ঘরবাড়ি
ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: পটুয়াখালীতে ঘরবাড়ি ও আমনের ক্ষতি
পটুয়াখালীতে ঘুর্নিঝড় মিধিলির প্রভাবে টানা দুই দিন বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় নিম্নাঞ্চলে পানি জমে রোপা আমন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া মাঠে থাকা সবজিরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, উপকুলীয় ৫টি উপজেলার আমন ধান খেত হাটু সমান পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে এ মুহূর্তে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ কাজ চলমান। তাই প্রকৃত তথ্য জানানো সম্ভব হয়নি। এদিকে ৩৩টি মাছের ঘের তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে কোটি টাকার মাছ
বাউফল উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মনজুর আলম জানান, কয়েকটি গ্রামে বৈদ্যুতিক তারের উপর গাছ উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। হাতেগোনা কয়েকটি কাচা ঘর ধ্বসে পড়েছে।
এছাড়া মোটা চালের ধান খেতের আংশিক ক্ষয়ক্ষতির কথাও জানান তিনি।
ঘূর্ণিঝড় মিধিলি কেটে গেলেও ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন পটুয়াখালীর উপকূলের আমন চাষিরা। মিধিলির তাণ্ডবে নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে পাকা ধান ঘরে তোলার আগেই খেতের মধ্যে তছনছ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় দিশেহারা চাষিরা।
কৃষকরা জানান, একের পর ধাক্কায় দিশেহারা আমন চাষিরা। মৌসুমে শুরুতে বৈরী আবহাওয়া আর টানা বৃষ্টির কারণে বীজতলা নষ্ট হওয়ার পর এবার আবার পাকা ধানে ঘূর্ণিঝড়ের হানা। অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন প্রান্তিক চাষিরা।
এদিকে বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এবার আমন উৎপাদনের লক্ষমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা করা হচ্ছে।
রাঙ্গাবালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ২৮ হাজার জমির পাকা ধান আক্রান্ত হয়েছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে আমন খেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
শুক্রবার বিকালে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রমের সময় এর তাণ্ডবে কিছু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার পাশাপাশি উপরে পড়েছে অসংখ্য গাছপালা।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, ২ বসতবাড়ি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ৬টি বসত ঘর। এছাড়া ৩ হাজার ৭০০ হাজার হেক্টর রোপা আমন খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঝড়ে তরমুজ ও সবজি খেতের ৯৯৭ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. নুর কুতুবুল আলম জানান, সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরই ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয়ে মাঠে কাজ করছে। মৎস্য বিভাগের তেমন কোনো ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
তবে প্রাথমিকভাবে জেলা কৃষি বিভাগ ক্ষয়ক্ষতির একটি চিত্র জেলা প্রশাসনকে দেওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, ৪৪ হাজার ৯০০ জন কৃষক এবং ৩ হাজার ৯০০ হেক্টর জমির ধান, বিভিন্ন জাতের সবজি খেতের ক্ষতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: বঙ্গোপসাগরে ২টি ট্রলারসহ নিখোঁজ ২৫ জেলে, উদ্ধার ১৪
ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: বরিশালে লঞ্চ চলাচল ফের শুরু
১ বছর আগে
কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে
কুড়িগ্রামে সবক'টি নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে ভাঙন। বিশেষ করে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিস্তা নদীর ভাঙনে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এছাড়া, হুমকিতে রয়েছে খিতাব খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুল থেকে ৩০ থেকে ৩৫ মিটার দূরে অবস্থান করছে নদী। মাঝে একটি আঁকাবাঁকা রাস্তা, রাস্তার ধারে কিছু গাছপালা।
যে কোনো মুহূর্তে তিস্তা হিংস্র হয়ে উঠলে বিদ্যালয়টির অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। একই অবস্থা ওই ইউনিয়নের গতিয়াশাম কমিউনিটি ক্লিনিকের।
আরও পড়ুন: বিপদসীমার ২৮ সেমি ওপরে তিস্তার পানি
সরেজমিনে দেখা গেছে, তিস্তা নদীতে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন তীব্র হয়ে উঠেছে। গত ৩ মাস ধরে দফায় দফায় ভাঙছে তিস্তা।
এরমধ্যে শুধু খিতাবখাঁ গ্রামেই ইসমাইল হোসেন, রসুল, মোস্তাক, কদিমল, হাসেন আলী, ইউসুফ, দুলাল, আব্দুর রহিম, বালো, কছো মামুদ মমিন, হারুন, আবুল, আ. ছাত্তার, রফিকুল, অতুর আলী, রুস্তম, রফিকুল, আবুল হোসেন, মসুল, নুর ইসলাম, ফয়েজ, মাহাম্মদ, আবেদ, শফিকুল ইসলামসহ ৩০টি পরিবারের ভিটে মাটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অন্যান্য ৪টি গ্রামসহ এর সংখ্যা ৫০-এর উপরে।
