সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ যুবক নিহত
সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিন যুবক নিহত হবার ঘটনা ঘটেছে।মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে ঘটনাটি ঘটে বলে জানায় পুলিশ। নিহতদের মরদেহ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় চাচা-ভাতিজা নিহত
নিহতরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলিপুর ইউনিয়নের পুস্পকাটি গ্রামের জাহাঙ্গির হোসেনের ছেলে মামুন হোসেন (১৭), তাসলিমা খাতুনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২৫) ও একই গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে সজিব (১৯)।
আরও পড়ুন: পেরুতে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭ জনের মৃত্যু
দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সাহা জানান, রাত ১০ টার দিকে ওই তিন যুবক একটি মোটরসাইকেল যোগে সাতক্ষীরার দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে পারুলিয়া হাইস্কুল এলাকায় একটি মালবাহী ট্রাককে সাইড দিতে গিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা খায়। এতে ঘটনাস্থলেই ওই তিন যুবক মারা যায়। তাদের মরদেহ উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরায় ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত ২৬, ঢিলেঢালাভাবে চলছে লকডাউন
সাতক্ষীরায় চলমান লকডাউনে করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা কমেছে। তবে, মৃত্যুর মিছিল ভারী হয়ে উঠেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ৩ নারীসহ ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের সিভিল সার্জন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে খুলনা মেডিকেলে একজন ও উপসর্গ নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭ জন মারা গেছেন। এনিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৬৭ জন। আর ভাইরাসটির উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরও অন্তত ৩২৮ জন।
আরও পড়ুন: সিলেটে একদিনে সর্বোচ্চ ২৩৪ জনের করোনা শনাক্ত
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৯২ জনের নমুনা পরীক্ষা শেষে ২৬ জনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ২ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় এখন পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ২৮৮ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ৩৭৮ জন।
আরও পড়ুন: করোনায় খুলনাতে আরও ১১ জনের মৃত্যু
বর্তমানে জেলায় ৮৪৩ জন করোনা আক্রান্ত রুগী রয়েছেন। এর মধ্যে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৬ জন এবং উপসর্গ নিয়ে আরও ২৪০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আর বেসরকারি হাসপাতালে আক্রান্ত হয়ে ১৩ জন ও উপসর্গ নিয়ে আরও ১১৭ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া ৮১৪ জন ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে, চতুর্থ দফা চলমান লকডাউনের ২৫তম দিনেও সাতক্ষীরায় মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন বালাই নেই। চলছে ঢিলেঢালা লকডাউন। শহর ও গ্রামাঞ্চলের হাটবাজার গুলোতে প্রচুর মানুষের ভিড়। লকডাউনের নামে সড়কে যেনো চলছে লুকোচুরি। ভারি যানবাহন ছাড়া সবই চলছে স্বাভাবিকভাবে। শহরের অধিকাংশ দোকানপাট গুলোতে চুরি করেই চলছে বেচাকেনা। পুলিশের বাধা ও ব্যারিকেডও মানছে না কেউই।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়া হাসপাতালে করোনায় ৯ মৃত্যু, বাড়ছে রোগী
যদিও পুলিশ মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে চলাচল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।
বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। তবে, ইজিবাইক, রিকশা, ভ্যান ও মোটরসাইকেল যোগে মানুষ গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। লকডাউনে জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। তবে, লকডাউনে বিপাকে পড়েছেন মোটর চালিত ভ্যান ও রিকশা চালকসহ খেটে খাওয়া মানুষ।
সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, জনসচেতনতা কম থাকায় মানুষ লকডাউন লঙ্ঘন করছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জেলার ৭টি উপজেলায় জনসমাগম ও যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য পুলিশ বিভিন্ন সড়কে ব্যারিকেড বসিয়েছে।
সাতক্ষীরায় স্কুলছাত্রদের `ফ্রি সবজির’ দোকান
করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সাতক্ষীরায় চলছে লকডাউন। এতে চরম বিপর্যয়ে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষরা। এসব অসহায় মানুষের মাঝে ফ্রি সবজি ও মাস্ক বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার সকালে শহরের খুলনা রোড মোড় এলাকায় এই “ফ্রি সবজি” দোকান ও মাস্ক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু।
আরও পড়ুন: রাজশাহী সিটিতে আরেক দফা বাড়লো বিশেষ লকডাউন
সংগঠনটির পরিচালক সুহাইল মাহদীন সাদী জানান, আমরা ২০২১ সালের এসএসসি ব্যাচ এবং নবম ও দশম শ্রেণির ৮০ জন শিক্ষার্থী মিলে এই উদ্যোগ নিয়েছি। করোনায় খেটে খাওয়া অসহায় মানুষ খুব বিপদে পড়েছেন। তাই এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে কিছু করার জন্য আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। প্রথম দিনে ১০০ জন দরিদ্র মানুষের হাতে আমরা সবজি তুলে দিয়েছি, মাস্কও বিতরণ করেছি। আগামী এক মাস প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে ফ্রি সবজি বিতরণ করা হবে।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় আরও এক সপ্তাহ বাড়ল লকডাউন
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, পৌর কাউন্সিলর শফিউদ্দৌলা সাগর, স্বেচ্চাসেবী সংগঠন ‘আহ্বান’ এর পরিচালক ও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের কেবিনেট সুহাইল মাহদীন সাদী, সহকারি পরিচালক সৈয়দ নুরে মিরাজ শান্ত, জাকারিয়া ফারদিন, পারভেজ হোসেন, শাহজাহান তাজ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: করোনায় খুমেকে ২৪ ঘণ্টায় ১১ মৃত্যু
সাতক্ষীরায় তৃতীয় দফায় লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ল
সাতক্ষীরায় চলমান লকডাউনের মেয়াদ তৃতীয় দফায় আরও এক সপ্তাহের জন্য বাড়ানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা করোনা কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা সংক্রমণের হার না কমায় শুক্রবার থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত আবারও লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: লকডাউনের তৃতীয় দিন পার করছে সাতক্ষীরা
এর আগে গত ৫ জুন করোনা সংক্রমণরোধে দ্বিতীয় দফায় সাতদিনের লকডাউন ঘোষণা জেলা প্রশাসন।
লকডাউনের বাধা নিষেধের কারণে জেলা শহরে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে চলাচল নিয়ন্ত্রণসহ মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। সব গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র বাণিজ্যিক কাজে নিয়োজিত যানবাহন চলছে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনাবেচার সুযোগ রয়েছে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। লকডাউনের মধ্যে ফার্মেসি, অ্যাম্বুলেন্স, হাসপাতাল, ক্লিনিক, বিদ্যুৎ জ্বালানি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে খুলনা ও যশোরের যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ভোমরা স্থলবন্দরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। তবে ভারতীয় চালক ও হেলপাররা যাতে খোলামেলা ঘুরে বেড়াতে না পারেন সে জন্য পুলিশ ও বিজিবির নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় ঢিলেঢালা লকডাউন, করোনায় আরও একজনের মৃত্যু
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউনের ১২তম দিনে মৃত্যু ৯, শনাক্ত ১০৭
লকডাউনের তৃতীয় দিন পার করছে সাতক্ষীরা
করোনা সংক্রমণরোধে জেলা প্রশাসন ঘোষিত সাতদিনের লকডাউনের সোমবার তৃতীয় দিন চলছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা উপসর্গে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, বর্তমানে সাতক্ষীরায় ৩৭৭ জন করোনা পজেটিভ রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। এর মধ্যে ২৬ জন সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ২২ জন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে, তিন জন সাতক্ষীরা সিভি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। বাকি ৩২৬ জন রোগী বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় ঢিলেঢালা লকডাউন, করোনায় আরও একজনের মৃত্যু
এদিকে, লকডাউনের বাধা নিষেধের কারণে জেলা শহরে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে চলাচল নিয়ন্ত্রণসহ মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। সব গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র বাণিজ্যিক কাজে নিয়োজিত যানবাহন চলছে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনাবেচার সুযোগ রয়েছে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। লকডাউনের মধ্যে ফার্মেসি, অ্যাম্বুলেন্স, হাসপাতাল, ক্লিনিক, বিদ্যুৎ জ্বালানি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে খুলনা ও যশোরের যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ভোমরা স্থলবন্দরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। তবে ভারতীয় চালক ও হেলপাররা যাতে খোলামেলা ঘুরে বেড়াতে না পারেন সে জন্য পুলিশ ও বিজিবির নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউনের ১২তম দিনে মৃত্যু ৯, শনাক্ত ১০৭
