সনাতন
সাতক্ষীরায় চিনিগুঁড়া ধানে তৈরি ১৮ প্রতিমা
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আগামী ২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে দেবী দুর্গা ঘোড়ায় (ঘোটকে) চড়ে স্বর্গ থেকে মর্ত্তলোকে আসবেন। এরপর মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমীর পূজা শেষে দশমীতে (২৪ অক্টোবর) বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে আবারও ঘোড়ায় চড়ে তিনি ফিরে যাবেন স্বর্গলোকে।
এ পূজা উদযাপন উপলক্ষে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার মুরারিকাটি উত্তর পালপাড়া মন্দিরে এবার ১০০ কেজি চিনিগুঁড়া ধানের শৈল্পিক কারুকাজে নির্মাণ হয়েছে ১৮টি প্রতিমা।
পূজা শুরুর এখনও ১০ দিন বাকি থাকলেও ধান দিয়ে নির্মাণ করা প্রতিমা দেখতে মানুষের ভিড় বেড়েই চলেছে। যেন উৎসবের আগেই উৎসবের আমেজ।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিমাগুলো মনে হচ্ছে সোনা দিয়ে মোড়ানো হয়েছে। পুঁথির মতো একটা একটা করে ধান দিয়ে গেঁথে তৈরি করা হয়েছে এ প্রতিমা, যা অপরূপ সৌন্দর্য বর্ধন করেছে।
আরও পড়ুন: শনিবার মহা ষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা
প্রতিমা তৈরির কারিগর শিল্পী পল্লত বিশ্বাস বলেন, ১৮টি প্রতিমা পূর্ণাঙ্গভাবে তৈরি করতে সম্পূর্ণ একমাস সময় লেগেছে। এই মণ্ডপে দুর্গা, কার্তিক গণেশ, সরস্বতী, লক্ষ্মী, অসুরসহ আনুষঙ্গিক ১৮টি প্রতিমা তৈরির জন্য প্রথমে কাঠ, বাঁশ, পাট, নকশী কাপড় পা ও বিচুলির ফ্রেম বা কাঠামো, মাটি ও বিশেষ শৈল্পিক কারুকাজ হিসেবে ব্যয়বহুল চিনিগুঁড়া ধান ব্যবহার করা হয়েছে। কিছু কিছু অংশে ব্যয়বহুল রং স্প্রে করা হয়েছে। যার কারণে প্রতিমাগুলোর সৌন্দর্য আরও বর্ধিত হয়েছে।
মুরারিকাটি পালপাড়া পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য ও শিক্ষক প্রদীপ পাল বলেন, প্রতি বছর ভিন্ন আঙ্গিকে তৈরি করা হয় এ পূজা মণ্ডপের প্রতিমাগুলো। এ বছর প্রায় ১০০ কেজি চিনিগুঁড়া ধান ব্যবহার করা হয়েছে এ প্রতিমা তৈরিতে। প্রতিমা তৈরির পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ হয়েছে আরও কয়েকদিন আগে এরই মধ্যে ধানের প্রতিমা দেখতে ভিড় করছেন অনেকে।
স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামাপদ পাল বলেন, ‘এবার যুব কমিটির আয়জনে ১ লাখ টাকার মতো খরচ করে ধানের প্রতিমা নির্মাণ হয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে অচেনা মানুষের ভিড়ে মুখর হচ্ছে পূজা মণ্ডপ। পূজা শুরু হলে আমাদের যেসব স্বেচ্ছাসেবক আছে, তা দিয়ে শৃঙ্খলা কতটুকু রক্ষা করা যাবে জানি না। তাই প্রশাসনের সর্বোচ্চ সহযোগিতা চাই।’
মণ্ডপে আসা অঞ্জলি পাল বলেন, ‘পালপাড়ায় ৪০টি সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবার বসবাস করে। এবার এ দুর্গাপূজা উদযাপনে এই প্রথম এত সুন্দর প্রতিমা তৈরি করেছে যুব কমিটি, যা সত্যি প্রশংসিত।’
১ বছর আগে
দুবলারচরে পূণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ৩ দিনের রাস উৎসব
বঙ্গোপসাগরের মোহনায় নোনা জলে পূণ্যস্নানের মধ্যে দিয়ে দুবলারচরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী তিনদিনের রাস উৎসব শেষ হয়েছে।
বাগেরহাটের সুন্দরবনের দুবলারচরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাস উৎসব উপলক্ষ্যে সোমবার রাতভর পূজা অর্চনা আর প্রার্থনা করা হয়। মঙ্গলবার সূর্য উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে পূর্ণার্থীরা সাগরে নোনা জলে পূণ্যস্নানে অংশ নেন। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ পূর্ণার্থীরা শান্তি ও মঙ্গলকামনায় পূণ্যস্নান করেন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস রাস উৎসবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পূজা অর্চনা আর প্রার্থনা করার পর সাগরে পূণ্যস্নানে অংশ নিলে সব পাপ মোচন হবে। মিলবে সুখ-শান্তি আর সমৃদ্ধি।
