মুদ্রা
মুদ্রানীতি কঠোর করা ও মুদ্রা ছাপানো কমানোর আহ্বান বক্তাদের
এমসিসিআই বাজেটোত্তর আলোচনায় মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মোকাবিলায় মুদ্রানীতি কঠোর ও বিনিময় হার উদারীকরণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বক্তারা।
বুধবার(১২ জুন) মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ঢাকা (এমসিসিআই) গুলশান কার্যালয়ে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর একটি উপস্থাপনায় উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ডলারের ঘাটতির কারণে আমদানি হ্রাস এবং রপ্তানি প্রবৃদ্ধির শ্লথগতিসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন।
তিনি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, মূল্য স্থিতিশীলতা অর্জন এবং বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে একটি কঠোর মুদ্রানীতি অবস্থানের পক্ষে মত দেন এবং বাজারকে সুদের হার নির্ধারণের অনুমতি দেওয়ার কথা বলেন।
আহসান সরকারি ব্যয় বিশেষ করে প্রশাসনিক ব্যয় ও ভর্তুকির ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যাতে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ সীমিত করা যায়।
তিনি সতর্ক করে বলেন, দুর্বল ব্যাংকগুলোকে রক্ষার জন্য অর্থনীতিকে বলি দেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, 'নীতি অবশ্যই বজায় রাখতে হবে, আমরা সরে যেতে পারি না। যেসব বাণিজ্যিক ব্যাংক নিজেদের কারণে তারল্য সংকটে রয়েছে, তাদের অর্থায়ন করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: আরও দুই পোশাক কারখানা পেল এলইইডি সনদ
মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখা দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দেওয়া বন্ধ করতে বাংলাদেশ ব্যাংককেও পরামর্শ দেন তিনি।
অপর একটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় অর্থবছর ২০২৪-২০২৫ থেকে নির্বাচিত আয়কর ও ভ্যাটের বিধান নিয়ে আলোচনা করেন এমসিসিআইয়ের ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশন কমিটির সদস্য আদিব এইচ খান।
তিনি কর ও ভ্যাটের জন্য দুটি পৃথক কর্তৃপক্ষ গঠনের আহ্বান জানান এবং যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ এবং বিশেষজ্ঞদের একীভূতকরণ কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ব্যাংক একীভূতকরণের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, পিআরআইয়ের চেয়ারম্যান ড. জায়েদী সাত্তার এবং এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমান।
আরও পড়ুন: মোবাইল খাতে কর বৃদ্ধি জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে: এমটব
৬ মাস আগে
২০২৪ সালে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান ১০ মুদ্রা
যে কোনো দেশের মুদ্রার মানের উল্লেখযোগ্য হ্রাস-বৃদ্ধি নির্ভর করে সুদের হার, মুদ্রাস্ফীতি, বাজারের চাহিদা এবং ব্যবসায়িক লেনদেনের ভারসাম্যের ওপর। এই সূচকগুলোর পেছনে প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে দেশটিতে সঞ্চিত সম্পদের পরিমাণ এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এভাবে সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের সঙ্গে কখনও মুদ্রা দর পতন ঘটে কখনও বা তা বেড়ে যায়। অত্যধিক হারে বেড়ে যাওয়া মুদ্রামান বিশ্বজুড়ে ব্যবসায়িক লেনদেনে সেই মুদ্রার একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে। চলুন, ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত কোন ১০টি মুদ্রা সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে তা জেনে নেওয়া যাক।
