স্বাধীনতা পদক
স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত কে এই জামাল নজরুল
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল অবদানের কৃতিত্বস্বরূপ প্রতি বছরের মতো এবারও সাতজনকে স্বাধীনতা পদকের জন্য মনোনীত করেছে বাংলাদেশ সরকার। এই সাতজনের মধ্যে অন্যতম অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম।
২০২৫ সালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগে স্বাধীনতা পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন জামাল নজরুল।
কে এই অধ্যাপক জামাল নজরুল
শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা পৃথিবীর প্রথম সারির পদার্থবিজ্ঞানীদের সঙ্গে সমস্বরে উচ্চারিত হয় জামাল নজরুলের নাম। বলা হয়ে থাকে, মৌলিক পদার্থবিজ্ঞানে জামাল নজরুলের মতো অবদান এ দেশের আর কোনো বিজ্ঞানীর নেই।
১৯৩৯ সালে বিচারক বাবার কর্মস্থল ঝিনাইদহে জন্ম নেওয়া এই বিজ্ঞানীর শিক্ষাজীবন শুরু হয় কলকাতায়। সেখান থেকে ফিরে কিছুদিন চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে পড়াশোনা করেন। পরে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন শেষে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান জামাল। সেখানে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি।
এই কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ই বদলে দিয়েছে জামালের জীবনকে। বিশ্বখ্যাত এই বিদ্যাপীঠে গণিত ট্রাইপজের তিন বছরের কোর্স দুই বছরে শেষ করেন তিনি। গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডির পাশাপাশি লাভ করেন ডক্টর অব সায়েন্স ডিগ্রি। বলা বাহুল্য, বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকজন বিজ্ঞানী কেবল এই ডিগ্রি অর্জনের সম্মান লাভ করেছেন।
জামাল নজরুলের শিক্ষক, বন্ধু আর সহপাঠীদের নাম শুনলে চক্ষু ছানাবড়া হয়ে যেতে পারে কারও কারও।
কেমব্রিজে নজরুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন বিশ্বখ্যাত পদার্থ ও মাহাকাশবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং। এছাড়া শিক্ষক ফ্রিম্যান ডাইসন, পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনম্যান, ভারতের সুব্রহ্মনিয়াম চন্দ্রশেখর, পাকিস্তানের আবদুস সালাম, ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন ও অমিয় বাগচী, সহপাঠী জয়ন্ত নারলিকার, ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ জিম মার্লিস—এরা সবাই ছিলেন জামাল নজরুলের ঘনিষ্ঠজন ও শুভাকাঙ্ক্ষী।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন ৭ জন, প্রজ্ঞাপন জারি
১৯৮৩ সালে জামাল নজরুলের বিখ্যাত গবেষণা নিবন্ধ দ্য আল্টিমেট ফেইট অব দ্য ইউনিভার্স প্রকাশিত হলে কেমব্রিজ-পাড়ায় রীতিমতো সাড়া পড়ে যায়। এই গবেষণাকে বলা হয় আইনস্টাইন-পরবর্তী ধ্রুপদী ধারার সবচেয়ে সফল গবেষণার একটি।
কেমব্রিজে জামাল নজরুলের যখন জয় জয়কার, ঠিক তখনই এক মারাত্মক সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। বিদেশে তিন দশকের বিলাসী জীবন ছেড়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন প্রখ্যাত এ বিজ্ঞানী।
১৯৮৪ থেকে ২০১৩ সাল, জীবনের শেষ ২৯ বছর দেশের মানুষের কল্যাণে বিজ্ঞান সাধনা আর অধ্যাপনায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন তিনি। তার হাতেই গড়ে উঠেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক গণিত ও ভৌতবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট। ১৯৮৭ সালে এই বিভাগ উদ্বোধনে বাংলাদেশে এসেছিলেন নজরুলের প্রিয়জন পাকিস্তানের নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক আব্দুস সালাম।
২০০৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণের পরও ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে জামাল নজরুল আমৃত্যু সংযুক্ত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে।
বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্সের স্বর্ণপদক, একুশে পদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পুরস্কারের পাশাপাশি এবার স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত এ মহান বিজ্ঞানীর জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন দেশের প্রতি উদার মমত্ববোধ আর দেশের মানুষের থেকে পাওয়া আকুণ্ঠ ভালোবাসা।
১৯ দিন আগে
স্বাধীনতা পদক প্রদানে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ বিএনপির
স্বাধীনতা পদক প্রদানে সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘এটি এতটাই ব্যর্থ ও অযোগ্য সরকার যে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রবর্তিত স্বাধীনতা পদক নিয়ে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে।’
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির চিকিৎসা ও সেবা বিষয়ক উপ-কমিটি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
আরও পড়ুন: বিএনপির বইমেলা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রদর্শনী শুরু
