চন্দ্রিমা উদ্যান
ঈদের ছুটিতে শিশুদের নিয়ে ঢাকার ভেতরে খোলামেলা পরিবেশে কোথায় ঘুরতে যাবেন?
ঈদ আনন্দের কেন্দ্রবিন্দু থাকে শিশুরা। শৈশব-কৈশোর পার করে আসার মানুষেরা এই শিশুদের আনন্দের বহিঃপ্রকাশ দেখেই নিজেদের মধ্যে সুপ্ত চঞ্চলতাটা টের পান। ফিরে যান আবার নিজেদের সেই শৈশবে। ভ্রমণপ্রিয় মানুষদের ঈদের দিনগুলো কাটানোর জন্য প্রধান পছন্দ থাকে কোথাও ঘুরতে যাওয়া। ঘুরতে যাবার আগের দিন এমন পরিবারের অভিভাবকদের সাথে সাথে শিশুদের অস্থিরতাটাও বেশ দেখার মত হয়। ঘুরতে যাবার আগে মনের ভেতর সেই জায়গাটির ছবি আঁকতে শুরু করে। আর বাবা-মার দিকে সেই জায়গাগুলো নিয়ে ছুড়ে দেয় হাজারো প্রশ্ন। ঈদের দিনগুলো উদযাপনের জন্য ঢাকার ভেতরেই দারুণ কিছু জায়গার তথ্য থাকছে আজকের নিবন্ধে।
ঈদের ছুটিতে শিশুদের নিয়ে ঢাকার ভেতরে বেড়ানোর মত ১০টি মনোরম জায়গা
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘর
২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত এই বিমান বাহিনী জাদুঘরটি। জঙ্গি বিমান, হেলিকপ্টার এবং রাডারে পূর্ণ বিশাল খোলা চত্বরের এই জায়গাটি বাংলাদেশের প্রথম বিমান বাহিনী জাদুঘর। এগুলোর মধ্যে তিনটি বিমান ভারতী বিমান বাহিনীর, যেগুলো তারা ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহার করেছিলো। পরবর্তীতে বিমান তিনটি বাংলাদেশকে উপহার দেয়া হয়।
শিশুরা দুয়েকটি বিমান ও হেলিকপ্টারে চড়তে পারে। এছাড়া তাদের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে বিভিন্ন ধরনের রাইড এবং লেকে নৌকা ভ্রমণ। চত্বরের আশপাশ জুড়ে আছে স্যুভেনির শপ নীলাদ্রি, একটি ফুড কোর্ট, বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি, নান্দনিক ফোয়ারা ও থিম পার্ক। জাদুঘরে প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ৫০ টাকা। তবে সামরিক বাহিনীর পরিবারের জন্য তা ২৫ টাকা।
পড়ুন: ঈদের ছুটি কাটানোর জন্য ঢাকার কাছাকাছি সেরা কয়েকটি রিসোর্ট
হাতিরঝিল
দিগন্তের দৃশ্য দেখতে বাধা দেয়ার জন্য হাতিরঝিলের চারপাশে ঘেরাও করা কোন দৈত্যাকার অট্টালিকা নেই। লেকের পাশ দিয়ে পায়ে চলা রাস্তা থেকে খুব সহজেই সেই দিগন্ত এবং লেকের পানিতে আকাশের প্রতিবিম্ব উপভোগ করা যায়। এটি মুলত ঢাকার মগবাজার থেকে গুলশান-বাড্ডার যাওয়ার পথ, তাই এখানে নেই কোন প্রবেশদ্বার বা বের হওয়ার গেট।
দিন-রাত পুরোটা সময়েই দর্শনার্থীরা বিনামূল্যেই ঘুরতে পারেন। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের ব্রিজের নিচ থেকে রঙ-বেরঙের আলো পুরো হাতিরঝিলের রূপ যেন আরো বাড়িয়ে দেয়। হাতিরঝিলের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত যাওয়ার জন্য স্থলপথে আছে চক্রাকার ট্যুরিস্ট বাস সার্ভিস। আর লেকের পানিপথ পেরোবার জন্য আছে ওয়াটার ট্যাক্সি।
বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা
ঢাকার বাইরে এমনকি দেশের বাইরে থেকেও যে ভ্রমণপিপাসুরাই রাজধানী ঘুরতে আসেন, তারা মিরপুরের চিড়িয়াখানা দেখতে ভোলেন না। তাদের মুল আকর্ষণ থাকে বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখা। কিন্তু প্রায় ৭৫ হেক্টর আয়তনের এই দর্শণীয় জায়গাটিতে ১৯১ প্রজাতির ২১৫০টি দেশ-বিদেশের প্রাণীদের আশ্রয়স্থল।
পড়ুন: ঢাকার কাছেই প্রকৃতির মাঝে ক্যাম্পিং সাইট
শিশুরা এখানে দেখতে পারে সিংহ, চিত্রা হরিণ, বানর, ভালুক, নীলগাই, গন্ডার, ফ্লেমিংগো, কুমির, জলহস্তি, জেব্রা, কানাবক, এবং অজগর সাপ সহ নানা ধরনের প্রাণী। আর প্রায় ২৪০ প্রজাতির স্টাফিং পশুপাখি নিয়ে আছে প্রাণী জাদুঘর। চিড়িয়াখানার ভেতরে আছে ১৩ হেক্টর আয়তনের দুইটি লেক। চিড়িয়াখানায় প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা। প্রাণী জাদুঘরের জন্য দিতে হয় ১০ টাকা। তবে দুই বছরের নিচে শিশুদের জন্য জন্যে কোন টিকেট লাগে না।