বৈদেশিক মুদ্রার মূল্য যেভাবে নির্ধারণ হয়
এক দেশের মুদ্রা থেকে অন্য দেশের মুদ্রার বিনিময় হারের পরিবর্তন মূলত দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে।
ফ্লোটিং রেট
মুক্ত বাজারে মুদ্রার সরবরাহ ও চাহিদার বর্তমান অবস্থা ঠিক করে দেয় মুদ্রার ফ্লোটিং রেট। যখন একটি মুদ্রার চাহিদা বাড়লে এর দাম বাড়ে, একইভাবে চাহিদা কমলে দামটাও কমে। এই হ্রাস-বৃদ্ধির নেপথ্যে কাজ করে বিনিময় হার সম্পর্কে মানুষের সাধারণ ধারণা। বিনিময় হারের এই বদলে যাওয়ার ধারাবাহিকতায় পরিবর্তন হতে থাকে মানুষের চাহিদা এবং বাজারে মুদ্রার সরবরাহ।
যেমন ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারের (ইউএস ডলার) চাহিদা বৃদ্ধি মানে ইউরোর দাম মার্কিন ডলারের দাম থেকে কমে যাওয়া। চাহিদা বৃদ্ধির মূলে থাকে বেকারত্বের হার, মুদ্রাস্ফীতি এবং সুদের হারের পরিবর্তনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনা।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০ শক্তিশালী মুদ্রা
ফিক্স্ড রেট
একটি বিদেশি মুদ্রার সঙ্গে বিনিময়ের জন্য একটি দেশের সরকার সেই দেশের মুদ্রার একটি নির্দিষ্ট হার বেধে দেয়। মুদ্রার মূল্য নির্ধারণীটি করা হয়ে থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে। অতঃপর সেই বিদেশি মুদ্রার বিপরীতে সরকার কর্তৃক দেশীয় মুদ্রা লেনদেন করা হয়, যার মাধ্যমে নির্ধারিত হারটি বজায় থাকে।
বাজারে স্বল্পমেয়াদে ফ্লোটিং রেট যখন ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে, তখন এর নেতিবাচক প্রভাব করে দৈনন্দিন সরবরাহ ও চাহিদায়। এ সময় মুদ্রার দাম একদম পড়ে গেলে অথবা আকাশচুম্বী হয়ে যায়। এই অস্থিতিশীলতাটি দেশের বাণিজ্য, ঋণ পরিশোধসহ সামগ্রিক অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে পারে। তাই পরিস্থিতি সামলানোর জন্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো তাৎক্ষণিকভাবে ফিক্স্ড রেটের আশ্রয় নেয়।
বিশ্বের সবচেয়ে দামি ১০টি মুদ্রা
কুয়েতি দিনার (কেডব্লিউডি)
বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রা হলো কুয়েতি দিনার, যুক্তরাষ্ট্রের (ইউএসএ) মুদ্রায় যার বিনিময় হার ৩ দশমিক ২৬ মার্কিন ডলার। এর পেছনে প্রথম কারণ হচ্ছে তেল রপ্তানিতে বিশ্বে কুয়েতের অবস্থান। এই প্রেক্ষাপটটি দেশটিকে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি দিয়েছে।
দ্বিতীয়ত, কুয়েতি দিনারে মার্কিন ডলার, ইউরো এবং জাপানি ইয়েনের মতো বিশ্বখ্যাত তিনটি মুদ্রার বিপরীতে ফিক্স্ড রেট আরোপ করা হয়েছে। তাই বৈশ্বিক মুদ্রা বাজার পরিবর্তন এই দিনারের মানকে তেমন প্রভাবিত করতে পারে না।
তৃতীয়ত, কুয়েত একটি রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল দেশ। এতে করে কুয়েত বিপুল পরিমাণে বিদেশি বিনিয়োগ পায়।
তাছাড়া, দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এই মুদ্রা সরবরাহের উপর। ফলে মুদ্রার দর একটি নির্দিষ্ট হার বজায় রাখতে পারে।
বাহরাইন দিনার (বিএইচডি)
বিশ্বের দ্বিতীয়-সর্বোচ্চ দামি মুদ্রা হলো বাহরাইন দিনার, যার একক মুদ্রার হার ২ দশমিক ৬৫ মার্কিন ডলারের সমান। এর পেছনে প্রধান কারণ তেলের পাশাপাশি বাহরাইন গ্যাস রপ্তানিতেও সেরা।
মার্কিন ডলারের বিপরীতে এই দিনারের বিনিময় হার সুনির্দিষ্ট করায় এর দামে খুব বেশি তারতাম্য থাকে না। এমনকি দেশটির নিম্ন মূল্যস্ফীতির হার মুদ্রার মান স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: স্বর্ণ বনাম হীরা: কোন বিনিয়োগটি বেশি লাভজনক?
