বর্ষাকাল
বর্ষাকালে সুউচ্চ ঝর্ণা-পাহাড়ে হাইকিং ও ট্রেকিং: ঝুঁকির কারণ ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা
দেশের সুউচ্চ দুর্গম পাহাড়গুলো প্রতিনিয়ত এক অমোঘ আকর্ষণে কাছে টানে দুঃসাহসিক ভ্রমণপিপাসুদের। বিশেষ করে বর্ষাকালে ঝর্ণার পানিতে স্নান করার অভিজ্ঞতা নিতে মুখিয়ে থাকে হাইকার ও ট্রেকাররা। কিন্তু এই শ্বাসরুদ্ধকর সৌন্দর্যের প্রতি পরতে পরতে লুকিয়ে থাকে মৃত্যু ফাঁদ।
চলতি বছর ২১ জুন বান্দরবানের আলীকদমের মারাইংতাং পাহাড়ে খিঁচুনির পর রহস্যজনকভাবে মারা যান মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মো. ইফতেখারুল আহমেদ আবিদ (২০)। গত বছর ১২ আগস্ট এই একই অঞ্চলের সাইংপ্রা পাহাড় থেকে পা পিছলে পড়ে মারা যান ২৯ বছর বয়সি ট্যুর গাইড আতাহার ইসরাত রাফি।
এই মর্মান্তিক মৃত্যুগুলো একদিকে যেমন বেদনাদায়ক অন্যদিকে হাইকিং ও ট্রেকিং-এ উৎসাহী তরুণ প্রজন্মের জন্য নিরুৎসাহের কারণ। এই লক্ষ্যে দুর্ঘটনাগুলোর নেপথ্যের মূল কারণ এবং তা থেকে নিরাপদ থাকতে করণীয় নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের নিবন্ধ। চলুন, বর্ষাকালে হাইকিং ও ট্রেকিং-এ সম্ভাব্য ঝুঁকির কারণ এবং তা থেকে সতর্ক থাকতে জরুরি পদক্ষেপ জেনে নেওয়া যাক।
বর্ষাকালে হাইকার ও ট্রেকারদের মারাত্মক দুর্ঘটনার কারণসমূহ
পিচ্ছিল ঝিরিপথ ও পাহাড় ধস
সারাদিন একটানা বৃষ্টিপাত উঁচু ঝর্ণার ধাপগুলোসহ ভেতরের পাহাড়ি ট্রেইলগুলোকে অত্যন্ত পিচ্ছিল করে রাখে। কাদা ও ভেজা শিলাগুলোতে যে কোনো মুহূর্তে পা পিছলে যেতে পারে। খুব কম হলেও পায়ের এখানে সেখানে শিলার ধারালো জায়গাগুলোতে লেগে জখম হতে পারে। এছাড়াও বৃষ্টির জমে থাকা পানি পাহাড়ি মাটির গঠনকে দুর্বল করে পাহাড়-ধস ঘটায়। এসব ভূমিধ্বস আকস্মিকভাবে চলাচলের পথ বন্ধ করে দিতে পারে। এমনকি প্রচণ্ড প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এই ধসের নিচে পড়ার মতো মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
আরো পড়ুন: বান্দরবানের বাকলাই জলপ্রপাত ভ্রমণ: বাংলাদেশের অন্যতম সুউচ্চ ঝর্ণায় যাবার উপায় ও খরচ
আকস্মিক বন্যা
অতি বৃষ্টির ফলে পাহাড়ের ভেতর দিয়ে এঁকেবেঁকে চলা নদী এবং ছোট খালগুলো ভরে ফুলে-ফেঁপে উঠতে পারে। এই আকস্মিক বন্যা ট্রেইলসহ সামনে পড়া সেতু এবং ক্যাম্পসাইটগুলোকে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে। ভেসে যাওয়ার সময় প্রবাহিত পানির চাপে এলোমেলোভাবে পড়ে থাকা পাথর বা ধ্বংসস্তূপের সঙ্গে সংঘর্ষের ঝুঁকি বাড়ে। এর ফলে ট্রেকারদের ভয়ানক জখম হওয়াসহ মৃত্যুর হুমকি সৃষ্টি হয়।
ভারী বর্ষণে পথ খুঁজে পেতে সমস্যা
মুষলধারে বৃষ্টিতে এমনিতেই চারপাশের দৃশ্য আবছা হয়ে যায়। সেখানে ভারী বর্ষণে সর্পিলাকার ঝিরিপথ বা খালের সংকীর্ণ ধারাগুলো একেবারে অস্পষ্ট হয়ে যায়। এর মধ্যে আবার নিরাপদ ট্রেইলের সাইনবোর্ডগুলো খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি স্থানীয়রাও প্রায় ক্ষেত্রে অতি বৃষ্টির সময় বিড়ম্বনায় পড়ে যান। আর এই ধোঁয়াশার মধ্য দিয়ে জোর করে পথ চলা মানেই দিকভ্রান্ত হয়ে বিপজ্জনক রাস্তায় চলে যাওয়া।
ক্ষতিকর বন্যপ্রাণী
ভারী বৃষ্টিপাতের সময় মানুষের মতো বন্যপ্রাণীরাও বন্যা থেকে বাঁচতে আশ্রয় খুঁজে। এ সময় বিষাক্ত সাপ ও পোকামাকড়ের মতো নানা ধরনের ক্ষতিকর বাস্তুচ্যুত বন্যপ্রাণী সামনে পড়তে পারে। চারপাশ পানিতে টইটম্বুর থাকার মুহূর্তে এগুলোকে শনাক্ত করাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এসময় অতর্কিতে এগুলোর যেকোনোটির ওপর একবার পা পড়া মানেই কামড় খাওয়া। এই বিষাক্ত আক্রমণে থাকে দ্রুত সংক্রমণের ভয়। আর প্লাবিত অবস্থায় এমন সংক্রমণে মাথা ঠান্ডা রেখে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার কথা ভাবা দুস্কর হয়ে ওঠে।
আরো পড়ুন: বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড় ভ্রমণ: বাংলার দার্জিলিং যাওয়ার উপায় ও খরচের বৃত্তান্ত
অ্যাকিউট মাউন্টেন সিক্নেস এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা
হাইট সিক্নেস, পোকামাকড় বা স্যাঁতসেঁতে পরিবেশের তীব্র অ্যালার্জির মতো স্বাস্থ্য জটিলতা থাকা ব্যক্তিদের পর্বতারোহণ এড়িয়ে চলা উত্তম। বিশেষ করে বৃষ্টির সময়ে পাহাড়ি অঞ্চলে তীব্র মাউন্টেন সিক্নেসে আক্রান্তদের মাথাব্যথা ও বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে। অবিলম্বে এর চিকিৎসা না করা হলে আরও গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে। বর্ষার স্যাঁতসেঁতে ও আর্দ্র অবস্থা তীব্র শ্বাসকষ্ট থাকা ব্যক্তিদের প্রাণনাশের কারণ হতে পারে।
৪ মাস আগে
বর্ষাকালে জামা-কাপড়ের স্যাঁতসেঁতে ভাব ও দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়
