বাজিমাত
সুইট কর্নে বাজিমাত ঠাকুরগাঁওয়ের সোহেলের
নতুন জাতের উচ্চ ফলনশীল সুইট কর্ন চাষ করে চমক দেখিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পৌর শহরের ভান্ডারা এলাকার কৃষক সোহেল রানা। ব্যাপক ফলন হওয়ায় ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন ওই এলাকার অনেক কৃষক।
রবিবার (২৩ মার্চ) সোহেল রানার ভুট্টা খেতে গিয়ে তার এই সাফল্যের কথা জানা যায়।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি দপ্তরের সহযোগিতায় স্পেন বাংলাদেশ এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানির তত্ত্বাবধানে পরীক্ষামূলকভাবে কৃষক সোহেল রানা ১০ শতাংশ জমিতে মিষ্টি ভুট্টা চাষ করেন। ইতোমধ্যে তিনি মোচা সংগ্রহ করেছেন এবং আশানুরূপ ভাল ফলনও পেয়েছেন।
সোহেল রানা বলেন, প্রথমবারের মতো ১০ শতাংশ জমিতে মিষ্টি ভুট্টা চাষ করে ফলন পেয়েছি ৩০ মণ। ৪৮০ টাকা মণ হিসাবে ৩০ মণ ভুট্টা বিক্রি করে ১৪ হাজার ৪০০ টাকা পেয়েছি। মিষ্টি ভূট্টা চাষাবাদে সকল খরচ স্পেন বাংলাদেশ এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানি বহন করেছে। আমার শুধু নিড়ানি ও পানি দেওয়া এবং মোচা তোলা বাবদ আড়াই হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে।
তিনি বলেন, মাত্র ৯০ দিনের মধ্যে এ ভুট্টার মোচা সংগ্রহ করা যায়। কোম্পানির প্রতিনিধিরা সরাসরি জমি থেকে কাঁচা মোচা খোসাসহ ১২ টাকা কেজি দরে ক্রয় করেন। ফলে বিক্রয়ের কোন ঝামেলা নেই। এর চাহিদাও রয়েছে অনেক। স্বল্প সময়ে মিষ্টি ভুট্টা চাষে সোহেল প্রচুর পরিমাণে লাভ করেছেন। আগামীতে ৫০ শতক জমিতে চাষ করার ইচ্ছার কথাও জানান সোহেল।
ওই এলাকার কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা এই ভুট্টার চাষ আগে কখনও দেখিনি। স্বল্প সময়ে এত ভাল ফলন ও তুলনামূলক দামও বেশি হওয়ায় আগামী বছর আমিও মিষ্টি ভুট্টার চাষ করব।
আরেক প্রতিবেশী কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, এই ভুট্টা কাঁচা অবস্থায় খোসাসহ বিক্রি হচ্ছে। এতে ওজন বেশি পাওয়া যায়। প্রতিটি গাছে দুই থেকে তিনটা মোচা ধরে। ভুট্টার ফসল আগাম সংগ্রহ করা যায়। আগামী বছর আমিও ২০ শতাংশ জমিতে এই ভুট্টা চাষ করব।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে গমের আবাদ কমেছে, বেড়েছে ভুট্টা চাষ
৫ দিন আগে
লালমনিরহাটে রঙিন ফুলকপিতে বাজিমাত
শখের বসে রঙিন ফুলকপি চাষ করে সফল হয়েছেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের রুদ্রেশ্বর এলাকার রাবেয়া খাতুন। পুরো মাঠজুড়ে সবুজ পাতার মাঝে গোলাপি ও হলুদ রঙের ফুলকপি। দূর থেকে বোঝা না গেলেও কাছ থেকে কপির এমন ভিন্ন রঙ মুগ্ধ করবে।
কালীগঞ্জ উপজেলায় সাদা রঙের কপি নিয়মিত চাষ হলেও খরচ কম ও লাভ বেশি হওয়ায় এ বছর প্রথম গোলাপি ও হলুদ রঙের কপি চাষ হচ্ছে। দূর দূরান্ত থেকে মানুষজন ছুটে আসছেন এ কপি দেখতে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, কৃষকরা উচ্চ মূল্যের এ জাতের কপি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘এসব কপির চারা তৈরির জন্য বীজতলায় রোপণ করে নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয়। ২৫-৩০ দিনের মধ্যে চারা লাগানোর উপযুক্ত হয়। পরে বীজতলা থেকে চারাগুলো সংগ্রহ করে জমিতে আবাদের পর নির্দিষ্ট পরিমাণ সার, কীটনাশক ও সেচসহ সব ধরনের পরিচর্যা করতে হয়। গাছ বড় হওয়ার পর ছোট ছোট গুটি বাঁধতে শুরু করলে ৬৫-৭৫ দিনের মধ্যে কপি বিক্রির উপযুক্ত হয়।’