বোটানিক্যাল গার্ডেন
মিরপুরের চিড়িয়াখানা দেখতে গেলে হাতে আরো একটু বেশি সময় নিয়ে যাওয়া ভালো। কারণ পাশেই আছে বাংলাদেশের জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান বোটানিক্যাল গার্ডেন। এর প্রায় ২০৮ একর জায়গা বুকে ধারণ করে আছে প্রায় ৮০০ প্রজাতির নানান ধরনের বৃক্ষ।
এখানে প্রবেশ করতে মাথাপিছু ২০ টাকা দিতে হয় আর শিশুদের জন্য প্রবেশ মূল্য ৫ টাকা। চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেন ঘোরার ক্ষেত্রে যেটা খেয়াল রাখতে হবে তা হচ্ছে সন্ধ্যার বেশ কিছু সময় আগেই এখান থেকে বের হয়ে যেতে হবে। কেননা এ দুটি জায়গা গরমের সময় বিকেল পাঁচটা আর শীতের সময় বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে।
পড়ুন: ঈদের ছুটিতে দেশের বাইরে কোথায় ঘুরতে যাবেন?
চন্দ্রিমা উদ্যান
শিশুদের নিয়ে খোলামেলা পরিবেশে সময় কাটানোর জন্য চন্দ্রিমা উদ্যান সেরা জায়গা। লেকের দু’ধারে সিড়ি ও বসার জায়গা এবং উপর দিয়ে নজরকাড়া সেতু উদ্যানটির প্রবেশপথকে মনোরম করে তুলেছে। সেতুতে দাড়িয়ে দু’পাশের লেক থেকে ফোয়ার দেখার আকর্ষণেই মুলত দর্শনার্থীরা ভিড় করেন এখানে।
এর ভেতরের বিশাল ঘাসে বিছানো জায়গাটিতে নির্দ্বিধায় শিশুদেরকে ছেড়ে দেয়া যায় আপন মনে খেলা করার জন্য। এর প্রায় ৭৪ একর জায়গার ভেতরে সেতু পেরলেই দেখা যাবে মরহুম জিয়াউর রহমানের সমাধি কমপ্লেক্স। চন্দ্রিমা উদ্যানের ঠিক উল্টো পাশে অবস্থিত জাতীয় সংসদ। এখানে আসার আগে বিজয় সরণী এলাকায় অতিক্রমের সময় এক পাশে চোখে পড়বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভো থিয়েটার।
ধানমন্ডি লেক
ঢাকার ছড়ানো-ছিটানো লেকগুলোর মধ্যে ধানমন্ডি লেক সবচেয়ে বেশি এলাকা জুড়ে অবস্থিত। এই বেশি বলতে কিন্তু একপার থেকে অন্য পাড়ের দূরত্ব অনেক বেশি তা নয়। পুরো ধানমন্ডি এলাকাটার আশপাশ দিয়ে সংকীর্ণ পানিপথ তৈরি করে বয়ে গেছে লেকটি। এই দর্শনীয় স্থানটিতে প্রবেশের সাথে সাথেই পুরো ধূসর পরিবেশটা যেন আচমকা পরিণত হয় সবুজের সমারোহে।
পড়ুন: ঈদের ছুটিতে ভ্রমণের পূর্ব প্রস্তুতি এবং দুর্ঘটনা এড়াতে কিছু সতর্কতা
এখানে বেশ পরিপাটি করে বিছানো হয়েছে হাঁটার রাস্তা, তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন ব্যায়ামের স্থান, বসার বেঞ্চ, ফাষ্টফুড শপ ও রেস্টুরেন্ট। নির্দিষ্ট ফি দিয়ে লেকে মাছ ধরা আর বোটে চড়ে ঘুরে বেড়ানো যায়। তাছাড়া এটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র রবীন্দ্র সরোবর এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসস্থানের জন্য বেশ নামকড়া।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
মাঝে ছোট্ট একটি লেক নিয়ে বিস্তৃত মাঠের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান যে কোন এক বিকেল কাটানোর জন্য দারুণ এক জায়গা। ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত এই উদ্যানটির পূর্ব নাম রমনা রেসকোর্স ময়দান। ঘোড়দৌড় খেলার জন্য জায়গাটি বেশ জনপ্রিয় ছিলো।
এখানেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ৭ মার্চের সেই জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়েছিলেন। এখানেই ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। এখানকার নান্দ্যনিক স্থাপনা স্বাধীনতা স্তম্ভ এবং শিখা চিরন্তন এখনো তার সাক্ষ্য দিয়ে যাচ্ছে। হাতে একটু বেশি সময় নিয়ে শিশুদের ঘুরিয়ে আনতে পারেন তিন নেতার মাজার আর কাজী নজরুল ইসলামের সমাধি।
পড়ুন: গরমকালে কম খরচে বাংলাদেশের কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবেন?