বর্ষাকাল মানেই গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহ থেকে স্বস্তি। দিনভর রোদের প্রখর তাপ থেকে মুক্তি দিয়ে মুষলধারে বৃষ্টি সারা শরীর জুড়ে প্রশান্তির পরশ বুলায়। কিন্তু নিত্যদিনের স্বাস্থ্যকর পোশাক-পরিচ্ছদের প্রসঙ্গ যখন আসে, তখন এই ভেজা আবহাওয়াটাই হয়ে ওঠে বিড়ম্বনার কারণ। ভালো করে ধুয়ে শুকানোর পরেও নতুন জামা-কাপড়ে লেগে থাকা অপ্রীতিকর গন্ধ এ সময়ের স্বাভাবিক বিষয়। দুর্গন্ধের পাশাপাশি কাপড়ের স্যাঁতসেঁতে ভাব রীতিমতো বিরক্তির উদ্রেক করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে চলুন, বৃষ্টির মৌসুমে জামা-কাপড়ের দুর্গন্ধের কারণ এবং তা দূর করার ঘরোয়া উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
বর্ষাকালে কাপড়ের স্যাঁতসেঁতে ভাব ও দুর্গন্ধের কারণ
বাতাসে আর্দ্রতার আধিক্য
বৃষ্টির দিনগুলোতে বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যায়। এই উচ্চ আর্দ্রতা বাষ্পীভবন প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়। ফলশ্রুতিতে জামা-কাপড় পরিপূর্ণভাবে শুকাতে অনেক সময় লেগে যায়। বৃষ্টির কারণে চারপাশের স্যাঁতসেঁতে অবস্থার প্রভাব পড়ে কাপড়ের উপর। এমনকি এই আর্দ্রতা ড্রয়ারে রাখা কাপড়গুলোকেও স্যাঁতসেঁতে করে তোলে।
কাপড়ের মধ্যে বিশেষ করে তুলা এবং উলের মতো প্রাকৃতিক উপাদান থেকে তৈরি পোশাকগুলো বাতাস থেকে আর্দ্রতা শোষণ করে। ফলে প্রথম দিকে সাময়িক শুষ্কতা থাকলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই কাপড়গুলোতে স্যাঁতসেঁতে ভাব চলে আসে।
আরও পড়ুন: মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়
কাপড় শুকানোর পর্যাপ্ত পরিবেশের অভাব
সূর্যের তাপ ও অতিবেগুনী রশ্মি উভয়ই বাষ্পীভবন এবং ব্যাকটেরিয়া হত্যা করতে সহায়তা করে। তাই কাপড় সঠিকভাবে শুকানোর ক্ষেত্রে সূর্যালোকের ভূমিকা সর্বাধিক। কিন্তু বর্ষাকালে অধিকাংশ সময় মেঘলা অবস্থা থাকার কারণে সরাসরি সূর্যালোক পাওয়া সম্ভব হয় না। এর ফলে কাপড়ে পরিপুর্ণ শুষ্কতা আসতেও অনেক সময় লাগে।
বর্ষাকালে বৃষ্টির কারণে অনেক সময় বারান্দাতেও কাপড় মেলে দেওয়ার উপায় থাকে না। এ অবস্থায় কাপড় শুকানোর একমাত্র অবলম্বন ভেতরের ঘরগুলো। ঘরের অভ্যন্তরীণ পরিবেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বায়ুচলাচলের অভাব থাকে। তাছাড়া দিনভর বৃষ্টি ঘরগুলোকে আগে থেকেই স্যাঁতসেঁতে করে রাখে, যে পরিবেশ কাপড় শুকানোর জন্য একদমি অনুকূল নয়।
জীবাণুর বংশবিস্তার ও সংক্রমণ
দীর্ঘ সময় ধরে স্তূপ করে বা দড়িতে মেলে রাখা কাপড় ব্যাকটেরিয়ার বংশবিস্তারের জন্য আদর্শ জায়গা। এই অণুজীবগুলো আর্দ্র অবস্থায় দ্রুত বংশবিস্তার এবং সংক্রমণ ঘটাতে পারে। এর ফলে শুধু খারাপ গন্ধই নয়; নানা ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও সৃষ্টি হয়। সম্পূর্ণভাবে শুকানোর আগেই যারা কাপড় পড়ে নেন তাদের এই ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
আরও পড়ুন: ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়
বর্ষাকালে বৃষ্টি ও তার পরের কিছু সময় বাদে অন্যান্য সময়গুলোতে গরম থাকে। এর সঙ্গে উচ্চ আর্দ্রতা সম্পন্ন বাতাস যুক্ত হয়ে সৃষ্টি করে ঘামের। আর ঘর্মাক্ত শরীরে যেখানে শুকনো কাপড়ই বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি করে, সেখানে হাল্কা ভেজা পরিধেয়গুলো রীতিমতো অসহনীয় করে তোলে।
তাছাড়া এই ঘাম কাপড়ের স্যাঁতসেঁতে অবস্থা বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে ব্যাকটেরিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের দূষকের জন্য অনুকূল পরিবেশের সৃষ্টি করে।
ঘরোয়া উপায়ে বর্ষাকালে কাপড়ের স্যাঁতসেঁতে ভাব ও দুর্গন্ধ দূর করার পদ্ধতি
ধোয়ার জন্য কাপড় স্তূপ করে না রাখা
অনেকেই তাদের দৈনন্দিন কাপড়গুলোকে ধোয়ার জন্য সব একসঙ্গে করে একটি লন্ড্রি ব্যাগে বা ঝুড়িতে ভেতরে ফেলে রাখেন। বদ্ধ জায়গায় এভাবে কাপড় ফেলে রাখলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুর্গন্ধ আরও প্রকোট আকার ধারণ করে। বর্ষার মৌসুমে এই কাপড়গুলো ধুয়ে ফেলার পরেও দুর্গন্ধ দূর হয় না।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত দাবদাহে যেভাবে ঘরের ছাদ ঠান্ডা রাখবেন
মূলত জামা-কাপড়ের সঙ্গে লেগে থাকা ঘামসহ অন্যান্য শারীরিক তরল পদার্থ প্রতিটি পোশাকেই দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। অতঃপর যত বেশি পোশাক একসঙ্গে এক জায়গায় জমা করা হয়, সব পোশাকের গন্ধ মিলে দুর্গন্ধ আরও খারাপ হতে থাকে।
তাই জামা-কাপড়গুলোকে পরস্পরের মাঝে অল্প জায়গা রেখে দড়িতে ঝুলিয়ে রাখা উচিৎ। এমনকি কাপড়গুলো যদি কয়েক দিন পরে ধোয়ার জন্য রাখা হয়, তাহলেও সেগুলোকে আলাদা ভাবে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। এতে করে কাপড়ের ভেতরে ও বাইরে উভয় অংশে কিছুটা বাতাস পায়, যা সেগুলোকে খারাপ গন্ধ থেকে দূরে রাখে।
নিয়মিত কাপড় ধোয়া
বৃষ্টির কারণে কাপড় শুকানোর পর্যাপ্ত উপায় না থাকার কারণে অনেকেই কাপড় ধোয়ার জন্য রোদ ওঠার অপেক্ষা করেন। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে দিনের পর দিন রোদ্রের দেখা না পাওয়াটা খুব স্বাভাবিক বিষয়। তাই পরিধেয় পোশাক পরিষ্কারের ক্ষেত্রে এই দীর্ঘ বিরতিটা একদমি উচিৎ নয়। বরং স্যাঁতসেঁতে অবস্থায় দীর্ঘ দিন পরে থাকার চেয়ে পরিষ্কার অবস্থায় হাল্কা ভেজা থাকা ভালো। একইভাবে ধুয়ে মেলে রাখার পর হাল্কা ভেজা কাপড়ের গন্ধের তুলনায় স্তূপ করে রাখা নোংরা কাপড়ের গন্ধ অনেক খারাপ।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত গরমে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য রক্ষার উপায়
