নিমপাতা ও কালোজিরা
বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন
বর্ষাকালে ভেজা ও স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থায় পোকামাকড়ের উপদ্রব সবচেয়ে বেশি বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই কীটপতঙ্গগুলি কেবল আপনার খাদ্য এবং আসবাবপত্র নষ্ট করবে না, তারা আপনার স্বাস্থ্যের ওপর কিছুটা প্রভাব ফেলবে। তাই আপনার সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ আসবাবপত্র এই ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ থেকে নিরাপদ রাখতে, এই টিপ্সগুলো আপনাকে সহায়তা করতে পারে।
বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচার ১০টি সহজ টিপ্সঃ
নিমপাতা ও কালোজিরা
প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে পরিচিত এ দুটি খুব ভালো ফল দেয়। রান্নাঘরের কেবিনেট, আলমারি, বুক শেলফ, ঘরের বিভিন্ন তাক ও কেবিনেটে শুকনো নিমপাতা বা কালোজিরা কাপড়ে বেঁধে রেখে দিন। পোকামাকড় চলে যাবে।
আরও পড়ুন: বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য সতর্ক হোন
ল্যাভেন্ডার তেল
ল্যাভেন্ডারের সুগন্ধ পোকামাকড় রোধে বেশ কাজে দেয়। বিশেষত, মশা-মাছির ক্ষেত্রে এই তেলে আশানুরুপ ফল পাবেন। খালি শ্যাম্পুর বোতলে এককাপ পানি নিয়ে তার মধ্যে তিন চামচ ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে নিন। অতঃপর ভালো করে ঝাঁকিয়ে নিয়ে তা ছড়িয়ে দিন ঘরের কোণায় কোণায়।
পুদিনা পাতা
একমুঠো পুদিনা পাতা প্রথমে জলে ফুটিয়ে নিন। তারপর ঠাণ্ডা করে ঘরের যে সব জায়গায় মাকড়সার জাল আছে সেখানে স্প্রে করুন। পুদিনার তেল ও জলের মিশ্রণও স্প্রে করতে পারেন।
টি ট্রি তেল
পানির সঙ্গে টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে, সেই মিশ্রণ ঘরের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে দিলে পোকামাকড়ের উপদ্রব কমে যাবে। এমনকি বর্ষায় ছারপোকার জন্যও এটি খুবই কার্যকর।
আরও পড়ুন: জেনে নিন ডেঙ্গু জ্বর থেকে সুরক্ষার উপায় ও করণীয়
ইউক্যালিপটাস তেল
ইউক্যালিপটাস গাছের গা থেকে বের হওয়া ঝাঁজালো গন্ধ কোনো কীটপতঙ্গ, এমনকি ইঁদুরও সহ্য করতে পারে না। তাই খালি শ্যাম্পুর বোতলে এক কাপ পানি ভরে, তাতে এক চামচ লেবু তেল ও দু’চামচ ইউক্যালিপটাস তেল মিশিয়ে ঝাঁকিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। বাড়ির চারপাশে, বেসিনে এই মিশ্রণ স্প্রে করলেই বর্ষায় পোকামাকড়ের হাত থেকে বাঁচতে পারবেন।
ব্লিচিং পাউডার
এক দিন পর পর বাড়ির চার পাশে ব্লিচিং পাউডার ও কার্বলিক অ্যাসিড ছড়ান। এছাড়া করোনা সংক্রমণ এড়িয়ে চলতে বাড়ির মেঝে, যেসব জায়গা বেশি হাতের সংস্পর্শে আসে সেগুলোকে পানিতে ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে পরিষ্কার রাখুন।
আরও পড়ুন: সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
কর্পূর
কর্পূর ব্যবহার মশা, মাছি তাড়ানোর সবচেয়ে সহজ ও সাধারণ উপায়। কয়েক টুকরা কর্পূর আধা কাপ পানিতে ভিজিয়ে ঘরের এক কোণে রেখে দিলে দেখবেন, মশা-মাছি উপদ্রব অনেক কমে গেছে। পিঁপড়ার নিধনে দরজা ও জানালায় বোরিক পাউডার ঢালুন। এছাড়া এক কাপ নারিকেল তেল নিয়ে তার সাথে কর্পূরের গুঁড়ো মিশিয়ে ঘরের বিভিন্ন জায়গায় ছিটিয়ে দিন।
কেরোসিন তেল ও ঢাকনা দেয়া ডাস্টবিন
গরম পানিতে সাবান ও কেরোসিন তেল মিশিয়ে খাটের তলায় ও ঘরের প্রতিটি কোণে স্প্রে করুন। পোকার উপদ্রব কমবে। রান্নাঘরে ঢাকনা দেওয়া ডাস্টবিন ব্যবহারে দূর হবে মাছির সমস্যা। ব্যবহারের পর নিয়মিত ডাস্টবিন পরিষ্কার করুন।
ফিনাইল
প্রতিদিন ঘরের মেঝে পরিষ্কার করা জরুরি। ঘর মুছতে ফিনাইল বা অ্যান্টিসেপটিক লিকুইড ব্যবহারে পোকামাকড়ের আনগোনা অনেকটাই কমে যাবে।
আরও পড়ুন: ইকিগাই: জাপানিদের সুস্থ জীবনের রহস্য!
স্যাভলন ও ভিনেগার
স্যাভলন ও ভিনেগার দিয়ে রান্নাঘর মুছুন। পিঁপড়ার উপদ্রব কমাতে জানালায় ও দরজায় বরিক পাউডার দিন। ভিনিগার অ্যাসিটিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যার গন্ধ পেলেই মাকড়সা পালায়।প্রথমে ১ কাপ সাদা ভিনেগার এবং ১ কাপ জল মিশিয়ে একটি স্প্রে বোতলে ভরে ঘরের আনাচে-কানাচে স্প্রে করুন। যেখানে মাকড়শার উপদ্রব বেশি সেখানে বেশি করে স্প্রে করলে হাতে-নাতে ফল পাবেন।বর্ষায় বেসিন ও কমোড দিয়ে উঠে আসা বিভিন্ন কীটপতঙ্গ থেকে রক্ষার জন্য গরম পানিতে স্যাভলন মিশিয়ে কয়েক দিন পরপর সেটি কমোড, বেসিন ও রান্নাঘরের সিংকে ঢালুন। খেয়াল রাখবেন, স্যাভলনের পানি যেন অবশ্যই সরাসরি পাইপে পড়ে। তা না হলে কমোড কিংবা বেসিনে চিড় ধরতে পারে।
পরিশেষে
পরিশেষে পোকামাকড় নিধনে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানে থাকবেন। কিছু কিছু রাসায়নিক বস্তু শুধু আপনাকে অস্বস্তিতেই ফেলবে না বরং আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। তাই প্রাকৃতিক উপায়েই চেষ্টা করুন বর্ষাকালে পোকামাকড় নিধন করতে।
আরও পড়ুন: জেনে নিন আমের ডেজার্ট তৈরির দারুণ সব রেসিপি
৩ বছর আগে