বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক
সাফারি পার্ক নির্মাণের ফলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মৌলভীবাজারের জুড়ীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক নির্মাণের ফলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
তিনি বলেছেন, সাফারি পার্ক নির্মাণের ফলে দেশ-বিদেশের পর্যটক আসবে, কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে এবং সর্বোপরি এলাকার মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হবে। সাফারি পার্ক এলাকায় বসবাসরতদের সুরক্ষা দিয়েই এখানে সাফারি পার্ক নির্মাণ করা হবে।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) একনেক সভায় মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলায় একটি সাফারি পার্ক নির্মাণের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, মৌলভীবাজার (প্রথম পর্যায়)’- প্রকল্পটি অনুমোদনের পর তার সরকারি বাসভবন থেকে এক ভিডিও বার্তায় পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, একনেক সভার মন্ত্রী ও সদস্যরা, পরিবেশ সচিব, বন অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এসময় পরিবেশমন্ত্রী বলেন, এ সাফারি পার্কে বাংলাদেশের বিপদাপন্ন ও বিপন্ন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। লাঠিটিলার বনভূমিকে জবরদখলমুক্ত করে বন্যপ্রাণী বিশেষ করে হাতি, মেছো বিড়াল, বনরুই, খাটলেজি বানর, আসামি বানর, গন্ধগকুল, মায়া হরিণ, চশমাপরা হনুমান, ভল্লুক, সজারু ইত্যাদির বসবাস উপযোগী প্রাকৃতিক পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে।
আরও পড়ুন: পরিবেশদূষণ রোধে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
তিনি বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। হাতি উদ্ধার কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে অসহায় এতিম ও উদ্ধার করা মহাবিপন্ন হাতির চিকিৎসা দেওয়া হবে। বিপদাপন্ন প্রজাতির বাঘ, গণ্ডার, সিংহ, কুমির, ঘড়িয়াল, প্যারা হরিণ, সম্বর হরিণ, নীলগাই, ভাল্লুক ইত্যাদি বন্যপ্রাণীর জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল গড়ে তোলা হবে।
বনমন্ত্রী বলেন, আহত ও উদ্ধার করা বন্যপ্রাণী চিকিৎসার নিমিত্তে বন্যপ্রাণী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিষয়ে জনগণের মধ্যে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা হবে। জলচর ও পরিযায়ী পাখির আবাসস্থল উন্নয়নের জন্য পুকুর ও লেক খনন এবং বন্যপ্রাণীর জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আবাসস্থল উন্নয়নের জন্য ফলের গাছ, তৃণভূমি ও বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষরোপণ করা হবে।
তিনি জানান, বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ প্রজাতির সংরক্ষণের জন্য এক লাখ চারা রোপণ, ভূমিক্ষয় রোধে পাহাড়ের ঢালে ও পাদদেশে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়াও, এখানে নেচার হিস্ট্রি মিউজিয়াম ও প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।
তিনি আরও জানান, মাধবকুণ্ড ইকোপার্কে দুই কিলোমিটার বেশি কেবল কার স্থাপনের প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
আরও পড়ুন: জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পকে নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব করতে কাজ করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশবান্ধব ইট উৎপাদনকারীদের প্রণোদনা দেবে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
১ বছর আগে
কক্সবাজার: সিংহী ‘নদী’ মারা গেছে
কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের সিংহী (নদী) আর বেঁচে নেই। শুক্রবার (২২ এপ্রিল) সকাল ৬টার দিকে পার্কের সিংহের বেষ্টনীতে নদী মারা যায়।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের কর্তকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম। এ ঘটনায় চকরিয়া থানায় একটি জিডি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের কর্মকর্তা মো.মাজহারুল ইসলাম বলেন, ২০১১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর হীরার ঘরে জন্ম নেয় সিংহী (নদী)। দীর্ঘ সাড়ে ১১ বছর খুব ভালোভাবেই দিন পার করছিল এটি। এসময়ের মধ্যে নদী (সিংহী) ও সম্রাটের (সিংহ) ঘরে বাচ্চাও জন্ম নিয়েছে।
