রেকর্ড মৃত্যু
সিলেট বিভাগে একদিনে রেকর্ড ২০ মৃত্যু
মহামারি করোনাভাইরাসে সিলেট বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ওসমানী হাসপাতালে ৭ জন, সিলেট জেলার ৯ জন, সুনামগঞ্জে ৩ জন ও মৌলভীবাজারে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে সিলেট বিভাগে ৭৪৮ জনের মৃত্যু হলো।
এর মধ্যে সিলেট জেলায় ৫৬৮ জন, ওসমানী হাসপাতালে ২৯ জন, সুনামগঞ্জে ৫৫ জন, হবিগঞ্জে ৩৫ জন ও মৌলভীবাজারে ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (৪ আগস্ট) সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৯১০ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭১৫ জনের। শনাক্তের হার ৩৭.৪৩ শতাংশ। সব মিলিয়ে এ বিভাগে করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৭৩০ জনের।
একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৫৭ জন। মোট হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৪৬৭ জন। ওসমানী হাসপাতালে ভর্তিকৃত ৩০৪ জন রোগীর মধ্যে আইসিইউতে ৮ জন, কোভিড পজিটিভ ১৪৪ জন এবং সন্দেহভাজন ১৪২ জন।
একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ৩০৩ জন। এ পর্যন্ত সবমিলিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ৩১ হাজার ৯৭৩ জন।
আরও পড়ুন: বরিশালে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ১৬ মৃত্যু
করোনায় রামেকে আরও ১৪ মৃত্যু
৩ বছর আগে
করোনা: খুলনা বিভাগে রেকর্ড ৪৬ মৃত্যু
সব রেকর্ড ভেঙে খুলনা বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন করে ১ হাজার ৩০৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) খুলনা বিভাগে সর্বোচ্চ ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক রাশেদা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে খুলনায় ১৫ জন, কুষ্টিয়ায় ১৫ জন, যশোরে সাতজন, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও চুয়াডাঙ্গায় দু’জন করে এবং বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও মেহেরপুরে একজন করে মারা গেছেন।
করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৬০ হাজার ৫৬৪ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ২১৪ জন। এ সময় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪০ হাজার ২১৮ জন।
খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. শেখ সাদিয়া মনোয়ারা ঊষা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় খুলনায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে জেলার ১০ জন রয়েছেন। একইসময়ে ৪৩৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৫০ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। যা মোট নমুনা পরীক্ষার ৩৪ শতাংশ।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জেলাভিত্তিক করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫০ জনের। এ পর্যন্ত খুলনা জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৬ হাজার ৩৮৭ জনের। এ সময় মারা গেছেন ৩০০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ৩৫২ জন।
এদিকে রবিবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গে নিয়ে খুলনার পৃথক তিনটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া ১৫ জনের মধ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ৭ জন, খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২ ও বেসরকারি গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
করোনা হাসপাতালের ফোকালপারসন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৯৭ জন। যার মধ্যে রেড জোনে ১০২ জন, ইয়ালো জোনে ৪১ জন, আইসিইউতে ২০ জন ও এইচডিসিতে ২০ জন রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৩৮ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫০ জন।
বেসরকারী গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২৪ ঘণ্টায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ১১৫ জন, এর মধ্যে এইচডিইউতে আছেন ৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ২৩ জন, আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২২ জন।
আরও পড়ুন: একদিনে করোনায় রেকর্ড ১৫৩ মৃত্যু, শনাক্ত ২৮.৯৯ শতাংশ
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, খুলনার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে টুটপাড়ার জহুরুল হক (৬৫) ও ডুমুরিয়ার জাহানারা বেগম (৬০) নামের দুই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৬৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১৫ জন, আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৮ জন।
শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে ফোকালপারসন ডা. প্রকাশ দেবনাথ জানান, করোনা ইউনিট খোলার প্রথম ২৪ ঘণ্টায় ২৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন, তবে কেউ মারা যাননি।
খুলনা মেডিকেলের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল, খুলনা জেনারেল হাসপাতাল ও বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাওয়ায় শনিবার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে করোনা ইউনিট চালু করা হয়েছে।
এদিকে করোনার প্রাদুর্ভাব কমিয়ে আনতে খুলনায় দফায় দফায় বিধিনিষেধ ও ‘লকডাউন’ দিয়েও করোনা সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না। করোনার হটস্পট হয়ে উঠেছে খুলনা বিভাগের ১০ জেলা। ঈদ উল ফিতর পরবর্তী সংক্রমণ বাড়ার যে শঙ্কা ছিল, সেটিই সত্যি হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে পড়েছে যে অক্সিজেন সিলিন্ডার কে আগে নেবেন-তা নিয়ে করোনা রোগীর স্বজনদের মধ্যে রীতিমতো কাড়াকাড়ি চলে খুলনায়। সময়মতো অক্সিজেন না পেয়ে রোগী মৃত্যুর অভিযোগও রয়েছে। আর যারা বাসাবাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের স্বজনদের ভিড় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানে।
