বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী
আগামী ৪ বছরের মধ্যে গ্যাসের শতভাগ প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হবে: প্রতিমন্ত্রী
আগামী চার বছরের মধ্যে গ্যাস খাতে শতভাগ প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেন, গ্যাস মিটার স্থাপন করলে অপচয় কমে যাওয়াসহ অনেক সুবিধা রয়েছে। আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব প্রিপেইড মিটার স্থাপন শেষ করতে।
আরও পড়ুন: সাংবাদিকতার যোগ্যতা নির্ধারণের দাবির সঙ্গে সরকার একমত: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
শনিবার (ফেব্রুয়ারি) সকালে জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেডের প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেক দিন ধরেই চাপ দিয়ে যাচ্ছি কোম্পানিগুলোকে। এখন বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ অনেকে অর্থায়ন করতে চায়। তারা প্রায় ৩০ লাখ মিটার স্থাপন করবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিরাপদ মনে করে ডেনমার্ক-সৌদি আরব: নৌ প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, জালালাবাদের সার্ভিস দেখে আমি সন্তুষ্ট। তাদের কোনো সিস্টেম লস নেই, কোনো অবৈধ সংযোগও নেই। ডাটা সেন্টার দেখলাম। চমৎকার মনে হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতিকুর রহমান, প্রকল্প পরিচালক ও মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) লিটন কুমার নন্দীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: সিলেটের কৈলাশটিলায় আরও ১.৬ টিসিএফ গ্যাস পাওয়া যাবে: প্রতিমন্ত্রী
বিদ্যুৎ উৎপাদনে হাইড্রোজেন ও অ্যামোনিয়া কীভাবে ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে কাজ করছে সরকার: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাস্তবধর্মী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে ‘টেকনো-ইকোনমিক স্টাডি অব ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন টেকনোলজিস ফর বাংলাদেশ: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড অপরচুনিটিস’ শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘প্রচলিত জ্বালানির পাশাপাশি জ্বালানি হিসেবে কীভাবে হাইড্রোজেন ও অ্যামোনিয়ার ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ কাজ করছে।’
তিনি কর্মশালায় জানান, ‘শিগগিরই জাতীয় গ্রিডে পারমাণবিক বিদ্যুৎ আসবে। ১২ হাজার ৪৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এখন উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে।’
আরও পড়ুন: ১৫ জানুয়ারির মধ্যে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন হতে পারে: নসরুল হামিদ
যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি ও আর্থিক কৌশলগত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্লুমবার্গ এনইএফ এই কর্মশালায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিভিন্ন উৎস ও এর ব্যয় নিয়ে গবেষণা উপস্থাপন করে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে অকৃষিজ জমির প্রাপ্যতা অন্যতম প্রধান সমস্যা।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অনশোর এবং অফশোর বায়ু শক্তি নিয়েও এগিয়ে যাচ্ছি। সাশ্রয়ী মূল্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করাই আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। সঞ্চালন ও বণ্টন ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ এবং গ্রিড সিঙ্ক্রোনাইজেশনের উপর এখন বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে।’
কর্মশালায় ব্লুমবার্গের পক্ষে গবেষণাপত্রটি উপস্থাপন করেন ব্লুমবার্গের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান ড. আলী ইজাদি, দক্ষিণ এশিয়ার মার্কেট লিডার ইশু কিকুমা এবং সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট তরুণ ব্লাকৃষ্ণান।
আরও পড়ুন: দু-একদিনের মধ্যে ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বাড়বে: নসরুল হামিদ
