ট্যানারি
সাভারে পরিবেশ দূষণের দায়ে ৭ ট্যানারির বিদ্যুৎ-পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন
সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে অভিযান চালিয়ে পরিবেশ দূষণের অভিযোগে সাতটি ট্যানারির পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এসময় সাথী লেদার লিমিটেড, গেইট ইস্টার্ণ ট্যানারি (প্রাইভেট) লিমিটেড, সিটি লেদার, ফেনী লেদার, ইউসুফ বার্দাস ট্যানারি লিমিটেড, বাংলা ট্যান লেদার প্রডাক্টস লিমিটেড ও মেসার্স পূবালী ট্যানারি লিমিটেডের পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলী রাজিব মাহমুদের নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়। এমন অভিযান আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হায়াত মাহামুদ জানান, হাইকোর্টের নির্দেশনা অমান্য করে যেসকল ট্যানারি তরল বর্জ্য ও পানি নির্গত করে পরিবেশ দূষণ করছে সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর। সেই নির্দেশনা মোতাবেক সাভার চামড়া শিল্প নগরীতে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে তরল বর্জ্য দিয়ে পরিবেশ দূষণের সত্যতা পাওয়ায় ওই সাতটি ট্যানারির বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
আরও পড়ুন: খুলনায় নতুন চামড়া কেনায় আগ্রহ নেই ট্যানারি ব্যবসায়ীদের
ট্যানারি মালিকদের কাছে কাঁচা চামড়া বিক্রির ঘোষণা আড়তদারদের
২ বছর আগে
দাম না পেয়ে যশোরের হাটেই রেখে গেছেন চামড়া
খুলনা বিভাগের সর্ববৃহৎ চামড়ার মোকাম যশোরের রাজারহাট। ঈদের পর শনিবার প্রথম হাটের দিন চামড়ার দাম ছিল কম। আর হাটে চামড়াও উঠেছিল অল্প পরিমাণে।
ঢাকার ট্যানারি মালিকরা বকেয়া টাকা না দেয়ায় কাঙ্খিত পরিমাণ চামড়া কিনতে পারেনি ব্যবসায়ীরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, খুচরা ব্যবসায়ীরা যারা মোকামে চামড়া তুলেছিলেন, তাদের অনেকেরই পুঁজি বাঁচেনি। এ ছাড়া ব্যবসায়ী কম হওয়ায় চামড়ার দাম পাচ্ছেন না ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। দূর-দূরান্ত থেকে চামড়া নিয়ে এসে হতাশা নিয়ে ফিরেছেন ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: চামড়া পাচার রোধে বেনাপোল সীমান্তে বিজিবির সতর্কতা
তেমনি এক জন সাতক্ষীরার সোহেল হোসেন। তিনি ২৫০ পিস চামড়া নিয়ে এসেছিলেন এ হাটে। এর মধ্যে ছিল ১৫০ পিস গরুর চামড়া ও ১০০ পিস ছাগলের চামড়া।
তিনি জানান, ৫০ পিস ছাগলের চামড়া সাত টাকা করে বিক্রি করেছেন। যেখানে তার ক্রয় মূল্য ২৫ টাকা করে। তাছাড়া গরুর চামড়ার দিকে কোনও ব্যাপারীর নজরই পড়েনি। এমনকি হাটে বড় ব্যবসায়ীরা আসেনি। স্থানীয়রা কিছু কিনছেন। তাও খুবই কম দামে।
খুলনার পাইকগাছার চামড়া বিক্রেতা স্বপন বৈরাগী জানান, এক হাজার পিস চামড়া নিয়ে এসেছেন। দাম না পেয়ে হাটে রেখে গেছেন কিছু চামড়া।
তিনি বলেন, ‘এভাবে চামড়ার দাম চলতে থাকলে আমাদের পরিবার নিয়ে পথে নামতে হবে। সরকার যদি এই চামড়া ব্যবসায়ীদের দিকে সুনজর না দেয় চামড়া শিল্প হারিয়ে যাবে।’
একই উপজেলার ব্যবসায়ী নির্মল সরকার জানান, দুই হাজার পিস চামড়া ক্রয় করেছেন। যশোরের রাজারহাট বাজারে এক হাজার পিস নিয়ে এসেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আমারা বাড়ি বাড়ি থেকে পিস প্রতি ২০-৩০ টাকা করে ছাগলের চামড়া ক্রয় করেছি। লবণ ও যাতায়াত খরচসহ প্রায় ৪০ টাকা করে পড়েছে। এখন দাম পাচ্ছি পাঁচ টাকা করে। গরুর চামড়া ৩০০-৪০০ ও কিছু চামড়া ৫০০ করেও কেনা হয়েছে। তবে এই চামড়া ২০০-৩০০ টাকার বেশি দাম উঠছে না।’
জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি শেখ হাসানুজ্জামান হাসু জানান, যশোরের রাজারহাট চামড়া বাজারে দীর্ঘদিন ধরে প্রায় পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী চামড়া কেনাবেঁচা করছে। তবে এবছর হারিয়ে গেছে অনেকে। সবাই ট্যানারি মালিকদের কাছে লাখ লাখ টাকা পাবে। তাদের পাওনা টাকা না পেয়ে চামড়া কিনতে চাচ্ছে না তারা। প্রায় তিন বছর যাবত টাকা নিয়ে ঘুরাচ্ছেন ট্যানারি মালিকরা। আজ-কাল বলে এতো দিনেও টাকা পরিশোধ করেনি তারা।
আরও পড়ুন: যেখানে সেখানে চামড়া ফেললে ব্যবস্থা
তিনি বলেন, ‘লকডাউনের কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে বাইরের ব্যবসায়ীরা বাজারে আসতে চাচ্ছে না। এ কারণে চামড়ার দাম কম। বড় ব্যবসায়ী না থাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না। দামও পাচ্ছেন না।’
কৃষি বিপনণ অধিদপ্তরের জেলা বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান জানান, যশোরের রাজারহাট বাজারে গরু-ছাগল মিলে প্রায় ২৫ হাজার পিস চামড়া শনিবারের হাটে উঠেছিল। এর মধ্যে ছোট গরুর চামড়া ২৫০-৩০০ টাকা, মাঝারি ৪০০-৪৫০, বড় ৮০০-৯০০ ও ছাগলের চামড়া ২০-৫০ টাক করে বিক্রি হয়েছে।
৩ বছর আগে