বিমান হামলা
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্ত সংঘর্ষের নেপথ্যে কী?
দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) স্থানীয় সময় সকালে প্রতিবেশি দেশদুটির ছয়টি সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলি ও রকেট হামলার মধ্য দিয়ে এই সহিংসতা শুরু হয়।
গতকাল শুক্রবারও সীমান্তবর্তী চারটি প্রদেশের কাছে একাধিক স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানিয়েছে থাই সেনাবাহিনী। কম্বোডিয়ার ওপর থাইল্যান্ড বিমান হামলা চালিয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত থাইল্যান্ডে অন্তত ১৪ জন এবং কম্বোডিয়ায় একজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। চলমান এই সংঘাতের কারণে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ নিরাপত্তার জন্য বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
এ নিয়ে চলতি বছর দ্বিতীয়বারের মতো সংঘর্ষে জড়াল দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই দেশ। এর আগে মে মাসে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক কম্বোডিয়ান সেনা নিহত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা শুরু হয়েছিল।
প্রতিবেশি এই দুই দেশের সংঘাতের নেপথ্যে কী আছে, চলুন তা জেনে নেওয়া যাক।
সবশেষ উত্তেজনার সূত্রপাত যেভাবে
চলতি বছরের মে মাসে ছোট একটি সীমান্ত এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির মধ্য দিয়ে সংঘাতের সূত্রপাত হয়।
সে সময় এক কম্বোডিয়ান সেনা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। দুই পক্ষই দাবি করে যে তারা আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছে। এ নিয়ে তখন উত্তেজনা তৈরি হয়। এরপর একটি স্থলমাইন বিস্ফোরণে কয়েকজন থাই সেনা আহত হওয়ার পর এই সামরিক উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ডে গাঁজা কিনতে লাগবে প্রেসক্রিপসন!
পরে দুই দেশ উত্তেজনা হ্রাসে একমত হয়। তবে সীমান্তে কড়াকড়ি, নিষেধাজ্ঞা ও বাকযুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।
এরপর কম্বোডিয়া সীমান্তে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে থাইল্যান্ড। এর ফলে শুধু শিক্ষার্থী, চিকিৎসাপ্রার্থী ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো মানুষ দেশটিতে যাতায়াত করতে পারছিল না। এরপর বৃহস্পতিবার পুরো সীমান্তই বন্ধ করে দেয় থাইল্যান্ড।
জবাবে থাই চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন নিষিদ্ধ করে কম্বোডিয়া। এ ছাড়াও থাইল্যান্ড থেকে জ্বালানি, গ্যাস, ফলমূল ও সবজি আমদানিও বন্ধ করে দিয়েছে তারা। এমনকি প্রতিবেশি দেশটির সঙ্গে কিছু আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট সংযোগ ও বিদ্যুৎ সরবারহও স্থগিত করেছে নমপেন।
দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ
থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়ার ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত বহু দশক ধরেই বিরোধপূর্ণ। এ বিরোধের মূল উৎস ১৯০৭ সালে ফরাসি উপনিবেশিক শাসনামলে আঁকা একটি মানচিত্র।
কম্বোডিয়াকে থাইল্যান্ড থেকে আলাদা করতে ওই মানচিত্র তৈরি করা হয়েছিল। ওই মানচিত্র ধরে কিছু এলাকা নিজেদের বলে দাবি করে কম্বোডিয়া। তবে মানচিত্রটি প্রত্যাখ্যান করেছে থাইল্যান্ড।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিরোধ রয়েছে প্রায় এক হাজার বছরের পুরোনো প্রেয়া ভিহেয়ার মন্দির নিয়ে। ১৯৬২ সালে কম্বোডিয়াকে এই মন্দির এলাকার মালিকানা দেয় আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। যার ফরে দেশদুটির দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক খারাপ হয়ে পড়ে।
এরপর ২০১১ সালে নতুন করে সংঘর্ষ বাঁধে, যেখানে ২০ জনের মতো নিহত হন এবং বহু মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। এরপর কম্বোডিয়া আবার বিচার আদালতের দ্বারস্থ হয় এবং ২০১৩ সালে আদালত আবারও তাদের পক্ষে রায় দেয়।
বর্তমানে কম্বোডিয়া আবার আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। তবে আদালতের এখতিয়ার মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে থাইল্যান্ড।
আরও পড়ুন: সাইবার অপরাধ: ১০ হাজার শ্রমিককে থাইল্যান্ড পাঠাচ্ছে কারেন বিদ্রোহীরা
থাই রাজনীতিতে তোলপাড়
এদিকে, উভয় দেশের জাতীয়তাবাদী মনোভাব দুই দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।
এরই মধ্যে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে এক কম্বোডিয়ান শীর্ষ নেতার সঙ্গে ফাঁস হওয়া ফোনালাপের পর থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে গত ১ জুলাই তার পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