তারা ইউটিলিটি স্কেলে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিকে সমর্থন করা, ছাদ এবং ভাসমান সৌর ব্যবহার বৃদ্ধি এবং পরিষ্কার প্রযুক্তির কাজের জন্য প্রশিক্ষণের উপর জোর দিয়েছিলেন।
তারা বলেন, কয়লার সঙ্গে অ্যামোনিয়া বা প্রাকৃতিক গ্যাসের সঙ্গে হাইড্রোজেন মিশিয়ে কার্বন নিঃসরণ কমানো যাবে, তবে খরচ বেশি হবে। অন্যদিকে সৌরশক্তির সঙ্গে ব্যাটারি বা বাতাসের সঙ্গে ব্যাটারি ব্যবহার অনেক বেশি সাশ্রয়ী।
বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব নিরোদ চন্দ্র মণ্ডলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান, স্রেড চেয়ারম্যান মুনিরা সুলতানা, পিডিবির চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান, আরইবির চেয়ারম্যান অজয় কুমার চক্রবর্তী, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, বুয়েটের অধ্যাপক এজাজ আহমেদ, বদরুল ইমাম। এছাড়া জ্বালানি গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরীসহ বিভাগীয় প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ২০২৬ সালের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে: নসরুল হামিদ
দু-একদিনের মধ্যে ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বাড়বে: নসরুল হামিদ
দু-একদিনের মধ্যে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
রবিবার (২১ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'আমরা আশা করছি, ঢাকায় গ্যাসের ঘাটতি কমে আসবে এবং দু-একদিনের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’
তিনি বলেন, দেশে ফ্লোটিং স্টোরেজ ও রি-গ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) থেকে আবারও উৎপাদন শুরু হয়েছে এবং ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নতুন চিন্তাকে গ্রহণ করতে চাই: নসরুল হামিদ
‘এর মধ্যে একটির শিগগিরই রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে’ জানিয়ে তিনি বলেন, সাধারণত শীতকালে গ্যাস সরবরাহে কিছু সমস্যা হয়।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু প্রায় ৮০ শতাংশ আবাসিক গ্রাহক এখন এই তরল গ্যাস ব্যবহার করছে, তাই সরকার এলপিজি সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু ঢাকা ও আশপাশের এলাকার গ্রাহকরা পাইপলাইন গ্যাস ব্যবহার করে, অবশিষ্ট গ্রাহকরা এলপিজি ব্যবহার করে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যদি মোট গ্রাহক থেকে শিল্পভিত্তিক গ্রাহকদের বাদ দেওয়া হয়, তাহলে গৃহস্থালি গ্রাহকের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৫ লাখ।
তিনি আরও জানান, আগামী ৩ বছরের মধ্যে দেশের সব গ্রাহকের জন্য গ্যাস মিটার স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
আরও পড়ুন: ২০২৬ সালের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে: নসরুল হামিদ
শীত মৌসুমের শুরু থেকেই তীব্র গ্যাস সংকটে ভুগছে দেশবাসী। কিন্তু শুক্রবার এফএসআরইউগুলোর মধ্যে একটিতে প্রযুক্তিগত ত্রুটি দেখা দিলে পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটে। তবে এফএসআরইউ মেরামত করে চালু করা হলে চট্টগ্রাম ও আশপাশের গ্যাস সরবরাহে সামান্য উন্নতি হয়।
এদিকে, ৪৫ দিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণের মধ্যে থাকা আরেকটি এসএফআরইউও পুনরায় কাজ শুরু করে যার ফলে সরবরাহে আরেকটু উন্নতি হয়। কিন্তু গ্যাস সংকট পুরোপুরি সমাধান হয়নি।
ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের কোনো কোনো এলাকায় প্রচণ্ড গ্যাস সংকট এবং কোনো এলাকায় গ্যাসের চাপ খুবই কম রয়েছে।
আরও পড়ুন: ১৫ জানুয়ারির মধ্যে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন হতে পারে: নসরুল হামিদ
১৫ জানুয়ারির মধ্যে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন হতে পারে: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হতে পারে।
তিনি বলেন, সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ নতুন সরকারের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে।
