দর্শন
দেশের উন্নয়ন দর্শনের মূল কারিগর বঙ্গবন্ধু: পলক
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, দেশের উন্নয়ন দর্শনের মূল কারিগর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ২৯তম অধিবেশনে প্রথম বাংলায় ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু।
তিনি বলেন, সেই ভাষণে- বঙ্গবন্ধু বিশ্বের সব নেতৃত্বের প্রতি সব সম্পদ, কারিগরি জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সবার জন্য সঠিক ও সমান ব্যবহার এবং প্রয়োগের মাধ্যমে মানবিক বিশ্ব প্রতিষ্ঠা করার উপর আহ্বান জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: দেশের প্রতিটি ডায়াবেটিস হাসপাতাল ইন্টারনেটের আওতায় আসবে: পলক
রবিবার (১৯ নভেম্বর) আগারগাঁওস্থ আইসিটি টাওয়ারে উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি (আইডিয়া) ফ্লোরে এটুআই এর উদ্যোগে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে অংশীজনদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় উপদেশ, পরামর্শ, সুপারিশ, লিখিত ও মৌখিক প্রস্তাব প্রদান শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, বঙ্গবন্ধুর দর্শন অনুসরণ করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে এবং প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্ত্বাবধানে দক্ষ মানবসম্পদ, সবার জন্য সুলভমূল্যে ইন্টারনেট, প্রযুক্তিনির্ভর সরকারি সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া এবং আইসিটি শিল্পের বিকাশ ঘটানো; এই চারটি মূল লক্ষ্যে সামনে রেখে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে আমরা সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২ ডিসেম্বর ২০২২ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ এ চারটি স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে আনুষ্ঠানিকভাবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা দেন। স্মার্ট বাংলাদেশের এ চার পিলার নির্ধারণ করে দিয়েছেন আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ কেমন হবে, তা এ চার স্তম্ভের কথা চিন্তা করলেই বোঝা যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশে একজন স্মার্ট নাগরিক হবে- বুদ্ধিদীপ্ত, দক্ষ, উদ্ভাবনী, সৃজনশীল, প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক চেতনাসম্পন্ন দেশপ্রেমিক এবং সমস্যা সমাধানে উদ্ভাবনী মানসিকতা সম্পন্ন।
তিনি আরও বলেন, স্মার্ট অর্থনীতি হবে ক্যাশলেস, সার্কুলার, উদ্যোক্তামুখী, গবেষণা ও উদ্ভাবন নির্ভর এবং জ্ঞানভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। স্মার্ট সরকার হবে নাগরিককেন্দ্রিক, আরও বেশি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট সরকার-ব্যবস্থায় সব ধরনের সেবা প্রদান ও কার্যসম্পাদন করা হবে- কাগজবিহীন, ডেটানির্ভর, আন্তঃসংযুক্ত, আন্তঃচালিত, সমন্বিত এবং স্বয়ংক্রিয়, অর্থাৎ যখন যেখানে দরকার, সেখানেই থাকবে সরকার এবং স্মার্ট সমাজব্যবস্থা হবে সব ধরনের বৈষম্যবিহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক।
তিনি আরও বলেন, ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ হবে সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ ও সহনশীল, সমাজ হবে উন্নত, নিরাপদ ও টেকসই।
আরও পড়ুন: টোকিওতে জাতীয় সংবিধান দিবস উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সেমিনার
ইমাম খোমেইনী ছিলেন মুসলিম বিশ্বের অমূল্য সম্পদ: ইরানি রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মাদ রেজা নাফার বলেছেন, ইরানের ইসলামী বিপ্লবের রূপকার ইমাম খোমেইনী ছিলেন মুসলিম বিশ্বের এক অনন্য ব্যক্তিত্ব, যার ব্যক্তিত্বের প্রভাব কেবল ইরানের ভৌগোলিক গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ ছিল না; বরং তিনি ছিলেন গোটা মানবজাতি এবং মুসলিম বিশ্বের অমূল্য সম্পদ।
বৃহস্পতিবার বিকালে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের রূপকার ইমাম খোমেইনীর ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ইমাম খোমেইনী ছিলেন একজন পরিপূর্ণ মানুষ, যিনি ধর্ম, দর্শন, নৈতিকতা, ইরফান এবং রাজনীতির সংমিশ্রণ ঘটিয়ে এমন এক রসায়ন তৈরি করেছিলেন যার স্বাদ মানুষ এর আগে কখনই পায়নি। ইমাম খোমেইনী ছিলেন তৎকালীন সময়ের অন্যতম অনন্য ব্যক্তিত্ব, যিনি বস্তুবাদ ও ধর্মবিদ্বেষের যুগে ধর্মের পুনর্জাগরণের পতাকা উড্ডয়ন করেছিলেন এবং বিশ্বব্যাপী এতটাই আলোড়ন তৈরি করেছিলেন যে, এই শতাব্দীর সাথে তার পবিত্র নামটিই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে।
অনুষ্ঠানে সাবেক নির্বাচন কমিশনার এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ইরানের বিপ্লব ছিল একটি নজিরবিহীন বিপ্লব, ইসলামের নামে এ ধরনের বিপ্লব আর দ্বিতীয়টি হয় নি। এ বিপ্লব সমগ্র বিশ্বের জন্য ছিল একটি বিস্ময়। যদিও ইরান একটি মুসলিম প্রধান দেশ ছিল, কিন্তু এর সংস্কৃতি হয়ে গিয়েছিল ইউরোপ-আমেরিকার মতো। ইমাম খোমেইনী ইসলামী বিপ্লবের মাধ্যমে এতে আমূল পরিবর্তন সাধন করেন। আর এতে জনগণের সমর্থন ও সহযোগিতাও ছিল ব্যাপক।
তিনি বলেন, ইমাম খোমেইনী অত্যন্ত জ্ঞানী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ছিলেন উদার দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী। ইসলামী বিপ্লবের পর ইরানে ইহুদি, খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের স্বাধীনভাবে ধর্মপালন এর প্রমাণ বহন করে। তিনি বলেছিলেন, আমরা ইহুদিদের বিরোধী নই, তবে আমরা যায়নবাদীদের বিরোধী।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ উদীয়মান বড় অর্থনৈতিক পরাশক্তি: ইরানের রাষ্ট্রদূত
বর্তমান ইরানের কথা উল্লেখ করে সাখাওয়াত বলেন, ইরান একটি আধুনিক ও শক্তিশালী রাষ্ট্র। ইরানের অবকাঠামোগত অগ্রগতি ইউরোপের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। ইরান একটি পরিচ্ছন্ন দেশ। একটি দেশের উন্নতির জন্য যা প্রয়োজন সকল কিছু ইরানে বিদ্যমান।
ড. আব্দুল কুদ্দুস বাদশার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশে অবস্থিত ইরান দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর ড. সাইয়্যেদ হাসান সেহাত।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান, খুলনায় অবস্থিত ইসলামিক শিক্ষা কেন্দ্রের প্রিন্সিপাল হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ ইব্রাহীম খলিল রাজাভী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবু মূসা মো. আরিফ বিল্লাহ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ হুজ্জাতুল ইসলাম সাইয়্যেদ আফতাব হোসাইন নাকাভী এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. নূরে আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন।