সড়কে প্রাণ
কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও সড়কে প্রাণ গেল সেই মিনুর
চট্টগ্রাম কারাগারে বিনা অপরাধে জেল খেটে মুক্তি পাওয়া সেই আলোচিত মিনু আক্তার সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
গত ২৮ জুন রাতে নগরীর বায়েজিদ সংযোগ সড়কে তিনি নিহত হলে পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় ময়নাতদন্ত শেষে তাকে দাফন করে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম।
তদন্ত শেষে এক সপ্তাহের মাথায় আজ রবিবার (৪ জুলাই) জানা যায়, তিনি সেই আলোচিত মিনু আক্তার।
রবিবার দুপুরে মিনুকে মুক্তকারী আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ৬ দিন আগে অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছেন মিনু। প্রথমে তার লাশ শনাক্ত করা যায়নি। অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে তার লাশ দাফন করে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম। সর্বশেষ পুলিশের কাছ থেকে ছবি দেখে লাশ শনাক্ত করে মিনুর পরিবার।
আরও পড়ুন: কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন নিরপরাধ মিনু
তিনি বলেন, ‘হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত এক নারীর পরিবর্তে প্রায় তিন বছর ধরে সাজা ভোগ করছিলেন নিরাপরাধ মিনু আক্তার। নাম, চেহারার মিল না থাকা সত্ত্বেও একজনের স্থানে আরেকজন জেল খাটার বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান। তার পক্ষে আইনি লড়াইয়ে নামি আমি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে গত ১৬ জুন মিনু কারাগার থেকে মুক্তি পান।’
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘গত ২৮ জুন রাতে বায়েজিদ সংযোগ সড়ক থেকে দুর্ঘটনায় নিহত এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে তার পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব না হওয়ায় অজ্ঞাত হিসেবে মরদেহ দাফন করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম।শনিবার আমাদের টিম সীতাকুণ্ডে গিয়ে ছবি দেখালে তার আপন ভাই রুবেল ছবি দেখে মিনুকে শনাক্ত করেন।
ওসি জানান, ঘটনার রাতে টহল পুলিশ মিনুকে দুই বার সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। রাস্তায় তিনি লাফিয়ে লাফিয়ে মাতম করছিলেন।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানার রহমতগঞ্জে একটি বাসায় ২০০৬ সালের জুলাই মাসে মোবাইলে কথা বলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গার্মেন্টকর্মী কোহিনূর আক্তারকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। এরপর একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। পারভীন আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেন গার্মেন্টকর্মী কুলসুম আক্তার কুলসুমী। এরপর থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়।
আরও পড়ুন: অর্থের বিনিময়ে অন্যের সাজা ভোগ করা মিনুকে মুক্তির নির্দেশ
মামলায় পুলিশ দুই বছর তদন্ত শেষে পারভিনকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন দিলে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়। এর মধ্যে এক বছর তিন মাস জেল খেটে জামিনে মুক্তি পান কুলসুম।
মামলার বিচার শেষে ২০১৭ সালের নভেম্বরে তৎকালীন অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম ওই হত্যা মামলায় আসামি কুলসুম আক্তার কুলসুমীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন। ওই সাজার পরোয়ানামূলে ২০১৮ সালের ১২ জুন কুলসুম আক্তার কুলসুমীর বদলি হয়ে মিনু কারাগারে যান।
৩ বছর আগে