দিনাজপুর
দিনাজপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট-দুর্ঘটনায় ২ জনের মৃত্যু
দিনাজপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ও ছাদ থেকে পড়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যু হয় আতাউর রহমানের আর তিন তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয় এক অজ্ঞাত নারীর।
শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুর দিকে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী ও জেলা শহরের ঘাসিপাড়া এলাকায় দুর্ঘটনাগুলো ঘটে।
আতাউর রহমান (৫৫) বারোকোনা গ্রামের মৃত সজিমুদ্দিনের ছেলে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজনের মৃত্যু
ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিব্বুল ইসলাম বলেন, পুকুরে মাছ ধরার জন্য সাবমার্সিবল পাম্প মেশিন দিয়ে সেচ দেওয়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আতাউরের মৃত্যু হয়। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের শেষে লাশ স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে জেলা শহরের ঘাসিপাড়া এলাকায় একটি তিনতলা ভবনের ছাদ থেকে রাস্তার ওপর পড়ে অজ্ঞাত এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং ওই নারীর পরিচয় জানাসহ মৃত্যুর পেছনের কারণ উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ভ্যানচালকের মৃত্যু
১ সপ্তাহ আগে
দিনাজপুরের নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ ইন্দোনেশিয়া নাগরিকের লাশ উদ্ধার
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে করতোয়া নদীতে গোসলে নেমে তাবলিগ জামায়াতে আসা ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক ফাইজুল ইসলাম (৫০) নিখোঁজের সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর নদী থেকে লাশ উদ্ধার করেছে ডুবুরি দল।
বুধবার (৬ নভেম্বর) সকালে উপজেলার কূলান্দপুর উত্তরপাড়া এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক।
আরও পড়ুন: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে কিশোরের মৃত্যু
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক ফাইজুল ইসলাম তাবলিগ জামায়াতের সাথী হিসেবে একটি দলের সঙ্গে কূলান্দপুর উত্তরপাড়া জামে মসজিদে এসেছিলেন। বুধবার সকালে তিনি ওই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ হোন। পরে স্থানীয়রা খোঁজাখুঁজি করে উদ্ধার করা সম্ভব না হওয়ায় ডুবুরি দল এসে সাড়ে ৩ ঘণ্টা চেষ্টার পর তার লাশটি উদ্ধার করে।
ঘোড়াঘাট ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ আতাউর রহমান বলেন, ‘ঘোড়াঘাট ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সদস্যরা প্রাথমিকভাবে নদীতে উদ্ধার অভিযান চালালেও, নিখোঁজ বিদেশি নাগরিকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে রংপুরের ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে খবর দিলে তারা দুপুর ১২টায় লাশটি উদ্ধার করে।’
আরও পড়ুন: গোবিন্দগঞ্জে করতোয়ায় নদীতে গোসলে নেমে ২ শিশুর মৃত্যু
২ সপ্তাহ আগে
দিনাজপুরে ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল দুই বন্ধুর
নাজপুরের বিরামপুরে ট্রাকচাপায় রিফাত হোসেন (১৭) ও খোকা বাবু (১৭) নামে দুই বন্ধুর মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (৪ নভেম্বর) দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কের জোয়ালকামড়া এলাকায় ট্রাককে ওভারটেক করার সময় এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: সিলেটে অক্টোবর মাসে ৩৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৪ জনের মৃত্যু