গত ২ ফেব্রুয়ারি তাদের নির্ধারিত বেষ্টনিতে সম্রাট (সিংহ) ও নদী (সিংহী) খেলা করছিল। খেলতে খেলতে তাদের মধ্যে মারামারি লেগে যায়। এতে সম্রাট ও নদী আঘাত প্রাপ্ত হয়। তাদের মধ্যে সম্রাট (সিংহ) খুব আঘাত প্রাপ্ত হয়। ওই সময় সাফারি পার্কে কোন ভেটেরেনারী চিকিৎসক না থাকায় উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা.সুপন নন্দীর চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠে সম্রাট ও নদী। পরে তাদের আবারও তাদের বেষ্টনীতে রাখা হয়।
পরে ১৯ ফেব্রুয়ারি সম্রাট ও নদী মিলনের সময় আবারও মারামারিতে জড়িয়ে পড়লে উভয়েই আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এসময় সম্রাটের নখের আচড়ে নদীর গলায় জখম হয়। পরে সাফারি পার্কের ভেটেরেনারী সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমানের পরামর্শে ভার্চুয়ালি চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এই চিকিৎসায় সম্রাট সুস্থ হয়ে উঠলেও গলার ক্ষতস্থান থেকে পানি ঝরতে থাকে নদীর।
পড়ুন: ভোলায় বিপন্ন প্রজাতির বনবিড়াল উদ্ধার
নদীর গলার পানি ঝরা না কমায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের বর্তমান ভেটেরেনারী চিকিৎসক ডা. হাতেম সাজ্জাত জুলকার নাইন গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চিকিৎসা প্রদান করেন। তারপরও নদীর কোন অগ্রগতি না হওয়ায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম ভেটেরেনারী ও এনিমেল সাইয়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা.সুপন নন্দী এবং পার্কে চিকিৎসকসহ পাঁচ সদস্যসের মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা দেয়া হয়। এরপরও নদীর (সিংহী) কোন অগ্রগতি হয়নি। উপরন্তু দিন দিন আরো দুর্বল হয়ে পড়ছে নদী (সিংহী)। এক পর্যায়ে খাবার গ্রহণও বন্ধ করে দেয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা.সুপন নন্দী বলেন, সিংহীর গলায় যে আঘাত ছিল তা শুকিয়ে গিয়েছিল। মূলত এর বয়স শেষের দিকে। একটা সিংহী বাঁচে ১২ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত। এই সিংহী এখন বার্ধক্য অবস্থায় পৌঁছে গেছে। যার কারণে তার রুচি চলে যাচ্ছে। শরীরের এন্টিবডি কমে গেছে। সে যখন খাবার গ্রহণ বন্ধ করে দিয়েছে তাকে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন স্যালাইনও দেয়া হয়েছিল। নদীকে বাঁচাতে সব ধরনের চেষ্টা করেছি কিন্তু বাঁচানো যায়নি।
ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম আরও বলেন, সবধরনের চিকিৎসা তাকে দেয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গত ১২ এপ্রিল নদীর (সিংহী) শরীর থেকে রক্ত নিয়ে চট্টগ্রামের ভেটেরেনারী এন্ড সাইন্সসেস বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল। তারা রিপোর্টে তার শরীরে ভাইরাল ইনফেকশনে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানান। সিংহী ‘নদী’র ময়নাতদন্ত শেষে পার্কের এক জায়গায় তাকে পুতে ফেলা হয়েছে।
পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে সাফারি পার্কে প্রবেশ মূল্য ফ্রি
২ বছর আগে
কক্সবাজার: সিংহী নদীর অবস্থা আশঙ্কাজনক
কক্সবাজারের ডুলাহাজরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে নদী নামে এক সিংহী আড়াই মাস ধরে ঘাড়ে গুরুতর আঘাতে ভুগছে।
ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের ইনচার্জ মো. মাজহারুল ইসলাম জানান, ১১ বছর বয়সী সিংহীটির শারীরিক অবস্থা এখন আশঙ্কাজনক। যদিও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে তার চিকিৎসা চলছে।
তিনি বলেন, ‘আড়াই মাস ধরে চিকিৎসার পরও নদীর কোনো উন্নতি হয়নি। এখন সিংহী খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।’
পার্ক ইনচার্জ জানান, চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি নদী তার সঙ্গী সম্রাটের (সিংহ) সঙ্গে মারামারিতে আহত হন। এই সময় সম্রাটও আহত হয়। আহত দম্পতিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুপন নন্দী চিকিৎসা দেন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে উদ্ধার হওয়া কুমির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে
পরে ১৯ ফেব্রুয়ারি সিংহ দম্পতি শারীরিক মিলনের সময় আবারও মারামারি করে আহত হয়। এ সময় নদী ঘাড়ে গুরুতর আঘাত পায়। পরে সাফারি পার্কের ভেটেরেনারি সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমানের চিকিৎসায় সম্রাট সুস্থ হয়। অন্যদিকে, নদীর ক্ষতবিক্ষত ঘাড় থেকে পানি ঝরতে থাকায় তার শারীরিক অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে।
২৮ ফেব্রুয়ারি নদীর চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডে ছিলেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন ভেটেরিনারি সার্জন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুপন নন্দী ও পার্ক সার্জন ডা. হাতেম সাজ্জাদ জুলকার নাইন।
চকরিয়া উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুপন নন্দীর জানান, সিংহ সাধারণত ১২ থেকে ১৮ বছর বেঁচে থাকে। নদী এখন বার্ধক্য পৌঁছে গেছে। খাবারে তার কোনো রুচি নেই। প্রতিদিনই তার অ্যান্টিবডি কমছে। সে কারণেই সিংহীর অবস্থা খুবই সঙ্কটজনক।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে সাফারি পার্কে প্রবেশ মূল্য ফ্রি
মাজহারুল ইসলাম জানান, নদীর উন্নত চিকিৎসার জন্য ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
২০১১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর হীরার গর্ভে সিংহী নদীর জন্মগ্রহণ করে। তার ও সম্রাটের ঘরে একটি বাচ্চা আছে।
২ বছর আগে
জেব্রার মৃত্যু: সাফারি পার্কে নতুন প্রকল্প পরিচালক
গত এক মাসে ১০টি জেব্রা মারা যাওয়ার ঘটনায় গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক মো. জাহিদুল কবিরকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
বুধবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঢাকা এর বন সংরক্ষক (চলতি দায়িত্ব) মোল্যা রেজাউল করিমকে তার নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এর আগে ৩১ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, গাজীপুরে জেব্রার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটন এবং দায়িত্বে অবহেলাকারীদের শনাক্তকরণের লক্ষ্যে গঠিত মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী বন সংরক্ষক তবিবুর রহমান এবং ভেটেরিনারি অফিসার ডা. হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকারনাইনকে প্রত্যাহার পূর্বক বন অধিদপ্তর, ঢাকায় সংযুক্ত করে নতুন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়।
শনিবার পর্যন্ত এক মাসের ব্যবধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ১০টি জেব্রা মারা গেছে।
আরও পড়ুন: সাফারি পার্কে জেব্রার মৃত্যু: ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ভেটেরিনারি অফিসারকে প্রত্যাহার
২ বছর আগে
জেব্রার মৃত্যুতে সাফারি পার্ক পরিদর্শনে তদন্ত কমিটি
গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ১১ জেব্রা মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনে গঠিত তদন্ত কমিটি রবিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
আরও পড়ুন: গাজীপুর সাফারি পার্কে ৯ জেব্রার মৃত্যু, বৈঠকে বিশেষজ্ঞ টিম
রবিবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার দীপংকর বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, জেব্রাগুলোর মৃত্যু প্রতিরোধে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ দেশের বাইরে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন। বিশেষ করে যে দেশ থেকে প্রাণীগুলো আমদানি করা হয়েছিল, দক্ষিণ আফ্রিকার খামার মালিকের সঙ্গে কথা হয়েছে। রোগের বিস্তারিত লক্ষণ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল ই-মেইলের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ককে বিশ্বমানের সাফারি পার্ক করা হবে: মন্ত্রী
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, জেব্রাগুলোর মৃত্যু প্রতিরোধে জরুরি চিকিৎসা প্রদান এবং এ ধরনের অসুস্থতার কারণ উদঘাটনে ইতোপূর্বে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা ২৫ ও ২৯ জানুয়ারি সাফারি পার্কে সভায় মিলিত হন। ২৫ জানুয়ারি বিশেষজ্ঞ টিম প্রদত্ত ১০ দফা সুপারিশ অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ।