আর একই কাপড় দুই বা ততোধিক দিন পড়ে থাকার তো কোনও প্রশ্নই নেই। প্রতিদিন নিয়মিত পরিধেয়গুলো ধুয়ে ফেলা বৃষ্টির মৌসুমে অপ্রীতিকর গন্ধ অপসারণে অনেকটা সহায়ক হয়।
ভিনেগার, বেকিং সোডা বা লেবুর রস ব্যবহার করা
প্রতিদিন কাপড় ধোয়ার মাধ্যমে সতেজ গন্ধ দেওয়ার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ওয়াশিং পাউডার যথেষ্ট নাও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ডিটারজেন্টের সঙ্গে পানিতে কিছুটা ভিনেগার বা বেকিং সোডা মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এটি খারাপ গন্ধকে দূর করে কাপড়ের সুগন্ধ নিশ্চিত করতে পারে।
বেকিং সোডায় কাপড় ভিজিয়ে রাখলে তা ডিওডোরাইজার বা দুর্গন্ধনাশকের কাজ করে। জামা-কাপড় থেকে দুর্গন্ধ দূর করার পাশাপাশি এটি কাপড়কে নমনীয় করতে সাহায্য করে। এর জন্য ধোয়া সময় প্রায় আধ কাপ বেকিং সোডাই যথেষ্ট।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি
আর ভিনেগার ডিটারজেন্টে থাকা দস্তার লবণ পৃথক করে কাপড়ের লেগে থাকা ময়লা দূর করে। ভিনেগারের ব্যাকটেরিয়া-বিরোধী বৈশিষ্ট্যও রয়েছে।
ভিনেগার এবং বেকিং সোডা উভয়ই কাপড়ে তাদের নিজস্ব কোনও গন্ধ ছড়ায় না। ফলে কাপড় গন্ধহীন, পরিষ্কার এবং রীতিমতো তাজা হয়ে ওঠে।
হাতের কাছে কোনো কিছু না থাকলে নিদেনপক্ষে লেবুর রস দিয়েও কাপড়ের স্যাঁতসেঁতে গন্ধ দূর করা যায়। এর জন্য জামা-কাপড় ভিজিয়ে রাখা পানিতে অল্প পরিমাণে লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে।
আরও পড়ুন: বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন
ঘরের ভেতরে কাপড় শুকানোর সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা
সূর্যের প্রাকৃতিক অতিবেগুনী রশ্মি কাপড়ের অপ্রীতিকর গন্ধ থেকে মুক্তির জন্য সবথেকে উৎকৃষ্ট উপায়। বর্ষাকালের যে দিনগুলোতে রোদের দেখা মিলবে সে সময় বারান্দা, ছাদ বা উঠোনই কাপড় মেলে দেওয়ার উপযুক্ত স্থান। কিন্তু অন্যান্য দিনগুলোতে কাপড়গুলোর সর্বোচ্চ শুষ্কতা নিশ্চিতকরণে ঘরের ভেতরে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
কেননা ঘরের বাইরে ভেজা কাপড়গুলো উচ্চ আর্দ্রতার বাতাসের সর্বাধিক সংস্পর্শ পাবে। সেদিক থেকে ঘরের ভেতরটা সেই ক্ষতিকর আর্দ্রতা থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকে। তাই জামা-কাপড় জানালার ধারে উপরে বা ফ্যানের কাছাকাছি কোথাও ঝুলিয়ে রাখা যেতে পারে।
এর জন্য অনেকেই ঘরের ভেতরে দড়ি টাঙিয়ে কাপড়গুলো চলন্ত ফ্যানের নিচে ঝুলিয়ে রাখেন। এটি বেশ ভালো একটি উপায়। তবে এ ক্ষেত্রে যে ঘরটিতে বেশ ভালো বায়ু চলাচল রয়েছে, সে ঘরকে দড়ি টাঙানোর জন্য বেছে নেওয়া উচিৎ। এতে করে কাপড় শুকানোর প্রক্রিয়া অপেক্ষাকৃত দ্রুত হতে পারে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু প্রতিরোধ: বাড়িকে মশামুক্ত রাখার প্রাকৃতিক উপায়
শুকনো কাপড়ের জন্য শুকনো জায়গা নিশ্চিত করা
ওয়ারড্রোব বা ড্রেসারে দীর্ঘদিন বাদে পরিধানের জন্য নির্ধারিত পোশাকগুলো সুন্দরভাবে ভাঁজ করে রাখা হয়। কিন্তু দৈনন্দিন পরিধানের কাপড়গুলো সাধারণত বাইরে হ্যাঙ্গার বা আলনাতেই থাকে। এগুলো খুব দ্রুত আর্দ্রতাপূর্ণ বাতাসের সান্নিধ্যে আসে। এ ক্ষেত্রে কাপড়গুলো একটার ওপর আরেকটা না রেখে আলাদাভাবে দুয়েক ভাঁজ দিয়ে পরিপাটি করে রাখা উচিৎ। সম্ভব হলে প্রতিদিনের কাপড়গুলোর জন্যও আলাদা ওয়ারড্রোব রাখার চেষ্টা করা উচিৎ।
তাছাড়া অত্যধিক আর্দ্র আবহাওয়ার দিনগুলোতে ওয়ারড্রোবই আর্দ্রতা থেকে নিরাপদ থাকে না। এ অবস্থায় আর্দ্রতা শোষণ করার জন্য ড্রেসারে সিলিকন পাউচ, চক বা বেকিং সোডাসহ একটি ছোট কাপ রাখা যায়। এগুলো ডিহিউমিডিফায়ার বা আর্দ্রতা শোষক হিসেবে কাপড় থেকে দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করবে।
পরিশিষ্ট
বর্ষাকালে জামা-কাপড়ের দুর্গন্ধের মুল কারণ হলো বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকা। এর ভিত্তিতেই পরবর্তীতে স্যাঁতসেঁতে অবস্থা; অতঃপর জীবাণুর বংশবিস্তারের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় দুর্গন্ধ। এই আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে চলতে হলে কাপড় শুকনো রাখার কোনও বিকল্প নেই। দুর্গন্ধ দূরীকরণে ভিনেগার, বেকিং সোডা এবং লেবুর রস উপযুক্ত উপকরণ।
এরপরেও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের স্বার্থে ধোয়ার আগে বা পরে কখনই কাপড় অবিন্যস্তভাবে স্তূপ করে রাখা যাবে না। প্রতিদিন কাপড় পরিষ্কার এবং তা সঠিকভাবে শুকানোর এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণের মাধ্যমে বৃষ্টির দিনগুলোতে জামা-কাপড়ের দুর্গন্ধজনিত বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি মিলবে।
আরও পড়ুন: তীব্র গরমে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে উপকারী শাকসবজি
