খাল খননে
নানিয়ারচরে ভরাট হয়ে যাওয়া চেঙ্গী খাল খননের কাজ শুরু
মুজিব শতবর্ষের ডেল্টা প্লানের আওতায় দেশের ৬৪ জেলার অভ্যন্তরে ছোট নদী, খাল, জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের আওতায় রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ চেঙ্গী খালের পুনঃখনন কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
জানা যায়, ১৯৬০ সনে কাপ্তাইয়ে কর্ণফুলী নদীতে বাধ দিয়ে সৃষ্টি হয় বিশাল কৃত্রিম হ্রদ। হ্রদ সৃষ্টির পর গত ৬০ বছরে হ্রদের ডেজিংয়ের কাজ হাতে নেয়া হয়নি। ফলে প্রতি বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ের পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে কাপ্তাই হ্রদ। এতে শুষ্ক মৌসুম এলে নদীর পানি হ্রদ পাওয়ায় চেঙ্গী খালের উপর নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পানি গভীরতা বাড়িয়ে কাপ্তাই হ্রদের নাব্যতা ফেরাতে খাল পুন খননের কাজ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: খাল পুনঃখনন: নতুন করে স্বপ্ন দেখছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৫ হাজার কৃষক
স্থানীয়রা জানান, খালটি খনন করে মাটি পাড়ে রাখা হচ্ছে। এতে বর্ষা মৌসুমে পানি বেড়ে খনন করা মাটি আবারও সেই খালে গিয়ে ভরাট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সুনিদিষ্ট পরিকল্পনা করে এই খাল খননের কাজ যদি করা হয় তা হলে এলাকাবাসী উপকৃত হবে বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে খাল পুনঃখননে অনিয়মের অভিযোগ, আদালতে মামলা
ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম বলেন, ২০১৮ সালে রাঙামাটি জেলায় খনন কাজ শুরুর কথা থাকলেও প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা ও বৈশ্বিক মহামারির কারণে খাল খননের কাজ সময়মতো শুরু করা যায়নি। এবার শুকনো মৌসুমে কাজ শুরু করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই প্রকল্পের আওতায় ৩ কিলোমিটার নানিয়ারচর চেঙ্গী খাল খনন করা হবে।
পরে এসব মাটি ধরে রাখতে গার্ড ওয়াল দিয়ে মাটিগুলোকে সংরক্ষণ করে সেখানে গাছ রোপন করা হবে বলে জানান তিনি।
নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলি রহমান তিন্নি জানান, নানিয়ারচর চেঙ্গী খালে শুষ্ক মৌসুমে নৌযান চলাচল করতে পারতো না এখন খননেরে পর কিছুটা হলেও নৌযান চলাচল করতে পারবে।
এতে এলাকায় উৎপাদিত পণ্য আনা-নেয়াসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর হবে। আর নানিয়ারচর উপজেলা প্রশাসন চেঙ্গী খাল খননের কাজে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: খরা মোকাবেলায় নাটোরে সরকারি জলাশয় পুনঃখনন
রাঙামাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ওবায়েদুল হক বলেন, রাঙামাটি জেলায় সর্বমোট প্রতিরক্ষা ও খাল খননের কাজ চলমান রয়েছে। যার আনুমানিক ব্যায় ধরা হয়েছে ২৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা। শুষ্ক মৌসুমে মানুষের যে দুর্ভোগ এই দুর্ভোগ লাঘবের জন্য চেঙ্গী খালটি খনন করা হচ্ছে। এতে করে মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সুবিধা হবে। তবে নদীর উপর দুবন্ত খাল তাই ২-৩ বছর পর পর খালটি খনন করতে হবে। আর চলতি শুষ্ক মৌসুমে চেঙ্গী খাল পুন খননের কাজ দ্রুত শেষ করা হবে বলে জানান তিনি।
নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা বলেন, ‘চেঙ্গী খাল খননের কারণে স্থানীয় এলাকাবাসীরা এখন কিছুটা হলেও সুবিধা ভোগ করবে।’