সুশাসন
ইইউ ও বাংলাদেশ সুশাসনের মাধ্যমে পুষ্টি বৃদ্ধিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা কর্মসূচির অংশীদারদের সহযোগিতায় একটি উচ্চ-পর্যায়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রবিবার ঢাকার একটি হোটেলে সরকারি-বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণে ‘ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন অ্যান্ড দ্য গভর্নমেন্ট ইন পার্টনারশিপ ফর গুড নিউট্রিশন থ্রু গুড গভর্নেন্স’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
সকালের সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি উল্লেখ করেন যে কৃষি মন্ত্রণালয় একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং টেকসই কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, কৃষি বিপণনের আধুনিকীকরণ এবং নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের মাধ্যমে এটি অর্জনের লক্ষ্য রাখে।
বিকালের অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া।
তিনি বলেন, ‘পুষ্টি নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং নেতাদের সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দিয়ে সব ধরনের অপুষ্টির অবসান ঘটানো অপরিহার্য। এটি টেকসই, সহনশীল এবং পুষ্টি-সংবেদনশীল খাদ্য ব্যবস্থা ছাড়া অর্জন করা যাবে না।’
স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের কাউন্সেলর, টিম লিডার জুরেট স্মালস্কাইট মারভিল এবং সমাপনী বক্তব্য দেন বাংলাদেশে ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ এফএও কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত
উভয় ইইউ প্রতিনিধি ইভেন্ট চলাকালীন ভাগ করা অর্জনের ভিত্তিতে সারা বাংলাদেশে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
তারা গো-এনজিও, প্রাইভেট সেক্টর, জাতিসংঘের এজেন্সি এবং সিএসও-এর মাধ্যমে এফএনএস এর হস্তক্ষেপে সমর্থন এবং বিনিয়োগ অব্যাহত রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে।
এছাড়াও, খাদ্য পরিকল্পনা ও মনিটরিং ইউনিটের মহাপরিচালক, মমতাজ উদ্দিন এবং বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি কাউন্সিলের মহাপরিচালক, ড. শাহরিয়ার কবির বিভিন্নখাতে অংশীদারিত্বের গুরুত্ব এবং উপজাতীয় শাসন কাঠামোর সক্ষমতা বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসেন খান।
তিনটি প্যানেল সেশন নিয়ে ইভেন্টটি সাজানো হয়।
প্রথম প্যানেল অধিবেশন ছিল উৎপাদন থেকে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের ওপর। প্যানেলিস্টদের মধ্যে ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব (ওয়াহিদা আক্তার), খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (মো. ইসমাইল হোসেন এনডিসি), এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মো. আমিনুল ইসলাম)।
এটি পরিচালনা করেন পরিকল্পনা কমিশনের প্রাক্তন সদস্য ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ডক্টর সাত্তার মন্ডল।
দ্বিতীয় প্যানেল সেশনটি ছিল কীভাবে সামাজিক সুরক্ষা এবং শিক্ষার মাধ্যমে পুষ্টির ফলাফলকে সর্বাধিক করতে পারে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের নির্বাচন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও ইইউ’র সঙ্গে সংযুক্ত নয়: রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
প্যানেলের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মিসেস নাজমা মোবারেক, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিবরা মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী।
দ্বিতীয় অধিবেশনটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম।
তৃতীয় প্যানেল অধিবেশনের বিষয় ছিল পরিকল্পনা, বাজেট এবং বাস্তবায়ন জুড়ে পুষ্টির মূলধারা। প্যানেলিস্টদের মধ্যে রয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনের সচিব আব্দুল বাকী, স্বাস্থ্য পরিষেবা বিভাগ ড. মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মিসেস দিলরুবা শাহীনা এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আসরাফি আহমেদ এনডিসি।
অধিবেশনটি পরিচালনা করেন আইসিডিডিআর,বি -এর নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ।