রিফাত বিরামপুর পৌর শহরের সারাংগপুর মহল্লার জিয়ারুল ইসলামের ছেলে এবং তার বন্ধু খোকা একই এলাকার মৃত রফিকের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, বন্ধুকে মোটরসাইকেলে নিয়ে যাওয়ার সময় একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে রিফাতের মৃত্যু হয়। আহত অবস্থায় খোকাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর সময় মারা গেছে সে।
বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, দুর্ঘটনায় দুইজন মারা গেছে। ঘাতক ট্রাক আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় সেনাসদস্যসহ নিহত ২
২ সপ্তাহ আগে
দিনাজপুরে বাস উল্টে এক যাত্রীর মৃত্যু, আহত ১৫
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে বাস উল্টে একজন যাত্রী নিহত এবং কমপক্ষে ১৫ জন যাত্রী আহত হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বিমলপুরে মির্জা জুটমিলের কাছে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
তাৎক্ষণিকভাবে নিহতের পরিচয় জানা যায়নি। তার বয়স ত্রিশ ধারণা করছে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানায়, দ্রুতগতিতে বাসটি চালাচ্ছিলেন চালক। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে ডিগবাজি খেয়ে উল্টে যায় বাসটি।
আরও পড়ুন: জবি শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগে ভিক্টর ক্লাসিকের ১২ বাস আটক
ফুলবাড়ী থানার উপপরিদর্শক রেজাউল করিম জানান, নওশিন পরিবহনের নিম্নমানের একটি কোচ ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে যাওয়ার সময় দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর বিমলপুরে মির্জা জুটমিলের পাশে রাস্তায় সম্পূর্ণ উল্টে যায়। বাসটির ছাদ দেবে সিটের সঙ্গে মিলে গেছে। এতে দুর্ঘটনাস্থলে একজন অজ্ঞাত পরিচয় যাত্রী নিহত হয়েছে। লাশ ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
উপপরিদর্শক আরও জানান, এ দুর্ঘটনায় ১৫ জন আহত হয়েছে। বাসের নিচে কেউ চাপা পড়ে আছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বাসটি উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।
চালক ও হেলপারকে নিয়ে সুপারভাইজার পালিয়ে গেছে বলেও জানান রেজাউল করিম।
আরও পড়ুন: নাটোরে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ২
৩ সপ্তাহ আগে
দিনাজপুরে রাস্তার পাশ থেকে ফেরিওয়ালার লাশ উদ্ধার
দিনাজপুরের বোচাগঞ্জে রাস্তার পাশ থেকে আল আমিন নামে এক ফেরিওয়ালার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২১ অক্টোবর) সকালে হাট রামপুরের আদিবাসীপাড়ায় যাওয়ার রাস্তার পাশে লাশটি পড়ে থাকতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: শেরপুরে নিখোঁজের ৫ দিন পর মাটিচাপা অবস্থায় কবিরাজের লাশ উদ্ধার
আল আমিন (৪৫) বোচাগঞ্জের হাটরামপুর গ্রামের পাবনাপাড়ার মৃত আবু তাহেরের ছেলে।
ফেরি করে তৈজসপত্র বিক্রি করতেন তিনি।
স্থানীয়রা জানায়, রাস্তার পাশে লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে বোচাগঞ্জ থানা পুলিশ।
বোচাগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম বলেন, এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যুর একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মাঠ থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
১ মাস আগে
দিনাজপুরে অবৈধভাবে সীমান্ত পার হওয়ার সময় আটক দুই
অবৈধভাবে দিনাজপুরের বিরল সীমান্ত পার হওয়ার সময় ২ জনকে আটক করেছে বিজিবির সদস্যরা।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ভোরে দিনাজপুরের বিরলের ৬ নম্বর ভান্ডারা ইউনিয়নের নোনাগ্রাম এলাকায় দুই বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে বর্ডার গার্ডের ৪২ ব্যাটালিয়নের কিশোরীগঞ্জ বিওপির টহল দলের সদস্যরা।