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়নে বাংলাদেশ সৌরভিত্তিক উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে: নসরুল হামিদ
সোমবার (৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
নসরুল হামিদ ঢাকা-৩ আসন থেকে টানা তৃতীয়বারের মতো সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের শক্ত অবস্থানের কারণেই অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভোটের মাধ্যমে বিএনপি'র অগ্নিসন্ত্রাসের জবাব জনগণ দেবে: নসরুল হামিদ
তিনি বলেন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনাসহ নতুন সরকারের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে।
তিনি বলেন, নতুন সরকারকে আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য বজায় রাখতে স্বয়ংক্রিয় জ্বালানি মূল্য সমন্বয় ব্যবস্থা চালু করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরও পড়ুন: নতুন চিন্তাকে গ্রহণ করতে চাই: নসরুল হামিদ
আন্তর্জাতিক সৌর জোটকে কার্যকর কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান নসরুলের
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সদস্য দেশগুলোকে সৌরশক্তির প্রসারে সহায়তা করতে আন্তর্জাতিক সৌর জোট ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যালায়েন্সকে (আইএসএ) একটি কার্যকর কর্মসূচি নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার আইএসএ'র স্ট্যান্ডিং কমিটির ভার্চুয়াল সভায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘সৌর বিদ্যুৎ সম্প্রসারণকে সমর্থন করার জন্য আইএসএ উদ্ভাবনী প্রযুক্তির কেন্দ্র হতে হবে।’
ভারতের বিদ্যুৎ ও নতুন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রী আর কে সিংয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান আইএসএ’র মহাপরিচালক ড. অজয় মাথুর ও সদস্য রাষ্ট্রের সমূহের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও উপযুক্ত প্রতিনিধি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এলপিজি ব্যবহারের জন্য সময়োপযোগী নীতি প্রয়োজন: নসরুল
নসরুল হামিদ বলেন, আইএসএ সদস্য দেশগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টা থাকলে সৌর প্রকল্পের কার্যকর উন্নয়ন সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, সরকার সৌরবিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে সৌরবিদ্যুতের ক্ষমতা প্রায় ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। যার মধ্যে সোলার পার্ক থেকে ৪৬১ মেগাওয়াট এবং সোলার রুফটপ থেকে প্রায় ৩৫০ মেগাওয়াট পাওয়া যাচ্ছে।
বর্তমানে, বেশ কয়েকটি সোলার পার্ক নির্মাণাধীন রয়েছে এবং ভবিষ্যতে বাস্তবায়নের জন্য প্রায় ৯ হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য উৎস বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জ্বালানি খাতের জন্য আগামী ২ বছর ঝুঁকিপূর্ণ: নসরুল হামিদ
শান্তি-উন্নয়নের পক্ষে আবারও নৌকায় ভোট দিন: নসরুল হামিদ
টেকসই অবকাঠামো উন্নয়নে ভূ-বৈজ্ঞানিক তথ্য ব্যবহার করতে হবে: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, টেকসই অবকাঠামো উন্নয়নে ভূ-বৈজ্ঞানিক তথ্য ব্যবহার করতে হবে।
বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘নগর পরিকল্পনার জন্য ভূ-তথ্য এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের ফলাফলের ওপর আয়োজিত সেমিনারের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এলাকা-ভিত্তিক মাস্টার প্ল্যানের উন্নয়নে ভূ-বৈজ্ঞানিক তথ্যের প্রতিফলন থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন: সব তরল জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করা হবে: নসরুল হামিদ
জিওলজিক্যাল সার্ভে অব বাংলাদেশ (জিএসবি) এবং জার্মানির ফেডারেল ইনস্টিটিউট ফর জিওসায়েন্স অ্যান্ড ন্যাচারাল রিসোর্সেস (বিজিআর) সম্প্রতি যৌথভাবে বরিশাল ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন, ফরিদপুর ও সাতক্ষীরা পৌরসভা এবং আশেপাশের এলাকায় একটি সমীক্ষা চালায়।