এবছরও দুবলারচরে রাস উৎসবে ধর্মীয় রীতি মেনে পূজা অর্চনা আর পূণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলা বা কোন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল না। বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীরাই অংশ নিয়েছে পূজায় আর পূণ্যস্নানে।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে শেষ হলো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কঠিন চীবর দানোৎসব
রবিবার বন বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়ে নৌযানে করে সনাতনধর্মাবলম্বীরা রাস উৎসবে অংশ নিতে যান সুন্দরবনের দুবলার চরে। সোমবার পূজা অর্চনা আর মঙ্গলবার পূণ্যস্নানের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় তিনদিনের রাস উৎসব।
জানা গেছে, লোকালয় থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় আলোর কোলে প্রায় ২০০ বছর ধরে শ্রীকৃষ্ণের রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। সেখানে শ্রীকৃষ্ণের পূজা অর্চনার পাশাপাশি দরবেশ গাজী ও দরবেশ কালুর স্মরণে মানত দেয়া হয়।
মেলার প্রবর্তক হিসেবে কারও কারও মতে মতুয়া গুরু সন্ন্যাসী হরিজন ও রাজা প্রতাপাদিত্যর নাম শোনা যায়।
২০১৯ বছর ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে দুবলারচরে রাস উৎসব হয়নি। আর করোনার কারণে গত দুই বছর ২০২০-২০২১ সালে শুধু ধর্মীয় রীতি রক্ষার্থে পূজা অর্চনা আর পূণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হয়। এবছরও শুধুমাত্র ধর্মীয় রীতি রক্ষায় পূজা অর্চনা ও পূণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, দুবলারচরে এবছরও রাস মেলা হয়নি। শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলবম্বীরা পূজা অর্চনা আর পূণ্যস্নান অংশ নিয়েছে। নির্ধারিত পাঁচটি পথ (রুট) দিয়েই শুধুমাত্র পূণ্যার্থীরা দুবলারচরে প্রবেশ করেছে। আবার একই পথে তাদেরকে ফিরতে হয়। অন্য ধর্মের মানুষদের রাস উৎসবে যাওয়ার অনুমতি ছিল না।
আরও পড়ুন: কাল থেকে শুরু হচ্ছে ৩ দিনব্যাপী লালন সাঁই’র তিরোধান উৎসব
কক্সবাজারে প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব উদযাপিত
২ বছর আগে
শনিবার মহা ষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা
শনিবার (১ অক্টোবর) মহা ষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৯টি উপজেলায় ৬০৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
গত বছরের তুলনায় এ বছর পূজা মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে ২১টি।
জেলার সদর উপজেলায় ৭৮টি, নাসিরনগর উপজেলায় ১৫১টি, নবীনগরে ১৩৩টি, বিজয়নগর উপজেলায় ৫৭টি, সরাইল উপজেলায় ৪৯টি, কসবা উপজেলায় ৫৪টি, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ৪৭টি, আখাউড়া উপজেলায় ২২টি ও আশুগঞ্জ উপজেলায় ১৪টিসহ মোট ৬০৫টি মণ্ডপে পূজা করবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
এদিকে পূজা শুরু হওয়ার শেষ লগ্নে মণ্ডপে-মণ্ডপে চলছে প্রতিমা সাজানোর কাজ। এছাড়াও বিভিন্ন মণ্ডপকে জাঁকজমকপূর্ণ করতে বর্ণিল সাজে তৈরি করা হচ্ছে প্যাণ্ডেলসহ বিভিন্ন অস্থায়ী ডেকোরেটেড স্থাপনা।