৫ মাস আগে
দক্ষিণাঞ্চলের ৮টি নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে
বর্ষাকাল ও উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আটটি নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নদীর পানিও বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে।
রবিবার (১ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ১৯টি নদীর পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করা হয়। রবিবারের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৮টি নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে, দক্ষিণাঞ্চলে এখন পর্যন্ত বন্যায় কোনো প্রভাব পড়েনি বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপরে, কুড়িগ্রামে বন্যার আশঙ্কা
১ বছর আগে
শিশুকে ডেঙ্গু থেকে রক্ষার উপায়
ডেঙ্গু মশাবাহিত ভাইরাল রোগ। সাধারণত বর্ষাকালে এর প্রকোপ বেড়ে যায়। তবে কয়েক বছর ধরে শুধু বর্ষাকালের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই এডিস মশার আক্রমণ। বছরের অনেকটা সময় জুড়েই থাকছে ডেঙ্গুজ্বর। সবচেয়ে বড় আশঙ্কার কথা হলো, চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা অনেক বেশি।
শিশুদের ডেঙ্গু সুরক্ষা মূলত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার উপর নির্ভরশীল।
তাই আপনার শিশুকে প্রাণঘাতী এই রোগ থেকে রক্ষা করতে হলে মেনে চলতে হবে কিছু বিষয়।
মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা
মূলত এডিস মশার কামড় এড়িয়ে চলাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রধান উপায়।
এডিস মশা সাধারণত আবদ্ধ পানিতে বংশবৃদ্ধি করে। তাই মশার আবাসস্থল ধ্বংস করে মশার বংশবিস্তার প্রতিরোধ করতে হবে।
আপনার বাড়ির কাছাকাছি কোথাও এডিস মশার বংশবিস্তারের উপযোগী পানি জমে আছে কি না তা খেয়াল রাখুন।
তিন দিন পরপর পানির খালি বোতল, ফুলের টব, ভাঙা বালতি-মগ, পুরোনো টায়ার ও ডাবের খোলা প্রভৃতিতে জমে থাকা পানি ফেলে দিন।
মশা বর্জ্য ও ময়লায় আকৃষ্ট হয়। তাই আপনার বাড়ি ও বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখুন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে কাতর রাজধানী, হাসপাতালে সিট সংকট
মশা নিরোধক ব্যবহার করুন
শরীরের উন্মুক্ত স্থানে মশা ও অন্যান্য পোকামাকড় প্রতিরোধক ক্রিম বা স্প্রে ব্যবহার করুন। তবে এগুলো ব্যবহারের সময় শিশুর বয়স ও শিশুর ত্বকের জন্য ক্ষতিকর কি না সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখুন। প্রতিরোধক কেনার সময় প্যাকেটের গায়ে থাকা নির্দেশনা ভালোভাবে পড়ুন।
মশারি
মশার কামড় থেকে বাঁচতে ঘুমানোর সময় শিশুর বিছানায় মশারি ব্যবহার করুন। বিশেষ করে ভোর ও রাতে ডেঙ্গু মশা সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে, এই সময় যাতে আপনার বাড়িতে মশা ঢুকতে না পারে তা নিশ্চিত করতে এসময়গুলোতে অবশ্যই জানালা-দরজা বন্ধ রাখুন।
সুরক্ষার জন্য পোশাক
শিশু ঘরের বাইরে যাওয়ার সময় তাদের যথাসম্ভব গা ঢাকা পোশাক পরান। এক্ষেত্রে ফুলহাতা শার্ট ও টি-শার্ট, ফুল প্যান্ট, লম্বা ঝুলের ফ্রক, মোজা ও জুতা পরান।
ডেঙ্গু সচেতনতা
প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনকে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতন করুন। তাদের বাড়ি-ঘর ও আশেপাশের এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখতে উদ্বুদ্ধ করুন।
স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন এবং শিশুর জ্বর হলে দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব ডেঙ্গু পরীক্ষা করুন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু প্রতিরোধ: বাড়িকে মশামুক্ত রাখার প্রাকৃতিক উপায়
জিমে অনুশীলনের সময় সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়ানোর উপায়
১ বছর আগে
বর্ষাকালে বাংলাদেশের সেরা ১০টি ভ্রমণ স্থান
অপূর্ব জলপ্রপাত ও পর্বতমালা থেকে শুরু করে মেঘাচ্ছন্ন আকাশের নিচে সমুদ্র সৈকত, ভ্রমণপিপাসুরা বাংলাদেশের প্রতিটি কোণায় খুঁজে পাবেন প্রকৃতির উদারতা। আর যদি বর্ষাকালে বাংলাদেশের সেরা ভ্রমণ স্থানগুলো খুঁজে বের করতে হয়, তাহলে বলতে হবে বর্ষাস্নাত বাংলাদেশ আরো বেশি মনোরম, মনোমুগ্ধকর এবং আবেদনময়ী। বৃষ্টির দিনে জানালা থেকে হাত বাড়িয়ে হালকা বৃষ্টির ফোঁটা অনুভব করা সর্বাঙ্গে নৈসর্গিক শিহরণ জাগায়। তবে জাদুকরী ঋতুটিকে পুরোপুরি উপভোগ করতে হলে পা ফেলতে হবে ঘরের বাইরে। চলুন, জেনে নেয়া যাক বর্ষণমুখর দিনে ভ্রমণের জন্য দারুণ কয়েকটি জায়গা সম্পর্কে।
বর্ষাকালে ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান
রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট, সিলেট
সিলেট থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে রাতারগুলের এই ডুবে যাওয়া বনে রয়েছে প্রায় ৭০-এর বেশি প্রজাতির গাছপালা এবং প্রাণী।