প্রকল্পের অধীনে নিরাপদ বা ন্যূনতম ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ-বান্ধব নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন সুবিধা তৈরির উদ্দেশ্যে ভূতাত্ত্বিক, ভূ-প্রযুক্তিগত এবং পরিবেশগত তথ্যের একটি কম্পিউটারাইজড ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, জিএসবি-এর অর্জন সন্তোষজনক হলেও এর গবেষণার ক্ষেত্রগুলোকে আরও প্রসারিত করতে হবে।
‘আমরা যদি ভূতাত্ত্বিক জরিপে উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োগ করতে পারি তবে সাফল্যের অনুপাত আরও বাড়বে’, তিনি যোগ করে বলেন, ভূ-বৈজ্ঞানিক তথ্য ব্যবহারের নির্দিষ্ট নীতি থাকা উচিত।
জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এলজিআরডি সচিব মোহাম্মদ ইব্রাহিম, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াশি উদ্দিন, জার্মান রাষ্ট্রদূত আছিম ট্রস্টার, জিএসবি মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, বিজিআর, জার্মান প্রকল্প সমন্বয়কারী লেনা মারিয়া লরেঞ্জেন, জিএসবি প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুল কামাল এবং বিজিআর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ওয়ার্নার বুচের্ট প্রমুখ।
আরও পড়ুন: বাল্ক বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি খুচরা গ্রাহকদের এই মুহূর্তে প্রভাবিত করবে না: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে সংসদে তোপের মুখে নসরুল হামিদ
সব তরল জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করা হবে: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে সব তরল জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি আগামী দুই বছরের মধ্যে সব তরল জ্বালানিচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসতে পারব’।
আরও পড়ুন: নভেম্বর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতির আশা নসরুল হামিদের
শনিবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে ‘এনার্জি ট্রানজিশন: গ্লোবাল কনটেক্সট’ শীর্ষক সেমিনারে
এমন সময় প্রতিমন্ত্রী এ ধরনের মন্তব্য করেছেন, যখন বিদ্যুত ও জ্বালানি সংকট এবং প্রাথমিক জ্বালানির অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে ইতোমধ্যে ডিজেলচালিত প্ল্যান্টের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ (এফইআরবি) আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. এম তামিম ও ডা. বদরুল ইমাম, সিনিয়র জ্বালানি সচিব মাহবুব হোসেন, বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান। এবং পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন।
এফইআরবির চেয়ারম্যান শামীম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন এর নির্বাহী পরিচালক রিশান নাসরুল্লাহ।
নসরুল বলেন, প্রাথমিকভাবে এক বছরের মধ্যে এক হাজার মেগাওয়াট ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা হবে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জ্বালানির সংকট মোকাবিলায় তিনটি বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে।
এগুলো হলো প্রযুক্তিগত উন্নতি, সাশ্রয়ী মূল্যে এবং দ্রুততম সময়ে জ্বালানি সরবরাহ করে।
তিনি উল্লেখ করেন, সরকার জ্বালানি ব্যবসায় বেসরকারি খাতের আরও সম্পৃক্ততা চায়।
এ কারণে সব ধরনের জ্বালানি পণ্য আমদানি এখন বেসরকারি খাতের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।
নসরুল হামিদ বলেন, ‘বেসরকারি খাত এলপিজির পাশাপাশি সব ধরনের তরল জ্বালানি এবং এলএনজি আমদানি করতে পারে। তারা তাদের নিজস্ব স্থাপনা স্থাপন করতে পারে এবং পেট্রোল পাম্পে বিক্রির জন্য ডিলারদের সরবরাহ করতে পারে’।
তিনি বিদ্যমান ডিজেলচালিত বাস এবং অন্যান্য পরিবহনের পরিবর্তে বৈদ্যুতিক যানবাহন (ইভি) ব্যবহার করার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘সরকারি খাতের বাস এবং ট্রেনগুলোকে ইভি ব্যবহারে এগিয়ে আসা উচিত কারণ এর জ্বালানি সক্ষমতা ৮০ শতাংশ এবং ডিজেল চালিত যানবাহনের সক্ষমতা মাত্র ২০ শতাংশ’।