ওমানি রিয়াল (ওএমআর)
বিশ্বের তৃতীয় দামি মুদ্রাটির নাম ওমানি রিয়াল, যার একক মুদ্রা দিয়ে ২ দশমিক ৬০ মার্কিন ডলার কেনা যায়। কারণ বাহরাইনের মতো ওমানও বিশ্বখ্যাত তেল ও গ্যাস রপ্তানিকারক। আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের এই দেশটির অর্থনীতির বেশিরভাগই নির্ভর করে তাদের কাছে থাকা তেলের মজুদের উপর।
এই রিয়ালের এক হাজার ভাগের এক ভাগকে ‘বাইসা’ বলা হয়, যা অন্যান্য মুদ্রার বিপরীতে ব্যবহার করা হয়। আর ইউএস ডলারের বিপরীতে ওমানের মুদ্রার রেট ফিক্স্ড করা আছে। এছাড়া দেশটির মূল্যস্ফীতির হার তুলনামূলকভাবে কম হওয়ার কারণে মুদ্রার মানের আকস্মিক পরিবর্তন হয় না।
জর্ডানিয়ান দিনার (জেওডি)
তালিকার চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে জর্ডানিয়ান দিনার, যার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রার বিনিময় হার ১ দশমিক ৪১ ডলার। বিশ্ব বাজারে তেল ও গ্যাসের প্রধান বিক্রেতা না হলেও এই অতীব দুটি মূল্যবান সম্পদ জর্ডানের অর্থনীতির মূল শক্তি।
দিনারের ঊর্ধ্বমানের নেপথ্যে রয়েছে আর্থিক এবং রাজস্ব নীতিতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সতর্কতা। এর ফলে একদিকে আভ্যন্তরীণ বাজারে মুদ্রার মূল্য স্থিতিশীল থাকে। অন্যদিকে, বিশ্ব বাজারের উত্থান-পতনের ধাক্কা থেকে জর্ডানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সুরক্ষিত থাকে।
ব্রিটিশ পাউন্ড (জিবিপি)
পৃথিবীর সর্বোচ্চ দামি মুদ্রাগুলোর শীর্ষ ১০-এর ঠিক মাঝামাঝিতে রয়েছে ব্রিটিশ পাউন্ড। ১ ব্রিটিশ পাউন্ড ১ দশমিক ২৭ মার্কিন ডলারের সমতূল্য। সাম্প্রতিক নানা ধরনের রাজনৈতিক ঝামেলার পরেও পাউন্ড ২০২৪ সালের পঞ্চম শক্তিশালী মুদ্রা। এর পেছনে মূলত দুটি বিষয় দায়ী। এক জিবিপ’র জনপ্রিয়তা এবং দুই, সংগৃহীত মোট রাজস্ব আয়ের দিক থেকে এই দেশটি বিশ্বের বৃহত্তম দেশগুলোর অন্তর্ভূক্ত।
আরও পড়ুন: ডলার এনডোর্সমেন্ট কী, কীভাবে করবেন
৬ মাস আগে
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নেমেছে ২২ বিলিয়ন ডলারের নিচে
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (এসিইউ) ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারের আমদানি বিল পরিশোধের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
কোভিড-১৯ মহামারি শিথীল হওয়ার পর থেকে আমদানির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চাপের মধ্যে পড়েছে এবং ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে।
অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে মার্কিন ডলার ব্যয় করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর পদক্ষেপ সত্ত্বেও অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স প্রবাহ হ্রাস এবং রপ্তানি আয় দেরিতে পাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার সংকট আরও গভীর হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ও ভারতের মুদ্রায় বাণিজ্য লেনদেন রিজার্ভের ওপর চাপ কমাবে: হাইকমিশনার
রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসিইউ- কে ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে। এরপরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। আইএমএফ ঋণের শর্ত অনুযায়ী সেপ্টেম্বরে প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলারের কাঙ্ক্ষিত রিজার্ভের জন্য এটি খুব কম।
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন (এসিইউ) হলো বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে একটি অর্থ প্রদানের ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন: ৭ বছর পর রিজার্ভের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে
বাংলাদেশ ব্যাংক গণনা অনুযায়ী মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল প্রায় ২৭ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু রিজার্ভ গণনার সর্বজনীন স্বীকৃত সূত্র অনুসারে রবিবার রিজার্ভ হ্রাস পেয়ে ২১ দশমিক ৫০ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
বিবির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেসবাউল হক ইউএনবিকে বলেন, রবিবার এসিইউর দায় পরিশোধের পর প্রকৃত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয় ও বৈদেশিক অনুদান ক্রমাগত বৈদেশিক মুদ্রায় যুক্ত হওয়ায় রিজার্ভ সাধারণত স্থিতিশীল থাকে না।
আরও পড়ুন: আইএমএফ’র হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের রিজার্ভ ২৩.৫৭ বিলিয়ন ডলার
১ বছর আগে
২০২৩ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০ শক্তিশালী মুদ্রা
বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড এবং অর্থনৈতিক লেনদেনে সাবলীলতার দরুণ মুদ্রা বিশ্ব অর্থনীতির একটি অপরিহার্য উপাদান। স্বভাবতই সবগুলো মুদ্রা মূল্যমান এক পাল্লায় পরিমাপ করা হয় না। এমনকি কিছু কিছু মুদ্রা অন্যগুলোকে ছাড়িয়ে আশ্চর্যজনক উচ্চতায় উঠে আসে। এই আকাশচুম্বী তারতম্যের কারণ কী! বর্তমান বিশ্বের সব থেকে দামি ১০টি মুদ্রার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি চলুন পটভূমিটাও জেনে নেওয়া যাক।
বৈদেশিক মুদ্রার মান নির্ধারণ হয় কীভাবে?