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার আমির হামজা নামে একজন অখ্যাত ব্যক্তিকে পদকের জন্য মনোনীত করেছে এবং পরে তা বাতিল করে তদন্ত শুরু করেছে।
তিনি বলেন, ‘কেন তিনি (হামজা)? অন্যদের পরিচয় বের করতে তদন্ত করুন। তাদের অধিকাংশই মন্ত্রীদের আত্মীয় বা প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়।’
এর আগে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং দুটি প্রতিষ্ঠানকে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক পুরস্কার ‘স্বাধীনতা পদক, ২০২২’ তুলে দেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার লুটপাট ও দুর্নীতিকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে দেশকে বাঁচাতে হলে তাদের ক্ষমতা থেকে উৎখাতের কোনো বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন: বিদ্যুতায়নের শতভাগ অর্জন ‘মিথ্যা’ প্রচারণা: বিএনপি
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে এবং লাখ লাখ মানুষকে বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য করেছে। ‘তারা আমাদের ৩৫ লাখ নেতা-কর্মী ও গণতন্ত্রপন্থী জনগণের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। ৬০০-এর বেশি মানুষকে গুম করেছে। হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। এটাই আওয়ামী লীগের আসল রং।’
তিনি দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে ‘ফ্যাসিবাদী’ সরকারকে সরিয়ে সত্যিকারের জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সকল পেশাজীবী ও রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবং মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগও করেন মির্জা ফখরুল।
১১০১ দিন আগে
বিশিষ্ট পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক হারুন আর নেই
একুশে এবং স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট পদার্থবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ‘বোস অধ্যাপক’ ড. এ এম হারুন অর রশিদ মারা গেছেন।
শনিবার (৯ অক্টোবর) বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতা নিয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার হয়েছিলো ৮৮ বছর। তিনি স্ত্রী ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন।
অধ্যাপক হারুন অর রশিদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার (১০ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো এক শোক বার্তায় তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক হারুন অর রশিদ শুধু একজন পদার্থবিজ্ঞানীই নন, বিজ্ঞান গবেষণায় একজন নিবেদিত প্রাণ। নিয়মিত গবেষণার পাশাপাশি তিনি পদার্থ বিজ্ঞান শিক্ষায় বিশেষ করে বাংলা ভাষায় পদার্থ বিজ্ঞান শিক্ষায় এক অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন। তার মৃত্যু দেশের বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে একটি বিরাট শূন্যতা সৃষ্টি করেছে।’
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু ১
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
ড. হারুন অর রশিদের জন্ম ১৯৩৩ সালে বরিশালে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে বিএসসি ও ১৯৫৪ সালে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ১৯৬০ সালে ইউনিভার্সিটি অব গ্লাসগো থেকে তার পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
১৯৭২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বীয় পদার্বিজ্ঞান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি।
তিনি ১৯৯১ সালে একুশে পদক এবং ১৯৯৯ সালে স্বাধীনতা পদক পান। ১৯৯৩ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ‘বোস অধ্যাপক’ হিসাবে মনোনীত হন।
পড়ুন: বিশিষ্ট নাট্যকার আফসার আহমেদ আর নেই
কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরীর আর নেই, প্রধানমন্ত্রীর শোক
১২৬৭ দিন আগে
স্বাধীনতা পদক হস্তান্তর করলেন প্রধানমন্ত্রী
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের নয় বিশিষ্ট ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানের হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২১’ তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার গণভবনে পদকপ্রাপ্ত গুণীজনদের হাতে স্বাধীনতা পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা একেএম বজলুর রহমান, শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) খুরশিদ উদ্দিন আহমেদ এবং আখতারুজ্জামান বাবুকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়। তাদের পরিবারের হাতে স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অসামান্য অবদানের জন্য ড. মৃন্ময় গুহ নিয়োগী, সাহিত্যে কবি মহাদেব সাহা, সংস্কৃতিতে আতাউর রহমান এবং গাজী মাজহারুল আনোয়ার, সমাজসেবায় অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেন এবছর স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন। এছাড়া গবেষণা ও প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৭ সাল থেকে জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতিবছর স্বাধীনতা পুরস্কার দেয় সরকার।
১৪১০ দিন আগে