রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান, তাবিথ আউয়াল, আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনুসহ কয়েকজন আগাম জামিন পেয়েছেন। এ ছাড়া রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে করা অপর একটি মামলায় আগাম জামিন পেয়েছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এবং মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী শফিকুল হক মিলনসহ আরও কয়েকজন। সব মিলে দুটি পৃথক মামলায় বিএনপির ৭০ নেতা-কর্মী আগাম জামিন পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী। বুধবার বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চ বিএনপি নেতাদের আগাম জামিন মঞ্জুর করেন। চন্দ্রিমার ঘটনায় আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। নির্ধারিত সময়ের পর তাঁদের সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রুহুল কুদ্দুস কাজল, নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, রুকুনুজ্জামান সুজা, কামরুল ইসলাম সুজন, আকতার রসুল মুরাদ, জিয়াউর রহমান ও আবিদুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেজাউল করিম।
১৭ আগস্ট রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় পরদিন ১৮ আগস্ট দিবাগত রাতে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা হয়। পুলিশের করা মামলায় বিএনপির ১৫৫ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। মামলায় পরিকল্পিতভাবে নাশকতার চেষ্টা, পুলিশের ওপর হামলা করে আহত করা এবং গাড়ি ভাঙচুর করে জানমালের ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় বিএনপির নবগঠিত ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ও সদস্যসচিব আমিনুল হককে আসামি করা হয়। এ ছাড়া তাবিথ আউয়ালকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।
অন্যদিকে গত ২ মার্চ রাজশাহীতে বিএনপি আয়োজিত বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার আসামি হন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু এবং ওই তিন নেতা। রুহুল কুদ্দুস তালুকদার এখনো জামিনের আবেদন করেননি।
আরও পড়ুন: চন্দ্রিমা উদ্যানে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ
ওই সমাবেশে দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকিসহ নানা অভিযোগে গত ১৬ মার্চ রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪-এ (আমলি আদালত বোয়ালিয়া) মামলাটি করা হয়। মামলার বাদী রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক মুসাব্বিরুল ইসলাম।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ওই সমাবেশে বিএনপির চার নেতা পূর্বপরিকল্পিতভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতের হুমকি দেন। মিজানুর রহমান প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘মনে নাই পঁচাত্তর সাল?’ এই ঘোষণার পর বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে উগ্রভাব ছড়িয়ে পড়ে। কিছু নেতা-কর্মী সমাবেশের বক্তব্য ফেসবুকে সরাসরি প্রচার করেন। সমাবেশে অন্য নেতারাও একইভাবে বক্তব্য দিয়ে ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়ান। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার উৎখাতের হুমকি দেন। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেন। এর মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ করেছেন।