বর্ষাকালে ভারত থেকে অত্যধিক পানি নদী দিয়ে প্রবেশ করলে বনের সাথে যুক্ত গোয়াইন নদী প্লাবিত হয়। আর তখনি বনটি তার স্বর্গীয় সৌন্দর্য্যে জীবন্ত হয়ে ওঠে। বনের পুরোটাই পানির নিচে তলিয়ে যায় এবং গাছের ছাউনি ছাতার মতো বনকে ঢেকে দেয়। এ সময় নৌকায় করে নদী পেরোনোর সময় পাখির কিচিরমিচির ও পাতায় বৃষ্টির পানি পড়ার মৃদু শব্দের প্রতিধ্বনি শুনতে পাওয়া যায়।
সিলেট শহরের খাদিম চা বাগান ও খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে অল্প সময়ে শ্রীঙ্গি ব্রিজ অথবা জাফলং গামী যে কোন গাড়িতে করে সারিঘাট হয়ে গোয়াইনঘাট বাজার। রাতারগুল জলাবন ঘোরার জন্য শ্রীঙ্গি ব্রিজ বা গোয়াইনঘাট বাজার থেকে ডিঙ্গি নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়।
পড়ুন: ভ্রমণের উপকারিতা: দেশ বিদেশ ভ্রমণ আপনার মধ্যে কি পরিবর্তন আনতে পারে?
টাঙ্গুয়ার হাওর, সুনামগঞ্জ
বর্ষাকালে শুধু সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয়ের সেই আদিম প্রাকৃতিক দৃশ্যই নয়; একটি হাওরের আরও অনেক কিছু দেয়ার আছে। পূর্ণিমার রূপালী মোহাবিষ্ট নৌকার ছাদে কাটানো একটি রাতের কথা কল্পনাতেও ভালো লাগা ছড়িয়ে দেয়। বৃষ্টির পর ত্বকে চাঁদের আলো মেখে আকাশের বিশালতার নীচে শুয়ে থাকার অনুভূতি অতুলনীয়। আর হাওরের গভীরে ঢুকতে শুরু করলে আপনার যান্ত্রিক জীবনের সমস্ত তাড়াহুড়ো জলের গুঞ্জনের মাঝে নিমেষেই হারিয়ে যাবে।
সুনামগঞ্জ থেকে সুরমা নদীর উপর বড় ব্রীজটির কাছেই পাওয়া যায় তাহিরপুরের গাড়ি। আর তাহিরপুরের নৌকা ঘাটে অপেক্ষা করে টাঙ্গুয়ার হাওর বেড়ানোর নৌকা।
পড়ুন: সিলেট শহরের দর্শনীয় স্থান: অতুলনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক নগরী
বিছানাকান্দি, সিলেট
রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টের মতো সিলেটের বিছানাকান্দিতেও বর্ষা মৌসুমে ফুল ফোটে। মেঘালয়ের সেভেন সিস্টার থেকে নেমে আসা স্রোত বিছানাকান্দিকে পাহাড়, জলপ্রপাত এবং নদীর মিলনে পরিণত করে। এই জায়গাটির বিশেষত্ব হল এর মনোরম খাসিয়া পর্বতগুলো। সেগুলো এতই উঁচু যে মাঝে মাঝে পাহাড়ের চূড়া ছুঁয়ে মেঘ দেখতে পাওয়া যায়। বর্ষায় পানির বিশাল স্রোত ঝরনা হয়ে হ্রদ তৈরি করে পিয়াইন নদীর সাথে সংযুক্ত হয় যার দৃশ্য সত্যিকার অর্থে নেশা ধরিয়ে দেয় যখন।
বিছানাকান্দি ভ্রমণে প্রথমে সিলেটের আম্বরখানা থেকে হাদারপার যেতে হবে। এখানকার নৌকা ঘাটের নৌকাগুলোই বিছানাকান্দি নিয়ে যায়। তবে জায়গাটি ষোল আনা উপভোগ করতে সবাই বিছানাকান্দি ও পান্থুমাইয়ের জন্য একত্রে নৌকা ভাড়া করে নেয়।
পড়ুন: ঢাকার কাছেই প্রকৃতির মাঝে ক্যাম্পিং সাইট
সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বন, খুলনা
বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন এবং একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হওয়ায় প্রতিটি প্রকৃতিপ্রেমি নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চান প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের এই অপার প্রাচুর্যে। সবুজের সতেজতায় ভিজিয়ে রাখা ছাড়াও সুন্দরবন ছোট ছোট দ্বীপে পরিপূর্ণ যেগুলো সারা দিন উপভোগ করা যায়, বিশেষ করে সূর্যাস্তের সময়। ঘন বনের মধ্য দিয়ে হাঁটার ক্ষেত্রে হিরন পয়েন্ট, বা নীলকোমল, সুন্দরবনে ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থান।
একটু সময়সাপেক্ষ হলেও, সুন্দরবন পৌছানোর জন্য স্টিমার হয়ে প্রথমে খুলনা যাত্রাটি গ্রামবাংলার মনোরম প্যানোরামার অনুভূতি দিবে। খুলনা থেকে সুন্দরবনে যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম নৌ পরিবহন। এক্ষেত্রে বন পরিদর্শন করার জন্য একটি ব্যক্তিগত মোটর লঞ্চ বা স্পিডবোট ভাড়া করা যেতে পারে।
পড়ুন: ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ গাইড: দর্শনীয় স্থান সমূহ, খরচ
জাফলং, সিলেট
বাংলাদেশের এই সীমান্তবর্তী অঞ্চলের ওপারে আছে ভারতের ডাওকি। ডাওকি নদী পাহাড় থেকে জাফলং হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। জাফলংয়ের বাংলাদেশ সীমান্তে দাঁড়িয়ে ভারতের সুউচ্চ পর্বতশ্রেণী দেখা যায়।
এসব পাহাড় থেকে নেমে আসা জলপ্রপাত এক মনোরম দৃশ্যের অবতারণা করে। এছাড়া ভারতের ডাউকি বন্দরের ঝুলন্ত সেতুও পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ। বর্ষার সময় ভারতীয় সীমান্তে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সর্পিলাকার ডাওকি নদী যেন তার প্রাণশক্তি ফিরে পায়। ডাওকি নদীর পানির স্বচ্ছতাও জাফলংয়ের অন্যতম আকর্ষণ।
ঢাকা থেকে সিলেট পৌছার পর শহর থেকে বাসে বা সিএনজি অটোরিকশায় দুই ঘন্টার মধ্যেই জাফলং যাওয়া যায়।
পড়ুন: ঘুরে আসুন মালদ্বীপ: অপরূপ এক দ্বীপদেশ ভ্রমণ গাইড
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, পটুয়াখালি
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এই ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতটি পর্যটকদের কাছে সমুদ্র কন্যা নামে পরিচিত। এটি বাংলাদেশের একমাত্র সমুদ্র সৈকত যেখানে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত উভয়ই দেখা যায়।