বর্তমান খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা (এফএনএস) কর্মসূচি এফএনএস সেক্টরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং বাংলাদেশ সরকারের (জিওবি) মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সহযোগিতার অংশ।
আরও পড়ুন: উজরা জেয়ার সফর: রোহিঙ্গা, শ্রম, মানবাধিকার ও নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে
১ বছর আগে
পরিবেশ, সুশাসন ও মানবাধিকার পুরস্কার বিজয়ী বাংলাদেশিদের সংবর্ধনা দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত
পুরস্কার বিজয়ী বাংলাদেশিদের মধ্যে রয়েছেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম, রোজিনা ইসলাম, মোহাম্মদ নূর খান ‘লিটন’ এবং মিনহাজ চৌধুরী।
বর্তমান সময়ের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো সমাধানের কাজের স্বীকৃতি হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের পুরস্কার বিজয়ী বাংলাদেশিদের আজ সংবর্ধনা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
আরও পড়ুন: রাতারগুল ঘুরে দেখলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মিলার
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, ‘ঠিক কাজটি করার জন্য সাহস ও নিষ্ঠার সঙ্গে লড়াই করেছেন এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে একত্রিতভাবে এই বিজয় উদযাপন করতে পারা আমার জন্য সম্মানের।’
পুরস্কার বিজয়ীরা হলেন-
রিজওয়ানা হাসান: পরিবেশ ও মানবাধিকারের সুরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণ ও আন্দোলনের জন্য ২০২২ সালের ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অফ কারেজ এওয়ার্ড বিজয়ী হয়েছেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি একজন পরিবেশ আইনজীবী যিনি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে পরিবেশ সুরক্ষায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকে বন উজাড়, দূষণ, অনিয়ন্ত্রিত জাহাজ ভাঙ্গা এবং অবৈধ ভূমি উন্নয়নের বিরুদ্ধে মামলা করে জিতেছেন।
মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম: ২০২২ সালের ট্রাফিকিং ইন পারসনস রিপোর্ট হিরো স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার -এর কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসাবে তরিকুল ইসলাম মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিদের পক্ষে কথা বলেন। তিনি মানব পাচারের ঘটনা তদন্ত করা ও পাচারকারীদের বিচার করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের সামর্থ্য বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
রোজিনা ইসলাম: ২০২২ সালের অ্যান্টি-করাপশন চ্যাম্পিয়ন নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। একজন সাংবাদিক হিসেবে রোজিনা ইসলাম বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতি বিষয়ে সংবাদপত্রে তার অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করার সাহস ও দৃঢ়তা দেখিয়েছেন।
মোহাম্মদ নূর খান ( লিটন): তিনি ২০২৩ সালের হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার অ্যাওয়ার্ড জয়ী হয়েছেন। লিটন বাংলাদেশে মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা নথিভুক্ত করা ও জবাবদিহিতা তৈরিতে তার দশকব্যাপী লড়াইয়ে অতুলনীয় সাহসিকতা ও একাগ্রতা দেখিয়েছেন।
মিনহাজ চৌধুরী: ড্রিংকওয়েল নামের একটি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তিনি। কোম্পানিটি ২০২২ সালে জলবায়ু সহিষ্ণুতা বা অভিঘাতসহনশীলতা বিভাগে ইউএস সেক্রেটারি অব স্টেটের কর্পোরেট অ্যাক্সিলেন্স পুরস্কার জিতেছে। ড্রিংকওয়েল একটি আমেরিকান কোম্পানি যারা ভারত ও বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য নিরাপদ খাবার পানি তৈরির প্রযুক্তি সরবরাহ করে থাকে।
আরও পড়ুন: বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গাইবান্ধার চরাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত
মাঝে মাঝেই ‘ভয়ঙ্কর’ দুঃস্বপ্ন দেখেন সালমান রুশদি
১ বছর আগে
বাজেট বাস্তবায়নে সুশাসন বড় চ্যালেঞ্জ: এফবিসিসিআই
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে সুশাসন একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
শনিবার মতিঝিলে এফবিসিসিআই ভবনে বাজেট-উত্তর প্রতিক্রিয়া বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মুদ্রাস্ফীতির মুখে জনগণের চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষা পূরণে সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বাজেটের আকার খুবই সময়োপযোগী।