জুন মাসে ফাঁস হওয়া ওই ফোন কলে কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনকে ‘চাচা’ বলে সম্বোধন করেন সিনাওয়াত্রা এবং থাইল্যান্ডের সামরিক নেতৃত্বের সমালোচনা করেন। সমালোচকরা এসব মন্তব্যকে জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি অসম্মান হিসেবে অভিহিত করেছেন।
হুন সেন পেতংতার্নের বাবার দীর্ঘদিনের বন্ধু ছিলেন। তবে সীমান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে তাদের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সম্প্রতি ফাঁস হওয়া ফোনালাপ থাইল্যান্ডজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদের জন্ম দেয়। এরপর পেতংতার্নকে সরিয়ে সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফুমথম ওয়েচায়াচাইকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
১৩২ দিন আগে
ইরানে ফের ইসরায়েলের বিমান হামলা, ইরানের পাল্টা
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর এবার ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় কেরমানশাহ শহরের সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে নতুন করে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। জবাবে ইরানও পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৩ জুন) সকালে ইরানে বিমান হামলার চালানোর কথা জানায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
এর আগে, ইরানের রাষ্ট্র সমর্থিত সংবাদমাধ্যম নুর নিউজ জানায়, আজ ভোরে তেহরানের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত বৃহৎ সামরিক কমপ্লেক্স পারচিনে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
জবাবে, ইরানও ইসরায়েলের দিকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। তবে সেটি ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা মাঝপথেই প্রতিহত করা হয় বলে দাবি করেছে আইডিএফ।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলে বড় পরিসরে হামলা ইরানের, জাতিসংঘে চিঠি
গত ১৩ জুন প্রথম ইরানের শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইসরায়েল। এরপর থেকেই দুই দেশ নিজেদের প্রতিশোধের নেশায় মত্ত। শক্তির প্রদর্শন করে লক্ষ্য অর্জনে মরিয়া দুপক্ষই।
এর সঙ্গে গতকাল রবিবার (২২ জুন) যোগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে তারা।
হামলার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লেখেন, ‘আমরা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় অত্যন্ত সফলভাবে হামলা পরিচালনা করেছি, যার মধ্যে রয়েছে ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহান।’
এই হামলারও প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। বিশ্লেষকদের ধারণা, হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে ইরান। তবে এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা আসেনি এখনও।
হরমুজ প্রণালী বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টির সমাধান করতে চীনকে অনুরোধ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
১৬৪ দিন আগে
ইসরায়েলি হামলায় আইআরজিসি গোয়েন্দা প্রধান ও দুই জেনারেল নিহত
ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান হামলায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) গোয়েন্দা প্রধানসহ আরও দুই জ্যেষ্ঠ জেনারেল নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় রবিবার (১৫ জুন) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে তেহরান সরকার। কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলি-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই খবর প্রকাশ করা হয়েছে।
তেহরানসহ অন্যান্য ইরানের অন্যান্য শহরে টানা তৃতীয় দিনের ইসরায়েলি হামলায় তারা নিহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি ভূখণ্ডে নতুন করে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জানান, ইসরায়েল যদি তাদের আগ্রাসন বন্ধ করে, তাহলে তেহরানও প্রতিক্রিয়া বন্ধ করবে।
শুক্রবার (১৩ জুন) রাজধানী তেহরানসহ দেশটির শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায় ইসরায়েল। হামলা শুরু পর থেকে এ পর্যন্ত ইরানে অন্তত ২২৪ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ইরানের হামলায় ইসরায়েলে এক ডজনের বেশি নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে ইসরায়েলের হামলা, তেহরানেরও পাল্টা জবাব
১৭২ দিন আগে
গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণ: দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ
মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের চিরশত্রু ইরানের ওপর নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। শুক্রবার (১৩ জুন) রাজধানী তেহরানসহ দেশটির শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে এই হামলা হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি করা এ অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন রাইজিং লায়ন বা জেগে উঠা সিংহ। হামলার মূল কারণই ছিল পশ্চিমাদের ভাষায় ইরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচির সক্ষমতা পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া।
হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়া মধ্যপ্রাচ্যকে একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। এদিকে, ইরানও ইসরায়েলের হামলার জবাবে ‘ট্রু প্রমিস ৩’ নামের অভিযান শুরু করেছে।
শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতানজ, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা, শীর্ষ কমান্ডার ও পরমাণু বিজ্ঞানীরা হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। এই হামলায় অন্তত ২০০টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয় বলে জানায় ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: ইরানে ইসরায়েলের হামলা আঞ্চলিক যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে, জড়াতে পারে যুক্তরাষ্ট্রও
এদিন ভোররাত থেকে একের পর এক বিমান হামলায় প্রথমে ইরানের সামরিক নেতৃত্ব ও গোয়েন্দা কাঠামোতে আঘাত করে। এরপর ধারাবাহিক হামলায় ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র এবং শেষে দেশটির বৃহত্তম ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতানজে হামলা চালানো হয়।
নাতানজের আংশিক ভূ-উপরিভাগে হওয়ায় সরাসরি আঘাত করতে সক্ষম হয়েছে ইসরায়েল।
১৭৪ দিন আগে
গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ১৭
গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরও ১৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ভোরে চালানো বিমান হামলায় এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
অন্যদিকে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলের আরও গভীরে প্রবেশ করেছে এবং হামাসের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান জোরদার করেছে।
হামাস পরিচালিত গাজার হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে বিমান হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের অনেকেই একই পরিবারের সদস্য। হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টা পরও ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে জীবিতদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
আরও পড়ুন: নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাসের সম্মতি, পাল্টা প্রস্তাব ইসরায়েলের
এই হামলার মাত্র একদিন আগেই ইসরায়েলি হামলায় শতাধিক ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হাতে জিম্মি হওয়া ইসরায়েলিদের মুক্তি দিতে চাপ সৃষ্টি করতেই ইসরায়েল গাজায় হামলা বাড়িয়েছে। ইসরায়েলি বাহিননীর হামলায় গাজায় গত দুই সপ্তাহেই শত শত লোক মারা গেছেন।
শুক্রবার ইসরায়েল ঘোষণা করেছে, ‘নিরাপত্তা অঞ্চল’ বাড়ানোর জন্য তাদের স্থল বাহিনী গাজার উত্তরাঞ্চলে প্রবেশ করেছে।
স্থল অভিযানের আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী উত্তর গাজার কিছু অংশ থেকে খালি করার জন্য বাসিন্দাদের নির্দেশ দিয়েছিল।
গত মাসে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা দপ্তর।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন। এসময় ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা। এরপর যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে বেশিরভাগ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যদিও ইসরায়েলও অসংখ্য মৃতদেহসহ মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনিদের ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করত ইসরায়েলি বাহিনী
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি হামলায় ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়টির দেওয়া হিসাবে বেসামরিক নাগরিক ও যোদ্ধার আলাদা হিসাব দেওয়া হয়নি। তথ্যমতে, নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু। ইসরায়েল প্রায় ২০ হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করার দাবি করলেও এর সমর্থনে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।
চলমান এই যুদ্ধ গাজাকে ধ্বংস করেছে। বেশিরভাগ অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলি হামলার মাত্রা এতো বেশি যে, ভূখন্ডটির নজনসংখ্যার ৯০ শতাংশ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