এখানকার পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণগুলো হচ্ছে ৩৬-ফুট লম্বা সোনার বৌদ্ধ মূর্তি, শুটকি পল্লী, ফাতরার চর, লাল কাঁকড়ার দ্বীপ এবং মনোমুগ্ধকর মায়ামী গঙ্গামতির চর। এছাড়া যে কুয়ার নামে এই শহরের নামকরণ সেই ঐতিহাসিক কুয়া দেখতেও ভ্রমণপিপাসুরা ভিড় জমান।
পূর্বে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা যেতে প্রায় ১২ থেকে ১৩ ঘন্টা লাগলেও, পদ্মা সেতু হওয়ার পর এই সময়টা কমে নেমে এসেছে প্রায় ৫ ঘন্টায়। তাই এখন কুয়াকাটাকে আরো অভিজাত করে সাজানো হচ্ছে পর্যটকদের জন্য।
পড়ুন: হিমাচল, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থান ও খরচ
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, কক্সবাজার
১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সমুদ্র সৈকতটি মুলত শীতকালে দর্শনার্থীতে পরিপূর্ণ থাকে। কিন্তু যারা এর বর্ষাকালের রূপ দেখেননি তারা জীবনে দারুণ কিছু থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সামনে অবিরাম নীল জলরাশির সাথে মেঘাচ্ছন্ন আকাশের মিথস্ক্রিয়ার কোন কিছুর সাথে তুলনা চলে না।
আর অবিরাম বর্ষণ ভেজা হাওয়ার পূর্ণতা দিয়ে এক অদ্ভূত মুগ্ধতা সৃষ্টি করে। স্নান, সূর্যস্নান, সাঁতার কাটা এবং সার্ফিংয়ের জন্য সমুদ্র সৈকতের নিজস্ব জনপ্রিয়তা রয়েছে। নিরালায় এই সুন্দরের স্বাদ নিতে অনেকেই এই অফপিক সময়টাকেই বেছে নেন।
ঢাকা থেকে সড়ক কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পৌছাতে সময় লাগে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা, যেখানে আকাশপথে সময় লাগে মাত্র এক ঘণ্টা।
পড়ুন: বাংলাদেশের সেরা ১০টি প্রাকৃতিক ঝর্ণা, জলপ্রপাত কোথায়? কীভাবে যাবেন?
শ্রীমঙ্গল চা-বাগান, মৌলভীবাজার
বিপুল সংখ্যক চা বাগান এবং সাত রঙের চায়ের উৎপত্তির কারণে মৌলভীবাজারের এই উপজেলাটিকে বলা হয় বাংলাদেশের চায়ের রাজধানী। শ্রীমঙ্গলের প্রবেশ পথেই স্বাগত জানাবে সাতগাঁও চা-বাগানের সহায়তায় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের তৈরি চা-কন্যা ভাস্কর্য।
চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই)-এর ভেতরে দক্ষিণ দিকে পড়বে ফিনলের চা-বাগান। ভানুগাছের পথ ধরে সামনে এগোলেই দেখা যাবে জেরিন টি-এস্টেট। তারপর লাউয়াছড়ার কিছু আগেই জঙ্গলঘেরা পথে হাটলে পাওয়া যাবে নূরজাহান টি-এস্টেটের।
শ্রীমঙ্গল থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে কমলগঞ্জ যাওয়ার পথে পড়বে লাউয়াছড়ার মনোরম উদ্যান। কমলগঞ্জ থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ঘেরা চা-বাগানের মধ্যে চোখে পড়বে সুবিশাল মাধবপুর লেক। মাধবপুর লেক থেকে ধলাই সীমান্ত পর্যন্ত চলে যাওয়া পথের দুপাশে শুধুই চা-বাগান।
সিলেটের বিমান বন্দর, রেলওয়ে বা বাস ষ্টেশন থেকে ট্যাক্সি ভাড়া করে অনায়াসেই শ্রীমঙ্গল যাওয়া যাবে। গাড়ি রিজার্ভ করে চা-বাগানগুলো ঘুরে দেখা যেতে পারে।
পড়ুন: কলকাতা ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থানে যাওয়ার উপায় ও খরচ
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর, সিলেট
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর সিলেটের উত্তর থেকে ৩৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে, এটি সিলেটের বৃহত্তম পাথর উত্তোলন স্থান। এই দর্শনীয় স্থানটির প্রধান আকর্ষণ হলো- মেঘালয়ের মেঘ, পাহাড়ী ঝরনা, এবং ধোলাইয়ের বালুকাময় উপকূল।
বর্ষার পাহাড়ি ঢলের সাথে নেমে আসা সাদা পাথরগুলো ধলাই নদের বুকে মিশে ভোলাগঞ্জের সৌন্দর্য্য বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে ভোলাগঞ্জ যাওয়ার সড়কের অবস্থা খুব একটা আরামদায়ক নয়। সিলেট সদরের যে কোন স্থান থেকে বাস, সিএনজি, লেগুনা বা প্রাইভেট কারে করে পৌছা যায় প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরত্বের ভোলাগঞ্জে।
পড়ুন: সিলেট শহরের দর্শনীয় স্থান: অতুলনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক নগরী
নীলাচল, বান্দরবান
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সুদূর সমুদ্রের স্পর্শ থেকে শুরু করে গাছপালা ও পাখির কিচিরমিচিরে পরিপূর্ণ এই প্রকল্পটি ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে উদ্বোধন করা হয়েছিল। এই পর্যটন কেন্দ্রটি এত উচ্চতায় অবস্থিত যে, এর সৌন্দর্য আকাশের বিশালতাকেও হার মানায়।
নীলাচলে পর্যটকদের সুবিধার্থে ছোট-বড় অনেক রেস্ট হাউস রয়েছে। আর শিশুদের খেলার জন্যও রয়েছে আকর্ষণীয় ব্যবস্থা। নামের সঙ্গে মিল রেখে প্রতিটি বিশ্রামাগারের রংও করা হয়েছে নীল। বর্ষায় ভেজা প্রকৃতির মায়া বিমোহিত করবে বৃষ্টিভেজা সকালে। দূরের তাজা বন, আকাশে কালো মেঘ এবং দূর সৈকতের গর্জন সবকিছু মিলে প্রকৃতির এক অপূর্ব দৃশ্য তৈরি করে।
ঢাকা থেকে বাসে সরাসরি বান্দরবান যাওয়া যায় ১০ থেকে ১১ ঘন্টার মধ্যে। অতঃপর বান্দরবান থেকে নীলাচল যেতে সিএনজি ভাড়া নিতে হয় অথবা কোন গ্রুপের সাথে উঠে পড়তে হয় চান্দের গাড়ি বা জিপে।
পড়ুন: গরমকালে কম খরচে বাংলাদেশের কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবেন?