আরও পড়ুন: লোকসানের মুখে মানিকগঞ্জের ফুলকপি চাষিরা
কৃষক ছামাদ মিয়া বলেন, ‘গ্রামের ভেতর দিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলাম। হঠাৎ হলুদ ও গোলাপি রঙের কপি দেখতে পেয়ে খেতের সামনে দাঁড়াই। এ ধরনের কপি আগে কখনও দেখিনি। কপি দেখে খুব ভালো লাগল। বীজ পেলে এ জাতের কপি চাষ করব। রঙ দেখেই মানুষ খেতে ভিড় করবে।’
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি বলেন, ‘রঙিন কপির বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিক্রি শুরু হয়েছে; দামও ভালো পাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এই কপি চাষে খরচ তুলনামূলক কম। এছাড়া কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে রাবেয়াকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হয়। উপজেলায় বড় পরিসরে এ কপি চাষ করতে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।’
৫০ দিন আগে
এবারের ঈদে আসিফ ইকবালের বাজিমাত
এবারের ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের মাধ্যমে দীর্ঘদিন পরে দৃশ্যপট যেন বদলে যেতে শুরু করেছে। ঈদে একাধিক ছবির প্রতি কৌতুহলী হয়েছে দর্শকেরা। সিনেমাহলমুখী হয়েছেন বাংলাদেশি দর্শকেরা।
তবে বরাবরই বাংলা চলচ্চিত্রের সাফল্যের পেছনে বা সঙ্গে হেঁটেছে গান। এমনকি অনেক সময় বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য প্রধান ইএসপি হয়ে দাঁড়িয়েছে এর গানগুলো।
আরও পড়ুন: ঈদ সিনেমা: আলোচনা বড় শক্তি
তবে এবারের ঈদে চলচ্চিত্রের গানে বাজিমাত করেছেন গীতিকবি আসিফ ইকবাল।
এবারের ঈদে আলোচিত দুইটি চলচ্চিত্রে তার গান রয়েছে। হিমেল আশরাফের পরিচালনায় শাকিব খান ও ইধিকা পাল অভিনীত চলচ্চিত্র ‘প্রিয়তমা’র টাইটেল গানটি লিখেছেন তিনি। যেটিতে কন্ঠ দিয়েছেন বালাম ও কোনাল।
এছাড়া চয়নিকা চৌধুরী পরিচালিত ‘প্রহেলিকা’র সবকটি গান লিখেছেন আসিফ ইকবাল। এরই ভেতরে এই ছবিটির ‘মেঘের নৌকা’ সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত গান হিসেবে প্রশংসিত হচ্ছে। গানটি গেয়েছে ইমরান ও কোনাল।
অন্যদিকে ভিউএর দৌড়েও রেকর্ড গড়ছে প্রতিনিয়ত প্রিয়তমা’র টাইটেল ট্র্যাকটি।
আসিফ ইকবালের লেখা একাধিক গান এদেশের রকস্টারসহ একাধিক আধুনিক শিল্পীদের কন্ঠে কালজয় করেছে। এমনকি এদেশের সবচেয়ে বড় ও আলোচিত রিয়েলিটি শো ‘ক্লোজআপ ওয়ান বাংলাদেশ’- এর টাইটেল ট্র্যাকটিও তার লেখা।
তবে চলচ্চিত্রের গানে দেরিতে হলেও তার পদচারণার মুগ্ধতা নিলেন দর্শক-শ্রোতারা।
এ প্রসঙ্গে আসিফ ইকবাল ইউএনবিকে বলেন, ‘গান লিখতে আমার ভালো লাগে। জীবনের সবটুকু আনন্দ নিয়ে আমি গান লিখি। এবারের ঈদে আলোচিত দুটি ছবির গান লেখার দায়িত্ব যখন দিলেন চয়নিকা চৌধুরী ও হিমের আশরাফ’।
তিনি আরও বলেন, ‘সত্যিই এক নতুন অভিজ্ঞতা হলো। আমার লেখনীর মধ্য দিয়ে ছবির গল্প ধরার চেষ্টা করেছি। শিল্পীরাও চমৎকার গেয়েছেন, নির্মাতারাও দারুণ দৃশ্যায়ন করেছেন। সবকিছু ছাপিয়ে গানগুলো যে দর্শকদের মন কেড়েছে সেটিই সবচেয়ে বড় আনন্দের।’
আরও পড়ুন: সৌদি আরবের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে ‘সুড়ঙ্গ’
দর্শক আগ্রহে এগিয়ে ‘সুড়ঙ্গ’, ‘প্রিয়তমা’ ও ‘প্রহেলিকা’
৬৩৫ দিন আগে
ডুমুরিয়ায় বেগুন চাষে স্কুলশিক্ষকের ‘বাজিমাত’
করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে বেগুন চাষ করে লাখ লাখ টাকা আয় করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এক স্কুলশিক্ষক।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া ইউনিয়নের টিপনা শেখ আমজাদ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বি.এম মিজানুর রহমান তার গোনালী গ্রামের বাড়িতে উন্নত জাতের বেগুন চাষ করে বাজিমাত করেছেন।
গত বছরের মার্চ মাসে করোনার কারণে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে গেলে বেকার হয়ে পড়েন দেশের হাজার হাজার শিক্ষক। ওই সময় শিক্ষক বি.এম মিজানুর রহমান তার বাবা-মা-দুই ছেলে ও স্ত্রী-সহ ৬ জনের সংসারে বড় খরচের কথা বিবেচনা করে ওই সময়টাকে কাজে লাগানোর কথা ভাবেন। এসময় নিজ উদ্যোগে বাড়ি থেকে একটু দূরে নিজেদের ৩৬ শতাংশ পরিত্যাক্ত জমিতে সবজি চাষের সিদ্ধান্ত নেন। তখন তিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে ওই জমিতে থাইল্যান্ডের উচ্চ ফলনশীল জাতের বেগুন ‘এরিয়ান’ চাষ শুরু করেন।
গত বছরের মার্চ মাসের শেষ দিকে ওই জমি তৈরি করে সেখানে ১২শ’ এরিয়ান জাতের বেগুন চারা রোপন করেন। প্রতিদিন কমপক্ষে ২ জন শ্রমিক তার ক্ষেতে পরিচর্যা করতে থাকেন। মাত্র দুই মাসের শ্রমের পর ওই বেগুন গাছে ফলন আসতে শুরু করে। জুন মাসে প্রথম বেগুন বিক্রি শুরু হয়।
আরও পড়ুন: নৌকা গ্রাম: শরীয়তপুরের ৩০ পরিবারের জীবিকা চলে নৌকা তৈরি করে
ফলন আসার আগ পর্যন্ত ওই জমিতে মিজানুর প্রায় ৩৫ হাজার টাকা ব্যয় করেন। ফলন আসার কয়েকদিন পর থেকে প্রতি সপ্তাহে ১০ থেকে ১২ মণ বেগুন বাজারে নিতে শুরু করেন। তখন বেগুনের কেজি ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। প্রায় ৫ মাস ধরে বিক্রি চলাকালে শিক্ষক মিজানুরের ৭৫ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়ে যায়। তবে তার সর্বমোট বেগুন বিক্রি হয় ৩ লক্ষাধিক টাকা। তাছাড়া ওই বছর ডিসেম্বরের শেষ দিকে পুরাতন বেগুন গাছগুলো তুলে ফেলে সেখানেই পুঁইশাক চাষ করেন। ২০ হাজার টাকা খরচ করে বাড়ন্ত পুঁইশাক মার্চ মাসে তুলে বিক্রি করে আরও আয় করেন ৬৭ হাজার টাকা।
লাভের মুখ দেখে চলতি বছরের মার্চ মাসে কৃষি অফিসের পরামর্শে নতুন করে মাটি-জৈব সার ফেলে ওই জমি তৈরি করেন শিক্ষক মিজানুর রহমান। একই সঙ্গে বেগুনের চারা ও পুঁইশাক রোপন করেন। মে মাসের মধ্যে সব পুঁইশাক বিক্রি করে তিনি ৩০ হাজার টাকা আয় করেছেন। আর ১ জুন থেকেই নতুন বেগুন তোলা ও বিক্রি শুরু করে গত ১২ জুলাই পর্যন্ত ৪৭ হাজার টাকার বিক্রি করেছেন।
স্কুলশিক্ষক থেকে আধুনিক চাষি বনে যাওয়া মিজানুর রহমান বলেন, ২০২০ সালে করোনার প্রভাবে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়লে আমি সংসারের কথা ভেবে কিছু একটা করার চিন্তা করলাম। তখন উপজেলা কৃষি অফিসের সঙ্গে কথা বলে আমার জমিতে হাইব্রিড জাতের বেগুন চাষ শুরু করি। কোনো কাজ সাধনার সঙ্গে করলে ফল পাওয়া যায়। আশা করছি যদি ভালো দাম পাই, সেক্ষেত্রে আরও ৪-৫ মাস বেগুন বিক্রি করে ৩ লক্ষাধিক টাকা আয় করবো।
পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দেড় লক্ষাধিক কোরবানির পশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা
লকডাউন: খুলনাঞ্চলে নিম্ন আয়ের মানুষ দিশেহারা
এ ব্যাপারে ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘করোনাকালে বেকার সময়টা কাজে লাগিয়ে একজন শিক্ষক আধুনিক বেগুন চাষ করে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমরা এ ধরণের উদ্যোগকে সর্বাত্মক সহায়তা করছি। শিক্ষক মিজানুর রহমানের এই বাড়তি আয় দেখে অনেকেই উৎসাহিত হবেন।’
১৩৫৪ দিন আগে