী, রিকশার বহর এবং ঘোড়ার গাড়ির বহর।
এবার বড় মোটিফ থাকবে ৭টি—ফ্যাসিবাদের মুখ, কাঠের বাঘ, ইলিশ মাছ, তরমুজের ফালি (যা ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনগণের প্রতি সহমর্মিতার প্রতীক এবং তাদের পতাকার মোটিফ), শান্তির পায়রা, পালকি, ও ‘মুগ্ধ’ পানির বোতল।
মাঝারি মোটিফগুলোতে থাকবে ১০টি সুলতানি ও মুঘল আমলের মুখোশ, ২০টি রঙিন চরকি, ৮টি তালপাতার সেপাই, ৫টি পাখি, ৪টি পাখা, ২০টি ঘোড়া এবং ১০০টি লোকজ চিত্রাবলি।
ছোট মোটিফগুলোর মধ্যে থাকবে ৮০টি ফ্যাসিবাদের মুখ, ২০০টি বাঘের মুখ, ১০টি পলো, ৬টি মাছ ধরার চাই, ২০টি মাথাল, ৫টি লাঙল ও ৫টি মাছের ডোলা।
নববর্ষ ১৪৩২-কে সফল করতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক, বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্মিলিতভাবে দায়িত্বশীলতা ও আবেগ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানানো হয়।
২২ দিন আগে
নববর্ষ উদ্যাপনে কোনো নিরাপত্তা হুমকি নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ উদ্যাপনকে কেন্দ্র করে দেশে কোনো ধরনের নিরাপত্তা হুমকি নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
উপদেষ্টা মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতীয়ভাবে চৈত্র সংক্রান্তি ও বাংলা নববর্ষ এবং চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষ-১৪৩২ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, এ বছর বিস্তৃতভাবে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন করা হবে। বিষয়টি মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের চেয়ে বাড়ানো হয়েছে৷। নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় সেজন্য যা যা করা প্রয়োজন, সবই করা হচ্ছে। তাছাড়া নববর্ষের শোভাযাত্রায় যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
শোভাযাত্রার সামনে-পিছনে পুলিশের নিরাপত্তা বলয় থাকবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘শোভাযাত্রাসহ নববর্ষ উদ্যাপনের পুরো বিষয়টি আয়োজন করছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তারাই নির্ধারণ করবে কারা কোথায় থাকবে। সে অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে।’
আরও পড়ুন: মানবপাচার রোধে শক্তিশালী আইনি কাঠামো প্রস্তুত করেছে বাংলাদেশ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
এর বাইরে ফিলিস্তিন ইস্যুকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের নামে বাটাসহ বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অফিস-দোকান ভাঙচুর প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সারাদেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব৷ যারা এসব ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৪৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে।’
সভায় উপস্থিত সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানান, নববর্ষের শোভাযাত্রার নাম মঙ্গল শোভাযাত্রা থাকবে কিনা তা আগামী ১০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে। এবারের নববর্ষ উৎসবে প্রচুর জনসমাগম হবে। এ নিয়ে প্রস্তুতিও ব্যাপক। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এ উপলক্ষ্যে মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। বাঙালি ছাড়াও ২৬টি জাতিগোষ্ঠী উৎসবমুখর পরিবেশে নববর্ষ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে।
২৫ দিন আগে
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলের ইঙ্গিত ফারুকীর
নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। নতুন নাম নির্ধারণের বিষয়ে আগামীকাল (সোমবার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বৈঠক হবে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।
রবিবার (২৩ মার্চ) সচিবালয়ে জাতীয়ভাবে বাংলা নববর্ষ এবং চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষ উদযাপন নিয়ে সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ‘সব জাতিসত্তার অংশগ্রহণে এবারের নববর্ষের শোভাযাত্রায় নতুন রঙ, গন্ধ ও সুর পাওয়া যাবে। এবার চারুকলা থেকে যে শোভাযাত্রা বের হবে সেখানে আপনারা সত্যিকার অর্থেই নতুন জিনিস দেখবেন। নিজেদের চোখেই অনেক পরিবর্তন দেখতে পাবেন।’
তবে কী ধরনের পরিবর্তন দেখা যাবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। বলেন, ‘এটি সারপ্রাইজ হিসেবেই থাকল। ইটস এ টিজার। যারা অংশগ্রহণ করবেন তারা নিজেরাই নিজেদের চোখে দেখতে পারবেন—পরিবর্তনগুলো কীভাবে ঘটছে।’
আরও পড়ুন: বাংলা একাডেমির পুরস্কার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গোলমাল ছিল: সংস্কৃতি উপদেষ্টা
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আসলেই (শোভাযাত্রায়) নতুন কিছু দেখতে পাবেন। নতুন রঙ দেখবেন, নতুন গন্ধ পাবেন, নতুন সুর পাবেন।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘নতুন কী নামে শোভাযাত্রা হবে, সেটি আগামীকাল ঢাবিতে আয়োজিত একটি সভায় নির্ধারণ করা হবে।’
এই শোভাযাত্রাটি প্রথমে ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ নামে শুরু হয়েছিল উল্লেখ করে উপদেষ্টা আরও জানান, পরবর্তীতে নামটি পরিবর্তিত হয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা হিসেবে প্রচলিত হয়েছে। যে নাম একবার পরিবর্তিত হয়েছে, সবাই যদি সম্মত হন তবে আবার পরিবর্তন হতে পারে বলে মত দেন তিনি।
