ইন্সটাগ্রাম
মেহজাবীন-রাজীবের প্রেমের গুঞ্জন সত্যি হলো!
অবশেষে অভিনেত্রী মেহাজাবীন চৌধুরী ও নির্মাতা আদনান আল রাজীবের প্রেমের গুঞ্জন হয়তো সত্যি হলো।
শনিবার দুপুরে জনপ্রিয় এই পরিচালক তার ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে তাদের দুজনের একটি ছবি পোস্ট করেন।
যেখানে সমুদ্র সৈকতের পাশে এক রিসোর্টের ব্যালকনিতে রাজীবকে জড়িয়ে ধরে আছেন মেহজাবীন। পেছনে উঁকি দিচ্ছে শেষ বিকালের সূর্য। যার আভা ছড়িয়ে পড়েছে ছবিতে। ছবির ক্যাপশনে রাজীব লিখেছেন, ‘ভালোই লাগে’।
মেহজাবীন ও রাজীবের এই প্রেমের খবর কিন্তু নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরেই এই গুঞ্জন চলছিল। দেশের বাইরে একসঙ্গে ঘোরাঘুরির ঘটনা থেকে যার সূত্রপাত। তবে এ নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে কখনই মুখ খুলেননি দুই তারকার একজনও ।
অবশেষে সকল কৌতূহলের অবসান হলো নির্মাতা রাজীবের ইন্সটাগ্রামে পোস্ট করা ছবি থেকে।
আরও পড়ুন: মিস ইউনিভার্স ২০২১: কে এই হারনাজ সান্ধু
ফিল্ম আর্কাইভে বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ স্থিরচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন
স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পেল ‘স্পাইডার ম্যান: নো ওয়ে হোম’
৩ বছর আগে
সাদমুআ: বাংলাদেশের প্রথম পুরুষ বিউটি ব্লগার
বাংলাদেশের প্রথম পুরুষ বিউটি ব্লগার হিসেবে ইতিহাস গড়লেন সাদ বিন রাবি ওরফে সাদমুয়া। ফেসবুকে ২ লাখ ও ইন্সটাগ্রামে ২৭ হাজার ফলোয়ার এবং ইউটিউব চ্যানেলে ৫৬ হাজার সাবস্ক্রাইবার নিয়ে একজন মেকআপ শিল্পী হিসেবে সাদ বিন রাবি সবার কাছে এখন একটি পরিচিত মুখ। তার ভিডিও কন্টেন্ট মূলত মেকআপ টিউটোরিয়াল নিয়ে, যেখানে তিনি নিজের মুখের উপর বিভিন্ন ধরনের বিউটি প্রোডাক্ট ব্যবহার করে দেখান। একইসাথে তিনি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বিউটি ব্র্যান্ডগুলোর প্রোমোশনও করেন।
ভিডিও কন্টেন্টগুলো তিনি তৈরি করেন মহিলা দর্শকদের লক্ষ করে। বিষয়গুলো বহুমুখী হওয়ার কারণে মেকআপগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য বেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ আর সমসাময়িক হয়।
চলুন, প্রচলিত ধ্যান-ধারণা বহিঃর্ভূত এই শিল্পী সম্পর্কে আরও কিছু জানা যাক।
একজন ব্যক্তি সাদমুআ
২১ বছর বয়সী সাদ সোশ্যাল মিডিয়ায় যাত্রা শুরু করেছিলেন ২০১৮ সালে। এখন ক্রমান্বয়ে তিনি একজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার হয়ে উঠছেন। মেকআপের প্রতি আকর্ষণটা তার শৈশব থেকেই, যখন তিনি প্রায়ই তার মায়ের মেকআপ প্রসাধনীগুলো লুকিয়ে ব্যবহার করার চেষ্টা করতেন। তার এই মেয়েলি বৈশিষ্ট্যের কারণে তাকে বেশ কঠিন সময়ের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের কাছে গ্রহণযোগ্যতা লাভ করার পাশাপাশি নিজের স্বপ্নকে জীবনে বাস্তবায়ন করা। এমনকি এই একবিংশ শতাব্দীতেও পুরোনো চিন্তাধারার সামাজিক ব্যবস্থার মাঝে তাকে খুঁজতে হয়েছিলো একটি সাহায্যের হাত।
বিঃশ্বাস তার যা-ই হোক না কেন, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, তার সম্প্রদায়কে সেবা দেওয়ার জন্য তাকে কিছু একটি খুঁজে বের করতেই হবে।
আর এখানেই এলো মেকআপের বিষয়টি। আসলে, তাকে কোথাও যেতে হয়নি। তার সবচেয়ে বড় সম্পদ ছিল - তার মুখ এবং তিনি জানতেন যে কীভাবে আঁকতে হয়। তার মানে তিনি অবশ্যই একজন পুরুষ বিউটি ব্লগার হতে পারেন। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, তার বিঃশ্বাস ছিল যে- এই দক্ষতাটি সম্পূর্ণরূপে তার ব্যক্তিত্বের সাথে যায়।
সাদ বিশ্বাস করেন যে মেকআপ কেবল একটি মহিলার জিনিস নয়। এটি একজন পুরুষের ক্ষেত্রেও স্বাভাবিক। আপনি যা পছন্দ করেন তা কখনোই জোর করে আসার কথা নয়। এর জন্য প্রয়োজন স্বতঃস্ফূর্ততা।
এরপরও, মহান বিপ্লবের পথে একটি ছোট পদক্ষেপের জন্য প্রয়োজন একটুখানি উৎসাহ। আর এই উৎসাহ ছিলেন সাদের দাদী। তিনি সাদের পিতামাতার নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সাদকে মেকআপ সরঞ্জাম কিনতে সহায়তা করেছিলেন। এছাড়া সাদের নিজেরও যথেষ্ঠ চেষ্টা ছিলো তার মেকআপের উপর দক্ষতা অর্জনের জন্য।
আরও পড়ুন: ত্বক থেকে শুরু করে চুলের যত্নে ব্যবহার করুন ভাতের মাড়!
