ডিসেম্বর
বিজয়ের মাস শুরু
আজ পহেলা ডিসেম্বর; শুরু হয়েছে বিজয়ের মাস। স্বাধীন জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূখণ্ড আর সবুজের বুকে লাল সূর্য-খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, ১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বিজয়ের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এই মাসে।
বাঙালির রাজনৈতিক ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ সময় ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। যাদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয় অর্জন হয়েছে, বিজয়ের মাসে সেসব লাখো শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাবে বাঙালি জাতি।
বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্নপূরণ হওয়ার পাশাপাশি বহু তরতাজা প্রাণ বিসর্জন আর মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এ অর্জন হওয়ায়—বেদনাবিধুর এক শোক গাঁথার মাসও এ ডিসেম্বর।
১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের শুরু থেকেই বাঙালি বীর সন্তানদের সঙ্গে যুদ্ধে একের পর এক পরাজিত হতে থাকে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী। ১ ডিসেম্বর নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গেরিলা হামলা বেড়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তাদের নির্দেশে সেনাবাহিনীর আরও ভয়াবহ চেহারা প্রকাশ পেতে থাকে। বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ে জিঞ্জিরাতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে এক দিনেই হত্যা করা হয় ৮৭ জনকে। ডিসেম্বরের শুরু থেকেই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ আরও ক্ষতবিক্ষত করতে থাকে বাংলাদেশকে। শেষ কামড় দিতে মরিয়া হয়ে ওঠে পাকিস্তানি বাহিনী।
শেষ পর্যন্ত পরাস্ত হয়ে ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।
কর্মসূচি
প্রতি বছরের মতো এবারও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপিত হতে যাচ্ছে বিজয়ের মাস। এ উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন করবে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবারের বিজয় উদযাপন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান উপদেষ্টার বাণী প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশসহ সংবাদপত্রগুলো বিশেষ নিবন্ধ, সাহিত্য সাময়িকী ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। ওই দিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, বিটিভি, বাংলাদেশ বেতার ও বিভিন্ন বেসরকারি বেতার বা টিভি চ্যানেলে সঠিক মাপ এবং রংসহ জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিধি-বিধান জনসাধারণের জন্য প্রচারের ব্যবস্থা করবে। গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি ভবন ও স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হবে। তবে ১৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে আলোকসজ্জায় আলো জ্বালানো যাবে না। ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ঢাকাসহ দেশের সব জেলা ও উপজেলায় ৩১ বার তোপধ্বনি করা হবে।
ওই দিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে (সকাল ৬টা ৩৪ মিনিট) রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এ ছাড়া, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের সদস্যরা, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীর মুক্তিযোদ্ধারা ও বিদেশি কূটনীতিকরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অনুরূপ কর্মসূচি পালিত হবে।
১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় বিভাগ, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শনসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
দেশের সব জেলা এবং উপজেলায় ৩ দিনব্যাপী আড়ম্বরপূর্ণ বিজয়মেলা আয়োজন এবং শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে বিদেশি অধ্যাপক, প্রথিতযশা নাগরিক, স্থানীয় প্রশাসন, গণ্যমান্য ব্যক্তিরা, শিল্পী-সাহিত্যিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা, সাংবাদিক, গণমাধ্যম ব্যক্তিবর্গ ও বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে।
অন্যান্য বছরের মতো এবারও চট্টগ্রাম, খুলনা, মংলা ও পায়রা বন্দর এবং ঢাকার সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জ ও বরিশালসহ বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ড একক বা যৌথভাবে এবং চাঁদপুর ও মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের জাহাজগুলো ঐদিন সকাল ৯টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।
দিবসটি উপলক্ষে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সুবিধাজনক সময়ে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান—ফুটবল ম্যাচ, টি-টুয়েন্টি, ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, কাবাডি ও হা-ডু-ডু খেলাধুলার আয়োজন করা হবে।
বাংলাদেশে টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি বেতার ও টিভি চ্যানেলে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসভিত্তিক অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হবে।
