অক্সিজেন সরবরাহ
অক্সিজেন সরবরাহে বিঘ্ন: ভারতে ১১ করোনা রোগীর মৃত্যু
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে অক্সিজেন সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় সোমবার রাতে লাইফ সাপোর্টে থাকা ১১ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তিরুপতির শ্রীভেঙ্কটেশ্বর রামনারায়ণ রুইয়া সরকারি হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতালটিতে প্রায় ৭০০ করোনা রোগী চিকিৎসাধীন। অক্সিজেনের সরবরাহে সমস্যা হয়ওয়ায় আইসিইউ-তে থাকা রোগীরা বেশ কিছুক্ষণ প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পাননি। এতেই ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনা: ভারতে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৮৭৬ মৃত্যু
এই ঘটনার জেরে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন রেড্ডি উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। চিত্তুরের জেলাশাসক এম হরিনারায়ণ জানিয়েছেন, কর্তব্যরত চিকিৎসকদের তৎপরতায় বড় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘অক্সিজেনের চাপ কমে গিয়েছিল কিছুক্ষণের জন্য। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ফের অক্সিজেন চালুর ব্যবস্থা করা হয়। এর জন্য বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক, ওই সময়ের মধ্যেই ১১ জন রোগী প্রাণ হারিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: করোনা: ভারতে একদিনে আরও ৪০৯২ মৃত্যু
অক্সিজেনের সমস্যা শুরু হতেই ৩০ জন চিকিৎসকের একটি দল আইসিইউ-তে রোগীদের পরিচর্যার জন্য ছুটে গিয়েছিলেন। অক্সিজেনের অভাব না থাকলেও অক্সিজেন সরবরাহ মিনিট পাঁচেকের জন্য বন্ধ থাকাতেই এই বিপত্তি ঘটেছে।
৩ বছর আগে
হাসপাতালে অক্সিজেনের সংকট নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ভারত থেকে অক্সিজেন আমদানি হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলেও উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস অক্সিজেনের অভাবে ভারতকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা এখন ভারত থেকে অক্সিজেন পাচ্ছি না। তবে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু নেই। আমরা সারা বছর ভারত থেকে অক্সিজেন আমদানি করি না। করোনাভাইরাসের সময় আমরা ৪০-৫০ টন অক্সিজেন আমদানি করেছি।’
বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) প্রাঙ্গণে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘চার-পাঁচ দিন ধরে ভারত থেকে অক্সিজেন আসছে না, তবে আমরা সবকিছু পরিচালনা করছি এবং আমাদের কোনো সংকট নেই।’
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালগুলো কেবল লিকুইড অক্সিজেনই নয়, গ্যাস অক্সিজেনও ব্যবহার করে। এর বিশাল উত্পাদন ক্ষমতার কারণে বাংলাদেশে গ্যাস অক্সিজেনের অভাব নেই।’
আরও পড়ুন: রাশিয়ার টিকা 'স্পুটনিক ভি’ ব্যবহারের অনুমোদন দিল বাংলাদেশ
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত অক্সিজেন সরবরাহ ও উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মোটামুটি ভালো অবস্থানে রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, জরুরি পরিস্থিতিতে রোগীদের ব্যবহারের জন্য আমরা শিল্পখাতে ৪০ টন অক্সিজেনও বুকিং দিয়ে রেখেছি।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় দেশের হাসপাতালে এখন অক্সিজেনের সংকট নেই। যদি কোভিড রোগীদের সংখ্যা তিনগুণ বেড়ে যায় এবং বর্তমান ৭ হাজার থেকে ২১ হাজার পৌঁছে যায় তবে আমরা অক্সিজেনের চাহিদা পূরণ করতে পারব না। সুতরাং, কোভিড সংক্রমণ কমাতে আমাদের অবশ্যই পদক্ষেপ নিতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যে এমন শিল্পগুলোর সাথে যোগাযোগ করেছে যারা সঙ্কটের সময় এটি ব্যবহার থেকে সংগ্রহ করতে তরল অক্সিজেন ব্যবহার করে। আমরা ছোট অক্সিজেন প্ল্যান্ট আমদানির পরিকল্পনা করছি।’
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন প্রাপ্তির অনিশ্চয়তা শিগগিরই কেটে যাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বিকল্প উৎস থেকে টিকা সংগ্রহে ২ সপ্তাহ সময় লাগবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, সরকার ১০০টি হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন লাইন স্থাপন করেছে যাতে কোভিড রোগীদের যখনই প্রয়োজন হয় তা পেতে পারেন।
‘আমরা এখন ৭ হাজার শয্যা দিচ্ছি। যদি রোগীদের সংখ্যা ২১ হাজার হয়ে যায় তবে আমরা তাদেরকে স্থান দিতে পারব না। আমাদের এটি মাথায় রাখা উচিত,’ বলেন তিনি।
মালেক বলেন, ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এবং মাস্ক পরতে হবে।
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ এ বছরের গোড়ার দিকে নিয়ন্ত্রণে আসে, কিন্তু মানুষের বেপরোয়া মনোভাব, ভ্রমণ, জনসমাগম এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়মের প্রতি উদাসীনতার কারণে ভাইরাসটির দ্বিতীয় ঢেউ তৈরি হয়েছে। আমরা যদি এই ধরনের ভুল থেকে শিক্ষা না নেই তবে তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট ও খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। সুতরাং, এই এলাকার লোকদের সচেতন থাকা এবং কঠোরভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি অনুসরণ করা প্রয়োজন।’
৩ বছর আগে