যাইহোক, সাদের কাজের মূল্যায়ন হওয়া শুরু করে নারী-পুরুষ উভয়ের দিক থেকেই। এখন তিনি প্রায়ই নতুন কিছু নিয়ে স্ক্রিনে আসার চেষ্টা করেন।
সম্প্রতি, তিনি কোরিয়ান মেকআপের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এইভাবে, তিনি প্রতিটি ছিটেফোটায় তার ভিতরের শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গি তার দর্শকদের পরিবেশন করে থাকেন।
পুরুষ বিউটি ব্লগার হিসাবে আবির্ভাব
শৈশবকাল থেকেই সাদ বিন রাবী চাইতেন যে, সব সময় তাকে যেন সুন্দর দেখায়। আসলে, সবাই এমনটাই আশা করে থাকে। প্রথমে, তার মা তার ভ্রু এঁকে দিতেন। বড় হওয়ার পরে, তিনি নিজে থেকেই তা করার চেষ্টা করতেন। পরবর্তীতে তিনি অনলাইনে মেকআপ নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা করেন। আর এভাবেই তিনি একদিন জানতে পারেন বিশ্বের প্রথম পুরুষ বিউটি ব্লগার জেমস চার্লস সম্পর্কে। জেফ্রি স্টার, প্যাট্রিক স্টার এবং ম্যানি মুআ তার সব থেকে বড় অনুপ্রেরণা ছিল। সাদ আসলে তাদের মধ্যে নিজেকে দেখতে পেতেন কারণ তারাও উঠে এসেছিলেন রক্ষণশীল সমাজ থেকে।
তিনি তার স্বপ্ন বাস্তব করতে তাদের অনুসরণ করতেন। যদিও তিনি একদম সরাসরি কোনও শিক্ষক পান নি, উপরন্ত তাকে বার বার তার নিজের পথ খুঁজে বের করতে হয়েছিল।
শুরুতে, তাকে সমর্থন বা কাজ করার কোনও পৃষ্ঠপোষক- কোনটাই তিনি পাননি। তবে সময়ের সাথে সাথে এখন তিনি প্রতিদিন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কোম্পানি থেকে ডাক পান। ধীরে ধীরে সোশ্যাল মিডিয়া ফলোয়ার পাওয়ার পরে তিনি এখন আগের চেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাসী। সর্বোপরি, একটি ব্যাপারে এটি নিশ্চিত করে যে, সে তার স্বপ্নের পথেই আছে।
সব মিলিয়ে তিনি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের উপস্থিতি এবং নেটওয়ার্ক মার্কেটিংয়ের একটি চক্রের মধ্যে রয়েছেন। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং যত বেশি উপস্থিতি তৈরি করে, অধিক উপস্থিতি তত বেশি নতুন নেটওয়ার্কের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।
ভিডিওগুলোর ভেতরে যে বিশেষত্বটি তাকে বিশ্বমানের একজন পুরুষ বিউটি ব্লগারে পরিণত করেছে, তা হলো বিভিন্ন ধরণের কৌশল যেগুলো তিনি তার মেকআপে ব্যবহার করেন। আপনি বিশ্বের অন্যান্য দেশের মেকআপ শিল্পীদের ইউটিউব চ্যানেলে এর সাদৃশ্য দেখতে পাবেন। তারা তাদের ভিডিও কন্টেন্টে নতুন মান যুক্ত করার জন্য প্রায়ই এটি চেষ্টা করেন। সাদের চেষ্টা থাকতো সেই মানগুলোকে একসাথে এক জায়গায় নিয়ে আসা এবং একই সাথে সেগুলো নিয়ে অভ্যস্ত হয়ে উঠা। এটি অবশ্যই তেমন সহজ ছিল না, তবে ফলাফলটি তিনি পেয়েছিলেন সময় মতই।
সব মিলিয়ে তিনি যা করেছিলেন তা ছিল- প্রতিটি সমালোচনাকে পায়ে দলে সামনে এগিয়ে যাওয়া এবং মেকআপ সম্পর্কিত জিনিসগুলো বাছাইয়ের দিকে মনোনিবেশ করা। এখন তিনি সবার রোল মডেল। সাদমুআ এখনও আশা করছেন যে তিনি আরও অনেক দুর যাবেন এবং শিগগরই গোটা বিশ্ব পুরোনো ধ্যান-ধারণার শিকল থেকে মুক্ত হবে।
বাংলাদেশে মেকআপ শিল্প