রমনা পার্ক
ঢাকা নগরীর সব বয়সের অধিবাসীদের ঘোরাঘোরির জন্য সাধারণ পছন্দ হলো রমনা পার্ক। একসাথে এত জায়গা জুড়ে সুনিবিড় ছায়া ঘেরা পরিবেশ ঢাকার আর কোথাও নেই। প্রায় ৬৮.৫০ একরের এই পার্কটির দুর্লভ প্রজাতির গাছ-গাছালির ভিড়ে অপরূপ লেকটি সরবে নিজের উপস্থিতি জানান দেয়।
প্রতি বছর এর বটমূল নামক জায়গাটিতে ছায়ানটের উদ্যোগে পহেলা বৈশাখের ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। ভোরে আলো ফুটার আগ থেকেই শরীর চর্চার ধুম পড়ে যায় পার্কটিতে। পাশাপাশি হওয়ায় আরো কিছু সময় নিয়ে এই পার্কের সাথে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানও ঘুরে নিতে পারেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এই স্থানদুটিতে ঘোরার জন্য নির্দিষ্ট কোন সময়সূচী নেই এবং কোন ফি দিতে হয় না।
জিন্দা পার্ক
ঢাকা থেকে মাত্র ৩৭ কিলোমিটার দূরত্বের জিন্দা পার্ককে খুব বেশি দূরে বলা যায় না। পূর্বাচলের ৩০০ ফিট সড়ক ধরে গেলে সর্বোচ্চ দেড় থেকে দুই ঘন্টার মধ্যেই পৌছে যাওয়া যায় আদর্শ গ্রাম নামে খ্যাত এই দর্শনীয় স্থানটিতে। এটি পড়েছে মুলত নারায়ণগঞ্জ জেলার দাউদপুর ইউনিয়নে। এর প্রায় ১৫০ একর এলাকার জুড়ে আছে ২৫০ প্রজাতির দশ হাজারেরও বেশী গাছপালা এবং ৫ টি জলাধার। এর সুন্দর ভাবে গড়া গাছের উপর টং ঘর, পুকুরের উপর সাঁকো, মাটির ঘর, বড় সান বাধানো পুকুর, লাইব্রেরি দেখলে নিমেষেই মন ভরে যায়।
পড়ুন: রাতে হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর সময় প্রয়োজনীয় কিছু সতর্কতা
ঢাকা নগরবাসীর ডে-আউটের জন্য সেরা জায়গা হতে পারে জিন্দা পার্ক। জিন্দা পার্কে ঢোকার জন্য ১০০ টাকা দিয়ে টিকেট কাটতে হয়। বাচ্চাদের জন্যে এই টিকেট ফি জনপ্রতি ৫০ টাকা। লাইব্রেরিতে ঢুকতে হলে ১০ টাকা খরচ করতে হয়। যারা নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যাবেন তাদের ৫০ থেকে ১০০ টাকা পার্কিং ভাড়ার কথা মাথায় রাখতে হবে।
লা রিভারিয়া রিসোর্ট এন্ড পার্ক
যারা রিসোর্ট পছন্দ করেন তাদের জন্য ঢাকার অদূরেই এই দৃষ্টিনন্দন জায়গাটি সেরা পছন্দ হতে পারে। যারা ঢাকার ভেতরে নদীর হাওয়া পেতে চান তাদের চাহিদাও মেটাবে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর ঘেসে গড়া এই রিসোর্টটি। কাঞ্চন ব্রীজ দিয়ে মায়ার বাড়ী বাস স্ট্যান্ড থেকে কাছেই এই রিসোর্টটিতে পৌছে বড়জোর আড়াই ঘন্টা লাগতে পারে।
এই দারুণ অবকাঠামোরটির অবস্থান মুলত নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জ-এ। কোন প্যাকেজ বুকিং ছাড়া শুধুমাত্র ১০০ টাকা প্রবেশ ফি দিয়ে রিসোর্টটি ঘুরে দেখা যাবে। এখানে সকাল ১০ থেকে বিকেল সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত ডে-লং প্যাকেজের জন্য জনপ্রতি ২,৫০০ টাকা খরচ করতে হয়। এর মধ্যে পাওয়া যাবে কটেজে থাকা, দুপুরের খাবার এবং সুইমিং পুলে সাঁতার কাটার সুবিধা।
পড়ুন: সিলেট শহরের দর্শনীয় স্থান: অতুলনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক নগরী
পরিশিষ্ট
ঈদের ছুটিতে শিশুদের নিয়ে ঢাকার ভেতরে ঘোরার জন্য এই জায়গাগুলো কেবল খোলামেলাই নয়, বেশ নিরাপদও বটে। তাছাড়া উন্মুক্ত পরিবেশে সময় কাটানো শুধু মন নয়, দেহের জন্যও উপকারি। দৈহিক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রে শিশুদের স্বাভাবিক ক্রমবিকাশের জন্য প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকা জরুরি। ভ্রমণের সময় শিশুদের এই দর্শনীয় স্থানগুলোর তাৎপর্যের পাশাপাশি এই জায়গাগুলোকে যে যত্ন করা আমাদেরই দায়িত্ব তা বুঝাতে হবে। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা ও ফুল ছেড়া সহ স্থানীয় সম্পদের ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকার জন্য শিশুদেরকে অভ্যস্ত করে তোলা প্রত্যেক অভিভাবকদের দায়িত্ব।