২৪৪ দিন আগে
বিমান হামলার পর ইয়েমেন ছেড়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান
ইয়েমেনের সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় জাতিসংঘের এক কর্মী আহত হওয়ার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস দেশ ছেড়েছেন।
হামলার পর সরিয়ে নেওয়া আহত কর্মীর কথা উল্লেখ করে তেদ্রোস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমরা এখন জর্দানে রয়েছি। সেখানে তাকে আরও চিকিৎসা দেওয়া হবে।’
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) টেড্রোস ও জাতিসংঘের অন্য কর্মকর্তারা যখন ইয়েমেন ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, ঠিক তখনই এ বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
হুথিদের হাতে আটক জাতিসংঘের ১৩ কর্মীর মুক্তির লক্ষ্যে জাতিসংঘের নেতৃত্বে আলোচনায় অংশ নিতে দেশটিতে যাওয়া টেড্রোস এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, সব জায়গায় বেসামরিক নাগরিক ও মানবতাবাদীদের ওপর হামলা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য ও পরিচর্যার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক সংকটের মূলে লিঙ্গ বৈষম্য: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, তারা ইরানি অস্ত্র চোরাচালানে ব্যবহৃত হুথিদের অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
হুথি পরিচালিত আল-মাসিরাহ টেলিভিশন বিমান হামলায় হতাহতের কথা জানিয়ে বলেছে, এতে বিমানবন্দর ও অন্যান্য স্থানের উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পুরো পরিমাণ এবং হতাহতের সংখ্যা এখনও স্পষ্ট করতে পারেনি তারা।
৩৪১ দিন আগে
যুদ্ধবিরতির মধ্যেই লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৫
যুদ্ধবিরতির মধ্যেই শনিবার ইসরায়েলি হামলায় দক্ষিণ লেবাননে পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
লেবাননের জাতীয় সংবাদ সংস্থা (এনএনএ) এ তথ্য জানিয়েছে, দক্ষিণ লেবাননের বিনতে জাবেইল জেলার বেইত লিফ গ্রামে ইসরায়েলি বিমান হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এ হামলায় আরও ছয়জন আহত হয়েছেন।
এছাড়া, দক্ষিণ লেবাননের দেইর সিরিয়ান গ্রামে ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
এনএনএ আরও জানায়, ২৪ নভেম্বর বৈরুতের বাস্তা এলাকায় একটি আবাসিক ভবন লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বিমান হামলায় চার সিরীয় নাগরিক নিহত হন। বেসামরিক প্রতিরক্ষা দলগুলো সেসব লাশ উদ্ধার করে।
ইসরায়েল ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে প্রায় ১৪ মাস ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় ২৭ নভেম্বর থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
চুক্তির অধীনে, উভয় পক্ষ ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সম্মত হয়েছে। এর মধ্যে ইসরায়েল ধীরে ধীরে দক্ষিণ লেবানন থেকে তার সেনা প্রত্যাহার করবে এবং হিজবুল্লাহ লিতানি নদীর উত্তর দিকে সরে যাবে।
যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও, উভয় পক্ষের বিরুদ্ধেই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। ফলে চুক্তির স্থায়িত্ব সম্পর্কে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
৩৬২ দিন আগে
ইসরায়েলি বিমান হামলায় সিরিয়ায় নিহত ৭
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কাছে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৭ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ হামলায় ২০ জন আহত হয়েছেন।
রবিবার বিকেল এ হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, স্থানীয় সময় বিকেল ৫টার দিকে (১৪০০ জিএমটি) গোলান মালভূমি থেকে দামেস্কের সায়িদা জয়নাব এলাকার একটি আবাসিক ভবন লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বাহিনী বিমান হামলা চালায়।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত
বিবৃতিতে বলা হয়, এ হামলায় ব্যক্তিগত মালকানাধীন ওই ভবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
ব্রিটেনভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস এর আগেতাদের প্রতিবেদনে বলে, এই হামলা একটি আবাসিক ভবনের এক ফ্ল্যাটে আঘাত হানে। ভবনটিতে লেবাননের নাগরিক ও হিজবুল্লাহ সদস্যরা বসবাস করছিলেন।
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের দক্ষিণে শিয়াদের গুরুত্বপূর্ণ মাজার এলাকা সায়িদা জয়নাব। এর আগেও এখানে ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে।