এ ছাড়া ঢাকাসহ দেশের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সিনেমা হলসমূহে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিনা টিকিটে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী এবং গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের উদ্যোগে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তন বা উন্মুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। জাদুঘর ও বিনোদনমূলক স্থান শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা এবং বিনা টিকিটে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে এবং দেশের সব পর্যটন কেন্দ্রে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
দেশের সব হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা বা পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্র, ডে-কেয়ার ও শিশু বিকাশ কেন্দ্র এবং শিশু পরিবার ও ভবঘুরে প্রতিষ্ঠানগুলো প্রীতিভোজের আয়োজন করবে। ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলো জাতীয় পতাকাসহ বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন ও রঙিন নিশান দ্বারা সজ্জিত করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডাক অধিদপ্তর মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করবে।
একই সঙ্গে শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহ আত্মার মাগফেরাত, মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য এবং জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি কামনা করে সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত বা প্রার্থনার আয়োজন করা হবে জানানো হয়ে থাকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও কর্মসূচি নিয়েছে। এরমধ্যে ১৪ ডিসেম্বর রবিবার সকাল ৬টা ২০ মিনিটে উপাচার্য ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোতে কালো পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে ৬টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জমায়েত, সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণস্থ কবরস্থান, জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণস্থ স্মৃতিসৌধ ও বিভিন্ন আবাসিক এলাকার স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ। এরপর মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ও রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের উদ্দেশে যাত্রা। সকাল সোয়া ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া, বাদ আসর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিয়াসহ বিভিন্ন হল মসজিদ ও অন্যান্য উপাসনালয়ে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার মাগফেরাত এবং শান্তি কামনায় দোয়া/প্রার্থনা করা হবে।
মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে: ১৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) সকাল ৬টা ২০ মিনিটে উপাচার্য ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে ৬টায় উপাচার্য ভবন সংলগ্ন স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে জমায়েত এবং সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণের উদ্দেশ্যে যাত্রা। সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ, নৃত্যকলা বিভাগ এবং থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের যৌথ ব্যবস্থাপনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। দিবসটি উপলক্ষ্যে বাদ আসর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিয়াসহ বিভিন্ন হল এবং আবাসিক এলাকার মসজিদে শহিদদের রুহের মাগফেরাত কামনা এবং দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য দোয়া করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য উপাসনালয়ে শহিদদের আত্মার শান্তি কামনা করে প্রার্থনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। দিবসটি উপলক্ষে কলা ভবন, কার্জন হল, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র ও স্মৃতি চিরন্তনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হবে।
তবে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকায় বিজয় দিবসের গৃহীত কর্মসূচি স্থগিত করেছে দলটি। রবিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
৪ দিন আগে
আগামী ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায় বিএনপি
আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে বলে জাতীর উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই ঘোষণা গোটা জাতিকে হতাশ করেছে বলে অভিহিত করে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করেছে বিএনপি।
শনিবার (৭ জুন) সকালে দেওয়া এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করেছে দলটি।
বিবৃতিতে বিএনপি জানায়, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ছাত্রসমাজ ও জনতার বিপুল ত্যাগের মধ্য দিয়ে জনগণের বিজয় অর্জিত হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন আয়োজনের অযৌক্তিক বিলম্ব জনগণকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে।’
এ সময় রমজান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষা এবং আবহাওয়া পরিস্থিতি ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করে বিএনপি।
