কান চলচ্চিত্র উৎসব
শুধু ট্রেলার দেখে সিনেমা নিয়ে মন্তব্য করতে পারবেন না: শ্যাম বেনেগাল
কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রকাশিত`মুজিব‘ সিনেমার ট্রেলার নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলমান সমালোচনার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সিনেমাটির বিখ্যাত ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক শ্যাম বেনেগাল।
শ্যাম বেনেগাল বলেছেন, কিছু লোক কেনো বিরক্ত হচ্ছেন তা অনুমান করাটা তার পক্ষে খুব কঠিন এবং শুধুমাত্র ট্রেলার দেখে কেউ মন্তব্য করতে পারে না।
দ্য টেলিগ্রাফকে তিনি বলেছেন,`আপনি ৯০ সেকেন্ডের ট্রেলার দেখে একটি সিনেমা নিয়ে মন্তব্য করতে পারবেন না। আপনি কেবল ট্রেলার নিয়ে মন্তব্য করতে পারেন।‘
আরও পড়ুন: কান উৎসবে 'মুজিব' বায়োপিকের ট্রেলার উদ্বোধন
বৃহস্পতিবার ফেস্টিভাল দি কানে মুক্তি পেয়েছে ‘মুজিব-দ্য মেকিং অফ আ নেশন’-এর ট্রেলার। ২০২২ সালের শেষ নাগাদ ছবির কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চলচ্চিত্র নির্মাতা বলেন, কানে উপস্থাপনাটি খুব ভালো হয়েছে।
এর আগে বেঙ্গল আইকন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে নিয়ে নির্মিত সিনেমায় নানা বিতর্কের জন্ম দেয়া এ পরিচালক জানিয়েছেন, তিনি এ সিনেমায় কোন বিতর্কের আগমনের পূর্বাভাস দেননি। ফিল্মের ট্রেলারে মুজিবকে একজন`নিবেদিত ফ্যামিলি ম্যান হিসাবে দেখানো হয়েছে।
শ্যাম বেনেগাল আওে বলেন, বিশ্ববাসী জানবে কীভাবে তিনি ফাঁসির মুখে অটল ছিলেন এবং কীভাবে তিনি একটি নিরস্ত্র জাতিকে সশস্ত্রে রূপান্তরিত করেছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এইরকম মহান মানুষের পুরো জীবনকে তিন ঘণ্টায় ফুটিয়ে তোলা সহজ নয় কিন্তু সিনেমার পুরো টিম দুর্দান্ত কাজ করেছে।
আরও পড়ুন: কানের রেড কার্পেটে হাঁটা ষোলকলা পূর্ণের মতো: আরিফিন শুভ
বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনার এই সিনেমাটির বাজেট ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি।
এক রেকর্ড বার্তায় বেনেগাল বলেছেন, `ট্রেলারটি প্রকাশিত হয়েছে এবং আমি আশা করি দর্শকরা এটির প্রশংসা করবেন।‘
তিনি আরও বলেন, এই সিনেমায় কাজ করাটা বিস্ময়কর এক যাত্রা ছিল কেননা আমি উভয় দেশের শিল্পী ও কলাকুশলীদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি।
বিখ্যাত এই পরিচালক বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মন্ত্রণালয়কে তাদের অপ্রতিরোধ্য সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ।
আরও পড়ুন: কান চলচ্চিত্র উৎসবে অনন্ত-বর্ষা
২ বছর আগে
‘মুজিব’-এর ট্রেইলার নিয়ে প্রথম কান যাত্রায় আরিফিন শুভ
কান চলচ্চিত্র উৎসবের দিকে চোখ থাকে বিশ্বের সব সিনেমাপ্রেমীদের। প্রিয় তারকা কোন সিনেমা নিয়ে হাজির হচ্ছেন সেটিই যেন সকল আলোচনার কেন্দ্র। প্রথমবার এমনই এক খবরের শিরোনামে এলেন চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ।
ফ্রান্সে মঙ্গলবার (১৭ মে) পর্দা উঠবে ৭৫তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের। এবারের আয়োজনে ‘মুজিব’ সিনেমার ট্রেইলার নিয়ে হাজির হবেন আরিফিন শুভ। আর এ উদ্দেশ্যে আগামীকাল ঢাকা ছাড়বেন এই তারকা।
উৎসবের বাণিজ্যিক শাখা মার্শে দ্যু ফিল্মে ১৯ মে কান সৈকতে ভারতীয় প্যাভিলিয়নে ‘মুজিব’ সিনেমার ট্রেইলার প্রদর্শন করা হবে।
আরও পড়ুন: কান চলচ্চিত্র উৎসবে অনন্ত-বর্ষা
বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই উৎসবে প্রথম অংশ নেয়া প্রসঙ্গে আরিফিন শুভ বলেন, ‘অবশ্যই আনন্দের একটি খবর আমার জন্য। স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। এমন একটি সিনেমার কারণে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছি সেটি অনেক সম্মানের। আমার ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তাদের জন্য আজকের সবকিছু। সবাইকে ভালোবাসা।’
জানা গেছে, কান যাত্রায় আরিফিন শুভর সঙ্গে আরও যেতে পারেন নুসরাত ইমরোজ তিশা এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এছাড়া ভারতের তথ্যমন্ত্রীসহ দেশটি থেকে সিনেমাটির টিমের কয়েক জন উপস্থিত থাকবেন।
বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ প্রযোজনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীনির্ভর সিনেমা ‘মুজিব’। এটি পরিচালনা করেছেন ভারতের নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল। আর প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ।
আরও পড়ুন: ‘শান’ দেখতে তারার মেলা
২ বছর আগে
কান চলচ্চিত্র উৎসবে অনন্ত-বর্ষা
বিশ্ব চলচ্চিত্র জগতে অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ আয়োজন ‘কান চলচ্চিত্র উৎসব’। যার ৭৫তম আসর বসবে ১৭ মে (মঙ্গলবার)। প্রতিবারের আয়োজনেই বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশের তারকা বা সিনেমার অংশগ্রহণ থাকে এই আসরে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার এই চলচ্চিত্র উৎসবে থাকবেন চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল ও চিত্রনায়িকা আফিয়া নুসরাত বর্ষা।
কান চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণের খবর অনন্ত জলিল নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্টের মাধ্যমে সবাইকে জানান।
তিনি ভিডিওতে বলেন, ‘আমরা কান উৎসবে যাচ্ছি। দোয়া করবেন আমাদের জন্য। সেখানে আমরা ‘দিন- দ্য ডে’ ও ‘নেত্রী -দ্যা লিডার’ সিনেমার ট্রেলার প্রদর্শন করব। এছাড়া বিভিন্ন দেশের প্রযোজক ও সাংবাদিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে। আমাদের ‘দিন -দ্য ডে’ সিনেমা কোরবানির ঈদে মুক্তি পাবে।’
ভিডিওতে বর্ষা বলেন, ‘এবারের কান উৎসবে আমরা দুজনই যাচ্ছি। ‘দিন- দ্য ডে’ নিয়ে আমাদের অনেক আশা। অনেককিছু করতে চাই সিনেমাটি নিয়ে। সবাই দোয়া করবেন।’
কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৫তম আসর চলবে ২৮ মে পর্যন্ত। এবারের আসরের উদ্বোধনী সিনেমা মিশেল আজানাভিসুস পরিচালিত ‘ফাইনাল কাট’।
আরও পড়ুন: ‘শান’ দেখতে তারার মেলা
শুরুতে ভয় লাগছিল, এখন আনন্দ হচ্ছে: পূজা চেরি
২ বছর আগে
৩০ ডিসেম্বর থেকে ‘চরকি’তে দেখা যাবে ‘রেহেনা মরিয়ম নূর’
চলতি বছরের সবচেয়ে আলোচিত সিনেমা ‘রেহেনা মরিয়ম নূর’ ৩০ ডিসেম্বর থেকে দেশীয় ওটিটি (ওভার দ্যা টপ) প্ল্যাটফর্ম ‘চরকি’তে উন্মুক্ত করা হবে। রবিবার রাজধানীর এক পাঁচ তারকা হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানানো হয়।
‘চরকি’র প্রধান পরিচালক রেদওয়ান রনি বলেন, ‘শুরু থেকে আমাদের চাওয়া “চরকি” হবে বাংলা কনটেন্টের রাজধানী। সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি। এবার আমাদের সঙ্গে যুক্ত হলো “রেহেনা মরিয়ম নূর”। এটা আমাদের জন্য অনেক গর্বের বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘রেহেনা মরিয়ম নূর’ সিনেমা হলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। প্রত্যাশা করি আমাদের প্ল্যাটফর্মেও এটি ভালো সাড়া ফেলবে।