সম্প্রতি কয়েক বছরে ইসরায়েল সিরিয়ায় একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে। ইরানি সামরিক সম্পদ ও হিজবুল্লাহর কাছে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত অস্ত্র ওই হামলার লক্ষ্য ছিল বলে দাবি করে তারা।
আরও পড়ুন: গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ২৫
৩৮৯ দিন আগে
বিমান হামলার পর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি খামেনির
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি সম্প্রতি ইরানের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলার পর ইসরায়েলে পাল্টা হামলার জন্য সামরিক কর্মকর্তাদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
এর ফলে দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর আগের দুই দেশ একাধিকবার পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে।
গত সপ্তাহে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী ইরানের বিমান বিধ্বংসী ব্যবস্থা ও রাডার সাইটে হামলা চালিয়ে দাবি করে, এর ফলে তাদের সামরিক সক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানি কর্মকর্তারা 'কঠোর' ও 'অকল্পনীয়' প্রতিশোধের কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের প্রতিক্রিয়া ৫ নভেম্বরের মার্কিন নির্বাচনের পর সময়মতো আসতে পারে। তবে কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন এটি আরও আগে ঘটতে পারে।
টার্গেট তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে
ইসরায়েলি হামলায় চার ইরানি সেনা নিহত হওয়ার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের পর খামেনি এ নির্দেশ দেন। ইরান ন্যূনতম প্রভাবের দাবি করলেও খামেনি বলেছিলেন, প্রতিক্রিয়া জানাতে যেকোনো ব্যর্থতা দুর্বলতা হিসেবে দেখা হবে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলকে ইরানে হামলার পরিণতি ভোগ করতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের সামরিক পরিকল্পনাকারীরা পাল্টা আক্রমণের জন্য ইসরায়েলের সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তুর তালিকা তৈরি করছেন।
ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা বলছে, ইরানি ভূখণ্ডে সরাসরি হামলার ঝুঁকি কমাতে ইরানপন্থি বিদ্রোহীদের ব্যবহার করে ইরানি ভূখণ্ড থেকে প্রতিশোধ নিতে পারে দেশটি।
ইসরায়েলি অভিযান ও উদ্দেশ্য
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েল ইরানের অভ্যন্তরে অভূতপূর্ব স্বাধীনতা উপভোগ করছে। সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল করেছে বলেও দাবি করেছে।
তিনি ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখতে ইসরাইলের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং প্রয়োজনে আরও সামরিক অভিযানের জন্য প্রস্তুতির ইঙ্গিত দেন।
নিজের কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, 'আইডিএফ এবং আমাদের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মূল লক্ষ্য হচ্ছে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখা। এটা সবসময়ই আমাদের প্রধান উদ্বেগের বিষয় ছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ইরানের দুর্বল পয়েন্টগুলোতে আঘাত হেনেছি। এখন ইরানে আগের চেয়ে ইসরায়েলের বেশি কার্যক্ষমতার স্বাধীনতা রয়েছে- ইরানি নেতাদের দম্ভোক্তি এই বাস্তবতাকে আড়াল করতে পারে না। আমরা যেখানে প্রয়োজন সেখানে কাজ করতে পারি।’
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সৌদি আরবে বৈঠক
৩৯৯ দিন আগে
পূর্ব লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৬০
পূর্ব লেবাননের বেকা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় দুই শিশুসহ অন্তত ৬০ জন নিহত ও ৫৮ জন আহত হয়েছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবারের এই হামলায় উপত্যকার ১২টি এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার বেশিরভাগই বালবেক অঞ্চলের।
এই হামলাকে লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ওই এলাকায় চালানো 'সবচেয়ে সহিংস' হামলা বলে অভিহিত করেছেন বালবেকের গভর্নর বাছির খোদর।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে লেবাননে বিমান হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। সম্প্রতি লেবাননের উত্তর সীমান্তে স্থল অভিযানও শুরু করেছে তারা।
এদিকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় অন্তত ৪৩ হাজার ২০ জন নিহত ও ১ লাখ ১ হাজার ১১০ জন আহত হয়েছে।
এই যুদ্ধে হামাসকে সমর্থন জানিয়ে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের বিরোধিতা শুরুর পর থেকে লেবাননে হিজবুল্লাহর ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালাতে থাকে ইসরায়েল।
৪০২ দিন আগে