পরিশিষ্ট
বর্ষাকালে বাংলাদেশের সেরা ভ্রমণ স্থানের মধ্যে এই ১০টি নদীমাতৃক দেশটির শুধুমাত্র একটি দিক পূরণ করবে। বৃষ্টির মৌসুমে পুরো বাংলাদেশটাই যেন সেজে উঠে আপন মায়ায়। নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় জলজ সৌন্দর্য্যের পরশ পাওয়ার এটিই সর্বোত্তম সময়।
ভ্রমণ করার জন্য যে দর্শনীয় স্থানটিই বেছে নেবেন, তা আপনার বাকি জীবনকে প্রভাবিত করবে। তাই ভ্রমণের জন্য জায়গাটির সাথে সামঞ্জস্য উপযুক্ত সময়টাও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে ঋতুটি পোকা-মাকড় ও রোগ-জীবাণু ছড়ানোর জন্যও অনুকূলে থাকে বিধায় নিরাপদের ভ্রমণের তাগিদেই ভ্রমণপিপাসুদের নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখা উচিত।
২ বছর আগে
খুলনায় এবার ইলিশের চড়া দাম
খুলনার বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেশি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
খুলনার বেশ কয়েকটি মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এবার বাজারে তুলনামূলক ইলিশের সংখ্যা খুবই কম। বাজারে যে ইলিশ আছে তার আকাশ ছোঁয়া দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। আর এসব ইলিশ হচ্ছে নদ নদীর ইলিশ।
শেখ সাদি নামের এক ক্রেতা বলেন, এ বছর ইলিশের দাম আকাশ ছোঁয়া। দামের কারণে মাছটি সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। অথচ এই বর্ষাকালে ইলিশের দাম ছিল ক্রেতাদের নাগালে। মাইকিং করে বাজারে মাছ বিক্রি করা হতো। কিন্তু এ বছর ভরা মওসুমেও ইলিশ জোটেনি অনেকের ভাগ্যে।
আরও পড়ুন: বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে চায় সরকার: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
কেসিসি রূপসা মৎস্য আড়তের মেসার্স মদিনা ফিস ট্রেডার্সের পরিচালক মো. আবু মুছা বলেন, খুলনায় এবার ইলিশের দাম স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। দেড় কেজি ওজনের নদীর ইলিশ ১৭০০-১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ২০০ গ্রামের ইলিশ ১৫০০ টাকা। এক কেজির ইলিশ ১৩০০-১৪০০ টাকা। যা এখন থাকার কথা ছিল ৭০০-৮০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশের দাম ১১০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিনি বলেন, এসময় ইলিশের সরবরার বেশি থাকার কথা হলেও সরবারহ কম।
খুলনা কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সহ-সভাপতি বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাগরে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ রয়েছে। যে কারণে বাজারে ইলিশের সংকট। ২৩ জুলাই এর পর সাগরে মাছ ধরা শুরু হলে বাজারে মাছের সরবরাহ বেড়ে যাবে। তখন এ সংকট থাকবে না।
আরও পড়ুন: ইলিশ আহরণ বন্ধের সময় মৎস্যজীবীদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান
২ বছর আগে
বর্ষাকালে অন্তত তিনটি করে গাছ লাগান: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে আরও সবুজ করতে এই বর্ষাকালে দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযানে যোগ দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সদস্যসহ সবাইকে বর্ষাকালে ফল, কাঠ ও ভেষজ জাতীয় অন্তত তিনটি চারা রোপণের আহ্বান জানান।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে বাংলাদেশ কৃষক লীগের বৃক্ষরোপণ অভিযানের উদ্বোধনকালে এ আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন,১৯৮৫ সাল থেকে প্রতি বছর তিন মাস ধরে সারাদেশে ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণ করে আসছে আওয়ামী লীগ ও কৃষক লীগসহ সংশ্লিষ্ট সব সংগঠন।
আরও পড়ুন: শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আওয়ামী লীগের কৃতিত্ব: প্রধানমন্ত্রী
এ প্রসঙ্গে তিনি সবাইকে অন্তত একটি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, পরিবেশ রক্ষায় দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে বৃক্ষরোপণে এগিয়ে আসতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা শহরে থাকেন তারাও তাদের বারান্দায় গাছ লাগাতে পারেন।
তিনি বলেন, কক্সবাজার উপকূলে ঝাউবন গড়ে তোলার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে প্রথম বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পরিচালিত হয়।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে
বর্ষাকালে ভ্রমণের পূর্বে কিছু সতর্কতা