আটক দুজনের মধ্যে দিনাজপুরের বোচাগঞ্জের মুশিদহাটের (মিলরোড) রামা রায়ের ছেলে ম্যাগনেট রায় (২৫) ও নীলফামারী সদরের পলাশবাড়ীর প্রফুল্ল রায়ের ছেলে লিখন রায় (১৯)।
বর্ডার গার্ডের ৪২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আহসান উল ইসলাম জানান, শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে মেইন সীমান্ত পিলার ৩৩১/ সাব পিলার ৪-এস এর ৫০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কিছু বাংলাদেশি নাগরিক অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপার করছিল। এসময় ২ জনকে আটক করা হয়েছে।
আটকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বিরল থানায় হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।
১ মাস আগে
দিনাজপুরে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নিহত ২
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও দুইজন।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টায় উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের রানীগঞ্জ বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় কাভার্ডভ্যানের চালককে আটক করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন- রংপুরের পীরগঞ্জের কুমারপুর চত্বরা গ্রামের মৃত আফজাল হোসেনের ছেলে মাছ ব্যবসায়ী আব্দুল গোফফার (৬৮) এবং দিনাজপুরের বিরামপুরের কোচগ্রামের ওমর আলীর ছেলে ভ্যানচালক আনোয়ার হোসেন (৫০)।
আটক কাভার্ডভ্যান চালক সিদ্দিক শহরের রামনগর মহল্লার শেখ ওসমান আলীর ছেলে।
আরও পড়ুন: নরসিংদীতে রাস্তা পারাপারের সময় বাসচাপায় শিশু নিহত
ঘোড়াঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাব্বির জানান, সোমবার সকাল ৭টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ঘোড়াঘাটের রানীগঞ্জ বাজারের মাছ হাটিতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ভ্যানকে ধাক্কা দেয় ঢাকা থেকে দিনাজপুরমুখী একটি কাভার্ডভ্যান। মাছ ব্যবসায়ী আব্দুল গোফফার দুর্ঘটনাস্থলেই নিহত হন। রিকশাভ্যান চালক আনোয়ার হোসেন আহত হন। তাকে উদ্ধার করে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্হ্য কেন্দ্রে পাঠানোর পর তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় আহত অপর দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কাভার্ডভ্যানটি জব্দ করা হয়েছে। চালক সিদ্দিককে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান।
আরও পড়ুন: খুলনায় ট্রাকচাপায় নারী পুলিশ সদস্য নিহত
১ মাস আগে
দিনাজপুরের ঐতিহাসিক কান্তজীর মন্দির ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বাংলাদেশের স্থাপত্য নিদর্শন ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্যের এক বিরাট অংশ জুড়ে রয়েছে দেশের ঐতিহাসিক মন্দিরগুলো। অনন্য নকশা, কিংবদন্তি শাসক ও সম্প্রদায় এবং তাদের ঐতিহ্যবাহী আধ্যাত্মিকতার সন্নিবেশে মহাকালের বিবর্তনের সাক্ষী হয়ে আছে এই স্থাপনাগুলো। যুগ যুগ ধরে শত পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে যাওয়া তেমনি এক প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান দিনাজপুরের কান্তজীর মন্দির। কেবল বাংলাদেশেই নয়; গোটা ভারতীয় উপমহাদেশের মন্দিরের ইতিহাসকে প্রতিনিধিত্ব করছে তিনশত বছরেরও বেশি সময়ের পুরাতন এই নান্দনিক তীর্থস্থানটি। চলুন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই পর্যটনকেন্দ্রে ভ্রমণ নিয়ে যাবতীয় তথ্যাবলি জেনে নেওয়া যাক।
কান্তজীর মন্দিরের ভৌগলিক অবস্থান