বিজিবির সাতক্ষীরাস্থ ৩৩ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আল মাহমুদ জানান, অবৈধ যাতায়াত রোধে সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে।
বিনা পাসপোর্টে বাংলাদেশে ফিরে আসা তিনজনকে রবিবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সাতক্ষীরায় ঢিলেঢালা লকডাউন, করোনায় আরও একজনের মৃত্যু
সাতক্ষীরায় করোনার ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে সপ্তাহব্যাপী লকডাউনের আজ দ্বিতীয় দিন চলছে। তবে ঢিলেঢালাভাবে লকডাউন পালিত হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শহরের বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নিলেও তাদের তেমন কোন কঠোরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। গ্রামের অবস্থা আরও খারাপ। গ্রামের মানুষ স্থানীয় হাটবাজারে মুখে মাস্ক ছাড়াই চলাফেরা করছে । কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না ।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউনের ১২তম দিনে মৃত্যু ৯, শনাক্ত ১০৭
এদিকে, সাতক্ষীরায় করোনা আক্রান্ত আরও একজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার সকালে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এনিয়ে জেলায় ৪৮ জন করোনায় মারা গেছেন। এছাড়া করোনা উপসর্গ নিয়ে ২৫০ জন মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, জেলায় বর্তমানে ৩৩৯ জন করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৭ জন এবং সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ২৬ জন করোনা পজেটিভ রোগী ভর্তি রয়েছে। বাকি ২৮৬ জন করোনা পজেটিভ রোগী বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছে। সাতক্ষীরা জেলায় এ পর্যন্ত করোনা পজেটিভে ৪৮ জন মারা গেছেন। এছাড়া করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে ২৫০ জন।
আরও পড়ুন: করোনার সংক্রমণ রোধে সাতক্ষীরায় সপ্তাহব্যাপী লকডাউন শুরু
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। সেখানেও স্বাস্থ্যবিধি তেমন মানা হচ্ছে না বলে জানা গেছে। সীমান্ত জুড়ে বিজিবি রেড এলাকার্ট জারি করছে। অভিযোগ রয়েছে রাতে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে লোক প্রবেশ করছে। ভোমরা স্থলবন্দরের আমদানি রপ্তানির সময়সীমা কমিয়ে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, সাতদিনব্যাপী যে লকডাউন দেয়া হয়েছে সেটিতে সবাই মিলে এক সাথে কাজ করছি। তবে সাধারণ জনগণের মধ্যে কিছুটা সচেতনার অভাব রয়েছে। আমরা দরিদ্র শ্রেণিদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করছি। এছাড়া বিভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালতি হচ্ছে। বাজারগুলোতে তদারকি চলছে।
আরও পড়ুন: শনিবার থেকে নোয়াখালী সদরে কঠোর লকডাউন
করোনার সংক্রমণ রোধে সাতক্ষীরায় সপ্তাহব্যাপী লকডাউন শুরু
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সাতক্ষীরা জেলায় সপ্তাহব্যাপী কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে জেলায় পূর্বঘোষিত লকাডউন শুরু হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি সপ্তাহব্যাপী এই লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়।
জেলার সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সাতক্ষীরায় করোনা আক্রান্তের হার ৫৩ দশমিক ১৯ ভাগ।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭ দিনের লকডাউন শুরু
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. কুদরত-ই-খোদা জানান, শনিবার সকালে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা উপসর্গে নিয়ে দুজন মারা গেছেন। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ১০৫ জন। এর মধ্যে করোনা পজেটিভ রোগীর সংখ্যা ৩৩ জন।
সূত্র জানায়, সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী সাতক্ষীরা সদর, কলারোয়া ও কালিগঞ্জে সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। জেলার অন্যান্য উপজেলায়ও করোনা সংক্রমণ দিন-দিন বেড়েই চলছে।
এদিকে চলমান লকডাউনে জরুরি পরিসেবা বাদে জেলায় দূরপাল্লার ও অভ্যন্তরীণ যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। রিকশা, ভ্যান, নছিমন, করিমন, মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের পরিবহন বন্ধ থাকার সিদ্ধান্ত হলেও সকাল থেকে জেলা শহরে স্বল্পপরিসরে যান চলাচল করছে।