আরও পড়ুন: সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ‘নির্লজ্জ’ আখ্যা দিয়ে পদত্যাগ দাবি
খুলনায় এতো করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণ কী? এমন প্রশ্নের জবাবে খুলনার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, শুধু খুলনায় নয় অনেক জেলাতেই ভয়াবহ অবস্থা। খুলনার মানুষজন স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। এটা তো সংক্রমিত রোগ। এক জন থেকে অন্যজনে ছড়ায়। স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা থাকলেও কেউ মানছেন না। মাস্ক পরছেন না। ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করলেও মাস্ক পরছে না অনেকে। সংক্রমণ হওয়ার আর কোনো রাস্তা তো দেখি না আমরা। এটাই মূলত এক নাম্বার কারণ।
সিভিল সার্জন বলেন, সরকার থেকে শুরু করে মিডিয়াসহ আমরাও সচেতনতার কথা বলছি কিন্তু চোরে শোনে না ধর্মের কাহিনী। সবাই ভাবে কিছু তো হয় না। কিন্তু হচ্ছে তো। যার হচ্ছে তার পরিবার বুঝছে কি হচ্ছে। যার চলে যাচ্ছে তার পরিবারই বুঝছে কি ভুল তারা করেছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণেই সরকার বাধ্য হলো লকডাউন দিতে। লকডাউন মানে কি মানুষকে বাসায় আটকানো। নিশ্চয় স্বাস্থ্যবিধি মানছে না সে জন্যই বাসায় আটকানোর চিন্তা করে সরকার লকডাউন দিয়েছে।
খুলনাঞ্চলের করোনা কি ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, না আমরা তো সেরকম কিছু দেখি না। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট দিয়ে সয়লাব হয়ে গেছে এমন রিপোর্ট তো আসে না। যশোর, সাতক্ষীরার দিকে কিছু আছে। আমাদের এখানে কোনোটার আধিক্য তেমন নেই।
আরও পড়ুন: লকডাউনের চতুর্থ দিনে গ্রেপ্তার ৬১৮, জরিমানা প্রায় ১৩ লাখ
খুলনায় করোনা এত বেশি হওয়ার কারণ কী? জানতে চাইলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক রাশেদা সুলতানা বলেন, সব জায়গাই তো বেড়েছে সে হিসেবে খুলনাতেও বেড়েছে। মৃত্যুর হার খুলনায় একটু বেশি। সাধারণ সর্দি জ্বর ভেবে একটু দেরিতে চিকিৎসকের কাছে আসছেন রোগীরা। এখনের যে ভ্যারিয়েন্ট তা আগে থেকে বোঝাও যাচ্ছে না। রোগীও বুঝতে পারে না তিনি কতটা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
তিনি রোগীদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, একটু আগে আগে চিকিৎসকের কাছে আসার জন্য বলবো। আগে আসলে তার অবস্থা বুঝে চিকিৎসা করা গেলে সেভ করা সম্ভব হতে পারে। বিশেষ করে গ্রামের মানুষদের বলা হচ্ছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে সেবা নিতে।
৩ বছর আগে
করোনায় মৃত্যু ১৫ হাজার ছাড়াল, একদিনে সর্বোচ্চ ১৫৩
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ১৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, এর আগে ১ জুলাই দেশে ১৪৩ জনের প্রাণহানি হয়েছিল। এনিয়ে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৬৫ জনে।
রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসে আরও ৮ হাজার ৬৬১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এনিয়ে মোট শনাক্ত ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৯১৭ জনে দাঁড়িয়েছে। শনাক্তের হার ২৮.৯৯ শতাংশ।
এর আগে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৩৪ জনের মৃত্যু এবং ৬ হাজার ২১৪ জন আক্রান্ত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় মোট মৃত্যু ৩৯ লাখ ৬৯ হাজার ছাড়াল
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৯ হাজার ৮৭৯টি। মৃতদের মধ্যে ৯৬ জন পুরুষ এবং ৫৭ জন নারী।
নতুন করে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৬৯৮ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৩৩ হাজার ৮৯৭ জন। সুস্থতার হার ৮৮.২৫ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১.৫৯ শতাংশ।
বিশ্ব পরিস্থিতি
বিশ্বব্যাপী প্রতিদিনি মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রবিবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ৩৯ লাখ ৬৯ হাজার ৬৩৫ জন।
এছাড়া একই সময়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ কোটি ৩৪ লাখ ৪ হাজার ১৮৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনা: খুলনায় আরও ১৫ জনের মৃত্যু
এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মোট ৩১৬ কোটি ১৯ লাখ ৫২ হাজার ৫৯৫ ডোজ করোনার টিকা প্রদান করা হয়েছে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা ৩ কোটি ৩৭ লাখ ১৩ হাজার ৭২৯ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৬ লাখ ৫ হাজার ৪৯৩ জন।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ৫৮৭ জনে। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১ কোটি ৮৭ লাখ ২৫ হাজার ৪২ জন। মৃত্যুর দিক দিয়ে দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়।
আরও পড়ুন: গরু কিনে ‘ডিজিটাল পশুর হাট’ উদ্বোধন করলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
এদিকে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩ কোটি ৫ লাখ ২ হাজার ৩৬২ জন। একই সময়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ১ হাজার ৫০ জনে।
৩ বছর আগে
করোনা: খুলনা বিভাগে রেকর্ড ৩৫ জনের মৃত্যু, ১২৪৫ শনাক্ত