তবে সবাই সম্মত না হলে পরিবর্তন নাও হতে পারে বলেও উল্লেখ করেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘এবারের শোভাযাত্রাটি শুধু বাঙালিদের নয়, বরং চাকমা, মারমা, গারোসহ প্রত্যেকেরই হবে। তাই এমন একটা নাম দিতে হবে যেন সেটি সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। বাঙালি বাদে অন্যরা যেন ব্র্যাকেটে না পড়ে যায় সেটি নিশ্চিত করা হবে।
৪১ দিন আগে
রাঙ্গামাটিতে বৈসাবি উপলক্ষে শোভাযাত্রা
রাঙ্গামাটিতে বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী উৎসব বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু ও সাংক্রান উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার সকালে রাঙ্গামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে উৎসবের উদ্বোধন করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান।
পরে বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু ও সাংক্রান উৎসবের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় প্রধান অতিথি হিসেবে ও সাবেক সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার ছিলেন। এ ছাড়া সাবেক সচিব প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, সুস্মিতা চাকমা, আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ইন্টু মনি তালুকদার বক্তব্য রাখেন।
বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু ও সাংক্রান উপলক্ষে আয়োজিত আনন্দ শোভাযাত্রায় রাঙ্গামাটির চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, রাখাইন ও গুর্খা সম্প্রদায়ের নারী পুরুষ অংশ নেয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।
বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর সদস্যরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে ও সাজগোজ করে শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।
আগামী ১২ এপ্রিল শুরু হয়ে ১৬ এপ্রিল শেষ হবে পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের বড় উৎসব বৈসাবির অনুষ্ঠানিকতা।
৩৮৮ দিন আগে
নববর্ষের অনুষ্ঠান সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সব অনুষ্ঠান সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ফানুস-আতশবাজি এবং ভুভুজেলা বাঁশি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় এসব সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
দেশব্যাপী বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, বৈশাখী মেলা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়ে দেওয়া দিক-নির্দেশনাগুলো হলো-
১. অনুষ্ঠানগুলোতে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও আয়োজকরা সমন্বয় করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।
আরও পড়ুন: নববর্ষ ও ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে সিরাজগঞ্জের তাঁতপল্লী
২. রমনার বটমূল, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, হাতিরঝিল ও রবীন্দ্র সরোবরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সুইপিং, ডগস্কোয়াডসহ বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসব অনুষ্ঠানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রয়োজনীয় ফোর্স ও গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ নজরদারি থাকবে।
৩. বাংলা নববর্ষ উদযাপন নিয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
৪. বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বাংলা একাডেমি ও বিসিক আয়োজিত নববর্ষের মেলায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
৫. রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, হাতিরঝিল ও রবীন্দ্র সরোবরসহ দেশে যে সব অনুষ্ঠান হবে তা সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শেষ করতে হবে।
৬. বর্ষবরণ অনুষ্ঠানগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আয়োজকদের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকতে হবে। নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সমন্বয় করে নিরাপত্তা প্রদান করবে।
আরও পড়ুন: পহেলা বৈশাখ: বাংলা নববর্ষের উৎপত্তি এবং ইতিহাস
৭. নববর্ষে কূটনৈতিক এলাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও স্থাপনার বিশেষ নিরাপত্তা প্রদান করা হবে।
৮. নববর্ষ উদযাপনকালে ঢাকা মহানগর ও সারাদেশের অনুষ্ঠানগুলোর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অগ্নিনির্বাপক গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্সসহ ফায়ার সার্ভিস টিম থাকবে ও মেডিকেল টিম থাকবে।
৯. বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে ইভটিজিং, ছিনতাই/পকেটমারসহ যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে মোবাইল কোর্ট ও গোয়েন্দা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে।
১০. বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো নিষিদ্ধ থাকবে।
আরও পড়ুন: হারিয়ে যাচ্ছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ‘কোচ’ সম্প্রদায়ের নববর্ষ উৎসব ‘বিহু’
১১. নববর্ষে দেশের কারাগারগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও আয়োজন করা হবে।
১২. কোনো ধরনের ফানুস ওড়ানো বা আতশবাজি ফোটানো যাবে না।
১৩. বাংলা নববর্ষে মাদকের অপব্যবহার রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: বাংলা নববর্ষ কিভাবে উদযাপন করবেন? কোথায় ঘুরতে যাবেন?