‘এনার্জি ট্রানজিশন: গ্লোবাল কনটেক্সট’-শীর্ষক উপস্থাপনায় ড. তামিম বলেন, বর্তমান সংকটের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাংলাদেশের তাড়াহুড়ো করা উচিত নয়।
তিনি আরও বলেন, ৫ থেকে ১০ বছরের সময়ের ফ্রেমে সেক্টরভিত্তিক গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণের ভিত্তিতে চাহিদার পূর্বাভাস নেয়া উচিত।
তিনি ভবিষ্যতের জ্বালানি ক্রয় চুক্তি এবং ঝুঁকি কমানোতে ভূমিকা রাখতে বিশ্বমানের জ্বালানি ব্যবসায়ীদেরকে যুক্ত করার পরামর্শ দেন।
আরও পড়ুন: বাল্ক বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি খুচরা গ্রাহকদের এই মুহূর্তে প্রভাবিত করবে না: নসরুল হামিদ
তিনি আরও বলেন, ‘দলের একটি বিস্তৃত বিশ্ব সম্পদ প্রবাহ এবং বহিঃপ্রবাহ বিশ্লেষণ করা উচিত।’
আইআরইএনএ -এর সুপারিশের কথা উল্লেখ করে ড. তামিম বলেন, সিও২ নির্গমন কমাতে বাংলাদেশের সর্বোত্তম পথ হলো দক্ষতার উন্নতি, কার্বন ক্যাপচার অ্যান্ড স্টোরেজ (বিইসিসিএস) এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিগুলোর সঙ্গে জৈবশক্তির ওপর জোর দেয়া।
তিনি বলেন যে স্থানীয় সরবরাহের সঙ্গে (গ্যাস এবং কয়লা উভয়ই) আমাদের অবশ্যই কয়লা, গ্যাস, সীমান্ত বিদ্যুৎ ও পারমাণবিক জ্বালানি আমদানির মাধ্যমে প্রাথমিক জ্বালানির স্থিতিশীল ও টেকসই উৎস নিশ্চিত করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও দক্ষতার উন্নতির প্রতিটি দিককে জোরদারভাবে উৎসাহিত করা, অর্থায়ন করা এবং নীতিগতভাবে সমর্থিত করা উচিত।’
তিনি আরও বলেন যে সৌর ছাদ, সেচ, সরকারি অধিগ্রহণকৃত জমিতে অব্যবহৃত পার্কগুলো থেকে সহজেই ২০৩০ সালের মধ্যে কমপক্ষে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেতে পারি।
তিনি উল্লেখ করেন যে ‘জ্বালানি ও দক্ষতা প্রযুক্তি অভিযোজনের ওপর একটি পৃথক গবেষণা করা উচিত। এবং গ্রিড আপগ্রেডেশন এবং উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাধীন সিস্টেম অপারেটর তৈরিতে অবিলম্বে বিনিয়োগ প্রয়োজন।’
অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণায় এখনও স্থানীয় গ্যাস অনুসন্ধানের বিশাল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
সরকারের উচিত জ্বালানি সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে এই ধরনের সম্ভাব্য সুযোগগুলো ব্যবহার করা।
জ্বালানি সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, বিদেশি কোম্পানিগুলোকে গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানানোর আগে পর্যাপ্ত তথ্য সংগ্রহে সরকার সারাদেশে টুডি ও থ্রিডি অনুসন্ধান চালানোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি বলেন, চলমান কর্মসূচির আওতায় ২০২৬ সালের মধ্যে প্রায় ৬০০এমএমসিএফডি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।
বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, সরকার প্রায় দুই হাজারটি ডিজেল চালিত সেচ পাম্পকে সোলার সিস্টেমে প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু এক্ষেত্রে আমাদের একটি বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে।’
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে সংসদে তোপের মুখে নসরুল হামিদ
শিল্প কারখানায় গ্যাস সরবরাহের সমস্যা সমাধান করা হবে: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, শিল্প কারখানায় গ্যাস সরবরাহে নিম্নচাপের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) এ ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
নসরুল হামিদ বলেন, গ্যাস সরবরাহে স্থানীয় সমস্যা সমাধানে আমরা পদক্ষেপ নেব যাতে পরিস্থিতির অবনতি না হয়।
আরও পড়ুন: ৮০ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন: নসরুল হামিদ
তিনি বলেন, ব্যবসায়ী নেতারা অভিযোগ করেছেন নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় পর্যাপ্ত চাপে গ্যাস পাচ্ছে না। ‘আমরা সেগুলো নির্ধারণে নজর রাখছি।’