‘রেহেনা মরিয়ম নূর’-এর মধ্য দিয়ে কান চলচ্চিত্র উৎসবের অফিশিয়াল সিলেকশনে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশের কোনো সিনেমা। শুধু তাই নয় বিদেশের একাধিক উৎসবে সিনেমাটি দেখানো হয়। এছাড়া ২০২২ সালের অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস অস্কারের ৯৪তম আসরের বেস্ট ইন্টারন্যাশনাল ফিচার ফিল্ম বিভাগে বাংলাদেশ থেকে মনোনীত হয়েছে নির্মাতা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের ‘রেহেনা মরিয়ম নূর’।
আরও পড়ুন: নতুন বছরে ঢাকার সিনেমায় নাসিরুদ্দিন শাহ
সিনেমাটির নির্বাহী প্রযোজক এহসানুল হক বাবু বলেন, ‘আমরাও চেয়েছিলাম সিনেমাটি দেশের কোনো প্ল্যাটফর্মে দেখা যাক। সেই চিন্তা থেকে “চরকি”র সঙ্গে যুক্ত হওয়া। যারা হলে গিয়ে সিনেমাটি দেখতে পারেননি তারা এবার ঘরে বসে দেখে নিতে পারবেন।’
‘রেহেনা মরিয়ম নূর’ এর নায়িকা আজমেরি হক বাঁধন বলেন, ‘মাঝে যখন ঘরবন্দি ছিলাম এবং ওটিটিতে বিভিন্ন কনটেন্ট দেখতাম, তখন মনে হতো আমাদের দেশে এমন কোনো প্ল্যাটফর্ম নেই কেন। “চরকি” সেই প্রত্যাশা পূরণ করেছে। তাদের প্রতিটি কনটেন্ট দেখার মতো। তারা যে উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছে, সেটি প্রথম থেকে ধরে রাখার চেষ্টা করেছে। আমাদের উচিত দেশীয় প্ল্যাটফর্মগুলো ও কনটেন্টগুলোকে সাপোর্ট করা।’
এর আগে ১২ নভেম্বর সারাদেশে মুক্তি পায় ‘রেহেনা মরিয়ম নূর’। বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক রেহানা মরিয়ম নূরকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি।
আরও পড়ুন: সংকটের মধ্যেও ২০২১ সালে সরগম ঢালিউড
৩ বছর আগে
বড় পর্দায় তাহসান-বাঁধন জুটির ‘অ্যা ব্লেসড ম্যান’
দর্শকদের চাহিদা ও গল্পের চরিত্র অনুযায়ী চলচ্চিত্র নির্মাতাগণ বিভিন্ন ভাবে সাজিয়ে থাকেন তাদের সিনেমার অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সন্নিবেশ। কখনও মূল চরিত্রে নতুন নায়ক-নায়িকা দিয়ে চমকে দেন দর্শকদের। আবার কখনও একসাথে জোট বাঁধেননি এমন সংবেদনশীল তারকাদের ছবির শ্রেষ্ঠাংশে এনেও হৈচৈ ফেলে দেন। ঠিক এমনটাই হতে যাচ্ছে ‘অ্যা ব্লেসড ম্যান’ শিরোনামের সিনেমাটির বেলায়। প্রথমবারের মত বড় পর্দায় দেখা যাবে তাহসান-বাঁধন জুটিকে। চলুন, চলচ্চিত্রটির ব্যাপারে কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাক।
মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলারধর্মী চলচ্চিত্র ‘অ্যা ব্লেসড ম্যান’
আধুনিক রূপকথার কাহিনীকে উপজীব্য করে এগিয়ে যাবে সিনেমাটির চিত্রনাট্য। এই আলোকে দর্শককে উৎকন্ঠায় ভরিয়ে দিতে নাটকীয় ভঙ্গিমায় সংযোজন ঘটবে কিছু মনস্তাত্ত্বিক উপকরণ। সর্বসাকূল্যে শেষ দৃশ্য পরিবেশনের পরেও রেশ রেখে যাবার উদ্দেশ্য নিয়ে অতিযত্নে বোনা হয়েছে এই সিনেমার গল্প।
আরও পড়ুন: ‘জয় ভীম’: হলিউডকে পেছনে ফেলে আইএমডিবি রেটিং-এ শীর্ষে প্রথম ভারতীয় চলচ্চিত্র
অ্যা ব্লেসড ম্যান সৃষ্টির নেপথ্যে যারা
ধরাবাঁধা বাংলা সিনেমার গন্ডি পেরিয়ে ‘দ্যা লাস্ট ঠাকুর’ নামের জনপ্রিয় চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছিলো ২০০৮ সালে। তার প্রায় এক যুগ পর দ্বিতীয়বার পরিচালনায় নামছেন ২০১৮ এর ‘হাসিনা: অ্যা ডটার’স টেল’ ডকু চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রাহক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ চলচ্চিত্র নির্দেশক সাদিক আহমেদ। তিনি সিনেমা বানানোর কাজ শুরু করেন শর্টফিল্ম ‘তাঞ্জু মিঞা’ নির্মাণের মাধ্যমে ২০০৬ সালে।
