চৌদ্দগ্রাম
কুমিল্লায় বাসের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের সব যাত্রীর মৃত্যু
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মাইক্রোবাসে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় নারী ও শিশুসহ চারজন নিহত হয়েছে।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নানকরা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান নাজমুল হুদা জানান, সকাল ৬টার দিকে মহাসড়কের নানকরা এলাকায় ঢাকাগামী স্টার লাইন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস পেছন থেকে মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়।
এ ঘটনায় ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন এবং চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে একজনের মৃত্যু হয়।
নিহতদের মধ্যে তিনজন একই পরিবারের সদস্য।
নিহতদের লাশ মিয়াবাজার হাইওয়ে থানায় নেওয়া হয়েছে।
তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি বলে জানান ওসি।
২ মাস আগে
চৌদ্দগ্রামে কাভার্ডভ্যান উল্টে চালক নিহত
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে কাভার্ডভ্যান উল্টে খাদে পড়ে চালক মো. মেহেদী হাসান নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নোয়াবাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. মেহেদী হাসান (৩০) নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানার শুলটিয়া গ্রামের পশ্চিম পাড়ার মো. ইলিয়াছ শেখের ছেলে।
চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ইনচার্জ মেহেদী হাসান সুজন জানান, বুধবার সকালে ঢাকামুখী একটি কাভার্ডভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে সড়কের পাশে খাদে পড়ে যায়। এতে কাভার্ডভ্যানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ঘটনাস্থলে চালক মেহেদী হাসান নিহত হন।
স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও মিয়াবাজার হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং দুর্ঘটনা কবলিত গাড়িটি জব্দ করা হয় বলে জানান তিনি।
মিয়াবাজার হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফারুক বলেন, লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
৪ মাস আগে
চৌদ্দগ্রামে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পুকুরের পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (২৪ জুন) সকালে উপজেলা পৌর এলাকার চান্দিশকরা পশ্চিম পাড়ার খান বাড়ির পুকুরে ডুবে তার মৃত্যু হয়।
দেড় বছর বয়সী শিশু আতিফা আবেদীন ইশরা ওই উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের বৈলপুর গ্রামের শিক্ষক শিপন আবেদীনের মেয়ে।
জানা গেছে, শিশু ইশরা মায়ের সঙ্গে চান্দিশকরায় নানা হারুন খানের বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখানে সোমবার সকালে খেলার ছলে বাড়ির পাশের পুকুরে পড়ে ডুবে যায়। সঙ্গে সঙ্গে টের পেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন। তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাঈদ আল মানসুর শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাঈদ আল মানসুর বলেন, ‘ইশরাকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।’
৪ মাস আগে
চৌদ্দগ্রামে খড়ের গাদা থেকে মাজার খাদেমের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার!
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মাজার খাদেম রেজাউল করিমের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার চিওড়া ইউনিয়নের লতিফ শিকদার গ্রামের পীরবাড়ির গোয়ালঘরের খড়ের গাদা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
বুধবার চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার (২১ আগস্ট) সকাল ৬টার দিকে মাজারের লাইট বন্ধ করার জন্য ঘর থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ হন রেজাউল। এরপর আত্মীয় স্বজনদের বাড়িসহ সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:বগুড়ায় হত্যা মামলার আসামির গলাকাটা লাশ উদ্ধার
নিখোঁজের দুইদিন পর মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় পাশের বাড়ির এক মহিলা গোয়ালঘরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্গন্ধ পেয়ে রেজাউল করিমের পরিবারের লোকজনকে বিষয়টি জানায়।
পরিবারের সদস্যরা গোয়ালঘরের তালা খুলে খড়ের গাদার নিচে রেজাউল করিমের অর্ধগলিত লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
নিহতের স্ত্রী রাশেদা বেগম বলেন, আমার স্বামী রেজাউল করিম একজন মানসিক রোগী। পারিবারিক যে কোন বিষয় নিয়ে সে সবসময় আমাকে মারধর করতো। তার মৃত্যুর বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না।
নিহত রেজাউল করিমের বোন রোকেয়া বেগম বলেন, আমার ভাই অনেক ভালো মানুষ ছিল। তিনি মাজারের খাদেম ছিলেন। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আমি অপরাধীদের শাস্তি দাবি করছি।
চিওড়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের বলেন, মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি শুনেছি। আশা করছি, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রশাসন রেজাউল করিমের মৃত্যু রহস্য উদঘাটন করবে।
ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে জানা যাবে মৃত্যুর কারণ। এছাড়া পুলিশ ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে।
আরও পড়ুন:সিলেটে তালাবদ্ধ ঘর থেকে প্রবাসীর স্ত্রীর লাশ উদ্ধার, শিশু সন্তান হাসপাতালে
বরিশালে পৃথক স্থান থেকে শিশুসহ ৪ লাশ উদ্ধার
২ বছর আগে
চৌদ্দগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ছুপুয়া ইউটার্ন এলাকায় অজ্ঞাত গাড়িচাপায় তিন এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। বুধবার রাত ৯টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ছুপুয়া এলাকার মো. আবুল হাশেমের ছেলে লিমন, দুর্গাপুরের হানিফ মিয়ার ছেলে সিফাত এবং বদরপুরের আবদুল গফুরের ছেলে সজীব। তারা সবাই ছুপুয়া ছফরিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্র এবং চলতি বছরের দাখিল (এসএসসি) পরীক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: ওয়াসার গাড়ির ধাক্কায় রাজধানীতে এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত
স্থানীয়রা জানায়, বুধবার রাত ৯টার দিকে স্থানীয়রা ছুপুয়া ইউটার্ন এলাকায় এসে দুর্ঘটনা কবলিত একটি অটোরিকশা দেখতে পায়। সেখানে অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত অবস্থায় পরে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে কোন ভারি যানবাহন অটোরিকশাটিকে ইউটার্ন নেয়ার সময় পেছন থেকে ধাক্কা দিলে ওই মাদরাসার ছাত্ররা নিহত হয়।
আর পড়ুন: গোপালগঞ্জে দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুলিতে এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত
লাশ উদ্ধার করে মিয়াবাজার হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে নেয়া হয়েছে।
নয়াবাজার হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) জাকির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
২ বছর আগে
চৌদ্দগ্রামে তুচ্ছ ঘটনায় যুবককে কুপিয়ে হত্যা, আহত ৩