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে ব্যবসায়ীদের একদল নেতা বৈঠকে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এমন এক সময়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় যখন চলমান জ্বালানি সংকটের প্রেক্ষাপটে রপ্তানিমুখী শিল্প বিশেষ করে টেক্সটাইল, গার্মেন্টস এবং সিরামিক পণ্য প্রস্তুতকারীরা পর্যাপ্ত গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য মরিয়া হয়ে শীর্ষ নীতি নির্ধারকদের রাজি করাচ্ছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্যাস সরবরাহে শিল্পগুলো এখন যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তা সমাধানে তিনি ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, বৈঠকে মূলত স্থানীয় গ্যাস সরবরাহের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তাদের আশ্বস্ত করেছে যে তারা আগের মতো সরবরাহ পাবে। আমরা সবাই মিলে আগামী মাসে এবং আগামী বছর সরবরাহ আরও ভালো রাখার চেষ্টা করব।
এক প্রশ্নের জবাবে নসরুল বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে পরিস্থিতি ভিন্ন হবে এবং সেটা ভিন্ন বিষয়।
তিনি স্বীকার করেন, ব্যবসায়ী নেতারা তাকে গ্যাস আমদানি বাড়ানোর অনুরোধ করেছেন। ‘কিন্তু এটা সরকারের বিষয়, তাদের নয়।
গ্যাস আমদানি ব্যয় বার্ষিক এক দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ী নেতাদের অনুরোধের বিষয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, বিষয়টি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর নির্ভর করে না।
তিনি বলেন, ‘সাশ্রয়ী মূল্যে গ্যাসের প্রাপ্যতার বিষয়টি... গ্যাসের বিশ্ববাজার স্থিতিশীল নয়। পতনের পর আবার দাম বেড়েছে।’
এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ব্যবসায়ী নেতারা শিল্পে গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে বিভিন্ন বিকল্প তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনা করব। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করব।’
আরও পড়ুন: জাতীয় গ্রিড বিপর্যয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে সোমবারের মধ্যে ব্যবস্থা: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ খাতে ভালো সমন্বয় দরকার: নসরুল হামিদ
লোডশেডিং: নভেম্বরের আগে উন্নতির আশা নেই, বললেন নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, গ্যাস আমদানি করা সম্ভব না হওয়ায় নভেম্বরের আগে বাংলাদেশে চলমান লোডশেডিং পরিস্থিতির কোনো উন্নতির আশা নেই।
সোমবার মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ঢাকা ও আশপাশে সারাদিনে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পর্যাপ্ত জ্বালানি সরবরাহের অভাবে সরকারকে বিকল্প ভিত্তিতে কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা করতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গ্রিড বিপর্যয়ের সঠিক কারণ খুঁজতে আরও সময় প্রয়োজন: নসরুল হামিদ
তিনি বলেন, `আমরা কিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট দিনের বেলায় বন্ধ রাখি এবং অন্যগুলো রাতে বন্ধ রাখি। যে কারণে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়েছে।‘
নসরুল হামিদ বলেন, `বাংলাদেশের বর্তমান লোডশেডিং পরিস্থিতি আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকবে এবং নভেম্বর থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।’
প্রতিমন্ত্রী এর আগে সেপ্টেম্বরের পর বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হবে এবং অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে লোডশেডিং থাকবে না বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন।
তার আগের বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নসরুল হামিদ বলেন, করোনা মহামারির পর শিল্পে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি শিল্পকারখানায় গ্যাসের চাহিদা বেড়ে গেছে। তাই সরকার বিদ্যুৎকেন্দ্রে না দিয়ে তাদের গ্যাস সরবরাহ করতে বাধ্য হচ্ছে।
বৈশ্বিক পরিস্থিতি আবারও ভিন্ন হওয়ায় জ্বালানি সরবরাহের পরিস্থিতি আরও দীর্ঘ সময়ের জন্য অব্যাহত থাকতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের বিষয়ে জনগণকে আরও ধৈর্যশীল হওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: সন্ধ্যা ৭টায় পুরোপুরি বিদ্যুৎ চালু হতে পারে: নসরুল হামিদ