উত্তরবঙ্গের বৃহত্তম জেলা দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার অন্তর্গত সুন্দরপুর ইউনিয়নের কান্তনগর গ্রামে এই মন্দিরের অবস্থান। জেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে দিনাজপুর-তেঁতুলিয়া মহাসড়কের পশ্চিমের নদীটির নাম ঢেঁপা। এই নদীর তীরবর্তী শ্যামগড় এলাকার কান্তনগর গ্রামটি ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে প্রাচীন কান্তজীউ মন্দিরের জন্য।
কান্তজিউ মন্দির বা কান্তজীর মন্দিরের নামকরণ
হিন্দু পুরাণ মতে এই অঞ্চলে শ্রীকৃষ্ণের যুদ্ধ-বিগ্রহ অধিষ্ঠান হয়েছিল। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান দেবতা শ্রীকৃষ্ণের ১০৮ নামের একটি হচ্ছে শ্রীকান্ত বা রুক্সিনীকান্ত। শ্রীকৃষ্ণের নামের এই কান্ত শব্দটি দিয়েই দিনাজপুরের তৎকালীন জমিদার প্রাণনাথ মন্দিরটির নাম রাখেন কান্তজীউ মন্দির। জীউ বা জী শব্দটি ব্যবহৃত হয় সম্মানার্থে। মন্দিরের গোড়াপত্তনের আগে স্থানীয় গ্রামটির নাম ছিলে শ্যামনগর। মন্দির প্রতিষ্ঠার পর থেকে গ্রামের নাম বদলে রাখা হয় কান্তনগর।
মন্দিরটিতে ছিলো ৯টি রত্ন বা চূড়া, যার কারণে একে নবরত্ন মন্দির নামেও অভিহিত করা হতো।
আরো পড়ুন: সোনাদিয়া দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
কান্তজীর মন্দিরের ইতিহাস
শ্রীকৃষ্ণের যুদ্ধ-বিগ্রহ অধিষ্ঠানকে চির স্মরণীয় করে রাখতে জমিদার প্রাণনাথ রায় ১৭০৪ খ্রিস্টাব্দে এই মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করেন। পোড়ামাটির অলঙ্করণ সমৃদ্ধ এ মন্দিরটি উৎসর্গ করা হয় শ্রীকৃষ্ণ ও তার স্ত্রী রুক্মিণীর প্রতি।
মন্দিরের কাজ অসমাপ্ত রেখেই মারা যান প্রাণনাথ। পরে তার পালক পুত্র রামনাথ রায় ১৭৫২ সালে সফলভাবে মন্দির নির্মাণের বাকি কাজ সম্পন্ন করেন। সব মিলিয়ে পুরো নির্মাণ কাজে সময় লেগেছিলো প্রায় ৪৮ বছর।
১৮৯৭ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে মন্দিরটির ৯ চূড়ার সবগুলোই ধ্বংস হয়ে যায়। পরবর্তীতে রাজা গিরিজনাথ মন্দিরের সংস্কার করলেও নবরত্নের চূড়াগুলো আর পুনঃনির্মাণ করা হয়নি। ১৯৬০ সালে তৎকালীন সরকার কান্তনগর মন্দিরকে সংরক্ষিত প্রাচীন কীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে। সেই থেকে মন্দিরটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
আরো পড়ুন: বাংলাদেশের শীর্ষ ১৫টি ঐতিহ্যবাহী স্থান
ঢাকা থেকে দিনাজপুরের কান্তজীর মন্দির যাওয়ার উপায়
ঢাকা থেকে বাস, ট্রেন, এবং বিমান তিনভাবে যাওয়া যায় দিনাজপুর। ঢাকার গাবতলী, কল্যাণপুর, আসাদগেট, কলেজগেট, শ্যামলী, টেকনিক্যাল মোড়, এবং উত্তরা থেকে পাওয়া যাবে দিনাজপুরের বাস। প্রায় সারাদিনই ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা পরপর গাড়িগুলো দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়ে যায়। নন-এসি এবং এসি কোচগুলোর ভাড়া পড়তে পারে ৯০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা।
ট্রেনে যেতে হলে ঢাকার কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পাওয়া যাবে দিনাজপুরের ট্রেন। অধিকাংশ ট্রেনগুলো সন্ধ্যা ৭টা ৪০ এবং সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে যাত্রা শুরু করে। শ্রেনীভেদে এই ট্রেনগুলোর টিকেট মূল্য নিতে পারে ৫৭৫ থেকে ১ হাজার ৯৭৮ টাকা পর্যন্ত।
আকাশপথে যাওয়ার জন্য ঢাকা থেকে সরাসরি সৈয়দপুরের বিমান রয়েছে। আভ্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলোতে খরচ পড়তে পারে সর্বনিম্ন ৩ হাজার ৭৯৯ থেকে ৫ হাজার ৩২৫ টাকা পর্যন্ত। সৈয়দপুর বিমানবন্দর থেকে রিজার্ভ গাড়ি নিয়ে অথবা পাবলিক বাসে সরাসরি কান্তজীও মন্দির যাওয়া যায়।