আরও পড়ুন:এবার ৬ জুন পর্যন্ত বাড়ল লকডাউন
কাঁচা বাজারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়ের জন্য সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা থাকবে। তবে অন্যান্য দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।
আপরদিকে, ভোমরা স্থল বন্দরের আমদানি রপ্তানির সময়সীমা কমিয়ে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে বন্দরের দোকানপাট বন্ধ থাকবে।
সাতক্ষীরায় শনিবার থেকে ৭ দিনের লকডাউন
সাতক্ষীরায় করোনার ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে আগামী ৫ জুন শনিবার ভোর ৬টা থেকে সপ্তাহব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা শেষে জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল সপ্তাহব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করেন।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জেলায় লকডাউন চলাকালীন সময়ে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কাঁচাবাজারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানপাট খোলা থাকবে। তবে দূরপাল্লার সকল যাত্রীবাহী বাস এবং জেলার অভ্যন্তরীণ সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। রিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেল, নছিমন-করিমন সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যবাহী যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি পরিসেবা লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে। সকল ব্যাংক খোলা থাকবে।
আরও পড়ুন: নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় ৭ দিনের লকডাউন
এছাড়া সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম চালু থাকবে। তবে বন্দরের সবধরনের দোকানপাট বন্ধ থাকবে। স্থলবন্দর এলাকায় ভারতীয় ট্রাক-চালক, হেলপারসহ সকলকে স্বাস্থ্য বিধি মানতে হবে। স্বাস্থ্য বিধি না মানলে জরিমানা করা হবে। মাস্ক না পরলে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা আদায় করা হবে।
আরও পড়ুন: করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট: সীমান্তবর্তী হওয়ায় ঝুঁকিতে খুলনা বিভাগ
জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল বলেন, সাতক্ষীরায় বর্তমানে করোনা সংক্রমণের হার ৫৩ শতাংশ। দিন দিন পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী সাতক্ষীরা সদর, কালিগঞ্জ ও কলারোয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। ঘরে ঘরে মানুষের জ্বর, সর্দিসহ করোনা উপসর্গ দেখা দিয়েছে। ফলে জেলাব্যাপী লকডাউন ঘোষণা ছাড়া এটি নিয়ন্ত্রল করা কোনভাবেই সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, আগামী ১২ জুন জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
সভায় জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়াত বলেন, করোনা সংক্রমণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় আগামী শনিবার থেকে সাত দিন জেলার সর্বত্র লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বা হবেন তাদের বাড়ি লকডাউনের পাশাপাশি কঠোর নজরদারি করা হবে।
তিনি বলেন, সর্বশেষ গত বুধবার সাতক্ষীরায় ৯৩ জনের করোনা পরীক্ষা করে ৫০ জনের করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। সেই হিসেবে জেলায় করোনা সংক্রমণের হার ৫৩ শতাংশ।
সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আল মাহমুদ বলেন, সীমান্তবর্তী এলাকায় বিজিবি কঠোর নজরদারি করছে। কোন মানুষ যাতে অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপার করতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় ভার্চুয়ালিযুক্ত ছিলেন, সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়াত, পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আল মাহমুদ, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপী, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু প্রমুখ।
উপকূল রক্ষায় টেকসই বেড়িবাঁধের দাবি সাতক্ষীরাবাসীর
‘উপকূল রক্ষায় টেকসই বেড়িবাঁধ চাই’ এই স্লোগানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি।
সোমবার সকাল ১১টায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে সাতক্ষীরা ডিসি অফিস সংলগ্ন সড়কের উপর দাঁড়িয়ে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন জেলার সর্বস্তরের মানুষ।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন
মানববন্ধন চলাকালে সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকাকে দুর্যোগ প্রবণ এলাকা ঘোষণা, পৃথক উপকূলীয় বোর্ড গঠন ও জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দসহ ২১ দফা দাবি জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
আরও পড়ুন: রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বেনাপোলে সাংবাদিকদের মানববন্ধন
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আনিসুর রহিমের সভাপতিত্বে ও জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম-সদস্য সচিব আলী নূর খান বাবুল পরিচালনায় মানববন্ধনে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম-সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আজাদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা: দণ্ডিত ৭ আসামির জামিন স্থগিতই থাকছে
সাতক্ষীরায় প্রায় দেড় যুগ আগে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত সাত আসামিকে হাইকোর্টের দেয়া জামিনের ওপর স্থগিতাদেশের মেয়াদ তিন সপ্তাহ বাড়িয়েছেন আপিল বিভাগ। একই সাথে এ সময়ের মধ্যে তাদের জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) দায়ের করতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
রবিবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন শুনে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। একই সাথে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল শুনানির জন্য ২০ জুন দিন ধার্য করা হয়েছে। ফলে এ সময় পর্যন্ত তাদের জামিন স্থগিতই থাকছে।
যে সাত দণ্ডিত ব্যক্তির জামিন স্থগিতই থাকছে তারা হলেন-আবদুস সাত্তার, গোলাম রসুল, আবদুস সামাদ, জহিরুল ইসলাম, রাকিব, শাহাবুদ্দিন ও মনিরুল ইসলাম। এ মামলায় ২৫ মে হাইকোর্ট সাত দণ্ডিত ব্যক্তিকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছিলেন। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা ২৭ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আদালত হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি ৩০ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি ও আদেশ হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন।
জানা যায়, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালিন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হিজলদি গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে সদর হাসপাতালে যান। তিনি মাগুরায় ফেরার পথে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ পাওয়া যায় সাতক্ষীরা-১ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
হামলায় শেখ হাসিনাসহ তার গাড়ি বহরে থাকা লোকজন, আওয়ামী লীগ নেতা ও সাংবাদিকসহ অন্তত এক ডজন লোক আহত হন। ওই ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে উপজেলা যুবদল সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৭০-৭৫ জনের নামে থানায় ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। বিভিন্ন আদালত ঘুরে হাইকোর্টের নির্দেশে এক যুগ পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এরপর ২০১৫ সালের ১৭ মে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের নাম উলেখ করে ৩০ জনকে সাক্ষী করে পেনাল কোর্ট, অস্ত্র আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পৃথক তিনটি অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেখ সফিকুর ইসলাম।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: ৭ আসামির জামিন স্থগিত
সাতক্ষীরা মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে বিচারাধীন পেনাল কোর্টের মামলাটি ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর এবং সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ-২য় আদালতে বিচারাধীন অস্ত্র আইনে ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দুটির কার্যক্রম যথাক্রমে ২০১৭ সালের ৯ ও ২৩ আগস্ট আসামীপক্ষ হাইকোর্টে স্থগিত করেন। গতবছর ৮ অক্টোবর ওই রুল খারিজ করে রায় দেন আদালত। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন রাকিবুর। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে বিচার সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। এরপর বিচার শেষে সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গত ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় বিএনপির সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ তিনজনের সর্বোচ্চ ১০ বছর করে এবং বাকি ৪৭ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেন। এরপর আসামিরা ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামিন চেয়ে আবেদন জানান।