২ বছর আগে
ফরিদপুরে উদ্ধার হওয়া কুমির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে
ফরিদপুরে উদ্ধার হওয়া সেই কুমিরটির আবাসস্থল হলো গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে। বুধবার দুপুরে কুমিরটিকে সাফারি পার্কের কর্মকর্তারা বুঝে নিয়েছেন।
গত সোমবার ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের ৩৮ দাগ এলাকার জলিল মোল্লার ডাঙ্গী গ্রামের জলাধার থেকে কুমিরটি উদ্ধার করা হয়।
বুধবার দুপুরে কুমিরটিকে গাজীপুরের সাফারি পার্কের কর্মকর্তার কাছে বুঝিয়ে দেন সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবিরসহ কর্মকর্তারা।
হাওলাদার আজাদ কবির জানান, কুমিরটি উদ্ধারের পর ফরিদপুর থেকে খুলনায় নিয়ে আসা হয়। এটি একটি স্ত্রীলিঙ্গের কুমির। কুমিরটির দৈর্ঘ্য সাত ফুট ও চওড়া দেড় ফুট। গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে পুরুষ কুমির রয়েছে সে কারণে উদ্ধার করা কুমিরটিকে সাফারি পার্কে রাখার সিদ্ধান্ত নেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
তিনি আরও জানান, কুমিরটির সকল ধরনের পরীক্ষা শেষে সুস্থ্য অবস্থায় বুধবার দুপুরে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের কর্মকর্তাদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়।
এর আগে সোমবার দুপুরে ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের ৩৮ দাগ এলাকার জলিল মোল্লার ডাঙ্গী গ্রামের জলাধারে ওই কুমিরটি একটি হাঁস খেতে আসলে এলাকাবাসী দেখতে পায়। তখন সবাই একত্রিত হয়ে কুমিরটিকে জাল দিয়ে আটক করে।
পরে ওই দিন সন্ধ্যায় উদ্ধার করা কুমিরটিকে ফরিদপুর থেকে নিয়ে যান খুলনার বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৎস্য বিশেষজ্ঞ মো. মফিজুর রহমান চৌধুরী। রাতে বন্যপ্রাণী উদ্ধার ও পূনর্বাসন কেন্দ্রে কুমিরটিকে রাখা হয়। পরদিন মঙ্গলবার কুমিরটির লিঙ্গ পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। বুধবার দুপুরে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের কর্মকর্তার কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়।
জলিল মোল্লার ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা আরশাদ শেখ বলেন, জলাধারের এক কোনার দিকে একটি হাঁস খেতে আসলে গ্রামের কয়েকজন দেখে সবাইকে খবর দেয়। পরে সকলে একত্রিত হয়ে জাল দিয়ে কুমিরটিকে আটক করে। গত ১৭ দিন আমরা খুব আতংকের মধ্য দিয়ে ছিলাম। এখন কুমিরটি আটক হওয়ায় স্বস্তি পেয়েছি।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে বিশাল আকৃতির অজগর সাপ উদ্ধার
জানা যায়, ফালুর খাল হিসেবে পরিচিত ওই জলাধারে গত ২৪ জুলাই কুমিরটিকে দেখতে পায় এলাকাবাসী। এরপর গত ২৮ ও ৩১ জুলাই কুমিরটিকে ধরতে দুই দফা অভিযান চালায় প্রাণি সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের কর্মকর্তারা। কুমিরটি জালে আটকা পড়ে, কিন্তু প্রতিবারই জাল ছিড়ে বের হয়ে যায় কুমিরটি। দুটি অভিযান পরিচালনা করা হলেও কুমিরটিকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
ওই এলাকার বাসিন্দা আসলাম হোসেন জানান, ২২ জুলাই সালাম খাঁর ডাঙ্গী গ্রামের জেলে হজরত মিয়া (৩৫) পদ্মা নদী থেকে আনুমানিক চার কেজি ওজনের একটি বোয়াল মাছ ধরেন। মাছটি তাজা রাখার জন্য মাছের মুখে দড়ি বেধে জলাশয়ের মধ্যে চুবিয়ে রাখেন। কিছুক্ষণ পর তিনি মাছটি তুলে আনার জন্য দড়ি ধরে টান দিলে ওই জলাধারে একটি কুমির দেখতে পান।
নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাকুজ্জামান বলেন, কুমিরটি ধরার জন্য এর আগে দুটি অভিযান ব্যর্থ হয়। ফলে এলাকাবাসীর মনে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। কুমিরটিকে এলাকাবাসী আটক করে। কুমিরটিকে প্রাণি সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়। কুমিরটি আটক হওয়ায় স্বস্তি ফিরে এসেছে এলাকাবাসীর মাঝে।
আরও পড়ুন: কুমিরের চোখে ঘুষি মেরে প্রাণে বাঁচল কিশোর
সুন্দরবন থেকে উদ্ধার হওয়া মৃত বাঘের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন
৩ বছর আগে