হাতুড়ি
দুই সন্তানের সামনে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে স্ত্রীকে হত্যা
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পারিবারিক কলহের জের ধরে দুই সন্তানের সামনে স্ত্রী আঁখি আক্তারকে (৩২) হাত-পা বেঁধে হাতুড়ি পেটা করে হত্যা করেছে সাইদুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দি গ্রামে এই ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে সাইদুল।
পরে স্বজনরা আঁখি আক্তারকে উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে গৃহবধূর আত্মহত্যা!
এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
নিহত আঁখি আক্তার উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের ইব্রাহিম প্রধানের মেয়ে এবং স্বামী সাইদুল ইসলাম পাশ্ববর্তী চেঙ্গকান্দি গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে।
এছাড়া দাম্পত্য জীবনে তাদের অর্ণব (১২) ও সিয়াম (১০) নামের দুই সন্তান রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পারিবারিক কলহের জের ধরে সাঈদুল দুই ছেলের সামনেই তার স্ত্রীকে হাত-পা বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। তিনি প্রায়ই স্ত্রীকে মারধর করতেন।
বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ তাদের ঘর থেকে ছেলেদের চিৎকার শুনে গিয়ে তারা সেখানে যেয়ে দেখেন আঁখির হাত-পা বাঁধা। মাথার বিভিন্ন অংশ থেতলানো। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের প্রত্যক্ষদর্শী ছেলে অর্ণব (১২) জানায়, বিভিন্ন সময়ে বাবা-মা ঝগড়া করতেন। বৃহস্পতিবার রাতে ঝগড়ার একপর্যায়ে বাবা তার মাকে হাত-পা বেঁধে ঘরে থাকা হাতুড়ি দিয়ে পিটায়। তখন আমরা চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে বাবা পালিয়ে যান। পরে মাকে হাসপাতালে নিলে তিনি মারা যান। আমরা মায়ের হত্যার বিচার চাই।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুব আলম বলেন, গৃহবধূ হত্যার খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া অভিযুক্ত স্বামী পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: বরিশালে প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে প্রেমিকার আত্মহত্যা!
কুমিল্লায় চিরকুট লিখে ইন্টার্ন চিকিৎসকের আত্মহত্যা!
১ বছর আগে
হেলমেট ও হাতুড়ি বাহিনী বাবরের ছত্রচ্ছায়ায় পরিচালিত হতো: পুলিশ
ফরিদপুরের বহুল আলোচিত দুই হাজার কোটি টাকা অর্থ পাচার মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি ও সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রীর ছোট ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরের ছত্রচ্ছায়ায় হেলমেট ও হাতুড়ি বাহিনী পরিচালিত হতো। তার গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা এ তথ্য জানান।
মঙ্গলবার দুপুর তিনটার দিকে ফরিদপুর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি আরও জানান, জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তর এর টেন্ডার বাণিজ্য, চাকরি দেয়ার কথা বলে বিপুল পরিমাণ টাকা সংগ্রহ করতো বাবর।
প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমএ জলিল, ডিবির ওসি রাকিবুল ইসলামসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পুলিশের এই প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ফরিদপুরের বহুল আলোচিত দুই ভাই রুবেল- বরকতের অবৈধ বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হওয়ার পেছনে আসামিদের সহযোগিতা ছিল।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরের সেই পুলিশ পরিদর্শকের জামিন নামঞ্জুর
পুলিশ আরও জানায়, ঢাকা পুলিশের সহযোগিতায় সোমবার দিবাগত রাতে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে আসামি বাবরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার বাবর সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী (এলজিআরডি) ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছোট ভাই।
এর আগে ২০২১ সালের ৩ মার্চ দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় মোহতেশাম হোসেন বাবরসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি পুলিশ। ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস।
এ মামলার অপর আসামিরা হলেন- শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ছোট ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এএইচএম ফুয়াদ, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি খন্দকার নাজমুল ইসলাম লেভী, যুবলীগ নেতা আশিকুর রহমান ফারহান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, যুবলীগ নেতা কামরুল হাসান ডেভিড, মোহাম্মদ আলী মিনার ও তারিকুল ইসলাম নাসিম।
এই ১০ আসামির মধ্যে যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ আলী মিনার ও তারিকুল ইসলাম নাসিম এখনও পলাতক, বাকিরা গ্রেপ্তার হয়েছে।
সর্বশেষ গ্রেপ্তার হওয়া খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। এর আগে তিনি ফরিদপুর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ছিলেন।
এদিকে বাবরের গ্রেপ্তারের খবরে ফরিদপুর আওয়ামী লীগের একটি অংশ আনন্দ মিছিল করে। আনন্দ মিছিলে নেতৃত্ব দেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শামিম হক, ফরিদপুর পৌর মেয়র অমিতাভ বোস। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ইমাম উদ্দিন স্কয়ারে গিয়ে সমাবেশ ও মিষ্টি বিতরণ করে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার
ফরিদপুরে রাজাকারপুত্রকে স্বেচ্ছাসেবক লীগে পদ দেয়ার অভিযোগ
২ বছর আগে
কুষ্টিয়ায় যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ, স্বামী গ্রেপ্তার
কুষ্টিয়া জেলার মিরপুরে যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় পুলিশ নিহতের স্বামী আবু বক্করকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত সাত বছর আগে মিরপুর উপজেলার খয়েরপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে পলি খাতুনের সাথে একই গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে আবু বক্করের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূ পলি খাতুনের ওপর স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন শারীরিক নির্যাতন চালাত।
গৃহবধূ পলির বড় ভাই আক্তারুজ্জামান বাবু জানান, যৌতুকের জন্য বোনকে শারীরিক নির্যাতন করার কথা জানতে পেরে তারা বোনের সুখের কথা ভেবে কয়েক দফায় আবু বক্করের হাতে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার তুলে দেন। কিন্তু এতেও তাদের মন ভরে নি। যৌতুকের জন্য আবারও দফায় দফায় গৃহবধূ পলি খাতুনের ওপর নির্যাতন চলতে থাকে। এরই মধ্যে পলির স্বামী মাদক ব্যবসা ও নিয়মিত মাদক সেবন শুরু করে।
আরও পড়ুনঃ হবিগঞ্জে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন
গত ২ জুন মদ্যপ অবস্থায় আবু বক্কর যৌতুকের টাকার জন্য পলি খাতুনের উপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। পলি খাতুন বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে অস্বীকার করলে স্বামী আবু বক্কর ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলিকে সারারাত হাতুড়ি দিয়ে পেটাতে থাকে। এক পর্যায়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পলিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে পলির ভাই আক্তারুজ্জামান বাবুসহ পরিবারের লোকজন হাসপাতালে ছুটে আসলে পলির স্বামী আবু বক্করসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন হাসপাতাল থেকে সটকে পড়েন।
শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে পলি খাতুনকে ঢাকার নিউরোসাইন্স হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। গত দশ দিন মৃত্যুর সাথে লড়ে গত শুক্রবার বিকালে পলি মৃত্যুবরণ করে।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত পলির ভাই আকতারুজ্জামান বাবু বাদী হয়ে পলির স্বামী আবু বক্কর, শ্বশুর আইয়ুব আলী, শ্বাশুড়ি আকলিমা খাতুনসহ চারজনের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দয়ের করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ নিহত ঘাতক স্বামী আবু বক্করকে গ্রেপ্তার করেছে। এজাহারভুক্ত অপর আসামিদেরও গ্রেপ্তারের জোর প্রচেষ্টা চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
৩ বছর আগে