‘অ্যা ব্লেসড ম্যান’-এর প্রযোজনায় থাকছে অ্যাপল বক্স। ২০২২ এর জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে ছবিটি শ্যূটিং-এর সেটে যাবে। অবশ্য গত দুই মাস ধরে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মাঝে চলছে তাদের নিজ নিজ ভূমিকার অনুশীলন। কারণ সাদিকের প্রথম ছবির মতই এটাও অন্যান্য আর দশটা বাংলা সিনেমা থেকে আলাদা। ছবিটির নায়ক সঙ্গীতশিল্পী তাহসানের ভাষায়, ‘বাংলা সিনেমা অনেকভাবে আমরা দেখেছি, কিন্তু সাদিক আহমেদের দেখার ভঙ্গিমা একেবারে আলাদা’।
আরও পড়ুন: সিয়াম-পূজা জুটি ও তাসকিনের অ্যাকশন থ্রিলার ‘শান’ দিয়ে শুরু হচ্ছে নতুন বছর
চিত্রনায়িকা বাঁধন অ্যাপল বক্স মুভি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি মুম্বাই প্রোডাকশ হাউজের সাথে তুলনা করেছেন। আর সিনেমার গল্পের ব্যাপারে বলতে গিয়ে বলেন, ‘এটা আসলে কোনো নায়ক-নায়িকা নির্ভর গল্প নয়। এ ধরনের গল্প এখনও আমাদের দেশের পর্দায় উঠে আসেনি।’
৩ বছর আগে
অ্যাপসা’য় সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন পেলেন বাঁধন
‘রেহানা মরিয়ম নূর’ খ্যাত জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন ১৪তম এশিয়া প্যাসিফিক স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ডের (অ্যাপসা) ‘সেরা অভিনেত্রী’ বিভাগের জন্য মনোনীত হয়েছেন।
বুধবার অ্যাপসার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, আসন্ন সংস্করণের পুরস্কারের জন্য বাঁধনকে বিশেষ বিভাগে মনোনীত করা হয়েছে, যিনি আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের দ্বিতীয় পরিচালিত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ -এ অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত হন।
আরও পড়ুন: স্কুইড গেম: বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা নেটফ্লিক্স অরিজিনাল কোরিয়ান ওয়েব সিরিজ
তালিকায় বাঁধনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আছেন আলেনা ওয়াইভি, ভ্যালেন্টিনা রোমানোভা সিসকাইরি, লিয়া পার্সেল ও এসি ডেভিস।
আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, মিশর, হংকং, ভারত, ইরাক, ইরান, ইসরাইল, জাপান, লেবানন, নিউজিল্যান্ড, কাতার, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়া, সৌদি আরব, থাইল্যান্ড, তুরস্ক এবং প্রথমবারের মতো ভিয়েতনাম সহ এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ২৫টি দেশ অ্যাপসা এর ১৪তম সংস্করণে মনোনয়ন পেয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশিষ্ট নাট্যকার ড. ইনামুল হক আর নেই
আগামী ১১ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার গোল্ড কোস্টের সাফার প্যারাডাইস শহরের হোম অব দ্যা আর্টস -এ ১৪ তম অ্যাপসা অনুষ্ঠানের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে যা সারা বিশ্বে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
অ্যাপসা ওয়েবসাইটে বাঁধনের প্রশংসা বলা হয়েছে, ‘আজমেরী হক বাঁধন বাংলাদেশের একজন সুপরিচিত মডেল এবং টেলিভিশন অভিনেত্রী যার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল জনপ্রিয় একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় (লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার-২০০৬) রানার আপ পুরস্কারটি জেতার পর। রেহানা মরিয়ম নূর তার প্রথম চলচ্চিত্র যেখানে তিনি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন এবং এটি কান চলচ্চিত্র উৎসব-এ নির্বাচিত হওয়া প্রথম বাংলাদেশি চলচ্চিত্র।’