আরও পড়ুন: প্রস্তাবিত বাজেটের কয়েকটি কর প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করা দরকার: ড. আতিউর
তিনি প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে দক্ষতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও তত্ত্বাবধানের গুণমান ক্রমাগত উন্নয়নের জন্য সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা ও পরিকল্পনা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, সার ভর্তুকি অব্যাহত রাখা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, মানবসম্পদ উন্নয়নের ওপর জোর দেয়া, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, গ্রামীণ উন্নয়ন, প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা প্যাকেজের সম্পূর্ন বাস্তবায়ন ও সামাজিক নিরাপত্তা উদ্যোগ সম্প্রসারণের বিষয়গুলো বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেন তিনি।
কর ও ভ্যাট সংক্রান্ত এফবিসিসিআইয়ের সুপারিশ বাস্তবায়ন না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ব্যবসায়িক এই সংগঠন অর্থপাচার সমর্থন করে না। এটা দেশে সৎ ব্যবসায়ীদের নিরুৎসাহিত করবে।
আরও পড়ুন: বাজেটে নিম্ন-মধ্যম আয়ের জনগণের জন্য কোনো সুখবর নেই: সিপিডি
বাজেট অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে: অর্থমন্ত্রী
২ বছর আগে
‘ঢাকা ঘোষণা’: গণতন্ত্র ও সুশাসনের ওপর গুরুত্ব
বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য গণতন্ত্র, সুশাসন ও আইনের শাসনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে রবিবার ঢাকায় দুই দিনব্যাপী বিশ্ব শান্তি সম্মেলন শেষ হয়েছে।
সম্মেলনে একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ এবং ন্যায়সঙ্গত সমাজের মূল স্তম্ভ হিসাবে সামাজিক ন্যায়বিচার এবং অংশগ্রহণমূলক উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেযো হয়।
এছাড়া জনগণের ন্যায্য দাবি ও আকাঙ্ক্ষার প্রতি আওয়াজ তোলার ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদ এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকাকে মূল্যায়ন করা হয়।
৪-৫ ডিসেম্বর ‘ঢাকা শান্তি ঘোষণায়’ বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে সরকার, আইনসভা, একাডেমিয়া, সুশীল সমাজ এবং মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপনিবেশবাদ, অবৈধ দখলদারিত্ব এবং যে কোনো অজুহাতে অননুমোদিত ক্ষমতা দখলের নিন্দা জানানো হয়।
আরও পড়ুন: বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে উন্নত বিশ্বের স্বপ্ন দেখার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
এতে বলা হয়, `আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সংঘাত প্রতিরোধ ও শেষ করতে মধ্যস্থতার ভূমিকাকে স্বীকৃতি দেই।’
তারা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কর্মীদের উৎসর্গ ও সেবার জন্য প্রশংসা করেন এবং শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নারী ও যুবকদের কর্মসংস্থানের অধিকার রক্ষা সংস্থার প্রতি বিশ্বাস বজায় রাখেন।
অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে সম্মেলনের আয়োজনের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন।
তারা বলেন, ‘আমরা স্মরণ করি যে গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশের যাত্রা শান্তি বজায় রাখার, টেকসই উন্নয়নের প্রচার এবং মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার পথ হিসাবে জনগণের মুক্তি ও ক্ষমতায়নের একটি বৈধতা।’
আরও পড়ুন: বিশ্ব শান্তি সম্মেলন উপলক্ষে প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ
আন্তর্জাতিক মানের পণ্য উৎপাদনে মনোযোগ দেয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
৩ বছর আগে
গণতন্ত্রের নামে বিভিন্ন দেশকে চাপে রাখাই আমেরিকার রাজনীতি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র ও সুশাসনের কথা বলে বিভিন্ন দেশকে নানা ইস্যুতে চাপে রাখতে চাওয়াই আমেরিকার রাজনীতি বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, তাই গণতন্ত্র সম্মেলনে ডাক পাওয়া বা না পাওয়া নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