এর আগে, শুক্রবার (৬ জুন) রাতে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জরুরি ভার্চুয়াল বৈঠকে বসে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম। বৈঠকের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে শনিবার ভোরে বিবৃতিটি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন : আগামী সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলে: ড. ইউনূস
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের বিষয়বস্তু বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করা হয়। সেখানে এই ঘোষণা দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করেছে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রায় দেড় দশক ধরে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত এ দেশের জনগণ। বারবার গুম, হত্যা, কারাবরণ, হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েও তারা ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনর্প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।’
ঐকমত্য গঠনের কথা বললেও অন্তর্বর্তী সরকার একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা।
তারা বলেন, ‘এ কারণে বৈঠকে মনে করে এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে কি না; তা নিয়ে জনগণ উদ্বিগ্ন হওয়াই স্বাভাবিক।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভাষ্যে, এপ্রিলের শুরুতে নির্বাচন দিলে তা আবহাওয়াজনিত জটিলতা ও রমজান মাসে প্রচার-প্রচারণা ও নির্বাচন-সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবে, যা পরবর্তীতে নির্বাচনের সময়সূচি পেছানোর অজুহাত হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
আরও পড়ুন : ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানালেন তারেক রহমান
তারা বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব নয়— এমন কোনো সুস্পষ্ট যুক্তি উপস্থাপন করা হয়নি।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আরও বলা হয়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাণী দেওয়ার কথা থাকলেও প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য এক পর্যায়ে জাতির উদ্দেশ্য ভাষণে রূপ নেয়।
দীর্ঘ ওই ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস নিজেই স্বীকার করেছেন বন্দর ও করিডর ইস্য অন্তবর্তী সরকারের তিনটি নির্দিষ্ট দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।
এ ছাড়াও ওই ভাষণে ব্যবহৃত কিছু শব্দ রাজনৈতিক সৌজন্যের সীমা অতিক্রম করেছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপির নেতারা।
১৮১ দিন আগে
ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস প্রধান উপদেষ্টার
বাংলাদেশে আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনসের (এএনএফআরইএল) একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, এই নির্বাচন হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সেরা এবং দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় এক মাইলফলক।’
আরও পড়ুন: বাধা দূর করে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
এএনএফআরইএল প্রতিনিধিদলে ছিলেন, নির্বাহী পরিচালক ব্রিজা রোসালেস, বাংলাদেশ নির্বাচন ও গণতন্ত্র কর্মসূচির পরামর্শক মে বুটয়, প্রচারাভিযান ও অ্যাডভোকেসি বিভাগের সিনিয়র প্রোগ্রাম কর্মকর্তা থারিন্ডু অ্যাবেইরাথনা, প্রোগ্রাম অফিসার আয়ান রহমান খান এবং প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট আফসানা আমেই।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ কথা জানান।
এএনএফআরইএল হলো নাগরিক সমাজের একটি আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক যা এশিয়ায় গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থার উন্নয়নে নিবেদিত, দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ, গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং নাগরিক সম্পৃক্ততা বাড়াতে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বৈঠকে, এএনএফআরইএল প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে চলমান বিভিন্ন উদ্যোগ বিশেষ করে নাগরিক সমাজের-নেতৃত্বাধীন স্বাধীন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কাঠামো পুনর্গঠনের অঙ্গীকার তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কাতার যাচ্ছেন ৪ নারী ক্রীড়াবিদ
প্রতিনিধিদলটি অংশীজন ম্যাপিং এবং চাহিদা নিরূপণের মাধ্যমে নাগরিক সমাজের সম্পৃক্ততা জোরদার এবং নির্বাচনী স্বচ্ছতা বৃদ্ধির সুযোগ চিহ্নিত করার বিষয়েও আলোচনা করে।
এএনএফআরইএল প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং বাংলাদেশে স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে অংশীজনদের সঙ্গে চলমান সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
২২৯ দিন আগে
ডিসেম্বরকে টাইমলাইন ধরেই নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে: কমিশনার আনোয়ারুল