৪০২ দিন আগে
নববর্ষ ও ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে সিরাজগঞ্জের তাঁতপল্লী
নববর্ষ ও ঈদকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের তাঁতপল্লী খট খট শব্দে কর্মব্যস্ত হয়ে উঠেছে। ব্যস্ত সময় পার করছে তাঁত শ্রমিকেরা। দিনরাত তাঁতের মাকুর শব্দে মুখরিত তাঁত এলাকা।
বর্তমানে বাজার ভালো থাকায় দীর্ঘ দিনের নানা সমস্যা কাটিয়ে লাভের আশা করছেন তাঁতমালিকরা।
জানা যায়, পবিত্র রমজান শুরু হওয়ার আগে থেকেই জেলার বিভিন্ন স্থানে তাঁত কারখানায় তৈরি হচ্ছে বেনারসি, সিল্ক, রেশমী, কটন, জামদানি ও কাতান শাড়ি।
এতে আধুনিক ও শৈল্পিক কারুকার্যে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বাহারি নকশা এবং বিভিন্ন সাইজের গামছা ও লুঙ্গিও তৈরি হচ্ছে।
বিশেষ করে জেলার তাঁত সমৃদ্ধ বেলকুচি, এনায়েতপুর, শাহজাদপুর ও উল্লাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তাঁতপল্লীতে বাহারী নকশার শাড়ি তৈরি জমে উঠেছে।
এছাড়া বৈশাখের আবহে শাড়িতে ঢাক-ঢোল ও ইলিশসহ বিভিন্ন রকমের দৃষ্টিকাড়া ছবি ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মাসব্যাপী তাঁত-বস্ত্র ও ক্ষুদ্র শিল্প মেলা শুরু
তবে স্থানীয় তাঁত মালিকেরা বলছেন, কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন কাপড়ের বাজার তেমন জমে ওঠেনি। এমনকি উৎপাদন খরচের সঙ্গে বাজারজাত করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। রং ও সুতার বাজার নিয়ন্ত্রণ করলে জেলার ঐতিহ্যবাহী এই তাঁতশিল্প ঘুরে দাঁড়াবে।
এদিকে এ জেলায় তাঁতের সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ।
প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ, ঈদ, পূজা-পার্বণে কাপড়ের চাহিদা বাড়ে। এ কারণে তাঁতপল্লীতে কাজের চাপ বেড়ে যায়। কিন্তু বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হলেও তাঁত পল্লীগুলো কর্মমুখর হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যেই ফরিয়া ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বেড়েছে।
এনায়েতপুরের শাড়ি তৈরির অনেক ব্যবসায়ী জানান, শাড়ি তৈরির জন্য নরসিংদীর বাবুরহাট থেকে গজ হিসেবে সাদা কাপড় কিনে আনা হয়। পরে ওই কাপড়ে প্রিন্টিংয়ের কাজ করে বাজারে তোলা হয়।
তাঁত শ্রমিকেরা বলেন, ঈদ ও পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে বাড়তি আয় করার জন্য দিনরাত কাজ করছেন। এজন্য দিনপ্রতি নির্ধারিত পারিশ্রমিকও পেয়ে থাকি এবং এ পারিশ্রমিক এখন বাড়তি আয় বলেও দাবি করেন।
বৈশাখের শাড়ি ও তাঁত ব্যবসায়ীরা বলেন, মার্চ মাসের শুরু থেকে পহেলা বৈশাখের আগের রাত পর্যন্ত চলে প্রিন্টিংয়ের কাজ। ঢাকার গাউছিয়া, ইসলামপুর, টাঙ্গাইলের করটিয়া, পঞ্চগড়ের আটোয়ারী ও পাবনার আতাইকুলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা এসে কারখানা থেকে শাড়ি নিয়ে যায়।
বর্তমানে বাজারে বৈশাখী শাড়ির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। শ্রমিকদের বেতন, রং ও অন্যান্য খরচ শেষে শাড়িপ্রতি তিন থেকে চার হাজার টাকা লাভ হয়ে থাকে।
তাঁত মালিকরা বলছেন, বর্তমানে করোনা না থাকায় আবারো তাঁতের কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। তবে দীর্ঘদিন লোকসানের মুখে থাকায় আর্থিক সংকটে পড়েছে অধিকাংশ তাঁত মালিক।
এদিকে পহেলা বৈশাখ ও ঈদ উপলক্ষে নতুন করে কাজ শুরু করলেও রং-সুতা সহ সব উপকরণের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
পাওয়ারলুম ও হ্যান্ডলুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা জানান, জেলায় পাওয়ারলুম ও হ্যান্ডলুম রয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ। আর এ শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় ১০ লাখ শ্রমিক।