শুক্রবার সকালে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নির্মাণাধীন কার্গো স্টেশন পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় আগামী গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশ ডাক পাবে কি না তা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আমেরিকা বিভিন্ন দেশকে কখনো গনতন্ত্রের কথা বলে,কখনো সুশাসনের কথা বলে,কখনো সন্ত্রাসবাদের কথা বলে চাপে রাখতে চায়; সেটাই তাদের রাজনীতি। তাই গণতন্ত্র সম্মেলনে ডাক পাওয়া বা না পাওয়া নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
তিনি বলেন, এসব নিয়ে চিন্তা না করে নিজেরা কিভাবে ভালো করা যায়, সেটা নিয়ে চিন্তা করা প্রয়োজন। যদি আমাদের দুর্বলতা থাকে, সেটা আমরা দূর করার চেষ্টা করবো।
ইউপি নির্বাচনে সহিংসতার ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,আগামীতে নির্বাচনে একটি লোকও যাতে মারা না যায় সে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে, উন্নতি করার চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: আমাদের গণতন্ত্র খুবই স্বচ্ছ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। কাজ শেষ হলে এখান থেকে বিভিন্ন দেশে সরাসরি ফ্লাইট যাবে। তখন ভারতের লোকজনও এই বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারবেন।
সাংবাদিকরা সিলেটের সীমান্তবর্তী ভোলাগঞ্জে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট স্থাপনের পরিকল্পনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেন। যাতে ভারতের নাগরিকরা এ চেকপোস্ট দিয়ে সহজেই সিলেটের সীমান্তবর্তী সাদাপাথরসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে যাতায়াত করতে পারেন।
এ প্রসঙ্গে আব্দুল মোমেন বলেন, “(ভোলাগঞ্জে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট স্থাপনের বিষয়ে) আমি ঠিক জানি না। আমরা এই (ওসমানী) বিমানবন্দর অনেক বড় করছি। উদ্দেশ্য যে শুধু সিলেটের লোকজন বিদেশে যাবেন, সেটা নয়। (ভারতের) সেভেন সিস্টার্সের লোকেরা, করিমগঞ্জ ও শিলংয়ের লোকেরা এখানে এসে এটা ব্যবহার করতে পারবেন। এখানে আটটা বোর্ডিং ব্রিজ হবে। তখন এখান থেকে সরাসরি ফ্লাইট যাবে। এখন শুধুমাত্র লন্ডন ও ম্যানচেস্টারে সরাসরি ফ্লাইট যায়; যা কোভিডের কারণে বন্ধ ছিল; এখন আবার শুরু হবে। (কাজ শেষ হলে) এখান থেকে বিভিন্ন দেশে সরাসরি ফ্লাইট যাবে। তখন আমাদের প্রতিবেশি রাষ্ট্রের লোকেরা এখানে এসে বিদেশে যাবেন।”
এসময় সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ, সিসিক কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ, জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ, মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাব মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সব দেশ স্বীকার করেছে রোহিঙ্গারা যেন দেশে ফেরত যায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৩ বছর আগে
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করুন: নবীন সরকারি কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রী
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জনগণের সেবায় কাজ করতে নবীন সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি আপনারা সাংবিধানিক দায়িত্বের প্রতি বিশ্বস্ত থেকে জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করবেন।’
রাজধানীর শাহবাগে বিসিএস প্রশাসন একাডেমির ১১৯ ও ১২০তম আইন ও প্রশাসন প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
সংবিধানের ৭ম অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণই দেশের মালিক এবং বাংলাদেশের সংবিধানের ২১ (২) অনুচ্ছেদে অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীরা ২৪ ঘণ্টা জনগণের সেবা প্রদানে বাধ্য।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করবেন। জনগণের পাশে থাকুন এবং জনগণ যাতে ন্যায়বিচার পায়, একজন মানুষও যেন অনাহারে না ভোগে, গৃহহীন না থাকে, চিকিৎসা ও শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয় তা নিশ্চিত করুন।’
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বায়নের যুগে সবার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে সরকার দেশের কর্মকর্তাদের উন্নত করতে চায়।
পড়ুন: কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ প্রকল্পে ধীরগতি: ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