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, আগামী ডিসেম্বর মাসকে টাইমলাইন ধরেই নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি বলেন, প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ভোটার তালিকা তৈরির কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ের দিকে রয়েছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকালে নরসিংদী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি-২০২৫ উপলক্ষে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, সংবিধানে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং জাতীয় সরকার নির্বাচনে সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করা এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পরিচালনা করা।
তিনি বলেন, এখন জাতীয় সংসদ নির্বাচন করাটা হলো আমাদের মূল কাজ। এরপরও যদি রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়, সরকার যদি মনে করে যে, সরকার স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার জন্য সর্বতোভাবে প্রস্তুত এবং নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করে—তাহলে নির্বাচন কমিশন সেটি করবে। তবে আমাদের ফোকাস হচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীকে অংশগ্রহণ করতে পারবে কিনা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, এটি সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।
আরও পড়ুন: অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করব: প্রধান উপদেষ্টা
তিনি বলেন, এছাড়া এটি বলার এখনো সময় আসেনি যে, ব্যলট পেপারে কোন মার্কা থাকবে কি না। সময়ই বলে দেবে কোন কোন প্রার্থী নির্বাচন করবেন এবং ব্যালটে কোন কোন মার্কা থাকবে।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী, নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান, নরসিংদী স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক মৌসুমী সরকার রাখী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অন্জন দাশ প্রমুখ।
২৩৯ দিন আগে
ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা
চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তারা চান আগামী নির্বাচনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। এ জন্য নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম পর্ব সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে। প্রথম পর্বের সমাপ্তির মধ্য দিয়ে অভ্যুত্থানের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হলো।
আরও পড়ুন: সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
তিনি বলেন, সব সময় মনে রাখতে হবে, আমরা কিন্তু যুদ্ধাবস্থায় আছি। গুজব হলো এই জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে পরাজিত শক্তির মস্ত বড় হাতিয়ার। গুজব দেখলেই গুজবের সূত্রের সন্ধান করতে থাকবেন। গুজবকে অবহেলা করবেন না। বহু অভিজ্ঞ সমরবিশারদ এই গুজবের পেছনে দিনরাত কাজ করছে, সীমাহীন অর্থ এর পেছনে নিয়োজিত আছে। এর মূল লক্ষ্য জুলাই অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করা। আমরা তাকে ব্যর্থ হতে দেব না।
সামগ্রিক ঐক্য পলাতক শক্তির গায়ে জ্বালা ধরিয়ে দিচ্ছে মন্তব্য করে ড. ইউনূস বলেন, ‘তারা এই ঐক্য ভাঙতে চায়। তাদের অভিনব কৌশল আপনি টেরই পাবেন না। আপনি বুঝতেই পারছেন না কখন তাদের খেলায় আপনি পুতুল হয়ে গেছেন। আমাদের সচেতনতা এবং সামগ্রিক ঐক্য দিয়েই এই গুজবকে রুখতে হবে। পলাতক অপশক্তির ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিতে হবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরেস কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ সফর করেছেন। তাকে সঙ্গে করে আমি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলো পরিদর্শন করেছি। ক্যাম্পে অবস্থানরত এক লাখ নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরের সঙ্গে ইফতার করেছি। আমাদের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়ে, আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি পৃথক অধিবেশনের প্রস্তুত নেওয়া হয়েছে। মালয়েশিয়া ও ফিনল্যান্ড যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজক হতে এগিয়ে এসেছে।
‘গত ষোলো বছরে শেখ হাসিনা যে ভয়াবহ লুটপাট কায়েম করেছিল, আপনারা সেটার ভুক্তভোগী ছিলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখেও তারা পালিয়ে যাওয়ার সময় এক লণ্ডভণ্ড অর্থনীতি রেখে গেছে। এই পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে অন্তর্বর্তী সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে।’
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধান উপদেষ্টা
ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ক্রমান্বয়ে অর্থনীতির অন্য সুযোগগুলো ইতিবাচক ধারায় ফিরতে শুরু করেছে। এই সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি। ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে নেমে এসেছে। যা ২২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। আগামী জুনের মধ্যে এটি আট শতাংশের নিচে নেমে আসবে বলে আশা করছি।
‘দেশের ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতিতে স্বস্তি নিয়ে এসেছে আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনেরা। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে। ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স প্রবাহ রেকর্ড গড়েছে। প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়ে আড়াই বিলিয়ন ডলার হয়েছে,’ বলেন তিনি।
২৫৪ দিন আগে
ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে: ইসি সানাউল্লাহ
আগামী ডিসেম্বরে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ধরে নিয়ে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকদের জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
ইউএনডিপিসহ উন্নয়ন সহযোগী ১৮টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিরা বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, যুক্তরাজ্য, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন, কানাডা, জার্মানি, চীন, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, দক্ষিণ কোরিয়া, ইইউ ও তুরস্কের প্রতিনিধিরা।
সানাউল্লাহ বলেন, ‘নির্বাচন আয়োজনে সবচেয়ে আগের সময়টি ধরে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে, যেটা তাদের আমরা বলেছি। আমাদের অবস্থান এখনো অপরিবর্তিত। আমরা ডিসেম্বর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছি। অন্য কোনো নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি না।’
আরও পড়ুন: ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে কাজ করছে ইসি: আনোয়ারুল ইসলাম
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ১৬ ডিসেম্বরের বক্তব্যে বলেছিলেন, যদি অল্প পরিমাণে সংস্কারসহ নির্বাচন করতে হয় সেখানেই যদি রাজনৈতিক মতৈক্য গিয়ে দাঁড়ায়, তাহলে পরে এ বছরের শেষ নাগাদ ডিসেম্বর ২০২৫–এ ইলেকশন; আর যদি আরেকটু সংস্কার করার সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে ২০২৬–এর জুন নাগাদ ইলেকশন করা সম্ভব।’
বৈঠকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সানাউল্লাহ বলেন, একটি প্রশ্ন এসেছিল, দুটো নির্বাচন একসঙ্গে করা যায় কি না। এতে কেমন সময় লাগতে পারে, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচন একসঙ্গে করা সম্ভব নয়। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, সব কটি স্থানীয় সরকারের নির্বাচন ধাপে ধাপে করতে গেলে এক বছর সময় লেগে যায়।
‘পুরোপুরি এভাবে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন করতে হলে জাতীয় নির্বাচনের সময় পিছিয়ে যাবে। জাতীয় নির্বাচন এখন নির্বাচন কমিশনের অগ্রাধিকার। নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচন নিয়েই এ মুহূর্তে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে সরকার যদি সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের, সেটা সেভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। এটা সরকারের সিদ্ধান্ত।’
আরও পড়ুন: এনআইডির তথ্য ফাঁস: ৫ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তথ্যের প্রমাণ পেয়েছে ইসি
সরকার জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নিলে নির্বাচন কমিশন তা বাস্তবায়ন করবে বলে জানান এই নির্বাচন কমিশনার।
আরেক প্রশ্নের জবাবে সানাউল্লাহ বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন কতটুকু হবে, কোন কোন প্রতিষ্ঠানের হবে, সে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। তখন ইসি বলতে পারবে, এটা জাতীয় নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে কি না। তার আগে এটি বলা সম্ভব নয়।
২৯৬ দিন আগে
ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে জানিয়েছেন ড. ইউনূস : ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য কাজ করছে বলে তাদের জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, 'প্রধান উপদেষ্টা ও তার সঙ্গে যারা ছিলেন তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, খুব শিগগিরই তারা নির্বাচন আয়োজন করবেন।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'তিনি (অধ্যাপক ইউনূস) বলেছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের জন্য তারা কাজ করছেন।’
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ৯০ মিনিটের বৈঠকে বিএনপির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির এই নেতা বলেন, তার দল আশা করে— সরকার তাদের এবং জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের সঙ্গে ফখরুলের বৈঠক
রোডম্যাপ কবে ঘোষণা করবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা সরকার ঠিক করবে। ফখরুল বলেন, 'সম্ভবত ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তারা এ বিষয়ে কিছু বলবেন।’
বিএনপির প্রতিনিধি দলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
রবিবার বিকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে বিএনপির আরেকটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এস নাছির উদ্দিনসহ অন্য নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
২৯৭ দিন আগে
ডিসেম্বরেই আগামী জাতীয় নির্বাচন
ডিসেম্বরেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র ইউএনবিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্রটি জানায়, সরকার 'রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা' বজায় রাখা ও সমঝোতাকে 'অত্যন্ত গুরুত্ব' দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দল
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলা এবং সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করাই এ বৈঠকের লক্ষ্য।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সোমবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশা প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: হত্যাকাণ্ডের সুবিচার হতে হবে, অবিচার যেন না হয়: প্রধান উপদেষ্টা