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের তারাশাইল এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইস্রাফিল নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে আপন চাচাতো ভাই। এ ঘটনায় নারীসহ আহত হয়েছে আরও তিনজন। রবিবার দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,নিহত ইস্রাফিলের বাবা হানিফ মিয়া ও চাচা মুক্তল হোসেনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বসত ভিটা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। বিধিনিষেধসহ এ সংক্রান্ত একটি মামলা আদালতে চলমান অবস্থায় রবিবার দুপুরে মুক্তল হোসেন জমির ধান মাড়াই শেষে খড়ের মুড়ল তৈরি করছিল বিরোধ চলা ওই বসত ভিটার ওপর। এ সময় ইস্রাফিল বাধা দিলে চাচাতো ভাই সজিব এসে ইস্রাফিলকে ছুরি দিয়ে এলোপাতারি কোপাতে থাকে। এসময় পরিবারের লোকজন থামানোর চেষ্টা করলে সজিব তাদের ওপরও হামলা চালায়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ইস্রাফিলকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভরঞ্জন চাকমা জানান, শুনেছি বসত ভিটা নিয়ে দন্দ্বের জেরে ইস্রাফিলকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মুক্তল হোসেন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে কুপিয়ে হত্যা
পটুয়াখালীতে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা
২ বছর আগে
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি-৩
লাশের স্তূপ
ডিসেম্বর মাসের চূড়ান্ত যুদ্ধের আগেই মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি হানাদারদের কার্যত বিভিন্ন সুরক্ষিত ক্যাম্পে কোণঠাসা করে রাখে। যৌথবাহিনী সীমান্ত পোস্টগুলো এড়িয়ে গভীরে আঘাত করার জন্য এগিয়ে যেতে থাকে। চৌদ্দগ্রামের থানা ক্যাম্প এড়িয়ে ভারতীয় বাহিনী এবং ১০ ইস্ট বেঙ্গলের যৌথ বাহিনী রাধানগর (ভারতীয় থানা) দিয়ে লাকসাম অভিমুখে যেতে থাকে। যুদ্ধকালীন সম্পূর্ণ সময় চৌদ্দগ্রামের আশপাশ এলাকার গ্রামগুলো জনমানব শুন্য ছিল।
ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কের পূর্ব দিকের লোকেরা ভারতে শরণার্থী হয়। সম্ভাব্য যুদ্ধের ভয়াবহতা এড়াতে সবাই আরও পশ্চিমে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। রাতের বেলায় ভয়াবহ গোলাগুলি। কোথায় কি হচ্ছে বুঝে উঠতে পারলাম না। সকাল হল। আলো হওয়ার পর দেখি আমরা চৌদ্দগ্রাম ছেড়ে পরিকুট (লাকসাম চৌদ্দগ্রাম থানার সীমা রেখা) এর কাছাকাছি। দেড়কোটা ও ছাতিয়ানি গ্রাম আমার পরিচিত। আমার খালার বাড়ি। ছোটবেলায় কত দূর মনে হতো। এটাই ছিল যুদ্ধক্ষেত্র।
পাকিস্তানি সেনাদের লাশের ছড়াছড়ি একের উপরে অনেকগুলো। এভাবে মারা গেলো কিভাবে? অনেকের গায়ে কাপড় নেই। কারো গায়ে সিভিল পোশাক। তারা কি সিভিল পোশাক পরে আপাতত জান বাচাতে ব্যস্ত ছিল? কারও মুখ ও চোয়াল ভাঙা, হাত পা নেই । গ্রামের দু’একজন লোকের দেখা পেলাম। বাকিরা কোথায় গেছে কেউ জানেনা। স্থানীয় লোকেরা লাশ দেখছে আর মন্তব্য করছে। এক জটলায় দেখলাম কয়েকটি উলঙ্গ লাশ নিয়ে কথা বার্তা হচ্ছে। একজন মন্তব্য করলো দেখ দেখ কয়েকটা লাশের পুরুষাঙ্গে গুলি লেগেছে। হারামির পুত মনে হয় মেয়েদের উপর বেশি অত্যাচার করেছে। এ কথা বলেই একটা বাঁশ দিয়ে লাশগুলোকে পেটাতে শুরু করলো। জানিনা তার হয়তো ক্ষোভ আছে। আমাদের কমান্ডার সামনে এগিয়ে যেতে বললেন। আবার শুরু হল চলা।
যুদ্ধবন্দী ১৯৭১
একে একে সীমান্ত শহরগুলো শত্রু মুক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে কুমিল্লা ও লাকসামে জয় বাংলার পতাকা উড়ছে। পথে ঘাটে লাশ ছড়িয়ে আছে। রাস্তাঘাট ভারতীয় সেনাদের তদারকিতে মেরামত চলছে। পাবলিককে ধরে ধরে এনে বাধ্যতামূলক শ্রমে লাগানো হচ্ছে। যুদ্ধের সাপ্লাই রুট ঠিক রাখতে রাস্তা, সেতু মেরামত জরুরি। গ্রামে গঞ্জের জঙ্গলে যে সব পাকিস্তানি সেনারা লুকিয়ে ছিল তারা বের হয়ে আসছে। জনতা ধরে এদের লাঠি পেটা করছে। যাহোক সচেতন জনগণের সহায়তায় তাদেরকে ভারতীয় সেনাদের হাতে তুলে দেয়া হল। কোন যুদ্ধবন্দী ক্যাম্প নেই। এদেরকে স্কুলের মাঠে বা কোন খোলা যায়গায় বসিয়ে রাখা হয়েছে। শীতের সকালের রোদ পোহাচ্ছে। পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। পালালে মুক্তিবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে জীবন দিতে হবে।