তিনি প্রশিক্ষিত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কোর্সে অর্জিত জ্ঞানকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম এবং বিসিএস প্রশাসনের রেক্টর মোমিনুর রশিদ আমিন বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ফরহাদ হোসেন যথাক্রমে ১১৯তম এবং ১২০তম প্রশিক্ষণ কোর্সের শীর্ষ স্থান অর্জনকারীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে বিসিএস প্রশিক্ষণ একাডেমির কর্মকাণ্ডের ওপর একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।
পড়ুন: বিএনপি আগামী নির্বাচন বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে: প্রধানমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় জিয়াকে আসামি করতে চেয়েছিলাম: শেখ হাসিনা
৩ বছর আগে
স্বাস্থ্য খাত নিয়ে টিআইবি মিথ্যাচার করেছে: মন্ত্রী
স্বাস্থ্য খাত নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রকাশিত প্রতিবেদনে মিথ্যাচার করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে কোন জায়গায় এক হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে বা দুর্নীতি হয়েছে এরকম কোন তথ্য কি দেখাতে পারবে। কেউ এমন তথ্য দিতে পারবে না, অথচ অন্য খাতের কোটি টাকা নিয়ে কানাডায় চলে গেছে। ৫ হাজার কোটি টাকা নিয়ে দেশ ছেড়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগে এ ধরনের কোনো দুর্নীতি ঘটনা ঘটেনি ‘
শনিবার করোনাযুদ্ধে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহমুদ মনোয়ারের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শোকসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এর আগে করোনা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে সুশাসনে ঘাটতি থাকার কথা উল্লেখ করে দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
সেখানে উল্লেখ করা হয়, করোনা প্রতিরোধের কার্যক্রমে রোগ শনাক্তকরণ, চিকিৎসা, লকডাউন, টিকা ক্রয় ও বিতরণে স্বচ্ছতা, সুশাসন এবং প্রয়োজনীয় সমন্বয় ছিল না।
গত মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন স্বচ্ছতার তথ্য তুলে ধরেন । এমনকি করোনা মোকাবিলায় আগামী দিনের জন্য ১৯টি সুপারিশ তুলে ধরেছে টিআইবি।
আরও পড়ুন: ফাইজারের টিকা নিবন্ধিত ব্যক্তিরা সিরিয়াল অনুযায়ী পাবেন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
জাহিদ মালেক বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে টিআইবি স্বাস্থ্য খাত নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, এটা খুবই দুঃখজনক। করোনা প্রতিরোধে বিশ্বের সকল দেশ বা সংস্থা প্রশংসা করেছে বাংলাদেশকে। বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা বাংলাদেশকে প্রশংসা করেছে।
‘তবে টিআইবির ঘরে রুমে বসে একটি সুন্দর প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা করোনা শনাক্ত করতে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি এমন মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছে অথচ করোনা শনাক্তে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে,’ বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, তারা (টিআইবি ) বলছে আমরা কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা করিনি, শুধুমাত্র করোনা রোগের চিকিৎসার জন্য সারাদেশে ১৫ হাজার বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে ।
‘যে কারণে ভারতের মতো এমন পরিস্থিতি তৈরি তৈরি হয়নি, এখনো অনেক দেশ যথাযথভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পারেনি কিন্তু বাংলাদেশে এখনও লকডাউন চলমান,’ বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
টিকা ব্যবস্থাপনা নিয়ে অস্বচ্ছতার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ভারতে সাথে আমরা টিকা নিয়ে স্পষ্ট চুক্তি করে ভ্যাকসিন ক্রয় করেছি।
তিনি বলেন, করোনা মধ্যে আইসিইউ বাড়াতে পারেনি বলে টিআইবির যে দাবি করছেন এটা সঠিক নয়, গত বছর সেখানে ৩০০ থেকে ৪০০ আইসিইউ ছিল সেখানে এখন এক হাজারের অধিক আইসিইউ এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