কথা যদি হয় শুধুমাত্র মেকআপ শিল্পী নিয়ে, সেক্ষেত্রে পুরুষ মেকআপ শিল্পী বাংলাদেশে নতুন কোনও বিষয় নয়। এখানে বরং আপনি বেশিরভাগ মেকআপ শিল্পী খুঁজে পাবেন পুরুষ। উদাহরণস্বরূপ, জনপ্রিয় ব্যক্তিরা হলেন- জাহিদ খান, মনির হোসেন এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী মেকআপ শিল্পী মাহবুবুর রহমান মানিক, খলিলুর রহমান।
এই এক দশক আগেও মেকআপ শিল্পী বা যারা তথাকথিত মেকআপ ম্যান হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তাদের টিকে থাকাটা খুব কঠিন ছিল। তবে এখন চলচ্চিত্র জগতে উত্তরোত্তর উন্নতি এবং প্রতিনিয়ত বিবাহের অনুষ্ঠানের কারণে মেকআপ শিল্পীরা নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারছেন।
প্রতিদিন-ই বিয়ের সাজ এবং পার্টি মেকআপের চাহিদা বাড়ছে। তদুপরি, বিনোদন শিল্পের অস্তিত্ব যত দিন বিলীন না হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত মেকআপ শিল্পীর প্রয়োজনীয়তা কখনোই শেষ হবে না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর দ্রুত অগ্রগতির পাশাপাশি তারা একজন পুরুষ বিউটি ব্লগার হওয়ার মাধ্যমে নিজের দেশ থেকে শুরু করে গোটা বিশ্বব্যাপী পাড়ি জমাতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সার থেকে শুরু করে বড় কোম্পানি, প্রতিটি উপায়ে তারা তাদের দর্শকদের কাছে যেতে পারছেন।
নারীদের পাশাপাশি পুরুষ মেকআপ শিল্পীরাও বড় পরিসরে সাফল্য অর্জন করছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে পুরুষদের পোশাকের সেরা ব্র্যান্ডসমূহ
এখন বিউটি ব্লগারের প্রসঙ্গে বলতে গেলে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কোনও একজন পুরুষের জন্য বিউটি ব্লগার একদম নতুন ধারণা, যদিও সাদমুয়া ইতোমধ্যে উপায়টি দেখিয়ে দিয়েছে। আপনার সদিচ্ছা ও ধৈর্য্য শক্তি-ই পারে আপনাকে আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছে দিতে। আসলে দিন শেষে, আপনি যা সবচেয়ে ভাল জানেন তা করা কোনও অপরাধ নয়। যদিও এই প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে, অনেকে কিছু মূল্যহীন কার্যকলাপ নিয়ে আসে, যা সমাজকে বিভ্রান্তির দিকে ঠেলে দেয়।
সেখানে এই মেকআপ শিল্প অবশ্যই একটি দুর্দান্ত কাজ। সবচেয়ে বড় কথা, লিঙ্গ বা ধর্ম বা সীমানা কখনো কোনও শিল্প নিরীক্ষার চাবিকাঠি হতে পারে না। এই বিশ্বায়নের যুগে আপনি যে-ই হন না কেন, আপনি অবশ্যই শিল্প তৈরী করতে পারবেন। এমনকি আপনি যদি বাংলাদেশের মতো কোন ক্ষুদ্র দেশের নাগরিক হন না কেন, তা আপনার সৃজনশীলতায় কোন বাধা হতে পারবেন না।
শেষ কথা
একজন পুরুষ বিউটি ব্লগার হয়ে ওঠা সাদমুআর মতোই আপনার কঠিন সময়ে আপনাকে মুক্তি দিতে পারে। আপনি তার ভিডিওতে তাকে যেরকম হাস্যজ্জ্বল দেখেন, ঠিক সেভাবেই তিনি হাসি দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছেন তার সমস্ত অপমানগুলোকে। আপনি যখন নিজের পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে পরিবর্তন করতে এগোবেন, তখন আপনাকে প্রচুর ধাক্কার সম্মুখীন হতে হবে। তখন অতিরঞ্জিত সমালোচনাগুলো না শুনে আপনার বড় পদক্ষেপটা দিয়ে ফেলুন, শুধু নিশ্চিত হয়ে নিন কেউ যেন আঘাত না পায়।
৩ বছর আগে