উপজেলার ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখাঁ, গতিয়াশাম ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুরা, রামহরি এবং কালিরহাট গ্রামে শত শত একর ফসলি জমি ও গাছপালা গিলে খাচ্ছে তিস্তা নদী। বাড়িঘর হারিয়ে তাদের অনেকেই খোলা আকাশের নীচে মানবেতর দিনাতিপাত করছেন। এই গ্রামের অনেকে আবার মাঝেরচর নামক স্থানে নতুন বসতি স্থাপনের কাজ করছেন।
আরও পড়ুন: তিস্তার ভাঙন: গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামে শতাধিক পরিবার গৃহহীন
১ বছর আগে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঝড়ে ৩০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিন উপজেলায় ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় ঘরবাড়িসহ অন্তত ৩০০টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সোমবার ভোর ৩টা ২০ মিনিটের দিকে ঝড় শুরু হয়ে দশ মিনিট ধরে চলে।
ঝড়ের আঘাতে জেলার সরাইল, নাসিরনগর ও বিজয়নগর উপজেলায় ৩০০টি বাড়িঘর, বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গেছে এবং বেশ কিছু গাছ উপড়ে পড়েছে।
নাসিরনগর উপজেলা কর্মকর্তা অভিজিৎ রায় জানান, নাসিরনগর উপজেলায় ঝড়ে ৪০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঝড়ের সময় পূর্ব বালিখোলা প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের একটি অংশ ধসে পড়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য বিদ্যালয়টি বন্ধ রাখতে বাধ্য হন।
২ বছর আগে
সিরাজগঞ্জে যমুনায় ভয়াবহ ভাঙন, অর্ধশত ঘরবাড়ি বিলীন
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার যমুনা নদীর দক্ষিণাঞ্চলে আবারও ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিনে বাঘুটিয়া ইউপির কয়েকটি গ্রামের প্রায় অর্ধশত ঘরবাড়ি, বহু ফসলি জমি ও গাছপালা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে ওই উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল বন্যাকবলিত হয়েছে। এতে বিভিন্ন ফসলসহ জমি তলিয়ে গেছে। এছাড়া প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন অঞ্চল। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই যমুনায় পানি বাড়ছে। এতে কয়েকদিন ধরে ওই অঞ্চলের বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিনানই ও চরসলিমাবাদসহ কয়েকটি গ্রামে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। মুহূর্তের মধ্যেই বাড়িঘর ও গাছপালাসহ ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। অনেকে ভাঙনের মুখ থেকে অনত্র ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ যমুনার পানি আরিচা পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে, বন্যার আশঙ্কা
স্থানীয়রা জানান, গত মাসের শেষ দিকে ওই অঞ্চলে ভাঙনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আবারও কয়েকদিন ধরে এ ভাঙনে এলাকায় কমপক্ষে ৫০টি ঘরবাড়ি যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে। তারা সহায় সম্বল হারিয়ে এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে। এছাড়া লকডাউন খুলে দেয়ার পর শিল্প কারখানা খোলায় চরাঞ্চলের অনেকেই ঢাকা ও অনান্য স্থানে কর্মস্থলে গেছেন। এ কারণে নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির আসবাবপত্র এক স্থান থেকে অন্যত্র নেয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পরিবারের লোকজনের। এ ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেতে দ্রুত স্থায়ী তীর সংরক্ষন বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
আরও পড়ুনঃ যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন বলেন, বর্ষার শুরু থেকে ৫-৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বহু ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। বিশেষ করে কয়েকদিনে বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে ৫০টি ঘরবাড়িসহ বহু গাছপালা নদী গর্ভে চলে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের প্রধানমন্ত্রীর উপহার খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে এবং ভাঙনের বিষয়টি স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে।
ভাঙন রোধে (দায়িত্বপ্রাপ্ত) টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, সোমবার দুপুরে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। এই উপজেলার দক্ষিণাঞ্চল রক্ষায় স্থায়ী তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প দাখিল করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বাড়ছে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
এ প্রকল্প অনুমোদন পাওয়া গেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
৩ বছর আগে