বৈদেশিক মুদ্রার মূল্যমান মূলত নির্ধারিত হয় দু’টি প্রধান উপায়ে: ফ্লোটিং রেট ও ফিক্সড রেট।
ফ্লোটিং রেট
এই রেটটি নির্ধারিত হয় মুক্ত বাজারে সরবরাহ ও চাহিদার বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। যখন একটি মুদ্রার চাহিদা বেশি হয়, তখন এর মূল্য বাড়ে। আর চাহিদা কমার সঙ্গে সঙ্গে তার দামটা পড়তে থাকে। বিভিন্ন প্রযুক্তিগত এবং মৌলিক কারণ একটি ন্যায্য বিনিময় হার সম্পর্কে মানুষের ধারণাকে প্রভাবিত করে। আর সেই অনুযায়ী পরিবর্তন হতে থাকে চাহিদা ও সরবরাহ।
উদাহরণস্বরূপ, ইউরোপীয়দের মধ্যে মার্কিন ডলারের চাহিদা বৃদ্ধির ফলে ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারের দাম বেড়ে যায়। এর পেছনে নটবর হিসেবে কাজ করে সুদের হারের পরিবর্তন, বেকারত্বের হার, মুদ্রাস্ফীতি ও ভূ-রাজনৈতিক ঘটনাগুলো।
ফিক্সড রেট
বিদেশি মুদ্রার বিনিময় হিসেবে একটি দেশের সরকার নিজেদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট হার নির্ধারণ করে দেয়। এই হার বজায় রাখার জন্য সরকার সেই বিদেশি মুদ্রার বিপরীতে নিজস্ব মুদ্রা ক্রয় ও বিক্রয় করে।
আরও পড়ুন: আমদানিতে কড়াকড়ি সত্ত্বেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে
স্বল্পমেয়াদে ফ্লোটিং রেটের গতিবিধিকে ঘিরে দানা বাধতে থাকে অনুমান ও গুজব। কখনো সত্যিকার অর্থেই রেটের বিপর্যয় ঘটে, যার সূত্র ধরে পরিবর্তিত হতে থাকে দৈনন্দিন সরবরাহ ও চাহিদা। স্বল্পমেয়াদের এই অস্থিরতার চরম অবস্থায় সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো হস্তক্ষেপ করে।
অর্থাৎ একটি মুদ্রার দাম অত্যধিক বেশি বা কম হয়ে গেলে সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর এই হস্তক্ষেপ ঘটে। অন্যথায় এই অস্থিতিশীলতাটি দেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং ঋণ পরিশোধের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সর্বপরি, মুদ্রার ফ্লোটিং রেটকে তুলনামূলকভাবে অনুকূল অবস্থায় নিয়ে আসার জন্য ফিক্সড রেটের ব্যবস্থাগুলো প্রয়োগ করা হয়।
২০২৩ সালে পৃথিবীর শীর্ষ ১০ মূল্যবান মুদ্রা
কুয়েতি দিনার
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দামি মুদ্রা হলো কুয়েতি দিনার (কেডব্লিউডি), যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রায় যার বিনিময় হার ৩ দশমিক ২৭ মার্কিন ডলার। কুয়েতের ভৌগলিক অবস্থান সৌদি আরব এবং ইরাকের মাঝে হওয়ায় দেশটিকে তেল রপ্তানিকারক হিসেবে বিশ্বব্যাপী শীর্ষস্থানীয় পদমর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। ১৯৬০-এর দশকে প্রবর্তিত মুদ্রা দিনার সর্বপ্রথম ব্রিটিশ পাউন্ডের বিপরীতে ফিক্সড রেট করা হয়েছিল। এই কৌশলগত পদক্ষেপটি কুয়েতকে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং একক মুদ্রামুখী ঝুঁকিগুলো হ্রাস করতে সাহায্য করে। বর্তমানে বাংলাদেশে ১ কুয়েতি দিনারের দাম ৩৫৩ দশমিক ৭০ টাকা।
আরও পড়ুন: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতিকৃতি বিশিষ্ট বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুদ্রার এখন কি করা হবে?
