আমদানি পণ্য
বিশ্ব বাজারে আমদানি পণ্যের দাম বেড়েছে: বাণিজ্য সচিব
করোনার কারণে বিশ্ব বাজারে আমদানি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
তিনি বলেন, ‘আইন অনুযায়ী বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১৭টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে। এবছর সয়াবিন তেলের দাম ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। করোনার কারণে বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধি এবং কন্টেইনার খরচ বেড়ে যাওয়ায় আমদানি খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। এজন্য এবার বাজারে তেল, চিনি ও চালসহ কিছু পণ্যের দাম বেড়ে গেছে।’
শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ফরিদপুর সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে শিল্পপণ্য আমদানি বাড়াতে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূতের প্রতি মন্ত্রীর আহ্বান
তপন কান্তি বলেন, সরকার চাইলেই আমদানি শুল্ক কমাতে পারে না। এতে বাজারে সরবরাহ কমে মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে। সরকার চেষ্টা করছে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মাঝে সমন্বয় করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে। দেশের জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ভোগের চাহিদাও বেড়েছে। তবে গরিব মানুষের জন্য বিশেষ কোন ব্যবস্থা নেয়া যায় কিনা সেটি চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের সভাপতিত্বে সভায় ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান, বাজার মনিটরিং কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন, জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. সাইফুদ্দিন, জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সোহেল শেখ, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নুরুল্লা মো. আহসান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী উপপরিচালক মো. রকিবুল ইসলাম, ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মো. জাহাঙ্গির মিয়া, চালকল মালিক সমিতির সভাপতি বিপ্লব কুমার সাহা, বাজার মনিটরিং কমিটির সদস্য অধ্যাপক রিজভী জামান, আসমা আক্তার মুক্তা, শিপ্রা গোস্বামী, ক্যাবের প্রতিনিধি শেখ ফয়েজ আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: ভারতকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাধামুক্ত রাখার আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর
উক্ত সভায় পণ্য মনিটরিং কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে বলেন, চাল, গম, সয়াবিন তেল, মসুরের ডাল, পেঁয়াজ ও বয়লার মুরগি ও সবজিসহ আরও কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। ফরিদপুরে চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজের উৎপাদন বেশি।
এছাড়া চরাঞ্চলে প্রচুর দুধ উৎপাদন হয়। কিন্তু সংরক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় এর সুফল মিলছে না। তারা চালসহ নিত্য পণ্যের আমদানিতে শুল্ক হ্রাস ও কৃষকদের ভর্তুকি দিয়ে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার পরামর্শ দেন।
৩ বছর আগে
বেনাপোল স্থলবন্দরে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু
বেনাপোল স্থলবন্দরে অবশেষে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার কাজ শুরু হয়েছে। বন্দর স্থাপনের ৪৮ বছর পর ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে আমদানি পণ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে।
১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পুরো বন্দর এলাকায় ৩৭৫টি সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে। দীর্ঘদিন পরে হলেও সিসি ক্যামেরা স্থাপনে খুশি ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: লকডাউন: বেনাপোলে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, সিসি ক্যামেরা যেমন বন্দরের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে তেমনি পণ্য আমদানি থেকে শুরু করে খালাস পর্যন্ত বাণিজ্যক কার্যক্রম পুরোটা বন্দরের নজরদারিতে থাকবে।
বন্দর সূত্র জানায়, ১৯৭২ সালের শুরুর দিকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সাথে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু। দেশের স্থলপথে যে বাণিজ্য হয় তার ৭০ ভাগ সম্পন্ন হয় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে বেনাপোল কাস্টমস, ইমিগ্রেশনসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অনেক আগেই সিসি ক্যামেরার আওতায় আসলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্দরটি এতোদিন সিসি ক্যামেরার আওতায় ছিল না। এতে বন্দর থেকে পণ্য চুরি, মাদক পাচার, রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ড, চোর সিন্ডিকেটের সদস্যদের হাতে বন্দরের নিরাপত্তা কর্মী হত্যাসহ নানান অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে আসছিল। এতে ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ থাকলেও কেবল প্রতিশ্রুতির মধ্যে এতোদিন সীমাবদ্ধ ছিল সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ।
আরও পড়ুন: ছুটির দিনেও খোলা ছিল বেনাপোল কাস্টম হাউস
বন্দরের বাইপাস সড়ক, পণ্যগার, ভারতীয় ট্রাক ও চ্যাচিস টার্মিনাল, আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাল, ঢাকা-কলকাতা মহাসড়কসহ বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বসছে ৩৭৫টি আধুনিক মানের সিসি ক্যামেরা। প্রথম পর্যায়ে মাটির নিচ দিয়ে ক্যাবল সংযোগ ও প্লার নির্মাণের কাজ চলছে। স্মার্ট টেকনোলজি নামে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের তদারকিতে কাজ চলছে।
পণ্য বহনকারী ট্রাক চালক বাবু মিয়া জানান, চোরের উৎপাতে বন্দরে ট্রাক রেখে দুশ্চিন্তায় ঘুম হতো না। ট্রাকের ব্যাটারি, চাকা ও মালামাল চুরি হতো। এখন সিসি ক্যামেনা স্থাপনে সে ভীতি থেকে রক্ষা হবে।
বেনাপোলের আমদানিকারক আব্দুল লতিফ জানান, বন্দর থেকে আমদানি পণ্য চুরি হয়ে যাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ীরা এ পথে আমদানি বন্ধ করেছেন। ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে বিপুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আগে থেকে সিসি ক্যামেরা থাকলে এমন চুরি হতো না।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে আন্তর্জাতিক কিডনি পাচারকারী চক্রের সদস্য আটক
বেনাপোল সি এন্ড এফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, বছরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সাথে ৪০ হাজার কোটি টাকার আমদানি ও ৮ হাজার কোটি টাকার রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। আমদানি বাণিজ্য থেকে সরকারের প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়। ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি সিসি ক্যামেরার স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। এতে বন্দরে পণ্য চুরিসহ নানান অব্যবস্থাপনা রোধ ও আমদানি পণ্যের নিরাপত্তায় বড় ভূমিকা রাখবে।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক আব্দুল জলিল জানান, ব্যবসাযীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল বন্দরে সিসি ক্যামেরা লাগানোর। এখন তা স্থাপনের কাজ চলছে। সিসি ক্যামেরা যেমন বন্দরের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে তেমনি পণ্য আমদানি থেকে শুরু করে খালাস পর্যন্ত বাণিজ্যক কার্যক্রম পুরোটা বন্দরের নজরদারিতে থাকবে।
৩ বছর আগে