বিশ্বব্যাংককে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রকল্পে অর্থায়ন ত্বরান্বিত করার আহ্বান নসরুল হামিদের
সোলার প্যানেল ব্যবহার করে ২০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ বিল বাঁচানো সম্ভব: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বাসা-বাড়িতে সোলার প্যানেল ব্যবহার করে ২০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ বিল বাঁচানো সম্ভব।
তিনি বলেন, যে কোন প্রতিষ্ঠান বা বাসা-বাড়ি তাদের সোলার প্যানেল ব্যবহার করে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত করলে মোট বিদ্যুৎ খরচ ২০ শতাংশ হ্রাস করতে পারে। আপনি যে সোলার প্যানেল ব্যবহার করবেন আপনার ভবনে, সেখান থেকে যেই বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হবে তা আমাদের দিয়ে দেবেন। সেটি যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে। আর আপনার মোট বিদ্যুৎ ব্যবহার থেকে সেই পরিমাণ বিদ্যুতের বিল মাইনাস করা হবে। এতে ২০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ বিল বাঁচানো সম্ভব।
বৃহস্পতিবার ‘লেটস টক অন গ্রিন ট্রানজিশন’- অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সোলার প্যানেল স্থাপন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে ব্যক্তিগত উদ্যোগে যেই সোলার প্যানেলগুলো স্থাপিত হয়েছে তার ৫০ শতাংশ খরচ সরকার প্রদান করেছে। বাকি ৫০ শতাংশ আবার ব্যক্তিগত লোন হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রদান করছে। অর্থাৎ সোলার প্যানেল অতি স্বল্প খরচে ব্যবহার করা সম্ভব।
নসরুল হামিদ বলেন, রাশিয়া গ্যাস সরবরাহ বন্ধের পর জার্মান তার ২৫ শতাংশ গ্যাস বিতরণ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। বিকল্প জ্বালানি খুঁজছে সবাই। বিশেষত সামনের শীতের জন্য। একই অবস্থা যুক্তরাজ্যের। বাংলাদেশে ২০০৯ সালে ১২-১৩ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকতো। সেখান থেকে সাময়িক সমস্যার জন্য এখন কয়েক ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। অর্থাৎ প্রাথমিক ধকল সামলে উঠেছি আমরা। ২০০৯ সালে আমরা স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি বিদ্যুৎ খাত নিয়ে। সম্প্রতি জাপানের সহায়তায় আমরা আরেকটি পরিকল্পনা করছি।
নসরুল হামিদ বলেন, আসলে আগে যেই নতুন প্রযুক্তি আসতে কয়েক দশক লেগে যেতো, এখন কয়েক মাসের মধ্যে নতুন নতুন প্রযুক্তি আসছে। আর এ কারণেই আমরাও তা ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট, এরপর হাইড্রোজেন প্লান্ট- সামনে হয়ত নতুন আরও কিছু আসবে। সেটি ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশও গ্রিন সাসটেইনেবল এনার্জি ব্যবহার করতে চায়। আর এ ক্ষেত্রে বেশ জনপ্রিয় ইলেকট্রিক যানবাহন বা ই-ভিয়েকেল। নসরুল হামিদ বলেন, এরই মধ্যে ই-ভিয়েকেলের জন্য চার্জিং স্টেশন স্থাপনের কাজ করছি আমরা। এটি দুর্দান্ত একটি বিষয় হবে। আপনি যেই পথ পাড়ি দিতে ৮০ টাকা খরচ করতেন, সেই পথ পাড়ি দিতে ১০ টাকা খরচ হবে।
আরও পড়ুন: সৌরবিদ্যুতের প্রধান প্রতিবন্ধকতা শুল্ক ও জমি: নসরুল হামিদ
ই-ভিয়েকেল নিয়ে সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয় নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করছে বলে জানান তিনি।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ক্ষেত্রে সবচাইতে গুরুত্ব দেয়া উচিত পাবলিক পরিবহনগুলোকে। বিশেষত বাস, ট্রেন এবং কারগুলো যেন ইলেক্ট্রনিক হয়। একবার ভেবে দেখুন, কি পরিমাণে সাশ্রয় হবে।
এদিকে দূষণ হ্রাসের জন্য পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ব্যবহার করলে তার বর্জ্যের কী হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে হাসতে হাসতে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পেট্রোলিয়াম ও খনিজসম্পদ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, দেখুন পরমাণু কেন্দ্রের জ্বালানি যারা সরবরাহ করবেন, তারাই বজ্র নিয়ে যাবেন। এমনভাবেই চুক্তিটি হয়। সুতরাং এটি নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