প্রশিক্ষণকালে আমাদেরকে শেখানো হয়েছিল যুদ্ধবন্দী কিভাবে হ্যানডলিং করতে হয়। তারা জেনেভা কনভেনশনের কি কি সুযোগ সুবিধা পাবে ইত্যাদি। তাদেরকে কিভাবে নিরাপত্তা দিতে হবে। এক ঘরে কতজন থাকবে, তাদের খাবার কি হবে তারা দৈনন্দিন কি কি কাজ করবে ইত্যাদি। যুদ্ধবন্দীদের দ্বারা অনেক দেশে অনেক বড় বড় স্থাপনা তৈরি হয়েছিল। আমাদের খুব কাছেই থাইল্যান্ডে ‘ব্রিজ অন দ্য রিভার কাওয়াই’ ব্রিটিশ যুদ্ধবন্দীদের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। মস্কোর রেড স্কয়ারে যে দর্শনীয় গির্জা আছে সেগুলোও যুদ্ধবন্দীদের দ্বারা নির্মিত। এরূপ আরও অনেক আছে।
যুদ্ধবন্দীদের এক স্থান থেকে আরেক স্থানে নিয়ে যাওয়ারও নিয়ম আছে। বিশেষ করে নিরাপত্তার বিবেচনায়। গাড়ী, ট্রেন, জাহাজ ও পদব্রজে যাওয়ার ভিন্ন ভিন্ন নিরাপত্তা নির্দেশ আছে। পদব্রজে গমনকাররীরা দলবদ্ধ হয়ে মার্চ করে এগোতে থাকে। কয়েকজন অস্ত্র হাতে চারিদিকে নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকে। এরূপ একটি দলের সাথে আমরা যাচ্ছিলাম। পাকিস্তানি সেনারা ক্লান্ত ও পরাজয়ের গ্লানিতে মৌন। এদের সাথে সাথে উৎসুক জনতাও চলছে। কয়েকজন যুবক এসে তাদের মারধর করতে চাইছে। এক বুড়ো বটি নিয়ে এগিয়ে আসছে আর বলছে, এই বেটা আমার সব ডাব মুরগি খেয়ে শেষ করেছে। আমার মুরগির টাকা দে, ছাগলের টাকা দে। ভারতীয় সেনারা ওদেরকে সরিয়ে দিচ্ছে। যুদ্ধবন্দীরা মার্চ করে এগিয়ে যাচ্ছে। পেছনের গ্রামের লোকেরা সরে যাচ্ছে। আবার নতুন গ্রামের লোকেরা যোগ দিচ্ছে। কিছু উৎসাহী যুবকেরা দৌড়ে এসে যুদ্ধবন্দীদের কাছে এসে জোর গলায় জয় বাংলা বলে সুর তুলছে আর দূর থেকে থুথু দিচ্ছে। এমন সময় যুদ্ধবন্দীদের মাঝে থেকে এক সেনা বলে উঠলো, ‘কেয়া জয় বাংলা? ইয়েতো হিন্দুস্তান হো গিয়া’।
লেখক: কলামিস্ট কর্নেল (অব.) মো. শাহ জাহান মোল্লা
(প্রকাশিত মতামতের দায় লেখকের, ইউএনবির নয়)
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি-১
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি- ২
২ বছর আগে
৪০ নোবেল বিজয়ীর সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পেলেন চৌদ্দগ্রামের মেয়ে আফরিনা
বিশ্বে এ যাবতকালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ৪০ জন বিজ্ঞানীর সাথে দেখা করার সুযোগ পেয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা গ্র্যাজুয়েট খন্দকার আফরিনা হক।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের মেয়ে আফরিনা চৌদ্দগ্রামের মিয়ার বাজার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও কুমিল্লা মহিলা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে।
লিন্ড্যাও নোবেল লরিয়েটের ৭১ তম মিলনমেলায় যোগ দিতে জার্মানিতে যাবেন তিনি। যেখানে ৪০ জন নোবেল বিজয়ীর সাথে সাক্ষাতের পাশাপাশি তিনি রসায়নে বিশ্বের সেরা ৬০০ বিজ্ঞানীর সাথে নিজের গবেষণা অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ পাবেন।
তিনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের তৃতীয় ব্যাচ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে এম ফিল করছেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী নারীরা: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের পৃষ্ঠপোষকতায় নানা যাচাই-বাছাই শেষে বাংলাদেশ থেকে মনোনীত কয়েকজনের মধ্যে মাত্র দুইজনকে এবার আমন্ত্রণ জানিয়েছে লিন্ড্যাও নোবেল লরিয়েট কমিটি। তাদেরই একজন খন্দকার আফরিনা হক।