২ বছর আগে
বিএনপিও জানে জিয়ার লাশ চন্দ্রিমা উদ্যানে নেই: প্রধানমন্ত্রী
সম্প্রতি রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সেখানে জিয়াউর রহমানের লাশ নেই তা খুব ভালোভাবে জানা সত্ত্বেও কেন বিএনপি কর্মীরা বিশৃঙ্খলায় জড়িয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা আয়োজিত এক সভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া ও তার সরকার গ্রেনেড হামলা করেছিল: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘বিএনপি চন্দ্রিমা উদ্যানে বিশৃঙ্খলায় লিপ্ত হয়েছে। বিএনপি কি জানে না এখানে জিয়ার কবর বা লাশ নেই, তারা এটা খুব ভালো করেই জানে! যদি তাই হয়, তাহলে তারা নাটক করবে কেন? খালেদা জিয়াও এ বিষয়ে সচেতন।’
১৭ আগস্ট জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করার সময় চন্দ্রিমা উদ্যানের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির কর্মীদের সংঘর্ষ হয়।
আরও পড়ুন: ২১ আগস্ট হামলায় নিহতদের লাশ গুমের চেষ্টা করেছিল খালেদা সরকার: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া বা তারেক জিয়া কি দাবি করতে পারবেন যে তারা জিয়ার লাশ বাক্সে দেখেছেন (যা চট্টগ্রাম থেকে আনা হয়েছিল) গুলিবিদ্ধ লাশ হিসেবে সহজেই চিনতে পারে। তিনি বলেন, তবে বাক্সে জিয়ার মৃতদেহ না থাকায় কেউ তা দেখেনি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তিনি এইচএম এরশাদের কাছ থেকে শুনেছেন যে বাক্সে একটি যুদ্ধের পোশাক রয়েছে। বিএনপির লোকেরা কি জানে না যে রাষ্ট্রপতি যুদ্ধের পোশাক পরতে পারেন না? তারপরও তারা সেখানে সংঘর্ষে জড়ানোর অভ্যাস ত্যাগ করেনি।
আরও পড়ুন: সরকারি কর্মচারীরা দুর্নীতি করলে কঠোর শাস্তি: প্রধানমন্ত্রী
৩ বছর আগে
বিএনপির আমান, তাবিথসহ ৭০ নেতাকর্মীর আগাম জামিন
রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান, তাবিথ আউয়াল, আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনুসহ কয়েকজন আগাম জামিন পেয়েছেন। এ ছাড়া রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে করা অপর একটি মামলায় আগাম জামিন পেয়েছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এবং মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী শফিকুল হক মিলনসহ আরও কয়েকজন। সব মিলে দুটি পৃথক মামলায় বিএনপির ৭০ নেতা-কর্মী আগাম জামিন পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী। বুধবার বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চ বিএনপি নেতাদের আগাম জামিন মঞ্জুর করেন। চন্দ্রিমার ঘটনায় আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। নির্ধারিত সময়ের পর তাঁদের সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রুহুল কুদ্দুস কাজল, নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, রুকুনুজ্জামান সুজা, কামরুল ইসলাম সুজন, আকতার রসুল মুরাদ, জিয়াউর রহমান ও আবিদুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেজাউল করিম।
১৭ আগস্ট রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় পরদিন ১৮ আগস্ট দিবাগত রাতে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা হয়। পুলিশের করা মামলায় বিএনপির ১৫৫ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। মামলায় পরিকল্পিতভাবে নাশকতার চেষ্টা, পুলিশের ওপর হামলা করে আহত করা এবং গাড়ি ভাঙচুর করে জানমালের ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় বিএনপির নবগঠিত ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ও সদস্যসচিব আমিনুল হককে আসামি করা হয়। এ ছাড়া তাবিথ আউয়ালকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।