আরও পড়ুন: সিলেটে বিজিবির ধাওয়া খেয়ে পিকআপ ভ্যান উল্টে আহত ৫, গ্রেপ্তার ২
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা সম্পন্নে প্রশাসনের সঙ্গে একাধিকবার মতবিনিময় হয়েছে। প্রশাসেন আমাদেরকে যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, সে আলোকেই এবং উৎসবমূখর পরিবেশে আমরা এই উৎসব পালন করবো।
জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম জানান, মণ্ডপগুলোর সার্বিক নিরপাত্তায় সিসিটিভি স্থাপনসহ সব ধরণের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সকলের সমন্বয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে বৃহৎ এ উৎসব পালিত হবে বলে আমরা আশাবাদী।
আরও পড়ুন: কুমিল্লার পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননা: মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে
২ বছর আগে
ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ৪ জনের উপস্থিতিতে হিন্দু বিয়ে
চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জে কঠোর লকডাউনে মধ্যেই অনুষ্ঠিত হচ্ছিল সনাতন ধর্মালম্বী এক তরুণীর বিয়ে। বাড়ির সামনে বিশালাকৃতির গেইট। চারদিকে জমকালো লাইটিং, ঢাক-ঢোল, গান-বাজনার সাথে নৃত্য।
এক কথায় মহা ধুমধামের সাথে চলছিল বিয়ের আনন্দ। চলমান আনন্দের মধ্যেই বুধবার রাত ৮টার দিকে পুলিশ নিয়ে বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার। তার উপস্থিতিতে যেন সবকিছু বিষাদে পরিণত হয়।
আরও পড়ুন: লকডাউনে বিয়ে : বর ও কনে পক্ষকে জরিমানা
এদিকে কিছুক্ষণের মধ্যেই বিয়ের লগ্ন শুরু হবে। বাড়ির অনতিদূরে বর পক্ষ চলে এসেছে। তাই বিয়ে বন্ধ না করে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে তাৎক্ষণিক বন্ধ হয় ঢাক-ঢোলসহ নৃত্যসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান ও জনসমাগম। খুলে ফেলা হয় বিয়ের গেটসহ অন্যান্য ডেকোরেশন।
অবশেষে, বর ও কনেসহ মোট চারজনের উপস্থিতিতে কনের নানার বাড়ি হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের ধড্ডা গ্রামে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ঘরের মধ্যে সম্পন্ন হয় এই শুভ বিবাহ।
বর-কনের স্বজনরা জানান, কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার অমল চন্দ্রের মেয়ে রুপালীকে (১৮) (ছদ্দনাম) হাজীগঞ্জের ধড্ডা তার নানার বাড়িতে এনে বিয়ে দেয়া হচ্ছে। আর বর হাজীগঞ্জের উচ্চঙ্গা গ্রামের হারাধনের ছেলে কমল দাস।
আরও পড়ুন: ৩৫০টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করে রেকর্ড গড়লেন বেলকুচির ইউএনও
লকডাউনের মধ্যে এমন আয়োজন করে বিয়ের খবর পেয়ে তাই পুলিশ নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বিয়ে বাড়িতে হাজির হন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বিয়ের সকল আয়োজন বন্ধ করে দেন। পাশাপাশি বর-কনেসহ চারজনের উপস্থিতিতে বিয়ের দেয়ার নির্দেশনা দেন বর-কনের অভিভাবকদের।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোমেনা আক্তার ইউএনবিকে বলেন, ‘সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিয়ের রীতিতে লগ্ন একটা বড় বিষয়। তাই লগ্ন ঠিক রেখে ঘরের মধ্যে বিয়ের কাজ সম্পন্ন এবং চলমান কঠোর লকডাউনে জনসমাগমসহ অন্যান্য আয়োজন বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছি।’
এ সময় হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মো. মাসুদ মুন্সী, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাকির হোসেন লিটুসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
৩ বছর আগে