আরও পড়ুন: ‘প্রাণবিক বন্ধু’ তালিকায় দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান
৩ বছর আগে
রেহানা মরিয়ম নূর: কানের সম্মানজনক তালিকায় বাংলাদেশি চলচ্চিত্র
প্রথম বাংলাদেশি চলচ্চিত্র হিসেবে কান-এর ৭৪তম আসরে সম্মানজনক জায়গা পেলো রেহানা মরিয়ম নূর। আগামী ৬ থেকে ১৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কান চলচ্চিত্র উৎসব। আর তাই মহাসমারোহে গত ৩ জুন এক যোগে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট সহ কানের সবগুলো সামাজিক মাধ্যম থেকে ঘোষণা করা হয় নির্বাচিত চলচ্চিত্রগুলোর নাম।
কানের আন সার্তেইন রিগার্দ বিভাগের ১৮টি ছবির তালিকায় সহমহিমায় উঠে এসেছে বাংলাদেশের রেহানা মরিয়ম নূর-এর নাম। বাংলাদেশের সিনেমা শিল্পে এ এক বিশাল অর্জন। চলুন, নতুন এই চলচ্চিত্রটি ও এর অর্জনের ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেই।
রেহানা মরিয়ম নূর চলচ্চিত্রের পটভূমি
একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষিকা ৩৭ বছর বয়সী রেহানা মরিয়ম নূর আর দশজনের মতোই তার কর্ম ও সংসার জীবনকে শত ঝামেলার মাঝেও চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তার জীবনটা হঠাৎ বদলে যেতে শুরু করে যখন একদিন সন্ধ্যায় কলেজ থেকে বেরোনোর সময় তিনি কলেজের এক ছাত্রীকে জড়িয়ে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দেখে ফেলেন। এরপর থেকে তিনি এক ছাত্রীর পক্ষ নিয়ে সহকর্মী এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে দাড়িয়ে সেই ঘটনার প্রতিবাদ করেন। এদিকে স্কুলে তার ৬ বছরের মেয়ে অপ্রীতিকর আচরণের সম্মুখীন হয়। এমন প্রতিকূল অবস্থায় রেহানা চিরাচরিত নিয়মের বেড়াজাল কাটিয়ে সেই ছাত্রী ও তার সন্তানের জন্য ন্যায় বিচার সুনিশ্চিত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন।
চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ সাদ
চিত্রনাট্য লেখা এবং সিনেমায় রূপ দান দুটোই করেছেন তরুণ সিনেমা নির্মাতা আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ সাদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে পড়াকালীন টিভি নাটকের চিত্রনাট্য লেখা শুরু করেন। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি শর্টফিল্মও নির্মাণ করেন।
নির্মাতা ওয়াহিদ তারেকের ‘আলগা নোঙর’ চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লিখেছেন সাদ। পূর্বে ২০০৯ সালে ওয়াহিদ তারেক পরিচালনা করেছেন সাদের লেখা ‘অগাস্টে লেখা গল্পসমগ্র’, ‘লিটল অ্যাঞ্জেল আই অ্যাম ডায়িং’ এবং ‘একটি যথাযথ মৃত্যু’সহ বেশ কিছু টিভি নাটক।
তার প্রথম ফিচার ফিল্ম ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’ (২০১৬) ২৭ তম সিঙ্গাপুর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা পরিচালক এবং সেরা পারফরম্যান্সের (মোস্তফা মনোয়ার) জন্য সিলভার স্ক্রিন পুরষ্কার লাভ করে। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব রটারড্যামে (আইএফএফআর) এটি প্রথম চলচ্চিত্র হিসেবে সম্পূর্ণরূপে ফিচার করা হলে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র পাড়ায় বেশ সাড়া পড়ে যায়। এছাড়া ২০১৭ সালে ছবিটি ফাইভ ফ্লেভার এশিয়ান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে মনোনয়ন পায়। সাদাকালো পর্দার এই ছবিতে একাধিক ভিগনেটের মাধ্যমে ঢাকা শহর ছেড়ে যাবার চেষ্টায় এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির যন্ত্রণার চিত্র তুলে ধরা হয়।