খুলনায় করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে রেকর্ড ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন করে ১ হাজার ২৪৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর আগে খুলনা বিভাগে মঙ্গলবার ২৯ জুন সর্বোচ্চ ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
এদিকে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছি। সংকট দেখা দিয়েছে অক্সিজেনের। ফলে রোগীদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। পাশাপাশি চিকিৎসক ও সেবিকাদের সেবা প্রদানে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক রাশেদা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে কুষ্টিয়ায় সাত জন, যশোরে সাতজন, খুলনায় চারজন, ঝিনাইদহে চারজন, সাতক্ষীরায় চারজন, মেহেরপুরে তিনজন, নড়াইলে তিনজন, চুয়াডাঙ্গায় দুজন ও বাগেরহাটে একজন মারা গেছেন।
খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় চুয়াডাঙ্গায় গত বছরের ১৯ মার্চ। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৫৭ হাজার ৫২০ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ১০৫ জন। এ সময় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৮ হাজার ৯৩০ জন।
আরও পড়ুন:করোনা: খুলনার তিন হাসপাতালে ১০ মৃত্যু
এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘন্টায় তিনটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা ও উপসর্গে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে করোনায় ৭ জন ও উপসর্গে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড ইউনিটে ৮ জন, জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একজন ও বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, খুলনা করোনা ডেডিকেট হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া করোনা উপসর্গে নিয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৯৮ জন। যার মধ্যে রেড জোনে ১০৫ জন, ইয়ালো জোনে ৪৫ জন, আইসিইউতে ২০ জন ও এইচডিসিতে ২০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৩৩ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৪ জন।
গাজী মেডিকেল হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মোংলার চিলা বাজার কালীকাবাড়ীর বিপ্লব মন্ডল (৩৫) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ৯৩ জন। এরমধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ৯ জন ও এইচডিইউতে আছেন ১০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১৭ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮ জন।
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে রামপালের তিমির ঘোষ (৫০) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭০ জন, তার মধ্যে ৩৩ জন পুরুষ ও ৩৭ জন নারী। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১২ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬ জন।
এদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) আরটি পিসিআর ল্যাব ‘দূষিত’ হওয়ায় বন্ধ রয়েছে করোনার নমুনা পরীক্ষা। চালু হওয়ার ১৫ মাসের মাথায় প্রথমবারের মতো বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে তিনদিনের জন্য বন্ধ থাকছে এই ল্যাব। তবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে থাকা রোগীদের মধ্যে যাদের নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন হবে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে।
বুধবার (৩০ জুন) নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে বিষয়টি ধরা পড়ার পর কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার থেকে ল্যাবটির কার্যক্রম বন্ধ করে দূষণমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা প্রতিরোধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কমিটির সভাপতি এবং খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মো. মেহেদী নেওয়াজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ল্যাবটি বন্ধ থাকলেও আগে থেকেই মজুত থাকা প্রায় ২ হাজার নমুনা ঢাকায় পাঠিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। বৃহস্পতিবার থেকে যেসব নমুনা সংগ্রহ করা হবে সেগুলোও এ ল্যাবে এই তিনদিনে পরীক্ষার সুযোগ থাকছে না।
তবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে অবস্থান করা রোগীদের মধ্যে যাদের পরীক্ষার প্রয়োজন হবে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) পিসিআর ল্যাব থেকে পরীক্ষা করা হবে।
আরও পড়ুন: রামেকে রেকর্ড ২২ জনের মৃত্যু
এদিকে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর লকডাউনের প্রথম দিন ছিল বৃহস্পতিবার। সকাল থেকে দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে প্রশাসনের সদস্যদের। মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে পুলিশি চেকপোস্ট। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হলেই তাদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। নগরীর সকল দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকে নগরীর প্রাণকেন্দ্র ডাকবাংলো মোড়ে কয়েকটি ফলের দোকান ছাড়া বাকি সব বন্ধ ছিল। রোগী ও বয়স্ক মানুষ ছাড়া কাউকে বের হতে দিচ্ছে না প্রশাসনের সদস্যরা। নগরীর শিববাড়ি মোড়েও একই অবস্থা। অপ্রয়োজনে রাস্তায় মোটর সাইকেল বের করার অপরাধে কয়েকটি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা ও থানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে বিগত লকডাউনের সময় রাস্তায় গণপরিবহন দেখা গেলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রিকশা ছাড়া যান্ত্রিক পরিবহন বন্ধ ছিল।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম জানান, দেশে অস্বাভাবিক আকারে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। মন্ত্রিপরিষদের নির্দেশে লকডাউন চলমান রয়েছে। খুলনার অবস্থা খুব ভয়াবহ। রোগী ও বয়স্ক মানুষের প্রয়োজন ছাড়া সকলকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। আমাদের চারটি ভ্রাম্যমাণ আদালত শহরের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করছে। তাদের সাথে রয়েছে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা।
এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের একটি আভিযানিক দল বড় বাজারে দু জনকে ১ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম জানান, মহামারি করোনার সময় সরকারি নির্দেশ অমান্য করে বিয়ে সরঞ্জাম বিক্রেতা অসীম কুমারকে ১ হাজার টাকা জরিমানা ও অপ্রয়োজনে মোটরসাইকেল নিয়ে বাইরে বের হওয়ায় একজনকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
৩ বছর আগে
খুলনা বিভাগে করোনায় একদিনে রেকর্ড ২৮ জনের মৃত্যু
খুলনা বিভাগে একদিন পর আবারও করোনাভাইরাসে সর্বোচ্চ মৃত্যু রেকর্ড হয়েছে। বেড়েছে শনাক্তের সংখ্যাও।
গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিভাগে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আজও কুষ্টিয়ায় সর্বোচ্চ সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে বিভাগে ৭৬৩ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে এবং সুস্থ হয়েছেন আরও ১৯৪ জন।
রবিবার (২০ জুন) দুপুরে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক রাশেদা সুলতানা এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়ার সাতজন, খুলনার দুজন, বাগেরহাটের দুজন, সাতক্ষীরার দুজন, যশোরের চারজন, নড়াইলের একজন, মাগুরার একজন, চুয়াডাঙ্গার পাঁচজন এবং ঝিনাইদহের চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে শনিবার (১৯ জুন) বিভাগে সর্বোচ্চ ২২ জনের মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৮ জনের মৃত্যু হয়। তবে শুক্রবার বিভাগে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
আরও পড়ুন: খুলনা বিভাগে করোনায় আরও ১৮ মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৭৬৫
খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় চুয়াডাঙ্গায় গত বছরের ১৯ মার্চ। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৪৫ হাজার ৩২ জন। আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮২৫ জনে। এ সময় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৪ হাজার ৩২০ জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জেলাভিত্তিক করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, খুলনায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ২২৩ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১২ হাজার ৮২১ জন। মারা গেছেন ২০৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৯ হাজার ৯৯২ জন।
বাগেরহাটে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬৮ জনের। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৫৫০ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৫ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭৫৪ জন।
সাতক্ষীরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১৪ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৮৬৬ জন এবং মারা গেছেন ৬২ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৯৭৬ জন।
যশোরে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৭৩ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯ হাজার ৪৮০ জন। মারা গেছেন ১০৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৭৪৮ জন।
আরও পড়ুন: ফাইজারের টিকাদান সোমবার থেকে শুরু
২৪ ঘণ্টায় নড়াইলে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৪৪ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ২৭২ জন। মারা গেছেন ৩১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৪৭ জন।
মাগুরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোন রোগী শনাক্ত হয়নি। জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৩৮৫ জন। এ সময় মারা গেছেন ২৫ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ২২০ জন।
ঝিনাইদহে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৯০ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৩৯৬ জন। মারা গেছেন ৬৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৮৮২ জন।
২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়ায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১৬৪ জন। জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৩৩৮ জন। মারা গেছেন ১৫৪ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৮ জন।
চুয়াডাঙ্গায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৬৮ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৫৯১ জন। মারা গেছেন ৭৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯৩৮ জন।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে ২৪ ঘন্টায় করোনায় মৃত্যু ২, শনাক্ত ৬৮
মেহেরপুরে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১৯ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৩৩৩ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৯৫৫ জন।
৩ বছর আগে