১ বছর আগে
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অলস না রেখে জনকল্যাণে ব্যয় করা ভালো: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রিজার্ভের টাকা অলস ফেলে রাখার চেয়ে জনগণের কল্যাণে ব্যয় করা ভালো।
সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) দেশের ৫৯টি জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদস্যদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী জেলা পরিষদ চেয়াম্যানদের শপথবাক্য পাঠ করান এবং ৬২৩ সদস্যকে শপথবাক্য পাঠ করান এলজিআরডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: মানুষ কথা বলবে কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কাজে বাংলাদেশ লাভবান হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আমরা এই (রিজার্ভ) টাকা নিয়ে অলস বসে থাকতে পারি না। আমাদের এটি জনগণের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সাধারণ মানুষের কল্যাণ ও উন্নতির জন্য রিজার্ভের অর্থ ব্যয় করেছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে যোগাযোগ, পরিবহন, আমদানি সবকিছুই প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছিল। ফলে রিজার্ভের টাকা প্রায় ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
তিনি বলেন, বিশ্ব যখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতেছিল, তখন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হয় এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়। ‘ফলস্বরূপ, উচ্চ পরিবহন ব্যয়ের সঙ্গে বিশ্বব্যাপী প্রতিটি দ্রব্যের দাম বেড়েছে’ বলেও তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খরচ সত্ত্বেও সরকার সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য করতে সবকিছু আমদানি করেছে।
তিনি বলেন, সরকার অনেক বেশি দামে খাদ্য, জ্বালানি তেল, গ্যাস, ভোজ্যতেল, গম ও ভুট্টা সংগ্রহ করছে।
তিনি বলেন, এক কোটি টিসিবি কার্ডের মাধ্যমে সরকার কম দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করছে। এই সুবিধার আওতায় ৫০ লাখ মানুষ ১৫ টাকা কেজি দরে চাল পাচ্ছে।
আরও পড়ুন: পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীর প্রতি প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত আন্তরিক: উশৈ সিং
তিনি বলেন, যারা সম্পূর্ণ অক্ষম তাদেরকে আমরা বিনামূল্যে খাবার দিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, সরকার গৃহহীনদের ঘর দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
তিনি বলেন, আমরা অন্যের কাছ থেকে ঋণ না নিয়ে নিজেদের রিজার্ভের টাকা ব্যবহার করেছি।
তিনি বলেন, রিজার্ভ মানি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে উড়োজাহাজ কেনার জন্য ঋণ হিসেবে দেয়া হয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ দিচ্ছে।
রিজার্ভের টাকা নিয়ে বিএনপির অপপ্রচারের জবাবে তিনি বলেন, তাদের নেতা তারেক রহমান অর্থ পাচারের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় তারা অবশ্যই এটি করবে।
শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এলজিআরডি সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম।
আরও পড়ুন: এখন মেগাপ্রজেক্ট নয় জনকল্যাণমুখী প্রকল্প নিয়ে আসুন: প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতিকৃতি বিশিষ্ট বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুদ্রার এখন কি করা হবে?
কয়েক দশক ধরে ব্রিটিশ নোট ও মুদ্রায় রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে চিত্রিত করা হয়েছে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ঔপনিবেশিক ঐতিহ্যের একটি স্মারক হিসেবে তার প্রতিকৃতি বিশ্বের আরও ডজনখানেক দেশের মুদ্রায় দেখা যায়।
তাহলে সম্প্রতি তার মৃত্যুর পর এসবের কি হবে?
যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও অন্যান্য দেশের মুদ্রায়র তাদের নতুন রাজার ছবি প্রতিস্থাপন করতে সময় লাগবে।
তবে এর অর্থ এই নয় যে মুদ্রাগুলো কাজ করবে না।
রানির মুত্যুর পর তার প্রতিকৃতি অঙ্কিত কাগজের মুদ্রার জন্য পরবর্তীতে কি হচ্ছে তা জেনে নেয়া যাক:
রাজার পরিবর্তন
ব্রিটিশ নোট ও মুদ্রায় রানির প্রতিকৃতিগুলোকে নতুন রাজা চার্লস তৃতীয় এর অনুরূপ প্রতিকৃতি দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে অবিলম্বে তা করা সম্ভব হবে না।
ব্যাংক অব ইংল্যান্ড জানিয়েছে, ‘মহামান্য রানির প্রতিকৃতি সম্বলিত বর্তমান ব্যাংক নোটগুলো বৈধ মুদ্রা হিসেবে অব্যাহত থাকবে।’
ব্যাংকের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, দেশটিতে চলমান ১০ দিনের শোক শেষ হওয়ার পরে যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারি করা বিদ্যমান কাগজের মুদ্রার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হবে।
ব্রিটিশ মুদ্রার অফিশিয়াল নির্মাতা রয়েল মিন্ট জানিয়েছে, রানির প্রতিকৃতি সম্বলিত মুদ্রা বৈধ মুদ্রা হিসেবেই থাকবে এবং প্রচলন অব্যাহত থাকবে। এ বিষয়ে আরও তথ্য পরবর্তীতে জানানো হবে।
রয়েল মিন্টের ওয়েবসাইটে উল্লেখ আছে, চলমান শোক সময়কে আমরা সম্মান করে মুদ্রাগুলো অব্যাহত রেখেছি।
৮২ বিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের চার দশমিক সাত বিলিয়ন ব্রিটিশ ব্যাংক নোট ও প্রায় ২৯ বিলিয়ন কয়েনসহ রানির ছবি বিশিষ্ট ব্রিটিশ মুদ্রা সম্ভবত বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকবে।
মুদ্রা বিশেষজ্ঞ একটি ব্রিটিশ মুদ্রা গবেষণা ওয়েবসাইট অনুসারে, বরং বর্তমানের সব কয়েন ও নোট হস্তান্তর করা হচ্ছে। প্রক্রিয়াটি ধীরে ধীরে হবে এবং রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতিকৃতি সম্বলিত অনেক মুদ্রা আগামী বহু বছর ধরে প্রচলিত থাকবে।
ওয়েবসাইটটি বলা হয়েছে, চার্লস তার রাজ্যাভিষেকের সময় মুকুট নেয়ার পরে নতুন করে নকশা করা নোট ও কয়েন ব্যবহার করার জন্য একটি নতুন প্রতিকৃতি তৈরি করতে হবে।
১৭ শতকের ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রানির ডানদিকে তাকানো প্রতিকৃতিকে প্রতিস্থাপন করে নতুন রাজার বাম দিকে তাকানো প্রতিকৃতি দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হবে। পূর্বের সম্রাটের ঠিক বিপরীত দিকের প্রতিকৃতি ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া আছে।
আরও পড়ুন: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ যখন প্রথমবার বাংলাদেশে আসেন
অন্যান্য দেশ ক্ষেত্রে কি হবে?
মুদ্রা বিশেষজ্ঞ ওয়েবসাইটটিতে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ান, কানাডিয়ান ও বেলিজিয়ান ডলারের রানির প্রতিকৃতি সম্বলিত অন্যান্য দেশের মুদ্রাতেও নতুন রাজার প্রতিকৃতি যুক্ত করা হবে। তবে এই প্রক্রিয়া বেশ বিলম্বিত হবে। কারণ যে দেশে উৎপত্তি সে দেশে নতুন নকশা প্রতিস্থাপন করা তুলনামূলক সহজ। তবে আইনি ব্যবস্থায় ভিন্নতার জন্য অন্যান্য দেশে তুলনামূলক বেশি সময় লাগতে পারে।
ব্যাংক অব কানাডা বলেছে যে সিন্থেটিক পলিমার দিয়ে তৈরি বর্তমান ২০ ডলারের ব্যাংক নোটটি আগামী বেশ কয়েক বছরের জন্য প্রচলনের উদ্দেশে ডিজাইন করা হয়েছে।
ব্যাংকটি জানিয়েছে, সম্রাট পরিবর্তনের সময় একটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নকশা পরিবর্তন করার কোনো আইনি প্রয়োজন নেই।
ব্যাংক আরও জানিয়েছে, সাধারণভাবে যখন কানাডিয়ান অর্থের জন্য একটি নতুন প্রতিকৃতির বিষয় বেছে নেয়া হয় তখন প্রক্রিয়াটি নতুন নকশা আঁকার মাধ্যমে শুরু হয় এবং কয়েক বছর পরে নতুন নোটটি জারি করার জন্য প্রস্তুত হয়।
রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউজিল্যান্ড বলেছে, চার্লসের প্রতিকৃতি সম্বলিত নতুন মুদ্রা বের হওয়ার আগে তারা রানির প্রতিকৃতি সম্বলিত মুদ্রার সব স্টক প্রচলন করবে।
২০ ডলারের নোটের স্টক শেষ না হওয়া পর্যন্ত চার্লস তৃতীয় সম্বলিত মুদ্রা প্রচলন করতে এখনও বেশ কয়েক বছর লেগে যাবে।
আরও পড়ুন: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যু, রাজপরিবারের উত্তরাধিকারের নতুন আদেশ
মুদ্রায় রানি
তিনি যখন রাজকুমারী ছিলেন তখন তাকে প্রথম মুদ্রায় দেখা যায়। এটি ছিল ১৯৩৫ সাল, যখন কানাডার ২০ ডলার নোটে আট বছর বয়সী এলিজাবেথের প্রতিকৃতি নোটের একটি নতুন সিরিজের অংশ হিসেবে যুক্ত করা হয়। তার দাদা রাজা জর্জ পঞ্চম ছিলেন তখনকার সম্রাট।