২৯৭ দিন আগে
ডিসেম্বরকে সামনে রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে: ইসি সানাউল্লাহ
নির্বাচন কখন হবে; সেটা সরকার নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা মোতাবেক ডিসেম্বরকে সামনে রেখেই জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে ঠাকুরগাঁও রোড ডিগ্রি কলেজ হলরুমে ভোটার তালিকা হালনাগাদ-২০২৫ উপলক্ষে তথ্য সংগ্রহকারী, সুপারভাইজার ও নতুন ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
সানাউল্লাহ বলেন, ‘আমাদের আগামী নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়াটাই হবে স্বচ্ছ। আমরা নির্বাচন কমিশন যদি স্বচ্ছ পাত্র উপহার দিতে পারি, তবে সেই পাত্রে যে পানিই দেওয়া যাক না কেনো; তা স্বচ্ছ রং ধারণ করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পূর্বের বাস্তবতা থেকে আমরা সতর্ক আছি। পূর্বের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই নির্বাচনের বিষয়ে কমিশন কাজ করছে।’
সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে তিনি বলেন, ‘সংস্কার কার্যক্রম চলমান। তাই জেলা উপজেলাসহ নির্বাচন পরিচালনায় সকল ক্ষেত্রে সংস্কার করা হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খসড়া তালিকা হয়ে গেলে আগামী ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা হয়ে যাবে। ভোটার তালিকা নিয়ে অভিযোগ কাটিয়ে ওঠার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তালিকা হালনাগাদ করা হবে।’
আরও পড়ুন: স্থানীয় নয়, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভাবছে ইসি: মাছউদ
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘ভুয়া ভোটার তালিকা, মৃত ভোটারদের উপস্থিতি, বিদেশি নাগরিকদের উপস্থিতি, দ্বৈত ভোটারদের উপস্থিতি, এগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্যই ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হচ্ছে। কোনো অভিযোগ যাতে না আসে; সে বিষয়ে সতর্ক থেকে কাজ করবে কমিশন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে আগামীতে একটা সুষ্ঠু, সুন্দর, গ্রহণযোগ্য ও প্রশ্নহীন নির্বাচন করার। এ ধরনের নির্বাচনের প্রথম শর্তই হচ্ছে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু ভোটার তালিকা। আগামীতে আর বাড়ি বাড়ি ভোটার করার কাজ না-ও হতে পারে। কারণ ডিজিটাল সেবা পৌঁছে যাচ্ছে। এর পর থেকে ঘরে বসেও ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করা যাবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা, পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হাসান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম, উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকতা-কর্মচারীরা।
৩১০ দিন আগে
ডিসেম্বরে সারা দেশে সড়কে ঝরেছে ৫৩৯ প্রাণ
বিদায়ী বছরের ডিসেম্বর মাসে সারা দেশে মোট ৫০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৩৯ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৭৬৪ জন।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে সংগঠনটি।
ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, এসব দুর্ঘটনার মধ্যে ৩টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছেন; ১৯টি রেল দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত ও ৫ জন আহত হয়েছেন।
মোট নিহতের মধ্যে ৭৯ জন নারী ও ৭৭টি শিশু রয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে।
এছাড়া, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ২০৬ জন (৩৮.২১ শতাংশ) মোটরসাইকেল আরোহী; ১১৪ জন (২১.১৫ শতাংশ) পথচারী ছিলেন, আর ৭২ জন (১৩.৩৫ শতাংশ) ছিলেন যানবাহনের চালক ও সহকারী।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, জাতীয় মহাসড়কে ১৯৩টি (৩৮.২৯ শতাংশ); আঞ্চলিক সড়কে ২১৪টি (৪২.৪৬ শতাংশ); গ্রামীণ সড়কে ৫৫টি (১০.৯১ শতাংশ); শহুরে সড়কে ৩৮টি (৭.৫৩ শতাংশ) এবং অন্যান্য স্থানে ৪টি (০.৭৯ শতাংশ) দুর্ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: নভেম্বরে সারাদেশে সড়কে ৪৬৭ জনের প্রাণহানি: রোড সেফটি ফাউন্ডেশন
এসব দুর্ঘটনার মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ ৯৮টি (১৯.৪৪ শতাংশ); নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৪৭টি (৪৯ শতাংশ); পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দেওয়ায় ১১৬টি (২৩ শতাংশ); যানবাহনের পেছনে ধাক্কার ঘটনা ৩৫টি (৬.৯৪ শতাংশ) এবং ৮টি (১.৫৮ শতাংশ) দুর্ঘটনা অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
বেপরোয়া গাড়ি চালানো, মহাসড়কে ধীরগতির যানবাহন, চালকদের জন্য নির্ধারিত বেতন ও কর্মঘণ্টা না থাকা, অপর্যাপ্ত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সীমিত সক্ষমতা এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজির প্রকোপসহ দেশের সড়কে হতাহতের সংখ্যা বেশি হওয়ার বেশ কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছে সংস্থাটি।
গত নভেম্বর মাসে সারা দেশে ৫৪১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৭ জন নিহত ও ৬৭২ জন আহত হয় বলে জানিয়েছিল রোডর সেফটি ফাউন্ডেশন।
৩৩৪ দিন আগে