ভর্তুকি
জ্বালানি তেলে সরাসরি ভর্তুকি দেওয়া হয়নি: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জ্বালানি তেলে সরকার সরাসরি কোনো ভর্তুকি দেয় না।
বুধবার সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে ২০২১-২২ অর্থবছরে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, এমনকি সরকার দাম সমন্বয় করার পরেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) প্রায় ২ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা লোকসান করেছে।
আরও পড়ুন: জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে দিনাজপুরে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন: নসরুল হামিদ
তিনি আরও বলেন, সরকারের কাছ থেকে কোনো ভর্তুকি না নিয়ে বিপিসি তার আগের লাভ থেকে এই ক্ষতি করেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০২২-২৩ অর্থ বছরেও বিপিসির ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। বিপিসি এই অর্থ বছরেও সরকারের কাছ থেকে কোনো ভর্তুকি পায়নি, এবং এটি তার আগের লাভ থেকে লোকসান বহন করছে।
চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে নসরুল বলেন, গ্যাস খাতের উন্নয়নে গত ১৪ বছরে সাতটি বিদেশি কোম্পানি বাংলাদেশে ৩ হাজার ৪৮৩ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
আরও পড়ুন: ইলিশা-১ দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র: নসরুল হামিদ
অনেক বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানও অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহার করছে: নসরুল হামিদ
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখবে সরকার: ড. রাজ্জাক
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার কৃষিখাতে চলমান ভর্তুকি অব্যাহত রাখবে।
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বাংলাদেশ সীড কংগ্রেসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. রাজ্জাক এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক বাজারে সারসহ কৃষিসংশ্লিষ্ট সব পণ্যের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও সরকারের দেয়া ভর্তুকির কারণে দেশে সারের দাম এক পয়সাও বাড়েনি।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘নিম্নমানের বীজ নিয়ে এখনো অনেক অভিযোগ রয়েছে। মাঠ পর্যায় থেকে খবর পেয়েছি যে চারা অর্ধেক বেড়ে ওঠেনি। এখনো কিছু সংস্থার কৃষকদের প্রতারিত করার প্রবণতা রয়েছে।’
তিনি বলেন, অনেক সময় নিম্নমানের বীজ কিনে কৃষকরা প্রতারিত হন। এতে, একদিকে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: জনগণই আওয়ামী লীগের পাহারাদার: কৃষিমন্ত্রী
একটি জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, মানসম্মত বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হলে ধানের উৎপাদন ২১ লাখ টন বাড়ানো সম্ভব।
অনুষ্ঠানে কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জ্যান বেইলি, এফএও'র বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট সিম্পসন, এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক সিড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনিশ প্যাটেল, ইন্টারন্যাশনাল সিড ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাইকেল কেলার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ বীজ সমিতির সভাপতি এম আনিস উদ দৌলা। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সাত্তার মন্ডল দেশের বীজ পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, ভালো মানের বীজ সরবরাহের ফলে ইতোমধ্যে ফলন বেড়েছে ৮-১০ শতাংশ। ভালো মানের বীজ সরবরাহ করতে পারলে বছরে ২১ লাখ মেট্রিক টন চালের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব।
বেসরকারি খাতে বীজ উৎপাদন এবং বাণিজ্যকে উৎসাহিত করতে কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বীজ সমিতি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: সার ও বীজের দাম বাড়বে না: কৃষিমন্ত্রী
দেশের নির্বাচনে বিদেশিরা ভূমিকা রাখতে পারবে না: রাজ্জাক
পানিতে ভর্তুকি দেয়া বন্ধ করবে ঢাকা ওয়াসা: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, এখন থেকে রাজধানীতে পানিতে ভর্তুকি দেয়া বন্ধ করবে ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ঢাকা ওয়াসা)।
মন্ত্রী আরও বলেন, জোনভিত্তিক পানির হার নির্ধারণ করা হলে শহরের বস্তিতে বসবাসকারী নিম্ন আয়ের মানুষরা কম দামে পানি পাবেন।