এই আমন্ত্রণ পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে খন্দকার আফরিনা হক বলেন, ‘এতো বড় কোনো সুযোগ পাবো সেটা ভাবিনি। এটা স্বপ্নের মতো।যারা রসায়নে নোবেল পেয়েছেন তারা তো পুরো পৃথিবীর সেরাদের সেরা। তাদের সামনে থেকে দেখাই তো ভাগ্যের ব্যাপার। তার মধ্যে আমি আবার তাদের সাথে নিজের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ পাচ্ছি এটা অকল্পনীয়।’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে এ যাবতকালে সর্বোচ্চ ফলাফলধারী আফরিনা হক শুরু থেকেই ছিলেন গবেষণামুখী। স্নাতকে ৩.৮৯ এবং স্নাতকোত্তরে ৩.৯২ পেয়ে অসাধারণ ফলাফল করা আফরিনা পূর্বের গবেষণা প্রকাশনা এবং রসায়নে আরও গবেষণার আগ্রহের কারণে এই আমন্ত্রণ পেয়েছেন।
আফরিনা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির শুরু থেকেই পড়াশোনা এবং গবেষণার প্রতি আগ্রহ ছিল। কুবি থেকেই আমার গবেষণার হাতেখড়ি। এখন বুয়েটে আল নকীব চৌধুরী স্যারের অধীনে গবেষণা করছি। তিনিই আমাকে এই ইভেন্টে আবেদন করতে বলেছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘স্যার যে আমাকে এটার জন্য যোগ্য ভেবেছেন তাতেই আমি আনন্দিত ছিলাম। শেষ পর্যন্ত লিন্ড্যাও নোবেল লরিয়েট কমিটি থেকে যখন আমন্ত্রণও পেয়ে গেলাম তখন সেটা আমার কাছে কতো বড় ব্যাপার তা শব্দ দিয়ে বোঝানো সম্ভব না।’
লিন্ড্যাও নোবেল লরিয়েট মিটিংয়ের এবারের মিলনমেলায় বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আফরিনার মতো এমন তরুণ ও যোগ্য এক হাজার রসায়ন গবেষক যোগদানের সুযোগ পাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: প্রবাসীদের আরও বেশি বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
এই সুযোগ পেতে কী কী মাপকাঠি পূর্ণ করতে হয়েছে জানতে চাইলে আফরিনা বলেন, ‘তারা মূলত দেখেছে একাডেমিক ফলাফল কেমন, গবেষণার দক্ষতা এবং আগ্রহ। আমি এগুলো দিয়েই আবেদন করেছিলাম।’
আফরিনা বলেন, ‘আমি আমার শিক্ষকদের কাছে কৃতজ্ঞ। তারাই আমাকে গড়েছেন আর আমি আমার পরিশ্রম করেছি, পড়াশোনা করেছি। তারই ফলাফল পেলাম।’
আফরিনার এমন সাফল্যে খুশি তার শিক্ষকেরাও। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো. সৈয়দুর রহমান বলেন, ‘আফরিনা শুরু থেকেই মেধাবী ও পরিশ্রমী ছিল। গবেষণার প্রতি ঝোঁক ছিল। লিন্ড্যাও নোবেল লরিয়েটে উদীয়মান রসায়নবিদ হিসেবে তার এই আমন্ত্রণ পাওয়ার সংবাদ বিভাগের জন্য খুবই গর্বের। এমন শিক্ষার্থীরাই বিভাগের সম্পদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের তারকা। আমরা তার আরও সাফল্য প্রত্যাশা করি।’
উল্লেখ্য, লিন্ড্যাও নোবেল লরিয়েট মিটিংগুলো শরীরবিদ্যা, চিকিৎসা, পদার্থবিদ্যা এবং রসায়ন এই তিনটি প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কারের বিষয়ে ফোকাস করে হয়ে থাকে৷ প্রতিটি লিন্ড্যাও মিটিং বিভিন্ন সেশন, বক্তৃতা, আলোচনা, মাস্টার ক্লাস, প্যানেল ডিসকাশন এবং নোবেল বিজয়ীদের সাথে তরুণ বিজ্ঞানীদের জ্ঞান, ধারণা এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়কে কেন্দ্র করে সাজানো হয়।
আরও পড়ুন: বিশ্বকে জলবায়ু অভিবাসীদের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
৩ বছর আগে
কুমিল্লায় গাড়ির ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
জেলার চৌদ্দগ্রামে গাড়ির ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।
৪ বছর আগে
প্রবাসী ভাইকে বাড়ি আনার পথে স্বামীসহ বোন নিহত
প্রবাসী ভাইকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্বামীসহ বোন নিহত হয়েছেন। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় এ দুর্ঘটনায় প্রাইভেট কারের চালকসহ আহত হয়েছেন আরো দুজন।
৪ বছর আগে