কানাডিয়ান ২০ ডলার নোটে ১৯৫৪ সালে রানির রাজ্যাভিষেকের এক বছর পরে একটি নতুন প্রতিকৃতি দিয়ে হালনাগাদ করা হয়েছিল। তার প্রতিকৃতি বিশ্বের অন্যান্য মুদ্রায় প্রধানত ব্রিটিশ উপনিবেশ ও কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে প্রচলিত হতে শুরু করে।
তার রাজ্যাভিষেকের সাত বছর পর ১৯৬০ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ মুদ্রাগুলো তার কোনো প্রতিকৃতি পায়নি। তখনই ব্যাংক অব ইংল্যান্ডকে এক পাউন্ডের নোট থেকে শুরু করে কাগজের মুদ্রায় তার প্রতিকৃতি ব্যবহার করার অনুমতি দেয়া হয়। যদিও আনুষ্ঠানিক ও রাজকীয় প্রতিকৃতিটি ততটা সমালোচিত হয়েছিল।
তিনি ব্রিটিশ ব্যাংক নোটে চিত্রিত হওয়া প্রথম সম্রাট। ব্রিটিশ কয়েনে এক হাজারেরও বেশি সময় ধরে রাজা ও রানিদের প্রতিকৃতি স্থান পেয়ে আসছে।
আরও পড়ুন: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ সম্পর্কে ১০টি বিষয়
যুক্তরাজ্যের বাইরের মুদ্রা
এক পর্যায়ে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতিকৃতি কমপক্ষে ৩৩টি ভিন্ন মুদ্রায় স্থান পায়। সংখ্যায় তা অন্য যে কোনো রাজার চেয়ে বেশি। যা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নেয়।
কানাডার মতো যেখানেই তিনি একজন প্রিয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে রয়ে গেছেন, সেখানকার মুদ্রায়ই তার ছবি রয়েছে এবং অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো তাদের পতাকায় ইউনিয়ন জ্যাক যুক্ত করা অব্যাহত রয়েছে।
ইস্টার্ন ক্যারিবিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক, অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, ডোমিনিকা, গ্রেনাডা, মন্টসেরাট, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, ও সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইনসসহ কয়েকটি ছোট দেশের জন্য আর্থিক কর্তৃপক্ষের জারি করা নোট ও কয়েনেও তার প্রতিকৃতি রয়েছে।
অন্যান্য দেশ তাদের মুদ্রায় তার প্রতিকৃতির ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। ১৯৬২ সালে জ্যামাইকা ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করার পর এর কেন্দ্রীয় ব্যাংক মার্কাস গার্ভে এর মতো রানির প্রতিকৃতির বদলে জাতীয় বীরদের প্রতিকৃতি ব্যবহার শুরু করে।
সেশেলসের নোটগুলোতে এখন রানির প্রতিকৃতির পরিবর্তে স্থানীয় বন্যপ্রাণী স্থান পেয়েছে। বারমুডা একই ধরনের পরিবর্তন করেছে, তবে অল্প কিছু নোটে রানিকে ধরে রাখা হয়েছে। ত্রিনিদাদ ও টোবাগো প্রজাতন্ত্র হওয়ার পরে তাদের মুদ্রা পরিবর্তন করে।
১৯৯৭ সালে ব্রিটেন তার উপনিবেশ বেইজিংয়ের কাছে হস্তান্তর করার পর হংকং ডলার জারি করেছে, তাদের মুদ্রায় আকাশে চীনা ড্রাগন ও আকাশচুম্বী দালানের ছবি রয়েছে।
আরও পড়ুন: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাক্রম
২ বছর আগে
আমদানিতে কড়াকড়ি সত্ত্বেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে
বর্তমানে দেশে কম আমদানি সত্ত্বেও বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেশ চাপের মধ্যে রয়েছে।
এলসি কেনার জন্য মার্কিন ডলার বিক্রির চাপ, ভ্রমণ, চিকিৎসার খরচ এবং বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মেটাতে ব্যক্তিগত চাহিদা বৃদ্ধির কারণে এটি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ২ বছরের মধ্যে প্রথম ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামলো রিজার্ভ
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন (এসিইউ)-এর জুলাই-আগস্টের জন্য বকেয়া এক দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নামবে।
তিনি বলেন, ‘আগামীকালের মধ্যে এই ঋণ পরিশোধ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তখন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়াবে ৩৭ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারে।’
গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত (১ সেপ্টেম্বর ২০২২) বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩৯ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।
বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে ‘স্থিতিশীলতা’ আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে। বৃহস্পতিবারও কয়েকটি ব্যাংকের কাছে ৭৬ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছে।