এ সময় নসরুল হামিদ আরও বলেন, আমাদের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের বেজ এমাউন্ট যেন গ্রিন নির্ভর হয় সেই চেষ্টা করছি আমরা। অর্থাৎ বর্তমানে আমাদের বেজ ১২ হাজার মেগাওয়াট। ধীরে ধীরে এটি আরও বাড়ানো হবে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের জন্য ৯ আগস্ট একটি বড় দিন বলে মন্তব্য করেন নসরুল হামিদ।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে দেশের পাঁচটি গ্যাস ক্ষেত্র ব্রিটিশ সেল কোম্পানির কাছে ছিল। তখন বঙ্গবন্ধু এই গ্যাস ক্ষেত্রগুলো রাষ্ট্রায়ত্ত করতে চেয়েছিলেন। প্রায় চার বিলিয়ন পাউন্ড অর্থ ব্যয়ে সেটি সম্পন্ন করেন তিনি। তার এই দূরদর্শী সিদ্ধান্ত ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে ৪০০ বিলিয়ন পাউন্ডের বেশি সহায়তা করেছে এবং এখনও করে যাচ্ছে।
৭২এর সংবিধানের ১৬ নং অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে শহরের সুবিধা গ্রামে নিয়ে যেতে হবে। পৃথিবীর কোন সংবিধানে এভাবে বিদ্যুৎ নিশ্চিত করার কথা বলা নেই। ২০০৯ সালে ১৩-১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং থেকে রক্ষা পেতে শর্টটার্ম, মিডটার্ম এবং লংটার্ম প্লান করি। ভবিষ্যতের জ্বালানি ক্ষেত্র কী হতে পারে, তা আমরা যাচাই করছি। জাপান এ ক্ষেত্রে সহায়তা করছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পেট্রোলিয়াম ও খনিজসম্পদ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. ম. তামিম, ইয়ুথ এনভারমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভলোপমেন্ট সোসাইটি (ওয়াইইএসডিএ)-এর প্রেসিডেন্ট রেবেকা সুলতানা এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (আইইউবি)-এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. তানভীর হাসান।
সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি হিসেবে সোলার প্যানেল ব্যবহারে সচেতনতা তৈরি করছে বলে জানান লেটস টক অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান।
আলোচকেরা আরও জানান, বাতাসের এনার্জি ব্যবহার করে, বায়ো গ্যাস এবং আরও বিকল্প উৎস সন্ধানে কাজ করে যাচ্ছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে যখন বিশ্ব জ্বালানি ব্যবস্থা টাল-মাটাল, তখন সরকারের বর্তমান উদ্যোগগুলো ভবিষ্যতের জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা।
এ সময় তারা বলেন, যে কোন কাজের ফলাফল পেতে সময় লাগে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে চলমান জ্বালানি সংকটের ছোঁয়া বাংলাদেশেও লেগেছে। এক্ষেত্রে আগে থেকে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব ছিল কিনা এমন এক প্রশ্ন তুলে ড. ম. তামিম বলেন, বলতে পারেন এখন যেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, পাঁচ বছর আগে নিলে আমাদের বর্তমান গ্যাস সংকট থাকতো না। কিন্তু বাস্তবতা হলো, তখনো বৈশ্বিক এই সংকটের প্রভাব পড়ত। তবে সরকার যেই উদ্যোগগুলো গ্রহণ করেছে তার ফলাফল ভবিষ্যতে পাওয়া যাবে।
সরকার এলএনজি আমদানি বেশি দামে আমদানি করায় জ্বালানি খাতে সংকট তৈরি হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য ‘মিক্সড সোর্স’ খুবই জরুরি। আর এ কারণেই এটি সঠিক সিদ্ধান্ত। আপনার হাতে যত বেশি অপশন থাকবে, সিদ্ধান্ত নেয়া তত সহজ হবে।
তরুণরা যাতে দেশের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে খোলামেলা ভাবে আলোচনা করতে পারেন এবং নিজেদের ভাবনা ও সমস্যাগুলোর কথা নীতি নির্ধারকদের কাছে পৌঁছাতে পারেন সে জন্য সিআরআই ২০১৪ সাল থেকে নিয়মিত আয়োজন করে আসছে ‘লেটস টক’। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদকে নিয়ে এর আগে বেশ কয়েকবার লেটস টক আয়োজন করা হয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আয়োজন করা হয় ‘লেটস টক উইথ শেখ হাসিনা’।
আরও পড়ুন: বিদ্যুতের সংকট বেশিদিন থাকবে না: নসরুল হামিদ
গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান নসরুল হামিদের