শুক্রবার প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) মিলনায়তনে সিটি রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এসব কথা বলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা শহরে বসবাসকারী বেশিরভাগ মানুষই স্বচ্ছল। উচ্চ ও নিম্ন আয়ের মানুষকে একই হারে পানি সরবরাহ করার কোনো মানে হয় না। আমরা শিগগিরই বিভিন্ন জোন অনুযায়ী পানির দাম নির্ধারণ করব যার পরে যারা দরিদ্র অঞ্চলে বসবাস করেন তাদের তুলনায় স্বচ্ছল এলাকায় বসবাসকারীরা পানির জন্য বেশি মূল্য দিতে হবে।’
তাজুল আরও বলেন, সম্প্রতি গেজেট হিসেবে প্রকাশিত ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ডিএপি) বাস্তবায়নের সময় এসেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক চেষ্টার পর ড্যাপের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। এটি ঢাকাকে একটি বাসযোগ্য, আধুনিক ও মনোরম নগরীতে পরিণত করতে সহায়তা করবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আমাদের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিটি রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি আদিলুর রহমান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পিআইবির মহাপরিচালক (ডিজি) জাফর ওয়াজেদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব দীপ আজাদ এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পদ্মা সেতু দুই যুগেও হতো না: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
টিসিবির পণ্য বিক্রি নিয়ে টিআইবির প্রতিবেদন সঠিক নয়: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, দেশের নিম্নআয়ের এক কোটি পরিবারের মাঝে টিসিবির ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রয় নিয়ে টিআইবির প্রতিবেদন যথাযথ তথ্যের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়নি। টিআইবি যে কোন বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করতেই পারে, তবে তা সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে হওয়া উচিত।
বুধবার (১৭ আগস্ট) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে টিআইবির প্রতিবেদন নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি ‘টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড কার্যক্রমে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে টিআইবি জানিয়েছে, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড কার্যক্রমে প্রকৃত উপকারভোগী অনেকে বাদ পড়েছেন।
টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশে এক কোটি পরিবারের মাঝে নির্ধারিত ডিলারদের মাধ্যমে কার্ডধারী পরিবারগুলোর মাঝে এ পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে। প্রায় একশত ভাগ ভর্তুকি দিয়ে পরিবার কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে। কিউআর কোর্ড ব্যবহার করে পণ্য বিক্রয়ের কারণে শৃঙ্খলা এসেছে। খুব কম সময়ের মধ্যে পণ্য বিক্রয় করা যাচ্ছে। এখন পণ্য ক্রয়ে আর কষ্ট করতে হয় না। এখন আর একই ব্যক্তির দু’বার পণ্য ক্রয়ের সুযোগ নেই। কার্ডধারী ব্যক্তি তার সুবিধাজনক সময়ে ডিলারদের কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করছেন। এক্ষেত্রে কোন ধরনের অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে না।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে জনপ্রতিনিধি এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় এ তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। ঢাকায় অল্প কিছু ছাড়া সারা দেশে এ কার্ড বিতরণ সম্পন্ন করা হয়েছে। কার্ডধারী মানুষ এখন সুশৃঙ্খলভাবে টিসিবির পণ্য ক্রয় করতে পাচ্ছেন। আমারা চেষ্টা করছি সঠিক নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে টিসিবির পণ্য করতে। টিসিবির মাধ্যমে তেল, চিনি, সোলা, মশুর ডাল, পবিত্র রমজান মাসে চিনি, খেজুর বিক্রয় করা হয়।
তিনি বলেন, আগে ট্রাক সেলের মাধ্যমে এ পণ্য বিক্রয় করা হতো, এতে একই ব্যক্তি একাধিকবার লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য ক্রয় করতো, অনেকে পেতো না। এজন্য কার্ডের মাধ্যে এক কোটি পরিবারের মাঝে পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে। টিসিবির পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। যাতে প্রকৃত নিম্নআয়ের মানুষ এ পণ্য ক্রয়ের সুবিধা পান। টিসিবির পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দেশব্যাপী প্রায় ৩ হাজার ৩০০ ডিলারের মাধ্যমে এ পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে। ডিলারের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য কাজ করা হচ্ছে।
এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
পড়ুন: বাংলাদেশকে ঋণ দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত অক্টোবরে: আইএমএফ
ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন লি. এর নতুন নাম ডিবিএইচ ফাইন্যান্স পিএলসি
কঠিন সময়ে বিদ্যুৎ ভর্তুকি কমাতে জনগণের সমর্থন কামনা প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি কমানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন এবং এ বিষয়ে জনগণের কাছে পূর্ণ সহযোগিতা চেয়েছেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অনিশ্চিত পরিস্থিতি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় সরকারি ভর্তুকি হ্রাস করা প্রয়োজন বলে জোর দিয়ে তিনি বলেন, আমি আশা করি দেশের জনগণ আমাদের সহযোগিতা করবে।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) দেশের প্রথম ক্যাম্পাসভিত্তিক বিজনেস ইনকিউবেটর ‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’, শেখ জামাল ডরমেটরি এবং রোজি জামাল ডরমেটরির ভার্চুয়াল উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ঈদের আগে ২৭১৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা এবং এলএনজি আমদানিতে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমাদের লোডশেডিং এর দিকে যেতে হবে এবং আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন সীমিত করতে হবে যাতে সরকার এই খাতে ভর্তুকি কমাতে পারে।
তিনি বলেন, প্রতি ঘনমিটার এলএনজির জন্য সরকার দেয় ৫৯ দশমিক ৬০ টাকা যেখানে ভোক্তা পর্যায়ে দাম মাত্র ৯ দশমিক ৬ টাকা। সম্প্রতি দাম বাড়িয়ে ১১ টাকা করা হয়েছে। কিন্তু এখনও সেখানে বিশাল ভর্তুকি রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে জ্বালানি বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ প্রতি কিলোওয়াট ১২ দশমিক ৮৪ টাকা, যেখানে সরকার চার্জ করছে মাত্র পাঁচ দশমিক ৮ টাকা।
আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশের প্রথম বিজনেস ইনকিউবেটর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ফারনিজ তেলের বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল্য ১৭.৪১ টাকা এবং বিক্রয় মূল্য মাত্র ৫.০৮ টাকা। ডিজেলের জন্য, প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ৩৬ দশমিক ৮৫ টাকা এবং বিক্রয় মূল্য মাত্র ৫ দশমিক ০৮ টাকা।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ১২ দশমিক ৩৭ টাকা যেখানে বিক্রয় মূল্য মাত্র ৫ দশমিক ০৮ টাকা।
তিনি বলেন, কতদিন আমরা এত বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে পারব। আমাদের গৃহহীনদের জন্য খাদ্য, চিকিৎসা সুবিধা এবং ঘরের ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেটে সরকার ভর্তুকি হিসাবে ৮৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। ভর্তুকি না কমালে সরকার টাকা পাবে কোথা থেকে।
আরও পড়ুন: জ্বালানি সাশ্রয়ে এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিংয়ের কথা ভাবছেন প্রধানমন্ত্রী
ক্ষমতাসহ সব কিছুর ব্যবহার এবং নিজ নিজ সঞ্চয় বাড়ানোর জন্য তিনি সকলকে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে একটিই বিকল্প আছে, আমি ইতোমধ্যে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং আরোপ করার নির্দেশ দিয়েছি এবং জনগণকে আগে জানানোর জন্য একটি রুটিন তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছি যাতে তারা প্রস্তুতি নিতে পারে এবং আমরা তাদের ভোগান্তি কমাতে পারি।
বাজেটে নিম্ন-মধ্যম আয়ের জনগণের জন্য কোনো সুখবর নেই: সিপিডি
সদ্য ঘোষিত বাজেটে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের জনগণের জন্য কোনো সুখবর নেই বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতির হার ৬.২৯ শতাংশ (বিবিএস অনুসারে এপ্রিলে) থেকে ৫.৬ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করলে সিপিডি নেতারা এ ব্যাপারে সরকারের সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে পৌঁছেছে।
১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া আসন্ন অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের ৬ দশমিক ৭৮ ট্রিলিয়ন টাকার জাতীয় বাজেট পেশের একদিন পর শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: বাজেট অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে: অর্থমন্ত্রী