সর্বমোট, দুই মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ২ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে।
আরও পড়ুন: দেশে রিজার্ভ ১৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি নেই: ফখরুল
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, রেমিট্যান্স বাড়লেও ডলার বিক্রি অব্যাহত থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে রিজার্ভ ৩৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে গেলেও কোনো সমস্যা নেই। কারণ, এই রিজার্ভ দিয়ে ছয় মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।’
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমদানি কমছে; রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়ছে। এ অবস্থায় মনে হচ্ছে আগামী দিনে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়বে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার বাজারকে স্থিতিশীল করতে ২০২১-২২ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ৭ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। বাংলাদেশ এর আগে কোনো এক অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে এত বেশি পরিমাণ ডলার বিক্রি করেনি।
এছাড়া আগের অর্থবছরে (২০২০-২১), বৈদেশিক মুদ্রার বাজার স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক রেকর্ড আট বিলিয়ন ডলার কিনেছিল।
আরও পড়ুন: রিজার্ভ দিয়ে ৯ মাসের খাবার আমদানি করতে পারবো: শেখ হাসিনা
২ বছর আগে
বিদেশি মুদ্রা আদায়ে এলসি মার্জিন বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক
বিদেশি মুদ্রা আদায়ে পণ্য আমদানির ঋণপত্র বা এলসি মার্জিন পরিবর্তন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিছু অত্যাবশ্যকীয় ছাড়া বাকি সব পণ্য আমদানির জন্য ব্যাংকগুলোকে ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ এলসি মার্জিন আরোপ করার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ বিষয়ে গত ১১ এপ্রিল জারি করা নির্দেশনাটি স্থগিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধান ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) অবিলম্বে কার্যকর এই নতুন নির্দেশ জারি করেছে, যা পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
আরও পড়ুন: নতুন নোট বাজারে ছাড়া শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বৈশ্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের কথা বিবেচনা করে ঋণ ও সমন্বিত বৈদেশিক মুদ্রার উত্তম ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক আগের এলসি মার্জিন পরিবর্তন করেছে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক মোটর গাড়ি, হোম অ্যাপ্লায়েন্স ইলেকট্রনিক্স এবং বৈদ্যুতিক পণ্যগুলোর জন্য সর্বনিম্ন ৭৫ শতাংশে ক্রেডিট খোলার মার্জিন নির্ধারণ করেছে।
শিশুখাদ্য, অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যদ্রব্য ও জ্বালানি, জীবনরক্ষাকারী ওষুধ, স্থানীয় ও রপ্তানিমুখী শিল্প এবং কৃষি সংশ্লিষ্ট পণ্য ব্যতীত অন্য সব পণ্য ও পণ্য আমদানিতে এলসি খোলার জন্য ন্যূনতম ৫০ শতাংশ মার্জিন সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চলতি মূলধনের ঋণসীমা বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক
এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমের সংশোধিত নির্দেশিকা জারি বাংলাদেশ ব্যাংকের
২ বছর আগে
ঢাকা বিমানবন্দরে ৮ দেশের মুদ্রাসহ আটক ১
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সোমবার সকালে বিদেশে পাচারকালে আটটি দেশের মুদ্রাসহ একজনকে আটক করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ (এপিবিএন)।
আটক জাহাঙ্গীর গাজী (৩৬)।
তার কাছ থেকে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার আটটি দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শাহজালাল বিমানবন্দরে ১৪ কেজি তরল স্বর্ণ জব্দ, আটক ৩
এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক ইউএনবিকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা তার বোর্ডিং পাস শেষ করার পরে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করি এবং তার শরীর থেকে ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, পরে আমরা তার সব জিনিসপত্র স্ক্যান করে বাকি মুদ্রা উদ্ধার করি।
আরও পড়ুন: শাহজালাল বিমানবন্দরে ৫২ স্বর্ণের বার জব্দ, আটক ১
৩ বছর আগে