আপনি যদি খুব বেশি ভ্রমণপিপাসু হয়ে থাকেন তবে বর্ষাকালে ভ্রমণ আপনার জন্য নতুন কিছু নয়। অবশ্য খুব গরম বা হাড়-কাপানো শীত অথবা পা পিছলে পড়ে যাবার মত বৃষ্টি ভেজা আবহাওয়ায় যারা ভ্রমণ করতে ভালবাসেন, কোনও কিছুই তাদেরকে ঠেকিয়ে রাখতে পারে না। এরপরেও আপনার ভ্রমণকে আরও সুন্দর এবং ঝামেলামুক্ত করার জন্য কিছু পূর্ব সতর্কতা মেনে চলতেই হয়। চলুন দেখে নেই, এই বর্ষায় ঘুরতে যাবার আগে কি কি ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।
বর্ষাকালে ভ্রমণে যাবার পূর্বে করণীয়
সঠিক গন্তব্য বাছাই
বন্ধু-বান্ধব সবাই একসাথে হয়ে হুট করে বেরিয়ে পড়লেন। গন্তব্যে পৌঁছে স্থানীয় সবার কাছে শুনলেন এই জায়গাটা এই সময়ে না, অন্য আরেক সময়ে অনেক ভালো লাগে। অগত্যা কোনও রকম ঘুরে আসার পর আপনার বন্ধুদের যারা ইতোমধ্যে সেখানে আগে ঘুরে এসেছে তাদের কাছেও একই কথা শুনলেন। এরকম হতাশাজনক অবস্থায় পড়তে না চাইলে বর্ষাকালে ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে সুন্দর জায়গাগুলোর ব্যাপারে আগে থেকেই জেনে রাখুন। অবশ্য বাংলাদেশ বর্ষাকাল এবং শীতকাল দুই ঋতুতেই অপরূপ সাজে সেজে উঠে। তাই বর্ষাকালে বাংলাদেশ ভ্রমণের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। শুধু আগে থেকে কাছাকাছি নিরাপদ আশ্রয়স্থল, থানা, এবং হাসপাতালগুলোর ব্যাপারে জেনে নিবেন।
আরও পড়ুন: বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য সতর্ক হোন
আবহাওয়ার খবর দেখে নেয়া
এসময় বৃষ্টির ব্যাপারে সঠিক করে কিছুই বলা যায় না। রওনা হওয়ার সময়ে হয়ত দেখবেন রৌদ্রজ্জ্বল দিন আর গন্তব্যে পৌঁছার ঠিক আগ মুহুর্তে অকস্মাৎ বৃষ্টি এসে একদম কাক ভেজা করে দিবে। তাই আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী যাত্রার শুরু থেকে গন্তব্যে পৌছার আগে কোথায় কোথায় থামবেন, তার একটা ছোট্ট ছক করে ফেলুন। যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থার জন্য বিকল্প রাস্তা বের করে রাখুন। কারণ অনেক পরিকল্পনার পরেও স্বাভাবিকভাবেই সব কিছু পরিকল্পনা-মাফিক হয় না।
দিনের শুরুতে যাত্রা
বর্ষাকালে ভ্রমণ মানেই বৃষ্টির জন্য আপনার যাত্রা দেরি অথবা গন্তব্যে পৌঁছাতে দেরি। তাই কিছুটা সময় হাতে নিয়ে আগেই বেড়িয়ে পড়ুন। আর অবশ্যই রাতে নয়। মুষলধারে বৃষ্টি বা ঝড়ো বৃষ্টি দুই ক্ষেত্রেই দিনে ভ্রমণটাই বেশি নিরাপদ। তাছাড়া আপনি যদি বৃষ্টির সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে চান, সেক্ষেত্রেও সকাল সকাল বেরিয়ে পড়াটাই উত্তম। আপনার অবস্থান এবং গন্তব্যের মধ্যকার দূরত্বটা জেনে রাখুন। সেই সাথে যে গাড়িতে যাচ্ছেন, তাতে করে সেখানে পৌছতে কত সময় লাগতে পারে তারও একটা ধারণা নিন।
আরও পড়ুন: সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
পানি নিরোধক পরিধেয় ও ব্যাগ প্যাক
বর্ষাকোলে ভ্রমণে এটা অনিবার্য যে, আপনি ও আপনার জিনিসপত্র সব ভিজে যাবে। তবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। রেইনকোট ও ছাতা সাথে নিয়ে নিন। আপনার কাপড় নেয়ার জন্য পানি নিরোধক এবং খুব সহজেই ভাঁজ করা যায় এমন ব্যাগ সাথে নিয়ে নিন। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আপনার ঘড়ি, মোবাইল ফোন, ক্যামেরা, পাওয়ার ব্যাঙ্ক প্রভৃতিকে বৃষ্টি থেকে রক্ষা করা। এগুলোর জন্য একটু খরচ হলেও ভালো পানি নিরোধক ব্যাগ কিনে নিন। আপনার এই বিনিয়োগটি পরবর্তীতে আপনার অতি প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিগুলোকে রক্ষা করবে।
আরও পড়ুন: জন্মদিনে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি মিঠুন
ওষুধ এবং পোকামাকড় নিরোধক সাথে নেয়া
বৃষ্টির এই মৌসুমে প্রত্যেকটি পর্যটন এলাকাই মশা এবং অন্যান্য পোকামাকড়ের প্রজনন ক্ষেত্র হয়ে ওঠে। শুধু তাই নয়, খাবারগুলোতেও ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই বিভিন্নভাবে আপনি ফুড পয়জনিংয়ের শিকার হতে পারেন। এ জন্য আগে থেকেই সম্ভব হলে একটি ফার্স্ট এইড বক্স সাথে রাখুন। পোকামাকাড় নিরোধক ক্রিমগুলো আপনাকে যে কোনো জায়গায় সুরক্ষা দিবে। আর অনেক সময় ঘুরতে গেলে আশেপাশে কোনো ফার্মেসী নাও পাওয়া যেতে পারে। তাই সাথে ওষুধ থাকা আবশ্যক। এগুলো আপনার খাবারে সমস্যা, ভ্রমণের কারণে মাথা ব্যথা, ছোট্ট-খাট জখম ইত্যাদিতে কাজে লাগবে।
আরও পড়ুন: বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন
অবশেষে
সর্বপরি আপনার বর্ষাকালের ভ্রমণ শুরুর আগের দিনেই এই গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো তালিকা করে আপনার স্মার্টফোনে সেভ করে রাখতে পারেন। কি কি নিয়েছেন, কোথায় কি রেখেছেন এসব কিছু পরবর্তীতে আপনি চটজলদি বের করে ফেলতে পারবেন। এই সতর্কতাগুলো আপনার প্রিয়জনের সাথে আপনার দীর্ঘ পথের ভ্রমণটিকে আরো বেশি দ্বিধাহীন করে তুলবে।
৩ বছর আগে