সিপিডির মতে, নিম্ন, মধ্যবিত্ত এবং স্থির আয়ের গোষ্ঠীগুলো একটি পরিবার চালানোর জন্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে কেননা মুদ্রাস্ফীতির প্রবণতা বেশি থাকলে পণ্যের দাম কমার সম্ভাবনা নেই।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ডা. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করার পর থেকে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বাড়ছে।
তিনি বলেন, বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। চাল-ডালসহ ২৯টি পণ্যের দাম কমানোর প্রয়োজন ছিল, কিন্তু তা হয়নি। সিপিডি এক্ষেত্রে কর কমানোর সুপারিশ করেছিল কিন্তু তাও রাখা হয়নি।
ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, অর্থমন্ত্রী অর্থনীতির চ্যালেঞ্জগুলোর কথা উল্লেখ করলেও তিনি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পথ উল্লেখ করেননি।
সিপিডি বলছে, বেসরকারী খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে যা বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ঋণ নিলে প্রভাবিত হবে।
এক্সচেঞ্জ রেট ২৩ অর্থবছরে গড়ে প্রতি মার্কিন ডলারের জন্য ৮৬.২ টাকায় পৌঁছাবে বলে বলা হলেও কীভাবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে তা বাজেটে বলা হয়নি।
কৃষি খাতে এবং খাদ্য উৎপাদনে ভর্তুকি বাড়ানোর জন্য বাজেটের প্রশংসা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: কৃষিযন্ত্রে বিশাল ভর্তুকি
বাজেট ২০২২-২৩: কৃষিযন্ত্রে বিশাল ভর্তুকি
খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং এ খাতে শ্রম নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যে কৃষি আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার সংসদে অডিও-ভিজ্যুয়াল বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, সরকার কৃষিযন্ত্রে কৃষকদের ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি প্রদান করছে।
তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকে কম্বাইন্ড হারভেস্টার, রিপার, ক্লিপার, পাওয়ার টিলারসহ প্রায় ৭১ হাজার ৫০২টি যন্ত্র বিতরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: উৎসবের আমেজ ফিরল সংসদে
এটি কৃষকদের কৃষি-শ্রমিকের অভাব মোকাবিলা এবং উৎপাদন খরচ কমাতে সাহায্য করেছে।
মন্ত্রী বলেন, “এছাড়া আমরা তিন হাজার ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘মেকানিজশন অব এগ্রিকালচার ওয়ার্ক থ্রু ইন্টিগ্রেটেড ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি যা ২০২০-২০২৫ সালের মধ্যে ১২টি বিভাগে ৫১ হাজার ৩০০ ইউনিট কৃষি-যন্ত্র বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।”
বাজেট ২০২২-২৩: খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সারে ভর্তুকি বাড়াবে সরকার
দেশীয় খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরের আসন্ন বাজেটে সারের ভর্তুকি বাড়িয়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বিশ্ববাজারে সারের দাম ৫৮ শতাংশ বৃদ্ধি সত্ত্বেও সরকার কৃষকদের প্রণোদনা হিসেবে আরও ফসল উৎপাদন নিশ্চিত এবং স্থানীয় বাজারে খাদ্যদ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে দাম বৃদ্ধি এড়াতে চায়।
২০০৮-০৯ থেকে ২০২০-২১ পর্যন্ত গত ১৩ বছরে সরকার একক এই খাতের জন্য প্রায় ৮২ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে সারের ভর্তুকি বাবদ সাত হাজার ৭১৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষকদের সার ও বীজে প্রণোদনাসহ কৃষি উপকরণ ব্যবহারে উৎসাহিত করছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: খাদ্য ও কৃষি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি অর্থ বিভাগের সুপারিশের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
কৃষি খাতে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চায় এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে খাদ্য উৎপাদনে যেকোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা এড়াতে চায় বলে জানান এই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান প্রায় ১৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন: পতিত জমি চাষে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
২০২১-২২ অর্থবছরে সরকার এই খাতের জন্য ভর্তুকি হিসাবে মোট সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম বৃদ্ধির কারণে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সরকারের প্রকৃত ভর্তুকি দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা। তবে চলতি অর্থবছরে ভর্তুকি ২৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক দাবি করেন, ২০২২-২৩ সালের বাজেটে কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে এ বছর সরকার সার ভর্তুকি বাবদ ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করবে।