সরকার কৃষি উৎপাদনসহ বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি দিলেও বস্ত্র শিল্পে ভর্তুকির এখনও কোনো ব্যবস্থা নেই। এজন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তারা।
আরও পড়ুন: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে ‘শেখ হাসিনা তাঁতপল্লি’: মন্ত্রী
সিরাজগঞ্জে বন্যায় তাঁত শিল্পে ব্যাপক ক্ষতি
৭৬৩ দিন আগে
চীনা ভ্রমণকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা বাড়াল দ. কোরিয়া
চীনে চান্দ্র নববর্ষের ছুটির পর দেশটিতে কোভিড-১৯ এর বিস্তার আরও বাড়তে পারে-এই আশঙ্কায় ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত দেশটি থেকে স্বল্পমেয়াদী ভ্রমণকারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
জানুয়ারির শুরুতে দক্ষিণ কোরিয়া চীনে তার কনস্যুলেটগুলোতে বেশিরভাগ স্বল্পমেয়াদী ভিসা দেয়া বন্ধ করে দেয়। চীন ডিসেম্বরে হঠাৎ করে করোনাভাইরাস বিধিনিষেধ শিথিল করে এবং নতুন মিউটেশনের আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে দেশে ভাইরাসের বৃদ্ধির উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।
চীন, হংকং এবং ম্যাকাও থেকে আসা সমস্ত যাত্রীদের তাদের আগমনের ৪৮ ঘন্টা আগে নেতিবাচক পরীক্ষার প্রমাণ জমা দিতে এবং তারা পৌঁছানোর পরে তাদের আবার পরীক্ষা করার জন্য বাধ্যতামূলক করেছে দক্ষিণ কোরিয়া।
মূলত জানুয়ারি মাসের জন্য এই পদক্ষেপগুলো আরোপ করা হয়েছিল। যা দক্ষিণ কোরিয়ার স্বল্পমেয়াদী ভিসা আবেদন স্থগিত করে প্রতিশোধ নিতে চীনকে উসকে দিয়েছিল।
এমন একটি দেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ জাগিয়েছিল যা চীনে রপ্তানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার কোভিড-১৯ প্রতিক্রিয়া নিয়ে একটি বৈঠকের পরে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ চীন থেকে স্বল্পমেয়াদী ভ্রমণকারীদের ওপর করোনভাইরাস নিয়ন্ত্রণের বিধিনিষেধ আরও এক মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুন: ছবিতে চীনা নববর্ষ
চীনের প্রধান শহরগুলোতে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব ধীর হয়ে যাওয়ার কিছু ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা এই সপ্তাহে শেষ হওয়া চান্দ্র নববর্ষের ছুটিতে বিশাল সমাবেশ এবং ক্রস-কান্ট্রি ভ্রমণের পরে ভাইরাল পুনরুত্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন।
স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, চীনের কোভিড-১৯ পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে তা স্পষ্ট হয়ে গেলে বৈঠকে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা নিষেধাজ্ঞাগুলো শিথিল করার সম্ভাবনাটি উন্মুক্ত রাখেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এজেন্সির তথ্যানুসারে ২ জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার(২৬ জানুয়ারি) পর্যন্ত চীন থেকে আসা ছয় হাজার ৯০০ স্বল্পমেয়াদী ভ্রমণকারীর প্রায় ১০ শতাংশ বিমানবন্দরে পরীক্ষা করার পর ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যায়।
বিদ্যমান ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর অনুমতি দেয়ার সময় সরকারি প্রয়োজন, কূটনৈতিক এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম এবং মানবিক কারণ ছাড়া বেশিরভাগ স্বল্পমেয়াদী ভিসা দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে চীনে অবস্থিত দক্ষিণ কোরিয়ার কনস্যুলেট।
আরও পড়ুন: রাজাকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায় থাই যুবকের ২৮ বছরের কারাদণ্ড
৮২৭ দিন আগে