বাস ও ট্রেন যাত্রার ক্ষেত্রে দিনাজপুর সদর থেকে সরাসরি মন্দির যাওয়ার অটোরিক্সা বা ইজিবাইক পাওয়া যায়। শহর থেকে অটোরিকশায় মন্দির পর্যন্ত যেতে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট সময় লাগে।
কান্তজীর মন্দিরের যে বিষয়গুলো পর্যটকদের আকৃষ্ট করে।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরের ১০ জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান
কান্তনগর মন্দিরের স্থাপত্য সৌন্দর্য্য
পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের ২৬৬টি পোড়ামাটির অলঙ্কৃত মন্দিরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর হচ্ছে এই মন্দির। এর পুরো অবয়বে স্পষ্ট ফুটে আছে ইন্দো-পারস্য ভাস্কর শৈলীর নকশা।
মন্দিরের বাইরের দেয়াল জুড়ে রয়েছে পোড়ামাটির উৎকৃষ্ট ফলকচিত্রের অলংকরণ। ফলকগুলোতে লিপিবদ্ধ রয়েছে মহাভারত ও রামায়ণসহ নানা পৌরাণিক কাহিনী। পুরো মন্দিরে টেরাকোটা টালির সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। পাথরের ভিত্তির উপরে দাঁড়ানো মন্দিরের আসল উচ্চতা ৫০ ফুট। মন্দিরের নিচতলায় খিলান সংখ্যা ২১টি এবং দ্বিতীয় তলায় ২৭টি এবং তৃতীয় তলায় ৩টি। নিচের প্রতিটি প্রবেশপথের বহু খাঁজযুক্ত খিলানগুলোর যে কোনওটিতে চোখ রাখলে দেখা যায় ভেতরের দেবমূর্তি। খিলানগুলোকে আলাদা করা অলঙ্করণযুক্ত ইটের স্তম্ভগুলোও বেশ সুন্দর।
মন্দিরের টেরাকোটা ও ইটগুলো স্থানীয় নদী ও পুকুরের এটেঁল মাটি দিয়ে তৈরি। তবে ভিত্তির পাথরগুলো আনা হয়েছে হিমালয়ের তড়াই, আসামের পার্বত্য এলাকা, বিহারের রাজমহল ও বিন্ধ্যাঞ্চল পার্বত্য এলাকা থেকে। টেরাকোটা ও ইটগুলোর প্রত্যেকটি আগুনে পোড়ানো এবং রক্তের মতো লালবর্ণের। এ সমস্ত ইটের কাজ ও টেরাকোটাগুলোর করেছেন স্থানীয় গ্রাম্য মিস্ত্রি ও কারিগররাই।
আরও পড়ুন: শীতকালে বাংলাদেশে ভ্রমণের জনপ্রিয় ১০ স্থান
কান্তনগর মন্দিরে ধর্মীয় উৎসব
মন্দির ভ্রমণে পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ হলো রাস মেলা। প্রতি বছর শীতের শুরুতে মন্দির প্রাঙ্গণে এক মাস ধরে উদযাপিত হয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এই উৎসব। রাস মেলা রাজা রামনাথ রায়ের শাসনামল থেকেই পালিত হয়ে আসছে। এ সময় বাংলাদেশসহ গোটা ভারতীয় উপমহাদেশের অনেক তীর্থ যাত্রী এই মন্দিরে আসেন।
মেলা উপলক্ষে পুরো মাস ধরে বসে নানা ধরণের বিপণী। এগুলোতে বিক্রি করা হয় বিশেষ করে গুড়ের জিলাপী, শাখা-সিদুর, মুনহারী, জুতা, কাপড়, খেলনা এবং ফার্নিচার। এছাড়াও মেলায় আনন্দের কেন্দ্রবিন্দু থাকে নাগরদোলা, সার্কাস, মোটরসাইকেল খেলা, এবং যাত্রাপালা।
জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমা তিথী অথবা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ বা আষাঢ়ের শুরুতে অনুষ্ঠিত হয় শ্রীকৃষ্ণ স্নান উৎসব। এ সময়টাতে গোটা কান্তনগরে থাকে হাজার হাজার শ্রীকৃষ্ণ ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়।
স্থানীয় গ্রামবাসীদের আরও একটি প্রথা হচ্ছে ফাল্গুন মাসের দোল পুর্ণিমা। গৌড় পুর্ণিমার এই দিনে একে অপরকে হলি ছিটিয়ে বা লাল রঙে রাঙিয়ে উৎসব পালন করা হয়।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জের যাদুকাটা নদী ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
২ মাস আগে
দিনাজপুরে শেখ হাসিনাসহ ৫৯ জনের নামে মামলা
৪ আগস্ট দিনাজপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিতে আহতের ঘটনায় শেখ হাসিনা, সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমসহ ৫৯ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জেলার রাজবাটি এলাকার এ.বি.এম সিদ্দিকের ছেলে মো. ফাহিম ফয়সাল শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) কোতোয়ালি থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: হত্যা মামলায় ৫ দিনের রিমান্ডে সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফী
মালার অন্য আমিরা হলেন- ইমদাদ সরকার, মোমিনুল ইসলাম, শেখ মোহাম্মদ শাহ্ আলম, আনোয়ার হোসেন, নোওশাদ ইকবাল কলিংশ, বিশ্বজিৎ ঘোষ কাঞ্চন, রমজান, রেজাউল ইসলাম রেজা, মো. জর্জেস সোহেল, মো. রানা, নওসাদ, সাদেকুল, মো. মামুন, মো. জাহিদি পারভেজ অপূর্ব, মো. আলাউদ্দীন, জেমী, মো. তায়েব, দুলাল হোসেন, আবু রায়হান আবু, আবু ইবনে রজ্জব, সুমন, শাজাহান নোবেল, মনিরুজ্জামান জুয়েল, সালেকিন রানা, আব্দুল্লাহ আল আমীন সৌরভ, দিপু, শাওন, সানি, মো. আবু তৈয়ব আলী দুলাল, ওয়ারেসুল হক রঞ্জু, কপিল বসাক, আইনজীবী শাহাজাদা, রহমত আলী, আহমাদ ইবনে সাইদ দিপ্ত, তানভির রেজওয়ান শান্ত, লাইজুর, রাফু, জিল্লুর, মো. আব্দুল লতিফ, মো. সুজন, মো. নুর নবিন, মো. হাসনাত আজিম লিয়ন, আতিয়ার রহমান, সৈকত পাল, মো. ফিরোজ, মো. রতন, মো. ফয়সাল হাবিব সুমন, মো. মোসাদ্দেক হোসেন রানা, মোবারক হোসেন, মশিউর রহমান, মো. হারুন উর রশিদ রায়হান, মো. সারোয়ার জাহান রাজ্য, সোহরাব, আক্তারুজ্জামান, মোস্তফা কামাল, সত্যঘোষ এবং মো. সালাউদ্দিন হক।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ হোসেন বলেন, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দিনাজপুর মুন্সিপাড়ায় জেনারেল হাসপাতালের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছিলেন এই মামলার বাদী ফাহিম ফয়সাল। তাকে হত্যার চেষ্টার জন্য শেখ হাসিনাকে ১ নম্বর ও সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে নিক্সন চৌধুরী, ভাঙ্গা থানার ওসিসহ ৯৮ জনের নামে দ্রুত বিচার আইনে মামলা
সিলেটে চার মামলায় জামিন পেলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবর
২ মাস আগে
উৎপাদনে ফিরেছে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সরবরাহ হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে
দিনাজপুর, ১৩ সেপ্টেম্বর (ইউএনবি)- তিনদিন পুরোপুরি বন্ধ থাকার পর বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফিরেছে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ওভারহোলিং শেষে ১২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ১ নম্বর ইউনিটটি বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় সচল করা হয়েছে। রাত ৮টার পর থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। উৎপাদিত ৬০ থেকে ৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।
চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনালের কাছে যন্ত্রাংশ সরবরাহ পাওয়া গেলে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সোমবার বন্ধ হয়ে পড়া তৃতীয় ইউনিটটিকে কয়েকদিনের মধ্যে সচল করা সম্ভব হবে আশা করছেন প্রধান প্রকৌশলী।
অন্যদিকে ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ২ নম্বর ইউনিটটি বছরের শুরু থেকে পুরো অচল হয়ে পড়ে রয়েছে।
সর্বশেষ গেল সোমবার তৃতীয় ইউনিটটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে পড়ায় সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের কারণে লোডশেডিং কমেছে দিনাজপুরসহ উত্তরের জেলাগুলোতে। কৃষিক্ষেত্রে চাষাবাদে বিদ্যুৎ নির্ভর সেচযন্ত্রের পাশাপাশি ভোগান্তি কমেছে অন্যান্য সেক্টরে। উৎপাদনে প্রাণচাঞ্চল্য বেড়েছে চালকলসহ শিল্প কারখানায়।
দেশের প্রথম কয়লাভিত্তিক এই কেন্দ্রটি পাশ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে উত্তোলিত কয়লা পুড়িয়ে বাষ্প চালিত ইঞ্জিনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়ে থাকে।
২ মাস আগে