ভর্তুকি বা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ভর্তুকি বা মূল্যস্ফীতি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সরকার এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান অর্থমন্ত্রী।
এ সময় তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রার ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছি।’
বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও এডিবির মতো আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো যখন নিম্নমুখী বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির আশঙ্কা করছে, তখন বাংলাদেশ কেন উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করতে যাচ্ছে- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার চলতি অর্থবছর ২০২১-২২ এর জন্য সাত দশমিক দুই শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য পরিবর্তন করেনি। এছাড়া আগামী অর্থবছরের জন্য প্রবৃদ্ধি সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ বিবেচনা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিলাসবহুল পণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হবে: অর্থমন্ত্রী
সরকার এখনও বিশ্বাস করে বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে কোনো অনিশ্চয়তা সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত ঘাটতি বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্বের সব দেশই মূল্যবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতির সমস্যায় পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমরা মুদ্রাস্ফীতি ব্যবস্থাপনায় বেশ ভালো অবস্থানে আছি।’
যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুদ্ধে কমবেশি সব দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বাংলাদেশও এর প্রভাবের বাইরে নয়।
কামাল বলেন, ‘আজ পর্যন্ত যুদ্ধ অবিলম্বে শেষ হওয়ার কোনো দৃশ্যমান লক্ষণ নেই। তবে আমরা আশা করি যুদ্ধ দ্রুত শেষ হবে।’
আরও পড়ুন: বৈদেশিক ঋণ প্রাপ্তিতে নিরাপদ অবস্থানে বাংলাদেশ: অর্থমন্ত্রী
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা নিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করবে সরকার: অর্থমন্ত্রী
২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দ্বিগুণ হতে পারে
সরকার ২০২২-২৩ অর্থবছরের আসন্ন বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দ্বিগুণ করে ১৮ হাজার কোটি টাকা করার কথা ভাবছে।
মঙ্গলবার অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আসন্ন বাজেটে সামগ্রিক ভর্তুকি এবং প্রণোদনা বরাদ্দ ১৬ হাজার ৬২০ কোটি টাকা বেড়ে আনুমানিক ৫৭ হাজার ৪৫ কোটি টাকা হবে।
চলতি বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ হাজার কোটি টাকা। এ বছর এ খাতে ভর্তুকি দ্বিগুণ করা হচ্ছে। তবে সংশোধিত বাজেটে, বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি তিন হাজার কোটি টাকা বেড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা হয়েছে।
প্রতিবছর বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাড়ছে। ফলে বরাদ্দও বাড়ানো হচ্ছে। যেমন ২০২২ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা হিসেবে বরাদ্দ ৪০ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটে ১২ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৫৩ হাজার ২৮২ কোটি টাকা করা হয়েছে।
বাজেট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিরূপ প্রভাবের কারণে আসন্ন বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও ঋণ সহায়তায় বরাদ্দ আনুমানিক ২৬ দশমিক ১৩ শতাংশ বা ২৭ হাজার ৯১০ কোটি টাকা বেড়ে এক লাখ ৭৭ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা করা হয়েছে।
এর আগে ২০২২ অর্থবছরের বাজেটে এই তিনটি খাতে বরাদ্দ ছিল এক লাখ ৪৯ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, আগামী ২৩ অর্থবছরের বাজেটের আকার প্রায় ছয় দশমিক ৭৮ ট্রিলিয়ন টাকা। এর মধ্যে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও নগদ ঋণ; এই তিনটি খাতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৭৭ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: জাতীয় বাজেট উপস্থাপন ৯ জুন: মুস্তফা কামাল