আরও পড়ুন: বিল গেটসের সাবেক প্রেমিকা ও বিলিয়ন ডলার মূল্যের প্রেমকাহিনী
চলচ্চিত্রের মানুষ হওয়া সত্ত্বেও সাদ লো-প্রোফাইল থাকতেই বেশী পছন্দ করেন। তাই ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’ মুক্তির বছর ২০১৯ সালে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ নির্মাণে হাত দিয়েছিলেন অনেকটা গোপনেই। দেড় বছরের মধ্যে শেষ করেছেন ছবির শুটিং-এর কাজ। এমনকি ছবির নাম, প্লট, নায়ক-নায়িকা নিয়েও মিডিয়ার সামনে তেমন কিছুই প্রকাশ করেন নি।
অবশেষে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ তৈরি হয় পোটোকল ও মেট্রো ভিডিওর ব্যানারে। ছবিটির প্রযোজনায় আছেন সিঙ্গাপুরের প্রযোজক জেরেমি চুয়া ও সহ-প্রযোজনায় সেন্সমেকার্স প্রডাকশনের পাশাপাশি আছেন রাজীব মহাজন, আদনান হাবিব ও সাঈদুল হক খন্দকার। নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে আছেন এহসানুল হক বাবু। এছাড়া চিত্রগ্রহণে তুহিন তমিজুল, পোশাক পরিকল্পনায় নাবিলা হক, শিল্প নির্দেশনায় মাসুম মেহেদি এবং সাউন্ড ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেছেন শৈব তালুকদার। ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ ছবির আন্তর্জাতিক পরিবেশনার জন্য পরিচালক-প্রযোজকের সঙ্গে ইতোমধ্যেই চুক্তিবদ্ধ হয়েছে জার্মান ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান ফিল্মস বুটিক।
রেহানা মরিয়ম নূর নাম ভূমিকায় বাঁধন
রেহানা মরিয়ম নূর ছবির প্রধান চরিত্রে কাজ করেছেন লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার ২০০৬ এর রানার আপ আজমেরি হক বাঁধন। ছোট পর্দায় বেশী নিয়মিত এই অভিনেত্রী ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ‘নিঝুম অরণ্যে’ (২০১০) নামক একটি মাত্র সিনেমায় কাজ করেছেন। মাঝে মিডিয়া থেকে প্রায় দেড় বছরের একটা বিরতি নিয়ে এই সিনেমায় কাজ শুরু করেন বাঁধন। অতঃপর এ সিনেমায় কাজ করাটা তার ক্যারিয়ারের সব থেকে ভালো সিদ্ধান্ত ছিলো বলে তিনি মনে করেন। সহকর্মী থেকে শুরু করে সাংবাদিক সব মহল থেকেই বাঁধনসহ সব কলাকুশলীরা অভিনন্দিত হয়ে আসছেন তাদের এই অসামান্য অর্জনের জন্য।
আরও পড়ুন: ২০২১ সালের অন্যরকম ৭টি বাংলা থ্রিলার সিনেমা
১ ঘণ্টা ৪৭ মিনিটের এই সিনেমাটিতে বাঁধন ছাড়াও আরও যারা যারা কাজ করেছেন তারা হলেন সাবেরী আলম, আফিয়া জাহিন জায়মা, আফিয়া তাবাসসুম বর্ণ, কাজী সামি হাসান, ইয়াসির আল হক, জোপারি লুই, ফারজানা বীথি, জাহেদ চৌধুরী মিঠু, খুশিয়ারা খুশবু অনি, অভ্রদিত চৌধুরী প্রমুখ।
কানের আন সার্তেইন রিগার্দ
কান চলচ্চিত্র উৎসবের অফিসিয়াল সিলেকশনের চারটি বিভাগের মধ্যে প্রতিযোগিতা বিভাগের পরের বিভাগটিই ‘আন সার্তেইন রিগাদ’। প্রতিযোগিতা বিভাগের পর এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি নিয়ে মৌলিক ও ভিন্নধর্মী চলচ্চিত্রগুলোর মুলত এ বিভাগে স্থান পেয়ে থাকে। বিশ্বজুড়ে প্রতিভাবান ও প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের লাইমলাইটে নিয়ে আসার লক্ষ্যে ১৯৭৮ সালে বিভাগটি চালু করা হয়। আন সার্তেইন রিগাদ ফরাসী শব্দ যার অর্থ হলো ‘অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে’। সুতরাং চলচ্চিত্র বিচারের ক্ষেত্রে এখানে চিরাচরিত নিয়মের বাইরের কাজগুলোকে বেশী মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে।
প্রতি বছর দক্ষিণ ফ্রান্সের সাগর তীরবর্তী শহর কান-এর পালে দ্যা ফেস্টিভাল ভবনে উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণত এই ভবনটির স্যালে ডিবাসি প্রেক্ষাগৃহে আন সার্তেইন রিগার্দ বিভাগের ছবিগুলোর প্রদর্শনী হয়ে থাকে।
এ বছর বাংলাদেশ সহ মোট ১৫টি দেশের ১৮টি ছবি নির্বাচিত হয়েছে বিভাগটিতে। গত ৩ জুন প্যারিসের ইউজিসি নর্ম্যান্ডি হলে অন্যান্য সিনেমাগুলোর সাথে ঘোষণা করা হয়েছে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’-এর নাম। সেখান থেকেই সরাসরি অনলাইন মাধ্যমগুলোতে সম্প্রচার করা হয়। আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন কান উৎসবের জেনারেল প্রতিনিধি থিয়েরি ফ্রেমো এবং সভাপতি পিয়েরে লেস্কিউর। উৎসবের শেষ দিন ১৭ জুলাই বিচারকদের সভাপতি স্পাইক লি স্বর্ণ পাম বিজয়ী চলচ্চিত্রের নাম ঘোষণা করবেন।
বিশ্বমানের চলচ্চিত্র নির্মাণে একটি বড় পদক্ষেপ
এর আগে প্রথমবারের মত কান চলচ্চিত্র উৎসবে নাম লেখায় প্রয়াত নির্মাতা তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’ ছবিটি। ২০০২ সালে ৫৫তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের প্যারালাল বিভাগ ডিরেক্টর’স ফোর্টনাইটে নির্বাচিত হয়েছিলো এটি। এছাড়া সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র সমালোচক (ফিপ্রেস্কি) পুরষ্কার অর্জন করে।
আর এবারে আন সার্তেইন রিগার্দ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বড় এক ধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। এই অর্জন এখন সিনেমাটির পোস্টারেও সংযুক্ত হবে এবং সর্বসাকুল্যে প্রতিটি প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের মান বহন করবে। সর্বপরি এটাই প্রমাণিত হবে যে, বিশ্বমানের চলচ্চিত্র নির্মাণ এখন বাংলাদেশেও সম্ভব।
আরও পড়ুন: সন্তানদের অভিভাবকত্ব নিয়ে আবারও আলোচনায় ‘ব্র্যাঞ্জেলিনা’ জুটি
পূর্বে যদিও বেশ কিছু বাংলা সিনেমা ও নির্দেশক কানসহ আরো মর্যাদাপূর্ণ জায়গায় বাংলা চলচ্চিত্রকে সগর্বে তুলে ধরেছে। কিন্তু বাংলাদেশ জন্ম নেয়ার পর বাংলাদেশি নির্মাতাদের তৈরি বাংলা সিনেমার নাম করা হলে নিঃসন্দেহে উঠে আসবে তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’ এবং আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ সাদের ‘রেহানা মরিয়ম নূর’।
সাদের সিনেমা কানের অফিসিয়াল সিলেকশনে থাকার খবর পেয়ে বাংলাদেশের মিডিয়া জগতের বিভিন্ন স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ তাকে অভিনন্দন জানান।
শেষ কথা
আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ সাদ নির্মিত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ বাংলাদেশে সমসাময়িক একটি অবস্থাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত একটি সিনেমা। সমস্যার জটিলতার পাশাপাশি এর নিরূপণেরও একটি যথোপযুক্ত বার্তা দেয়ার এক সুনিপূণ প্রয়াস। কান চলচ্চিত্র উৎসবে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মধ্যে এধরনের রূপরেখা নিয়ে আরো কাজ করার উৎসাহ বাড়িয়ে দিচ্ছে। অতঃপর এই বিশাল অর্জন বিশ্বমানের সিনেমা নির্মাণের তাগিদে বাংলাদেশের তারুণ্য নির্ভর পরিশ্রমী দলের প্রয়োজনীয়তা জানান দিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ তরুণ নির্মাতাদের আরো বেশী এগিয়ে আসতে হবে চলচ্চিত্র নির্মাণে। তবেই তথাকথিত মুলধারার সিনেমার সীমানা পেরুনো সম্ভব।
৩ বছর আগে