টিআরবির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা শুধুমাত্র জনগণের কাছে ভুল তথ্য দেয়ার জন্য প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। করোনার জন্য যে সরঞ্জাম কেনা হয়েছে তার ব্যবহার করা হয়নি এমন তথ্যও সঠিক নয়। আমরা সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে সরঞ্জাম পৌঁছে দিয়েছি। এমন মিথ্যাচার আমরা গ্রহণ করি না।’
টিকা ব্যবস্থাপনায় অসচ্ছল ছিল এমন অভিযোগ মিথ্যা বল দাবি করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের টিকা ব্যবস্থাপনা স্বচ্ছতা ছিল সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে করো না সামনের সারির যোদ্ধাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া হয়েছে। তাদের অভিযোগ মোটেও গ্রহণযোগ্য না।
আরও পড়ুন: সুশাসনের ঘাটতি করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণকে দীর্ঘায়িত করছে: টিআইবি
বসুন্ধরার আইসোলেশন সেন্টার নিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ওটা চালু হলেও ছয় মাসে ছয়টা রোগী হয়েছে। এর পেছোনে লাখ লাখ টাকা ভাড়া দেয়ার কারণে সবার সাথে আলোচনা করে আইসোলেশন সেন্টার থেকে সরঞ্জাম বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
যারা দুর্নীতি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অধিদপ্তরের ড্রাইভার থেকে শুরু করে যারা অন্যের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এমনকি ভুয়া রিপোর্টের দেয়ার জন্য সাবরিনা এবং সাহেদকে গ্রেপ্তারর করে আদালতে দেয়া হয়েছে। ভুয়া সনদ দেয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলমসহ অন্যান্যারা উপস্থিত ছিলেন।
৩ বছর আগে
সুশাসনের ঘাটতি করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণকে দীর্ঘায়িত করছে: টিআইবি
টিকা কার্যক্রম ও করোনা মোকাবিলায় গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমে সুশাসনের ঘাটতি ভাইরাস নিয়ন্ত্রণকে দীর্ঘায়িত করছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
এছাড়া সংকট মোকাবিলা ও সুশাসনের চ্যালেঞ্জ থেকে উত্তরণের লক্ষে ১৯ দফা সুপারিশ প্রদান করেছে সংস্থাটি।
'করোনা ভাইরাস সংকট মোকাবিলা: কোভিড-১৯ টিকা ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
এসময় কোভিড-১৯ টিকা ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে সুশাসনের প্রতিটি নির্দেশকে কৌশলগত ঘাটতি থাকায় এবং ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর প্রভাব ও রাজনৈতিক বিবেচনায় টিকা ক্রয়ের ক্ষেত্রে একক উৎসের ওপর নির্ভর করায়, চলমান টিকা কার্যক্রমে আকস্মিক স্থবিরতা নেমে এসেছে উল্লেখ করে সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: বাজেট: কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ না দেয়ায় টিআইবির সাধুবাদ
টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মনজুর-ই-আলমের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান ও সিনিয়র রিসার্চ ফেলো শাহজাদা এম আকরাম। গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন গবেষণা ও পলিসি বিভাগের রিসার্চ ফেলো মো. জুলকারনাইন।
চলমান টিকাদান কার্যক্রমের সমালোচনা করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘পরিকল্পনা, ব্যবস্থাপনা এবং বাস্তবায়নে সরকারের সমন্বিত ও সুনির্দিষ্ট পথরেখার অভাবে টিকাদান কার্যক্রমেও ব্যাপক ঘাটতি বিদ্যমান। টিকা নিবন্ধন ও ব্যবস্থাপনা সুবিধাবঞ্চিত মানুষের প্রতিকূলে হওয়ায় এলাকা, শ্রেণি, লিঙ্গ ও পেশাভিত্তিক বৈষম্য তৈরি হয়েছে, ফলশ্রুতিতে ঝুঁকিপূর্ণ ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মধ্যে অনেকেই টিকার আওতার বাইরে রয়ে গেছে। যা সার্বজনীন টিকাদান কর্মসূচির অঙ্গীকারকে ঝুঁকিপূর্ণ করেছে। তাই অবিলম্বে সমন্বিত টিকাদান পরিকল্পনার মাধ্যমে সম্ভাব্য সমস্ত উৎস থেকে টিকা সংগ্রহ ও তা প্রদানের সুনির্দিষ্ট পথরেখা প্রস্তুত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যে টিআইবি ইতোপূর্বে দুটি গবেষণা পরিচালনা করে। তারই ধারাবাহিকতায় টিকা ব্যবস্থাপনাসহ কোভিড-১৯ মোকাবিলায় গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম সুশাসনের আলোকে পর্যবেক্ষণ করার উদ্দেশে ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সময়কালের তথ্য সংগ্রহ করে টিআইবি তৃতীয় দফার এই গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালনা করেছে।
গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস পরীক্ষায় আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার এখনো ৩০টি জেলার মধ্যে সীমিত এবং অধিকাংশ পরীক্ষাগার বেসরকারি। বিদ্যমান আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় কিছু নতুন স্ট্রেইন শনাক্তে সক্ষমতার ঘাটতি রয়েছে। নমুনা পরীক্ষার কিটের দাম তিনগুণ হ্রাস পেলেও বেসরকারি পরীক্ষাগারের জন্য নির্ধারিত ফি হ্রাস করা হয়নি। বাজেট এবং যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও সকল জেলায় ১০টি করে আইসিইউ শয্যা প্রস্তুতের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়নি। সরকারি হাসপাতালের আইসিইউ সংকটের কারণে বেসরকারি হাসপাতালে ব্যয়বহুল চিকিৎসা গ্রহণে বাধ্য হয়েছে সাধারণ জনগণ। ফলে একজন কোভিড-১৯ রোগীর গড় খরচ হচ্ছে ৫ লক্ষাধিক টাকা।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৩ দশমিক ৮ কোটি মানুষকে (জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ) টিকার আওতায় নিয়ে আসা ও সে অনুযায়ী টিকা সংগ্রহের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনায় ঘাটতি রয়েছে। টিকার বাফার স্টক সংরক্ষণে দূরদর্শিতার ঘাটতির কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ১৩ লাখের বেশি টিকাগ্রহীতার দ্বিতীয় ডোজ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
গবেষণায় দেখা যায়, টিকা সংগ্রহ এবং ক্রয়ের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা, সমন্বয়হীনতা ও ক্রয় চুক্তিতে স্বচ্ছতার ঘাটতি বিদ্যমান। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাপে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও একটি উৎস ছাড়া বিকল্প উৎস অনুসন্ধানে উদ্যোগের ঘাটতি ছিল। জাতীয় কমিটি এবং বিএমআরসি একটি চীনা প্রতিষ্ঠানের টিকা ট্রায়ালের অনুমোদন দিলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যথাযথ সাড়া না দেয়ায় ট্রায়াল প্রচেষ্টা বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া দেশীয় প্রতিষ্ঠানের উদ্ভাবিত টিকা ট্রায়ালের অনুমোদনেও দীর্ঘসূত্রতা লক্ষ করা যায়।
এতে বলা হয়, বিভিন্ন হাসপাতালের কোভিড মোকাবিলায় বরাদ্দ ব্যয়ে দুর্নীতি অব্যাহত ছিল। যেমন পাঁচটি হাসপাতালে ক্রয়, শ্রমিক নিয়োগ ও কোয়ারেন্টাইন বাবদ ৬২ দশমিক ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ কোটি টাকার দুর্নীতি; ক্রয়বিধি লঙ্ঘন করে এক লাখ কিট ক্রয়; বিধি লঙ্ঘন করে অনভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে ক্রয়াদেশ প্রদানের ঘটনা দেখা গেছে। করোনাকালে কারিগরি জনবলের ঘাটতি মেটাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়োগে জনপ্রতি ১৫-২০ লাখ টাকা ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। উপযোগিতা যাচাই না করে হাসপাতাল নির্মাণ এবং তার যথাযথ ব্যবহার না করে হঠাৎ বন্ধ করে দেয়ায় ৩১ কোটি টাকার অপচয় হয়েছে।
গবেষণায় দেখা যায়, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে এখনো চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান। সরকার ঘোষিত মোট ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজে বরাদ্দকৃত ১ লাখ ২৮ হাজার ৩ শত ৩ কোটি টাকার প্রায় ৩৫ শতাংশ বিতরণ করা হয়নি।
গবেষণা প্রতিবেদনে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সুশাসনের ঘাটতি নিরসনে টিকা কার্যক্রম সম্পর্কিত ১১টি এবং অন্যান্য কার্যক্রম সম্পর্কিত ৮টিসহ মোট ১৯ দফা সুপারিশ প্রদান করে টিআইবি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: দেশের ৮০ শতাংশ জনসংখ্যাকে কীভাবে, কত সময়ের মধ্যে টিকার আওতায় আনা হবে তার সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা করা; উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সক্ষমতাসম্পন্ন কোম্পানিগুলোকে নিজ উদ্যোগে স্থানীয়ভাবে টিকা উৎপাদনের সুযোগ প্রদান করা; সরকারি ক্রয়বিধি অনুসরণ করে সরকারি-বেসরকারি খাতের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সরাসরি আমদানির অনুমতি প্রদান করা; রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ব্যতীত টিকা ক্রয় চুক্তি সম্পর্কিত সকল তথ্য সকলের জন্য উন্মুক্ত করা; টিকা কেন্দ্রে অভিযোগ নিরসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা এবং অভিযোগের ভিত্তিতে অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ইত্যাদি।
৩ বছর আগে