অন্যদিকে গত ২ মার্চ রাজশাহীতে বিএনপি আয়োজিত বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার আসামি হন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু এবং ওই তিন নেতা। রুহুল কুদ্দুস তালুকদার এখনো জামিনের আবেদন করেননি।
আরও পড়ুন: চন্দ্রিমা উদ্যানে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ
ওই সমাবেশে দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকিসহ নানা অভিযোগে গত ১৬ মার্চ রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪-এ (আমলি আদালত বোয়ালিয়া) মামলাটি করা হয়। মামলার বাদী রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক মুসাব্বিরুল ইসলাম।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ওই সমাবেশে বিএনপির চার নেতা পূর্বপরিকল্পিতভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতের হুমকি দেন। মিজানুর রহমান প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘মনে নাই পঁচাত্তর সাল?’ এই ঘোষণার পর বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে উগ্রভাব ছড়িয়ে পড়ে। কিছু নেতা-কর্মী সমাবেশের বক্তব্য ফেসবুকে সরাসরি প্রচার করেন। সমাবেশে অন্য নেতারাও একইভাবে বক্তব্য দিয়ে ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়ান। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার উৎখাতের হুমকি দেন। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেন। এর মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ করেছেন।
আরও পড়ুন: সরকার সন্ত্রাসের রাজত্ব চালু করেছে: ফখরুল
সিলেটে বিএনপি নেতা এমরান আহমদ চৌধুরী গ্রেপ্তার
৩ বছর আগে
চন্দ্রিমা উদ্যানে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ
চন্দ্রিমা উদ্যানে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে।মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে ঢাকা মহানগরের উত্তর ও দক্ষিণ বিএনবির নবগঠিত কমিটির নেতা-কর্মীরা দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।তিনি পুলিশের এই ‘দমনমূলক’ কাজের নিন্দা জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপির মহানগর উত্তর কমিটির সদস্য সচিব এবং জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার আমিনুল হকসহ কিছু নেতা -কর্মী সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে উদ্যানে জড়ো হন। এরপর পুলিশ তাদের ভেতরে যেতে বাধা দেয়।
এ সময় আমিনুল হকের সঙ্গে পুলিশের তর্ক হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।
বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেন, ‘আমরা আজ এখানে এসেছি জিয়াউর রহমানের কবরে ফাতেহা পাঠ করতে। কিন্তু পুলিশ আমাদের সেখানে থাকতে দিচ্ছিল না। এক পর্যায়ে পুলিশ আমাদের উপর কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।’
আরও পড়ুন: বিরোধী নেতাকর্মীদের প্রতি সরকারের ক্রোধ বাড়ছে: বিএনপি
শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম মুন্সী বলেন, ‘বিএনপি কর্মীরা বাণিজ্য মেলার মাঠে প্রবেশ করছিল। কিন্তু সেখানে প্রবেশে তাদের অনুমতি ছিল না। নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপির গ্রুপের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কলহ অছে। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়তে শুরু করে।পরে পুলিশ তাদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
ওসি বলেন, সংঘর্ষে ডিসি, এডিসি এবং এসিসহ আট থেকে দশজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
৩ বছর আগে